তুমিময় নেশায় আসক্ত পর্ব ৬০

তুমিময় নেশায় আসক্ত পর্ব ৬০
Jannatul ferdosi rimi (লেখিকা

পিছন থেকে পরিচিত পুরুষের শক্ত হাতজোড়া রিমির বাহু ধরে দেয়ালে চেপে ধরে শক্ত করে। রিমি হচকিয়ে যায়। অন্ধকারের মাঝেও স্পষ্ট দেখতে পায় অয়নের ঠোটে লেগে থাকা সুপ্ত বাঁকা হাসি। নেত্রকোণে ক্ষোভ উঁকি দিচ্ছে বারংবার। রিমিও শক্ত হয়ে অয়নের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো।অতঃপর আঙ্গুল উঁচু করে, অয়নের দিকে তাক করে উচ্চস্বরে বললো,
‘ এইভাবে আপনি পালিয়ে বেড়াতে পারেন না, ডক্টর এয়ারসি। আপনাকে উনাদের সাথে যেতেই হবে। আমি চাই আপনিও স্বাভাবিক হয়ে উঠুন ডক্টর এয়ারসি। ‘

অয়ন রিমির কথার বিপরীতে রিমির হাতের আঙ্গুল ধরে, তাতে আলতো করে চুমু খেয়ে, কটাক্ষ করে বলে,
‘ তোমার জায়গায় অন্য কেউ হলে,এই হাত আজকে আস্ত থাকতো না পরী। অয়ন চৌধূরীর দিকে যেখানে কেউ চোখ তুলে তাকাতে পারেনা, সেখানে তুমি আমাকে শাসাচ্ছো? ওয়াও গ্রেট। ‘
‘ শুধু শাসাচ্ছি না, আমি আপনাকে এখান থেকে এই মুহুর্ত নিয়েও যাবো ডক্টর এয়ারসি। ইয়েস এবং আপনি আমাকে আটকাতেও পারবেন না। ‘
রিমি কথাটি বলে সদর দরজার দিকে পা বাড়ালে, তা সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। অয়ন তা দেখে উচ্চস্বরে হেসে উঠে এবং শান্তভাবেই বলে উঠে,
‘ তুমি যেমন আমার ইচ্ছেতে এসেছো, আমার ইচ্ছেতেই যেতে পারবে। ‘
রিমি অয়নের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢুগ গিললো। অয়নের পরিকল্পনা সে এখন বুঝতে পেরেছে, অয়ন ইচ্ছে করে রিমিকে পুরোনো বাড়িতে নিয়ে এসেছে, নিজের বন্দীনি করে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। অয়ন এগিয়ে এসে, রিমির দিকে ঝুঁকে রিমির কপালে লেপ্টে থাকা চুলগুলো হাত দিয়ে সরাতে সরাতে বলে,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘ তুমি বড্ড বোকা পরী,নাহলে আমার প্ল্যান সম্পর্কে বুঝতেই পারলে না। নিজ থেকে আমার বন্দীনি হয়ে গেলে। এখন না আমি কোথাও যাচ্ছি, না তুমি কোথাও যাবে। ভেবেছিলাম তোমাকে সকলের সাথে থাকতে দিবো, কিন্তু সকলের সাথে থেকে থেকে তোমার মাথাটা নড়ে গেছে। তাই আমি ভাবলাম এখন থেকে আমরা এখানেই থাকবো। ‘
কথাটি বলেই অয়ন মুখস্রী শক্ত করে রিমির হাত চেপে, নিজেকে রিমির কাছে এনে, দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
‘ উড়তে উড়তে তোমার ডানা অনেক বড় হয়ে গিয়েছে পরী, তাই সে ডানাকে ছাটাই করার সময় হয়ে গিয়েছে। ‘
রিমি নিজের থেকে অয়নকে ছাড়িয়ে ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলে। অয়নকে সে চাইলেও বুঝাতে পারছে না। অয়নের সুস্হ হওয়াটা কতটা জরুরী। বুঝাবে কি করে? অয়ন নিজে একজন ডাক্তার হয়ে তা বুঝতেই চাইছে না। রিমি ভাবলো, রিমিকে এখন অন্য পথ অবলম্বন করতে হবে। রিমি পিছনে যেতে যেতে, চিৎকার করে বলে,
‘ আমি আপনার বন্দীনি হয়ে থাকবো না আর। আর না আপনাকে এমন থাকতে দিবো আমি। আমি যখন বলেছি, আপনাকে সুস্হ করবোই। ‘

রিমি দ্রুত পায়ে সিড়ি বেয়ে উপরে চলে গেলো। অয়নের মনে হলো রিমির মস্তিষ্কে নিশ্চয় কোন পরিকল্পনা হানা দিয়েছে। রিমিকে আটকাতে হবে। অয়নও রিমির পিছনে পিছনে সিড়ি বেয়ে উপরে চলে আসে। রিমি সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে সামনের ঘরে গিয়ে, সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধ করে দেয়। অয়ন বার বার দরজা ধাক্কাতে থাকে কিন্তু রিমি খুলে না। অয়ন দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে কড়া গলায় বলে উঠে,
‘ রিমিপরী, এখুনি দরজা খুলে দাও,নাহলে আমি কিন্তু দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকবো। ‘
রিমি অয়নের কথায় গুরুত্ব না দিয়ে, জানালার ধারে গিয়ে ফোন হাতে নিয়ে, ফারহানের নাম্বারে দ্রুততার সাথে ফোন দেয়। ফারহান মাথা নিচু করে সকলের সাথে ড্রইংরুমে বসে ছিলো। ফোন বেজে উঠতেই, তড়িৎ গতিতে তা রিসিভ করলো, ফোনের অপাশ থেকে হাফাতে হাফাতে রিমি বললো,

‘ ফারহান ভাইয়া আপনি দ্রুত উনাদের নিয়ে আসুন। উনাকে আজকে যে করেই হোক আমাদের আটাকাতে হবে। আমি আপনাকে উনার লোকেশন পাঠিয়ে দিচ্ছি। আপনি উনাদের এম্বুলেন্স নিয়ে এখুনি আসতে বলুন। উনি আরো বেশি এগ্রোসিভ হয়ে উঠছে। ‘
‘ কিন্তু অয়ন তো যেতে রাজি হচ্ছে না। কতটা পাগলামি করছে। ‘
রিমি আর কিছু বলবে তার আগেই, দরজা ভেঙ্গে কক্ষে অয়ন প্রবেশ করে ফেলে। রিমির থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে, তা সজোড়ে ভেঙ্গে ফেলে। রিমি ভয় পায় না, শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অয়ন কক্ষে থাকা জিনিসপ্ত্র ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে হুংকার ছেড়ে বলে,
‘ কাকে ফোন করেছিলে তুমি হ্যা? কাকে? তোমার কিন্তু বড্ড সাহস বেড়ে গিয়েছে রিমিপরী। তুমি কিন্তু নিজের লিমেট ক্রস করছো।

অয়নের কথা বলার মাঝেই, বাইরে এম্বুলেন্সের হর্ন শুনা যায়। অয়নের কপালে চিন্তা সুক্ষ্ম ভাজ পরে যায়। অয়ন ভ্রু কুচকে তাকায়। রিমি আলতো হেসে বলে,
‘ এসে পড়েছেন উনারা। আর হ্যা আমি লিমেট ক্রস করছি, আপনার ভালোর জন্যে আমাকে লিমিট ক্রস করতে হচ্ছে, আপনাকে এখন উনাদের সাথে যেতেই হবে ডক্টর এয়ারসি৷ ‘
অনেকটা সময় পেরিয়ে, বেশ কিছুক্ষনের মাঝে এম্বুলেন্সের পিছনে ফারহানের গাড়ি এসে থেমে যায়। গাড়ি থেকে ফারহান, ইশা এবং সুমাইয়া বের হয়ে আসে। সুমাইয়া হাক ছেড়ে রিমিকে ডাকতে থাকে,
‘ রিমি কোথায় তোরা? বেড়িয়ে আয়। ‘
[লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি]

রিমি জানালার কাছে যেতে নিলে, অয়ন কিছু না ভেবে, পকেট থেকে রুমাল বের করে রিমির মুখ চেপে ধরে,রুমালে অজ্ঞান করার স্প্রে ছিলো, যার ফলে রিমি মাথা ঘুড়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে, রিমিকে কোলে করে অয়ন বিছানায় শুয়িয়ে দেয়। মাথা কাজ করা বন্ধ হয়ে গিয়েছে অয়নের, কিন্তু এখন তাকে রেগে গেলে চলবে না, শান্ত থাকতে হবে।
সে কিছুতেই তার রিমিপরীকে ছেড়ে কোথাও যাবে না। অয়ন একপলক তার প্রেমিকার সিপ্ত সুন্দর মুখস্রীর দিকে তাকায়। অয়ন রিমির মুখস্রীর দিকে তাকিয়ে ধীর গলায় বলে,
‘ কি এমন মায়ায় জড়ালে তুমি রিমিপরী? যার মায়ায় আমি বারংবার উম্মাদ হয়ে উঠি। নেশাক্ত হয়ে উঠি তোমার ভালোবাসা পাওয়ার নেশায়। ‘

অয়ন কিছু একটা ভেবে, রিমিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে, ভেজা কন্ঠে বলে,
‘ আমি জানি আমি যা করেছি সব ভুল, কিন্তু এই দুনিয়ার মানুষ যে বড্ড খারাপ, বড্ড ভয়ংকর। আমার থেকে আমার বাবা- মাকে কেড়েছে। আমার শৈশব কেড়েছে। এখন আমার অস্তিত্ব আমার রিমিপরীকেও আমার থেকে কেড়ে নিতে চাইছে। আমি কাউকে কেড়ে নিতে দিবো না পরী। তোমাকে পাওয়ার জন্যে যদি তোমার চোখে আমাকে নিকৃষ্ট হতে হয়, তাহলে আমি তাই হবো। ‘
অয়ন কথাটি বলেই, রিমিকে শুইয়িয়ে দিয়ে, পকেট থেকে ব/ন্দুকটা বের করে চটজলদি বেড়িয়ে যায়।

ফারহানের গাড়ির গ্লাস বরাবর একটি গুলি এসে লেগে যায়। ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায় গাড়ির গ্লাস। ফারহান এবং সকলে সামনে তাকিয়ে দেখে অয়ন ব/ন্দুক হাতে বাঁকা হেসে দাঁড়িয়ে আছে। অয়ন ব/ন্দুকটার দিকে তাকিয়ে হুমকির সুরে বলে,
‘ এখনো সময় আছে, যেভাবে এসেছিলে মিঃ ফারহান চৌধুরী, সেভাবেই ফিরত চলে যাও, নাহলে আমি কিন্তু….. ‘
অয়নের কথার মাঝেই, ফারহান অয়নের বরাবর দাঁড়িয়ে জবাব দিয়ে বলে,
‘ নাহলে কি? তুই নিজের বড় ভাইকে গু/লি করে দিবি? এতো ক্ষমতা তোর অয়ন রওযাক চৌধুরী।’
অয়ন উচ্চস্বরে হেসে উঠে। অতঃপর মুখস্রী শক্ত করে বলে,
‘ আমার ক্ষমতা সম্পর্কে তোমার ধারণা নেই বুঝি?’
সুমাইয়া অয়নের কথা শুনে ভয় পেয়ে যায়। ফারহানকে হাক ছেড়ে ডেকে আতংক নিয়ে বলে,
‘ ফারহান তুমি সরে এসো, অয়নকে দিয়ে কোনপ্রকার ভরসা নেই। ‘

বাইরে চিৎকার চেচামেচি শুনে, আস্তে আস্তে আখিজোড়া খুলে সামনে তাকায় রিমি। অতঃপর দ্রুতগতিতে উঠে পড়ে। মাথা তার ব্যাথায় একপ্রকার ছিড়ে যাচ্ছে। ওষুধের পাওয়ারটা কম দিয়েছিলো অয়ন, যাতে রিমির কোনপ্রকার ক্ষতি না হয়। তাই রিমির জ্ঞান খুবই সীমিত সময়ে ফিরে আসে। রিমি কোনরকম ধীর পায়ে, জানালা এসে তাকিয়ে দেখে, অয়ন ফারহানের দিকে ব/ন্দুক তাক করে আছে।রিমি দৃশ্যটি দেখেই একপ্রকার দৌড়ে নীচে চলে আসে। চিৎকার করে হাক ছেড়ে অয়নকে ডাকে,
‘ ডক্টর এয়ারসি থামুন। আর কোন ধবংশ করবেন না দয়া করে। ‘
অয়ন রিমির চিৎকারে থেমে যায়। রিমি ধীর পায়ে এগিয়ে,অয়নের হাত নিজের পেটে রেখে, কাঁদতে কাঁদতে বলে,
‘ আমার জন্যে না হলেও, আমাদের অনাগত সন্তানের জন্যে হলেও এইবার আপনি রাজি হয়ে যান ডক্টর এয়ারসি। তার ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে হলেও, আপনাকে সুস্হ হতে হবে ডক্টর এয়ারসি। ‘
অয়ন কিছুক্ষন স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে রিমির দিকে। অতঃপর ক্ষীন্ন আওয়াজে অবিশ্বাসের সুরে বললো,

‘ কি বললে তুমি? আমি বাবা হতে চলেছি?’
রিমি মাথা নিচু করে পুনরায় বলে উঠে,
‘ হ্যা আমি কনসিভ করেছি ডক্টর এয়ারসি। দুইদিন আগেই তা জানতে পেরেছি, কিন্তু এতোসব ঝামালার মাঝে আপনাকে বলা হয়ে উঠেনি। ‘
অয়ন নীচে বসে পড়ে। আলতো করে রিমির পেটে হাত বুলায়। অনুভব করতে চায় তার অস্তিত্বকে, যে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে রিমির গর্ভে। অয়নের বিশ্বাস হচ্ছে না, সে বাবা হতে চলেছে। আদো আদো গলায় তাকেও কেউ বাবা বলে উঠবে। বাবা হওয়ার আনন্দ বুঝি ছেলেদের কাছে পৃথিবীর সব আনন্দের থেকে শ্রেষ্টতম। অয়ন কেঁদে ফেলে মুখ চেপে। রিমিও হাটু গেড়ে, অয়নের ললাটে, নিজের কপাল ঠেকিয়ে কেঁদে উঠে। অয়ন কাঁদতেই কাঁদতেই রিমিকে বুকে সাথে শক্ত করে জড়িয়ে বলে,
‘বেশ আমার প্রেয়সীর ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দিলাম, তার আখিজোড়ার বেদনাদায়ক অশ্রুপাতের চেয়ে, আমাদের ক্ষনিকের বিচ্ছেদেই শ্রেয়। ‘

রিমি অবাক হয়ে অয়নের দিকে তাকাতেই, অয়ন মুচকি হাসি দিয়ে, রিমির চোখের জল মুছে দেয় সযত্নে। অতঃপর রিমির ললাটে গভীরভাবে ভালোবাসার স্পর্শ একেঁ দিয়ে বলে,
‘ আমি যতদিন থাকবো না,ততদিন কিন্তু একটুও কাঁদবে না। তোমার চোখের অশ্রুের দাঁগ মুছে দেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র আমার। মনে রেখো, তোমার আখিজোড়ার কাজল যেন লেপ্টে না যায়। তোমার আখিজোড়ার কাজল যে বড্ড দামী রিমিপরী। ‘
রিমি অয়নের কথা শুনে অয়নকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কেঁদে দেয়। অয়নও ঠোট কামড়ে কান্না আটকিয়ে রাখে। তাকে শক্ত থাকতে হবে। মনে পাথর রেখে, নিজের প্রেয়সী এবং অনাগত সন্তানের জন্যে তাকে সুস্হ হয়ে উঠতে হবে। অয়ন রিমির গালে আলতো করে চুমু দিয়ে বলে,

‘ আমার জন্যে অপেক্ষা করবে তো রিমিপরী? তোমার কথাই কিন্তু তোমার ডক্টর এয়ারসি রাখলো। আমাদের সন্তান এবং সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ এর জন্যে বর্তমানকে বিসর্জন দিয়ে দিলাম। আমাদের সন্তানের এবং নিজের খেয়াল রাখবে। ‘
রিমি কথার উত্তর দিতে পারেনা, অয়নের শার্ট খামচে কাঁদতে থাকে শক্ত করে। অয়ন এবং রিমির করুণ বিরহে সকলের চোখে জল চলে আসে। সাইকোথেরাপিস্ট এবং ইশা অয়নের কাছে আসে। ইশা এসে বলে,
‘ অয়ন আমাদের এখন বেড়িয়ে যেতে হবে, এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে। ‘
অয়ন নিজের নেত্রকোণায় লেগে থাকা অশ্রু মুছে ফেলে। রিমির মাথায় সযত্নে হাত বুলিয়ে বললো,
‘ আমি আসি কেমন? অপেক্ষা করবে তো? ‘

রিমির বুক ছিড়ে যাচ্ছে কঠোর বেদনায়। বুক ভারি হয়ে আসছে। মনে হচ্ছে বড় এক ভরসা হাত তার মাথার উপর থেকে সরে যাচ্ছে। অয়ন রিমির কষ্ট সহ্য করতে পারছে না। মনে হচ্ছে তার হৃদয়টা ছু/রি;ঘাত করছে কেউ প্রতিনিয়ত। বিক্ষিপ্ত হচ্ছে হৃদয়। বিচ্ছেদের তীব্র যন্ত্রনা বুকে জমিয়ে, দ্রুত পায়ে ফারহানের কাছে এসে, ফারহানের হাত ধরে বললো,
‘ আমার এক বড় আমানতকে তোমার দায়িত্বে রেখে চলে যাচ্ছি, খেয়াল রেখো। ‘
ফারহান অয়নকে জড়িয়ে ধরে আশ্বাস দেয়।রিমি সুমাইয়াকে জড়িয়ে কেঁদে যাচ্ছে। বিচ্ছেদ সাময়িক হলেও, তার তীব্র যন্ত্রনা উপলব্ধি করছে অয়ন এবং রিমি দুজনেই। অয়ন এক পলক তার রিমিপরীর দিকে তাকিয়ে সুপ্ত হেসে বলে,
‘ আমি আসি কেমন? ভালো থেকো, ভালোবাসি প্রেয়সী। ‘
অয়ন কথাটি বলে এক মুহুর্তও দাঁড়ালো না। এম্বুলেন্সে উঠে পড়লো। ইশাও রিমিকে আশ্বাস দিয়ে, গাড়িতে উঠে বসলো। গাড়ি চলতে শুরু করলো। তা গেট দিয়ে বাইরের দিকে চলে গেলো। রিমি এতোক্ষন চুপ থাকলোও, এইবার দ্রুত গতিতে উঠে দাঁড়িয়ে দৌড়ে গেটের কাছ এসে চিৎকার করে বললো,

তুমিময় নেশায় আসক্ত পর্ব ৫৯

‘ আমিও ভালোবাসি আপনাকে ডক্টর এয়ারসি। অনেক বেশি ভালোবাসি। আমি অপেক্ষা করবো আপনার জন্যে, জীবনের শেষ প্রহর অব্দি আপনার অপেক্ষায় কাটিয়ে দিবো। ‘
রিমির আকুল আর্তনাদ কি আদোও শুনতে পেলো অয়ন?
রিমি ধপ করে মাটিতে বসে ঠোট কামড়ে কেঁদে উঠে। আকাশে ক্ষীন্ন মেঘ জমতে শুরু করে। একে-অপরের সাথে সন্ধি করে, বৃষ্টিকে আমন্ত্রন জানায়। বৃষ্টিও মেঘের আমন্ত্রন পেয়ে, ধরনীকে ভিজিয়ে তুলে। প্রকৃতিও যেন রিমির সাথে আজ বিচ্ছেদের গভীর বেদনায় কেঁদে উঠেছে।

তুমিময় নেশায় আসক্ত পর্ব ৬১