অবিনাশী পর্ব ১৭+১৮

অবিনাশী পর্ব ১৭+১৮
রেজওয়ানা আসিফা

তানিয়া ছাদে দারিয়ে ঈশানকে খাওয়াচ্ছে। আর পাশেই বসে আছে নূর।
তানিয়া হাতটা ধুয়ে বললো,
-কী করতে গিয়েছিলেন? ও এমন মেয়ে না যে কারণ ছাড়াই নিজের শ্রদ্ধাীয় মামার মুখের উপর এভাবে কথা বলবে। কিছু একটা হয়েছে।

-আসলে ভাবি আমি এমন করতে চাইনি।
-জানতাম আমি ! কী করেছেন সেটা বলুন!
নূর সব কিছু খুলে বললো তানিয়াকে। তানিয়ার ঈশানের হাত ধুয়িয়ে দিতে দিতে বললো,
-এমন কাজ কীভাবে করলেন? মেয়েরা আবাগী হয় ঠিক আছে তবে মেয়েরা ভয়ংকরও বটে। নারীর মনে একবার পুরুষের প্রতি ঘৃণা জন্ম নিলে সেই পুরুষ রূপে গুণে যতো যাই হোক। নারী ফিরেও তাকায় না।
ওইযে কেউ একটা কথা বলেছিলো না!

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন হউন

“নারীর ঘৃণা পুরুষের রাগের চেয়েও ভয়ংকর”
কথাটা শুনেই নূর ঘাবরে গেলো। তার মধ্যে কেমন হাফ ছাড়া হাফ ছাড়া ভাব। কোকরানো বড়ো চুল গুলো চার পাশ দিয়ে এলোমেলো হয়ে আছে। গায়ের ধূসর রং এর পাঞ্জাবী টা এই শীতের দিনেও ঘামে ভিজে গেছে।
সব রান্না বান্না শেষ। নূহাকে তিশা নিজে হাতে সাজিয়েছে।
সাদা গ্রাউনে পরী লাগছে তাকে। মুখ ঢাকা নূহার। তিশা নূহা কে নিয়ে নূহার ঘরে বসে আছে। সবাই নূহাকে দেখতে আসছে। ছেলেরা একটু পরেই চলে আসবে।

তানিয়া ঈশানকে একটা কালো পাঞ্জাবী পরিয়েছে। নিজে পরেছে একটা কালো শাড়ি। এই গুলো সব নূর আর তিশা যখন বিয়ের শপিং করতে গিয়েছিলো তখন ওদের জন্য এনেছে নূর। তানিয়া আগের দিন নূরের সাথে ঈশানকে শেলুনে পাঠিয়েছিলো। চুল কেটে এনেছে। তানিয়া ঈশানকে তৈরি করে মাথা থেকে পা পযর্ন্ত একবার দেখলো। একদম আয়ানের মতো লাগছে। শুধু আয়ান আরেকটু লম্বা আর চুলের কাট অন্য রকম। তানিয়া অনেক ক্ষন ঈশানের দিকে অপলকে তাকিয়ে রইলো। মনে মনে বললো, লোকটা যদি আজ সুস্থ হতো তাহলে কী আমাকে দেখে বলতো, প্রিয়তমা সুন্দর লাগছে তোমাকে। তুমি আমার চোখের মায়াবিনী!

হঠাৎ নিচ থেকে কারো ডাক পরলো, তমা আর আমান চৌধুরী এসেছে। তানিয়া ঈশান কে নিয়ে নিচে গেলো।
নিয়ে গিয়ে দেখলো আয়ান এসেছে। আয়ান ও আজ পাঞ্জাবি পরেছে। একটা সাদা পাঞ্জাবি পরেছে। আজ ওকে অনেক পরিপাটি লাগছে। তানিয়া মনে মনে বললো, নিশ্চয়ই মা এমন করে এনেছে এই বাড়ি আসবে বলে।
মিসেস তমা ঈশানের দিকে এগিয়ে এসে ঈশানের কপালে চুমু খেলো। তানিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,

-ওর জ্বর কমেছে। মুখটা তো কেমন শুকনো লাগছে।
-আপনি কপালে হাত দিয়ে দেখুন না কমেছে কিনা! বাড়িতে তো মনে হয় ১০০ মানুষ আছে। আর এদের মধ্যে অনেকেই দুই দিন আগে থেকে আছে এখানে তাদের জিগ্যেস করেন তো আগের থেকে এখন মুখ শুকনো লাগছে কিনা।

-অনেক ভালোই ত্যারা ত্যারা উত্তর দেওয়া শিখেছো!
-আপনিই তো বলতে বাধ্য করেন।
-তোমার সাথে এখানে ঝগড়া করা বা কথা কাটাকাটি করার ইচ্ছে নেই আজকের। তিশা কোথায়?
-নূহার সাথে হবে হয়তো।

তমা তানিয়ার দিকে একবার তাকিয়ে উপরে নূহার ঘরের দিকে গেলো।
তানিয়া এদিক ওদিক তাকিয়ে কাউকে খুজছে।
হ্যা নূর কে খুজছে। গেলো কোথায়।

মাথায় কাপড়ের আচল টা টেনে বাইরে আসলো বাড়ির মাঠের কাছে। কোথাও নেই। হঠাৎ মেইন দরজায় তাকালো। ছেলের বাড়ির লোক চলে এসেছে। পাশেই দারানো নূর। বউ মানুষ হয়ে এখানে থাকা ঠিক হবে। ভেবে সে বাড়ির মধ্যে চলে গেলো। নূহার ঘরে গিয়ে দেখলো তমা নূহা তিশা একসাথেই বসে আছে। তিশার দিকে তাকিয়ে বললো,
-তিশা ছেলের বাড়ির লোক চলে এসেছে, দরজায় দারাবে না। তিশা সাথে সাথেই চলে গেলো। নূহা কয়েকবার ডাকলো। সে পিছে না তাকিয়ে বললো,

-এখন তোর কথা শোনার সময় নেই। গিয়ে টাকা তুলি আগে। তুই বসে থাক।
নিচে গিয়ে বাড়ির মেইন দরজায় দারালো তিশা। আগেই সেখানে অনেক মানুষ ছিলো। তমে দুই পরিবারই ধার্মিক হওয়ায় কোনো মেয়ে ওখানে থাকার সাহস করেনি। শেহজাদের বাড়ির সব মেয়েরা অন্য দরজা দিয়ে সোজা বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করেছে।

নূর হঠাৎ খেয়াল করলো তিশাকে।
পরনে গোলাপি রং এর একটা পিতলা শাড়ি। অন্য রকম করে আজ হিজাব বেধেছে। নূর অপলকে তাকিয়ে আছে তার দিকে। হঠাৎ তার মনে হলো, সে নিজেও তো আজ গোলাপি রং এর পাঞ্জাবি আর কোটি পরেছে। একবার নিজের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো সে।

শেহজাদ লাজুক সভাবের ছেলে। তিশাকে দেখেই বুজেছে সে এখানে কী চায়। কোনো কথা না বলে একটা টাকার বুকে ধরিয়ে দেয়, তিশার হাতে।
তিশা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এখানে ঠিক কতো টাকা এই মূহুর্তে সে সেটা জানতে চায় না। জিগ্যেসও করতে চায়। এতো সুন্দর একটা জিনিস সে পাবে ভাবতেই পারেনি। তারাতাড়ি কেচি টা দিলো শেহজাদের হাতে।
সবাই ভিতরে আসলো। তবে তিশা নূরের দিকে একবারের জন্যও তাকাইনি। নূর বিষয় টা খেয়াল করেও কোনো কথা বললো না।

সবার খাওয়া দাওয়া শেষ। বিকেল ৫ টা বাজে। এবার বিয়ে পরানো শুরু। এতোক্ষন অনেক মানুষ থাকলেও সবাই চলে গেছে। এবার দুই পরিবারের কিছু লোক আছে।
বিয়ে পরানো শেষ করার পর শেহজাদ কে বাড়ি নিয়ে আসলো। শেহজাদের মন আকুল হয়ে আছে একবার নূহাকে দেখার জন্য। যেইদিন থেকে ববিয়ের তাযিক ঠিক করা হয়েছে সেইদিন থেকে এই মেয়েটাকে না দেখেই ভালোবেসেছে সে। তার হাত পা কাপছে। তার ঠোঁট কাপছে। তিশা একটা ফুলের দেয়াল তৈরি করেছে। দুই পাশে দুই জন বসা

ফুল গুলো সরাতেই নূহার মুখটা শেহজাদের সামনে চলে আসলো। শেহজাদ তাকিয়ে আছে। চোখের পলক পরছেনা। মুখ থেকে শান্ত কন্ঠে খুব আস্তে বের হলো, মাশাআল্লাহ।
সবাই তার এমন রিয়েক্ট দেখে মুচকি হাসছে। নূহা তো চোখ বন্ধ করেছে আর খোলার নাম নেই।তিশা অনেক বার বললো তবুও সে চোখ খুলছে না। নূহার এই অবস্থা দেখে শেহজাদ নিজেই চোখ শরিয়ে নিলো তাকে সাভাবিক হতে সময় দেওয়ার জন্য।

রাতে আজ শেহজাদ এই বাড়িতেই থাকবে। নূর জামাল সিকদার আয়ান চৌধুরী ঈশান, আয়ান, শেহজাদ এবং শেহজাদের ছোট ভাই এবং তার কিছু কিজিন একসাথে বসে আছে। সবার জন্য চা করেছে নূরের মা। নূর গিয়ে সবাইকে চা এনে দিলো। সবাই গল্পগুজব করছে। কিন্তু নূর কেমন যেনো অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। এইদিকে তারার কোনো খেয়াল নেই।
অনেক মনে পরছে তিশার কথা। হঠাৎ মনে পরলো একটু আগে আভান চৌধুরীর মুখে শুনেছে কাল তারা চলে যাবে। মনে মনে বললো,

-তিশা যা বলেছে সকালে। সে কী সেই কাজি করবে! একবার দেখা দরকার। সবাইকে আড়াল গল্পের আসর থেকে সে উঠে উপরে গেলো। ছাদের দরজা দিয়ে উপরে উকি দিতেই দেখলো। তিশা দোলনায় বসে আছে। চাদের আলোতে তাকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তার চুল গুলো বাতাসে উড়ছে। সে একমনে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে। শাড়ির আচলটা অনেক খানি মাটিতে পরে আছে।

নূর একবার তিশার ঘরের দিকে উকি দিলো দেখলো জামা কাপড় সব এলোমেলো করা। তার ব্যাগ গোছানো।
সে উপরে এসেছে, তিশা কিচ্ছুই টের পেলো না। নূর হাতে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত ৮ টা বাজে। সময় টা দেখেই আবার সে নিচে চলে গেলো।
শিড়িতে হঠাৎ দেখা হলো তানিয়ার সাথে। তানিয়াকে দেখেই নূর অন্য দিকে মুখ ঘুড়িয়ে নিলো। তানিয়া নূর কে পাশ কাটিয়ে উপরে যাবে এমন সময় নূর বললো,

– ওকে বলবেন না আমি ছাদে এসেছিলাম।
তানিয়া ভ্রু কুচকে বললো,
-কেনো আপনাকে ও দেখে নি?
নূর কিচ্ছুই বললো না। চলে গেলো। তানিয়া কিছুক্ষন দারিয়ে উপরে চলে গেলো। উপরে গিয়ে দেখলো তিশা দোলনায় বসা। ঘরে গিয়ে দেখলো সব অগোছালো হয়ে পরে আছে। তানিয়ার তিশার পাশে গিয়েই বসতেই তিশা তানিয়া কে জরিয়ে ধরে চিৎকার করে কেদে উঠলো।

তানিয়া তিশাকে জরিয়ে ধরে রাখলো। ওকে শান্তনা দেবার ভাষা নেই তার।
এভাবে অনেক ক্ষন থাকার পর তিশা তানিয়াকে ছেড়ে দিলো। চোখ মুছে বললো,
-কাল তোমাদের সাথেই আমি চলে যাবো থাকবো না আর পরের বাড়ি। ছোট থেকে আমারি ভুল হয়েছে, এভাবে পরের বাড়ি থাকা উচিৎ হয় নি।

-তুমি শান্ত হও আগে। তারপর পরের টা পরে দেখা যাবে
-না পরে না। আমি সব গুছিয়েছি। কালেই চলে যাবো। তুমি মা আর বাবাকে বলে দিয়ো, আমি চলে যাবো তাদের সাথে।

-আচ্ছা বলবো এখন তুমি শান্ত হও। এখন নিচে চলো। খাবার খাবে।
-খাবো না এই বাড়ির খাবার। তার আনা খাবার আমি খাবো না। খিদে নেই আমার।
-এটা বেশি হয়ে যাচ্ছে তিশা। খাবারের উপর রাগ দেখাবেনা। এখানেই বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি।
তানিয়া খাবার এনে তিশা কে খায়িয়ে দিলো। এক ঘন্টা বসে তিশার ঘর পরিষ্কার করলো। কাগজ ছেড়া তুলতে তুলতে তানিয়ার কোমর বেথা হয়ে গেছে। ঘর ভরতে কাগজ ছেড়া। পুরো ঘর পরিষ্কার করে তিশাকে বললো,

-ঘরে গিয়ে সুয়ে পরো। আমি ঈশানে একা রেখে এসেছি। এখন জাচ্ছি।
শেহজাদ বেচারা অনেক বার নূহার সাথে একা একটু কথা বলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু লজ্জাবতি থাকে সুযোগি দেয়নি। কোনো মতে নূহার কাছে থাকা বোনের নাম্বার নিয়ে সেখানে মে*ছেজ করলো। নিজেকে হতভাগা মনে হচ্ছে তার। বউয়ের কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও মেছেজ করতে হচ্ছে তার।

রাত ১০ টা বাজে।সবাই সুতে চলে গেছে। নূরের সাথে শেহজাদ কে থাকতে দিয়েছে।
তিশা ঠাই মেরে এখনো বসে আছে সেই আগের জায়গায়। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের পলক পরছেনা তার। হঠাৎ কারো আসার শব্দ পেলো তিশা। দরজায় তাকাতেই দেখলো কেউ নেই। সে আবার অন্য দিকে তাকালো। হঠাৎ আবার শব্দ পেলো। এবার তাকাতেই দেখলো নূর এসেছে। নূর কে দেখতেই তিশার হাত পা কাপতে লাগলো। সে শ্বাস নিতে পারছেনা। ইচ্ছে করছে তাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে। সে চাইছে এখান থেকে উঠতে কিন্তু সে পারছেনা। তার হাত পা চলছে না। হয়তো এটাই ভালোবাসার প্রতি দুর্বলতা।

নূর এক পা একা করে কাছে আসছে আর তিশার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সহ্য করতে না পেরে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো তিশা। হঠাৎ মনে হলো তার কানের কাছের চুল গুলো কেউ গুজে দিচ্ছে। সে তাকাতেই দেখলো নুর। ভাবেই নি নূর এতোটা কাছে চলে এসেছে তার।

বে বল ফেলো। উঠে যেতেই নূর হাত টা খপ করে ধরলো। সাথে সাথে হালকা গোলাপী কাচের পাচটা চুড়ি ভেঙে মাটিতে পরে গেলো। নূর একটানে তিশাকে আবার দোলনায় বসালো।
তিশা অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। নূর দোলনার অন্য পাশে বসে পেছন থেকে সেই লাল ব্যাগটা বের করলো। তিশা আড়ে আড়ে তাকালো সেই ব্যাগটার দেকে। নূর তিশার দিকে ব্যাগটা এগিয়ে দিয়ে দিলো। তিশা অন্য দিকে তাকিয়ে চোখ মুছে বললো,

-এই জিনিস টা আমার না। তাই এটা আমার থেকে দুরে রাখুন। এটা যার তাকে গিয়ে দিন।
নূর শান্ত কন্ঠে বললো,
-এটা যার জিনিস তাকেই দিচ্ছি।
তিশা ব্যাগ টা নিচ্ছে না দেখে নূর নিজেই ব্যাগটি খুললো, খুলে একটা ডাইড়ি তিশার হাতে দিলো।

তিশা না চাইতেও তার মন খুব করে চাইলো ডাইরি টা খুলতে। অবাধ্য মনকে বোঝাতে না পেরে খুলেই ফেললো।
প্রথম পৃষ্ঠায় তাকাতেই সে অবাক হয়ে গেলো। তিশা একবার ডাইড়ির প্রথম পৃষ্ঠায় তাকাচ্ছে আরেকবার নূরের দিকে তাকাচ্ছে। তার চোখে পানি টল টল করছে। ডাইড়িটা বুকের সাথে মিশিয়ে জোরে একটা শ্বাস নিলো। তিশা বেশি শাড়ি পরেনা। তারপরও যখন যেই শাড়ি পরেছে সেই শাড়ি পরা সব ছবি এখানে আছে। আর তার শাড়ির সাথে মিলিয়ে নূরের পাঞ্জাবীর পড়া ছবি। সব গুলো একসাথে।
নূর অন্য দিকে তাকিয়ে বললো,

-জিনিস টা বোধহয় অন্য কারো। ভুলে তোকে দিয়ে ফেলছি। দে ফেরত দে।
তিশা ডাইরি টা বুকের সাথে শক্ত করে ধরে নূরকে জড়িয়ে ধরে কেদে উঠলো।
নূর তিশাকে না ধরে সরিয়ে দিয়ে বললো,
-ধরিস না। কী করিস এই গুলা।

তিশা চোখ মুছতে মুছতে নূর কে ছেড়ে দিলো।
নূর তিশার দিকে তাকিয়ে বললো,
-সব প্যাক করেছিস তো? কালকে আমি গিয়ে গাড়িতে তুলে দিবো।
-তারিয়ে দিচ্ছো?
-নাহ্। বউ করে আনবো।
– হঠাৎ চলে গেলে সন্দেহ করবে সবাই।
-তাই?
-হ্যা।
-আস্তা থেকে যা। যেতে হবে না।

নূর চলে যাচ্ছিলো। হঠাৎ তিশা পেছন থেকে বললো,
-তুমি আজও আমার শাড়ির সাথে পাঞ্জাবী মিলিয়ে পরেছিলে?
-তুই তো খেয়াল করিস নি পরেই কি হবে।
-দারাও না একবার একটা ছবি তুলে রাখি।
নূর আবার আসলো। একসাথে ছবি তুলে তিশাকে বললো,

-যা ঘরে গিয়ে ঘুমা। আর কাদতে হবে না। একটা মজা যে এতো কাদাবে আমি বুঝতে পারিনি। ব্যাগটা খুলে দেখিস। আরো অনেক কিছু আছে। আর হ্যা!
“ভালোবাসি”

তিশা ব্যাগটা হাতে নিয়ে দারিয়ে ছিলো। মনে হলো নূরের এই কথাটা তার গায়ে একটা দমকা হাওয়া বয়ে দিলো।
ব্যাগ টা নিয়ে ঘরে গিয়ে সব খুলে দেখতে লাগলো।
ডাইরি ভরা তাকে নিয়ে হাজারো কথা। নিজেকে নিজেই মনে মনে গালি দিচ্ছে তিশা। এই মানুষ টাকে সে কাল থেকে কতোই না কষ্ট দিয়েছে। কতোই না দুঃখ দিলো এই মানুষ টাকে।
সকালে তানিয়া যখন সব কিছু প্যাক করছিলো। হঠাৎ ফাতেমা এসে বললো,

শেহজাদ নাকি আরো দুদিন পর যাবে তাই তারা এখন যেতে পারবে না।
বসার ঘরে গিয়ে জানতে পারলো, মিসেস তমা নাকি অনেক বলেছে ঈশান আর তানিয়াকে নিয়ে যাবে। কিন্তু জামাল সিকদার কোনো ভাবেই রাজী হয় নি। তাই বাধ্য হয়ে তারা নিজেরাই চলে যাচ্ছে।

আয়ান থাকতে চেয়েছিলো। তিশা তমা কে বলেছে আয়ান কে যেনো নিয়ে জায়। এখানে অনেক মেয়েরা আছে কার সাথে না কার সাথে অসভ্যতামি করবে। এইজন্য তিশা তাকে নিয়ে যেতে বলে।

অবিনাশী পর্ব ১৬

আয়ানের এই প্রথম মনে হলো সে একা। একদম একা। তাকে কেউ ভালোবাসে না। তাকে কেউ পছন্দ করেনা। আজ যদি অন্য সব ছেলেদের মতো সেও সবার সাথে ভালো ব্যবহার করতো তাহলে সবার সাথে একসাথে থাকতে পারলো।

অবিনাশী পর্ব ১৯