প্রণয়াসক্ত পূর্ণিমা সিজন ২ পর্ব ৯

প্রণয়াসক্ত পূর্ণিমা সিজন ২ পর্ব ৯
Writer Mahfuza Akter

সারারাতের একটানা বর্ষণে ধরণী এখনও সিক্ত। সকাল সকাল বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমে এসেছে। ফজরের ওয়াক্তে ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায় করেছে তরী। এর পরপরই পড়তে বসে এখনো পড়ার টেবিল থেকে ওঠেনি। আফনাদ হক বাসায় না থাকায় এখন তরীর ওপর ঘরের কাজের হুকুম চালানো পুনরায় শুরু করে দিয়েছে মোহনা। সকালে ঘুম থেকে উঠেই প্রতিদিনের মতো ডাকাডাকি শুরু করলো মোহনা,

“তরী! মহারাণীর ঘুম কি এখনো ভাঙেনি? নাস্তা বানাবি কখন?”
তরী হতাশার নিঃশ্বাস ফেলে পড়ার টেবিল থেকে উঠে দাঁড়ালো। দ্রুত গলায় জবাব দিলো,
“এখনি আসছি, মা!”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বইপত্র গুছিয়ে রান্নাঘরের কাছাকাছি যেতেই তরী দেখতে পেল, মোহনা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে। মোহনার চোখে মুখে মাত্রাতিরিক্ত উচ্ছ্বাস স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তরী ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে নাস্তা বানানোর কাজে হাত লাগালো। মোহনা বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে ফোন রাখলো। পেছন ঘুরে তরীকে নীরবে কাজ করতে দেখে বললো,

“নাস্তা বানানো শেষ হলে দুপুরের রান্নার তোড়জোড় শুরু করে দিবি।”
তরী অবাক হয়ে বললো, “এতো তাড়াতাড়ি!”
মোহনা বেশ বিরক্ত হলো। তরীর দিকে রোষিত চোখে তাকিয়ে বললো,
“যা বলেছি, সেটা কর! কী কী রান্না করতে হবে বলে দিচ্ছি। আমার বোন আর অর্ণব আসছে আজ। একটু আয়োজন তো করতেই হবে!”

তরী চমকে উঠলো। অর্ণব আজ তার মাকে নিয়ে কেন আসছে? আর মোহনা-ই বা এতো আয়োজন কেন করতে চাইছে? কই? আগে তো অর্ণব আর তার মা এলে মোহনাকে এমন উচ্ছ্বসিত দেখাতো না!

বৃষ্টির দিনগুলো প্রহরের প্রহরের প্রচন্ড অপছন্দ। ক্লাস তো তার রুটিনমাফিক নিতেই হয়! কিন্তু স্টুডেন্টদের উপস্থিতি থাকে একেবারেই নগন্য। সে কষ্ট করে ক্লাস নেয়, আর স্টুডেন্টদের সংখ্যা কম হলে ব্যাপারটা অত্যন্ত হতাশাজনক মনে হয় প্রহরের। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ক্লাস শেষ করে বিরস মুখে নিজের রুমের দিকে চলে গেল সে। চলার পথে আশেপাশে থাকা অনেকগুলো মেয়েলি দৃষ্টি তার ওপরই নিবদ্ধ, সেটা সে বেশ বুঝতে পারছে! এ আর নতুন কী? ভার্সিটিতে জয়েন করার পর থেকেই এসব দেখে আসছে প্রহর। আগে বেশ অস্বস্তি লাগলেও ব্যাপারটা এখন একেবারেই স্বাভাবিক ও অমূলক মনে হয় তার।

রুমে প্রবেশ করতেই প্রহরের ভ্রুদ্বয় একত্রিত হয়ে গেল। তার টেবিলের পাশের চেয়ারে বসে মুখে লম্বাচওড়া এক হাসি ঝুলিয়ে তারই দিকে তাকিয়ে আছে মুগ্ধ। প্রহর অবাক চোখে তাকিয়ে বললো,
“তুই? এখানে কী করছিস?”
মুগ্ধ হাসি হাসি মুখে বললো,

“ভাইয়া!!! তোর ছোট ভাই আমি। অবশ্যই তোর সাথে দেখা করতে আসতেই পারি।”
প্রহর ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। নিজের চেয়ারে গিয়ে বসলো। মুগ্ধ মুখোমুখি তাকিয়ে বললো,
“দেখ, ভাই! এই মাসটা আমাকে জ্বালাস না! এমনি ডিপার্টমেন্টের অনেক কাজ আমার করতে হচ্ছে। তারওপর ছুটির জন্য এক্সট্রা খাটুনি তো আছেই। প্রচন্ড ব্যস্ত আমি এখন। তোর ঝামেলা এখন নিজের ঘাড়ে নেওয়ার মতো এবিলিটি আমার নেই।”

মুগ্ধ বিরক্তি নিয়ে বললো,
“তুই আমায় হেল্প করিস কখন? সারাজীবন তো শুধু ব্যস্ত-ই থেকে গেলি! এতোবছর পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত ছিলি, আর এখন কাজ নিয়ে! পরে যখন বিয়ে হবে, তখন বাসর রাতেও বউকে বলবি যে, ‘আমি প্রচন্ড ব্যস্ত! তোমার ঝামেলা কাধে নেওয়ার এবিলিটি আমার নেই!’ তখন কী হবে, সেটা ভেবেই আমার টেনশন হচ্ছে।”
প্রহর কঠিন দৃষ্টিতে তাকালো। দাঁত কটমট করে বললো,

“তখন কী হবে, জানি না! কিন্তু তুই এই মুহুর্তে আমার সামনে থেকে বিদায় না হলে একটা মারও মাটিতে পড়বে না।”
মুগ্ধ অসহায় গলায় বললো,
“এমন করিস কেন, ভাইয়া? শুধু কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দে! তাহলে আমি চলে যাবো। বেশি সময় নেবো না, আই প্রমিস।”

প্রহর দীর্ঘশ্বাস ফেলে হতাশ চোখে তাকালো। নিরুপায় হয়ে বললো, “ঠিক আছে বল!”
মুগ্ধের চোখে মুখে ফুটে উঠলো উৎফুল্লের হাসি। সে নড়েচড়ে বসলো। গলা ঝেড়ে বললো,
“সৌহার্দ্যকে তুই কতটুকু চিনিস?”
প্রহর ভ্রু কুঁচকে বললো,

“কতটুকু চিনি মানে? স্কুল-লাইফ আর কলেজ-লাইফ দু’টোই একসাথে কাটিয়েছি দু’জনে! বন্ধু কম, ভাই বেশি ও আমার। সৌহার্দ্যের বাবা-মাকে আমি চিনি। দেখেছিও! সৌহার্দ্যের ফ্যামিলি সম্পর্কেও যথেষ্ট ধারণা আমার আছে। সৌহার্দ্যও সব জানে আমার সম্পর্কে। এতো বছর ইউকে-তে থাকলেও আমার সাথে ওর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। কিন্তু তুই হঠাৎ সৌহার্দ্যকে নিয়ে পড়লি কেন বুঝতে পারছি না!”

মুগ্ধর চোখ দুটো চকচক করে উঠলো, “তুমি ওর পরিবারের সবাইকে চেনো?”
“নাম শুনেছি সবার! অনেকটাই চিনি।”
পরমুহূর্তেই প্রহর সন্দিগ্ধ চোখে তাকিয়ে বললো, “ওর পরিবারের কোনো মেয়েকে তোর পছন্দ হয়ে যায়নি তো?”
মুগ্ধ টেবিলে কনুই রেখে গালে হাত দিয়ে বসলো। আনমনে বললো, “সেটাই তো মনে হচ্ছে! মেয়েটা ওর কাজিন বা পরিবারেরই কেউ হবে হয়তো!”

প্রহর সরু চোখে তাকালো। মুগ্ধ কি তরীকে পছন্দ করে? এমনটা হলে তো বেশ বিপদ হয়ে যাবে! তরী ছাড়া আর কারো নাম আপাতত প্রহরের মাথায় আসছে না। তাই সন্দিগ্ধ গলায় প্রশ্ন করলো, “মেয়েটা নাম কি তরী?”
“উহুম! অরুণী…”

প্রহর বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে বললো, “হোয়াট?”
মুগ্ধ প্রহরের আকস্মিক চিৎকারে চমকে উঠলো। সম্বিত ফিরে পাওয়ায় সোজা হয়ে বসে ভীত দৃষ্টি তাক করলো প্রহরের বিস্মিত মুখের ওপর। প্রহর যার-পর-নেই অবাক হয়ে বললো,
“মাথা ঠিক আছে তোর? অরুণী তোর থেকে বয়সে বেশ বড় হবে!”

মুগ্ধ মুখ ছোট করে বললো, “তো?”
“তুই কীভাবে চিনলি অরুণীকে?”
“আমাদের কলেজেই তো পড়ে! ফাইনাল ইয়ারে।”
প্রহর হতাশ গলায় বললো,

“বয়সেও তোর চেয়ে বড়! পড়াশোনায় ও তোর থেকে একবছর এগিয়ে! আবার ভালোবাসে আরেকজনকে! আর তুই পছন্দ করিস ওকে। মানে সিরিয়াসলি!! ”
মুগ্ধ আহত চোখে তাকিয়ে বললো,
“অরুণী না-হয় সৌহার্দ্যকে ভালোবাসে! সৌহার্দ্যও কি অরুণীকে ভালোবাসে?”
প্রহর চিন্তিত ভঙ্গিতে বললো,

“নাহ! অরুণীর ভালোবাসাটা একতরফা। সৌহার্দ্য কখনো ওকে ভালোবাসেনি আর ভবিষ্যতেও এমন হওয়ার চান্স নেই।”
মুগ্ধর চোখ দুটো চকচক করে উঠলো। অতি খুশিতে আত্মহারা হয়ে লাফিয়ে গিয়ে প্রহরকে জড়িয়ে ধরলো। প্রহরকে হতভম্ব হওয়ারও সুযোগ দিলো না। ছুটে বেরিয়ে যেতে যেতে বললো,
“আমার লাইন ক্লিয়ার! যাই, সিনিয়ার আপুর সাথে একটু দেখা করে আসি। অনেকদিন যাবৎ দেখা হচ্ছে না, কথা হচ্ছে না। হৃদয় আমার পুড়ছে! আহা!!”
মুগ্ধর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে প্রহর নিঃশব্দে হাসলো। এই ছেলের বাচ্চামো কবে শেষ হবে কে জানে?

দুপুরের পরপরই অর্ণব আর আসমা বেগম তরীদের বাসায় এসে বিয়ের কথা পাকা করে গেছে। সামনের সপ্তাহ অনাড়ম্বরে ঘরোয়া ভাবে বিয়েটা সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মোহনা এই ব্যাপারে কাউকে না জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আফনাদ হক জানলে এই বয়সে তরীর বিয়ে কখনোই দিবেন না।

এখন যদি বিয়ের কথাটা জানাজানি হয়ে যায়, তাহলে কোনো না কোনো ভাবে খবরটা আফনাদ হকের কান অব্দি পৌঁছেই যাবে! বিশেষ করে আহমেদ ভবনের কেউ জানলে খবরটা আফনাদ হকের কাছে পৌঁছাতে সময় লাগবে না। এটা শুনে অর্ণবও বেশ আতঙ্কিত হলো। বিয়েটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হওয়া জরুরি। সে এক্ষেত্রে আর দেরী করতে চায় না। তাই কোনো রিস্ক নিতে সে নারাজ।অগত্যা অর্ণব মোহনার কথায় সায় দেওয়ায় আসমা বেগমও সেটা মেনে নিলো।

মোহনা তরীকেও শাসিয়ে গেল,
“বিয়েতে তোর কোনো আপত্তি নেই আশা করি! এই ব্যাপারে এখন যেন কেউ না জানতে পারে! বিয়ের পর সবাই এমনিতেই জেনে যাবে।”
নিরুপায় তরী মাথা হেলিয়ে মোহনার কথায় সম্মতি জানালো।

তরীর বিয়ের খবর পুরো গ্রামের কাকপক্ষীও জানতে পারলো না। কিন্তু সৌহার্দ্যের কানে সেদিনই খবর চলে গেছে। তরীর ছোট ভাই আফিফের সাথে সৌহার্দ্যের বেশ সখ্যতা। কথায় কথায় আফিফ-ই সৌহার্দ্যকে খবরটা জানিয়ে দিয়েছে। এরপর থেকেই সৌহার্দ্য প্রাণহীন, পাথুরে ভঙ্গিতে ঘরে বসে আছে। আজ তরীও পড়তে আসেনি। না আসার কারণটা সৌহার্দ্যের বুঝতে সমস্যা হলো না।

বিষিয়ে যাওয়া মন নিয়ে খাটে হেলান দিয়ে বসে আছে সৌহার্দ্য। পাথুরে দৃষ্টি সিলিংয়ে নিবদ্ধ। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। চারদিকে মাগরিবের আজানের ধ্বনি কানে বাজছে। সেই সাথে ফোনের রিংটোন ক্ষণে ক্ষণে বেজে উঠছে। সৌহার্দ্য জড়বস্তুর ন্যায় একইভাবে বসে আছে। নড়ছে না, দৃষ্টিও সরাচ্ছে না। কে, কেন তাকে কল দিচ্ছে সেটা জানারও আগ্রহ নেই।
বেশ সময় অতিক্রান্ত হলেও ফোনের রিংটোন এখনো বন্ধ হচ্ছে না। হয়তো হাসপাতাল থেকে কল এসেছে!- ভেবে সৌহার্দ্য ফোন হাতে নিলো। স্ক্রিনে প্রহরের নামটা দেখে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে কলটা রিসিভ করলো। ফোন কানে চেপে ধরতেই ওপাশ থেকে প্রহর বললো,

“ভুলেই গেলি, ইয়ার! একবারও কল দিলি না এ কয়দিনে!”
সৌহার্দ্য দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
“ব্যস্ত ছিলাম একটু!”
“তরীর কী খবর? কেমন পড়াশোনা করাচ্ছিস ওকে?”
সৌহার্দ্য নিষ্প্রাণ মুখে হাসলো। বললো,
“সে তো বিয়ের পিড়িতে বসছে সামনের সপ্তাহেই!”
প্রহর ভ্রু কুঁচকে বললো,

“হোয়াট? তুই এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলবি? আমাকে তো একবারও জানালি! এই তোর বন্ধুত্ব!!”
সৌহার্দ্য চোখ দুটো বন্ধ করে বিছানায় নিজের ভর ছেড়ে দিলো। বললো,
“বিয়েটা আমার সাথে হচ্ছে না। তরীর এক কাজিনের সাথে হচ্ছে।”
প্রহর বিভ্রান্ত হয়ে বললো,

“মানে? আমি তোর কথা কিছু বুঝতে পারছি না।”
সৌহার্দ্য নির্লিপ্ত গলায় প্রহরকে সবটা খুলে বলতেই প্রহর হতবাক হয়ে গেল। বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে বললো,
“বিয়ে এভাবে ঠিক হয়ে গেল? তুই কিছু না করে এভাবে হাত গুটিয়ে বসে আছিস? বিয়েটা আটকাবি না?”
সৌহার্দ্য প্রাণহীন হাসলো। বললো,

“তরী এই বিয়েতে রাজি, প্রহর। নিজের কানে শুনেছি তরীর সম্মতির কথা। তরীর চোখে মুখে আনন্দ ও লজ্জার প্রকাশ দেখেছি আমি। এখন বিয়েটা কীভাবে ভেঙে দেই? তরীও অর্ণবকে চায়। তরীর আনন্দ ও সুখের পথে কাঁটা হয়ে দাড়াতে পারবো না আমি। এখন ওদের দু’জনের মাঝে নিজেকে তৃতীয় ব্যক্তি মনে হয়। তরীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে ওকে নিজের সাথে বাঁধার মতো অন্যায় আমি করতে পারবো না। যতই হোক! আমার চাঁদ তো! কষ্ট দেই কীভাবে বল?”

বলেই সৌহার্দ্য সন্তর্পণে ফোনটা কান থেকে নামিয়ে ফেললো। প্রহরের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে গেছে। তরীর বিয়ে হয়ে গেলে সৌহার্দ্যের সাথে কি অরুণীর বিয়ে হবে? তাহলে মুগ্ধর কী হবে? চিন্তায় নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে প্রহরের।
সৌহার্দ্য শোয়া থেকে উঠে ওজু করে নিলো। পাঞ্জাবি পরে জায়নামাজ বিছিয়ে মাগরিবের নামাজ ঘরেই আদায় করলো। নামাজ শেষে দু’হাত তুললো মোনাজাতের উদ্দেশ্যে।

মানুষ তার কাঙ্ক্ষিত জিনিসগুলো মোনাজাতের সময় আল্লাহর কাছে চায়। সৌহার্দ্য নিজেও চেয়ে এসেছে সারাজীবন। কিন্তু আজ আল্লাহর দরবারে হাত তোলার পর নিজের চাওয়া প্রকাশ করতে পারছে না সৌহার্দ্য। কী চাইবে সে? কীভাবে কী চাইবে বুঝে উঠতে পারছে না। অজান্তেই চোখ থেকে ছিটকে পানি গড়িয়ে পড়লো। বুকটা ফেটে যাচ্ছে যেন! চোখ দু’টো খিঁচে বন্ধ করে নিলো সৌহার্দ্য।

এতোক্ষণ পাথুরে জলহীন চোখ দুটো পানিতে ভরে উঠেছে। বুকের ভেতর জমা মেঘগুলো যেন অঝোর বর্ষণে মগ্ন হয়ে গেল! সৌহার্দ্য দু-হাত তুলে সশব্দে কাঁদছে। মনপ্রাণ উজাড় করে হাউমাউ করে কাঁদছে। মুখ ফুটে কিচ্ছু চাইছে না। তার হৃদয় যেন কেউ ছিঁড়ে নিয়ে যাচ্ছে! কোনো প্রার্থনা না করে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছে। দু’হাতের তালুর শেষপ্রান্তে মাথা ঠেকিয়ে বিরবির করে বারবার বলছে,
“এ কেমন কষ্ট দিচ্ছো আমায় আল্লাহ? আমার ভেতরটা ছিঁড়ে যাচ্ছে। আমি যে আর সহ্য করতে পারছি না!”

প্রণয়াসক্ত পূর্ণিমা সিজন ২ পর্ব ৮

[একটু দেরী হচ্ছে গল্প দিতে, কারণ আমার পরীক্ষা চলছে। রবিবার-বৃহস্পতিবার একটানা পাঁচটা পরীক্ষা। হুট করেই ডেট দিয়ে দিয়েছে পরীক্ষার। এই কয়টা দিন একটু সমস্যা হবে গল্প দিতে। আশা করি পাঠকেরা বুঝবেন আমাকে। আর হ্যাঁ, সবাই গঠনমূলক মন্তব্য করবেন যেন লেখার আগ্রহ বাড়ে। ভালোবাসা 🖤]

প্রণয়াসক্ত পূর্ণিমা সিজন ২ পর্ব ১০