তোলপাড় পর্ব ২৯+৩০+৩১

তোলপাড় পর্ব ২৯+৩০+৩১
শান্তনা আক্তার

রাতের বেলা রিমি আহসানের বালিশের উপর সরি কার্ড রেখে ঘুমানোর ভান করে শুয়ে থাকে।আহসান আসতেই ওর চোখ যায় রিমির দিকে।অন্য দিনের তুলনায় আজ অনেক তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরেছে ও।অন্যদিন যতই রাত হোকনা কেন রিমি জেগে থাকতো।কিন্তু আজ রিমিকে এতো ফাস্ট ঘুমাতে দেখে আহসান যেন খুব বেশিই আশ্চর্য হলো।আগামীকাল ও রিমিকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে এই কথাটা মাথায় আসতেই একটা শুকনো হাসি ফুটে উঠে ওর মুখে।যদিও হাসিটা তাচ্ছিল্যের হাসি।আহসান বালিশের দিকে তাকাতেই রিমির রাখা কার্ডটি দেখতে পেল।কার্ডটি হাতে নিয়ে দেখলো সেখানে বড় বড় লেটারে “SORRY” লেখা।

-এখানে সরি কার্ড কে রাখলো?রুমে কেউ আছে নাকি?এই বলে রুমের চারিদিকে তাকাতে শুরু করলো।
রিমি চট করে উঠে বসে বলল,এদিক সেদিক তাকাচ্ছেন কেন?আমি ছাড়া রুমে কে আসবে কার্ড রাখতে।
আহসান আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলল,
-তুমি রেখেছো!কেন?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

-কেন আবার,গতকালের ব্যবহারের জন্য।আমি আপনার ওই বদরাগী বাপটার উপর রাগ দেখাতে পারিনি বলে আপনাকে শিকার বানিয়ে ফেলেছিলাম।বিশ্বাস করুন আমি যা যা বলেছিলাম সব রাগের মাথায়।কি বলেছি না বলেছি কিছুই মনে নেই আমার।তবে যাই বলে থাকি না কেন মন থেকে কিছুই বলিনি।প্লিজ আমাকে মাফ করে দিন।(কান ধরে)

-মাফ চাচ্ছো কেন?তুমি রেগে বলো আর যেভাবেই বলো না কেন আমি বুঝতে পেরে গিয়েছি তুমি এখানে ভালো থাকবে না।সাথে করে ডিভোর্স পেপার নিয়ে এসেছি। আমি সাইনও করে দিয়েছি তুমিও সাইন করে দিও।আমি আগে থাকতেই সাইন করে রেখেছি কারণ সকাল ৬টার সময় আমায় হসপিটালে যেতে হচ্ছে।কাল সারাদিন বাড়িতে থাকছি না।উকিলকে বলে রেখেছিলাম আজ রাতের মধ্যেই ডিভোর্স পেপার রেডি করে দেওয়ার জন্য।তাই কষ্ট করে খুব ফাস্ট করে দিয়েছে।

তুমি চাইলে সকালে সাইন করতে পারো।কারণ তখন তুমি এ বাড়ি থেকে বুক ফুলিয়ে বেরিয়ে যেতে পারবে।একদম মুক্ত পাখির মতো।আহসান ওর কথার মাঝে কারো কান্নার শব্দ শুনতে পেল।তাকিয়ে দেখল রিমি ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদছে।রিমিকে কান্না করতে দেখে আহসান আবারও বলতে শুরু করলো,আমি জানি এটা তোমার খুশির কান্না।আমি তোমাকে আজ আটকাবো না,তুমি যত পারো কাঁদো।এই বলে হাতের কাগজগুলো টেবিলের উপর রেখে চেঞ্জ কর‍তে চলে যায়।এদিকে রিমির কান্নার মাত্রা আরও শতগুণ বেড়ে গেল।

-ব্যাটা টিকটিকির নানার বংশধর,কাউয়ার লিডার,নর্দমার কালো পানি,গরুর হাড্ডি তোর কোনোদিন ভালো হবে না বলে দিলাম।ডিভোর্স দিবি আমায়!দে ডিভোর্স।তারপর যখন কপালে হিন্দি সিনেমার কাঞ্চানা বউ হিসেবে জুটবে তখন বুঝবি ঠ্যালা।আমি মেয়ে শান্তশিষ্ট বলে এক মাস নাহয় সংসার করতে পারলি।ওই কাঞ্চানার সাথে দেখবো কতদিন টিকে এই বলে আবারও কান্না জুড়ে দিল।আহসান বাহিরে এসে দেখলো রিমি উল্টো পাশ শুয়ে নাক টানছে বারবার।আহসান কি জানি কি ভেবে লাইট অফ করে শুয়ে পড়ল।

রিমি সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে আহসান রুমে নেই।তারপর ওর মনে পড়ে আহসান তো ৬টার সময় হসপিটালে যাওয়ার কথা বলেছিল।এই ভেবে উঠবে কি ওর নজর গেল টেবিলের উপর রাখা কাগজগুলোর দিকে।রিমি মন খারাপ করে কাগজ গুলো হাতে নিল।তারপর একে একে সব গুলো কাগজ দেখতে শুরু করলো।রিমি যেন চরম অবাক হলো কাগজগুলো দেখে।চোখ উল্টে তাকিয়ে আছে কাগজগুলো হাতে নিয়ে।

-একি!এগুলো তো সব খালি অফসেট পেপার।ডিভোর্স পেপার কোথায় গেল?কোথাও উড়ে টুরে যায়নি তো?এবার শেষের কাগজটা দেখে রিমি যেন অবাকের শেষ চূড়ায় পৌঁছে গেল।শেষ কাগজটায় লাল কালি দিয়ে লেখা,কতটা সিলি তুমি রিমি!আমি তোমাকে এতো সহজে ডিভোর্স দিয়ে দেব,এটা কিভাবে ভাবতে পারলে?আমি জানতাম তুমি আমাকে ডিভোর্স দিতে চাইবে না।তাইতো পরীক্ষা করে দেখেছিলাম তুমি কি করো ডিভোর্স এর কথা শুনে।আর ডিভোর্স পেপার রেডি করতে দুদিন সময় লাগেনা।

টাকা দিলে এক ঘন্টায় সব হয়ে যায়।তুমি সেটাও বুঝলে না!আসলে আমি তোমাকে একটু নাকানিচুবানি খাওয়াতে চেয়েছিলাম তা কিন্তু নয়।আমি দেখতে চেয়েছিলাম তুমি কি এক্সপ্রেশন দাও ডিভোর্সের কথা শুনে।আমি গতকাল খুব সহজে বলে দিয়েছিলাম তোমায় ডিভোর্স দিয়ে দেব।কিন্তু পরক্ষণে মনে হলো একটা দিন দুটো দিন ওয়েট করে দেখি তুমি কি বলো এই ভেবে সময় নেওয়া।ভেবেছিলাম তুমি হয়তো এটাই চাও।কিন্তু যা বুঝলাম তুমি ডিভোর্স না নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছো।এটা বুঝতেই আমি আমার ডিসিশন পালটে ফেলি।

দুদিন ওয়েট করতে পারিনি গতরাতেই রহস্য উদঘাটন করতে চেয়েছিলাম।কিন্তু তুমি তো পেপার গুলো খুলে দেখলেই না।দেখলে হয়তো তোমার ওই সিলি কান্নাটা থেমে যেত।রাত ভরে তোমার নাক টেনে কান্নার শব্দে আমি এক মিনিট ও ঘুমাতে পারিনি।ইচ্ছে করছিলো খালি পেপার গুলো তোমায় দেখিয়ে সবটা বলে দেই।কিন্তু সেটা আর করা হলো না।কারণ আমি সত্যিটা বলে দিলে তুমি তেমন সারপ্রাইজড হতে না।যেটা এখন হয়েছো।আর আমি জানতেও পারতাম না তুমি সামান্য ডিভোর্সের জন্য এতটা কষ্ট পাচ্ছো।

রাতভরে যেভাবে কান্না করলে তাতে আমি স্পষ্ট বুঝেছি তুমি আর যাই চাও না কেন, ডিভোর্স একদমই চাওনা।তাই তুমি ঘুমিয়ে গেলে এই ছোট চিরকুট টা লিখলাম।যাতে তুমি ব্যাপারটা স্পষ্ট বুঝতে পারো।আর তোমার মনের সব কনফিউশান্স দূর হয়ে যাক।তবে আমি জানি না তুমি সবটা পড়তে পেরেছো কিনা।কারণ সবাই বলে ডক্টরদের হাতের লিখা নাকি সাধারণ মানুষ পড়তে পারেনা।কি জানি কি পড়তে কি পড়েছো আর আমার নামে উল্টো পালটা ভাবছো।রিমি এই লিখাটা পড়ে ফিক করে হেসে ওঠে।

তারপর আবারও পড়তে শুরু করে,জানো রিমি আমি এখন অনেক পালটে গিয়েছি।সেই আগের আমিটা আর নেই আমার মাঝে।এখন আর কথায় কথায় রেগে যাইনা।সবাইকে বোঝার চেষ্টা করি।এইসব কিছুর পেছনে শুধু তুমি।তুমি অল্প কদিনেই আমাকে অনেক কিছু শিখিয়ে দিলে।তাই মনের গহীন থেকে থ্যাংকস জানাই তোমাকে।আজ বাসায় আসবো নাকি জানি না।তাই রাতেই তোমার ভুল ভাবনা টা ভাঙাতে চেয়েছিলাম।কিন্তু তুমি সেটা আর হতে দিলে না।তুমি যদি একটাবার খালি কাগজগুলো দেখতে তাহলে সারারাত নিজেও কষ্ট পেতে না,আর আমিও একটু ঘুমোতে পারতাম।যাই হোক সময় মতো কলেজে পৌঁছে যেও।গুড মর্নিং।

-আপনার পেটে পেটে এতো!আজ বাড়িতে না আসলেও কালতো আসবেন!এবার আসুক তারে আমি মজা দেখাবো।গানের লাইনটা গেয়ে উচ্চস্বরে হেসে ওঠে।
রিমি ক্লাস করাচ্ছে আর সামির রিমিকে দেখে শিশ বাজাচ্ছে।বিষয়টা রিমির একদমই পছন্দ হয়নি।রিমি গিয়ে সামিরের কান টেনে ধরল।

-অসভ্য ছেলে।ক্লাস থেকে বেরিয়ে যাও এখনি।
সামির খুব সুন্দর করে বলল,ম্যাম ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলে আপনাকে দেখবো কি করে?
রিমির রাগ যেন সাত আসমানে পৌঁছে গেল।সামিরকে এক প্রকার টেনে হেচড়ে বাহিরে বের করে দিল।
-এখানে এক পা তুলে দাঁড়িয়ে থাকবে। আমি যতক্ষণ না ক্লাস থেকে বের হচ্ছি ততক্ষণ এক পা নড়বে না।
সামির খুব ইজিলি বলে দিল,আপনি যা বলবেন তাই হবে ম্যাম।আপনি বললে আজ সারাদিন এখানে এভাবে এক পা তুলে দাঁড়িয়ে থাকবো।(এক পা তুলে)

-তোমার কপালে খুব বেশি দুঃখ আছে এই বলে রাখলাম।টিচারের সাথে বেয়াদবি করা জঘন্য অপরাধ।তুমি খুব কঠোর শাস্তি পাবে এর জন্য।লাই পেয়ে পেয়ে আস্ত বেয়াদব হয়ে গেছ।তবে তোমাকে সোজা আমি করেই ছাড়বো।এটা আমার চ্যালেঞ্জ রইলো।
পরের দিন সামির ঠিক একই বেয়াদবি করায় রিমি ওকে কলেজের মাঠের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে রেখেছে।তাও আবার কান ধরে।দুপুরের কাঠফাটা রোদ।সূর্য একেবারে মাথার উপর চড়ে আছে।এমতাবস্থায় খোলা মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকাটা খুব বেশি জটিল ও কঠিনতম কাজ সাধারণ মানুষের জন্য।

সামির কানে হাত দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে লজ্জায়।কারণ আশেপাশের স্টুডেন্টস এমনকি পুরো কলেজের টিচার্সরা অবধি সামিরকে দেখে হাসছে।সামির লজ্জায় মাথা কাত করে আছে আর রিমি বলছে,মাথা উঁচু করো কেউ তোমার মুখটা দেখতে পাচ্ছে না ভালো করে।সামির আড়ষ্ট স্বরে বলল,তুমি কিন্তু এবার বেশি বেশি করে ফেলেছো।আমি কিন্তু ড্যাডির কাছে যেতে বাধ্য হবো।

-আবার তুমি করে বলেছো!এবার তোমার ভিডিও বানিয়ে ছেড়ে দিচ্ছি ওয়েট।
-না না ম্যাম।আমি তো মজা করেছি।আর কখনো তুমি করে বলবো না।এমনিতেও আমি তো কারো সামনে আপনাকে তুমি করে বলিনা এখন আর।
-কেউ থাকুক বা না থাকুক আমাকে আর কখনো তুমি করে বলবে না। Is it clear?
-জ্বি ম্যাম।আর ক্লাসেও কোনো প্রকার বেয়াদবি করবে না।আমাকে উল্টো পালটা কিছু বলবে না।নইলে পরবর্তীতে রাস্তার মাঝে নিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখবো তাও আবার খালি পায়ে।উত্তপ্ত রাস্তায় খালি পায়ে দাঁড়িয়ে থাকলে, তখন বুঝবে আমি কতটা ভয়ংকর।আর তোমার বাবা নিজের ইচ্ছেতেই তোমাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছেন তাই তার কাছে বিচার দিয়েও কিচ্ছুটি হচ্ছে না।বুঝলে?

-না তুমি,,,,,রিমির চোখ রাঙানি দেখে কথা পাল্টে বলল,মানে আপনি যা বলবেন তাই হবে।আমি আর বেয়াদবি করবো না আপনার সাথে।প্লিজ এবারের মতো মাফ করে দিন ম্যাম।প্লিজ।(অসহায়ের মতো বলল)
-হুম মাফ করবো বটে কিন্তু তুমি যদি আমার কথা শুনে চলো তবেই মাফ করবো।
-আমি আপনার সব কথা শুনবো ম্যাম।আপনি যা বলবেন তাই হবে।এখন থেকে কোনো টিচারকে অসম্মান করবো না।স্টুডেন্টসদের ও উত্ত্যক্ত করবো না।প্রমিজ।

-তা তো করবেই কিন্তু তার সাথে আরেকটা কাজ করতে হবে।
-কি ম্যাম?
-স্টাডি।
-স্টাডি!আমি আর যাই পারি না কেন এটা পারবো না।আমার দ্বারা সম্ভব না ম্যাম।
-তাহলে আজ কলেজ ছুটি হওয়া অবধি এখানে কাকতাড়ুয়ার মতো দাঁড়িয়ে থাকো আমি গেলাম।
-এই না ম্যাম,আমি করবো স্টাডি।আপনি যেভাবে বলবেন সেভাবেই হবে।আমি এখন থেকে বাধ্য ছাত্র হয়ে যাবো।তবুও আমাকে আর এরকম লজ্জাজনক শাস্তি দেবেন না।আমি হাত জোর করছি ম্যাম।

-হাত জোর করতে হবে না।তুমি ক্লাসে আসতে পারো।
সামির বিশ্বজয়ের হাসি দিয়ে বলল,থ্যাংকস এ লট ম্যাম।
আজ পুরো দিন আহসান বাড়িতে আসেনি।সকালে হসপিটালে গেলে দুপুরে,বিকেলে একবার হলেও আসতো।আর যেদিন বিকেলে আসতো না,ওইদিন সন্ধ্যার দিকে আসতোই আসতো।কিন্তু আজ না দুপুর না বিকেল আর না সন্ধ্যা।এমনকি রাতেও আসছে না।আজ রিমি আহসানকে খুব বেশি মিস করছে।অন্যদিন তো এমনটা হয়নি কখনো!চিন্তা করতো কিন্তু মিস করতো না কখনো।তবে আজ কেন এতো মিস করছে আহসানকে?কেনোই বা ওর আত্মা ছটফট করছে আহসানকে এক ঝলক দেখার জন্য?বার বার ঘড়ি দেখছে আর নইলে বেলকনিতে আসা যাওয়া করছে।বারবার একই কাজ করে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে ও।

-ধুর আর ভালো লাগছে না এভাবে।উনি বোধয় আজ আর আসবে না।উনি তো বলেছিল আসবে না।তবে উনি তো শিওর হয়ে বলেননি যে আসবে না।তাইতো আমার মনে হচ্ছিলো উনি চলে আসবে।কিন্তু না এখন অনেক রাত হয়ে গেছে।আজ আর আসছে না উনি।আচ্ছা আমি কি একবার কল দেব ওনাকে?কলটা দেব কিভাবে?এই এক মাসে আমি কি ওনার সাথে কখনো ফোনে কথা বলেছি নাকি!ওনার নাম্বার টাইতো নেই আমার কাছে।কি অদ্ভুত একটা ব্যাপার।লোকে শুনলে হাসবে না কাঁদবে, তারা নিজেও বুঝতে পারবে না কি করবে।আমার কি দোষ?উনি ওতো আমার নাম্বার চাননি কখনো।

তাহলে আমি সেধে সেধে কেন ওনার নাম্বার চাইতে যাব বা আমি কেনোই না আমার নাম্বার ওনাকে দেব?ওনার তো কিছু আসে যায়না।টেনশন তো আমি করি।যাই হোক,আমি বরং ঘুমিয়ে যাই।কাল ফ্রাইডে কলেজ বন্ধ।একটু ঘুমাতে পারবো লেট করে।তারপর বড় একটা হাই তুলে ঘুমিয়ে যায় রিমি।

আহসান ৭টার দিকে বাসায় ফিরে ক্লান্ত শরীর নিয়ে।এসে নিজের ব্লেজারটা বিছানার এক কোণে রাখলো।আহসান কিছুক্ষণ মাথা চেপে ধরে বসে থাকলো।তারপর বালিশের উপর মাথা এলাতেই রিমি পেছন থেকে ওকে জড়িয়ে ধরলো।আহসান রিমির হাত সরিয়ে ওর দিকে ফিরলো।সাথে সাথে রিমি আবারও আহসানকে জড়িয়ে ধরলো।দুহাত দিয়ে একেবারে আহসানের গলা জড়িয়ে ধরে রেখেছে।আহসান বুঝতে পারলো রিমি ঘুমের ঘোরে এটা করেছে।তাই রিমিকে আর ডাক দিলনা।ওইভাবেই রিমিকে বুকের সাথে পেঁচিয়ে শুয়ে পড়ে।ওদের ঘুম ভাঙে দরজা খটখটানির শব্দ শুনে।রিমি ওকে আহসানের বুকে দেখে ভুত দেখার মতো তাকিয়ে রইলো।আহসান রিমিকে ছেড়ে দিয়ে উঠে বসলো।দুজনই কিছু বলছে না।ওদিকে দরজার ঠকঠক শব্দ বেড়েই চলেছে।আহসান গিয়ে দরজা খুলে দিতেই সম্পা নাস্তা নিয়ে রুমের ভেতর ঢুকে।

-বাবারে বাবা,সেই কহন থেইকা দরজা ধাক্কাইতাছি আপনারা খুলতাছেনই না।এইযে ভাবি আপনার নাস্তা টেবিলের উপর রাখলাম।আর ছোট সাহেব, আপনারে বড় সাহেব কইছে নিচে যাইতে বেরেকফাস করার জন্য।
-ওকে,তুমি যাও আমি আসছি।
সম্পা চলে গেলে রিমি দুহাত কোমড়ে গুজে আহসানের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।তারপর ভ্রু উঁচিয়ে তাকিয়ে রইলো।আহসান বুঝতে পারলো রিমির এমন চাহনির কারণ।

-আমি কিছুই করিনি।তুমিই আমায় জড়িয়ে ধরেছিলে ঘুমের মধ্যে।গতকাল একটা পেসেন্ট এর খুব বড় অপারেশন ছিলো।তাকে নিয়েই বিজি ছিলাম সারাদিন।রাত ৩টার সময় অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়েছি।বাসায় এসে বিছানায় শুতেই তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলে তারপর আমি যে ডাক দেব তার সুযোগ হয়ে ওঠেনি এতটাই ক্লান্ত ছিলাম আমি।আমার জায়গায় তুমি থাকলে,,,,,আহসান একনাগাড়ে সব বলে গেল কিন্তু মাঝ পথে রিমি ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল,থাক আমি এসব শুনতে চাইনি।

আপনি বলুন ডিভোর্স এর নাটকটা কেন করলেন আমার সাথে?কেন এতটা টেনশন দিলেন আমায়?জানেন আমি কতটা কষ্ট পেয়েছিলাম!দম বন্ধ হয়ে আসছিল আমার।এভাবে নাটক টা না করলেও পারতেন।আপনি বুঝতে পারছিলেন না আমি কতটা দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম।গতকাল আপনাকে না দেখতে পেয়ে আমার কি হাল হয়েছিলো সেটা জানেন না আপনি।আহসান এক দৃষ্টিতে রিমিকে দেখছে।আহসান ওর মুখটা রিমির একদম কাছে নিয়ে গিয়ে বলল,আমার জন্য এতো ভাবো কেন?এতো টেনশনই বা কেন করছো?ডিভোর্সের কথায় কষ্ট কেন পেয়েছো?আমি কে তোমার যে আমার জন্য কষ্ট পাবে?আমাকে না দেখতে পেয়ে এতটা বিচলিতই বা কেন হয়েছিলে?

-আ আ আপনি কি ভাবছেন?
-যাই ভাবি,তুমি বলো তুমি কি ভাবো আমাকে নিয়ে?
-আমি কি ভাববো?আপনি আমার আইনত হাসবেন্ড আর আমি আপনার ওয়াইফ তো আমি যদি আপনাকে নিয়ে না ভাবি তো কে ভাববে?মানে আপনি যদি উল্টো পালটা কিছু করেন তাহলে সেই দায়ভার তো আমার উপর এসেই পড়বে।আপনার মা তো আমার উপর আপনার সব দায়িত্ব দিয়েছেন তাই একটু তো ভাবতে হবে আপনার জন্য।অন্তত আপনার মায়ের জন্য।

-তাই?
-হুম তাই।
-আমার তো মনে হচ্ছে তুমি কথাটা ঘুরিয়ে অন্য দিকে নিয়ে গেলে।আই মিন মিথ্যে বললে।
-আমি মোটেও মিথ্যে বলিনি।আপনি কি ভাবছেন সেটা বলে দিলেই হলো।
-না আমিতো বলবো না।আমি বললে তুমি না স্বীকার যাবে।তাই তুমিই বলে ফেল।
-আমি সত্যি বলছি আমি অন্য কিছুই ভাবিনি।
-তাহলে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলো।

-ওকে এইযে তাকালাম আপনার চোখের দিকে।আমি যা বলেছি সেটাই সত্যি।তাছাড়া আর কিছুই না।হয়েছে?
আহসান বাকা হেসে বলল,ওকে দেখা যাক।
-কি দেখবেন?
-সেটা তোমাকে কেন বলবো?তুমি কি আমাকে তোমার মনের কথা বলো যে আমি বলবো!Ok let it past,তুমি দরজা না লাগিয়ে কেন ঘুমিয়ে পড়েছিলে তাই বলো?আমার আসতে লেট হলে ডোর লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়বে।মনে থাকবে?
-ওকে খেয়াল রাখবো এবার থেকে।আপনি এখন নিচে যান।নইলে আপনার বাপি রেগে যাবে।গিয়ে ব্রেকফাস্ট করুন।
-হুম,তবে তুমিও যাবে আমার সাথে।
রিমি অবাক দৃষ্টিতে বলল,আমি কেন যাব?

-ব্রেকফাস্ট করতে,আর কেন?
-মাথা ঠিক আছে আপনার?আপনার বাপি আমাকে দেখলে খুব রেগে যাবেন।আমি যাব না।সম্পা আমার ব্রেকফাস্ট দিয়ে গিয়েছে আমি খেয়ে নেব।আপনি কথা না বাড়িয়ে ফ্রেশ হন।তারপর নিচে যান।আপনার বাপি ওয়েট করছে।
-একদম চুপ।আমি যা বলছি তাই হবে।
-কিন্ত আপনি,,,
-চুপ থাকতে বলেছি।আমি যা বলেছি তাই হবে।আর একটাও কথা বলবে না।
রিমি আর কোনো কথা বাড়ালো না।কারণ ও বুঝতে পেরেছে আহসান রিমিকে ওর সাথে নিয়েই ছাড়বে।এখন রিমির একটাই চিন্তা,রঞ্জিত কি করবে ওর সাথে!!

রঞ্জিত খুব অধীর আগ্রহে ছেলের জন্য অপেক্ষা করছে ব্রেকফাস্ট নিয়ে।বেশ হাসি খুশি আজ রঞ্জিত।হবেনা কেন?ছেলে কত বড় একটা অপারেশন করে success হয়েছে।তাও আবার রঞ্জিতকে ছাড়া।
-তুমি আর কতক্ষণ বসে থাকবে?আহসান খুব টায়ার্ড হয়তো,তাই লেট হচ্ছে।
-So what?আমি আমার ছেলের জন্য ওয়েট করছি,অন্য কারো জন্য তো নয়!আমার সমস্যা নেই আমার প্রিন্স আসুক আমি ওর সাথেই ব্রেকফাস্ট করবো।তুমি ব্রেকফাস্ট করতে পারো।
-প্রিন্স! না একসাথেই করি।

-হুম প্রিন্স।আমি King আর আমার ছেলে prince…
-ছেলে আমার প্রিন্স মাশাআল্লাহ্ মেনে নিলাম।কিন্তু তুমি কিং!হাসালে আমায়।
-কেন আমাকে কিং এর মতো লাগে না?
-উমম,না একদম ভিলেন ভিলেন লাগে।
-অপা,,,(চোখ রাঙিয়ে)

-সত্যি বলছি।You are look like a villain..
রঞ্জিত অভিমান করে বলল,তো এই ভিলেনকে বিয়ে না করে কোনো সিনেমার হিরোকে বিয়ে করতে।
-বাবাহ!ভিলেনরা অভিমান ও করতে পারে?জানতাম নাতো।তোমাকে ভিলেনের মতো দেখতে বলেই তো বিয়ের পীড়িতে বসেছিলাম।আমার ছোট বেলার স্বপ্ন কোনো একটা ফিল্মের ভিলেনকে বিয়ে করবো।কিন্তু তাতো আর হলো না।এর বদলে ভিলেন টাইপ হাসবেন্ড পেলাম।

-আমি কি এমন ভিলেনের মতো কাজ করলাম?
-ধুর আমি মজা করছিলাম।ছাড়ো তো এসব! কোন কথায় ছিলাম আর কোথায় চলে আসলাম আমরা?আজ এতো খুশি কেন তাই বলো।
-ছেলে আমার ব্রেইন টিউমারের অপারেশন করেছে তাও আবার আমাকে ছাড়া।সফল ও হয়েছে।
-হুম তা তো শুনেছি।কিন্তু এতো খুশি কেন হচ্ছো?এটাই তো তোমাদের পেশা।
-খুশি হবো না!আমার ছেলে এতো বড় একটা মিশন জিতেছে আর আমি বাবা হয়ে খুশি হবো না?
-তুমি সবসময় ছেলেকে নিয়ে মাতামাতি করো।

-আমার একটাই তো ছেলে,ওকে ঘিরেই তো আমার সব।আমার যা আছে সব কিছুর উত্তরাধিকারি তো আহসানই।ওর জন্য আমি সব করতে পারি।সব।এরই মাঝে আহসান এসে বলল,গুড মর্নিং বাপি,মম।
(লেখিকাঃশান্তনা_আক্তার)
-এইতো আমার আহসান চলে এসেছে।কথাটা বলে সামনে তাকাতেই রঞ্জিতের এতোক্ষণের হাসি ভরা মুখটায় কালো অন্ধকার নেমে আসলো।কারণ আহসানের পাশে রিমিও ছিলো।রঞ্জিত ডাইনিং টেবিল থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,ও তোমার সাথে কেন?(রিমিকে দেখিয়ে)

-এটা কেমন প্রশ্ন?রিমি আমার পাশে থাকবে না তো কে থাকবে?
-তুমি জানো না আমি ওকে নিচে আসতে মানা করেছি?এমনকি আমার চোখের সামনে আসতেও।
-এক ছাদের নিচে থাকলে মুখোমুখি হতে হবে এটাই তো স্বাভাবিক।
-হুম,তবে আমি এর ব্যবস্থা করেছি।যতক্ষণ আমি বাড়িতে থাকবো ততক্ষণ এই মেয়ে রুমের ভেতরই থাকবে।আর ওর ব্রেকফাস্ট,লাঞ্চ,ডিনার সব রুমের মধ্যেই হবে।যাতে আমাকে ওর মুখো দর্শন করতে না হয়।

-এই মেয়ে বলছো কেন বাপি?রিমিতো তোমার মেয়ের মতোই।এমন বিহেভিয়ার করো না ওর সাথে।রিমি কেন একা একা খাবে।কেন ঘরবন্দী হয়ে থাকবে?ওতো আমাদের বাড়ির সদস্য।তোমার ছেলের স্ত্রী।ওকি তোমার থেকে এই বিহেভিয়ার টা ডিজার্ভ করে?
-দেখো আহসান,আমার মুড ভালো আছে তাই রাগ উঠিয়ে দিও না।চুপচাপ ব্রেকফাস্ট করতে বসো আর ওই মেয়েকে চলে যেতে বলো।
-এটা ইম্পসিবল বাপি।

রিমি ওর অপমান আর নিতে পারছে না।ওর আর এক মুহুর্তও এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে না।তাই বলেই দিল,আমাকে নিয়ে আপনারা আর কথা কাটাকাটি করবেন না দয়া করে।আমাকে নিয়েই সব ঝামেলা,তাই আমিই চলে যাচ্ছি।রিমি চলে যাচ্ছিলো কি আহসান রিমির একহাত ধরে ফেলে।আর রিমি যেতে পারেনা।
(লেখিকাঃশান্তনা_আক্তার

-এখানেই থাকবে তুমি।নড়বে না এক পা ও।বাপি রিমি আজ থেকে আমাদের সাথেই খাবে।আর আমাদের মাঝেই থাকবে।
-অসম্ভব!আমি এই মেয়েকে দুচোখেও দেখতে পারি না।একটুও Tolerate করতে পারি না।ওকে যেতে দাও।
-ও আমাদের সাথেই ব্রেকফাস্ট করবে তাই ও এখানেই থাকবে।
-তুমি কিন্তু আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিচ্ছো আহসান।
-আহসান তো ঠিকই বলেছে।আমার ছেলেটা সত্যি আজ অনেক বড় হয়ে গিয়েছে।গড ব্লেস ইউ বাবা।
-তুমিও অপা!

-তুমি ভুলটাকে মেনে নেও প্লিজ।আর অশান্তি পাকিয়ো না।
-আমি অশান্তি পাকাই!ঠিক আছে তোমরা থাকো আমিই গেলাম।
-এই ভুলটা করো না।নইলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না।তুমি তো জানো আমি কেমন!তোমার সাথে এর পর থেকে আর একটা কথাও বলবো না।আর কিছু খাবোও না।তখন আমাকে মানাতে আসবে না বলে দিলাম।
-তুমি সবসময় আমাকে ব্লেকমেইল করে গেলে আহসান।

-তোমাকে কনভিন্স করতে এই মহৌষধ টা অলওয়েজ কাজে দেয় যে।এসব বাদ দিয়ে চলো আমরা সবাই মিলে ব্রেকফাস্ট করি।
অপা হাতে তালি দিয়ে বলল,ইয়ে এই প্রথম পুরো ফ্যামিলি একসাথে বসে ব্রেকফাস্ট করবো আমরা।পুরো ফ্যামিলি কথাটা শুনে রঞ্জিতের কপালের সব রগ ভেসে উঠে।মুষ্ঠিবদ্ধ করে কোনোমতে ব্রেকফাস্ট করে নিজ রুমে চলে যায় রঞ্জিত।
-আপনি আজ খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন।আপনার বাপি খুব রেগে আছেন বোধয়।
-আর কদিন রেগে থাকবে বলো?আমি কদিন রেগে থেকেছি তোমার উপর?খুব বেশিদিন না।আমি তোমাকে সামনে থেকে উপলব্ধি করতে পেরেছি বলে তোমাকে ঘিরে আমার সব রাগ নিঃশেষ হতে বেশি সময় লাগেনি।বাপিও যদি তোমাকে বুঝে যায় তাহলে আমার মতো বাপি ও তোমাকে ভাল,,,,আহসান থেমে গেল।

-থেমে গেলেন যে!ভাল কি?
-আমি বলতে চেয়েছি বাপিও তোমাকে ভাল ভাবতে শুরু করবে।
-সত্যি এটাই বলতে চেয়েছিলেন তো?
-হুম এটাই বলতে চেয়েছিলাম।
-তুমি কি ভেবেছো?
-না কিছু না।
-বলো?
-বললাম তো কিছু ভাবিনি।
-ওকে মেনে নিলাম।আজ আমরা দুজনেই ফ্রি তাইতো?
-হুম,কেন?

-তো আজ আমরা দুজন একটু ঘুরে আসলে কেমন হয় ব্যপারটা?
-ঘুরতে যাওয়ার কি আছে?আপনি রেস্ট করুন।একটা দিন ছুটি পেলেন তাও যদি ঘুরতে গিয়ে ওয়েস্ট করে ফেলেন তাহলে ক্লান্তি কিভাবে কাটবে?
-ঘুরতে গেলে ক্লান্তি কেটে যায়।মন প্রফুল্ল সজীব হয়ে যায়।আর প্রাণবন্ত হয়ে যায়।খুব ভালো লাগবে চলো।
-কিন্ত কোথায় যাবো আমরা?
-সেটা আমার উপর ছেড়ে যাও তুমি গিয়ে রডি হয়ে নাও আমরা আজকে পুরোদিন খুব এঞ্জয় করবো।
-এখনই যাবো!

তোলপাড় পর্ব ২৬+২৭+২৮

-হুম তুমি ওয়াশরুমে গিয়ে রেডি হয়ে নাও আমি বাহিরে চেঞ্জ করে নিচ্ছি।
রিমি আহসানের কথা মতো চেঞ্জ করতে গেল।বউভাতের দিন অনেকগুলো শাড়ি পেয়েছিল সেখান থেকে নিজ পছন্দ মতো একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে এলো।রিমি শাড়ি পড়ে বের হয়ে হালকা সাজ দিল।বরাবরের মতো চুলে খোপা করে নিল।রিমি লাল কালো কম্বিনেশনের একটা শাড়ি পড়েছে।সাথে হাত দুভর্তি লাল চুড়ি।কানে লাল পাথরের ছোট একটা টপ পড়েছে।আহসানও রিমির সাথে ম্যাচিং করে লাল পাঞ্জাবি পড়েছে।সাথে চুলে স্পাইক করেছে।রিমি রেডি আহসানের সামনে গিয়ে বলল,আমি রেডি।
আহসান রিমিকে দেখে বলল,কিছু একটা কমতি আছে তোমার সাজে।ওটা ঠিক করে নাও।

-কি? বলে নিজেকে আয়নার সামনে গিয়ে দেখতে শুরু করলো।তাই দেখে আহসান রিমির কাছে গিয়ে আলতো করে রিমির খোপার গোছা খুলে দিল।সাথে সাথে রিমির পিঠ জুড়ে চুল ছড়িয়ে পড়ে।
-হুম এবার ঠিক আছে।আয়নায় আহসানের দিকে তাকিয়ে রিমি একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল,আপনাকে পাঞ্জাবিতে খুব ভালো লাগছে।একদম একজন সাধারণ মানুষের মতো।
-তাহলে আমি ঘোস্ট নাকি যে আমায় সাধারণ মানুষের মতো লাগবে না!
-সেটা না।আসলে আপনি তো পাঞ্জাবি পড়েন না তাই বললাম।সবসময় তো আর দেখি না পাঞ্জাবিতে তাই একটু বেশিই ভালো লাগছে।
-Really!
-হুম।

-তাহলে মানছো তোমার পাশে মানিয়েছে আমায়?
-বুঝলাম না।(অবাক হয়ে)
-তুমি যেমনটা চাও তেমনটা লাগছে তো আমায়!
-আমি কেমনটা চাই?
-ধ্যাত,কিছু না চলো বেরোতে হবে।আমি গাড়ি বের করছি তুমি এসো বলে বেরিয়ে গেল আহসান।
-অদ্ভুত লোক একটা।কি বলে না বলে কিছুই বুঝি না বাবা এই বলে রিমিও আহসানের পিছু পিছু গেল।

তোলপাড় পর্ব ৩২+৩৩+৩৪