গভীর গোপন পর্ব ৩

গভীর গোপন পর্ব ৩
অনন্য শফিক

রাতে আশফাক বাসায় ফিরলে ওকে বললাম,’ টুকির বাপটা কেমন পা*ষাণ মনের দেখেছো? শিশু মেয়েটার সঙ্গে পর্যন্ত কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। মানুষ নিজের সন্তানের জন্য জীবন দিয়ে ফেলে।আর সে কি না তার মেয়েকেই অস্বীকার করে বসেছে। নিজের রক্তের মেয়েকে বলেছে,বা*স্টার্ড। চিন্তা করো!’
আশফাক বললো,’ তোমার কাছে এসব কে বলেছে? তুমি কি করে জানলে?’
আমি বললাম,’ জেবা বলেছে।’

আশফাক চুপ হয়ে গেল। সাইড টেবিলের ড্রয়ার টেনে সিগারেটের প্যাকেট বের করে সিগারেট ধরালো। তারপর বললো,’ তোমার পেটের ব্যথাটা এখন কেমন? আজ সারাদিনের মধ্যে উঠেছিল কি?’
আমি বললাম,’ উঠেছিল। তবে আগের মতো অতো তীব্র না।কমে যাবে ইনশাআল্লাহ!’
আশফাক বললো,’ অবশ্যই কমে যাবে। টেনশনের কিছু নাই। একটা কথা শুনো। এদিকে এসো। আমার কাছে এসো।’
আমি যতোটা পারি এগিয়ে গেলাম।সেও এগিয়ে এসেছে। এসে আস্তে করে বললো,’ জেবার সঙ্গে অতো মিশতে যেও না! ওর সব কথা বিশ্বাস করার দরকার নেই ।’

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আমি শুনে অবাক হলাম। বললাম,’ আশফাক , এসব কি বলছো তুমি? জেবা না তোমার বন্ধু?’
আশফাক বললো,’ অবশ্যই বন্ধু। কিন্তু এই যে অতো বড় ঘটনা ঘটলো, এখানে জেবার দোষ সবচেয়ে বেশি।’
আমি বললাম,’ কিভাবে বেশি?’

আশফাক বললো,’ ওর ভিডিও ব্লা*স্ট হয়ে গেছে ।সবাই দেখেছে। এমনকি টুকির চাচারাও।সব আত্মীয় স্বজন।পাড়া প্রতিবেশী। এখন তুমিই বলো এখানে টুকির বাবার দোষটা কোথায়? ওর তো এমনিতেই মান সম্মান ডুবে গেছে। শেষ হয়ে গেছে সবকিছু! এই মেয়েকে আমার বন্ধু ভাবতেই ঘেন্না হচ্ছে।খা*রাপ মেয়ে কোথাকার!’
আশফাক আফশোসের গলায় কথাটা বললো।

আমি বললাম,’ ভিডিও কি জেবা ব্লা*স্ট করেছে নাকি যে তার দোষ এখানে সবচেয়ে বেশি হয়ে গেছে? এখানে তো তার হাত নাই। তার প্রেমিক এটা করেছে।জেবার দোষ এইটুকুই। সে বিশ্বাস করে ভুল করেছিল। তাছাড়া জেবার কথা বাদ দেও।টুকিকে নিয়ে কথা বলি ।টুকির কি দোষ এখানে আমায় বলো? টুকি তো তার রক্ত। এই ছোট্ট বাচ্চাটাকেও সে মা*রধোর করেছে। তাকে নিজের সন্তান হিসেবে অস্বীকার করেছে । এরপরেও তুমি কি করে বললে এখানে জেবার দোষ? তার বাবার দোষ নাই! জেবা তো পারতো টুকিকে তার বাবার কাছে ফেলে রেখে এসে পড়তে।কই, সে তো এটা করেনি? সে তো ঠিকই তার মেয়েকে সাথে করে নিয়ে এসেছে।’

আশফাক বললো,’ তোমার সঙ্গে আমি তর্ক করতে যাবো না। মেয়ে লোকের মাথা আসলেই মোটা।এরা বোঝে কম, কথা বলে বেশি!’
আমি বললাম,’ মাথামোটা বলো আর যায় বলো, এটা তো স্পষ্ট যে সে তার নিজের মেয়েকে অস্বীকার করেছে!’
আশফাক হাসলো। এই হাসি কেমন যেন। হেসে বললো,’ এতো কিছুর পর জেবার হাসব্যান্ডের এটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক টুকি অন্য কারোর সন্তান হতে পারে!’

আমি চমকে গেলাম শুনে! মানে আশফাক এরকম নোংরা কথা বলতে পারে তা ভাবতেও পারিনি আমি।আমি শুধু উপহাসের গলায় বললাম,’ তো এক কথাই বলে দিলেই তো পারো, পুরুষ যা করে তা যদি ভুলও হয় তবুও এর সবকিছুই ঠিক।কারণ সে পুরুষ।আর নারী যা করে এর সবকিছুই ভুল।কারণ সে নারী হয়ে জন্ম গ্রহণ করেছে!নারী হয়ে জন্ম গ্রহণ করা এই সমাজে পাপ।’

আশফাক আর কিছু বললো না।
আমি আবার বললাম।রাগ নিয়ে বললাম,’ ছিঃ আশফাক! তোমাকে আমি এতো দিন মহান ভাবতাম। মানুষ ভাবতাম। এখন দেখি তুমি মানুষ নও। তুমিও পুরুষ! আর দশ জনের মতোই। একটুও আলাদা নয়!’
আমার চোখ ভিজে উঠলো জলে।

আশফাক চুপ করে ওপাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়লো।সাড়া দিলো না আর।আমি ঘুমাতে পারলাম না। আশফাকের বলা কথাগুলো আমার শরীরে কেমন যেন আগুন ধরিয়ে দিলো! আমি ভাবতেই অবাক হচ্ছি, আশফাক এরকম কথা বলতে পারে।কি নীচ চিন্তা ভাবনা ওর! অথচ আমি কি না ভেবেছিলাম, আশফাক আর দশ জনের মতো না। ওর মন বড়। ভেতর শুদ্ধ! ভালো মানুষ। ছিঃ! এ কার ঘর করছি আমি?

মাঝরাতে ইলেকট্রিসিটি চলে গেল। ইদানিং এরকম হয়।রাতে ইলেকট্রিসিটি কোন কারণ ছাড়াই চলে যায়। ঘন্টা দুয়েক থাকে না। গরমে শরীর হাঁসফাঁস করছে আমার।ঘাম ঘাম দিচ্ছে শরীর। আশফাক ঘুমোচ্ছে এই গরমেই।টুকি আমার পাশেই শুয়েছে। আমার সঙ্গে ওকে রেখেছি। ওকে একটু বাতাস করা দরকার।হাত পাখাটা হাতড়ে খুঁজছি আমি। এরিমধ্যে দরজায় টোকা দিলো জেবা।আমি টর্চ জ্বেলে আস্তে আস্তে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিলাম।জেবা বললো,’ কারেন্ট চলে গেছে। আমার টুকির একটুও গরম সহ্য হয় না।মেয়েটা বোধহয় ঘামছে। ওকে নিয়ে যেতে এসেছি।’

আমি বললাম,’ আমি বাতাস করবো সমস্যা নাই। তুমি গিয়ে শুয়ে পড়ো।ওর কোন রকম অসুবিধে হবে না।আমি তো আছি।’
জেবার মুখ কেমন কান্না কান্না হয়ে এলো। সে বললো,’ আমি ওকে ছাড়া ঘুমাতে পারি না। কতো চেষ্টা করেছি ঘুমাতে। ঘুমাতে পারি না।ঘুম ধরে না।টুকিকে ছাড়া আমি কখনোই থাকিনি।জন্মের পর থেকে আমার সঙ্গেই ঘুমায় ও। ওকে ছাড়া আমার দু চোখ বুঁজে না!’

আমি বললাম,’ দাঁড়ান।আমি ওকে নিয়ে আসছি।’
জেবা বললো,’ আপনি এই শরীর নিয়ে ওকে কোলে করে আনতে পারবেন না। আমিই নিয়ে যাই এসে।’
জেবা এলো।এসে টুকিকে কোলে করে নিয়ে গেলো।যাবার সময় দেখলাম টুকি ঘুমে থেকেই মায়ের গলা জড়িয়ে ধরেছে।কি মিষ্টি এই দৃশ্য!

আমার খুব ইচ্ছে করছিলো জেবার সঙ্গে কথা বলতে।এটা ওটা জিজ্ঞেস করতে। কিন্তু কি এক সংকোচে আগ বাড়িয়ে আমি কিছুই বলতে পারি না। বলতে পারলাম না।
ও চলে যাবার পর দরজা বন্ধ করে এসে শুয়ে পড়লাম।

আশফাকের ঘুম সব সময়ই গাঢ় হয়। এইসব গরম টরমে ওর কিচ্ছু হয় না।ও ঘামেও কম।আমি খুব সাবধানে ওপাশ থেকে ওর ফোন তুলে নিলাম। ভাবলাম টুকির বাবার নম্বরটা নিবো। কিন্তু ফোন নিয়ে আমি হতাশ হলাম। ফোনের লক চেঞ্জ করেছে আশফাক।আমি অনেক চেষ্টা করেও এটা খুলতে পারিনি আর!

সকাল বেলা আশফাক অফিসে চলে গেল। রান্নাবান্না কিচ্ছু করিনি আমি। চুপচাপ শুয়ে ছিলাম। আশফাক এ নিয়ে কিছু বলেওনি আমায়। না খেয়েই চলে গেছে।যাবার সময় কিছু বলেও যায়নি। আমিও উঠে রান্না করাকে কেন জানি কর্তব্য মনে করিনি।কার জন্য রাঁধবো? এখন থেকে তো ওকে দেখলেই আমার শরীরে আগুন ধরে যাবে!ওর সঙ্গে কোনো কথা বলতেও আর ইচ্ছে করবে না আমার।

আশফাক চলে যাবার খানিক পর শুনলাম টুকি তার মায়ের কাছে বলছে ওর ক্ষুধা পেয়েছে।নাকা কান্না করছে।জেবা আমার কাছে এসে এক রকম সংকোচ নিয়েই বললো,’ তুলি, আজ কি কিছু রান্না বান্না হয়নি?’
আমি বললাম,’ আমার শরীর খারাপ লাগছে তো।তাই উঠতে পারিনি।ফ্রিজে ফল আছে। নিয়ে ওকে খেতে দাও।আমি এক্ষুনি উঠে রান্না করবো।’

জেবা বললো,’ উঠতে হবে না।আমিই রান্না করে নিবো।কি রাঁধবো বলুন।’
আমি আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নামলাম। তারপর বললাম,’ চলুন গিয়ে দেখি কি রান্না করা যায়।আমি দেখিয়ে দিবো আপনি রান্না করবেন।’
জেবা হাসলো। ওর হাসি এরকম মিষ্টি হয় আজ প্রথম খেয়াল করলাম।

টুকিকে ফল দেয়া হয়েছে।সে নিজের মতো করে বারান্দার এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত হেঁটে হেঁটে ফল খাচ্ছে।একটা বিড়াল এসে বসেছিল বারান্দায়। দেখলাম, এক টুকরো আপেল বিড়ালের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে। বিড়াল আপেল খেতে কোন রকম আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কিন্তু সে জোর করেই খাওয়াতে চাচ্ছে।

রান্না ঘরে গিয়ে জেবাকে দেখিয়ে দিলাম কি কি রাঁধতে হবে। আমিও কিছু শাকপাতা নিয়ে বাছতে বসে গেলাম।এসব করতে করতে হঠাৎ করেই ওকে উদ্দেশ্য করে বললাম,’ তোমার এক্স হঠাৎ করে এই কাজটা করলো কেন? ও কি মানুষ নাকি!’
জেবা বললো,’ ওর সঙ্গে আমার কোনো রকম যোগাযোগই ছিল না। তাছাড়া ওর সঙ্গে আমি কোন রকম বেঈমানি করিনি পর্যন্ত।বাবা মা ওর কাছে বিয়ে দিতে নারাজ ছিলেন।

কারণ সে তখনও বেকার। চাকরি বাকরি হচ্ছে না।ফ্যামিলির আর্থিক অবস্থাও ততোটা ভালো না। এই সময় বাবা আমাকে বিয়ে দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন।সে বছরই আমার মাস্টার্স শেষ হয়েছে।ভালোই বয়স হয়েছে।পাড়ার অন্য মেয়েদের বিয়ে হয়েছে। আমার ছোটদেরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে।বাবা এই জন্যই উঠে পড়ে লেগেছেন যে করেই হোক বিয়ে দিবেন। তাছাড়া হাতেও তখন ভালো আলাপ এসেছে।টুকির বাবার আলাপটাই তখন এসেছে।বড় বিজনেস তার।

ফ্যামিলি নামিদামি খুব। বাবা বললেন ওর সঙ্গেই আমার বিয়ে ঠিক করবেন। এই অবস্থায় আমি মহা বিপদে পড়ে গেলাম। আমি হাত পা ধরে কেঁদে কেটে এই আলাপটা কোন রকম বন্ধ করালাম। তারপর ওর কথা বলে আকুতি মিনতি করে বাবা মাকে রাজি করালাম। রাজি করিয়ে তাকে বললাম সে যেন তার ফ্যামিলি থেকে লোক পাঠায় আমাদের বাড়িতে। বিয়ের আলাপ করতে বললাম। সে ফ্যামিলিতে কথা বলে কাউকে রাজি করাতে পারেনি।

তার বাবা অসুস্থ ছিল।ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তার বাবা। সে বললো, এই মুহূর্তে তার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব না। একদিকে নিজের চাকরি বাকরি কিছু হচ্ছে না। অন্যদিকে বাবার এই অবস্থা।জমি বেচাবিক্রি করে বাবার চিকিৎসা চলছে। সে জানালো, বিয়ে করতে পারবে না।আমি যেন তাকে ক্ষমা করে দেই।আমি বললাম, আমি অপেক্ষা করবো যে করেই হোক। সে বললো এটা কঠিন জেবা!

এটা রিস্ক হবে।আমি এই রিস্ক নিতে চাইলাম। কিন্তু বাবা আর ভাইয়া রিস্কে যেতে চাননি।তারা হয়তো ভরসা করতে পারেননি। জোরাজুরি করে টুকির বাবার সঙ্গেই বিয়ে দিয়ে দিলেন। প্রথম কদিন খুব কষ্ট হলো মেনে নিতে। খারাপ লাগতো। এরপর আস্তে আস্তে সবকিছু ঠিক হয়ে গেল। কিন্তু ওর সঙ্গে আর কখনো যোগাযোগ হয়নি আমার। আমিও যোগাযোগ করিনি।সেও করেনি।’

আমি বললাম,’ ওর কাছে তোমার ভিডিও ছিল?’
জেবা চুপ করে রইলো। কথা বলছে না।
আমি বললাম,’ কিছু বলছো না কেন? না থাকলে তো এটা ভা*ইরাল হতো না তাই না?’
জেবা বললো,’ ছিল।ও চেয়েছিল। আমি প্রথম না করেছিলাম। কিন্তু এক সময় বেশি জোরাজুরি করছে। ইমোশনালি ব্লা *কমেইল করছিলো।আমি নিরূপায় হয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম।’

আমার ইচ্ছে করছে এই মেয়ের গালে শক্ত করে একটা চ*ড় বসিয়ে দিতে।ওরা যে কেন এতো বোকা তা আমি বুঝি না! ভালোবাসা কি আসলেই এরকম? সত্যিকার যে ভালোবাসে সে কি কখনো এরকম কিছু চাইবে? এরকম একটা ছবি কিংবা একটা ভিডিও না দেয়ার জন্য দিনের পর দিন ব্লা* কমেইল করবে?
আমি নিজের রাগ সামলে নিয়ে ওকে বললাম,’ ও আসলে তোমায় ভালোই বাসতো না জেবা। ভালো বাসলে কখনোই এরকম কিছু চায়তো না তোমার কাছে।’

জেবা বললো,’ ওর ভয় ছিল ওকে আমি যেকোনো সময় ছেড়ে যাবো।তাই নাকি এটা নিয়ে রেখেছিল।ওর ধারণা ছিল ওর কাছে এটা থাকলে আমি ভয়ে হলেও ওর থাকবো সারা জীবন!’
আমি হাসলাম। হেসে বললাম,’ ভয় দিয়ে কখনো ভালোবাসা হয় জেবা?ভয় দিয়ে কাউকে রাখা যায়? তোমাকে রাখতে পেরেছিল ওর করে?’
জেবা কথা বললো না।

আমি নিজেই কথা বললাম আবার। বললাম,’ তুমি ভুল করেছো জেবা! নিজের পায়ে কুঁড়াল টা নিজেই মেরে এসেছিলে তুমি। তোমার ক্ষতটা আগেই তৈরি হয়েছিল। আর এখন এতে পঁচন ধরেছে।’
জেবা কাঁদছে।টুকি এখানে চলে এসেছিল।আমি ওকে বললাম বেড়ালের সঙ্গে গিয়ে খেলতে।ওর মা কাঁদছে এরকম দৃশ্য না দেখা ওর জন্য ভালো হবে। তাছাড়া আমরা কি সব কথা বলছি তাও ওর জন্য শোনা উচিৎ হবে না। এই বয়সে বাচ্চারা যা শোনে তাই মাথায় গেঁথে ফেলে।অন্য মানুষের কাছে গিয়ে ফট করে আবার এসব বলে দেয়।

আমি বললাম,’ জেবা, চোখ মুছে ফেলো।যা হয়ে গেছে তা হয়েই গেছে। এখন আর কান্নাকাটি করে তা ফিরে আসবে না। তোমার এক্সের সঙ্গে কথা হয়েছে এই ঘটনার পর? এতো বছর পর কেন ও এমন কাজটা করলো এটা জিজ্ঞেস করেছো? করলে আগেই করতো। এখন কেন করলো?’
জেবা কাঁদতে কাঁদতেই বললো,’ ও ইংল্যান্ডে থাকে।ওর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি আমি।ওর নম্বর নাই আমার কাছে ‌।’

‘ বিয়ে করেছে কি ও?’
জেবা বললো সে তাও জানে না। ওদের সবাই মিলে ইংল্যান্ডে থাকে। ওর মামা ওখানে থাকতো।তিনিই নাকি ব্যবস্থা করে ওদের নিয়ে গিয়েছেন।আর ওর বাবা মারা গিয়েছেন।
জেবার দিকে তাকিয়ে আমার একবার রাগ লাগছে। আরেকবার খুব মায়া হচ্ছে। আমাদের মেয়েরা কেন যে বোঝে না পুরুষেরা আমাদের তাদের কর্তৃত্বে রাখার জন্য জায়গায় জায়গায় ফাঁদ পেতে রাখে।আমরা এতোই বোকা যে অনেক সময় জেনে শুনেই এসব ফাঁদে পা রাখি।আর আটকা পড়ি।

জেবা রান্নাঘরে থাকতেই ওর ফোন বাজলো।ওর কাজিন ফোন করেছে। ফোন করে বলেছে, জেবার এক্স নাকি ওর কাজিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে মেসেঞ্জারে।বলেছে, কদিনের ভেতরেই সে দেশে আসবে।জেবার সঙ্গে দেখা করবে।
শুনে জেবা ভয়ে মোষড়ে উঠলো। তার ধারণা ওর এক্স এসে একটা বড় সড়ো ঝামেলা পাকাবে এখানে।

গভীর গোপন পর্ব ২

জেবার ভয় পাওয়াও তো ভুল না। নয়তো এতো বড় একটা বাজে কাজ করবার পর আবার দেশে আসছে কেন। তাও বলছে তার সঙ্গে দেখা করতে আসছে? তবে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে আসছে এখানে? আর কি ক্ষতি করতে চায় ওর? আর কি ক্ষতি করবার এখনও বাকি আছে?

গভীর গোপন পর্ব ৪