কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ১৫

কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ১৫
লাবণ্য ইয়াসমিন

বিস্ময়কর দৃষ্টিতে চেয়ে আছে ইমরোজ খান। দূরে কোথাও একটা বিকট শব্দে বজ্রপাত হলো তবুও ওর দৃষ্টি এলোমেলো হলোনা। মেয়েটা কে হতে পারে বুঝতে পারছে না। তাছাড়া এভাবে পানির মধ্যে উল্টোদিকে ঘুরে ডুবে আছে কেনো সবটা ওর কাছে রহস্য মনে হচ্ছে। ইমরোজ চোখ বন্ধ করে কিছু একটা ভাবলো তারপর মেয়েটাকে তোলার জন্য হাত বাড়িয়ে দিতেই পেছনে থেকে উষ্ণ একজোড়া হাত এসে ওর কব্জিটা খপ করে ধরে ফেলল। ঈমরোজ বিরক্ত হয়ে পেছনে তাঁকিয়ে থতমত হয়ে গেলো কারণ লিকলিকে চিকন টাইপের গঠন সঙ্গে ঝাকড়া চুলের একটা ছেলে ওর পাশে দাঁড়িয়ে আছে। ও কৌতূহলী হয়ে জিঞ্জাসা করলো,

কে তুমি? এখানে কি হচ্ছে? আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে তাইনা? ইমরোজ খানকে ফাঁসানো এতোটাও সহজ বুঝি?
ইমরোজের এতগুলো এলোমেলো প্রশ্ন শুনে ছেলেটা অমায়িক হাসলো। তারপর কপালের উপরে গড়িয়ে আসা ছোট ছোট চুলগুলো হাতের মুঠোয় ধরে উপরের দিকে সামান্য টেনে নিয়ে উত্তর দিল,
দাদু আমাকে পাঠিয়েছেন আপনাকে ফিরিয়ে নিতে। দ্রুত ফিরে চলুন। উনার আদেশ আপনাকে সঙ্গে নিয়ে ফিরতে হবে। শুভ কাজের সূচনা হতে চলেছে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রাতটুকু একান্তে বসে থাকবো এইটুকু অধিকার আমার নেই? তোমার দাদুকে বলে দাও ওই হন্টেট হাউজে আমি ফিরবনা। একান্তে থাকতে চাই। আমার মেজাজ খারাপ করলে সবকিছু ধ্বং/স করে ফেলবো প্রমিজ।
ইমরোজ বেশ তেজ নিয়ে তেড়ে আসলো আচেনা ছেলেটার দিকে। এমনিতেও মেজাজ খারাপ তারপরে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবলেই গায়ে আগুন লেগে উঠছে। ওর কথায় অগন্তক ছেলেটা রাগ করলোনা বরং ধৈর্য্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। ইমরোজ রেগেমেগে উঠে আসলো।

ওর সামনে একটা মেয়ের অবয়ব ভাসমান অবস্থায় ছিল বেমালুম ভুলে গেলো। হন্তদন্ত হয়ে হাটতে হাটতে দৌঁড়াতে শুরু করলো। রাগ আজ নিয়ন্ত্রণের বাইরে শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ব্যাথা যন্ত্রণা কিলবিল করে চলাফেরা করছে। তকের চামড়া জ্বলছে। বাতাসের গতিতে দৌঁড়াতে দৌড়াতে এক সময় ও দৃষ্টির অগোচরে চলে গেলো। ও চলে যেতেই পানি থেকে অর্ধ নগ্ন পোষাকের রূপবতী মেয়েটা উঠে আসলো। কঠিন দৃষ্টিতে চাইলো ছেলেটার দিকে। কিছু বুঝে উঠার আগেই মেয়েটা নিজের ধারা/লো নক বসিয়ে দিলো ছেলেটার গলাতে। হিং/স্র হয়ে বলল,

ওকে কতবার বাঁচাতে আসবে? আমি বারবার চেষ্টা করবো ওকে বরবাদ করার জন্য। আমার হাতেই ওর মৃ/ত্যু লেখা আছে। প্রমিজ খুব তাড়াতাড়ি আমাদের দেখা হবে।
ছেলেটা আলগোছে মেয়েটার হাতদুটো ছাড়িয়ে নিয়ে পেছনের দিকে দুমড়ে দিয়ে কঠিন করে জবাব দিলো,
স্ত্রী বুদ্ধি ভয়ঙ্করী তুমি তাঁর উজ্জ্বল উদাহরণ। কার হাতে কার মৃ/ত্যু লেখা আছে সেটা নাহয় সময়ের উপরে ছেড়ে দিলাম। তুমি বরং নিজের জায়গায় ফিরে যাও মেয়ে। এসব পৃথিবীর নিয়মকানুনের বিরুদ্ধে গিয়ে বেশিদিন ক্ষমতার দম্ভ দেখাতে পারবেনা। ইমরোজের জন্য একজন বিশেষ মানুষ আছে ও ঠিক নিজের প্রিয়কে বাঁচিয়ে নিবে।

আমি কাউকে শান্তিতে থাকতে দিবনা। যারা আমার শান্তি কেড়েছে তাদের ক্ষতি করতে নিজের জীবন অনায়াসে বাজি ধরতে রাজি আমি।
তবে তাইহোক।
কথাটা বলেই ছেলেটা ওকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিয়ে যেভাবে এসেছিল সেভাবে গায়ব হয়ে গেলো।

বিশাল ডাইনিং রুমের ফ্লর জুড়ে নানারকম মানুষের আনাগোনা। সামনে মঞ্চ ঘেরা হয়েছে। সেখানে সাদা গাউন পরিহিত একটা মেয়ে বধু সেজে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে ওয়াশিম খানের আদরের নাতি নির্জন খান আঁধার। দীর্ঘদিন অচেতন হয়ে পড়ে থাকার দরুন শরীর বেশ দুর্বল। মস্তিষ্ক বেশ কাজ করছে তবে চোখ বড্ড জ্বালাতন করছে। সবটা ঝাপসা দেখছে। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বধূর সাজে রমনীকে মনে হচ্ছে ওর খুব চেনাশোনা আপনার কেউ। মেয়েটা কে হতে পারে মাথায় আসছে না।

নিজের ভাইয়ের হবু বউয়ের দিকে এহেন দৃষ্টিতে দেখা উচিত না তবুও ওর দেখতে মন চাইছে। মস্তিষ্কে একটা মেয়ের শুভ্র উজ্জ্বল মুখ জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। বারবার মনে হচ্ছে এটাই সেই মেয়ে। লোকজন বেশ উৎসাহী হয়ে আছে বরের আগমনের আশায়। ইমরোজ খানের বিয়ে বলে শহরের নামকরা লোকদের আগমন ঘটেছে। যাকে নিয়ে এতো আয়োজন সেই নিজ কক্ষে বসে আছে। বিয়ে হচ্ছে মূলত কোন ধর্ম রীতিমতে কেউ বুঝতে পারছে না।

ওয়াশিম খানের পূর্ব পুরুষেরা খ্রিস্টধর্মের অনুসারী ছিলেন কিন্তু পরবর্তীকালে উনারা কালো শক্তির উপাসনা করতেন সেখানে ধর্মকর্ম মানেই শয়তানের নামে ভেট প্রদান করা।তবে উনার নিজের ছোট ছেলে আর বউমা মুসলমান সেই অনুযায়ী ইমরোজ বাবার মতো মুসলিম। তার ওর ধ্যান ধারণা সব দাদুর মতামতের মধ্যে সীমাবদ্ধ। নিজের বুদ্ধিতে আজ অবধি কিছু করেছে কি সন্দেহ আছে। ওয়াশিম খান একখানা পাত্রে তরল জাতীয় পানিয় বধূর সামনে রাখলেন। হাতে ডাইমন্ডের ঝিকমিকি আংটিটা লাল কাপড়ের মধ্যে রাখলেন। সব জোগাড় শেষ হতেই ইমরোজ সিঁড়িতে পা রাখলো।

খুব শান্ত ভঙ্গিতে নেমে আসলো নিচে। চুপচাপ গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো হবু বধূর পাশে। মাথা নিচু রাখার জন্য ওর মুখের ভাব ভঙ্গি তেমন বোঝা যাচ্ছে না। রীতিনীতি মানার পরে উকিল আসবে। ওয়াশিম খান পাত্রটা ঐশ্বর্যের হাতে তুলে দিয়ে মৃদু কণ্ঠে বললেন,

ওর দিকে তুলে ধরো। এই পাত্র থেকে দুজনকেই এটা পান করতে হবে।
ঐশ্বর্য মাথা নাড়িয়ে ইমরোজের দিকে হাতটা এগিয়ে দিলো। ঠিক তখনই ভিড় ঠেলে এগিয়ে আসলো আঁধার। হন্তদন্ত হয়ে ছুটে গিয়ে পাত্রের তরলটা নিজের গলাই ঢেলে নিয়ে পাত্রটা নিজের হস্তে টেনে নিয়ে ঐশ্বর্যের মুখে তুলে দিলো। যতক্ষণ না মেয়েটা এটা পান করলো ততক্ষণ ধরে রাখলো। ঐশ্বর্য বাধ্য হয়ে ঢকঢক করে সেটা খেয়ে নিলো। আঁধার পাশ থেকে একটা আংটি নিয়ে ওর হাতে পরিয়ে দিয়ে আরেকটা নিজ আঙ্গুলে পরে নিলো। সবটা মূহুর্ত্তের মধ্যে ঘটে গেলো। খান হাউজে কক/টেল বিস্ফোরণ ঘটার মতো ঘটনা ঘটে গেলো। সিকিউরিটি গার্ড বা পাশের কেউ এগিয়ে আসলোনা। কাজ শেষ হতেই ওয়াশিম খান হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন,

এটা কি করলে তুমি? ওটা তোমার ভাইয়ের হবু বউ ছিল। এমনটা করতে পারোনা তুমি।
আঁধার ঘোলা চোখে মাতালের মতো কিছুক্ষণ তাঁকিয়ে থাকলো তারপর ঐশ্বর্যের হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলল,
তোমার বহুদিনের তপস্যার ফল এই তরল আমি খেয়ে নিয়েছি দাদু। এই মেয়েটাকেও খাওয়ায়ে দিয়েছি এখন কি হবে বলোতো? তুমি বলছিলে না এটা খেলে দুজন দুজনার থেকে কখনও আলাদা হতে পারবোনা।এমনকি বিয়েরও কোনো প্রয়োজন হবেনা কারণ কেউ কাউকে ছাড়তে পারবোনা।আমার কেনো জানি ওকে নিজের মনে হচ্ছে। তুমি আমাকে থামাতে পারবেনা কারণ এই তরল। এটা ভয়ঙ্করভাবে আমাদের দুজন কে এক করতে কাজ করবে। বাঁধা দিলে প্রাণ যাবে তোমার প্রিয় নাতির ঠিক বলেছিনা?।

আঁধার ঐশ্বর্যের হাতের কব্জিটা শক্ত করে ধরে সোফায় বসে থাকা উকিলের সামনে গিয়ে ধপাস করে বসে পড়লো। পা দুখানা টেনে উপরে তুলে নিয়ে বাবু হয়ে বসে চোখ টেনে টেনে বলল,
জনাব উকিল আমি বিয়ে করবো। বিয়ে দিন আমাকে।
উকিল সাহেবের হতভম্ভ অবস্থা। উপস্থিত সাধারণের মুখে নানারকম গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ওয়াশিম খান বাকরুদ্ধ হয়ে বসে আছেন।

উনার পরিকল্পনাতে এই ছেলে এক বালতি পানি ঢেলে শান্ত করে দিয়েছে। কত আশা করেছিলেন ইমরোজের বিয়ে দিয়ে একজনকে জব্দ করবে কিন্তু সে আর হলো কোথায়? এই ছেলেটা সব গণ্ডগোল পাকিয়ে দিলো। আরও দুটোদিন অচেতন হয়ে পড়ে থাকতো তবুও আফসোস থাকতো না। এখন আর ওকে বাঁধা দিয়ে কিছু হবেনা। যা হওয়ার হয়ে গেছে। এদিকে দোতালায় এক অপরূপা রমণী বক্র হেসে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে তার জটিল সমীকরণ। ওয়াশিম খানের দিকে তাকিয়ে মজা পাচ্ছে। তাই বিড়বিড় করে উচ্চারণ করল,

খুব বশ করার সখ ছিল না? আজ স্বাদ পূরণ করে দিয়েছি।
পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে ইমরোজ চুপচাপ আছে। বিয়েটা নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে ছিল তাই ভাইয়ের উপরে ও মোটামুটি সন্তুষ্ট আছে। উকিল আগের কাগজপত্র ফেলে আবারও নতুন করে তৈরী করে নিলেন। বিয়েটা শেষ হতেই ঐশ্বর্য এক ঝটকায় নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিলো।

এতোক্ষন নিজের নিয়ন্ত্রণে ছিল না বিধায় চুপচাপ সবটা মেনে নিয়ছে কিন্তু এখন মানতে পারবেনা। সবটা কেমন এলোমেলো লাগছে। দোটানায় ভুগছে। শরবত জাতীয় তরলের জন্য কি বোঝা যাচ্ছে না। আঁধার পাশ থেকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ওকে দেখতে দেখতে হুট করে টেনে হিছড়ে উপরের দিকে নিয়ে চললো। কেউ জানতেও পারলোনা সব কিছুর পেছনে কেউ একজন আছে যে তাঁর উদ্দেশ্য পূরণে একধাপ এগিয়ে গেলো।

নির্জন কক্ষে দাঁড়িয়ে আছে কহিনুর। সাঈদ জানালার আছে কিছু একটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে। কহিনুর সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বলল,
সাঈদ আমি স্বপ্নের মধ্যে ওই কক্ষটাই বারবার দেখেছি। একটা মেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে ছিল। পাশে চিৎকার করে কাঁদছিলো তার সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া শিশু। আচ্ছা শিশুটা কি আমি ছিলাম? সাঈদ জ্বীনেরা কি ভবিষ্যৎ বলতে পারে?
সাঈদ পেছনে ফিরে উত্তর দিলো,

একদম না নূর। আমাদের রব ছাড়া কেউ ভবিষ্যৎ বলতে পারেন না। এই ক্ষমতা কারো নেই। অনেকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানে পারদর্শী আছে ওরা কিছুটা আকার ইঙ্গিত হিসেবে অনুমান করতে পারে। কিছু মিলে যায় আবার কিছু মিলেনা। আমি এসব বিষয়ে সাহায্য করতে পারছিনা তবে মেয়েটা কোনো মানুষ ছিল না এইটুকু বলতে পারবো।

সাঈদের কথা শুনে কহিনুর থমকে গেলো। মেয়েটা মানুষ ছিলনা তবে কি ছিল? সেদিন পূর্ণিমা রাতে কঠিন এক সত্যের মুখোমুখি হতে হয়েছে ওকে। সাদা সরল মেয়েটার মধ্যে অন্যরকম শক্তির বসবাস ছিল যেটার অস্তিত্বের প্রকাশ ঘটেছে। কহিনুর বেশ অশান্ত ছিল কিন্তু সাঈদ ওকে শান্ত করেছে। একে একে পৃথিবীতে অবস্থান করা ওর নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে ভেবে রেখেছে। কহিনুরের ধ্যান ভাঙলো দরজায় খটখট আওয়াজ শুনে। কহিনুর দ্রুত গিয়ে পুরাতন আলমারির পেছনে গিয়ে লুকিয়ে পড়রো।

কেমন অদ্ভুত আওয়াজ করে দরজা খুলে গেলো। এক সেকেন্ডের মধ্যে সাদা একটা বিড়াল ভেতরে প্রবেশ করলো। বিড়ালটা আশেপাশে চোখ ঘুরিয়ে দেখতে দেখতে অদৃশ্য হয়ে গেলো। কহিনুর বেরিয়ে আসতেই সাঈদ ওকে টানতে টানতে বেলকনীতে নিয়ে গিয়ে নিজেদের কক্ষের দিকে এগিয়ে গেলো। কক্ষে পৌঁছাতেই কহিনুর রেগে ফেটে পড়লো। রাগ দেখিয়ে বলল,

এভাবে আনলে কেনো? ওটা কী ছিল?
ওটা কে ছিল জানিনা তবে এই বাড়িতে অদ্ভুত কিছু হচ্ছে নূর। আমাদের এই বাড়িতে থাকা উচিত হবেনা। কথা দিচ্ছি পরে আবারও আসবো এখন যেতে হবে আমাদের।

কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ১৪

কহিনুর প্রতিবাদ করার সুযোগ পেলোনা। সাঈদ ওর হাত ধরে বেলকনি থেকে ঝাপিয়ে পড়ল। জনশূন্য রাস্তার মাঝামাঝি গিয়ে দুজনে থামলো। ওদের থেকে খানিকটা দূরে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। কহিনুর কৌতূহলী হয়ে গাড়ির জানালায় উঁকি দিয়ে চোখ বড়বড় করে ফেলল। সিটের সঙ্গে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে জামসেদ ফারুকী। কহিনুরের মনে প্রশ্ন জাগলো এই মাঝরাস্তাই লোকটা কি করছে?

কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ১৬