এক ফালি রোদ্দুর পর্ব ৩১ || লেখনীতে: তানজিল মীম

এক ফালি রোদ্দুর পর্ব ৩১
লেখনীতে: তানজিল মীম

“তানজুকে কাঁধে করে এগিয়ে চলছে রিয়াদ,আর তানজু পিছন থেকে রিয়াদের গলা জড়িয়ে আছে’!!রিয়াদ হাল্কা রেগে বললোঃ
—“তোকে ওসব খেতে কে বলেছে?’
“তানজু চুপ….
—“কি হলো কথা বলছিস না কেন এতক্ষণ আমায় জ্বালিয়ে এখন কথা বলা বন্ধ হয়ে গেল নাকি…
“তানজু এখনও চুপ!’

“তানজুকে চুপ থাকতে দেখে রিয়াদ কিছুটা ভড়কে যায়’!!আস্তে আস্তে তানজুকে কাঁধ থেকে নামিয়ে বসিয়ে দেয় রাস্তার পাশে থাকা একটা বেঞ্চে!’তানজুও চুপটি করে বসে পড়ে’!!রিয়াদ তানজুর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলঃ
—“কি হলো কথা বলছিস না কেন?’
—“তুমি খুব পঁচা ভাইয়া…
“এতক্ষণ পর তানজুর মুখে এমন কথা শুনে চমকে উঠলো রিয়াদ!’ভ্রু-কুচকে বললো সেঃ
—“মানে….
—“মানে আবার কি তুমি খুব পঁচা,,
“বলেই তানজু রিয়াদকে কিল ঘুষি মারতে থাকে!’তানজুর হঠাৎ করে তাকে মারার কোনো রিজন খুঁজে না পেয়ে বললো রিয়াদঃ

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—“আরে তুই আমায় মারছিস কেন?
—“মারবো না মানে পার্টিতে ওই এলি না ফেলির সাথে নাচলে কেন তুমি?’
“তানজুর এবারের কথা শুনে রিয়াদের চোখ বড় বড় হয়ে গেল’!!বিস্ময় নিয়ে বললো সেঃ
—“আমি কারো সাথে নাচলে তোর কি?’
—“আমার কি মানে?’আমার অনেক কিছু আমি থাকতে অন্য কারো সাথে কেনো নাচবে তুমি?’
“তানজুর কথা শুনে রিয়াদের আর বুঝতে বাকি নেই তানজু তার সাথে অন্য কোনো মেয়েকে সহ্য করতে পারছে না তার মানে তানজুও ভাবতেই রিয়াদের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো, তার সাথে তার সব ভয় চলে গেল,রিয়াদ ভেবেই নিয়েছে কালকে তানজুকে সব বলে দিবেই দিবে,রিয়াদ দাঁত কেলানি হাসি দিয়ে বললোঃ

—“তোর সাথে নাচবো কেনো আমি?’
—“কোনো কারন ছাড়াই নাচবে আমার সাথে না নাচলে একদম মেরে ফেলবো,শয়তান,বিলেতি হনুমান, বান্দর আরও আজেবাজে কথা বললো তানজু রিয়াদকে’…
“রিয়াদের তানজুর কথা শুনে খারাপ লাগছে না ভালোই লাগছে,রিয়াদ আস্তে বসে পড়ে নিচে তানজুর সামনে তারপর তার পিঠ এগিয়ে দেয় তানজুর দিকে,তানজু রিয়াদের কান্ডে বুঝতে পাড়ে রিয়াদ কি করতে বলছে তাকে,গালি দিতে দিতেই রিয়াদের গলা জড়িয়ে ধরে তানজু,তারপর রিয়াদ তানজুকে নিজের কাঁধে করে এগিয়ে চলছে,আর তানজু তো ননস্টপ বকবক করে যাচ্ছে,,আর রিয়াদ সেগুলো শুনছে আর হাসছে….
“আজকের রাতের কথা রিয়াদ কখনো ভুলবে না,খোলা আকাশ,জোৎসা ভরা রাত,আর ঠান্ডা শীতল মেশানো বাতাসের মাঝ দিয়ে আমেরিকান বিউটিফুল রাস্তা পেরিয়ে আলোকিত ল্যামপোস্টের ভিড়ে তানজুকে কাঁধে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে রিয়াদ,তার ঠোঁটে রয়েছে মিষ্টি হাসি সে বুঝে গেছে “তার মতো তানজুরও তার প্রতি একটু হলেও ফিলিংস আছে”….

“সূর্যের শীতলা তাপে ঘুম ভাঙল আমার,,আশেপাশে তাকাতেই আমি বুঝে গেছি এক নরম তুলতুলে বিছানায় জানার পাশে ঘুমিয়ে আছি আমি,আশেপাশে তাকাতেই বুঝলাম এটা আমার রুম নয় তাহলে এটা কার রুম…
“এটা ভেবেই শোয়া থেকে উঠে বসলাম আমি,মাথাটা ভনভন করছে আমার,কাল রাতে কি হয়েছিল সব ভুলে গেছি…
“কিছুক্ষণ পর জানালা দিয়ে বাহিরে তাকাতেই চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার,সাথে খুশিতে মনটা ভোরে উঠলো নিমিষেই কারন বাহিরে বরফ পড়ছে,আমার কতদিনের স্বপ্ন বরফের সাথে খেলবো,,এতটুকু ভেবেই খুশি মনে বিছানা থেকে নেমে রুমের বাহিরে বেরিয়ে আসলাম,বাহিরে আসতেই বুঝলাম এ বাড়িটাও আমাদের নয়,,

“নিচে সোফায় একটা কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে আছে রিয়াদ,কাল রাতেই তাঁরা বাড়ি না গিয়ে এখানে এসেছিল আর এ বাড়িটা হলো রিয়াদের এক ফ্রেন্ডের,কাল রাতে তানজুকে নিয়ে বাড়ি যাওয়া একদমই সম্ভব ছিল না, তানজুকে দেখলে কি বলতো রিয়াদ সবাইকে,তাই অনেক ভেবেচিন্তে এখানে নিয়ে আসে রিয়াদ,তারপর তানজুকে উপরের বিছানায় শুয়ে দিয়ে নিজে ক্লান্ত হয়ে সোফায় ঘুমিয়ে পড়ে…..
“নিচে নামতেই রিয়াদ ভাইয়াকে সোফায় শুয়ে থাকতে দেখে আমি এক্সাইটিং এ চলে গেলাম তার কাছে তারপর ভাইয়ার হাত ধরে বললামঃ

—“ভাইয়া উঠো তাড়াতাড়ি বাহিরে চলো…
“তানজুর ডাক শুনে রিয়াদ ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে উঠলঃ
—“সকাল সকাল কি হয়েছে তোর এভাবে চেচাচ্ছিস কেন?’
—উফ!’ভাইয়া চল বাহিরে দেখো বাহিরে বরফ পড়ছে,,,
—“বরফ পরছে তো কি হইছে..
—“কি হয়েছে মানে চলো বরফ নিয়ে খেলবো…
—“তুই কি বাচ্চা নাকি যে বরফ নিয়ে খেলবি…
—“প্লিজ প্লিজ ভাইয়া চলো আমার কতদিনের স্বপ্ন এটা,,অনেকগুলো ছবি তুলবো…
—“এখন আমি যেতে পারবো না তুই যা…
—“তুমি এমন কেন চলো না যাই…
—“না মানে না…

—“ঠিক আছে তুমি ঘুমাও, তোমার মোবাইলটা কোথায় বলো তো আমার মোবাইলটা পাচ্ছি না…
“রিয়াদ ঘুমের ঘোরে এতটাই বিভোর ছিল যে তানজু এই কথাটা তার কান পর্যন্ত যায় নি,তানজু রিয়াদের ফোনটা ধরতেই ওয়ালপেপারে নিজের ছবি দেখে শকট হয়ে গেল,পরক্ষণেই কিছু একটা ভেবে মুচকি হাসলো সে…
“মোবাইলটা সোফার উপর রেখে দৌড়ে বাহিরে গেল তানজু…..
“ধবধবে সাদা আকাশ থেকে বরফ পরেছে,যেন মুসল ধারে বরফের বৃষ্টি নেমেছিল,,পুরো বাড়িটা জুড়ে ঘিরে রয়েছে বরফ,অসম্ভব সুন্দর লাগছে পুরো জায়গাটা,সবুজ গাছের পাতার ভিড়ে রয়েছে বরফ যেন এক মনোরম দৃশ্য…
“দরজার কাছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির এমন দৃশ্য দেখে মনটা মেতে উঠলো নিমিষেই, আমি দৌড়ে গিয়ে দাঁড়ালাম খোলা আকাশের নিচে বরফের মাঝখানে….
“হাতে বরফ নিয়ে উড়াধুরা লাফালাফি শুরু করে দিলাম,অনেকদিনের ইচ্ছে যখন হুট করে পূরণ হয়ে যায় তখন যতটা না খুশি লাগে তার চেয়েও বেশি খুশি আমি….
“উফ, i Love it…

“এদিকে নিশ্চিতে কম্বল জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে রিয়াদ,হঠাৎই ঘুমের ঘোরে মনে পড়লো রিয়াদে তানজুর বলা কথা__
—“তুমি থাকো আমি গেলাম…
“চোখ বড় বড় তাকালো রিয়াদ, আশেপাশে তাকাতেই রিয়াদের মনে পরলো কাল রাতের কথা,,তাড়াতাড়ি শোয়া থেকে লাফ মেরে উঠলো সে,তারপর তাড়াতাড়ি বাহিরে বেরিয়ে যায় রিয়াদ না জানি কোথায় গেল তানজু…
“বাহিরের দরজার সামনে আসতেই তানজুর পাগলামি দেখে মুগ্ধ রিয়াদ,নিমিষেই সব ভাবনা, চিন্তা বন্ধ হয়ে গেল রিয়াদের,,মুচকি হেঁসে তাকিয়ে রইলো রিয়াদ তানজুর দিকে,,তানজুর পাগলামিতে রিয়াদ এতটুকু বুঝে গেছে তানজুর বরফ খুব ভালো লাগে….
“সারাদিন বরফ নিয়ে মাতামাতি আর অনেক মজা করে দুপুর দিকে ফিরলো রিয়াদ আর তানজু বাড়িতে….
“রিয়াদ কাল রাতের তার মাকে ফোন করে বলেছিল তার বন্ধুর জন্মদিন পার্টিতে গেছে,আর রাতে নাও ফিরতে পারে,তাই তেমন কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া লাগলো না তাঁদের…..

“রাত_১১ঃ০০টা…..
“সোফায় বসে মোবাইল দেখছে রিয়াদ আর অপেক্ষা করছে তানজুর, পরনে তার ওয়াইট শার্ট, ব্লাক প্যান্ট,ব্লাজ কোট, চুলগুলো বরাবরের মতোই সুন্দর করে সাজানো,হাতে ব্যান্ডেড ব্লাক ঘড়ি,পায়ে ব্লাক জুতো,সব মিলিয়ে অল্প সাজেই অসাধারণ লাগছে তাকে,,আজকে রিয়াদ ভেবেই নিয়েছে তানজুকে প্রপোজ করেই ছাড়বে!’আর ছোট্ট একটা সারপ্রাইজ দিবে,,অবশ্য এই সারপ্রাইজের বিষয়টা আহানই এরেঞ্জ করেছে!’রিয়াদ জানে না সবটা গুছিয়ে বলতে পারবে কিনা?’তবে আজকে সব গুছিয়ে বলতে না পারলেও অগোছালো ভাবেই সবটা বলবে রিয়াদ তারপরও বলবে সে,,সে শুধু একবার তানজুকে জড়িয়ে ধরতে চায়,,তার অনেক দিনের ইচ্ছে পূরণ করার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে রিয়াদ…..

“সোফায় বসে এসব ভাবছিল রিয়াদ….
“এমন সময় সিঁড়ি উপর থেকে টকটকে লাল রঙের জামদানী শাড়ি পড়ে নিচে নামলো তানজু,চুলগুলো খোলা,চোখে কাজল,মুখে মেকাপ,গলায় লাল পাথরের নেকলেস,কানে লাল ঝুমকা,দু’হাত ভর্তি লাল কাঁচের চুরি,কপালে ছোট্ট একটা লাল পাথরের তৈরি টিকলি, ঠোঁটে গাঁড়ো করে লাল লিপস্টিক দেয়া,সব মিলিয়ে অসম্ভব সুন্দর লাগছে তানজুকে,শাড়িটা হলো মেলায় বসে কিনে দেওয়া রিয়াদের গিফট করা সেই শাড়িটা,জুয়েলারি গুলোও তার দেওয়া,কিছু একটা ভেবে এসব কিছু নিয়ে এসেছিল তানজু,,,
“মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে রিয়াদ তানজুর দিকে,চোখ যেন সরছেই না তার,এই মুহূর্তে রিয়াদের কাছে তানজুকে স্বপ্নে দেখা সেই সাজের চেয়েও বেশি সুন্দর লাগছে,,হা হয়ে তাকিয়ে আছে রিয়াদ….
“রিয়াদ তানজুর দিকে তাকাতে তাকাতেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো…
“চোখের পলক ফেলতে ভুলে গেছে সে’….

—“আমায় কেমন লাগছে ভাইয়া….
“প্রচন্ড উওেজিত কন্ঠে কথাটা বলে উঠলাম আমি’!!
“তানজুর কথা শুনে আনমনেই বলে উঠল রিয়াদঃ
—“অপূর্ব!’
—“সত্যি…
—“সত্যি বলছি তোকে শাড়িতে এত সুন্দর লাগবে ভাবতেই পারি নি….
“রিয়াদের কথা শুনে তানজু লজ্জায় লাল হয়ে যায়’!!তানজুর লাজুক ফেস দেখে রিয়াদ মুচকি হাসলো তারপর বললোঃ
—“আজ অনেক কিছু বলবো তোকে?’
—“হুম বলো না…
—“এখানে নয় চল আমার সাথে….
“এতটুকু বলে রিয়াদ তানজুর হাত ধরে বাহিরে নিয়ে যায়!’
“বাড়ির সবাই ঘুমে বিভোর’!!আর এই ঘুমের সুযোগ নিয়েই রিয়াদ তানজু গাড়ি করে বেরিয়ে পরলো তাদের গন্তব্যে….

“হঠাৎই মাঝরাস্তায় গাড়ি থামিয়ে দিল রিয়াদ,,রিয়াদের কাজে অবাক হয়ে বললো তানজুঃ
—“কি হলো ভাইয়া গাড়ি থামিয়ে দিলে যে….
“এমন সময় আরেকটা গাড়ি এসে থামলো ওদের সামনে যার ভিতর ছিল আহান!’এতরাতে আহানকে দেখে অবাক হয় তানজু’!!
—“আহান ভাইয়া কি করছে এখানে…
“চরম প্রকার অবাক হয়ে কথাটা বললো তানজু রিয়াদকে’!!রিয়াদ তানজুর দিকে তাকিয়ে বললোঃ
—“বাকিটা পথ তোকে আহান নিয়ে যাবে…
“রিয়াদের কথা শুনে চোখ বড় বড় করে বললো তানজুঃ
—“কি কেন?’
—“তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে?’
—“কি সারপ্রাইজ ভাইয়া…
—“সেটা গেলেই দেখতে পাবি এখন যা তুই…
—“কিন্তু ভাইয়া…
—“কোনো কিন্তু নয়..
“এতটুকু বলে রিয়াদ নিজেই তানজুকে গাড়ি থেকে বের করে আহানের গাড়িতে বসিয়ে দিল!’তানজু বসতেই গাড়ি চালাতে শুরু করলো আহান…
—“তোমরা কি করতে চাইছো আহান ভাইয়া….
—“সেটা গেলেই দেখতে পাবে তানজু….
“আহান ভাইয়ার এমন কথা শুনে হতাশ হয়ে বসে রইলাম গাড়িতে,কিছুই বুঝছি না এঁরা কি করতে চাইছে?’

“বেশ কিছুক্ষন পর…..
“এক আলিশান বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামালো আহান ভাইয়া’!!তারপর আমায় বললোঃ
—“ভিতরে যাও তানজু,তোমার জন্য অনেক বড় চমক অপেক্ষা করছে….
“আহান ভাইয়ার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে তাকালাম বাড়িটার দিকে,তেমন কিছুই চোখে পরছে না পুরো বাড়িটাই অন্ধকারে ঘেরা!’শুধু গেটের আগে দুটো লাইট জ্বলছে!’
“আমিও আর বেশি কিছু না ভেবে আস্তে আস্তে গাড়ি থেকে নেমে গেলাম!’তারপর এক পা এক পা করে এগিয়ে গেলাম বাড়ির দিকে….

“বাড়ির দরজাটা হাল্কা ধাক্কা দিতেই খুলে গেল, পুরো বাড়িটা অন্ধকারে টইটম্বুর,প্রথমে তো ঘাবড়েই গিয়েছিলাম আমি,,
“ভিতরে এক পা দিতেই পুরো রুম আলোতে ভয়ে গেল,,বাড়ির চারদিকে তাকাতেই চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার,মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি আমি পুরো রুমটার দিকে,কারন পুরো রুমটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে, লাল রঙের লাভের বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো রুমটা,,আমি খুশি মনে রুমটার চারদিকে চোখ বুলিয়ে দু’কদম হাঁটতেই আচমকা কিছু একটা পায়ে বাজতেই উপর থেকে গোলাপের পাপড়ি এসে পরলো গায়ে, সাথে সাথে চমকে উঠলাম আমি,,পুরো হা হয়ে গেছি এমন সব কান্ড দেখে,,
“পুরো সিঁড়ি জুড়ে ছিল লাভের বেলুন,,একটা বেলুনের পাশে একটা বড় কাগজে লেখা ছিল….

—“উপরে আয়….
“লেখাটা দেখেই মুচকি হেঁসে উঠতে লাগলাম আমি উপরে,,চার সিঁড়ি উপরে উঠতেই আবারো পায়ে একটা দড়ি জাতীয় কিছু বাজতেই সাথে সাথে উপর থেকে আবারো পরলো গোলাপের পাপড়ি…
“এভাবে চার সিঁড়ি উপরে উঠতেই পায়ে কিছু বাজতেই উপর থেকে পড়ছে গোলাপের পাপড়ি,, লাস্ট বার পায়ে বাজতেই উপর থেকে পরলো রংবেরঙের জড়ি….একের পর এক চমক দেখে খুশিতে মনটা ভরে উঠছে….
“এভাবে উপরে উঠে, সামনে এগিয়ে চললাম আমি,পুরো বাড়িটা এতটাই সুন্দর করে সাজানো হয়েছে যে চোখই সরছে না…

“হঠাৎই আমার থেকে দু’কদম দূরেই একটা সুন্দর দরজা দেখতে পেলাম,,আমি বুঝে গেছি ওই দরজার ভিতরেই রিয়াদ ভাইয়া আছে,,,আমি খুশি মনে এগিয়ে গেলাম ভিতরে….
“দরজাটা খুলতে যাবো এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল আমার,,ফোনটা বাজতেই হাল্কা কেঁপে উঠলাম আমি,ফোনে রুহির নাম দেখে আরো চমকে উঠলাম আমি,এত রাতে ফোন দিয়েছে,,
“কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে ফোনটা তুললাম আমি!’
“ফোনটা তুলতেই ওপর পাশে রুহি বলে উঠলঃ

—“আই এম ইন লাভ “তানজু”…..
“রুহির এত রাতে এমন কথা শুনে পুরোই শকট হলাম আমি,,বিকেলেও তো ওর সাথে কথা হলো কিন্তু তখন তো এমন কিছু বললো না’…আমি এক্সাইটিং এ বলে উঠলামঃ
—“কি কাকে?’
“অপরপাশে রুহি এক্সাইটিং বললোঃ
—“ভেবেছিলাম সামনাসামনি বলবো তোকে কিন্তু এতটাই এক্সাইটিং এ আছি যে এতরাতে ফোন করা লাগলো তোকে,কেনো জানি তোকে না বলে ঘুম আসছিল না আমার….
—“তাহলে বলে ফেল তাড়াতাড়ি কাকে ভালোবাসিস তুই….

“এদিকে দরজার ভিতরে দাঁড়িয়ে আছে রিয়াদ,প্রচন্ড ঘাবড়ে আছে সে, সে জানে না তার মনে কথা শোনার পর তানজুর কেমন রিয়েকশন হবে,কিন্তু সে জানে তানজু তাকে ফিরিয়ে দিবে না….
“রিয়াদের ভাবনার মাঝেই তানজু দরজা খুললো,তানজু দরজা খুলেছে বুঝতে পেরে রিয়াদ পুরো রুমের লাইট জ্বালিয়ে দিলো….
“সাথে সাথে জ্বল জ্বল করে উঠলো তানজুর সোজাসোজু একটা বড় লাইটিং বোর্ডে লেখা আই লাভ ইউ……
“রিয়াদের চমক দেখে তানজু তেমন কোনো রিয়েকশন দিলো না শুধু অবাক চোখে তাকিয়ে ছিলো পুরো রুমটার দিকে….

এক ফালি রোদ্দুর পর্ব ৩০

“এরই মাঝে রিয়াদ তানজু সামনে এসে হাঁটু গেড়ে বসে হাতে একটা ফুলের তোড়া নিয়ে বলে উঠলঃ
—“জানি না তুই বিষয়টা কিভাবে নিয়েছিস কিন্তু এটাই সত্যি নিজের অজান্তেই তোকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি তানজু,আই রিয়েলি লাভ ইউ,আই রিয়েলি রিয়েলি লাভ ইউ,তোর সাথে কাটানো সময়গুলো আজও মনে পড়ে আমার,তোকে প্রতিটা মুহূর্তে ফিল করি আমি,আমি তোকে বোঝাতে পারবো না আমি তোকে কতটা ভালোবাসি, অনেককিছু বলার ইচ্ছে ছিল কিন্তু এক্সাইটিং কিছুই বলতে পারছি না,শুধু এতটুকু বলবো,তোকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি আমি…..

“তানজু নীরব দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো শুধু রিয়াদের দিকে,রিয়াদ এতক্ষণ মাথা নিচু করেই এই কথাগুলো বললো…
“তানজুকে চুপ থাকতে দেখে রিয়াদ তানজুর দিকে ফুলটা এগিয়ে দিয়ে বললোঃ
—“কি হলো কিছু বলছিস না কেন?’
“রিয়াদের কথা শুনে তানজু দু’কদম পিছনে চলে গেল’!!তানজুকে পিছনে যেতে দেখে রিয়াদের বুকের ভিতর দক করে উঠল,,তাহলে কি সে যা যা ভেবেছিলো সব মিথ্যা হয়ে গেল…
“তানজু রিয়াদের দিকে তাকিয়ে বললোঃ
—“এসব কি বলছো তুমি ভাইয়া,এটা হয় না?’…..

এক ফালি রোদ্দুর পর্ব ৩২