প্রজাপতি আমরা দুজন পর্ব ৩৫

প্রজাপতি আমরা দুজন পর্ব ৩৫
ইলমা বেহরোজ

ভালবাসার মাখামাখিতে কেটে গেল হেমন্তকাল, শীতকাল,বসন্তকাল,গ্রীষ্মকাল।চলে এলো বর্ষাকাল।প্রত্যেকদিন হচ্ছে ঝুম বৃষ্টি।কখনো থেমে থেমে আবার কখনো বিরতিহীন ভাবে।নিঝুম হসপিটাল থেকে ফিরে রাগী মেজাজ নিয়ে।রুমে এসেই জুতা ছুঁড়ে ফেলে।তিতলি কিছুক্ষণের মধ্যে ভার্সিটি থেকে ফিরে।সেও রাগী মেজাজ নিয়ে ফিরে। প্রত্যেকদিন নিঝুম দিয়ে আসে,নিয়ে আসে। অথচ,

আজ যায়নি।ফোনও বন্ধ করে রেখেছে।এতক্ষণ অপেক্ষা করেছে সে।বাসায় এসে টুনির কাছে শুনে অনেক আগেই নাকি বাসায় ফিরেছে নিঝুম।তিতলি নিজের রুমে না গিয়ে আগে নিঝুমের রুমে আসে।দরজা ধাক্কা দিয়ে রুমে ঢুকে।রাগী স্বরে বলে,
— “আপনি আজ গেলেন না কেনো?কল করে তো বলতেও পারতেন।আমার দাঁড়িয়ে থাকতে অস্বস্তি হচ্ছিলো।বখাটে ছে….”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

নিঝুম সোফায় বসে ছিল।তিতলির কথা শেষ হওয়ার পূর্বেই ধমকে উঠে,
— “তুমি কি বাচ্চা?একা আসতে পারো না?প্রতিদিন কেন আমাকে নিয়ে আসতে হবে?আমার আর কাজ নেই?”
তিতলির হৃৎপিন্ডটা লাফিয়ে উঠলো।কখনো নিঝুম এমন উঁচু গলায় কথা বলেনি।এমন ব্যবহারে সে অভ্যস্ত নয়।তিন সেকেন্ডে তিতলির চোখ জলে ভরে উঠে।নিঝুম অন্যদিকে তাকিয়ে গম্ভীর স্বরে বলে,
— “নিজের রুমে যাও।”

তিতলির পা দু’টো স্তব্ধ হয়ে আসে।ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে অনেকক্ষণ।তারপর,দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দেয়।বিছানায় শুয়ে কাঁদতে থাকে অনবরত।হয়তো,এটা সামান্য ব্যাপার।কিন্তু তিতলির জন্য প্রথম।এই কয় মাস এতো ভালবেসেছে মানুষটা!তাই বকাটা হজম করতে পারছেনা তিতলি।কেনো বকলো?তিতলি তো কিছু করেনি।আর নিঝুমই তো নিয়ম করেছে সে দিয়ে আসবে নিয়েও আসবে।সে তো বলেনি কাজ ফেলে তার দায়িত্ব নিতে।বরং বলেছিল না যেতে।সে একাই পারবে।নিঝুম তো শুনলো না।অনেকক্ষণ কান্নার পর তিতলির মন বলে,সে প্রতিশোধ নিবে।হুম নিবেই!অবশ্যই নিবে! চোখের জল মুছে ওড়না গায়ে জড়িয়ে নেয়।তারপর আবার আসে নিঝুমের রুমে।এসে দেখে,নিঝুম উপুড় হয়ে শুয়ে আছে।ঘুমাচ্ছে হয়তো।

তো তাঁর কি?সে প্রতিশোধ নিবেই।তিতলি বড় বড় পা ফেলে বিছানার সামনে আসে।তারপর বিছানায় উঠে নিঝুমের পিঠে দাঁত বসিয়ে দেয়।নিঝুমের শরীরের পশম খাড়া হয়ে যায়।এতো জোরে কামড়িয়েছে!এই কয়টা মাসে প্রচুর কামড় খেয়েছে নিঝুম।সবগুলোর দাগই আছে।একদিন গালে কামড় দিয়েছিল।হসপিটাল,বাসা কারোর সামনে মুখ দেখানো যায়নি!যদিও ব্যাথা পায়,তবুও হাসি পেয়ে গেল নিঝুমের।কি ভয়ংকর মেয়ে!রেগে গেলেই কামড়ে দেয়।নিঝুম ঘুরে,আধাশোয়া হয়ে বসে।তারপর তিতলির দিকে তাকায়।তিতলি দু’পা ভাঁজ করে বসে ফোঁপাচ্ছে।একবার নাক মুছছে আরেকবার চোখ।

নিঝুম হেসে উঠে।হাসির শব্দ শুনে তিতলি একটু অবাক হয়ে তাকালো।আবার চোখ সরিয়ে নিয়ে মিনমিনে গলায় বললো,
— “আপনি হাসবেন না।আপনার হাসি দেখলে আমার রাগ কমে যায়।'”
নিঝুম তিতলির হাতে ধরে টেনে আনে কাছে।এক হাতের আঙ্গুল দিয়ে তিতলির মুখে ছড়িয়ে থাকা চুলগুলো সরিয়ে বললো,

— “আজ হস্পিটাল একটা পেসেন্ট আসছিলো।হার্ট অপারেশন।ইমার্জেন্সি।রোগীর ছেলে খুব কাঁদছিল।টাকা পুরোটা নেই।আবার অপারেশন না করালেও চলেনা।তাই আমি, হস্পিটালে কথা বলে টাকা কমিয়ে নিয়েছি।অপারেশন সাকসেসফুল হয়! অপারেশন শেষে আমার সিনিয়র ডাক্তার অনেক কথা শোনান।এতো দয়ালু হলে দুনিয়া চলবেনা।এমন অনেক কথা।আমি বলেছি,বাকি টাকা আমি দিয়ে দেব।তবুও উনার মন ভরেনা।তর্ক করে চলে এসেছি।তাই মনটা বড্ড তেতো হয়েছিল।রাগটা তোমার উপর ঝেড়ে দিছি।এজন্য আমি ভেরি ভেরি দুঃখিত।”
নিঝুম তিতলিকে জড়িয়ে ধরে।তিতলির মনটা নরম হয়ে আসে।বললো,

— “তাহলে তো আমি সরি বলবো।আপনাকে ভুল বুঝেছি।”
নিঝুম গম্ভীর কণ্ঠে বলে,
— “সরিতে তো হবেনা।”
তিতলি নিঝুমের থেকে সরে গিয়ে বললো,
— “কি করতে হবে?”
নিঝুম লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ে।রসিকতা করে বললো,
— “একটু পা টিপে দাও।”
বলার সাথে সাথে তিতলি পায়ের কাছে চলে আসে।নিঝুম দ্রুত উঠে বসে।বলে,
— “ভাবলাম রেগে গিয়ে আরেকটা কামড় দিবে।”
নিঝুম উঠে দাঁড়ায়।সোফা থেকে ল্যাপটপ হাতে নেয়।তিতলি বিছানা থেকে নেমে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললো,

— “এতো কামড় দেই!আপনার খারাপ লাগেনা?কষ্ট হয় না?রাগ হয় না?”
নিঝুম তিতলির চোখে চোখ রেখে নিবিড় গলায় বললো,
— “এক উত্তর কতদিন দেব?”
তিতলি পাল্টা প্রশ্ন করে,
— “আট মাস…আট মাস যাবৎ সহ্য করছেন।আর কতদিন করবেন?একদিন তো রাগ হবেই।”
নিঝুম নাটকীয় ভঙ্গিতে বললো,
— “মিস, লাজুকলতা কামড়ের উছিলায় যদি আপনার ঠোঁটের ছোঁয়া পাওয়া যায়।আমি শত-সহস্র বর্ষ কামড় খেতে প্রস্তুত।”

তিতলি আবেগী হয়ে পড়ে বড্ড।নিঝুমকে জড়িয়ে ধরে।বুকে মাথা রাখে।নিঝুম এতে একটুও সচকিত হলো না।তিতলি প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় তাঁর বুকে এভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়ে।নিঝুমের কিছু কিছু কথা এতো মোহময় অনুভূতি ঢেলে দেয় সর্বাঙ্গে। সুখে চোখে জল চলে আসে তিতলির।নিঝুম তিতলির কপালে চুমু আঁকতে যাবে,তখনি ধড়াম করে দরজায় আওয়াজ হয়।দুজনই কেঁপে উঠে।তিতলি সরে যেতে নিলে নিঝুম আরো শক্ত করে ধরে।কারণ মা-বাবা কেউ আসলে এভাবে দরজা খুলতো না।
একটা মেয়ে এসে ঢুকে রুমে।তিতলি-নিঝুমকে এতো কাছাকাছি দেখে তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নেয়। অন্যদিকে ঘুরে বলে,

— “সরি।সরি!”
নিঝুম তিতলিকে ছেড়ে হাসে।উচ্ছ্বসিত হয়ে বললো,
— “রিদি তুই?”
— “আমি কি তাকাতে পারি?”
— “ফাজিল।তাকা এদিকে।”
রিদি তাকায়।হেসে বলে,
— “তুই ও বিয়ে করে নিছিস?শুনলাম না তো।”
নিঝুম একহাতের বাহুবন্ধনে তিতলিকে টেনে আনে।খুশিতে ডগমগ হয়ে বললো,
— “হয়নি।হবে।আর এই মেয়েট তোর হবু বাচ্চা ভাবি।”

তিতলি ভারী অবাক হয়ে শুধু দেখছে।কে এই রিদি?
রিদি এগিয়ে আসে।নিঝুমের হাতে চিমটি দিয়ে বললো,
— “সত্যি!সর এখান থেকে।আমি আমার পিচ্চি ভাবির সাথে কথা বলবো।”
নিঝুম তিতলিকে বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত করে দেয়।রিদি তিতলির চিবুক ধরে মুখ উপরে তুলে ভারি উল্লাসিত গলায় বললো,
— “এমা!মেয়ের দেখি ভারি লজ্জা।লাল হয়ে গেছে একদম।”
নিঝুম ফোড়ন কাটে।

— “আমিও তাই ভেবেছিলাম।কিন্তু তারপর বুঝেছি,মেয়ে তো নয় যেনো আগুনের গোলা।”
— “কি করেছে?”
— “আর বলিস না।রেগে গেলেই কামড়াতে আসে।”
রিদি,নিঝুম দুজনই হো হো করে হেসে উঠে।তিতলি লজ্জায় নতজানু। তিতলি নিঝুমের চোখ চোখ রাখে।চোখের ইশারায় প্রশ্ন করে।মেয়েটা কে?নিঝুম খ্যাক করে গলা পরিষ্কার করে বললো,
— “তোমার ননদিনী হয়!তবে,বয়সে অবশ্য তোমার চেয়ে বড়।কিন্তু আমার চেয়ে মাত্র ছয় মাসের ছোট।’

— “কেমন ননদিনী?”
তিতলির প্রশ্ন।নিঝুম উত্তর দেওয়ার আগে, রিদি বলে উঠে,
— “চাচাতো ভাই-বোন আমরা।এবার বুঝলে?’
তিতলি হা করে তাকায়।তারপর বললো,
— “আপনার আব্বুর নাম কি আরমান চৌধুরী?”
রিদি হেসে মাথা নাড়ায়।
— “ওহ।শুনেছিলাম বাবার কাছে।আপনারা পাঁচ বোন না?”
রিদি কয়েকবার মাথা নাড়ায়।তারপর হেসে বললো,
— “বাবাহ! সবই দেখি মেয়ে জানে।”
উত্তরে তিতলি হাসে।নিঝুম আবারো ফোড়ন কাটে।
— “আমি কি কথা বলতে পারি?”
রিদি বললো,

— “হুম বল।কি বলবি?”
— “বিয়ে-টিয়ে করেছিস তো?ফ্রান্সে তো অনেক হ্যান্ডসাম ছেলে আছে।”
রিদি প্রসন্ন হাসে।বলে,
— “না রে করিনি।”
— “সেকী!বুড়ি হয়ে গেছিস তো।পরে আর কেউ করবেনা কিন্তু।”
— “না করলে আর কি করার?সবার কপালে কি সব থাকে?”
রিদির কন্ঠটা কেমন যেন লাগলো।নিঝুম-তিতলির মনটা বিষিয়ে আসে।রিদি সেটা বুঝতে পেরে।হেসে বললো,
— “এই তোরা কি রোমান্স করছিলি?”
প্রশ্ন শুনে তিতলির কান গরম হয়ে আসে।নিঝুম মাথা চুলকিয়ে বললো,
— “তেমন কিছু না।”

রিদি নিঝুমকে গাট্টা মারলো।
— “সরি!ডিস্টার্ব করার জন্য।আবার শুরু করে দে।আসছি আমি।”
রিদি ঘুরে দাঁড়ায় বের হওয়ার জন্য।তখনি নিঝুমের প্রশ্ন,
— “কে কে এসেছে?এইবার কিন্তু অনেকদিন থাকতে হবে।কত্তো বছর পর আসলি।”
— “নিচে গেলেই দেখতে পাবি।”
রিদি উঁচু গলায় বলে বের হয়ে যায়।নিঝুম তিতলির দিকে তাকায়।কাছে টেনে এনে বললো,
— “আজ মহারাণীর কি আবদার আছে?”
তিতলি উপর-নিচ মাথা নাড়ায়।নিঝুম প্রশ্ন করে,

— “কি?”
— “বাইকে ঘুরবো ।”
— “নিত্যদিনের আবদার।আচ্ছা যাবো।”
তিতলি হাসে।নিঝুম তিতলির নাকে নাক ঘষে দেয়।তখনি তিতলির চোখ পড়ে দরজায়।রিদি উঁকি দিয়ে তাকিয়ে আছে।তার চোখে অশ্রু।তিতলিকে তাকাতে দেখে চট করে সরে যায়।তিতলির বুকটা হুট করে কেঁপে উঠলো।কেন জানি অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। রিদির চাহনি অন্যরকম ছিল।তিতলি নিঝুমের দিকে তাকায়।বুকে মাথা রেখে খামচে ধরে নিঝুমের পিঠ!

বিকেলে বাইক নিয়ে ইকো পার্কে আসে ওরা।তিতলির পরনে শাড়ি।নিঝুমের শর্ত বাইক দিয়ে ঘুরতে বের হলে,অবশ্যই তিতলিকে শাড়ি পরতে হবে।সাথে খোলা চুল।দুপুরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে।যার জন্য ঘাস পিচ্ছিল হয়ে আছে।তিতলি আবদার করে টিলার উপর উঠার জন্য।কিন্তু নিঝুম দেয়নি।শাড়ি পরেছে।এখন যদি উপরে উঠতে যায় নিশ্চিত তিতলি ডিগবাজি খেয়ে পড়বে।কিন্তু তিতলি তো নাছোড়বান্দা।সে উঠবেই।
— “তিতলি, জেদ করোনা।উপরে উঠা সম্ভব নয়।”
— “আমি উঠবোই।নয়তো কাঁদবো।প্লীজ ডাক্তার।”

তিতলির নাছোড়বান্দা গলা।নিঝুম বাধ্য হয়ে গাড়ি পার্কিং করে।তিতলিকে পাঁজাকোলে তুলে নেয়।তিতলি চিৎকার করে উঠে,
— “কি করছেন!কত মানুষ!”
— “হ্যাঁ সব মানুষ ঠিকই।তবে কাপল সব।নিজেরাই প্রেম করতে আসছে।আমাদের দিকে তাকাবার সময় নেই।” পার্কে ঢুকতে ঢুকতে বললো নিঝুম।তিতলি ছোটাছুটি করে বললো,
— “উফফ!আপনি একটা কি যেন!কখনো ঘুরতে পারিনা শান্তিতে।কোলে তুলে নেন।আমি কি বাচ্চা?মানুষ কি ভাবে?মানুষ এতো নির্লজ্জ হয়!”
— “আবদার গুলো তো বাচ্চাদের মতোই করো।”
— “কথা শুনাচ্ছেন?নামান!আমি যাবোনা।”
— “চুপ!এতো তর্ক কর কেন?”

নিঝুমের মৃদু ধমকে তিতলি চুপ হয়ে যায়।তবে নাকের পাটা ফুলিয়ে ফেলে।নিঝুম অনেক কষ্টে হাসি চেপে রাখে। উপরে এসে তিতলিকে নামিয়ে দেয়।তিতলি মুখ ঘুরিয়ে দূরে গিয়ে দাঁড়ায়।নিঝুম হেসে,পিছন থেকে তিতলিকে জড়িয়ে ধরে।কাঁধে থুতনি রেখে ভারী ইনোসেন্ট গলায় বললো,
— “কামড় গুলো ফিরিয়ে দেওয়ার সময় চলে এসেছে বোধকরি।আগামী শুক্রবার বাবা চিটাগং থেকে ফিরলে।বিয়ের কথাটা বলে ফেলতে হবে।”
তিতলি ভারি অবাক হয়ে ঘুরে দাঁড়ায়।নিঝুম তিতলির কোমর পেঁচিয়ে ধরে দু’হাতে। তিতলির চোখ দু’টো খুশিতে ছলছল করছে।নিঝুম মাথা নাড়ায় হেসে। তিতলি মাথা নিচু করে হাসতে থাকে খুশিতে।তিতলি যখন লজ্জায় হাসে তখন খুব মোহনীয় লাগে তাকে।হুট করে নিঝুম বলে উঠে,

প্রজাপতি আমরা দুজন পর্ব ৩৪

— “লাজুকলতা?”
তিতলি চোখ তুলে তাকায়।নিঝুম ফিসফিসিয়ে বলে,
— “একটু চরিত্রহীন হবো?”
শোনামাত্র তিতলি বুক কেঁপে উঠলো।কোথেকে যেনো একটা উত্তাল ঢেউ এসে মনের সমস্ত ভিতরটা মুহূর্তে ওলট-পালট করে দিল।নিঝুমের কাছ থেকে ছুটে গিয়ে অন্যদিকে হাঁটা শুরু করে বললো,
— “আপনি বড্ড বেসামাল।”

প্রজাপতি আমরা দুজন পর্ব ৩৬