আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পরিচ্ছেদ ২ পর্ব ২০

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পরিচ্ছেদ ২ পর্ব ২০
Raiha Zubair Ripte

সময়টা মধ্যাহ্ন দুপুর। চিত্রা ড্রয়িং রুমে বসে তানিয়া বেগমের সাথে কথা বলছিলো। কথার ছলে সদর দরজার দিকে তাকাতেই দেখে তুষার হন্তদন্ত হয়ে ভেতরে প্রবেশ করছে। শরীর তার ঘামে ভিজে একাকার। চোখ মুখের অবস্থা দেখে বুঝা গেলো রেগে আছে। চিত্রা বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। তুষার কাছে আসতেই চিত্রা কিছু বলার জন্য মুখ খুলতেই তুষার চিত্রা কে থামিয়ে দিয়ে বলল-

-“ অধরা কোথায়?
-“ অধরা আপু তার রুমে আছে।
তুষার আর সময় ব্যায় করলো না। সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে গেলো। চিত্রা হতভম্ব হয়ে গেলো।
অধরা নিজের রুমে মাথায় দু হাত চেপে বসেছিল। কোনো এক বিষয় নিয়ে খুব রেগে আছে। নিজেকে ঠান্ডা করার জন্য চুল খামচে ধরে মাথা নিচু করে রেখেছে। হুট করে হাতে টান অনুভব করতে চমকে যায়। তারপর পরপর দুটো থাপ্পড়ে মাথা ঝিম ধরে যায়। অধরা গালে হাত দিয়ে সামনে তাকাতেই তুষার অধরার চুলের মুঠি ধরে বলে-

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-“ তৃষা কোথায়? হোয়ার ইজ তৃষা?
অধরা চমকে উঠলো। মুখ খুলে কিছু বলার জন্য উদ্যত হলে তুষার থামিয়ে দিয়ে বলে-
-“ কোনো ভুংভাং বলবি না। সব জেনে গেছি আমি সুতরাং বল তৃষা কোথায়। যদি না বলিস তোকে মারতে মারতে আমি শেষ করে ফেলবো।

চিত্রা তুষারের পেছন পেছনই আসছিল। হঠাৎ তুষারের উচ্চস্বরের আওয়াজ শুনে তড়িঘড়ি করে অধরার রুমের দিকে আসে। তুষার কে অধরার চুলের মুঠি ধরে থাকতে দেখে অবাকের শেষ পর্যায়ে চলে যায়। তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে রুমে এসে তুষারের থেকে অধরা কে ছাড়াতে ছাড়াতে বলে-
-“ কি করছেন এটা,অধরা আপুর চুলের মুঠি ধরে আছেন কেনো? ছাড়েন।
তুষার ছাড়লো না। অধরা ব্যাথায় আহ করে উঠলো। তুষার আরো জোরে চেপে ধরে বলল-

-“ কি হলো বলছিস না কেনো?
অধরা এলোমেলো সুরে বলল-
-“ আপনার কি মাথা ঠিক আছে তুষার ভাই? আমি কিভাবে জানবো তৃষা কোথায়?
অধরা দু’জনের মুখের দিকে চাওয়াচাওয়ি করলো। ওরা দু’জন তৃষা কে নিয়ে কথা বলছে! কিন্তু কেনো? তুষার কেনো বলল অধরা কে তৃষা কোথায়?
তুষারের রাগ এবার ভালো মতোই মাথায় চেপে বসলো। চুলের মুঠি ছেড়ে এবার গলা চেপে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলো। অধরার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম।

-“ এবার ও কি বলবি না আমার মেয়ে কোথায়? ফারহান কিন্তু সব বলে দিয়েছে।
অধরা চমকালো। ফারহান সব বলে দিয়েছে! ফারহান ধরা পরেছে একটু আগেই জানলো। তারমানে সব শেষের পথে এবার? এবারের প্ল্যান টা এভাবে ভেস্তে গেলো!
চিত্রা তুষারের দিকে এগিয়ে আসলো। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল-
-“ আ…আমার তৃষা কোথায় এমপি সাহেব?
তুষার চিত্রার দিকে তাকালো।

-“ এই কালনাগিনী টা জানে। ও ই আমাদের তৃষা কে আমাদের কোল থেকে কেঁড়ে নিয়েছে।
চিত্রা এবার অবাক নয়নে তাকালো অধরার দিকে। অবিশ্বাস্য চাহনি নিয়ে বলল-
-“ আমার মেয়ে কোথায় তুমি জানো অধরা আপু? বলো না আমার মেয়ে টা কোথায়?
তুষার চিত্রার সাথে কথা বলার সময় কথার তালে অধরা কে ছেড়ে দিয়েছিল। অধরা চিত্রার দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ বিশ্বাস করো চিত্রা আমি সত্যি জানি না তৃষা কোথায়। ফারহান মিথ্যা বলছে সব।
পেছন থেকে হাসির শব্দ ভেসে আসলো। সবাই পেছনে তাকালো। রাকিব হোসাইন হাসতে হাসতে রুমে ঢুকছে।
অধরার সামনে দাঁড়িয়ে বলল-

-“ আর কত সত্য কে লুকিয়ে রাখবেন মিস অধরা? বয়স তো অনেক হলো। এবার তো নিজের আসল রূপে ফিরুন।
অধরা রাকিব হোসাইন এর দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ আপনি এখানে!
-“ হ্যাঁ আমি। আচ্ছা ধরে নিলাম ফারহান মিথ্যা বলছে৷ কিন্তু সেদিন রাতুলের বুকে দু দুটো গুলি কে ছুঁড়ে দিয়েছিল?
অধরা রাকিব হোসাইন এর কথায় চমকে উঠলো। এটা তো কারো জানার কথা না একমাত্র রাতুল ছাড়া। তুষার চিত্রা অবাক হয়ে তাকালো রাকিব হোসাইন এর দিকে।

-“ দুটো গুলি ছুঁড়ে দিয়েছিল অধরা তোর দিকে!
রাকিব হোসাইন হাসলো। অধরা তুষারের কথা টাকে মিলালো। অধরা তো রাতুলের দিকে গুলি ছুঁড়েছিল। কিন্তু তুষার রাকিব হোসাইন কে কেনো বলছে? তারমানে কি রাকিব হোসাইন কোনো ভাবে রাতুল? অধরার গলা শুকিয়ে আসলো। এভাবে দাবার গুটি বদলে গেলো! এতো বছরের শ্রম তাহলে বৃথা!

-“ হ্যাঁ এই সেই ঘৃণিত নারী যাকে পৃথিবীর সবচাইতে ঘৃণা আমি করি। ভালোবেসেছিলাম এই নারী কে অথচ সে দিনের পর দিন মিথ্যা ভালোবাসার অভিনয় করে আমাকে মে’রে ফেলার প্ল্যান করলো! এই মেয়ে ভালোবাসার মানে জানো তুমি? জানলে আমার সাথে এমন টা করতে পারতে? বুক কাঁপে নি যখন আমার দিকে গুলি ছুঁড়লে তখন? আমার কাছে চাইতে আমার প্রান টা আমি হাসতে হাসতে দিয়ে দিতাম। বড্ড ভালোবাসে ছিলাম। কিন্তু তার বিনিময়ে তুমি আমাকে মৃ’ত্যু উপহার দিয়েছিলে।

-“ আপনি রাতুল ভাইয়া?
রাকিব হোসাইন চিত্রার দিকে তাকালো।
-“ হুমম।
চিত্রা অধরার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে রইলো। কোনো কথার মানেই সে বুঝতে পারছে না। অধরা কেনো রাতুল কে মারলো? আর তৃষা সেই বা কোথায়?
-“ এই অধরা আপু রাতুল ভাইয়া কে তুমি না ভালোবাসতে? তার মৃত্যু তে তুমি না একদম ভেঙে গিয়েছিলে? ছয় মাসের মতো ঘরকুনো হয়েছিলে। বারবার রাতুল ভাইয়ার নাম বলে কেঁদে উঠতে? সব কি তাহলে অভিনয় ছিলো?
অধরা নিশ্চুপ। রাকিব হোসাইন ধিক্কার নিয়ে বলল-

-“ ও আদৌ কখনই আমায় ভালোবাসে নি চিত্রা। ও তোমাকে হিংসা করতো।
-“ আমাকে কিন্তু কেনো?
-“কারন তুমি তার শখের পুরুষের পছন্দের নারী সেজন্য। ও তুষার কে ভালোবাসতো।
তুষার আর চিত্রা দু’জন দুজনের দিকে তাকালো। অধরা তুষার কে ভালোবাসতো! কই তুষার তো কখনও তাকে বোন ছাড়া অন্য কিছু ভাবে নি।

-“ তুষার চিত্রার মেয়ে তৃষা কোথায় অধরা? বলে দাও।
-“ আমি জানি না।
অধরার কাঠকাঠ জবাব। তুষার বিরক্ত হলো। চ’ড় মারার জন্য আবার হাত উঠালে চিত্রা হাত চেপে ধরে।
-“ সেদিন স্কুলে আগুন ধরানোর প্ল্যান তোমার ছিলো অধরা আপু?
-“ হ্যাঁ।
-“ তৃষার খোঁজ টা দাও না। হাত জোর করে বলছি তুমি বললে পায়েও ধরবো। তবুও আমার মেয়ের খোঁজ টা দাও না? কত বছর হলো আমি তৃষা কে ছুঁয়ে দেখি না। প্লিজ বলো না আপু তৃষা কোথায়।
অধরা হাসলো। চিত্রা কে কান্না করতে দেখলে তার কলিজা ঠান্ডা হয়।

-“ মেয়ের খোঁজ পাওয়া ভুলে যাও চিত্রা। পাবে না।
রাতুল এগিয়ে আসলো।
-“ পাবে না মানে কি?
-“ কারন তৃষা নেই এই পৃথিবীতে। সি ইজ ডে….
চিত্রা কষিয়ে চড় বসিয়ে দিলো। অধরা হিংস্র বাঘিনীর মতো তাকালো। অধরার গলা চেপে বলল-
-“ তোমার জিহ্বা আমি টেনে ছিঁড়ে ফেলবো বাজে কথা বললে। বলো আমার মেয়ে কোথায়।
চিত্রার চেঁচামেচি শুনে তানিয়া বেগম আর তৃষ্ণা চলে আসে। অধরার গলা চেপে ধরা দেখে এগিয়ে এসে ছাড়ায় চিত্রা কে। তানিয়া বেগম ধমক দিয়ে বলে-

-“ হচ্ছে টা কি। অধরার গলা চেপে ধরছিলে কেনো?
-“ সেটা অধরা আপু কে জিজ্ঞেস করুন। আমার মেয়ে কে কোথায় রেখেছে।
-“ মানে? অধরা কি করে জানবে?
-“ কারন এই মেয়েই প্ল্যান করে তৃষা কে কিডন্যাপ করেছে।
রাকিবের কথায় তানিয়া বেগম অধরার দিকে তাকায়। অধরার বাহু টেনে অবাকের সুরে বলে-
-“ এরা কি বলছে অধরা? সত্যি তুই জানিস তৃষা কোথায়? তুই ই করিয়েছিলি তৃষার কিডন্যাপ?
অধরা হাত ছাড়িয়ে উচ্চস্বরে বলল-

-“ হ্যাঁ আমিই করিয়েছি তৃষার কিডন্যাপ আমিই মে’রেছি রাতুল কে। হয়েছে এবার?
তৃষ্ণা হতবাক। রাতুল কে অধরা মেরেছে? কিন্তু অধরা তো তখন দাদি কে নিয়ে ক্যাম্পাসে ছিলো।
-“ তুমি না সেদিন দাদি কে নিয়ে ক্যাম্পাসে ছিলে? রাতুল ভাইয়া কে মা’রলে কি করে?
-“ এ টু জেট সব বলবি শুরু থেকে।
তুষার রাগী কন্ঠে বলল।

-“ আমি আপনাকে বাঁচাতেই রাতুল কে মেরেছি তুষার ভাই। কারন সেদিন প্ল্যান হয়েছিল আপনাকে মা’রার। আমি বেঁচে থাকতে তো আর সেটা হতে দিতে পারি না। আমি আপনাকে সেই ছোট থেকে ভালোবেসে আসলাম। কিন্তু এই চিত্রা আপনাকে পেয়ে গেলো না চাইতেই! আমি মানতে পারি নি বিষয় টা। গুমরে গুমরে কেঁদেছি। চেয়েছিলাম চুপচাপ মেনে নিবো। রাতুলের সাথে বাকি জীবন টা কাটাবো। কিন্তু আমি পারি নি, মুখে মুখে বলেছি আপনাকে ভুলে গেছি কিন্তু মনে মনপ তখনও আপনাকে ভেবে কেঁদেছি। রাতুল পারে নি আমার মন থেকে আপনাকে ভুলাতে।

দিনকে দিন আপনাদের দু’জন কে একসঙ্গে দেখলে আমার হৃদয় টা ক্ষতবিক্ষত হতো। আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতপ পারতাম না। আমার সাথে যখন রাতুল থাকতো। সময় টা দমবন্ধ হয়ে পাড় করতে হতো। এরমধ্যেই হুট করে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয় মা ছেলে। আমার রাতুল কে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছেই ছিলো না। সেজন্য সেদিন মনে মনে ভীষণ রেগে ছিলাম রাতুলের উপর। কিন্তু প্রকাশ করি নি। একদিন মার্কেটে নিয়ে গেছিলাম চিত্রা কে। সেদিন ভীড়ের মাঝে আমিই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই চিত্রা কে।

চিত্রা মনে করলো। অধরার সাথে মার্কেটে যাওয়ার সেই দিন। তার ধারনা সত্যি হলো আজ! সেদিন ঠিকই বুঝতে পেরেছিল কেউ তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিছে।
এরমধ্যে ফারহান আমার সাথে কন্টাক্ট করে। সে পুরো খাঁন পরিবারের উপর নজর রাখতে বিধায় জানতে পেরেছিল আমি আপনাকে ভালোবাসি আর চিত্রা কে হিংসা করি। আমি জানতাম না আপনি তাকে আঁটকে রেখেছিলেন। আর ও যে বেঁচে আছে সেটাও জানতেন না।

তো আমি হাত মিলাই ফারহানের সাথে আর আকবরের সাথে। যে রাতুলের বাবা। রাতুল তার বাবা কে সহ্য করতে পারতো না সেটা বিয়ের ডেট ফিক্সড হওয়ার পর জানতে পেরেছিলাম। সেটাকেই কাজে লাগালাম। সবাই প্ল্যান করলো আপনাকে মে’রে হালিম সরকার এমপি পদে তার ছেলেকে দাঁড় করাবে আর আকবর চেয়ারম্যান পদে। কারন আপনি বেঁচে না থাকলে চিত্রার বাবা অর্ধেক ক্ষমতাহীন হয়ে পড়বে। সেই মোতাবেক সেদিন লিমন কে দিয়ে আপনার গাড়ি ব্রেক ফেল করার জন্য উপযুক্ত করা হয়।

কিন্তু ভাগ্যক্রমে আপনি না গিয়ে রাতুল কে পাঠান। এতে আমি খুশিই হয়েছিলাম। কিন্তু রাতুল মরেও মরলো না। ঠিক বেঁচে গাছের ডালের সাথে ঝুলে ছিলে। আকবর চেষ্টা করেছিল ছেলেকে বাঁচাতে। দড়ি আনার জন্য গাড়ির কাছে যেতেই আমি শুট করি রাতুল কে।

জাহাঙ্গীর নগর থেকে সিএমবি দূরত্ব খুব একটা নয়। সেদিন দাদি কে নিয়ে ভার্সিটি যাওয়ার পর আকবর ফোন করে জানালো রাতুল গাছের ডালের সাথে ঝুলে আছে। সে বাঁচাবে তার ছেলে কে। কিন্তু আমার বাঁচাতে ইচ্ছে করলো না। ও বেঁচে থাকলে আমার প্ল্যান সাকসেসফুল হতো না। সেজন্য ওয়াশরুমের নাম করে সিএমবি আসি। আকবর বলেছিল ঠিক কোন জায়গায় রাতুল ঝুলে আছে। আমি সেখানে চলে যাই। তারপর শুট করি। রাতুল দেখেছিল আমায়। অবিশ্বাস্য নিয়ে তাকিয়ে ছিলো। ভেবেছিল আমি তাকে বাঁচাবো। কিন্তু না তেমন টা করি নি।

কথাটা শেষ হতে না হতেই অধরার গালে আবার চ’ড় পড়লো। এবার রোমিলা বেগম দিয়েছে। তার বিশ্বাস ভরসা এভাবে ভেঙে দিলো এই মেয়ে? কত বড় কালনাগিনী তার ছেলেকে সে মে’রে ফেললো?অধরার বাহু ঝাঁকিয়ে ধরা গলায় বলল-

-“ আমার ছেলে কে তুই মেরেছিস কেনো? কি ক্ষতি করছিল? শুধু তো তোকে ভালোইবেসেছিল। তার বিনিময়ে আমার ছেলেকে মারলি! আজ তোকে মেরেই ফেলবো। তোকে মেয়ের মতো এতো গুলো বছর আগলে রেখেছি। শেষে কি না তুই এমন টা করলি আমার ছেলের সাথে। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দে। তা না হলে তোকে আজ মেরেই ফেলবো।
রোমিলা বেগম এলোপাতাড়ি চ’ড় মারতে থাকে অধরা কে। রাকিব হোসাইন এসে থামায়। রোমিলা বেগম কে জড়িয়ে ধরে বলে-

-“ আমি বেঁচে আছি মা। শান্ত হও
রোমিলা বেগম রাকিব হোসাইন এর দিকে তাকালো। কই রাতুলের সাথে তো এই ছেলের চেহারা মিলে না। তাহলে কেনো বলছে সে তার ছেলে?
-“ আমার রাতুল হবে কি করে তুমি? আমার রাতুল তো দেখতে এমন না। ও আমার রাতুল কে মে’রে ফেলছে।
রাতুল সব খুলে বলল রোমিলা বেগম কে। রোমিলা বেগম ছেলেকে জড়িয়ে ধরলো। এতোগুলা বছর পর ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পেরে কলিজা ঠান্ডা হলো।
কিন্তু চিত্রার তো কলিজা ঠান্ডা হচ্ছে না। সে তো তার মেয়ের খোঁজ এখন ও পেলো না। অধরা বলছে না কেনো তার মেয়ে কোথায়?
চিত্রা অধরার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল-

-“ আমার মেয়ের খোঁজ কেনো দিচ্ছো না? বলো আমার মেয়ে কোথায়?
অধরা বললো না। এদিক ওদিক তাকালো। বেডের পাশে কাঙ্ক্ষিত জিনিস দেখতে পেয়ে তৎক্ষনাৎ সেটা উঠিয়ে চিত্রা কে টেনে সেটা চিত্রার গলায় ধরলো। ঘটনা এমন তাড়াতাড়ি হওয়ায় সবাই হকচকিয়ে গেলো সাথে ভয় পেলো। অধরা চিত্রার গলায় ছুরি ধরে রেখেছে। তুষার শান্ত সুরে বলল চিত্রা কে ছেড়ে দিতে। কিন্তু অধরা মানতে নারাজ। সে শর্ত দিলো হয় তাকে যেতে দিতে হবে আর তা না হলে চিত্রা কে মারতে তার হাত একটু ও কাঁপবে না। এমনিতেও জেলে যাবে ওমনিতেও জেলে যাবে। আর একটা খু’ন করেই না হয় জেলে যাবে।

তুষার কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে নিলে রাকিব হোসাইন বলে-
-“ আচ্ছা তোমাকে যেতে দিবো। তুমি চিত্রা কে ছেড়ে দাও।
অধরা মুচকি হাসলো। হাসতে গিয়ে অনুভব করলে গাল দুটো ব্যাথায় টনটনে হয়ে আছে।
-“ সবাই এক সাইডে গিয়ে দাঁড়াও। আমি বের হবো

রাতুল সবাইকে নিয়ে এক সাইডে দাঁড়ালো। চিত্রা চিত্রা কে সাথে নিয়েই দরজার কাছে গিয়ে চিত্রাকে রুমের ভেতর ধাক্কা মে’রে হাতে ছুড়ির টান মারে সেই সাথে সাথে বাহির থেকে দরজা আটকিয়ে দেয় অধরা।
চিত্রার হাত গড়িয়ে গড়গড়িয়ে রক্ত পড়ছে। হাত চেপে ধরলে ব্যাথায়। তুষার এগিয়ে আসলো। রাকিব হোসাইন এর দিকে তাকিয়ে রাগান্বিত সুরে বলল-

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পরিচ্ছেদ ২ পর্ব ২০

-“ যেতে দিলি কেনো ও কে? দেখ চিত্রার হাত কে’টে ফেলছে ও তো এখন পালিয়ে যাবে। আমার মেয়ের খোঁজ তো দিলো না।
রাকিব হোসাইন ঘর খুঁজে ফাস্টএইড বক্স এনে তুষারের হাতে দিয়ে বলে-
-“ চিন্তা করিস না ও ধরা পড়লো বলে। এটা নিয়ে চিত্রার হাত ব্যান্ডেস করে দে।

আমার শহরে তোমার আমন্ত্রণ সিজন ২ পরিচ্ছেদ ২ পর্ব ২১