আমার আছে জল পর্ব ১১

আমার আছে জল পর্ব ১১
মাহিমা রেহমান

হোস্টেলে সমীপে এসে গাড়ি থামলে নেমে সোজা হাঁটা ধরে শিথি।একবার যদি পিছুমুখী হতো তাহলে হয়তো দেখতে পেত একজোড়া চোখ গভীর দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে আছে তার দিকে। শিথির যাওয়ার পানে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল নুসাইব।যতক্ষণ শিথিকে দেখা গেল ততক্ষন সেদিন তাকিয়ে রইল সে।যেই শিথি মিলিয়ে গেল,, সত্বর গাড়ি স্টার্ট দিয়ে সেও বেরিয়ে গেল নিজ গন্তব্যে।

বারান্দার দাঁড়িয়ে কফির মগে চুমুক দিচ্ছে তাহসিন। আকস্মাৎ তার ফোনটা বেজে উঠল। স্ক্রিনে বড় বড় অক্ষরে লেখা উঠল ‘রিমি’। বিরক্তিতে ললাট কুঁচকে গেল তাহসিনের।ফোনটাকে ছুঁড়ে মারল রুমের বিছানার ওপর।বারংবার ফোনটা বাজতে লাগল।সেদিক থেকে মনোযোগ সরিয়ে আপন চিত্তে তাহসিন ভাবতে লাগল,,
শিথিকে আগের রূপে দেখেই কি তার প্রেমে পূনরায় পড়ল সে?নাকি কখনো ভুলতেই পারেনি সে শিথিকে?রিমি কি কেবল তার মোহ ছিল?আবেগের বশবর্তী হয়েই কি সে শিথির সাথে এতো বড় অন্যায় করে ফেলল?
দুহাতে মাথা চেপে ধরল তাহসিন।এসব আর ভাবতে পারছে না সে। শিথি কি আর ফিরে আসবে তার কাছে কখনো? বাসবে কি তাকে আগের মত ভালো?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

অফিসের জন্য রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ল শিথি।রাস্তার মোড়ে এসে দেখতে পেয় ব্ল্যাক কালারের একটা গাড়ি পার্ক করা।সেদিক নির্নিমেষ তাকিয়ে রিকশা খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল শিথি।আকস্মাৎ একজন লোক তার সম্মুখে এসে বলে উঠল,
-“ম্যাম স্যার আপনার জন্য গাড়ি পাঠিয়েছে।বলেছে,,এখন থেকে প্রতিদিন আপনাকে এই গাড়িতে(তর্জনী আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে)করে অফিস যেতে।”
শিথি নির্নিমেষ লোকটার পানে তাকিয়ে বলে উঠল,
-“থেঙ্কস বাট তার আর কোনো প্রয়োজন নেই। এখন থেকে অফিস খুব তো একটা দূরে না।আমি রিকশা করেই যেতে পড়বো।”

লোকটা কিছুটা নিচু স্বরে বলে উঠল,
-“ম্যাম আপনি তো জানেনই?স্যার ঠিক কতটা কড়া আর রাগী।কালও নাকি আপনি লেট করে গিয়েছিলেন অফিসে।আজকে গেলে আপনাকে অনেক শাস্তি পেতে হবে।তাছাড়া আমাদের কোম্পানির রুলস অনুযায়ী বসের পি.এ অফিসের গাড়ি করেই অফিসে যায়।তাই প্লিজ ম্যাম আপনি গাড়িতে উঠে পড়ুন।”
শিথি রুদ্ধশ্বাস ত্যাগ করে বলে উঠল,
-“আপনি প্লিজ যান।আমি রিকশা করেই আসব।আমি রিকশাতেই বেশি কমফোর্ট।আর লেট হবে না আর ইনশাল্লাহ।”
কথাটা বলে শিথি একটা রিকশা ডেকে তা/তে উঠে বসল।

রিকশা থেকে নেমে অনেকটা দৌড়ের মত করে ভিতরে প্রবেশ করল শিথি।লিফটে দেখা হয়ে গেল সেদিনকার সেই ছেলেটির সহিত।ছেলেটি ওষ্ঠ কোণে মুচকি হাসি ঝুলিয়ে শিথির উদ্দেশ্যে বলে উঠল,
-“আরে আপনি সেই মেয়েটি না?যে বাহিরে দাঁড়িয়ে আমার সাথে কাল মিটিংয়ে অ্যাটেন্ড করবেন।”
শিথিল মাথা নেড়ে সায় জানাল। ছেলেটি পুনরায় বলে উঠল,
আপনার সাথেতো পরিচয়ই হলো না।আপনি নিশ্চয়ই স্যারের নতুন পি.এ?
শিথি পুনরায় মাথা নাড়াল।ছেলেটি এবার বলে উঠল,

-” আমি রোহান তালুকদার।এখানে একাউন্টেন্ট হিসেবে আছি।”
-“আমি শিথি।”
-” যদি কিছু মনে না করেন,,তাহলে একটা কথা বলি?”
শিথি মাথা নেড়ে সায় জানাল। রোহান পুনরায় বলে উঠল,
-“যেহেতু আমরা একে-অপরের কলিগ,,সেক্ষেত্রে আমরা একে-অপরকে বন্ধু হলে ব্যাপারটা কিন্তু বেশ জমবে!এতে একে-অপরকে ভালো করে চিনতে জানতে পারব।তাছাড়া করো কোনো প্রয়োজনে একে-অপরের সাহায্য ও করতে পারব।তাই বলছিলাম কি..আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি?”

শিথি মৃদু হেসে বলল,
-“জি, অবশ্যই।”
তাদের কথা মাঝে লিফট এসে থামল দশম ফ্লোরে।বেরিয়ে পড়ল দুজন।কথা বলতে বলতে অফিসের ভীতর প্রবেশ করল।রোহান একের পর এক প্রশ্ন করেই গেল আর শিথি কেবল হু-হা করে উত্তর দিল তার সকল প্রশ্নের।ভেতরে প্রবেশ করতেই ম্যানেজার শিথির উদ্দেশ্যে বলল,
-“অফিসে আসার সাথে সাথে স্যারের কেবিনে যাবেন।এক মিনিট এদিক-সেদিক হলে আপনার চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে। স্যার কিন্তু ভয়ঙ্কর রাগী।একবার রাগতে পারলে সব কিছু তছনছ করতে তিনি একবারও দ্বিধাবোধ করবেন না।তাই তাড়াতাড়ি যান।”

শঙ্কিত হলো চিত্ত।কোনদিক না তাকিয়ে ছুট লাগল নুসাইবের রুমের দিকে।কয়েকবার নক করবার পরও যখন কোনো রেসপন্স হলো না,,তখন ভিতরে প্রবেশ করল শিথি। চারপাশে চোখ বুলিয়ে কাউকে কোথাও দেখতে না পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্যত হতেই কিছু একটার সাথে মাথা ঠুকল তার।কপাল কুঁচকে কিসের সাথে টাক খেল তা দেখার জন্য চোখ তুলে তাকাল উপরের দিকে।দৃষ্টিতে এসে ধরা দিল নুসাইবের প্রতিচ্ছবি।নিজের এতো সন্নিকটে নুসাইবকে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে গেল শিথি।।ত্বরিত পিছিয়ে যেতেই পায়ের সহিত পা লেগে পড়ে যেতে নিলেই দুটো বলিষ্ঠ হাত তার কোমড় আঁকড়ে ধরল।

গোলগোল চোখ করে নুসাইবের দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে রইল শিথি।শিথির এহেন অপলক দৃষ্টি দেখে বাঁকা হাসল নুসাইব। ক্রুটিল হেসে শিথির উদ্দেশ্যে বলে উঠল,
-“আমি জানি আমি অনেক হ্যান্ডসাম।কিন্তু আমার এই সৌন্দর্য কেবল আমার ওয়াইফির জন্য।কিন্তু মিস.আপনি তো দেখছি একদিনই আমার সবকিছু চোখ দিয়েই গিলে খাচ্ছেন।কেমন ইফটেজারদের মত তাকিয়ে আছেন সেই তখন থেকে।চোখ দিয়েই আপনি আজ আমাকে একেবারে কলঙ্কিত করে দিলেন(কিছুটা দুঃখ প্রকাশের ভঙ্গিতে)।”

এমন গা জ্বালানো কথা কর্ণপাত হতেই চেতনা ফিরল শিথির।আগুনের ফুলকির মত জ্বলে উঠল তার সর্বাঙ্গ।নুসাইবের বাহুডোর হতে ছুটার জন্য ছটফট করতে লাগল।শিথির এহেন ছোটাছুটি দেখে হাতের বাঁধন আরো শক্ত করল নুসাইব।কিঞ্চিৎ ব্যাথা অনুভব করল শিথি।বলে উঠল,
-” আহ! স্যার লাগছে আমার। ছাড়ুন বলছি আমায়!”
কথাগুলো কর্ণপাত হতেই শিথির দিকে কিছুটা ঝুঁকল নুসাইব। ব্যঙ্গাত্মক স্বরে বলে উঠল,

-“আমার কি মনে হয় জানেন মিস. শিথি?আপনি বারংবার আমার সান্নিধ্য পেতে এখানে-সেখানে স্লিপ খান।আর প্রতিবার আমিই গিয়ে আপনাকে সেভ করি।ব্যাপারটা কেমন নাটকীয় নাহ?”
রেগে বিভৎস হলো শিথি।কিঞ্চিৎ রাগান্বিত স্বরে বলে উঠল,
-“আপনার কি মনে হয় আমি এগুলো ইচ্ছে করে করি?কেবল আপনার কাছে আসার জন্য?”
এক ভ্রু কিঞ্চিৎ উচুঁ করে নুসাইব বলে উঠল,

-“হতেও পারে, সুন্দরী মেয়েরা আবার এই আরহিয়ান নুসাইব চৌধুরীর সান্নিধ্য পেতে বেশ ছটফট করে।”
শিথির আর সহ্য হচ্ছে না এসব।কঠোর কণ্ঠে নুসাইবকে বলে উঠল,
-“ছাড়ুন বলছি আমাকে।”
কিছুটা সিরিয়াস কণ্ঠে এবার নুসাইব বলে উঠল,
-“সিউর ছেড়ে দিব?”
ঝাঁঝালো কন্ঠে শিথি বলে উঠল,
-“হ্যা ছাড়ুন আমাকে এখনি।”

নুসাইব তার বলিষ্ঠ হাত জোড়া আকস্মাৎ সরিয়ে নিল শিথির কোমড় থেকে। ভকড়ে গেল শিথি।ত্বরিত শক্ত হাতে চেপে ধরল নুসাইবের কাধ জোড়া।ঘনঘন নিশ্বাস ত্যাগ করে নিজেকে স্বাভাবিক করল।শঙ্কিত কণ্ঠে নুসাইবের উদ্দেশ্যে বলে উঠল,
-“ছাড়লেন কেনো আমাকে?এখন যদি নিচে পড়ে যেতাম।”
ভাবহীন ভঙ্গিতে নুসাইব বলে উঠল,

-“আপনি নিজেই তো বললেন,,আপনাকে ছেড়ে দিতে।বায় দা ওয়ে,, আপনি কিন্তু আমার কাঁধে নিজের নখ দাবিয়ে দিয়ে আমার বউকে তার অধিকার থেকে ক্ষুণ্ন করলের।এর দায়ভারকি এখন আপনি নিতে পারবেন? মিস. শিথি।(এক ভ্রু কুঁচকে)আমাদের বিশেষ মুহূর্তে, কেবল আমার বউয়ের অধিকার এটা।আমাকে তার নখ দিয়ে ছিন্ন-ভিন্ন করে দেওয়া।বায় এনি চান্স,, যদি আমার ফিউচার ওয়াইফি এসব দেখতে পারে? নিশ্চয়ই ভাববে তার বর বিয়ের আগেই অন্য নারীর সহিত মধু চন্দ্রিমা সেরে নিয়েছে।তাই আপনার নখের দ্বারা সৃষ্ট দাগ আরো গভীর হওয়ার পূর্বেই নিজের নখ গুলোকে আমার কাধ থেকে সরান।”

লালবর্ণ ধারণ করল শিথির কপোল জোড়া।সত্বর নুসাইবকে ছেড়ে সরে দাড়াল প্রায় দুই হাত দূরে।লজ্জায় মূর্ছা যাচ্ছে শিথি। ছিঃ ছিঃ ছিঃ! এই লোকের মুখে কিছুই কি আটকায় না? নিলজ্জ লোক একটা। শিথির এহেন লজ্জা পাওয়া দেখে ভ্রু কুঁচকে ফেললে নুসাইব।কিঞ্চিৎ হেসে গম্ভীর স্বরে শিথির উদ্দেশ্যে বলে উঠল,
-” আপনি যেন লেট করে না আসেন অফিসে,,তার জন্য অফিস থেকে আপনার জন্য কার পাঠানো হয়েছিল।কিন্তু আপনি তা রিজেক্ট করে রিকশা করে এসেছেন।ফলস্বরূপ আজকেও লেট করে এসেছেন।এখন আপনি নিজেই বলুন,,আপনাকে কি শাস্তি দেয়া যায়।

লজ্জাকে বিদেয় জানিয়ে বিস্মিত কণ্ঠে শিথি বলে উঠল,
-“কিন্তু আমি স্যার একদম কারেক্ট টাইমে এসেছি।
ঘাড় বাঁকা করে শিথির দিকে তাকাল নুসাইব।
এক পা এক পা করে এগিয়ে আসতে লাগল শিথির দিকে।শঙ্কিত মনে আগের জায়গায় শক্ত হয়ে দাড়িয়ে রইল শিথি।শিথির সান্নিধ্যে এসে বেশ কিছুটা ঝুঁকে মুখো-মুখি হলো নুসাইব।সহসা শক্তি প্রয়োগ করে একদম কাঁচের দেয়ালের সহিত শিথির নরম দেহটা চেপে ধরল। আঁতকে উঠল শিথি।চোখ-মুখে এসে হানা দিল ভয়ের ছাপ।কম্পিত কণ্ঠে বলে উঠল,
-“কি করছেন কি স্যার?দূরে সরুন বলছি।আর ছাড়ুন আমাকে।”

দূরে যাওয়া বিপরীত, শিথির আরো কাছে এসে দাঁড়ালো নুসাইব। পুরুষালি ভারী নিশ্বাস চোখ-মুখে উপচে পড়তেই ভয়ে সিটিয়ে গেল শিথি।কিছু বলার জন্য উদ্যত হবে আকস্মাৎ নুসাইব প্রশ্ন করে উঠল,,
-“অফিস কয়টার দিকে শুরু হয়?
গলা ভেঙে আসছে শিথির।শঙ্কিত কন্ঠে বলে উঠল,
-“দদশটার।”

-” কিন্তু আপনি অফিসে এসে পৌঁছেছেন কখন? দশটা এক মিনিটে।লেট হলো কত মিনিট?এক মিনিট।এক মিনিটে কতো কাজ করা যায় জানেন? সো আশা করছি কাল থেকে অফিসের গাড়ি করেই আসবেন।কি আসবেন তো?”
শিথি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠল,
-“জি।”
শিথি এহেন কম্পিত ওষ্টের দিক নির্নিমেষ তাকিয়ে চোখ ঘুরিয়ে নিল নুসাইব। কিছুটা দূরে সরে শিথির দিকে না তাকিয়েই বলে উঠল,

-“আপনার ওষ্ঠ জোড়ার এহেন কাঁপা কাঁপা আমার মোটেও সহ্য হচ্ছে না মিস.শিথি।বলা যায় না,,যেকোনো সময় এরা আমার দ্বারা ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যেতে পারে। সো বি কেয়ারফুল (তর্জনী আঙ্গুল নাড়িয়ে থ্রেট দেয়ার ভঙ্গিতে)
ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে মাথা কাৎ করে সায় জানাল শিথি।এবার কিছুটা গলা ঝেড়ে শিথর উদ্দেশ্যে বলে উঠল নুসাইব
-“যান আমার জন্য কফি নিয়ে আসুন।”,

কথাটা শেষ হওয়ার সাথে সাথে সময় বিলম্ব না করে একপ্রকার ছুট লাগাল শিথি রুম থেকে বের হওয়ার জন্য। শিথির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করল নুসাইব।
পাঁচমিনিট বিলম্বের পর কফি সমেত ফিরে এসে তা নুসাইবের হাতে ধরিয়ে দিল শিথি।নুসাইব কফির মগটি শিথির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে উঠল,
-“আগে আপনি খান।”

চোখ-মুখ কুঁচকে ফেলল শিথি।এই লোকের আর সন্দেহ করা গেল না?এই লোক এখনো কিনা ভাবছে,,সে তার কফিতে বিষ প্রয়োগ করবে?বিরক্তিতে মুখ তেতো হয়ে উঠল শিথির।হাত বাড়িয়ে মগ নিয়ে আলগোছে তাতে চুমুক দিল সে।কি তেতো কফি! বমি এসে গেল তার।বিতৃষ্ণাময় মুখ বানিয়ে সত্বর কফিটা ফেরত দিল নুসাইবকে।তার হাত থেকে কফিটা নিয়ে মগের আশেপাশে কিছু একটা খুঁজতে লাগল নুসাইব।

সহসা শিথির ওষ্ঠ স্পর্শিত স্থানটিতে নিজের ওষ্ঠ লাগিয়ে কফি পান করতে আরম্ভ করল সে। চকিতে নুসাইবের দিকে তাকিয়ে রইল শিথি।করল কি এই লোক?তার খাওয়া এঁটো হয়ে যাওয়া কফি,তার উপর তারই মুখ লাগালো জায়গার নিজের মুখ লাগিয়ে কি করে খাচ্ছে এই লোক?এক ভ্রু উচুঁতে তুলে নুসাইবের দিকে তাকিয়ে রইল শিথি। মাঝেমধ্যে এই লোক কি যে করে?কিছুই মাথায় ঢুকে না তার।

অকস্মাৎ মুঠোফোনটি বেজে উঠল নুসাইবের।ল্যাপটপ থেকে চোখ তুলে ফোনটি হাতে তুলে নিয়ে কল রিসিভ করল সে।অপরপাশে ব্যক্তির সহিত কথা শেষে শিথিকে ডাক পাঠাল সে।সত্বর নুসাইবের রুমে এসে হাজির হলো শিথি।অত্যন্ত নম্র স্বরে জিজ্ঞেস করে উঠল,
-“স্যার ডেকেছিলেন আমাকে?কোনো প্রয়োজন?”
শিথির উপর থেকে নিচ পর্যন্ত একবার গভীর চোখে পর্যবেক্ষণ করল নুসাইব।পরমুহুর্তে বলে উঠল,
-“আমার সাথে কনফারেন্স রুমে চলুন।মি. তাহসিন আসছে।আর পনেরো মিনিট পর একটা মিটিং হচ্ছে।”

কনফারেন্স রুমে বসে আছে সকলে তখনই আগমন ঘটল নুসাইবের।তার পিছন পিছন বেশ কয়েকটা ফাইল হাতে প্রবেশ করল শিথি।ক্ষণকাল বাদ আগমন ঘটল তাহসিনের।চারপাশে চোখ বুলিয়ে অতি সন্তর্পণে গিয়ে বসে পড়ল শিথির পাশে।কাউকে নিজের পাশে বসতে দেখে পাশ ফিরে তাকাল শিথি। তাহসিনকে নিজের পাশে দেখে ভীষন রেগে গেল সে।সহসা উঠে দাঁড়াল। শিথিকে হুট করে এভাবে দাঁড়াতে দেখে, এক ভ্রু কিঞ্চিৎ উচুঁ করে শিথির উদ্দেশ্যে গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠল নুসাইব,

আমার আছে জল পর্ব ১০

-“এনি প্রবলেম মিস. শিথি”
শিথি দুদিকে মাথা নেড়ে ‘না বোধক’ বুঝাল।নুসাইব পুনরায় রাশভারি কন্ঠে বলে উঠল,
-“তাহলে নিজের জায়গায় বসে পড়ুন।এখনই মিটিং শুরু হবে।”

আমার আছে জল পর্ব ১২