প্রেম নেশা পর্ব ১৩+১৪+১৫
শান্তনা আক্তার
নেমে পড়ো তোমার কলেজে এসে গেছো।(মেঘ)
।
ওও,,,যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আপনি ও একটু নামবেন?
।
কেন?
।
নামুন না প্লিজ,,,
।
হুম বলো। (গাড়ি থেকে নেমে।)
ওইযে কদম ফুল পেড়ে দিন না।(কদম ফুলের গাছ দেখিয়ে)
।
তুমি কদম ফুল পেড়ে দেওয়ার জন্য গাড়ি থেকে নামালে?
।
হুম,,,প্লিজ,,,আমি তো নাগাল পাইনা।আপনি জিরাফের মতো লম্বা হয়ে এতোটুকু তো পারবেনই।
।
কি! আমি জিরাফ?
।
তা নয় কি?একটা ফুলই তো।
মেঘ আর কথা না বাড়িয়ে ফুল পাড়তে গেল।
।
।
মিশমি ম্যাম,,,মিশমি ম্যাম?(জুসি)
।
ষাঁড়ের মতো চেচাচ্ছিস কেন?
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
ওই দেখুন কালকের ওই মেয়েটা।
।
কোন মেয়েটা?
।
ওইযে গতকাল কলিকে পাঞ্জায় হারিয়েছিল।
।
আমাকে ও হারাতে পারতো না বুঝেছিস?আমি ওকে জিততে দিয়েছে বলে জিতেছিল।
।
তুমি কি পারো তা মিশমি ম্যাম ভালো করেই জানেন।
।
তোরা থাম।মেয়েটার নাম যেন কি?
।
ম্যাম,,, শান্তনা।(কলি)
চল দেখি ও কি করছে ওইখানে দাঁড়িয়ে।আজ ওর খবর বানিয়ে ফেলবো।
।
এই নাও তোমার কদম ফুল।
।
এতো গুলো কদমের তোড়া।আমি তো একটা চেয়েছিলাম।
।
হাতে যতোগুলো পেয়েছি সব নিয়েছি।
।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
ওই কলি,,জুসি ওই বেয়াদব মেয়েটার সাথে handsome ছেলেটা কে রে?
।
ওর কাছে গেলেই জানা যাবে।(জুসি)
।
হুম চল।
শান্তনা আমি তাহলে গেলাম অনেকটা লেট হয়ে গেছি। বায়।
।
ওকে বায়।
তারপর মেঘ চলে যায়। মেঘ চলে যাওয়ার পর শান্তনা এককদম চলতে যাবে তার আগেই মিশমি ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
।
কি সমস্যা? পথ কেন আটকাচ্ছো?
।
তোর সাথে কি একটা ছেলে ছিল মাত্র গাড়ি করে চলে যায়।
।
হুম তো?
কে সে?তোর বিএফ নাকি?
।
আমার যাই হোকনা কেন তোমার তাতে কি?
।
মিশমি ম্যামের মুখে মুখে কথা তোকে আমি,,
।
জাস্ট স্টপ কলি।আমি কথা বলছি তো।
।
সরি মিশমি ম্যাম।
।
তো তুই বলবি না যে ছেলেটা তোর কি হয়।
।
একদম তাই,,,বলবো না।
।
না বললে তোকে আজ কলেজে ঢুকতে দেব না সাথে আমরাও ঢুকবো না। তোরা ওকে ঘিরে নে দুপাশ দিয়ে। শান্তনার দুপাশে কলি জুসি আর সামনে মিশমি।
এবার কি করবে শান্তনা বেবি?
প্রিন্সিপাল স্যার আপনি,,,
।
কোথায় প্রিন্সিপাল? ওরা ভয় পেয়ে একসাইড হয়ে যায়। সেই সুযোগে শান্তনা এক দৌঁড় লাগায়,,,মিশমি রাও শান্তনার পিছনে ছুটতে থাকে। কলেজের মধ্যে ওরা পাকরাম পাকরাই করে বেড়াচ্ছে।শান্তনা আগে আর মিশমিরা ওর পিছে।এক পর্যায়ে শান্তনা গিয়ে দেয়ালের আড়ালে লুকালো।
।
শান্তনা,,,
।
আরে চুপ,,,
।
কি করছিস এখানে,৷
শান্তনাকে পেছন থেকে খোচাচ্ছে বারবার এবার শান্তনা খুব রেগে যায়,,
কেরে,,,ওহ তোরা।
।
জ্বি আমরা।কি করছিলি এখানে দাঁড়িয়ে(সুমাইয়া)
।
মিশমি আমার পেছনে লেগেছে।
।
কেন?(কোহিনুর)
।
মেঘের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলো আমি বলিনি।
।
মানে(নুশরাত)
।
মানে টা হলো,,,শান্তনা এক এক করে এতোক্ষন যা যা হলো সব বললো।
কাল আমার পিছনে লেগেছিলো আজ তোমার।জানি না মেয়েটা এতো ফাজিল কেন।(পিউ)
।
ফাজিল হোক আর যাই হোকনা কেন ওকে সঠিক লাইনে আনতেই হবে।
।
ঠিক বলেছিস শান্তনা।এখন ক্লাসরুমে চল।ক্লাস শুরু হয়ে যাবে এখনই।(নুশরাত)
ক্লাসের সময় হয়ে যায় সবাই ক্লাসরুমে যায়।
মিশমি এবার শান্তনার নাগাল পায়।মিশমি গিয়ে শান্তনার বেঞ্চের সামনে দাঁড়ায়।
।
কিরে এবার কোথায় পালাবি তুই?
।
পালাবো কেন আমি? তুমি বাঘ না ভাল্লুক যে তোমাকে দেখে পালাবো।
।
তো বল ছেলেটা তোর কি হয়?
।
ওর হাসবেন্ড।কোনো প্রবলেম?(নুশরাত)
।
ওহ নো।এতো গুড লুকিং একটা ছেলে নাকি এই খ্যাত মেয়ের হাসবেন্ড।হাউ ফানি।
।
তোমার যদি এতই কনফিউশান লাগে তাহলে কাল আমার হাসবেন্ড আসলে জেনে নিও কেমন।এবার যাও এখান থেকে।
নাহ থাক আমার ওতো প্রয়োজন নেই জানার বলে মিশমি চলে যায়।
।
মিশমি ম্যাম চলে আসলেন কেন?
।
কি আর করবো ভেবেছিলাম ছেলেটা ওর বিএফ হবে,,তাহলে ছেলেটার সাথে লাইন মারার একটা সুযোগ থাকতো কিন্তু ছেলেটা তো ম্যারিড।তাই ছেড়ে দিলাম।তবে একটা জিনিস বুঝলাম না ছেলেটা এতো স্মার্ট হয়ে এরকম গাইয়া টাইপ মেয়েকে কেন বিয়ে করল?
।
ছেলেটার চয়েজ খুব বাজে তাই একে বিয়ে করেছে।(জুসি)
।
তা যা বলেছিস(কলি)। বলেই সবাই উচ্চস্বরে হেসে ওঠে।
আজ এতো দেড়ি করে আসলেন যে?আমি ওয়েট করছিলাম কখন থেকে?
।
সরি পিচ্চি।আসলে জ্যামে ফেসে গিয়েছিলাম।
।
ওহ,,,
।
হুম তোমার ফ্রেন্ডরা কোথায় দেখছি না যে।
ওদের চলে যেতে বলেছিলাম। আমার সাথে দাঁড়িয়ে থাকলে ওদের বাসায় যেতে লেট হতো ফলে বকা খেতো তাই বলেছি চলে যেতে।বাদ দেন।আজ কি হয়েছে শুনবেন?
।
বাড়ি যেতে যেতে শুনবো এখন গাড়িতে ওঠো।
।
ওকে।
পুরো রাস্তা শান্তনা বকবক করতে করতে গেলো আর মেঘ ওর বকবক শুনে গেলো।মেঘের বেশ ভালোই লাগে শান্তনার বকবক শুনতে।
♪কেন রোদের মতো হাসলে না,,,আমায় ভালো বাসলে না,,আমার কাছে দিন ফুরালেও আসলে না।♪
♪এই মনকে মনের জন্মদিন,, চুপ করে থাকা কঠিন,,,তোমার কাছে খরস্রোতাও গতিহীন♪
♪নতুন সকাল গুলো,,কপাল ছুঁলো তোমারি,,দূরে গেলেও সত্যি তুমি আমারি।
শুধু আমারি,,,,
“রোদের মতো হাসলে না”
আমায় ভালো বাসলে না,,,আমার কাছে
❤❤দিন ফুরালেও আসলে না❤❤
গানের লাইন গুলো গেয়ে জানালার গ্রিলের সাথে মাথা ঠেকালো শান্তনা।
থামলে কেন?
আচমকা কারো আওয়াজ শুনে শান্তনা পিছনে ফেরে।মেঘকে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যায় শান্তনা
।
আপনি?
।
হুম,,আমি।
।
কখন এলেন?
।
তুমি যখন মিষ্টি সুরে গান গাচ্ছিলে তখন।
কিন্তু থেমে গেলে কেন?ভালোই তো লাগছিলো।
।
আসলে কাল আমাদের কলেজে সিংগিং কম্পিটিশন আছে তাই একটু আধটু চেষ্টা করছিলাম গাওয়ার।
গ্রেট,,,আমিও যাব কাল তোমার কলেজে।
।
তাহলে আপনার অফিস?
।
ছুটি নেব।আমার বেস্ট ফ্রেন্ড গান গাইবে আর আমি যাবো না তা কিভাবে হয়।
।
তাহলে খুব মজা হবে। জানেন,,যে জয়ী হবে সে স্পেশাল গিটার পাবে।
।
তাই? খুব ভালো। আমার বিশ্বাস তুমিই Winner হবে।
।
তা জানি না।তবে চেষ্টা করবো।
তবে একটা কথা বলতেই হয়,,,খুব সুন্দর তোমার কন্ঠ।একদম তোমার মতো।
।
আমি আপনার খাবার নিয়ে আসছি।বলে নিচে চলে যায় শান্তনা।
।
যাহ বাবা। আমি যখনই ওর প্রশংসা করি তখনই পিচ্চি পালিয়ে যায়।কোনো সমস্যা আছে নাকি।
শান্তনা খাবার নিয়ে উপরে যাচ্ছিল তখন সাহেরা ওকে আটকে নেয়।
।
শান্তনা মা,,,,দাঁড়াওতো
।
জ্বি মা বলুন?
।
আমাকে একটা প্লেট দাও বলে শান্তনার দু হাতে থাকা প্লেট দুটো থেকে একটি হাতে তুলে নেন সাহেরা।
চলো এবার।
।
আপনি দিন আমি নিতে পারবো মা।
আমি জানি তুমি নিতে পারবে।কিন্তু আমি যখন তোমাদের রুমে যাচ্ছিই তখন একটু হেল্প নাহয় করলাম।
শান্তনা আর কথা বাড়ায়নি।খাবার প্লেট হাতে সাহেরা খাতুনকে দেখে মেঘ কিঞ্চিৎ অবাক হয়।
।
মম তুমি?
।
হুম আমি। মাকে কষ্ট দিতে খুব ভালো লাগে তোমার তাইনা? মা একটু বেশি বেশি খাওয়াবে বলে মার সামনে না খেয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে নিজের রুমে খাও তুমি।কেন? হুম কেন? যখন থেকে তুমি আমাদের সাথে খাওয়া বাদ দিয়েছো তখন থেকে যে তোমার মার গলা দিয়ে এক দানা খাবারও নামেনি তুমি সেটা জানো?
।
মম আমি,,,
একটা কোথাও না।এমন কেন করছো তুমি? আমি তোমার বাবা তোমার পাশে আছি তাইনা।তাও কেন নিজেকে গুটিয়ে রাখো কেন? একটুও কি বোঝো না মার বুকের ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে যায় তার সন্তানের হতাশা ভরা মুখ দেখলে।পেছনের কথা মনে করে নিজে গুটিয়ে থাকা কোনো সলিউশন নয়।অতীতকে দূরে ঠেলে বর্তমানকে আলিংগন করাই বুদ্ধিমানদের কাজ।আমি তোমাকে এই কয়দিন কিছু বলিনি তার কারণ ভেবেছিলাম তুমি কিছুদিন একা থাকলে হয়তো মন ভালো হয়ে যাবে।কিন্তু আমি ভুল ছিলাম।দিন দিন তুমি নিজেকে আরও আড়াল করে রাখছো।এটা কেন?
।
মম আমি এখন খুব ভালো আছি বিশ্বাস করো।আমি আগের মতো নেই এখন।
তাহলে সবার সাথে ভালো করে কথা কেন বলো না?কেন আগের মতো তোমার বাবা ভাই বোনের সাথে হাসি মজা করোনা? কেন? ওই মেয়েটার জন্য?ওই মেয়েটা তোমাকে ধোকা দিয়েছে। আর ধোকাবাজ বেইমানদের জন্য নিজেকে কষ্ট দেওয়ার অর্থ বোকামি বুঝেছো।
।
তুমি বুঝতে পারছো না মম। আমি সত্যিই ভালো আছি।খুব ভালো আছি।শান্তনাকে পেয়ে আমি সব কষ্ট ভুলে গেছি।ও আমাকে সেই আগের আমিতে পরিনত করেছে।
।
তাহলে সকলের সাথে মিলেমিশে খেতে আসো না কেন? যখন ভালোই আছো তাহলে সকলের থেকে দুরে দুরে কেন থাকো?
ঠিক আছে তাই হোক আমি আবার সকলের সাথে এক টেবিলে খাবো।
।
এইতো আমার শোনা ছেলে। আজ আমি আমার ছেলেটাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিতে চাই।খাবে তো?
।
মেঘ ছল ছল চোখে বলল,,হুম মম।আমি চাই। সাহেরা খাতুন খুব যত্ন করে ছেলেকে খাওয়াচ্ছেন।শান্তনা দুর থেকে দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে মা ছেলের ভালবাসা দেখছে।এতোক্ষন তাদের মধ্যে যা যা কথা হয়েছে সবই শান্তনার কানে যায়। ফলে শান্তনা পরিষ্কার করে বুঝতে পারে যে সাহেরা খাতুন সবই জানেন।শান্তনা এটাও বুঝতে পারে তার সকল প্রশ্নের উত্তর এখন একমাত্র সাহেরা খাতুনের থেকেই সে জানতে পারবে।
অনেক দিন পর তোমার হাতে খেয়ে আমার খুব ভালো লাগছে মম।
।
আমার বাবুটা বলে মেঘের মাথায় হাত বুলায় সাহেরা।শান্তনা কোথায়?ওকে তো দেখছি না।
।
নিচেই তো গেলো।
।
হুম তবে আমার সাথেই তো আসলো।
।
কিহ! তোমার সাথেই ছিল।{তার মানে এতোক্ষন আমাদের মধ্যে হওয়া সব কথা শান্তনা শুনে ফেলেছে(মনে মনে)}
।
আপনার খাওয়া শেষ। আরে বাহ মা নিজের হাতে খাইয়ে দিয়েছেন আপনাকে।
।
তুমি এতোক্ষন কোথায় ছিলে বউমা?
আমি তো আপনার সাথেই আসছিলাম কিন্তু সামিরা আমাকে ডাক দিলো তাই ওর কাছে গেলাম।ওর সাথে কথা বলতে গিয়ে ভুলেই গিয়েছিলাম সব।(মিথ্যা বলল)
।
শোনো মেয়ের কথা।আরে বাবা খাবার হাতে রেখে তুমি গল্প জুড়ে দিলে? সব দোষ সামিরার ওর জন্যই তুমি কথায় মগ্ন হয়ে গিয়েছিলে।
।
সত্যি কি সামিরার সাথে কথা বলছিলে?(ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করল মেঘ)
শান্তনাও খুব শান্ত ভাবে উত্তর দিলো।
হুম,,,সত্যি।চাইলে ওকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।
না থাক বিশ্বাস করেছি।
।
এসব কথা ছাড়ো।এসে বসো বউমা,,,তোমাকেও খাইয়ে দেই। সাহেরা শান্তনাকেও খুব ভালবেসে খাইয়ে দিলেন।তা দেখে মেঘ বলে ওঠে,,,
।
খালি বউমাকেই খাওয়াবে নাকি,,,
।
দেখেছো মা? কতটা হিংসুটে আমার মেঘ।
।
আপনি মাত্রই তো খেলেন।
।
খিদে যায়নি তো।আরও খাবো।
।
পেটুক কোথাকার।
হা হা,,, তোমাদের বাবা আর আমিও এই ভাবে ঝগড়া করি। কোনোদিন যেন তোমাদের দম্পতি জীবনে নজর না লাগে।সারাজীবন যেন একে অপরের পাশে থাকতে পারো ঠিক আমার আর তোমাদের বাবার মত।বলে শান্তনা আর মেঘের হাত জোড়া এক করে দিল।মেঘ শান্তনা দুজন দুজনার দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে।কিন্তু এই তাকানোর পেছনে এক জনের চোখে অনেক প্রশ্ন আরেক জনের চোখে অনেক মায়া লুকিয়ে আছে।
শান্তনা তোমাদের কন্সার্ট কখন শুরু হবে?(মেঘ)
।
11 টার দিকে।
।
তাহলে আমি 11 টার দিকে তোমার কলেজে পৌঁছে যাবো কেমন?
।
আপনি না বললেন আজ ছুটি নেবেন?
।
বলেছিলাম তাইতো ম্যানেজারকে ফাইলগুলো বুঝিয়ে চলে আসবো।
।
এই আপনার কথা(অভিমান করে)
সরি পিচ্চি।কি করবো বলো?ড্যাড সব রেস্পন্সিবিলিটিস আমার হাতে তুলে দিয়েছেন কোনো প্রকার গাফিলতি যাতে নাহয় সেদিকে তো আমাকেই খেয়াল রাখতে হবে।তাই নয়কি?
।
হুম,,আমি বুঝতে পেরেছি।
।
গুড,,,ভালো ভাবে রিহার্সাল করেছো তো গানের?
।
হুম করেছি।
।
কি গান গাইবে শুনি?
সাস্পেন্স থাকুক।
।
জাস্ট বলো বাংলা না হিন্দি গান গাইবে?
।
আপনি কি ম্যাড নাকি হুম?
।
এতে ম্যাড হওয়ার কি আছে?
।
কলেজে যদি আমি হিন্দি গান গাই তাহলে এক কলি গেলেই আমাকে stage থেকে অসম্মানে নামিয়ে দেবে।
।
আমি জানি না সেটা।কারন আমি আমেরিকা থেকে পড়াশোনা করেছিলাম।
।
ওও,,
হুম,,তাহলে তুমি বাংলা গান গাইবে?
।
হ্যাঁ,,তবে গানের থিমটা হচ্ছে সাবিনা ইয়াসমিন।
।
কে উনি?
।
বিখ্যাত গাইকা।ওনার গাওয়া গানই গাইবে সবাই।
।
ও আচ্ছা।এবার চলো তোমাকে কলেজ নামিয়ে দিয়ে আসি। শান্তনাকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে মেঘ চলে যায় অফিসে।
।
।
দোস্ত আমার না খুব টেনশন হচ্ছে।(কোহিনুর)
কেন?(শান্তনা)
।
যদি stage এ উঠে ভুল করে ফেলি তখন?মান সম্মান সব যাবে।
।
আমি আর নুশরাত নাম দেইনি ভালো হয়েছে।(সুমাইয়া)
।
আমিও দেইনি(পিউ)
।
।
ওই পিদ্দি গুলো,,,মিশমির কথায় সবাই ওর দিকে তাকায়।
।
শয়তানরা আবার চলে আসছে(নুশরাত)
।
ওই তুই কি বললি? আরেকবার বলতো?(কলি)
ইয়ে মানে।কলি ম্যাম আমি তো মানে,,ইয়ে বলছিলাম।
।
ইয়ে মানে কিয়ে?
।
তোমরা কি বলবে বলো আমাদের কাজ আছে(শান্তনা)
।
মিশমি ম্যাম দেই দুটো ঘা সবগুলো রে।(কলি)
।
তুমি শুধু বলতেই পারো,,,দেই দুটো ঘা। দেওয়ার বেলায় ঠুনঠুনা ঠুনঠুন।(জুসি)
শান্তনা সহ ওর ফ্রেন্ডরা সবাই হো হো করে হেসে দেয়।
চোপ পিদ্দি। হাসি থামা।বেশ রেগে বলল মিশমি।
ওকে থামালাম এবার বলো কি বলতে এসেছো?
।
তোদের মধ্যে কে কে সিংগিং কম্পিটিশনে নাম দিয়েছিস।
।
আমি আর কোহিনুর কেন?
।
তেমন কিছু না জাস্ট তোরা গিয়ে নিজেদের নামটা কেটে আয়।
।
কেন কাটবো নাম হুম?
।
না কাটলে তোদের হাল যে বেহাল করে ফেলবো আমি।এমন হাল করবো যে কখনো চুল বাধতে পারবি না।
মানে টাক্কু বানায় দিবেন?(কোহিনুর)
।
একদম ঠিক ধরেছিস পিদ্দি(কলি)
।
শান্তনা আমার শরীর না খুব খারাপ করছে আমি গান গাইতে পারবো না।যাই গিয়ে নামটা কাটিয়ে আসি।
।
ওই থাম,,,তুই নাম কাটাবি নাহ।
।
কি বলছিস তুই।এই বয়সে টাক্কু হলে কি অবস্থা হবে ভাবছিস?
।
কেউ কিছু করবে না আমাদের। তোমার যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে কম্পিটিশনের পর দেখা করো বলে শান্তনা ওর বান্ধবীদের নিয়ে চলে যায়।
।
মিশমি ম্যাম ওরা তো ভয় পেলো না।(জুসি)
সমস্যা নেই আমার যেই সুরেলা গলা আমার সামনে এই ছোট মোটো পিদ্দি দাঁড়িয়ে থাকতেও পারবে না।
।
তা যা বলেছেন মিশমি ম্যাম।আপনার মতো হোনহার সিংগারের সামনে ওরা কিছুই না(কলি)। বলেই তারা অট্ট হাসিতে ফেটে পড়ে।
কিছুক্ষন পর সিংগিং কম্পিটিশন শুরু হয়।
মাইকের এনাউন্সমেন্ট শুনে সবাই যার যার আসন গ্রহণ করে।মেঘ গিয়ে পৌঁছে যায় কলেজে এবং শান্তনাকে খুজতে থাকে।পেয়েও যায় শান্তনাকে।মেঘ ঠিক শান্তনার পাশে যে সিট টা খালি ছিল ওটায়
গিয়ে বসে।মেঘকে দেখে শান্তনা খুব খুশি হয়ে যায়।
।
কি সময় মতো এসেছি তো?
হুম,,,কিন্তু এতো ভিড়ের মাঝে আমাকে খুঁজে পেলেন কি করে।
।
পিচ্চি কে খুব ভালো ভাবে চিনে ফেলেছি তাই তার স্পন্দন যেখানেই স্পন্দিত হোকনা কেন আমি পিচ্চিকে খুঁজে ফেলবোই ফেলবো।
।
কিরে জিজুর সাথে কি বলাবলি করছিস? দেখ কোহিনুরকে ডেকেছে stage এ।(সুমাইয়া)
কোহিনুর স্টেজে গিয়ে গান গাওয়া শুরু করল।শান্তনারা কোহিনুরকে উৎসাহ দিচ্ছে চিয়ার্স করে। গান শেষে সবাই করতালি দিল কোহিনুরের উদ্দেশ্যে।একে একে সবাই গান গেলো।বাকি রইলো মিশমি আর শান্তনা।
এবার মিশমিকে ডাকা হলো।বিচারকদের থেকে অনুমতি চেয়ে মিশম গান গাওয়া শুরু করল।
–শুধু গান গেয়ে পরিচয়,,,শুধু গান গেয়ে পরিচয়।
–চলার পথে ক্ষনিক দেখা একি শুধু অভিনয়।
–শুধু গান গেয়েই পরিচয়…
প্রেম নেশা পর্ব ১০+১১+১২
সম্পুর্ন গান শেষে সবাই করতালি দিল।জাজেস রাও খুব প্রশংসা করল মিশমি। শান্তনা ভাবতেই পারেনি মিশমি এতো সুন্দর গাইতে পারে।মিশমি ভালো গেলেও শান্তনার একটুও হিংসা হয়নি বরং সে আনন্দের সহিত হাতে তালি দিয়েছে।
।
শান্তনা দেখছিস মিশমি কতো ভালো গাইলো।(সুমাইয়া)
।
হুম,, কম্পিটিশন টা বেশ টাফ হবে মনে হচ্ছে। দেখি কি হয়।এরপর মাইকে শান্তনার নাম ভেসে আসে।শান্তনা খানিকটা নার্ভাস হয়ে গেছে।মেঘ সেটা বুঝতে পারে।
।
কি হলো যাও স্টেজে।(মেঘ)
আমার না খুব ভয় লাগছে আমি পারবো তো?
।
obviously পারবে,,be confident..আল্লাহ ভরসা।
।
মেঘের সাপোর্টে শান্তনা কিছুটা সাহস পেলো এবং গুটিগুটি পায়ে স্টেজে উঠল।