তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ৩ পর্ব ৫ || Suraiya Aayat

তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ৩ পর্ব ৫
Suraiya Aayat

আজ ফাল্গুনের প্রথম দিন, আম্মুর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে আরু, পুরনো দিনের কথা গুলো বড্ড কড়া নাড়ছে মনে , না চাইতেও সবকিছু জানান দিয়ে যাচ্ছে আরুর স্মৃতির অগোচরে ৷ আরূর আম্মু ক্রমাগত আরুর মাথায় হাত বুলিয়ে যাচ্ছে তবে আজকে তাতেও যেন অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব হচ্ছে না, মনে হচ্ছে মাথার মধ্যে গেঁথে থাকা বড় বড় সমীকরণগুলো যদি খুব দ্রুত সহজভাবে বিশ্লেষণ করতে পারতো তাহলে হয়তো থাকতো না আর এই অভিমানে বড় বোঝা ৷
আম্মুর কোলে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে আছে , কিছুতেই যেন মনের অস্থিরতা টা কমছে না , চোখটা বন্ধ করেও চোখের পাতা গুলো ক্রমে ক্রমে কেঁপে কেঁপে উঠছে , আরুর আম্মু মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে উঠলো,,,,,

__” কিরে আরিশ আসেনি বলে মন খারাপ?”
কথাটা শুনে মাথা নাড়িয়ে না সম্মতি জানালো আরু ৷
__” উনাকে ঠিক কতটা মিস করছি জানিনা তবে আজকে নাচাইতেও উনার জন্য বড্ড চিন্তা হচ্ছে, ফাল্গুনের দিনগুলি যে আমার জীবনে কেন আসে বারবার, আর এসে আমার জীবনটাকে ক্ষত-বিক্ষত করে দিয়ে যাই, মনে হয় ফাল্গুনের সময়টা যদি নিমেষেই পার করে আবার নতুন করে শুরু করা যেত তাহলে হয়তো কষ্টগুলো আর থাকতো না ৷ আমাদের দুজনের সম্পর্কের মাঝে যে অদৃশ্য এক অজানা দেওয়াল রয়েছে সেটা আমি হয়তো নিজেই কখনো সরাতে চাই নি বা কখনও সরানোর চেষ্টাও করিনি, করলে হয়তো সহজ হত সবটা ৷”(আরু মনে মনে)
আমার না সম্মতিতে আম্মু বলে উঠলো,,,,,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

__” তাহলে এভাবে মনমরা হয়ে আছিস কেন মাথা ব্যাথা করছে?”
আম্মুর এই প্রশ্নের উত্তরেও মাথা নাড়িয়ে না জানালাম , তারপর খানিকটা ফিকে কন্ঠে বলে উঠলাম,,,,,
__” আম্মু নিজের কোন অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য নিজেকে একবার কি ক্ষতবিক্ষত করাই যথেষ্ট নয়? আর কেন বারবার একটা ভুলের জন্য নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করতেই হবে, আর তোমার কি মনে হয় না যে তাকে ক্ষমা করে দেয়া উচিত ৷”
উনি মুচকি হেসে বললেন,,,,,

__” এত জটিল জটিল প্রশ্ন আমার মেয়ে কবে শিখলো, আমি তো জানতেই পারলাম না, অবশ্য মাঝে মাঝে মনের মাঝে জটিল জটিল প্রশ্ন হওয়া ভালো তাতে বুদ্ধি বাড়ে, তুই নিজেও মা হবে তোর এখন থেকেই জ্ঞান বুদ্ধি আর সব দিক থেকে সতর্ক হওয়া দরকার ৷”
“মা হওয়া” শব্দ টা শুনে আরু ওর আম্মুর কাছ থেকে সরে এল, তারপর আর তার দিকে না তাকিয়ে বলল,,,,
__” আম্মু অনেক রাত হলো,আর আমার খুব ঘুম ঘুম পাচ্ছে আমি আসছি ৷”
বলে সিড়ির দিকে পা বাড়ালো ৷
আরু কিছুটা যেতেই অনিকা খান বলে উঠলো,,,,,

__” শোন বাইরে খুব,বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, আকাশের ভাব ভালো নয়, উওরের জানালা দিয়ে দিস, আর এই সময়ে একেবারেই বাইরে বেরোবিনা ৷ তো বাচ্চার জন্য ঠিক হবে না ৷”
আরু কথাটা শুনেকিছু না বলে ওর রূমে চলে গেল ৷
রুমে গিয়ে বিছানার উপরে ফোনটা দেখতে পেয়ে দৌড়ে ছুটে গেল, খালি মনে হচ্ছে যে এতটা সময়ের ব্যবধানে হয়তো অনেকগুলো মিসড কল এসেছে ফোন কিন্তু ফোনটা খুলে দেখল কোন মিস্ড কল নেই, খালি চিন্তা হচ্ছে আরিশের কিছু হয়েছে কি না সেটা ভেবে ৷

কিছুখন ফোনটা হাতে রেখে ও কোন কাজ হলো না, কোন ফোন আসলো না আরিশের থেকে ৷ নিজে যে কল দেবে সে কথাটা ভেবেও ভাবছেনা আরু, এর আগে কখনো কল করেনি আরিশকে ,যদিওবা কখনো তেমন প্রয়োজন পড়েনি কল করার ৷ একভাবে বসে আছে বিছানায় আর মাঝে মাঝে বিদ্যুতের ঝলকানিতে ক্ষনে ক্ষনে চমকে উঠছে ৷
জানালা গুলো দেওয়ার কথাটাও মনে নেই, বাইরের দমকা হাওয়াই পর্দা গুলো উড়ে উড়ে যাচ্ছে, ঠান্ডা হাওয়াটা শরীরে কাঁপুনি সৃষ্টি করানোর জন্যই যথেষ্ট ৷

ওয়াড্রব থেকে একটা পাতলা শাল এনে গায়ে জড়িয়ে নিলো, মাঝেমাঝেই ফোনের screen টার দিকে তাকাচ্ছে ৷
ঘড়ির কাঁটা টিকটিক করে বেজেই চলেছে , আর আরুর মনের মধ্যে এক অজানা এক ঝড় বয়ে যাচ্ছে, কই এর আগে কোন ফাল্গুনে তো এমন বৃষ্টি হয়নি তাহলে এবার কেনো ?
আরিশের বলে যাওয়া শেষের কথাটা বড্ড স্পর্শকাতর , জানি না আজ ঠিক কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে নিজেকে কষ্ট দেবে আরিশ ৷

কেবলামাত্র একটা ভুলের জন্য হয়তো আজ ওদের মাঝে এতটা দুরত্ব আর আরিশের এই মাত্রাতিরিক্ত পাগলামি ৷
গোটা বাড়ি নিস্তব্ধ কেউ কারোর অপেক্ষারত নয় একমাত্র আরুশি ছাড়া, যতক্ষণ না আরিশ আসবে ততক্ষন মনের মাঝে এই অস্থিরতা কোন ভাবে কাটছে না , আর আরিশ যখন বলেছে যে আরিশ আসবে তখন আরিশে ওর নিজের কথা রাখার জন্য নিশ্চয়ই আসবে তাই জন্য এত রাত অব্দি আরুর জেগে থাকা…..
হঠাৎ জুড়ে বিদ্যুতের আলো চমকাতেই আরূ শক্ত করে বিছানার চাদরটা মুঠিবদ্ধ করে ধরলো, চোখ দুটো বন্ধ করে রেখেছে আরু, সমগ্র শরীর দিয়ে ভয়ের শিহরন বয়ে যাচ্ছে…..

পিটপিট করে খানিকটা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল ঘড়িতে সাড়ে এগারোটা , আরিশের আসার নাম নেই ৷
একরাশ অস্থিরতা নিয়ে আরূ বসে আছে হঠাৎ করে গায়ে ছিটে ফোঁটা বৃষ্টির ফোঁটা পড়তেই পিছনে তাকিয়ে দেখল বৃষ্টির ছাঁটে জানালার পর্দাগুলো ভিজে যাচ্ছে,তাদের আগের মত ছটফটানি আর নেই, এমনিই বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে থেমে থেমে যাচ্ছে বারবার ৷ আরূ বিছানা থেকে নেমে জানালা দেওয়ার জন্য এগিয়ে গেল, তখনি কিছু একটা ভেবে সেখানে থেমে গেল৷ বৃষ্টির ফোঁটাগুলোকে অনুভব করবে আজ নতুন ভাবে ৷ এই প্রথম এমন ফাগুন যেখানে আরূ বৃষ্টির আভাস পেয়েছে ,আর কিভাবে ও তা ফিরিয়ে দেই?

ওর আম্মু বলেছিল যেন এত রাত্রে ব্যালকনিতে না যায় তাতে ওর বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে , কথাটা ভেবে খানিকটা মুচকি হাসলো, আসলে বাস্তবতাটা তো কেবল তার আর আরিশের মাঝেই সীমাবদ্ধ তাই বাইরের লোকেরা বাহি্্যক কিছু কল্পনা করলেও তাতে কিছু যায় আসে না আরূর ৷ বাচ্চাটা তো সত্যিই ওদের মাঝে নেই যে তাতে কোনো বাধা-নিষেধ আরূ মানবে , তাই এটুকু ভালোলাগাকে ও হাতছানি দিয়ে উড়াল দিতেই পারে, কথাটা ভেবে জানালার পর্দাটা সরিয়ে দিয়ে ব্যালকনিতে গেল ৷ হালকা হালকা বৃষ্টি পড়ছে খুব একটা না ভিজলে বৃষ্টিতে ভেজার অদ্ভুত প্রশান্তিটা পাচ্ছে ৷

বৃষ্টির ফোঁটাগুলো কে আরও কাছ থেকে পাওয়ার জন্য হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে চোখটা বন্ধ করলো ৷ খানিকটা বৃষ্টির জলে ভিজে একাকার হতেই হঠাৎ পেটে কারো ঠান্ডা হাতের স্পর্শ আর ঘনঘন নিশ্বাস পড়ার দরুন গরম বাতাসটা মুখের আশেপাশে অনুভব করছে আর একটা কাঁপা কাঁপা হাত ওর প্রসারিত হাতটাকে শক্ত করে ধরে আছে ৷ বৃষ্টিতে দুটিহাত ভিজে একাকার ৷ আরূর আর বুঝতে অসুবিধা হলো না যে আরিশ এসেছে , তবে এখন আরিশকে চোখে দেখেও দেখা হয়ে ওঠেনি ৷
হঠাৎ আরিশ উষ্ন কন্ঠে বলে উঠলো,,,,,

__”আমাকে ছাড়াই একাই বৃষ্টি বিলাস আরুপাখি!”
আরু চোখটা বন্ধ রেখে বলল,,,,
__” যেদিন আমাদের দুজনের মাঝখানে থাকা দীর্ঘ দেওয়ালটা ভেঙে যাবে , থাকবে না আর কোন অভিযোগ ,কোন অভিমান সেদিন হয়তো একসাথে বৃষ্টি বিলাস করবো আমরা ৷”
__” সেই দিনটা কবে আসবে ?”
__” আপনি আমার কল্পনাতে তাই না ? মানে আপনি সত্যিই আসেননি তাইতো !”
আরিশ এবার খানিকটা মুচকি হেসে আরুর বৃষ্টিভেজা হাতটাকে শক্ত করে নিজের হাতের মধ্যে মুঠিবদ্ধ করে নিয়ে বলল,,,

__” হঠাৎ এমন মনে হওয়ার কারণ ?”
আরু এবার খানিকটা মুচকি হেসে বলল,,,
__” কারণ আপনি নামক মানুষটা কখনো এমনটা জিজ্ঞাসা করতেই পারেন না যে একা কেন বৃষ্টিবিলাস করছি ! আপনি বাস্তবের আরিশ খান হলে নিজের অধিকারটা খাটিয়ে বলতেন যে
__” আরুপাখি একবার এমন ভুল করেছ আমি মেনে নিলাম কিন্তু দ্বিতীয় বার একা এভাবে বৃষ্টি বিলাস করলে আমাকে কিন্ত তোমাকে ছাড়বো না, কাজটা খুব একটা ভালো হবে না ৷”
আরুর কথাটা শুনে আরিশ এবার হো হো করে হাসতে শুরু করে দিলো ৷ উন্মাদের মতো হাসছে আরূর কথা শুনে ৷
আরিশের হাসি শুনতেই আরূর বুকের ভেতর ধক করে উঠলো , তাড়াতাড়ি করে চোখটা খুলে আরিস এর উপস্থিতি বোঝার জন্য আরিসের দিকে ঘুরে তাকালো , তাহলে এতক্ষণ ধরে যা হচ্ছিল তা কি শুধুই আরু আবেগের মধ্যে দিয়ে চলছিল ?
আরিসের হাসি কোনভাবে থামছে না দেখে আরূ একটু কিন্তু কিন্তু গলায় বলল,,,

__” এভাবে হাসছেন কেন..?”
আরিশ কোন রকমে নিজের হাসিটাকে থামিয়ে বলল ,,,,
__” আরুপাখি তুমিও আমাকে চিনে ফেলেছো! তুমিও জানো যে তোমার উপর অধিকার টা শুধু আমার তাই হয়তো আমার এমন কথা তুমি বিশ্বাস করে উঠতে পারোনি…..”
আরিসের কথায় আরু খানিকটা হতভম্ব হয়ে গেল , সত্যিই তো এতক্ষণ ধরে নিজের আবেগের মধ্যে চলছিল আরু তাই বাস্তব আর কল্পনার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেনি …..
আরুকে চুপ থাকতে দেখে আরিশ আরূর কাছে খানিকটা সরে গিয়ে আরূর মুখের উপর একটা ফু দিয়ে বলল,,,,

__” আরুপাখি আজ পহেলা ফাল্গুন ৷”
আরিসের মুখে ফাগুন কথাটা শুনে আরূর বুকের ভিতর ধক করে উঠলো , তাড়াতাড়ি আরিশের হাতের দিকে তাকালো , হাতে ব্যান্ডেজ করা আর তাতে কয়েক জায়গায় রক্তের গাঢ় রং ভেসে ভেসে উঠছে, তা দেখে আরূ আরিশের হাতটা ধরে আরিশের হাতে হাত বুলিয়ে বলল,,,,
__” এটা কি করেছেন আপনি?”
আরিশ আরুর দিকে অদ্ভুত চাহনিতে তাকিয়ে বলল __” দুই বছর আগে নিজের করা ভুলটাকে শোধরানোর জন্য যাও একটু করি তাই…”
আরু কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,,,

__” কোনভাবেই কি এ দিন টাকে মুছে ফেলা যায় না….?”
__” সেদিনই আমার ক্ষমা হবে যেদিন তুমি আমাকে ক্ষমা করবে….”
আরু সাথে সাথে আরিশের হাতটা ছেড়ে দিয়ে বলল,,,,
__” আপনার এই ভুলের কোনো ক্ষমা হয় না , সামান্য একটা কারণে ! আপনার জন্য একটা মানুষের জীবনটা থেকেও নেই, আজ বিছানায় শয্যাশায়ী সে , কোনরকম আবেগ অনুভূতি তার মধ্যে আর কাজ করে না ৷”
আরিশ একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলবো,,,

__” জানি আমি অনেক বড় ভুল করেছি তাই জন্যই তো আজকে নিজেকে আর কোন রকম কোন শাস্তি দেই নি সব শাস্তি গুলো জমা করে তোমার কাছে তুলে এনেছি তোমার থেকে সেগুলো নেব বলে ৷”
আরু আরিশ এর দিকে তাকিয়ে বলল,,,,
__” মানে!”
আরিশ ওর পকেট থেকে একটা চাকু বার করে আরূর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,,,,
__” নাও এবার এটা দিয়ে তোমার যা খুশি তাই করো ৷ চাইলে ছিন্নভিন্ন করে দিতে পারো আমাকে ৷”
হঠাৎ করে আরুর মাথায় পুরোনো সব কথা ভেসে উঠলো,,,আরুর হাতটা কাঁপছে এদিকে প্রচন্ড রাগ আর বিরক্তিও কাজ করছে সবকিছুর প্রতি ৷
আরুর এমন শোচনীয় অবস্থা দেখে আরিশ বলল,,,,

__” কি ভয় পাচ্ছো? চিন্তা নেই আমি কোন অভিযোগ করব না তোমার প্রতি ৷
আজ আমার জন্যই তোমার প্রাক্তন ভালোবাসার মানুষটি বিছানায় শয্যাশায়ী , তাই সেইটুকু প্রায়শ্চিত্ত হিসাবে এইটুকু তুমি করতেই পারো. ,যতোই হোক তার থেকে তোমাকে কেড়ে নিয়েছি আমি ৷”
আরু আর কিছু ভাবলো না, ছুরিটা আরিশের গলায় চেপে ধরলো ৷
আরিশ মুচকি মুচকি হাসছে৷
আরু চাকুটা গলায় চেপে ধরে বলল,,,,

__” ভয় লাগছে না মিস্টার আরিশ খান?”
__” . নাহ !”
আরু আর পারছে না এ কষ্ট সহ্য করতে , একরাশ বিরক্তি আর কষ্ট নিয়ে ছুরিটা জোরে ব্যালকনি দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আরিশের বুকে মাথা রেখে কাঁদতে লাগলো ৷
কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগল,,,,
__” কি দোষ ছিল মানুষটার? শুধু আমাকে ভালবেসে ছিল আর তার ভালবাসার পরিপ্রেক্ষিতে আমিও তাকে ভালোবেসেছিলাম ! এটাই কি তার দোষ ?”
আরিশ কিছু বলছেনা , আরূকে বুকের মাঝে শক্ত করে জাপ্টে ধরে আছে আর আরুর মাথায় হাত বোলাচ্ছে , আজ অনুশোচনাটা ওর নিজের মনের মাঝেও তীব্র ভাবে কাজ করছে ৷
আরিশ মনে মনে ভাবছে,,,,,

তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ৩ পর্ব ৪

__” ভালবাসাটা অপরাধের নয় ভালোবাসাটা যদি অপরাধের হতো তাহলে সেই অপরাধের সমান অপরাধী আমিও ৷তুমি যাকে তোমার ভালোবাসার মানুষ হিসাবে বেছে নিয়েছিল সেই মানুষটাই ভুল নই, সেদিন আমি ভুল ছিলাম কারন তোমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি আর নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে অপর একজনের সাথে কল্পনা করাটা যে কতটা কষ্টের তা যদি তুমি বুঝতে তাহলে হয়তো আজ আমাদের দুজনের মাঝে এই ভেদাভেদটা আর থাকতো না ৷ তোমাকে ভালোবাসাটাই হয়তো আমারই ভুল ৷ সেই মানুষটা হয়তো তোমাকে আমার থেকেও বেশি ভালোবাসতো, বৃষ্টির দিনে তোমাকে একমুঠো রোদ এনে দিতো, তোমাকে ভালোবাসার চাঁদরে মুড়িয়ে রাখতো ৷ কিন্ত আমি তো কখনোই তোমাকে সেই ভালোবাসা দিতে পারিনি, কেবলমাত্র তোমাকে নিজের করে একান্তেই ভালোবেসে গেছি, আর তা এমন ভালোবাসা যে তা তুমি অবধি কখনো পৌছাতেই পারেনি ৷

জানি তুমি হয়তো কখনো আমাকে ক্ষমা করবেনা, আর আমি হয়তো তার যোগ্যও না তবে তোমার মনে ভালোবাসার সে3 প্রিয় মানুষটির জায়গা দখল করতে না পারলেও অপ্রিয় একটি মানুষের স্থানে তো আমার জায়গা হবে এটাই আমার জন্য অনেক ৷
আমি যানি যে চাইলেও সেই শয্যাশায়ী মানুষটাকে সুস্থ করতে পারবো না তবে তুমি চাইলে তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দিতেই পারি ৷ হয়তো তাতে তোমাকে হারানোর পাগলামিটা মাত্রাতিরিক্ত হবে তবে তোমাকে তা সহ্য করতে হবে না তার আগেই হয়তো আমি হারিয়ে যাবো ৷
আজ ভালোই উপলদ্ধি করছি
__”ভালোবাসা নামক জিনিসটা হল বেদনার ৷”

তোমার নেশায় আসক্ত সিজন ৩ পর্ব ৬