আমি মায়াবতী পর্ব ২৮

আমি মায়াবতী পর্ব ২৮
তাহমিনা মিনা

ভয়ে নীলবর্ণ ধারন করেছে সুজন।নীরব,আরিফ সারা জঙ্গল পাগলের মতো প্রেমা কে খুজেছে। কিন্তু পায় নি।নেশাগ্রস্ত থাকার কারনে টের পায় নি,তার উপরে সবাই মিলে আলোচনা করতে ব্যাস্ত থাকায় প্রেমার পড়ে যাওয়ার শব্দ কানে যায় নি তাদের। কথা-বার্তা বলে প্লান মাফিক সামনের রুমে প্রেমাকে নিতে আসতেই মাথায় বজ্রপাত পড়লো।প্রেমা নিখোজ।

নেশাগ্রস্ত সোভাম যেন কিছু বুজতেই পারছে না।সারা রাত ধরে নেশা করার কারনে এখন যেন শরীরে আর কোনো সার ই নেই।চোখ টেনে টেনে খুলে তাকেচ্ছে সামনের তিনজনের দিকে।পাশেই মাটির উপর হাটু মুড়িয়ে তাল হারিয়ে বসে আছে আরিফ।সেও নেশাগ্রস্ত।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

এই মুহুর্তে মস্তিষ্কে কথাগুলো ততটা না ঢুকলেও বেশ বিশ্রী ভাষায় সবাইকে গালমন্দ করলো সোভাম।প্রেমাকে খুজতে পুনরায় আদেশ দিয়ে শুয়ে পড়লো বিছানায়। এরইমধ্যে পাশ থেকে কর্কশ কন্ঠে বাজতে শুরু করলো ফোনটা।বিরক্তি নিয়ে ফোন রিসিভড করলো সোভাম।সাথে সাথেই ওপাশ থেকে উত্তেজিত কন্ঠে পার্টির এক সদস্য বলে উঠলো-
সোভাম, তুমি জানো এদিকে কি হয়েছে?
বিরক্তি নিয়ে কপাল কুচকালো সোভাম।বললো-

কি হয়েছে?
–আরে,পরশের ছোট্ট একটা বোন আছে না?ওকে নাকি কারা ধর্ষন করছে।এখন সদর হস্পিটালে ভর্তি করছে।প্রেস, মিডিয়া,জনগনে ভরে গেছে পুরো হাসপাতাল।
আতকে উঠে বসলো সোভাম।নেশা টা যেন ছুটে পালিয়ে গেল।তরতর করে ঘাম ঝরতে লাগলো কপাল বেয়ে।প্রেমা হাসপাতালে, তাহলে তো ওরা শেষ। এতোক্ষণে তো পুলিশকে সব জানিয়ে দিয়েছে।ইশশ,বিরাট ভুল হয়ে গেল।ভয়কাতুরে কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো –

কারা ধর্ষন করেছে জানো কিছু?
–না তো।তা তো শুনলাম না। মেয়েটা নাকি ভীষণ অসুস্থ। মরে-টরে যায় কি না কে জানে।হয়তো এখনো পুলিশকে জানাতে পারে নি। পুলিশ জানলে তো এতক্ষণে প্রেস-মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তো।
ওহহ। (ছোট্ট একটা শব্দ বলেই ফোন কেটে দিলো সোভাম।রাগে ফেটে পড়লো পুনরায়।)
এরইমধ্যে সামনের দরজায় লাত্থি মারার শব্দ হতেই উঠে দাড়ালো সবাই।ইতোমধ্যে পেছনের ঘরে ঢুকে পড়েছে পাভেল।রাগে /ক্ষোভে ফেটে পড়ছে সে।চোখ দুটো টকটকে লাল হয়ে আছে।থরথর করে কাপছে,উত্তেজনায় ঠিক ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতেও পারছে না।

বিষন্ন মন নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে আর্শি।চোখ দুটো টইটম্বুর হয়ে আছে অশ্রুতে।এখনো পর্যন্ত একটা ফোন হাতের নাগালে পেল না।কি করে সে যোগাযোগ করবে পাভেল ভাইয়ের সাথে।তার সাথে কথা না বলে বেরোনের যে কোনো উপায় নেই। হাতে যে কোনো কানাকড়িও নেই তার।আর রাস্তাঘাট?সব সময়ে ঘরের মধ্যে আর স্কুলে যাওয়া -আসা মেয়েটা কিভাবে এই শহরের রাস্তা চিনে ছুটে যাবে পাভেল ভাইয়ের কাছে।সে যে ভীষণ ভীতু।

এই আর্শি মা!!এদিকে এসো,বাড়ি থেকে ফোন দিয়েছে তোমায়।
এতোক্ষণ ছাদে দাঁড়িয়ে ছিলো আর্শি। এরইমধ্যে নিচ থেকে বিপাশার কন্ঠ শুনে ছুটে সিড়িতে নামলো। বাড়ির কথা শুনতেই জমে গেল পা।হাত শক্ত করে মুঠো হয়ে আছে।মুহুর্তের মধ্যে চোয়াল শক্ত হয়ে গেল।ইচ্ছে হলো চেচিয়ে বলতে”আমার কোনো বাড়ি নেই,আর নাতো কেউ আছে”।কিন্তু পারিবারিক শিক্ষাটা আটকালো তাকে।স্তব্ধ হয়ে নিচে নেমে ফোন হাতে নিলো।তারপর ধীরপায়ে উঠে এলো ছাদে।ওপাশ থেকে উত্তেজিত কন্ঠে সোনালী বেগম বলে উঠলেন-

আর্শি।ওমা কেমন আছিস তুই?ওখানের সব ঠিকঠাক আছে তো।জামাই কেমন?আর তোর শশুর-শাশুড়ি কি তোকে দেখে বেজার হইছে নাকি।খেয়েছিস সকালে?
–কেন ফোন দিয়েছো?
এতোগুলো প্রশ্নের প্রেক্ষিতে এমন উত্তর শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলেন সোনালী।ফোনের সাউন্ড লাউডে দেওয়া। পাশের সোফায় গোল হয়ে বসে আছে বাড়ির সবাই।পাশেই শামসুল সরদার রয়েছেন।মেয়ের এমন কথা শুনে চোখ দিয়ে ভরসা দিলেন তিনি স্ত্রীকে।সোনালী আবার বললো-

এটা কেমন কথা মা?তোর বিয়ে হয়েছে বলে কি ফোন ও দিতে পারবো না আমরা।
–না পারোনা তোমরা।কেন ফোন দিবে আমাকে?আমি কে হই তোমাদের?কেউ না আমি।আমার কাছে আর দ্বিতীয়বার ফোন দিবে না।তোমরা খুব ভয়ে ছিলে না নিজেদের বাড়ির সম্মান নিয়ে। বাচিয়ে দিলাম তোমাদের।বিয়ে করে নিয়েছি।এখনো খুশি হও নি।আর কি চাই আমার কাছে?বিয়ে দিয়ে দিয়েছো,বেশ আছি আমি এখানে।শামসুল সরদারকে বলে দিও সরদার বাড়ি থেকে যেমন সে আর তার ছেলে আমাকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে তেমনি আমিও তোমাদের সম্পর্ক টাকে ছুড়ে ফেললাম।মরে গেছি আমি।মনে করবে বিয়ে নয় দাফন দিয়ে দিয়েছো তোমরা আমায়।আর কখনো যদি আমার কাছে বাড়ির কেউ ফোন ও দিয়েছো তাহলে ফল ভালো হবে না বলে দিলাম।

ওপাশ থেকে দাতে দাত চেপে ঝরঝর করে মনের মধ্যে ক্ষোভ গুলো প্রকাশ করলো আর্শি।তীব্র গতিতে সারাজীবন শান্ত,ভীত হরিনীর ন্যায় থাকা মেয়েটার যেন কথার বাধ ভেঙেছে আজ।
স্তব্ধ হয়ে একে অপরের দিকে চেয়ে রইলো সরদার বাড়ির সবাই। সোনালী কান্নায় ভেঙে পড়ে মেয়েকে বললেন-
ও মা, তুই এমন ভাবে বলিস না।তুই তো জানিস আমার কিচ্ছু করার ছিলো না।
মুহুর্তেই ফুসে উঠলো আর্শি।বললো-

হ্যা জানিতো।আমি সব জানি। তুমি বাধা দিলে তোমার সংসারে অশান্তি হতো তাই তো।
থেমে,
কি করে পারলে মা।নিজের সংসার বাচানোর জন্য মেয়েকে একদম জবাই করে দিলে।তোমরা একবারেও আমার কথা ভাবলে না।আর ভাববেই বা কেন?তোমাদের সবার বড় ছেলে আছে বলে কথা।তার কথায় উঠতে হবে,তার কথায় বসতে হবে।

জানো মা,আমার জন্মের সময় তুমি মরে গেলে না কেন?তাহলে আজ আমার এই বন্দীজীবন টা কাটাতে হতো না।স্পর্শী আপুর মতো আমিও কোনো বিপাশার কাছে বড় হতাম।ইচ্ছে মতো উড়তাম,সবাইকে জবাব দিতে শিখতাম।কেন হলো না এমন?আল্লাহ আমাকে পরিবার দেয় নি, দিয়েছে এক অভিশাপ।

এরইমধ্যে সোনালীর হাত থেকে ফোন টা টেনে নিলো শামসুল সরদার। হ্যালো বলতেই কেটে দিলো আর্শি।মায়ের সাথে উচু গলায় কথা বললেও বাবার সামনে সে যে কিছুতেই এভাবে কথা বলতে পারবে না।আস্তে করে ফোনটা বন্ধ করে দিল।তারপর ছাদের রেলিং এ হেলান দিয়ে হাটু মুড়ে বসে পড়লো।ঢুকরে কেদে উঠে আফসোস করতে লাগলো-

ইশশ!আজকের এই সাহস টা যদি বিয়ের আগে হতো, তাহলে যে আজ এই চোখের পানি ফেলতে হতো না।
হঠাৎই হাতের ছোট্ট বাটন ফোনটার দিকে নজর যেতে চমকে উঠলো আর্শি।সে তো এখনই পাভেল কে ফোন দিতে পারে।উত্তেজনায়, খুশিতে দুহাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলো।মনে করে পরিচিত প্রিয় নাম্বার টা উঠিয়ে বারকয়েক মিলিয়ে নিলো। তারপর কাপা কাপা হাতে কল করে অধীর আগ্রহে কানে ধরলো ফোন।এক্ষুনি ওপাশ থেকে পাভেলের কন্ঠে ভেসে আসবে ভাবতেই উত্তেজনায় কেপে উঠলো আর্শি।কিন্তু তাকে পুরোপুরি মিথ্যে করে ওপাশ থেকে মেয়েলি কন্ঠে ভেসে উঠলো-
আপনার কাঙ্ক্ষিত নম্বরটিতে এই মুহুর্তে সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না।অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন।ধন্যবাদ।

আর্শি হার মানলো না।টানা এক ঘন্টা ওখানেই বসে রইলো।কমপক্ষে পঞ্চাশ বার ফোন করেও শেষ পর্যন্ত পাভেলের নাগাল পেল না।
রুম থেকে বেরিয়ে জুতোটা পড়ে নিলো রাহুল। গলার টাইটা বাধতে বাধতে মায়ের সামনে এসে বললো-
আমি আসলাম।
চমকে পেছনে তাকালো বিয়াশা।রাহুলের হাতে কোর্ট ফাইল দেখে কৌতূহল বশত জিজ্ঞেস করলো-
কোথায় যাচ্ছিস তুই?আরে তুই কি ভুলে গেলি আজকে কাজি আসবে।

বিরক্তিতে চোখ-মুখ কুচকে ফেললো রাহুল।আর্শিকে বারবার কাদতে দেখে তার ভীষণ খারাপ লাগছে।রাগের মাথায় যে সে বড় ধরনের ভুল করে ফেলেছে সেটা এখন তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।যতই হোক,আর্শির ওই চোখের পানি গুলো সহ্য হচ্ছে না।কেন জানি মনে হচ্ছে ওই পানিগুলো অভিশাপ হয়ে তার জীবনে নামবে না তো।বারবার ভেবে চলেছে কি করে এই ভুল শোধরানো যায়।আচ্ছা,সে কি পাভেল কে ডেকে তার হাতে প্রেমাকে তুলে দেবে।কিন্তু, তাহলে ও বাড়িতে কি বলবে সে।নিজের স্ত্রীকে তার পুরাতন প্রেমিকের হাতে তুলে দেওয়ার মতো কাপুরুষতা মনে হয় আর পৃথিবীতে নেই। ভাবতে হবে তাকে।আরো গভীর ভাবে ভাবতে হবে।সে জন্য সময় চাই।কিন্তু মায়ের এই আবার বিয়ে বিয়ে নিয়ে মাতানো একদম সহ্য হচ্ছে না।

মুখ দিয়ে বিরক্তিকর শব্দ উচ্চারণ করে বললো-
মা,আমি ভার্সিটিতে যাচ্ছি।লাস্ট যে চাকরিটার কথা বলে ছিলো।ওখানেই সিভিটা জমা দিবো।আর কতদিন ই বা এভাবে থাকবো। তুমি প্লিজ আপাতত বিয়ে টিয়ে বাদ দাও।চাকরি টা আগে হোক।তারপর যা ইচ্ছে তাই করো।
বলে বিপাশা কে আর কিছু বলার সু্যোগ না দিয়ে চলে গেল গেটের দিকে।

(পিরোজপুর সদর হস্পিটাল)
সকাল এগারোটা। অপারেশন থিয়েটার থেকে আরো এক ঘন্টা আগে প্রেমাকে কেবিনে শিফট করা হয়েছে। ।হস্পিটালের পোশাক পড়িয়ে কোমড় পর্যন্ত চাদর দিয়ে প্রেমাকে ঢেকে দিলো নার্স। দুহাতে স্যালাইন চলছে।কিছুক্ষণ আগেই জ্ঞান ফিরলেও ডক্টররা প্রেমাকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে রেখেছে।
পাশেই টুলে বসে অবিরত ভাবে কপাল চাপরাচ্ছে পিয়াশা।কান্নায় ভেঙে পড়ে কতক্ষণ পর পর মেয়ের স্যালাইন দেওয়া হাতে চুমু খাচ্ছে।আফসোস করে বুক ভাসিয়ে ফেলছে।

আহারে!সে কেন নিয়ে গেল না স্কুলে মেয়েটাকে।বাড়িতে রান্নাবাড়া ছাড়াতো আহামরি আর কোনো কাজ করতে হয় না তাকে। তাহলে কেন সে মেয়েটার দায়িত্ব নিল না।
মহীউদ্দীন শিকদার পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কেবিনের সামনে।সবার মুখেই একই আফসোস”কেন ছোট্ট মেয়েটাকে সে নিয়ে গেল না স্কুলে”?
মুহুর্তে’ই সুজনের কথা মাথায় এলো।সুজন কোথায়?ওই তো প্রেমাকে স্কুলে নিয়ে যায়।গাড়িও বা কোথায়?মাথায় আবারো ভয়েরা ঝেকে ধরলো।

–ছেলেটারো কোনো ক্ষতি হলো নাতো।নিশ্চয়ই মেয়েটাকে বাচাতে চেয়েছিলো সুজন।কিন্তু সেই বা কোথায়?
মাথার মধ্যে নানা ঘটনা ঘুরপাক খাচ্ছে।ফোনহাতে তেইশ বারের মতো পরশের ফোনে কল দিলো শামসুল সরদার। এসব সামলানো যে তার মতো একজন নরম স্বভাবের স্কুল মাষ্টারের পক্ষে সম্ভব নয়। প্রেস-মিডিয়ার লোকজন নানা ভাবে, নানান ধরনের প্রশ্ন করে যাচ্ছে।পাভেল টাকে ও কোথাও খুজে পাচ্ছে না।পাশেই ছোট ভাই রফিক অসহায় চিত্তে দাঁড়িয়ে আছে।

রঙ বেরঙের বড় বড় পাথরের ফাক দিয়ে বয়ে চলে ছে স্বচ্ছ পানির ধারা।যেতে যেতে এক পাথরের সাথে ধাক্কা খেয়ে অন্যটাতে পড়তে কলকল শব্দে মেতে উঠেছে টুরিস্ট স্পট টি।আশেপাশের লোকজনকে ফেলে দুরেই নির্জন এক জায়গায় দেখা যাচ্ছে এক দম্পতি কে।হাটু অবধি পানির মধ্যে বসে আছে পুরুষটি।তার কোলেই পানির মধ্যে বসে আছে নীলরঙা শাড়ি পড়া নারী।পুরুষটি কতক্ষণ পর পর আলতো করে ছুয়ে দিচ্ছে গাল। আর নারী টি চোখ গরম করে আশেপাশে তাকিয়ে মেপে নিচ্ছে লোকজনের দৃষ্টি।

পরশ মাথা হেলিয়ে পাথরের উপর শুয়ে পড়লো।বুকের উপর দিয়ে ধীর গতিতে বয়ে চলা পানির স্রোতে হাত ডুবিয়ে ছিটিয়ে দিল স্পর্শীর গালে। মুহুর্তেই চমকে উঠলো স্পর্শী।পরশ হাত বাড়িয়ে নিজের বুকের উপর শুইয়ে দিল স্পর্শীকে।কিছুক্ষণ সেখানেই নিস্তব্ধতা রইলো।নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে উৎফুল্ল কন্ঠে স্পর্শী বললো-

ইশশ ফোনটা নিয়ে আসতাম।তাহলে কিছু ছবি তুলতে পারতাম।আপনিও না যা তা নেতামশাই।নিজেও ফোন আনলেন না আর আমাকেও আনতে দিলেন না।
পরশ আলতো হাসলো।বললো-
ফোন নিয়ে আসাটা আরেকটা ঝামেলা। সারাক্ষণ এদিক ওদিক দিয়ে ফোন আসতেই থাকতো।তখন তুমি নিজেই রাগ করতে।

মাথা নুইয়ে সমর্থন করলো স্পর্শী।তারপর ঝট করে উঠে দাঁড়িয়ে পরশকেও টেনে তুললো।ভেজা কাপড়ে হাটতে লাগলো আরো সামনে।ঠোট কামড়ে হেসে পরশের দিকে তাকিয়ে দুরের ব্রিজ টার দিকে আঙুল তুলে বললো-
চলুন ওখান থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ি।
আতকে উঠলো পরশ।চোখ দুটো বড় বড় করে স্পর্শীর দিকে তাকালো।মুহুর্তেই মুখ গোমড়া করে ফেললো স্পর্শী।বললো-
এমন ভাবে তাকাচ্ছেন কেন?দেখুন ওই ছোট ছোট ছেলে গুলো কি সুন্দর লাফিয়ে পানিতে পড়ছে।আপনি কেন পারবেন না।

স্পর্শী যে পরশকে আবার জালানোর প্লান করেছে সেটা বুজতে পারলো পরশ।কোনো কথা না বলেই পিছন ঘুরে একা একা হাটা ধরলো।
–বেশ।দরকার নেই আপনার।আমি নিজেই ওখান থেকে লাফিয়ে পানিতে পড়বো।

আমি মায়াবতী পর্ব ২৭

আতকে উঠলো পরশ। এই পাগলাটে,জেদি বউ যে জেদ করে ওখান থেকে লাফিয়ে পড়তেও পারে সে ব্যাপারে নিশ্চিত সে।ছুটে এসে খপাৎ করে হাত টেনে ধরলো।আদুরে কন্ঠে কোমড় জড়িয়ে ধরে বললো-
এমন পাগলামি করে না পাখি। মজা আরো অজস্র জিনিস নিয়ে করা যায়।এমন ভয়ংকর জিনিস নিয়ে মজা করা উচিত নয়। আমি যে বিধবা হয়ে যাব।তার থেকে চলো,ওদিকে গিয়ে তোমায় ফুচকা খাওয়াই।চলো চলো।

আমি মায়াবতী পর্ব ২৯