প্রজাপতি আমরা দুজন পর্ব ৩

প্রজাপতি আমরা দুজন পর্ব ৩
ইলমা বেহরোজ

আস্তে করে দরজা ঠেলে তিতলি উঁকি দেয় রুমের ভেতর।প্রথমেই চোখের সামনে ভেসে উঠে মেহগনি উডেন ডাবল সাইড বেড।মানুষ কোথায়?চোখ ঘুরিয়ে ডান পাশে তাকাতেই সাদা এক জোড়া বল সোফা দেখতে পায়।সেখানে আধাশোয়া হয়ে আছে নিঝুম।থ্রী কোয়াটার প্যান্ট আর টি-শার্ট পরা।বুকের উপর ল্যাপটপ।মুখের এক পাশ দরজার দিকে।পুরো মুখ বোঝা যাচ্ছে না।তিতলি ঢোক গিলে ইতস্ততভাবে বলল,

— “ভাইয়া আসবো?”
নিঝুম মাথা ঘুরিয়ে তাকায়।তিতলিকে দেখে সোফা থেকে পা নামিয়ে হেসে বললো,
— “আরে তিতলি!ভেতরে আসো।”
তিতলি নিঝুমকে দেখে যতটা না অবাক হয় তার চেয়েও বেশি বিস্মিত হয় নিঝুমের গালে গর্ত হওয়া দেখে!মাথা চক্কর দিয়ে উঠে।এখানে তো আরেকটা ভাইয়ের থাকার কথা ছিল।আর মোহনা বললো,নির্জন ভাইয়া গার্লফ্রেন্ডের কাছে গেছে আর নিঝুম ভাইয়া রুমে।কিন্তু গার্লফ্রেন্ড তো এই ভাইয়ার আছে শুনছিল।তিতলি ভাবে,আমি ভুল শুনলাম নাকি মোহনা আপু বলতে চেয়েছিল নিঝুম ভাইয়া গার্লফ্রেন্ডের কাছে গেছে আর নির্জন ভাইয়া রুমে।দুই ভাইয়েরই হয়তো গার্লফ্রেন্ড আছে।
তিতলি কি হলো কে জানে, হিঁচকি উঠার আগেই দ্রুত হেঁটে এগিয়ে আসে।নিঝুমের সামনে থাকা গ্লাস থেকে ঢকঢক করে পানি খেয়ে প্রাণভরে শ্বাস নেয়।নিঝুম শান্তভাবে ব্যাপারটা খেয়াল করে।তার মধ্যে কোনো ভাবভঙ্গী নেই।নিঝুম যেনো সব কিছু শান্ত ভাবে নেওয়ার অসীম ক্ষমতা নিয়ে দুনিয়াতে এসেছে।
তিতলি যখন বুঝতে পারে সে অভদ্রতা করে ফেলেছে।নিজেকে মনে মনে প্রচুর গালি দেয়।এরপর মাথা নামিয়ে থেমে থেমে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

— “স-রি ভা-ইয়া!”
নিঝুম হাসলো।বললো,
— “ইটস ওকে!বসো।” নিঝুম সোফা থেকে উঠে তিতলিকে বসতে বলে।
তিতলি উত্তেজিত হয়ে বললো,
— “না না ভাইয়া।কি করছেন? বসেন আপনি।”
— “তুমি আমার ঘরে অতিথি হয়ে এসেছো।এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেমন না ব্যাপারটা?আমি কিন্তু অতিথির ব্যাপারে খুব সিরিয়াস!”
— “সোফা তো দুটো।আপনি যেখানে ছিলেন সেখানেই বসেন।আমি পাশেরটাই বসছি।”
সোফায় বসতে বসতে বললো নিঝুম,
— “খুব জেদী তো তুমি!বসিয়েই ছাড়লে।”
চুল কানে গুঁজে উত্তরে হাসলো তিতলি।নিঝুম বললো,
— “তো কী মনে করে?’

তিতলি অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে নিঝুমের প্রশ্নে!বড় বড় চোখ করে তাকায়।কি বলবে এখন?এতো নার্ভাস ফিল হচ্ছে যে মিথ্যা কথাও সাজানো যাচ্ছেনা।তিতলি দু’তিনবার ঢোক গিলে।নিঝুম উৎসাহ নিয়ে তাকায়।প্রশ্ন করে,
— “তুমি সবসময় এতো ঢোক গিলো কেনো?ভয় পাচ্ছো আমাকে?”
তিতলি নিশ্চুপ। নিঝুমের দিকে তাকালেই চোখে চোখ পড়ছে। যতবার চোখ পড়ছে কথা হারিয়ে যাচ্ছে।কথাই যখন মজুদ নেই।কি বলবে সে?কি উত্তর দিবে?
তিতলিকে চুপ থাকতে দেখে নিঝুম মাথা নামিয়ে এক দফা নিঃশব্দে হেসে নেয়।এমন অদ্ভুত মেয়ে প্রথম দেখছে সে।দেখে মনে হয় সারাক্ষণ কোনো আতঙ্কে আছে।নিঝুমকে হাসতে দেখে তিতলির ঠোঁট দু’টো মৃদু হাসিতে মাতে।এই নিয়ে দু’বার দেখা হলেও সে নিঝুমের হাসি দেখে খুন হয়েছে বার বার।এইযে বার বার চশমাটা ঠিক করে এতেও ছন্দ খুঁজে পায় তিতলি।
তিতলি তখনো থ’ মেরে বসে আছে।নিঝুম অভিজ্ঞ চোখে তিতলির ভয়ার্ত মুখটা দেখে কিছু একটা ভাবে।এরপর বলে,

— “কিছু বলবেনা?আচ্ছা বসে থাকো। আমার রুম দেখো।আমি আমার কাজ করি।”
রুমের এক পাশের পুরো দেয়াল জুড়ে বুকশেলফ।নিঝুম বুকসেলফের সামনে এসে দাঁড়ায়।একবার ঘুরে তিতলিকে দেখে, মেয়েটা হাত চুলকাচ্ছে।উশখুস করছে।অল্প বয়সীদের মন কখন কি চায় নিজেও জানে না। ছন্নছাড়া।এই বয়সটা নিঝুম পার করে এসেছে।তাই আর এদিক তাকায়নি।বুকশেলফের উপরের কর্ণের বইগুলা অগোছালো। নিঝুম সেগুলো ঠিক করতে থাকে।

তিতলির নিজেকে ছোট মনে হতে থাকে।এভাবে চুপ থাকার কি কোনো মানে আছে? কি ভাবছেন উনি?কিন্তু মুখও তো খুলছেনা।জড়তা এসে ভর করেছে মুখে, শরীরে।মুখ নড়ছেনা, শরীরও চাইছেনা নিঝুমের রুম থেকে বের হয়ে যেতে।তাহলে কি একটা পর পুরুষের রুমে সারাক্ষণ বসে থাকা যাবে?কোনোভাবেই না।কিন্তু নিজের আত্মসম্মান বলে একটা কথা আছে।তিতলি সোফা থেকে উঠে দাঁড়ায়।নিঝুমকে ডাকে,

— “ভাইয়া?আমি তাহলে যাই।”
নিঝুম এগিয়ে এসে বলে,
— “এখুনি চলে যাবে?কেনো আসছিলে বললেই তো না।”
— “এমনি ভাইয়া।আপুরা বাড়ি নেই।ভালো লাগছিলোনা।তাই বাড়িটা ঘুরে দেখছিলাম।”
— “আচ্ছা।কিন্তু বসো।কিছু খেয়ে তো যাও।চা নাকি কফি”
— “না ভাইয়া।ওসব লাগবেনা।আপনার কষ্ট করে নিচ’তলায় যেতে হবেনা।আমার ইচ্ছে হলে গিয়ে খেয়ে নিবো।”
— “নিচ’তলায় কে যাবে?আর নিচ’তলার রান্নাঘর থেকে খাবে নাকি খাবেনা ওটা তোমার ব্যাপার।আমার রুমে আসছো।আমার বানানো কফি খেয়ে যাও।”
— “নিচ’তলায় না গেলে কফি কই থেকে আনবেন?”
নিঝুম হেসে বলে,

— “ম্যাজিক।বসো।আসছি।”
নিঝুম দেয়ালে ঝুলানো জর্জেট ডাবল পার্ট পর্দা দু’হাতে সরিয়ে হারিয়ে যায়।তিতলি এতক্ষণ এটাকে দেয়াল ভেবেছে।যখন নিঝুম পর্দা সরালো কাচের আরেকটা দরজা চোখে পড়ে।তিতলি রুমটা দেখতে থাকে চোখ ঘুরিয়ে।বেডের ডান পাশে ছোট রাউন্ড শেলফ।বাম পাশে কনসোল টেবিল।যার উপর মাটির টব।টবের ফুলটা জীবন্ত মনে হচ্ছে।প্রতিদিন হয়তো ফুল চেঞ্জ করা হয়।কি শৌখিন একটা মানুষ।এছাড়া রুমে আছে মেহগনি উডেন স্লাইডিং ডোর আলমারি, ফোল্ডিং হ্যাঙ্গার, শু র‍্যাক। সবকিছুই সুন্দর।রুম ভর্তি আসবাবপত্রে। তবুও রুমটা বড় মনে হচ্ছে।চারদিকে জর্জেট ডাবল পার্ট পর্দা।পর্দাগুলো মৃদু দুলছে।একটা ব্যলকনি চোখে পড়ে। আগ্রহ জমলেও সেদিকে যায় না।বিছানার উপর চোখ পড়ে।বিছানায় কালো একটা ডায়রি, খুব ছোট।কারো ব্যক্তিগত কিছু তিতলি কখনো ধরেনি।একবার ভুলে চোখ পড়লেও আরেকবার তাকায়না।কিন্তু এখন তীব্র ইচ্ছা হচ্ছে ডায়রীটা খুলে দেখতে।তিতলি হাত বাড়িয়ে আবার সরিয়ে নেয়।
নিঝুম কফি নিয়ে আসে।তিতলির হাতে দেয়।তিতলি প্রশ্ন করে,

— “রান্নাঘর আছে?”
— “হুম।”
— “আপনি রেঁধে খান কেনো?আলাদা থাকেন পরিবার থেকে?”
— “না একসাথেই।তবে আমার রুমে কেউ আসলে তাকে রেঁধে খাওয়াই।অতিথি আসলে তাকে বাড়ির অতিথি বলা হয়।আর আমার রুমে আসলে তাকে রুমের অতিথি হতে হয়।”
তিতলি হাসে।নিঝুম বলে,
— “আছোই তো।একদিন সারাদিনের জন্য এসো সময় করে।বিরিয়ানি রেঁধে খাওয়াবো।”
তিতলি উৎসাহ নিয়ে বলে,
— “বাবাহ,বিরিয়ানি রাঁধতেও জানেন!আর কি পারেন রাঁধতে?”
— “সবই পারি।মাছ কাটা ছাড়া!”
— “আচ্ছা আসবো একদিন সারাদিনের জন্য।”
— ”হুম এসো।”
তিতলি কফিতে চুমুক দিয়ে বুঝতে পারে স্বাদটা অসাধারণ।সে অনেকবারই কফি খেয়েছে তবে এটার আলাদা স্বাদ মনে হচ্ছে।তিতলি প্রশ্ন করার আগে নিঝুম প্রশ্ন করে,

— “কফির স্বাদটা কেমন তিতলি?অন্যরকম মনে হচ্ছে না?”
— ”জ্বি ভাইয়া।আর অসাধারণ!”
— “আমার এক ফ্রেন্ড কানাডা থাকে।ও পাঠিয়েছে আমার জন্য।আমার ফেভারিট খুব এটা।কয়েক মাস পর পরই পাঠায়।”
— “এজন্যই এতো ইউনিক একটা স্বাদ।ভালো লাগছে খুব।”
— “যখন ইচ্ছে হয় চলে এসো।কানাডার কফির স্বাদ নিতে।”
— “আচ্ছা ভাইয়া।”
তিতলি মনে মনে ভাবছে,ছেলে মানুষ এতো কিছু পারে।খাওয়ার প্রতি ঝোঁক আছে বোধহয়।এরিমধ্যে নিঝুম বললো,
— ”বুঝলে তিতলি, আমি খুবই পেটুক।তাই রান্নাটা শিখে নিয়েছি।বউ কখনো রাগ করে বাপের বাড়ি চলে গেলে বা রাগ করে না রাঁধলে যাতে নিজে রেঁধে খেতে পারি।”
তিতলি খিলখিল করে হেসে উঠলো।তাল মিলিয়ে নিঝুমও হাসে।তবে সে হাসির শব্দ নেই।অন্যদিকে তিতলির হাসি ঘর কাঁপানো।

— “আপনার রুমে অনেক বই দেখছি।সবই ডাক্তারি বই?”
— ”না! ডাক্তার হলে কি ডাক্তারি বইই থাকবে?বেশিরভাগই উপন্যাস।”
— “আমি খুব ভালবাসি উপন্যাস পড়তে।তবে সুযোগের অভাবে খুব কম পড়া হয়েছে ।”
— “কার কার উপন্যাস পড়া হয়েছে?”
— “হূমায়েন, জহির আর জাফর ইকবালের সব বই পড়া শেষ।”
— ”বাহ! অনেকেই তো পড়েছো।তোমার ভর্তি এক্সাম তো পরের সপ্তাহের শেষ দিকে। এক্সামের পর আমার শেলফ থেকে উপন্যাস নিয়ে পড়তে পারো।”
— “থ্যাংকস ভাইয়া।আমি অবশ্যই নিয়ে পড়বো।এতো বই দেখে রীতিমতো নেশা ধরে যাচ্ছে।”
নিঝুম হেসে বললো,
— ” বই পড়ুয়ারা এমনই। এরা অনেক বই একসাথে দেখলে আত্মহারা হয়ে পড়ে।”
কফি শেষ।তিতলি বিরক্ত হয় খুব।এতো জলদি শেষ হতে হলো!
না চাইতেও তিতলির বলতে হয়,

— “আজ আসি ভাইয়া।”
— “চলে যাবে? আচ্ছা যাও।”
তিতলি কফির মগটা সেন্টার টেবিলে রেখে উঠে দাঁড়ায়।নিঝুম হাতের ইশারায় থামতে বলে।তিতলি কৌতূহল নিয়ে দাঁড়ায়।তিন ইঞ্চি পিছনে দেয়াল।নিঝুম বিছানায় বসা ছিল।বিছানা থেকে নেমে তিতলির দিকে আসতে থাকে।তিতলি কথা বলতে নিলে নিঝুম আঙ্গুলের ইশারায় ‘শিসসসস’ বলে।তিতলি থতমত খেয়ে যায়।নিঝুমের চোখের দিকে তাকায়।নিঝুমের দৃষ্টি পেছনের দেয়ালে মনে হলো।তিতলি ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকাতে নিলে নিঝুম তিতলির মাথা দু’হাতে ধরে ইঙ্গিতে চুপ থাকতে বলে।এরপর তিতলির উপর দিয়ে নিঝুম সাবধানে দেয়ালে হাত বাড়ায় প্রজাপতিটা ধরতে।নিঝুমের বুকে তিতলির মাথা ঠেকে।এতোটা কাছে!তিতলির আবেগী মন নিতে পারেনি।অন্তরের গভীর অন্তরস্থল থেকে নিঃশ্বাস বেরিয়ে আসে।নিঝুম সরতেই তিতলি হন্তদন্ত হয়ে ‘আসি’ বলে ব্যস্ত পায়ে রুম থেকে বেরিয়ে পড়ে।নিঝুম আকস্মিক তিতলি চলে যাওয়াটা দেখে কিছু একটা ভাবে।এরপর আলমারি থেকে ক্যামেরা নিয়ে সুইমিংপুল আসে।প্রজাপতির সাথে সুইমিংপুলের ফটোগ্রাফি করার জন্য,বিগত কয়দিন ধরেই প্রজাপতি খুঁজছিল।

রুমে এসে দরজা লাগিয়ে ঝিম মেরে কতক্ষণ বসে থাকে তিতলি।বুকে যেনো হাতুড়ি পেটাচ্ছে কেউ।হৃদপিন্ড লাফাচ্ছে দ্রুত গতিতে।সে নিজেকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে।হাঁপড়ের মতো উঠা-নামা করছে বুক।ঠোঁট শুকিয়ে কাঠ।দরজায় কড়াঘাত করে টুনি।তিতলি ঢোক গিলে দরজা খুলে।টুনি বলে,

— “খালাম্মায় ডাকে।”
— “আসছি।”
টুনি চলে যেতে চাইলে তিতলি ডাকে,
— “শুনো?”
— “জ্বে?”
তিতলি চোখের দৃষ্টি অস্থির রেখে প্রশ্ন করে,
— “সকালে যে দেখা হলো একটা ভাইয়ার সাথে। ওই যে ড্রয়িংরুমে।নাম কি উনার?”
টুনি সরু চোখে তাকায়।এরপর কাঠ কাঠ গলায় প্রশ্ন করে,
— ” ক্যান কিতা করবাইন?”
তিতলি ভয় পেয়ে যায়।এভাবে একটা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের নাম জানার জন্য প্রশ্ন করা কি ঠিক হলো? টুনি খারাপ কিছু ভাবছে না তো।তিতলি আমতা আমতা করে বলে,
— “এমনি।”
— “নির্জন ভাইজান আছিলো।”
তিতলি জোরপূর্বক হেসে ধন্যবাদ জানায়।টুনি চলে যায়।তিতলি দ্রুত দরজা লাগিয়ে সানজুকে কল করে।তাঁর কলেজ ফ্রেন্ড।
দু’বার কলের সময় ওপাশ থেকে সানজুর গলা পাওয়া যায়,

— “হ্যালো, তিতলি?’
— “হুম আমি।কেমন আছিস?”
— “ভালো না।তোদের খুব মিস করি।সবাই কেমন আলাদা হয়ে গেছি।”
— “আমিও রে।”
— “কই আছিস এখন?”
— “সিলেট আছি।তোদের বলছিলামনা সিলেট আমার এক ফুফি আছে? উনার কাছে।”
— “ওইখানেই ভর্তি হবি?”
— “হুম,আচ্ছা শোন?”
— “ইম্পোরটেন্ট কিছু বলবি মনে হচ্ছে।”
তিতলির কণ্ঠনালি স্তব্ধ হয়ে যায়।লজ্জায় গাল হয় লাল। খ্যাক করে গলা পরিষ্কার করে। সাহস নিয়ে চোখ বুজে প্রশ্ন করে,
— “প্রথম দেখাতে কারো প্রেমে পড়া যায় দোস্ত?”
ওপাশ থেকে বিকট চিৎকার ভেসে আসে,
— “তুইইইই প্রেমে পড়েছিসস!! ইয়া আল্লাহ।”
তিতলি দ্রুত ফোন কানের চেয়ে দূরত্বে নেয়।এরপর ধমকে বলে,

প্রজাপতি আমরা দুজন পর্ব ২

— “কান ফাটিয়ে দিছিস তো।”
সানজু ফিক করে হেসে দেয়। এরপর বলে,
— “অবশ্যই হয়।কান্দিপাড়ার মিলি আপুরে প্রথম দেখাতেই না আজম ভাই প্রেমে পড়ছিল।এরপরদিনই বিয়ের প্রপোজাল।বিয়েডাও হয়ে গেলো।”
তিতলি নখ কামড়ে ছোট করে বলে,
— “ওহ।”
— “দোস্ত আমার তোরে সামনে থেকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে।তুই কোন সৌভাগ্যবানের প্রেমে পড়ছস!আল্লাহ!আমার খুশিতে দম ফেটে যাচ্ছে।”

সানজু হেসেই চলেছে।তিতলি বলে,
— “ফাজিল ফোন রাখ।”
— “এই না,না। নামটা তো বল? আর পিক সেন্ড কর মেসেঞ্জারে প্লীজ!”
— “পিক নাই।নাম নির্জন।ডাক্তার নির্জন।”

প্রজাপতি আমরা দুজন পর্ব ৪