প্রজাপতি আমরা দুজন পর্ব ৩৬

প্রজাপতি আমরা দুজন পর্ব ৩৬
ইলমা বেহরোজ
মাথা ব্যাথার কারণে দু’টো ক্লাস রেখে তিতলি বাড়ি ফেরে।তখন বাজে দুপুর ১২ টা।নিঝুমকে এমন সময় বিরক্ত করা ঠিক হবে না।তাই আর কল করেনি।একাই চলে আসে।দরজা সাইটে রেখে যখনি ঢুকবে তখন শুনতে পায় রিদির আব্বুর গলা।উনার কণ্ঠে তিতলির নাম।তিতলি থমকে দাঁড়ায়।ড্রয়িংরুম থেকে মোহনা,মৌনতা,রোহিতা,আঞ্জুমান, আলতাফ,রিদি সবার গলা পাওয়া যাচ্ছে।আলতাফ চৌধুরী চিটাগং থেকে গতকালই ফিরেছেন।কিন্তু তিতলিকে নিয়ে রিদির আব্বু কি বলছেন? তিতলি আবার পা বাড়ায়, কিন্তু তখনি একটা কথা কানে আসে।সে থেমে যায়।
রিদির আব্বু আরমান চৌধুরী।আলতাফ চৌধুরীর বড় ভাই। আরমান চৌধুরীর বয়স ষাটের কাছাকাছি বা ষাটই!রিদি আরমান চৌধুরীর ছোট মেয়ে।খুব আদরের মেয়ে।মেয়েকে বুকে নিয়ে বলছেন,
— “আলতাফ! তোর কি আক্কেল-জ্ঞান কখনোই হবেনা?”
আলতাফ চৌধুরী হোচঁট খাওয়া গলায় বললেন,
— “কি করেছি ভাইজান?”
— “একটা জোয়ানা মেয়েরে বাসায় রেখে দিলি।আবার শুনি নয় মাস ধরে নাকি আছে।”
আরমান চৌধুরীর গলায় তেজ।
— “উহ!আব্বু, কি বলছো।’ রিদির কণ্ঠে বিরক্ত।
রিদির কথা পাত্তা না দিয়ে আবার তিনি বলে উঠেন,
— “ওই মেয়েকেও বলি কতটা নির্লজ্জ হলে অন্যের বাড়িতে এতদিন থাকা যায়?”
মোহনারা দু’বোন বিব্রতবোধ করছে।বড় চাচা কে পাত্তা না দিয়ে চলে যেতেও পারছে না।আলতাফ চৌধুরী আঞ্জুমানের দিকে তাকান।আঞ্জুমানের চোখেমুখে রাগের ছাপ।আলতাফ চৌধুরী বললো,
— “ভাইজান,মেয়েটার ঘরে সৎমা।আবার অনেক পোলা-পাইন মেয়েটার সাথে বাজে ব্যবহার করে।আমরা একসময় তাদের প্রতিবেশী ছিলাম।ওইতো চিনেন না?শাহেদের কথা মনে নেই?প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলো?আমার বন্ধুমহলের একজন।
তারই তো মেয়ে।”
আরমান চৌধুরী কয়েক মুহূর্ত চুপ থাকেন।তারপর বললো,
— “তো কি হয়েছে?”
আলতাফ চৌধুরীর মুখে হাসি ফুটেছিল।ভাইকে চুপ থাকতে দেখে।শাহেদের কথা শুনে হয়তো মন পাল্টেছে।কিন্তু,না আবারো তিনি মুখ গুমোট করলেন।আলতাফ চৌধুরী জোরপূর্বক হাসি হেসে বললো,
— “মেয়েটার গ্রামে থাকা রিস্ক ছিলো।তাই…”
কথার মাঝে বাধা দিয়ে আরমান বলেন,
— “হোস্টেল নাই সিলেট?নাকি টাকার অভাবও আছে?তোদের তো টাকা আছে, টাকা দিয়ে দিতি।”
— “ভাইজান আপনি ভুল বুঝছেন।শাহেদের জমি আছে।গ্রামের অর্ধেক জমিই শাহেদের।যা আমাদেরও নাই।শাহেদ সাদামাটা মানুষ।এজন্য….”
— “কি ভুল বুঝছি?তিন দিন হলো তোর বাড়িতে এসেছি।সারাক্ষণ দেখি,ওই মেয়ে আর তোর ছেলে নিঝুমের ঘষাঘষি।এমন অবিবাহিত মেয়েকে বাড়িতে রাখিস কোন আন্দাজে?”
আঞ্জুমান আর চুপ থাকতে পারেনি।গর্জে উঠেন,
— “আপনি বেশি বলছেন ভাইজান।তিতলি আমার ছেলের হবু বউ।সে আমাদের বাড়িতে থাকতেই পারে। আর তিতলি অনেকবার চেয়েছে চলে যেতে হোস্টেলে।আমরা যেতে দেইনি।জোর করে রেখেছি।নিজের বাড়ির বউকে হোস্টেলে তো থাকতে দিতে পারি না।আমার নিঝুমের বউ ও।”
— “হা চাচ্চু।তিতলি অনেকবার চলে যেতে চেয়েছে আমরা যেতে দেইনি।আমদের কথা রাখতে গিয়েই ও থেকেছে।এবং থাকছে।”
মৌনতা মায়ের সাথে তাল মেলায়।
— “তাহলে তো দোষ তোমাদেরই।আটকে রাখার কি প্রয়োজন? হবু বউ তো কি? বিয়েতো হয়নি?নাকি?সারাক্ষণ নিঝুম আর সে ঘেঁষাঘেঁষি করে তোমাদের নজরে পড়ে না?”
— “আপনার সমস্যা কি তিতলিকে নিয়ে বলবেন?”
আঞ্জুমানের গলায় তেজ ভয়ংকর।আলতাফ চৌধুরী আঞ্জুমানের শাড়ির আঁচল টেনে ধরেন।ইশারায় চুপ করতে বলেন।আরমান চৌধুরীর চোখ গরম হয়ে এসেছে।কখনো তার সাথে কেউ চোখে চোখ রেখে কথা বলেনি।আর আজ!আঞ্জুমান শান্ত হন।মাথা নিচু করে বললেন,
— “মাফ করবেন ভাইজান।আমার হবু ছেলের বউকে নিয়ে নিন্দা হজম হচ্ছিলো না।”
জবাবে আরমান চৌধুরী চুপ।মৌনতারা উঠে উপরে চলে যায়।রোহি নীরব দর্শক ছিল।অনেক কিছু বলতে গিয়েও বলেনি।এই বাড়িতে বড়দের সাথে তর্ক করা নিষেধ। নির্জন হলে অন্য কথা।সেও উপরে চলে যায়।আঞ্জুমান কতক্ষণ চুপ থেকে নিজের রুমে দিকে যান।বাকি রইল রিদি,আরমান, আলতাফ দুই ভাই।আলতাফ চৌধুরী ভাইয়ের পাশে এসে বসেন।রিদি বললো,,
— “আব্বু এমনটা না করলেও পারতে।”
— “কি করেছি আমি? ঠিকই তো করেছি।তিতলি মেয়েটা ইচ্ছে করেই এখানে থাকে।টাকা দেখেছো তো এতো।কেউ জোর করলেই কি থাকতে হবে নাকি?এতেই বুঝা যায় কে কেমন!”
আলতাফ কথা বলতে গিয়েও বলেননি।ভাইয়ের রাগ দেখে।উঠে চলে আসেন রুমে।তিতলি অনেকক্ষণ ধরে চাপা কান্নায় ডুবে আছে।এক হাত দিয়ে মুখ চেপে রেখেছে।খুব কান্না পাচ্ছে তাঁর এবং কাঁদছেও।চোখের পানি মুছে।নিজেকে স্বাভাবিক করে পা বাড়ায় সামনে।রিদি দেখতে পায়!একটু থমকায় তারপর হেসে বললো,
— “আরে তিতলি যে।এত জলদি আজ?”
তিতলি অপ্রস্তুত হাসে।বললো,
— “মাথা ব্যাথা ছিলো তাই চলে এসেছি।”
— “ওহ।আচ্ছা।”
তিতলি দ্রুত পা ফেলে উপরে উঠে আসে।রিদি তাঁর আব্বুকে বললো,
— “কিছু শুনেছে নাকি কে জানে!”
— “শুনলেই কি।”
— “এভাবে সবার সামনে না বললেও পারতে।”
— “তুই আমার মেয়ে হয়েও এতো ভালো কেমনে হলি?”
— “কেনো তুমি কি ভালো না নাকি?তুমি তো আমার বেস্ট আব্বু।”
আরমান চৌধুরী হেসে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরেন।চোখের সামনে ভেসে উঠে গতকাল রাতের দৃশ্য।রাত তখন ১২ টা।রিদি নিচ তলার একটা রুমে ছিল।আরমান চৌধুরী মেয়ের রুমে এসেছিলেন দরকারে। এসে দেখেন মেয়ে তার কাঁদছে।পাগলের মতো কাঁদছে।তিনি দৌড়ে এসে মেয়েকে জড়িয়ে ধরেন।বলেন,
— “কি হইছে আম্মু?”
— “আব্বু, নিঝুম এখনো আমার হাতের বাইরে।আমার নাগালের বাইরে।এতোদিনের অপেক্ষা শেষ হয়ে গেল।”
— “নিশাকে তো ছেড়ে দিয়েছে শুনলাম।’
— “নিশাকে ছেড়েছে ঠিকই।কিন্তু এখন আরেকজনকে ভালবাসে আব্বু।খুব বেশি বাসে।আমার সাথে কেন এমন হয় আব্বু?”
আরমান চৌধুরীর বুক ধ্বক করে উঠে।অনেকদিন পর মেয়ে তার হেসেছে।ফ্রান্স থেকে দেশে এসেছে নিঝুমকে বিয়ে করবে বলে,আর কি শুনেন এসব!
— “আব্বু আমার খুব কষ্ট হচ্ছে আব্বু।”
রিদি আর্তনাদ করতে থাকে।রিদির একেকটা চোখের ফোঁটা আরমানের বুক থেকে একেক ফোঁটা রক্ত ঝরানোর সমান।তিনি নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে প্রশ্ন করেন,
— “মেয়েটা কে?”
— “তিতলি।” রিদির গলা কাঁপছে।
— “এখানে থাকে যে,ফর্সা মেয়েটা?”
রিদি মাথা নাড়ায়।তারপরই দ্রুত জল মুছে ম্লান হেসে উঠে,
— “থাক আব্বু।নিঝুম সুখে থাকলেই হবে।নিঝুম যাকে ভালবাসে তারই থাকুক।আমি আমার বাবার সাথেই ভালো আছি।”
আরমান চৌধুরী মেয়েকে জড়িয়ে ধরেন।ভেবে পাচ্ছেন না কি করা উচিৎ?বড় চার মেয়ের তুলনায় এই মেয়েটাকেই যে বেশি ভালবাসেন।সেই ষোল বছর থেকে নিঝুমের জন্য পাগল।তিনি জানতেন না।যখন নিঝুমের সাথে নিশার একটা সম্পর্ক হয় তখন রিদি হাত কাটে।আরমানের চাপে সেদিন রিদি বলে মনের সব কথা।মা নেই, বাবাই তার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল।এরপরই চলে যায় ফ্রান্স। রিদি জোর করে কিছু চায় নি।নিঝুমকে ত্যাগ করেছিল।
তিতলি রুমে এসে ফোঁপাতে ফোঁপাতে ব্যাগ গুছায়।তারপর বেরিয়ে আসে রুম থেকে।ড্রয়িং রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় রিদি আর তার আব্বু দেখতে পায়।রিদি আঁতকে উঠল।প্রশ্ন করে,
— “তিতলি? কই যাচ্ছো?’
তিতলি নির্লিপ্ত ভাবে জবাব দেয়,
— “জানিনা আপু।”
টুনি রান্নাঘর থেকে দৌড়ে আসে।
— “কই যান আফা।”
তিতলি প্রসান্ন হেসে বললো,
— “ফুফি আম্মাকে বলিস টুনি চলে যাচ্ছি।মাঝে মাঝে দেখতে আসবো।”
— “কই যাবেন আফা?” টুনির উৎকণ্ঠা।
তিতলি জবাব না দিয়ে বেরিয়ে পড়ে।রিদি নির্বাক।ততক্ষণে সে বুঝে গেছে,তিতলি সব শুনেছে।বাপের চোখে চোখ রাখে অসহায় দৃষ্টিতে।টুনি চেঁচিয়ে আঞ্জুমানকে ডাকতে ডাকতে তিতলি রোডে এসে রিক্সায় উঠে পড়ে।
ভার্সিটিতে যখন প্রথম দিন আসে তিতলি।অনেক মেয়ে বন্ধু হয়।তার মধ্যে একটা মেয়ের সাথে খুব ভাব হয়।মেয়েটা হোস্টেলে থাকে।নাম শান্তা।শান্তার সাথে অনেকবার হোস্টেলে এসেছিল।তাই তিতলি চিনে হোস্টেলটা।সেখানেই চলে আসে।প্রত্যেক মাসে তিতলির আব্বু ছয় হাজার করে টাকা পাঠান।কিন্তু কখনো প্রয়োজন পড়েনি।নিঝুম প্রয়োজন পড়তেই দেয়নি।তিতলি যতবারই বলে, আমার টাকা আছে তো।নিঝুমের তখন এক কথা,
— “তোমার এতো সাহস কি করে হয়?আমাকে টাকা দেখাও?”
নিঝুমের ধমকের সামনে তিতলি বরাবরই বিড়াল।নিঝুম সব টাকা তিতলির নামে জমা করতে বলেছে।তিতলিও জমা করেছে।হাতে এক হাজার টাকা ভাংতি ছিলো।চল্লিশ টাকা ভাড়া দিয়ে শান্তার হোস্টেলে চলে আসে।আসার পথেও কেঁদেছে খুব।
শান্তা দরিদ্র ঘরের মেয়ে।এক রুমে চার বেড।রুমের সবগুলো মেয়েয়ই দরিদ্র ঘরের।তিতলি দরজায় এসে কড়াঘাত করতেই একটা মেয়ে দরজা খুলে।পরনে তার টি-শার্ট আর হাফ প্যান্ট টাইপ কিছু।তিতলিকে দেখে বললো,
— “শান্তার ফ্রেন্ড রাইট?”
তিতলি হেসে মাথা নাড়ায়।শান্তা রান্না করছিলো।রুমে যার যার রান্না সে করে।’শান্তার ফ্রেন্ড রাইট?’ কথাটা শুনে দৌড়ে আসে।দরজার বাইরে তিতলিকে ব্যাগ হাতে দেখে ভারী অবাক হয়।
— “কিরে হাতে ব্যাগ কেন?”
— “আগেতো ঢুকতে দিবি নাকি?”
দরজার সামনে থেকে শান্তা সরে দাঁড়ায়।তিতলি ভেতরে ঢুকে।টি-শার্ট  পরা মেয়েটা দরজা লাগিয়ে দেয়।শান্তা তিতলিকে নিয়ে নিজের বিছানায় বসায়।উত্তেজিত হয়ে বললো,
— “এবার বল? কি হইছে?ভাইয়ার সাথে ভেজাল?”
— “কি হবে? আর তোর ভাইয়া তার তিতলির সাথে কখনো ভেজাল করবে না।এমনি হোস্টেলে থাকতে আসছি।একটু দেখতো বিল্ডিংয়ে কোনো রুম বা বেড খালি আছে নাকি।”
তিতলি চুল খোঁপা করতে করতে বললো।শান্তার চোখ যেন কোটর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলো।ভারি অবাক কণ্ঠে বললো,
— “কি কস বাল? তুই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে হোস্টেলে আসতে গেলি কেন?”
তিতলি চোখা চোখে তাকায়।বললো,
— “বিয়ে হইছে আমার? আগে হউক।তারপর গিয়া থাকুমনে।”
— “সুখে থাকতে ভূতে কিলায়।এরেই বলে।”
তিতলি জোরে হেসে উঠে।বললো,
— “একটু দেখ না।প্লীজ।”
— “টাকা আছেনি সাথে?”
— “না।তবে,ব্যাংকে গেলেই টাকা পামু।”
— “কোন ব্যাংক?”
— “ডাচ বাংলা হবে।”
— “হবে? শিওর না?”
— “শিওর।” তিতলি হাসি মুখে বললো।
— “আচ্ছা।অপেক্ষা কর একটু।জামাটা পাল্টে  আসি।’
— “যা।”
শান্তা চানাচুর দিয়ে মুড়ি মাখিয়ে তিতলির সামনে রাখে।বললো,
—” চিবা।আমি ততক্ষণে রেডি হই।”
রুমে উপস্থিত আরো তিনজন মেয়ের সাথে খোশ গল্পে মেতে উঠে তিতলি।সাথে চানাচুর মাখা মুড়ি।
কিছুক্ষণ পরই শান্তা রেডি হয়ে চলে আসে।তিতলিকে প্রশ্ন করলো,
— “কই যাবি?”
— “ব্যাংকে!”
— “একাউন্ট আছেনি?”
— “একাউন্ট না থাকলে বলছি?”
— “কোন ডাচ বাংলা?”
— “উপশহরের।”
— “মেলা দূর।এখন যাওয়ার দরকার নাই তাইলে।”
— “কি কস।রুম নিমুনা?”
— “হ নিমু।নিচ তলায় ম্যাডামরে দেখছস নি?”
— “হ।দেখছি।”
— “আয়।”
— “এডভান্স লাগব না?”
— “ম্যানেজ করে নিমু।তুই আয়।”
দুজন সিঁড়ি ভেঙ্গে নামতে নামতে গল্প করে হোস্টেল নিয়ে।শান্তা বলছে,
— “পাঁচ তলায় রুম খালি আছে মেবি।”
— “এতো উপরে।” তিতলির কণ্ঠ।
— “হ।আর খালি নাই মনে হয়।ভার্সিটির সব মাইয়াই তো এই হোস্টেলে থাকে।”
তিতলি চুপ।শান্তার পাল্টা প্রশ্ন।
— “কয় রুম লইবি?”
— “দুই রুম নে।”
— “দুই রুম দিয়া কিতা করবি?”
— “তুই আমার সাথে থাকবি।”
শান্তা অবাক চাহনিতে তাকায়।তিতলি শান্তার হাতে হাত রেখে হাসে।বললো,
— “না করিস না।আমি পাঁচ তলায় একা থাকতে পারব না।”