কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ৮

কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ৮
লাবণ্য ইয়াসমিন

বিন্দু বিন্দু জল মিশ্রিত নেত্রপল্লব ঝাপটে কাঁপা কাঁপা ওষ্ঠ নাড়িয়ে কিছু বলার চেষ্টা করছে কহিনুর কিন্তু কন্ঠনালী কোনো অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে বন্ধ হয়ে আছে। নিজেকে বোবা মনে হচ্ছে। হুটহাট অচেনা পরিবেশ বা লোকজনের সঙ্গে ওর পরিচয় নেই বললেই চলে। অচেনা এই সুদর্শন যুবকের চাহুনি ওর মোটেই ভালো লাগছে না। লোকটার চোখে নিজের জন্য একরাশ ঘৃণা দেখতে পাচ্ছে। লোকটা ওকে অবিশ্বাস করছে। শত্রু ভাবছে হয়তো। বাবা ছাড়া নিজেকে কেমন অসহায় লাগছে। কহিনুর চমকে উঠলো লোকটার আওয়াজ শুনে। ধম/ক দিয়ে লোকটা পূণরায় বলে উঠলো,

ঝামেলা ছাড়া উত্তর দাও কে পাঠিয়েছে তোমাকে? উত্তর না দিলে আমি তোমাকে আটকে রাখবো। আজীবনের জন্য পৃথিবীর আলো বাতাস ভুলে যাবে মেয়ে।
কহিনুরের বুকের মধ্যে ধুকপুক করছে। কিছু বলা প্রয়োজন তাই নিজেকে প্রস্তুত করে উত্তর দিলো,
দেখুন আমি আপনাকে চিনি না। আপনার সঙ্গে আমার কোনো শত্রুতা নেই। আমি এই শহরে নতুন। কাজে জন্য এসেছি। বিশ্বাস করুন।
লোকটা কহিনুরের মুখের সম্মুখে গিয়ে ভ্রু কুচকে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

তুমি বললেই আমি বিশ্বাস করে নিবো ভাবলে কিভাবে? আচ্ছা বলতে হবে না থাকো এখানে। আমার রাজ্যে বন্দী হয়ে আজীবন পড়ে থাকো। ইমরোজ খানকে বোকা বানাতে পারবে না মেয়ে। এতোটা সহজ হবে না। কি ভেবেছো আমার থেকে চেহারা আড়ালে রাখলেই তুমি বেঁচে যাবে? কি এমন আছে তোমার অবয়বে? সেইতো লিকলিকে আন্টি টাইপ।

ইমরোজ নামের লোকটার কথাবার্তা শুনে কহিনুরের মেজাজ খারাপ হলো। লোকটা ওকে বিশ্বাস করছে না সঙ্গে বাজে কথা বলছে। কিভাবে বললে বিশ্বাস করবে ওর জানা নেই। তবে এখানে বন্ধি হয়ে থাকতে পারবে না। দ্রুত এখান থেকে বাইরে যেতে হবে। বাবা মায়ের খোঁজ করতে হবে। একটা বিপদ থেকে রক্ষা না পেতেই অন্য একটা হাজির হয়েছে। লোকটা বিশেষ সুবিধার না সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। পালাতে হবে একে বুঝিয়ে বিশেষ লাভ হবে না। কহিনুরের ধ্যান ভাঙলো হঠাৎ আক্রমণে। ইতিমধ্যে এক মহিলা এসে ওর হাত ধরে টানাটানি করছে। কহিনুর ঘনঘন নিশ্বাস ফেলে জিঞ্জাসা করলো,

কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে? প্লিজ ছেড়ে দিন,আমি সত্যি বলছি কিছু করিনি।।
লোকটা যেভাবে এসেছিল সেভাবেই চলে গেলো। কি একটা ঝামেলাতে ফেঁসে গেছে ভেবে কহিনুর কপাল চাপড়ালো। মহিলাটা শক্ত হাতে ওকে বাইরে নিয়ে গেলো। সিড়ির কাছাকাছি গুপ্ত দরজার ভেতরে ওকে ছুড়ে দিয়ে ধুম করে বন্ধ করে দিলো। কহিনুর হুড়মুড় করে ভেতরে গিয়ে পড়ে গেলো। কপালে পাথরের টুকরোর সঙ্গে লেগে ব্যাথা পেলো তবে সামলে নিলো।

আল্লাহ কঠিন বিপদের সম্মুখে ফেলেছে নিশ্চয়ই বের হওয়ার রাস্তা বের করে দিবেন কথাটা ভেবে ও ধৈর্য ধারণ করলো। তারপর আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিলো। সামনে উন্মুক্ত বাগান সেখানে নানারকম ফুল ফুটে আছে। কিছুটা দূরে ছোট্ট পাহাড়। পাহাড় বেয়ে নেমে এসেছে ঝর্ণা। পাহারের গায়ে পাশাপাশি কয়েকটা দরজা। হয়তো সেখানে গুপ্ত কক্ষ আছে। কহিনুরের ভয় করছে। বাইরে থেকে বোঝার উপাই নেই ভেতরে এমন সুন্দর একটা জায়গা আছে। কিন্তু সৌন্দর্যের পেছনে নিশ্চয়ই লুকানো আছে অজানা কোনো রহস্য।

কি সেটা? কহিনুর একপা দুপা করে কিছুটা এগিয়ে আসলো ঝর্ণার দিকে। ঝিরিঝিরি পানি এসে ছোট ছোট পাথরগুলোকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। তবে উপরে আকাশ দেখা যাচ্ছে না। এর মানে বুঝলো এখানে যা কিছু আছে সবটা মানুষের সৃষ্টি। কহিনুরের কপালে ভাজ পড়লো। দ্রুতগতিতে আশেপাশের সবটা দেখতে থাকলো। হঠাৎ একটা আওয়াজ পেয়ে ও থমকে গেলো। পাহাড়ের গায়ে থাকা দরজার ভেতর থেকে কারা জানি আওয়াজ করছে। ভয়ে ওর শরীর কেঁপে উঠলো।এটা কোন জগতে এসে পড়লো কে জানে। ধুমধাম আওয়াজ করতে করতে দরজা হঠাৎ খুলে গেলো। অর্ধ নগ্ন পোশাকের কিছু পুরুষ মানুষ হাতে ধা/রালো অ/স্ত্র নিয়ে ওর দিকে এগিয়ে আসছে। লোকদের পোশাকের অর্ধেক প্রায় পুরাতন আর ছেড়া। হয়তো মেন্টাল নয়তো হিংস্র বনমানুষ। কহিনুর ভাবতে পারছে না কোথায় পালাবে এই বন্ধ কক্ষের মধ্যে? পিছিয়ে গিয়ে দরজা ধাক্কা দিতে থাকলো,

প্লিজ আমাকে এখানে থেকে বের করুন। ওরা আমাকে মে/রে ফেলবে আমি ম/রে যেতে চাইনা। মাম্মা কোথায় তুমি।
কহিনুর শব্দ করে কাঁদছে। লোকগুলো ওর একদম কাছে চলে এসেছে। এখান থেকে নড়াচড়ার কোনো উপাই নেই। চুপচাপ হাল ছেড়ে দিয়ে মৃ/ত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে হবে।সব রাস্তা বন্ধ।কহিনুর দুহাতে মুখ ঢেকে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। আজ হয়তো জীবন প্রদীপ একেবারের জন্য নিভে যাবে। বাবা মায়ের সঙ্গে দেখা হবে না। ওর ভাবনার মধ্যে বেশ কিছুটা সময় অতিবাহিত হলো।

আশেপাশে বেশ কিছু মানুষের অস্তিত্ব অনুভব করছে তাই মাথা নিচু করে সামান্য এক চোখ খুলে দেখে নিলো। ভয়ঙ্কর দেখতে লোকগুলোর মধ্যে একজন ওর দিকে ধারা/লো খঞ্জ/র তুলে ধরলো। সোজাসুজি কো/প বসিয়ে দিলো ওর কাঁধের দিকে। কহিনুরের আত্মা কেঁপে উঠলো। ও চমকে উঠে চোখ বন্ধ করলো কিন্তু অদ্ভুতভাবে খঞ্জ/রটা ওর গায়ে লাগলো না। উল্টো লোকটা ছিটকে গিয়ে পড়লো কিছুটা দূরে। কহিনুর হতভম্ভ এমন দৃশ্য দেখে। পরপর সকলেই ওকে আক্রমণ করতে আসলো কিন্তু পরিণতি সকলের এক।

কহিনুরের শরীরে বিন্দু পরিমাণ আচ লাগলো না। নিজের মধ্যে অদ্ভুত একটা শক্তির উপস্থিতি ওকে আগে থেকেই জানান দিয়েছিলো কিন্তু এভাবে না। রাতে সেই ছেলেটা যখন ওকে ছুঁয়ে দিতে এসেছিলো তখনও ছেলেটা এভাবেই ছিটকে গিয়েছিলো। কহিনুর নিজে নিজে একটা লজিক খুঁজে নিলো। কেউ ওকে ক্ষতি করার চেষ্টা করলে অটোমেটিক ভেতরে থেকে সেই শক্তি ওকে বাঁচিয়ে দিচ্ছে। কহিনুর উত্তেজিত হয়ে পড়লো। বাবার সঙ্গে কথা বলতে পারলে আরও কিছু জানতে পারতো ভেবে আফসোস করলো।বাবা তো জানতেই পারলো না কহিনুরের ক্ষতি কেউ করতে পারবে না। কিন্তু প্রশ্ন জাগলো এই শক্তির উৎস কি?

বিশাল এক কক্ষের মাঝখানে কারুকার্যমন্ডিত পালঙ্কে অচেতন হয়ে পড়ে আছে এক যুবক। পাশে হেকিম সাহেব নিজের তৈরী ওষুধ দিয়ে চোখ বন্ধ করে কিছু একটা বলছেন।পাশে এক বৃদ্ধ বসে আছে। ইমরোজ ঘুমন্ত যুবকের দিকে চেয়ে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করছে। শত্রুদের জন্য আজ ভাইয়ের এই অবস্থা। পৃথিবী থেকে শত্রুদের নাম নিশানা যতদিন পযর্ন্ত না গায়েব করতে পারছে ততদিন শান্তি নেই।

বহু বছরের পুরাতন চোখ দুটি ঘুমের জন্য আনচান ছটফট করে তবুও ইমরোজ তাঁকে বিশ্রামের সুযোগ দিচ্ছে না। শ/ত্রুদের বাঁচিয়ে রেখে কিসের ঘুম? দাদুকে ও অন্ধের মতো বিশ্বাস করে। লোকটা ছিল বলেই না ওদের সম্প্রদায়ের লোকেরা আজও পৃথিবীতে আছে নয়তো কি হতো ভেবেই শরীর কেঁপে উঠে। ইমরোজ নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চেষ্টা করবে ওই হৃদয়হীন মেয়েটা আর ওর পরিবারকে জ্বালিয়ে দিতে। হঠাৎ হেকিমের ডাকে ওর ধ্যান ভাঙলো,

এখনো কোনো আশা দেখছি না। এই কাল ঘুম ওর কখন কাঁটবে জানিনা।তবে ছেলেটার জাগ্রত হওয়ার কোনো ইচ্ছায় অবশিষ্ট নেই। থাকলে অন্যদের সঙ্গে নিজেও ফিরে আসতো। অপেক্ষা করতে হবে।
ইমরোজ রেগে গেলো। হেকিমের দিকে তেড়ে গিয়ে বলল,

ইচ্ছে নেই বললেই হবে? আপনি চেষ্টা করছেন না তাই ও ঠিক হচ্ছে না। শুনে রাখুন ওকে যতদিন অবধি ঠিক করতে না পারছেন ততদিন পযর্ন্ত এই চার দেয়ালের মধ্যে আপনাকে বন্দি থাকতে হবে। নিজের দেশ প্রিয়জন কাউকে দেখতে পারবেন না। বয়স হচ্ছে সময় নিশ্চয়ই ঘনিয়ে আসছে। তাই নিজের প্রিয় মানুষদেরকে দেখতে চাইলে দ্রুত কাজ করুন। আমি রেগে গেলে তান্ডব চলবে সামলাতে পারবেন না।

ইমরোজের কথা শুনে হেকিম সাহেব ঘাবড়ে গেলেন। ভয় পাচ্ছেন কিন্তু অদ্ভুতভাবে এই ছেলেটার উপরে উনার রাগ আসেনা। গালি দিতে পারেন না। ইমরোজ আরও কিছু বলার আগেই পাশের বৃদ্ধা লোকটা ওকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলো,

রাগ করে কিছুই হবে না। নিজের কাজে যাও। যেটা বলেছি মনোযোগ দিয়ে পালন করো। এদিকটা আমি সামলাতে পারবো। রাগ করে নিজের বাপকে পযর্ন্ত কটু কথা শুনিয়ে দিয়েছো। বেচারা ছেলের ধমক খেয়ে না জানি আজ কোথায়। সামনে তোমার বিয়ে দিয়ে ঝামেলা মুক্ত হতে চাইছি। সামলাতে পারবে এমন মেয়েকেই আমি তোমার জন্য নির্বাচন করেছি। এখন যাও।
ইমরোজ ওখানে আর অপেক্ষা করলোনা। দ্রতগতিতে অফিসের জন্য বেরিয়ে আসলো।

ল্যাপটপের সামনে বসে আছে জুবায়েরের। দুদিনে সেয়ার মার্কেট ডাউন।লস হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা।এভাবে চলতে থাকলে কোটি ছাড়িয়ে যাবে অনায়াসে। জামসেদ চেষ্টা করছে সবটা আগের মতো করতে কিন্তু ঝামেলা একটা লেগেই থাকে। বারবার আগেকার দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। যখন কহিনুর ছিল তখন এসব নিয়ে ভাবতে হতো না। সম্পদ নিয়ে ঝামেলা ছিল না। হয়তো কালো শক্তির প্রভাব। তবে আফসোস হয়না।

পরিশ্রম করে যেটুকু উপার্জন হবে তাই দিয়ে ওদের ভালো করেই চলে যাবে। পরপর ইমেইল চেক করতে গিয়ে ওর মেজাজ খারাপ হলো। দুদিন ধরে শুধু খারাপ সংবাদ আসছে। বয়স হচ্ছে এতটা ধকল নিলে শরীর টিকবে না। যতটা নিজের ফিটফাট রাখার চেষ্টা করুকনাকে কেনো তবুও রোগ শোক শরীরে বাসা বাঁধতে চেষ্টা করছে। অধরা গুণগুণ করে কিছু গেয়ে চলেছে আর বিছানা তৈরি করছে। জুবায়ের ল্যাপটপ রেখে উঠে পড়লো। মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি ভর করেছে। মন ভালো রাখতে বউয়ের শান্তি এখন নষ্ট করতে হবে। ভাবতে ভাবতে ও অধরার কানের কাছে গিয়ে আওয়াজ করলো। মেয়েটা চমকে উঠে বিছানায় হেলে পড়লো। জুবায়ের ওর উপরে খানিকটা ঝুকে পড়ে ভ্রু নাচিয়ে বলল,

বাহ বর কাছে আসতেই চুমু দিতে প্রস্তুত হয়ে গেছো? হবেই তো যা দেখতে আমি। মেয়েরা তো সুলতান জুবায়ের ফারুকী বলতে পাগল। তুমি আর এমন কি। আসো একটা চুমু দিতে আমার খুব একটা অসুবিধা হবে না।
জুবায়ের মিটিমিটি হাসছে। অধরা রেগে বোম হয়ে আছে। ঘনঘন ফুলছে বেশ কিছু কড়া কথা শুনিয়ে দিয়ে ইচ্ছা করছে। লোকটা এমন কেনো? বাবার উপরে এখন বড্ড অভিমান হয়। এই পাগলের সঙ্গে তখন বিয়েটা কি না দিলেই হতো না? বর না আস্ত বরর্র। জুবায়ের ওক ভাবতে দেখে আরও ঝুকে পড়লো। দুজনের মুখ কাছাকাছি। আরও কাছে আসার আগেই অধরা দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

সুলতান জুবায়ের ফারুকী যে বিখ্যাত সে আমার অজানা নেই। কিন্তু অধরা বারি কম কিসে? সেদিন জিমে এক মহিলা আমার বিয়ের কথা বলছিলো। তাছাড়া আলফার সিনিয়র একটা ছেলে আমাকে লাইন মারে বুঝতে পারছেনতো আমি এখনো দেখতে কেমন?থাক বলে লাভ কি।
শেষের কথাগুলো অধরা বেশ রসিয়ে রসিয়ে বললো। জুবায়েরের চোখমুখ চুপসে গেছে। নিজের জ্বালে নিজেই ফেঁসে গেছে। কেনোযে ওসব উদ্ভুট কথাগুলো বলতে গেলো। আফসোস হচ্ছে। তাই মুখটা গম্ভীর করে বলল,

জিমে কেনো যাচ্ছো তুমি? আজ থেকে কোথাও যাবেনা। তুমি এমনিতেই বেশ আছো। রোগা পাতলা বউ আমার চাইনা। শুনো আজকাল কি তুমি আলফার ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছো? ও বাড়িতে বন্ধুদের নিয়ে আসে নাকি? ছেলেটার সঙ্গে কথা বলতে হবে। দিনদিন বড্ড বেয়াদব হচ্ছে।

উপর থেকে উঠুন আর নিজের কাজে মনোযোগ দিন। আমাকে আমার কাজটা করতে দিন। জামসেদ ভাই বলছিলেন একটা কোম্পানি ইচ্ছা করে আপনাদের পেছনে লেগেছে। শত্রুতা করতে চাইছে। খোঁজ করুন কেনো ওরা এমন করছে। পুরাতন শত্রুদের লিষ্ট তৈরী করে টার্গেট করুন। লোক লাগিয়ে দিন খোঁজ নিতে। বিষয়টা জটিল তাই যা করবেন গোপনে ঠিক আছে?

অধরার কথা শুনে জুবায়ের খুশী হলো। টুপ করে ওর গালে চুমু দিয়ে উঠে আসলো। বউ না থাকলে জুবায়ের ফারুকীর কি হতো কে জানে। মেয়েটা কি সুন্দর একটা বুদ্ধি দিলো। জুবায়ের ল্যাপটপ নিয়ে বসতে বসতে বলল,
বউ কষ্ট নিওনা। আমি ঝটপট কাজ শেষ করে তোমাকে কোলে নিয়ে পুরো সুলতান হাউজ ঘুরে বেড়াবো। চুমু দিবো পঞ্চাশটা।
অধরা কপাল চাপড়ে উত্তর দিলো,

মানুষ হবেন না প্রতিজ্ঞা করেছেন তাইনা? একদম উল্টোপাল্টা কথা বলে আমাকে রাগাবেন না। সিরিয়াস কবে হবেন একটু বলবেন?
জুবায়ের নিচের দিকে চেয়ে কাজ করতে করতে বলল,
বউ কাছাকাছি থাকলে আমি সব সময় সিরিয়াস থাকি কিন্তু আফসোস বউ আমার কিছুই বুঝে না।

কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ৭

অধরা বুঝতে পারলো ওকে রাগানোর চেষ্টা চলছে। এখানে থাকলে লোকটা অসেতুক কথাবার্তা বললতেই থাকবে। তাই দ্রুতগতিতে বাইরে চলে গেলো। জুবায়ের হাসিটা আরও চাওড়া করলো তবে মনের মধ্যে খারাপ চিন্তার উদয় হচ্ছে। চোখের সামনে খান ইন্ডাস্টির নাম জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। মনের মধ্যে ভয় জাগ্রত হচ্ছে ।প্রশ্ন জাগলো তবে কি ওরা আবার ফিরে এসেছে? কিন্তু কিভাবে?

কহিনুর তৃতীয় খণ্ড পর্ব ৯