অর্ধাঙ্গিনী পর্ব ২০
Mousumi Akter
রাত দশটা বাজে। রাজন এক মগ চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি নিয়ে বসেছে। চৌধুরী বাড়ির কেসটা সে দেখছে।বিভিন্ন ভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেও কোনো হদিস খুজে পাচ্ছেনা।
পর পর দু’টো খু’ন ও বাড়িতে। একজন গায়েব হয়েছে। পর পর তিন তিনটা ঘটনা।চৌধুরী বাড়ির কেউ যদি খু’ ন করে থাকে তাহলে নিজেদের বাড়ির মানুষদের কেন খু’ ন করবে। কেউ খু’ন করে তো নিজের বাড়ির বাগানে, বাড়ির রাস্তায় রেখে দিবেনা।
খু’ ন গুলো তো কোনো মেয়ে মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এত বিভৎস খু*ন কোনো পুরুষের পক্ষে ছাড়া করা সম্ভব নয়।খু’ন করে দেহ নিয়ে গেল কেন? আর মাথাটা বা রেখে গেল কেন? প্রাণহীন, মাথাহীন একটা দেহ কি কাজে লাগতে পারে? খু’ন তো অনেক উপায়ে করা যায়। দেহ থেকে মাথা কেন আলাদা করবে? অনেক গুলা প্রশ্ন রাজনের মাথায় কিলবিল করছে। গভীর রহস্যর গন্ধ্য পাচ্ছে। কেন যেন মনে হচ্ছে চৌধুরী বাড়িকে ঘিরেই কোনো গভীর রহস্য রয়েছে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
যে রহস্যর উন্মোচন খুব অবাক করা হবে।যা মানুষের ধারণার ও বাহিরে হবে।চৌধুরীদের গোপন শ’ত্রু ও কেউ হতে পারে। যে শত্রুতার জন্য এমন করতে পারে। ঘটনা যা হোক সেটা চৌধুরী বাড়ির সাথে কিছু না কিছু কানেকশন আছেই।চৌধুরী বাড়ির কথা ভাবতে ভাবতে রাজনের চোখের তারায় ভেষে উঠল পুষ্পের চেহারাটা।কেসের সমস্ত ফাইল বন্ধ করে দিল।কফির মগ নিয়ে উঠে জানালার পাশে দাঁড়াল।
পুষ্পের কথা ভাবতেই ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি ফুটল।চৌধুরী বাড়িতে যত গুলো মানুষ আছে তার মাঝে সব চেয়ে শান্ত-শিষ্ট চাহনি আর চেহারার মেয়েটা হল পুষ্প।কেমন যেন শান্ত একটা নদী। শীতল বাতাসের মত বয়ে যাচ্ছে।কেসের জন্য চৌধুরী পরিবারের সবার ফোন নাম্বার রাজনের কাছে আছে।নাম্বারগুলো থেকে বাছাই করল পুষ্পতা চৌধুরীর নাম্বার।নাম্বার টার দিকে তাকিয়েও কেমন যেন শান্তি শান্তি অনুভব হল রাজনের। পুষ্পের নাম্বার ফোনে তুলে কল করল। দু’বার কল বেজে যাবার পর পুষ্প ফোন রিসিভ করল। পুষ্পের মোলায়েম কন্ঠস্বর থেকে ফোন রিসিভ হতেই ভেষে এল একটি কথা।
” হ্যালো কে বলছেন?”
কন্ঠটা শুনেই হৃদপিন্ড কেমন থমকে গেল রাজনের। হৃদয়ের মাঝে শুরু হল তুমুল তোলপাড়। সেই তোলপাড় নিয়ে সালাম দিল।
“আসসালামু আলাইকুম।”
এত রাতে পুরুষালি কন্ঠস্বর শুনে পুষ্প খানিকটা অবাক হল। অবাক হয়েই সালামের উত্তর দিল,
“ওয়ালাইকুমুস সালাম। কে বলছেন?”
রাজন মৃদু হাসি দিয়ে বলল,
“কেমন আছেন ম্যাডাম।”
“ভাল, বাট চিনলাম না’ তো।”
“ধরুণ অচেনা কেউ আপনার খোজ নিতে ফোন দিয়েছে।”
” অচেনা কেউ আমার খোঁজ কেন নিবে?”
” এইযে এখন একা একা আছেন যদি ভয় টয় পান সেই খোঁজ নিচ্ছে।”
” আমি একা আছি আপনাকে কে বলল? আমার জামাই আছে সাথে।”
” আপনি তাহলে বিবাহিত। ”
“হ্যাঁ, তিনটা মেয়েও আছে আমার।”
“ওপস, সুন্দর কাহিনী। কিন্তু আমাকে কেন শুনাচ্ছেন? ডিস্টার্ব করব বলে।”
“হ্যাঁ। ”
“কল্পনাতে মানুষ কত কিছুই তো ভাবে। আপনিও না হয় এমন অদ্ভুত কিছু ভাবলেন। মনে মনে তিন সন্তানের মা হলেন। তাতে ক্ষতি কি।কল্পনাতে ভাবলে ক্ষতি কি।বিয়ের বয়স না হওয়া মেয়েও এখন তিন মেয়ের মা হচ্ছে।”
পুষ্প বুঝতে পারল তার মিথ্যা অপরপাশের মানুষ অনায়াসে টের পেয়েছে।আর সে অপরিচিত কেউ নয়। নিশ্চয়ই পরিচিত কেউ এভাবে ফোন দিয়েছে।পুষ উত্তেজিত কন্ঠে বলল,
“এই কে আপনি সত্যি করে বলুন? না হলে ফোন কেটে দিবো এখনি।”
রাজন মৃদু হাসল আবার ও।মৃদু হেসে বলল,
“তার আগে বলুন আপনার খুব একা একা লাগছে তাইনা?”
“কেন? একা লাগবে কেন?”
“আপনার ঘুমোনোর সঙ্গীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে।রাতে সুয়ে সুয়ে গল্প করার মানুষ টা এখন অন্য কারো বউ।এতদিন যার সাথে বেড শেয়ার করেছেন সে নেই।একা লাগাটা তো স্বাভাবিক।”
পুষ্পের অবাকের মাত্রা আরোও বাড়ল।সে অবাকের চরম পর্যায়ে পৌছে কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করল,
“আপনি কে বলুন তো সত্যিকরে। আমার হাঁড়ির খবর ও জানেন দেখছি।এত খবর কীভাবে জানেন।”
“আমি যেই হই না কেন? কাহিনী সত্য কীনা বলুন।”
“হুম সত্য। ”
“আপনার একাকিত্ব দূর করতে আমি সাহায্য করতে চাই।”
পুষ্প বেঁফাস কথা বলে ফেলল।তাচ্ছিল্যের সুরে বলল,
“কেন ঘুমোতে আসবেন নাকি?”
রাজন এবার হো হো করে জোরে হাসল।তার হাসির মাত্রা বাড়তে থাকল।পুষ্প বুঝতে পারল সে মারাত্মক বিশ্রি কথা বলে ফেলেছে।এই হাসিতে তার গায়ে জ্বালা ধরছে।পুষ্প বলল,
” এমন অদ্ভুত ভাবে হাসছেন কেন? ”
রাজন এইবার হাসি থামিয়ে খানিকটা দম নিয়ে বলল,
“পারমিশন দিলে ধন্য হবো ম্যাডাম। এত সুন্দরী মেয়ের পাশে কে না ঘুমোতে চায়।”
“দেখুন বাজে কথা বলবেন না।আমার ভাইয়াকে বললে আপনার খবর করে দিবে।”
রাজন বুঝতে পারল আর বেশীক্ষণ পরিচয় না দিয়ে কথা বাড়ালে তার কল এখনি কেটে যেতে পারে।তাই মোলায়েম কন্ঠে বলল,
“পায়ের ব্যাথা কমেছে ম্যাডাম। ”
তাৎক্ষনিক পুষ্পের মাথায় এল তার পায়ের ব্যাথার কথাতো রাজন ছাড়া আর কেউ জানেনা।কন্ঠটা চেনা চেনা লাগছিলো। এইবার সিওর হল এটা রাজন।পুষ্প এবার হেসে দিল।হেসে জবাব দিল,
“ওহ আপনি! তা আগে বলবেন না।”
“ইয়েস ম্যাডাম।কন্ঠটাও চিনলেন না।”
“আগে পরে তো ফোন দেননি, তা চিনব কীভাবে?”
“আমি হলে সাত সমুদ্রের ওপাশ থেকে হলেও আপনার কন্ঠ ঠিক চিনে নিতাম।এতে কোনো ভুল নেই।”
” তাই নাকি। তা কীভাবে চিনতেন শুনি মশাই।”
“কারণ এই একটা কন্ঠই আমার হৃদয়ে কঠিনভাবে ধারণ করা।যা হৃদয়ে থাকে তা-কি আর মস্তিষ্ক চিনতে ভুল করে ম্যাডাম।”
“তার মানে আমার কন্ঠ আপনার হৃদয় মস্তিষ্কে ধারণ করা।”
“জি।”
“আপনি মিথ্যা বলছেন।”
“আমি সত্য বলছি।”
“প্রুভ দিতে পারবেন সত্য বলছেন।”
“হ্যাঁ পারব।কি প্রুভ চায়।”
“এখনি আমার সাথে এসে দেখা করে যেতে হবে।”
“ওকে ডান।”
“শুধু শুধু ডান বলে দিলেন।পারবেন আসতে।”
“রাজন কিছুই শুধু শুধু বলেনা। তাছাড়া আপনার কচি পায়ের জন্য কষ্ট হচ্ছে।একটু দেখে আসলে মন্দ কি।”
“যার জন্য কষ্ট হচ্ছে খু’ন টা যদি সে করে তাকেও ফাঁসি দিবেন অফিসার।”
রাজন আবার হেসে জবাব দিল,
“আপনার হয়ে ফাঁ’ সি না’হয় আমি নিবো।”
বলেই রাজন ফোন কেটে দিয়ে গায়ের টি-শার্ট টা চেঞ্জ করে নিল।শ্যামববর্ণ শরীরে জড়ালো বাদামি রঙের একটা টি-শার্ট। নিজেকে বেশ পরিপাটি ভাবে প্রস্তুত করে নিল।তারপর ফোন করল কৃষ্ণ নামের একটি ছেলেকে।কৃষ্ণকে সাথে নিয়েই রাজন বের হবে।কৃষ্ণ রাজনের এলাকার ছোট ভাই।রাজনের এই কেসের বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদানের জন্য গোয়েন্দা হিসাবে রেখেছে। নিচে গিয়ে রাজন আধাঘন্টা মত সময় দাঁড়িয়ে আছে।আধাঘন্টা পর কৃষ্ণ বাইক নিয়ে এল।কৃষ্ণকে দেখেই রাজন কিছুটা অবাক হয়ে প্রশ্ন করল,
” তোর হাতে এত ফুল কেন,?”
কৃষ্ণ লাজুক চোখে তাকিয়ে বলল,
” দাদা পূজার লাল গোলাপ খুব পছন্দের। তাই আনতে গেছিলাম।”
” এই জন্য আধাঘন্টা দেরি।”
” জি দাদা, এইজন্য দেরি।”
রাজন বাইকে উঠে বলল, ” যেখান থেকে ফুল এনেছিস সেখানে নিয়ে চল।”
” কেন দাদা?”
” আমিও ফুল নিবো।”
কৃষ্ণ ঘটনা কিছু বুঝেও চুপচাপ গাড়ি চালাচ্ছে।রাজন বলল,
” আর কোনো তথ্য পেলি?”
” দাদা একটা মাথার খুলি পাওয়া গেছে জেলে পাড়ার গহীন বাগানে। আমার ছোট ভাইয়েরা বাগানে খেলতে গেছিলো। সেখানে গিয়ে দেখে এক জায়গায় ভেসে উঠেছে একটা খুলি।”
রাজন গভীরভাবে কিছু ভাবল।ভেবে বলল,
” ওখানের মাটি খুড়ে দেখিস আর কিছু পাওয়া যায় কীনা!”
” ওকে দাদা!”
পূর্ণতার সমস্ত সাজগোজের জিনিস ট্রান্সফার হয়ে চলে এসছে প্রভাতের ড্রেসিন টেবিলের সামনে।আজ সন্ধ্যায়-ই পুষ্প সব সাজ-গোজের জিনিস এনে সাজিয়ে দিয়ে গিয়েছে।পাশা-পাশি কিছু ড্রেস ও প্রভাতের আলমারিতে দিয়ে গিয়েছে।পূর্ণতা প্রভাতের ড্রেসিন টেবিলের সামনে বসে আছে।হাতে-পায়ে লোশন মাখাচ্ছে।এমন সময় প্রভাত ঘরে প্রবেশ করল।ঘরে প্রবেশ করেই প্রভাতের নজর গেল ড্রেসিন টেবিলের দিকে।সে ড্রেসিন টেবিলের আয়নায় দেখল নীল ড্রেস পরে পূর্ণতা বসে আছে।
ফর্সা শরীরে নীল কালার টা যেন আরোও চমকপ্রদ লাগছে।প্রভাত মোহাবিষ্ট আঁখিযুগলে তাকিয়ে আছে পূর্ণতার দিকে।পূর্ণতাকে যেন আগের চেয়ে এখন অধিক সুন্দর দেখায়।প্রভাত রুমে প্রবেশ করতেই পূর্ণতা আয়নায় প্রভাতকে দেখেছে।প্রভাতকে না দেখার ভান করে পূর্ণতা নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।পুরুষ মানুষ তার পছন্দের নারীর থেকে বেশীক্ষণ দূরে থাকতে পারেনা।পূর্ণতা কেমন যেন চুম্বকের মত প্রভাত-কে তার দিকে টানছে। প্রভাত বেশীক্ষণ আর দূরে সরে থাকতে পারল না।
ধীরে পায়ে পূর্ণতার দিকে এগিয়ে গেল।পূর্ণতার পেছনে গিয়ে দাঁড়াল।কোনো লজ্জা, কোনো জড়তা প্রভাতকে আটকাতে পারল না।চোখে মুখে নেশা ধরে গিয়েছে প্রভাতের।পূর্ণতার একদম কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়াল।খানিকটা ঝুঁকলো।তাতে প্রভাতের বুক পূর্ণতার পিঠের সাথে মিশল।প্রভাত পূর্ণতার দুই ঘাড়ে হাত রেখে গলা স্পর্শ করল।পূর্ণতার মাথার উপর প্রভাতের থুতনি।মেয়েদের সব চেয়ে স্পর্শকাতর জায়গা বোধহয় ঘাড়, গলা। স্পর্শ পেলেই সুড়সুড়ি লাগে।শিরশির করে শরীর।পূর্ণতার ও তাই হল।
সমস্ত শরীরের লোমকূপ দাঁড়িয়ে গেল।অজানা এক অনুভূতির জন্য শিহরণ বয়ে যাচ্ছে শরীরে।শরীর কেমন ভারী হয়ে এল।পূর্ণতা কি বলবে বুঝতে পারছে না।সে প্রভাতকে দূরে সরাতে চাইছে কিন্তু পারছে না।প্রভাতের স্পর্শতে এত মিষ্টতা সে আগে অনুভব করেনি।আয়নায় দু’জন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে।কারো মুখে কোনো কথা নেই। প্রভাত খানিক্ষন পর ভারী কন্ঠে বলল,
“হাতে -পায়ে এসব কি মাখছো পূর্ণতা।”
পূর্ণতাও ধীর ভারী কন্ঠে জবাব দিল,
“লোশন।”
প্রভাত দুষ্টু হেসে বলল,
“আমার পেট খারাপ করতে চাও?”
“আমি লোশন মাখলে আপনার পেট খারাপ করবে কেন?”
“কারণ কিছুক্ষণ পরে ওসব আর তোমার গায়ে থাকবে না যাবে আমার পেটে।”
“আপনার পেটে কিভাবে যাবে?”
“কারণ তোমাকে চুমু দিতে গেলে ওসব আমার পেটে যাবে। কারণ আমি তো শুকনো চুমু পছন্দ করিনা।ভেজা চুমু পছন্দ করি।”
বলেই প্রভাত পূর্ণতার মাথা থেকে থুতনি নামিয়ে আনল পূর্ণতার ঘাড়ে।অনায়াসে ওষ্ট বসিয়ে দিল পূর্ণতার ঘাড়ে।পূর্ণতা নড়ে, চড়ে উঠল।কিন্তু প্রভাত ওষ্ট সরাল না।চুম্বকের মত পূর্ণতাকে যেন টানতে শুরু করল।পূর্ণতা এবার টুল ছেড়ে উঠে খানিকটা দূরে দাঁড়াল।ঘাড়ে হাত দিয়ে ডলতে ডলতে বলল,
“এসব কি অসভ্যতা বুঝলাম না। আমাকে মে’ রে ফেলতে চাচ্ছিলেন নাকি।”
প্রভাতের ঠোঁটে বিশ্বজয়ের হাসি।নিঃশব্দে হাসতে হাসতে বলল,
“আদর করছিলাম, ভাল লাগেনি তোমার। আমার তো প্রচুর ভাল লেগেছে।বারবার চাই এমন।”
পূর্ণতা অগ্নিচোখে তাকিয়ে বলল,
“না, মোটেও ভাল লাগেনি, ট্রাস্ট মি! একদম বিশ্রী লেগেছে।”
প্রভাত আবার ও দুষ্টু হেসে বলল,
“অত নড়াচড়া করলে ভাল লাগবে কীভাবে।ফিলিংস এর দফারফা করে ছেড়েছে নড়ে।”
“এই পৃথিবীতে আপনার মত অত বড় অসভ্য টাইপ মানুষ আর দ্বিতীয়টা নেই।এত বিশী কথা কীভাবে বলেন।”
প্রভাত আবার ও পূর্ণতার কাছে এগিয়ে গেল ধীর পায়ে।প্রভাত এগিয়ে যেতেই পূর্ণতা পেছনে খানিকটা সরে গিয়ে বলল,
“একদম আমার কাছে আসবেন না বলে দিচ্ছি।”
“তাহলে তুমি কাছে এসো।একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।”
“কি কথা দূর থেকেই বলুন।”
“সব কথা দূর থেকে বলা যায় না সোনা।”
পূর্ণতা কাচুমাচু মুখে বলল,
“কিছু বলবেন না’তো।”
“না বলব না।কাছে এসো।”
পূর্ণতা ওড়নার মুড়ো কচলাতে কচলাতে প্রভাতের কাছে গেল।প্রভাত পকেট থেকে একটা লাল গোলাপ পূর্ণতার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
“আই লাভ ইউ পূর্ণতা।আমার সহজ সরল স্বীকারোক্তি আমি তোমাকে ভালবাসি।ভালবাসার রং লাল, র*ক্তের রং ও লাল।তাই নিদর্শন হিসাবে তোমাকে লাল র*ক্তের ন্যায় গোলাপ দিলাম।এটা আজীবন রেখে দিও কাছে।তোমাকে বাঁচাতে যদি কোনদিন পৃথিবীতে র*ক্তে*র বন্যা বইয়ে দিতে হয় তাও আমি পিছপা হবোনা পূর্ণতা।”
পূর্ণতা গোপাপ টা হাতে নিল।কিন্তু কোনো কথা বলল না।
প্রভাত পূর্ণতার দিকে তাকিয়ে আরোও একবার হেসে বলল,
“কখনো ভাবিনি আমার জন্য, আমাকে বাঁচাতে তুমি মিথ্যা বলবে।আজকের সকাল টা যেন অন্যরকম আমার কাছে।”
পূর্ণতার জবান এবার খুলল।সে শান্ত কন্ঠে জবাব দিল,
“আমি মিথ্যা বলিনি। আপনার জন্য মিথ্যা বলতে বয়ে গিয়েছে। খু*ন আপনি করেন নি এটা আমি জানি।তাই সত্য বলেছি।”
“আমি খু* ন করিনি সেটা প্রুভ করতেই তো মিথ্যা বললে।”
“সত্য কথার জন্য মিথ্যা বললে পাপ নেই।”
এমম সময়ে প্রভাতের ফোন বেজে উঠল।প্রভাত বিরক্ত হয়ে পকেট থেকে ফোন বের করতে করতে বলল,
“এই ফোনের গুষ্টির যন্ত্রণায় ফুলসজ্জা টাও ঠিকভাবে করতে পারব না।”
পূর্ণতা দেখল প্রভাতের ফোনে অজান্তার নাম্বার।পূর্ণতার কি হল সে জানেনা। ফুলটা প্রভাতের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,
অর্ধাঙ্গিনী পর্ব ১৯
“যান এটা গিয়ে আপনার বান্ধবী অজান্তাকে দিন। সে অনেক খুশি হবে।এসব ফুল টুল আমার ভাল লাগে না।”
বলেই পূর্ণতা বিছানায় গিয়ে গুটিসুটি মেরে চোখ বন্ধ করল।
প্রভাত ফোনের দিকে তাকিয়ে হা করে রইলো।এটা কী হল?