আমার আছে জল পর্ব ১২

আমার আছে জল পর্ব ১২
মাহিমা রেহমান

মিটিং শেষে গটগট পায়ে কনফারেন্স রুমে থেকে বেরিয়ে গেল নুসাইব।যাওয়ার পূর্বে শিথির দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে বলে গেল,
“ফাইলগুলো নিয়ে তাড়াতাড়ি আমার কেবিনে আসুন।”
নুসাইব বের হওয়ার পর পর এক এক করে বের হয়ে যেতে লাগল সকলে।শিথি ফাইলগুলো তুলে কেবল বেরোতে যাবে,,সে মুহুর্তে তার পথ আঁটকে দাঁড়ালো তাহসিন।বিরক্তিতে মুখ কুঁচকে গেল শিথির।কি চায় তাহসিন তার কাছে?আর কি বা চাওয়ার আছে?সে তো তার কাছ থেকে মুক্তি চেয়েছে।চেয়েছে রিমিকে।তাইতো তাহসিনকে মুক্তি দিয়ে নিজে দাড়িয়ে থেকে তাদের দুজনের বিয়ে দিয়েছে সে।আর কি চাই এখন তাহসিনের তার কাছ থেকে?নাকি তার কাঁটা ঘায়ে বারংবার নুনের ছিটা দিয়ে আসে সে? শিথি অত্যন্ত ঝাঁঝালো স্বরে তাহসিনের উদ্দেশ্যে বলে উঠল,

-“কি সমস্যা তোমার?বারবার এভাবে আমার পথ কেনো আটকাতে যাও।আর কি চাই তোমার আমার কাছ থেকে?আর কি পেলে আমার পিছু ছাড়বে তুমি?”
শিথির দিকে পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাহসিন আনমনে বলে উঠল,
-“যদি বলি তোমাকে!”
ভয়ঙ্কর রেগে গেল শিথি। বাজখাঁই কণ্ঠে বলে উঠল,
-“কি বললে তুমি?”
চৈতন্য ফিরতেই তাহসিন আমতা আমতা করে বলতে লাগল,
-“না না কিছু না।আচ্ছা ফাইলগুলো আমার হাতে দাও।তোমার বহন করতে নিশ্চয়ই কষ্ট হবে।”
তাচ্ছিল্য হাসল শিথি।অকপট কণ্ঠে বলে উঠল,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

-“আমার কষ্ট নিয়ে ও বুঝি ভাবা হয় তোমার?অথচ আমার আমার হৃদয়ের সবচেয়ে গভীর ক্ষতটা কিন্তু তোমারই করা।”
শিথির চোখের দিকে তাকাল তাহসিন।এই চোখ জোড়ায় নিগূঢ় আঘাতের বেদনা দেখতে পাড়ছে সে।বুকের মধ্যিখানে আকস্মাৎ ব্যথা অনুভব করল তাহসিন।এক পা এক পা করে শিথির দিকে এগিয়ে এলো সে।ফাইল গোছাতে ব্যস্ত শিথি।তাহসিনকে নিজের এতো সন্নিকটে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকাল সে। সহসা শিথির হাতজোড় আলগোছে পাকড়াও করল তাহসিন।চকিতে তাহসিনের হাতের মধ্যিখানে থেকে নিজের হাত জোড়া বের করার জন্য চেষ্টা করতে লাগল শিথি।ব্যথিত কণ্ঠে শিথির উদ্দেশ্যে তাহসিন বলে উঠল,

-“তোমার চোখ দুটোয় আমি খুব গভীর কষ্টের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেরেছি শিথি।খুব কি দরকার ছিল আমাকে ছেড়ে চলে আসা।এলে তো এলে একদম শহর ছেড়ে চলে এলে?আমরা কি পারতাম না একই ছাদের নিচে থাকতে? চল শিথি ফিরে চল।”
ঝাঁঝালো কণ্ঠে তাহসিনের উদ্দেশ্যে শিথি বলে উঠল,

-“হাত ছাড়ো বলছি আমার।তোমার মত নোংরা লোকের সাহস কি করে হয় আমার হাত ধরার?তোমার স্পর্শে আমার গা গুলিয়ে আসছে।ভীষন রকমের ঘেন্যা ও হচ্ছে।আর কি বললে? এক সাথে একই ছাদের নিচে থাকতে?মাথায় কি সমস্যা দেখা দিয়েছে তোমার?নাকি ভুলে যাওয়ার রোগ হয়েছে?কোনটা?তোমার কি মনে নেই,,তুমি নিজে আমার কাছে মুক্তি চেয়েছো। সেখানে এক সাথে একই ছাদের নিচে থাকার প্রশ্ন আসল কোথা থেকে?তোমার এসব আজেবাজে কথা শেষ হলে এবার আমার পথ ছাড়ো।”
কথাগুলো বলে তাহসিনকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল শিথি।ব্যথিত নয়নে শিথির যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকল তাহসিন।

ফাইলগুলো হাতে নুসাইবের কেবিনে প্রবেশ করল শিথি।শিথির দিকে তীর্যক চাহনি নিক্ষেপ করে দৃঢ় কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠল নুসাইব,
-“এই সামান্য কয়টা ফাইল নিয়ে আসতে এতো সময় ব্যয় করতে হলো আপনার?নাকি অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত ছিলেন?”
ভকড়ে গেল শিথি। আমতা আমতা করে বলে উঠল,
-“না স্যার তেমন কিছুই না।আসলে ফাইলগুলো কিছুটা ভারী ছিলতো তাই হাত থেকে একবার পড়ে গেছিল।ওগুলো পুনরায় উঠিয়ে নিয়ে আসতে একটু সময় ব্যয় হয়েছে।।”

নুসাইব নিজের দৃষ্টি আরো প্রগাঢ় করল।সন্দেহ জনক কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠল,
-“তাই?”
শিথি মাথা নেড়ে সায় জানাল।নুসাইব পুনরায় বলে উঠল,
-“ঠিক আছে।এবার ঝটপট তৈরি হন মিস. আমরা এখনই প্রজেক্টের ওইখানে যাচ্ছি।সাথে যাচ্ছেন মি. তাহসিন। সো বি ফার্স্ট।”

গাড়ি এসে নির্দিষ্ট গন্তব্যে থামলেই সকলে নেমে পড়েল।নুসাইব এগিয়ে গেল প্রজেক্টের দিকে তার পিছু পিছু গেল শিথি।কেবল কাজ শুরু হয়েছে।শিথির পিছু পিছু বডিগার্ডের মত অবস্থান করল তাহসিন। তার এহেন কাজে ইষৎ বিরক্ত হয়ে সাইড দিল তাকে শিথি সামনে যাওয়ার জন্য।কিন্তু সে নাছোড়বান্দা আগের অবস্থান থেকে একচুল ও নড়ল না।সমীপে এগিয়ে যেতে থাকল নুসাইব।প্রজেক্টের কাজ দেখায় মগ্ন হলো সে। চারপাশে কি হচ্ছে এতে তার কোনো খেয়াল নেই।কাজের প্রতি সর্বদা সিরিয়াস সে।শিথি আর তাহসিনকে ফেলে অনেকরই এগিয়ে গেছে নুসাইব।

বিরক্তিতে ললাট কুঁচকে ফেলে শিথি।তাহসিনের সমস্যাটা ঠিক কোথায়?তাই বুঝতে পারছে না শিথি।কোথায় নুসাইবের সহিত পা মিলিয়ে সামনে থাকবে তা না করে তার পিছু পিছু ঘুরছে।চারপাশ বেশ পিচ্ছিল।পানি দেয়ার কারণে হয়তো এমনটা হয়েছে।কেমন কাঁদা কাঁদা হয়ে আছে।এক তো ঠিক মত হাঁটা যাচ্ছে না তার উপর এই তাহসিন!এবার কিছুটা রাগ নিয়ে তাহসিনের দিকে ফিরল শিথি। সহসা পড়ে যেতে নিলেই সত্বর শিথির দুইবাহু ধরে তাকে সামলে নিল তাহসিন।বলে উঠল,

-“আস্তে হাঁটো, দেখছো না জায়গাটা কেমন স্যাঁতসেতে।পড়ে যাবে তো।এখনই তো পড়ে
যাওয়ার জোগাড় হয়েছিল।”
ঝাড়া মেরে তাহসিনের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিল শিথিল। বাজখাঁই কণ্ঠে বলে উঠল,
-“সমস্যা কি তোমার?আর এতো সাহস আসে কোথা থেকে তোমার?কোন সাহসে বারবার আমাকে বিনা অনুমতিতে স্পর্শ করতে যাও।নিজের লিমিটে থাকো।একদম নিজের লিমিট ক্রস করার চেষ্টা করবে না।”

তাহসিন এবার কিছুটা রেগে গেল।শক্তহাতে শিথির বাহু জোড়া চেপে ধরে মৃদু চিৎকার করে বলে উঠল,
-“তোমাকে স্পর্শ করতেও বুঝি আমার আজকাল পারমিশনের প্রয়োজন হবে?ভুলে যেও না আমার স্ত্রী তুমি।আমার যখন ইচ্ছে আমি তখনই তোমাকে স্পর্শ করতে পারি।”
রাগে লালবর্ন ধারণ করল শিথির সম্পূর্ণ মুখশ্রী।চিৎকার করে বলে উঠল,

-“লজ্জা করে না আমাকে নিজের স্ত্রী বলতে?ভুলে গেছো আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে?তাই আমাকেও তুমি আর যখন তখন স্পর্শ করতে পারবে না।তুমি এখন আমার জন্য কেবল মাত্র একজন বেগানা পুরুষ বুঝেছো।হাত ছাড়ো বলছি আমার।”
এবার আরো কিচটা শক্ত করে শিথির বাহু চেপে ধরল তাহসিন।ব্যথা অনুভব হলো শিথির। ঝাঁঝালো স্বরে বলে উঠল,
-“লাগছে আমার তাহসিন। ছাড়ো বলছি।”
তাহসিন পূর্বের ন্যায় রাগমিশ্রিত কণ্ঠে বলে উঠল,

-“আমার থেকে ছাড়া পেয়ে আজকাল বেশ উড়ছো দেখছি।নাকি আমার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই,, এতো সহজে আমার আর রিমির ব্যাপারটা মেনে নিলে।খুব তাড়া করে বিয়ে ও দিলে।কোন স্ত্রী এতো সহজে নিজের স্বামীকে অন্য নারীর সাথে ভাগ করে।এখনতো আমার তোমার মধ্যেই কেমন ঘাপলা ঘাপলা লাগছে।”
চোখদুটো বুঝে নিল শিথি।এখন তার নিজের উপরই খুব ঘৃনা হচ্ছে।এমন একটা নিচু প্রকৃতির মানুষকে সে ভালোবেসেছে?যে কিনা এখন তার চরিত্রের উপর আঙ্গুল তুলছে।ঘনঘন নিশ্বাস ত্যাগ করল শিথি।চোখ খুলে মৃদু স্বরে তাহসিবের উদ্দেশ্যে বলে উঠল,

-“তোমার মত নিম্ন প্রজাতির কিছু মানুষগুলো কেবল এতো নোংরা নোংরা চিন্তা নিজের মস্তিষ্কে ধারণ করতে হবে। ঘৃনা হচ্ছে নিজের উপর কোনো একসময় তোমার মত এতটা নিচু প্রকৃতির মানুষকে আমি ভালোবেসেছি।”ছাড়ো বলছি আমাকে।”
আরো রেগে গেল তাহসিন।বাজখাঁই কণ্ঠে বলে উঠল,
-“ভালোবেসেছো মানে?এখন বাসো না?ওহ আই সি,,এখন নিশ্চয়ই তোমার মনে অন্য কারো বসবাস। এজন্যই তো এতো সহজে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিলে তাই না? তা কোথায় তোমার সেই ভালোবাসার মানুষ? নিশ্চয়ই ঢাকাতেই আছে সে।যার জন্যই তো একেবারে চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকা চলে এলে।”

নিজেকে শান্ত করে,, মৃদু কন্ঠে বলে উঠল শিথি,
-“নোংরা মানুষগুলো নিজের নোংরামো ঢাকতেই অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে দেয়।তোমার সাথে তর্কে যেতেও আমার আত্মসম্মানে লাগছে। ছাড়ো বলছি আমাকে। অনেক হয়েছে আর কোনো প্রকার সিনক্রিয়েট করো না।আশেপাশের মানুষ দেখছে আমাদের।”

সত্বর শিথিকে ছেড়ে দিল তাহসিন।গটগট পায়ে এগিয়ে গেল সমীপে।আকস্মাৎ নারী কন্ঠের চিৎকার কর্নগোচোর হয়েই চকিতে পিছুমুখী হলো তাহসিন। শিথিকে নিচে পড়ে থাকতে দেখে ছুটে এলো শিথির দিক।গিয়ে নিজের হাত বাড়িয়ে দিল।কিন্তু শিথি তার হাত ধরল না।নিজের মতো বারংবার উঠার চেষ্টা করল।কিন্তু প্রতিবারই সে ব্যর্থ হলো।পকেটে দুহাত গুঁজে দাড়িয়ে দাড়িয়ে শিথির কান্ড-কারখাা দেখতে চলছে তাহসিন।বারবার চেষ্টা করেও উঠতে পারছে না শিথি।এবার নিজেকে ঈষৎ শক্ত করে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করল শিথি।কিঞ্চিৎ উঠল সহসা এক চিৎকার দিয়ে নিচে বসে পড়ল। মৃদু হেসে শিথির মুখোমুখি বসে পড়ল তাহসিন।সূক্ষ্ম কণ্ঠে বলে উঠল,

-“সবসময় এতো আত্নসম্মান দেখতে নেই।বিপদের সময় কেউ নিজ থেকে সাহায্য করতে চাইলে অবশ্যই তার সাহায্য নেয়া দরকার।কারণ কখনো কখনো আপনি এমন সব সমস্যার মধ্যে পড়ে যেতে পারেন,, যা কেবল ওপর পাশের ব্যক্তির দ্বারা সমাধান করা সম্ভব।তাই তাড়াতাড়ি আমার হাত ধরে উঠার চেষ্টা করো।”
বলেই হাতটা বাড়িয়ে দিল শিথির দিকে।মুখ ঘুরিয়ে নিল শিথি।এই লোকের সাহায্য সে কোনোভাবেই নিতে রাজি না।কিন্তু এই কাঁদার মধ্যেই বা আর কতক্ষন বসে থাকবে?

তাহসিনের কণ্ঠ পুনরায় কর্ণপাত হতেই তার দিকে ফিরে তাকাল শিথি।তাহসিন পুনরায় বলে উঠল,
-“চিন্তা ভাবনা শেষ হলে এবার কি উঠবে?”
মুখ কুঁচকে নিল শিথি।পরমুহুর্তে কিছু একটা ভেবে তাহসিনের হাতের মধ্যে নিজের হাত রাখল। তড়িৎ শিথিকে টান মারল তাহসিন।সহসা শিথি দিল এক চিৎকার।সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না সে।পুনরায় নিচে বসে পড়ল।কিছু বুঝে উঠার আগে আকস্মাৎ শিথিকে পাঁজা কোলে তুলে নিল তাহসিন।

নিজের মতো প্রজেক্টের কাজ পর্যবেক্ষণ করতে করতে পিছুমুখী হলো নুসাইব।চমকে উঠল সে। শিথি কোথায়?তাহসিন ও নেই।কাল বিলম্ব না করে পা বাড়ালো পূর্বে ফেলে আসা স্থানে।
ক্রোধে লালবর্ণ ধারণ করলো শিথির পুরো মুখ।চিৎকার করে ক্রোধান্বিত কণ্ঠে বলে উঠল,
-“সাহস হলো কি করে আমাকে কোলে তুলে নেওয়ার।ছাড়ো বলছি আমাকে।তোমার সাহায্য নেওয়ার চেয়ে আমি সারাদিন এই কাঁদায় বসে থাকতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করব।
বিরক্তিতে কপাল কুঁচকে গেল তাহসিনের।বিরক্তিকর স্বরে বলে উঠল,

-“বেশি কথা বলা আর বেশি বোঝার অভ্যাস গেল না আর তোমার।পা তো মনে হয় গেছে।এখন অন্তত একটু চুপ করো।”
কিছু বলবার জন্য মুখ খুলবে শিথি সহসা পুরুষালি ভারী কন্ঠস্বর কর্ণপাত হতেই থমকে গেল তার গলার স্বর।শিথিকে তাহসিনের কোলে দেখে হাতদুটো মুষ্ঠিবদ্ধ করে নিল নুসাইব। ভরাট কণ্ঠে বলে উঠল,
-“কি হচ্ছে এখানে?আর আপনি(তাহসিন উদ্দেশ্য করে) সাহস কি করে হলো আপনার শিথিকে স্পর্শ করার?”

কথাটুকু বলেই তাহসিনের দিকে একপ্রকার তেড়ে এলো নুসাইব। হেঁচকা টান দিয়ে তাহসিনের কোল থেকে নামিয়ে দাঁড় করিয়ে দিল শিথিকে।পুনরায় মৃদু চিৎকার করে নিচে পড়ে গেল শিথি।শিথিকে এহেন পড়ে যেতে দেখে অস্থির হয়ে শিথির দিকে ঝুঁকে মুখোমুখি হয়ে বসল নুসাইব।অস্থির কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠল,

আমার আছে জল পর্ব ১১

-“কি হয়েছে আপনার শিথি?এভাবে নিচে পড়ে গেলেন যে?আপনার পায়ে কি কোনো রকমের চোট লেগেছে?”
কিছুটা মন মরা হয়ে শিথি বলে উঠল,
-“জি স্যার মনে তো হচ্ছে।ঠিক মত দাঁড়াতে ও পারছি না।কিছুটা ব্যথা অনুভব হচ্ছে।”

আমার আছে জল পর্ব ১৩