প্রেম নেশা পর্ব ১৯+২০+২১
শান্তনা আক্তার
পরদিন কলেজ থেকে এসে ফ্রেশ হয়েই সাহেরা খাতুনের রুমে যায় শান্তনা।
আসতে পারি মা?
।
সাহেরা খাতুন শোয়া থেকে উঠে পড়ে।
কে?
।
আমি শান্তনা।
।
ও,এসো ভেতরে।
আপনারা ঘুমোচ্ছেন,,আমি তাহলে পরে আসি।
।
আরে না,,তোমার বাবা ঘুমাচ্ছেন আমি তো চেয়েই আছি।তুমি বসো।আমার কাছে তো আসো না।ওই এক নিজের রুমেই বসে থাকো।
।
ওনার জন্য সবার কাছেই কথা শুনতে হয়।আমি কোথাও গেলেই রাগ করে। কথা বলে না।(মনে মনে)
।
কি ভাবছো মা?
।
কিছু না।আসলে কলেজ থেকে এতোগুলো পড়া দেয়না,,শ্বাস নেওয়ারও সময় পাইনা।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
সেকি,,!! তুমি আবার বেশি প্রেশার নিওনা।তাহলে শরীর খারাপ করবে।
।
ঠিক আছে।
কিভাবে যে জিজ্ঞেস করি ওনাকে(মনে মনে)
।
কিছু বলবে মা?
।
না,,,এমনি,,নিজের রুমে একা ভালো লাগছিলো না।তাছাড়া আজ তেমন চাপ নেই তাই ভাবলাম,,
।
তাই আমার সাথে গল্প করতে এলে তাইতো? তা বেশ ভালো করেছো।আমি তো সারাদিন বসেই থাকি।
হুম,,আচ্ছা মা উনি মাঝে মাঝে মনমরা হয়ে থাকে কেন? আচমকাই শান্তনার মুখ থেকে কথাটা বেরিয়ে আসে।
।
উনি মানে কে?
।
আপনার ছেলে।
।
কেন কি হয়েছে মা?(চিন্তিত গলায়)
।
আসলে মা উনি সবসময় একা একা থাকতে চায়,,কারো সাথে সেভাবে কথা বলতে চায়না।সত্যি বলতে আমাকেও কারো সাথে কথা বলতে দেয়না।
।
আমার ছেলে এমন ছিলনা মা খুব হাসিখুশি ছিল সবার সাথে মজা করতো কিন্তু কয়েক মাস ধরে নিশ্চুপ হয়ে গেছে।
।
কেন এমন করে জানেন কি?
।
তোমাকে বলেনি?
না তবে ওনাকে নাকি কেউ ঠোকিয়েছে এটাই বলে মাঝে মাঝে।
।
কে ঠকিয়েছে জানো কি?
।
কেন? আপনি জানেন না?
।
না,,,আমাকে বলেনি মেঘ।তোমাকে বলেছে কি?
।
তার মানে উনি আপুর কথা জানেন না(মনে মনে)।না তবে বলেছে কোনো এক মেয়ে নাকি তাকে ঠকিয়েছে।
।
আমিও জানি না মা।ও যে কারো সাথে সম্পর্ক করেছে তা আমাকে কখনো বলেওনি তবে তোমাদের বিয়ের কদিন আগে আমি জানতে পারি।
।
কি জানতে পারেন মা?
2 মাস আগে,,,
সেদিন রাতে মেঘ না খেয়ে ওর রুমের লাইট অফ করে অন্ধকারে বসে কাঁদছিল।তখন,,,
তুমি না খেয়ে এখানে কি করছো তাও অন্ধকারে?
।
এমনি মম,,,
।
এমনি মানে,,,সাহেরা গিয়ে লাইট চালু করে।
দেখি?একি তোমার চোখ মুখ ফোলা কেন?তুমি কাঁদছিলে কেন?
।
না মম আমি,,,
।
কি হয়েছে বলো আমাকে।
।
কিছু হয়নি মম।
আমি তোমার মা।তুমি সব পারবে তবে মায়ের চোখকে ফাকি দিতে পারবে না।
।
মেঘ গিয়ে সাহেরাকে জড়িয়ে কেঁদে দেয়।
মম আমি শেষ হয়ে গেছি।আমাকে কেউ ভালবাসে না।সবাই ধোঁকা দেয়।
।
কে ধোকা দিয়েছে? কি হয়েছে ক্লেয়ার করে বলো মেঘ?
।
মম আমি একটা মেয়েকে ভালবাসি সে আমাকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করবে।
।
তুমি কাউকে ভালবাসো সেটা আমাকে কেন বলোনি?
।
আমি বলতেই চেয়েছি তার আগেই ও অন্য কাউকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যায়।তার কারন আমি নিজে।
।
তুমি নিজে মানে?
।
মানে আমি ওকে বলেছিলাম আমি গরিব।আমি ওকে মিথ্যা বলেছিলাম।এখন ও বড়লোক কাউকে পেয়ে আমার ভালবাসাকে রিজেক্ট করেছে।
এসব লোভী মেয়ে।নাম কি মেয়েটার?
।
মম আমি বলতে পারবো না।আমাকে মাফ করে দিও।বলে উচ্চস্বরে কেঁদে ওঠে।
।
থাক তোকে তার নাম বলতে হবে না।ভুলে যাও তাকে। যে মেয়ের কাছে ভালবাসার থেকে টাকা বড় সে মেয়েকে ভুলে যাওয়াই শ্রেয়।তুমি নতুন জীবন শুরু কর।আমি তোমার পাশে আছি বাবা।
সেদিন আমার মেঘকে ওভাবে কাঁদতে দেখে আমার মন চাচ্ছিল মেয়েটাকে গিয়ে কয়েকটা চর মেরে আসি।তবে ওর দোষ নয় সব দোষ ওর বাবা মার।
।
না মা। বাবা মা কখনো ছেলে মেয়েদের খারাপ উপদেশ দেন না।দোষ ওই মেয়ের তার বাবা মার নয়। আপনি কাঁদছেন কেন মা?
।
আমার একটা মাত্র সন্তান তার কিছু হলে আমি মরে যাবো।বেখায়ালি মনে বলে ফেললেন সাহেরা খাতুন।তবে তার কথায় শান্তনা চরম শক খেলো।
।
একটা সন্তান মানে?
মা মা মানে কি কিছুনা।তুমি আমার ছেলেটা কে দেখে রেখো মা।আমার ছেলেটা খুব অভিমানী খুব জেদি।তবে ওর মনটা খুব নরম।
।
আমি আপনার কথা রাখার চেষ্টা করবো কিন্ত আপনি কেন বললেন আপনার একটা সন্তান।সামির ভাইয়া আর সামিরা কি আপনার সন্তান নয়?
।
নাহ ওরাও আমার সন্তান।আমি তো ভুল করে বলে ফেলেছিলাম তাছাড়া কিছু না।আমার শরীর ভালো লাগছে না।একটু রেস্ট নিতে চাই।(কথাটা বলে সাহেরা আচল দিয়ে তার মাথার ঘাম মুছে নেয়)
।
আচ্ছা আমি তাহলে যাই।আপনি রেস্ট নিন।কিছু লাগবে মা?
এক গ্লাস পানি।
শান্তনা সাহেরার হাতে এক গ্লাস পানি দিয়ে নিজের রুমে চলে আসে।
তার মানে আপু মেঘকে ধোকা দিয়েছে বলে উনি আপুকে এতো টা ঘৃণা করে।ছি আমার ভাবতেই লজ্জা লাগছে আপু এতোটা নিচে কিভাবে নামতে পারলো।যাই হোক এখন থেকে আমি আর মেঘকে পেছনের কথা তুলে কষ্ট দেব না।উনি যেভাবে ভালো থাকবে তাই করবো। কিন্তু একটা কথা আমি বুঝলাম না ওনার মা কেন বললেন মেঘ তার একমাত্র সন্তান?আমার মনে হয়নি উনি কথাটা ভুল করে বলেছে।হয়তো ভুল করেই বলেছেন।আমি যাই গিয়ে কিছু খেয়ে আসি।
এসব কি ধরনের অসভ্যতা মিস টিনা?আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে টাচ করার?
।
স্যার আমি ভুলবশত আপনার হাত ধরে ফেলেছিলাম।
।
নো আরগুমেন্ট,,,আপনি আমাকে ফাইল বোঝাতে এসেছেন নাকি অন্য কিছু?এক বার নয় দু বার নয় বারবার আপনি আমাকে টাচ করার চেষ্টা করেছেন।আজ ডিরেক্ট আমার হাত ধরে বসেছেন।
।
স্যার আমি বুঝতে পারিনি।
।
You know i am married?
।
Yes sir,,
।
নেক্সট টাইম এরকম কিছু দেখলে আপনাকে জব থেকে ফায়ার করতে আমি বাধ্য হবো।এখন যান এখান থেকে।গিয়ে নিজের কাজ করুন।
ওকে স্যার,,next time i Don’t do this mistake again.. টিনা মাথা নিঁচু করে মেঘের ক্যাবিন থেকে বেরিয়ে আসে।
তুমি ম্যারিড তাতে আমার কিছুই যায় আসেনা।আমি যে তোমাকে কতটা ভালবাসি সেটা তুমি জানো না মেঘ।যেকোনো মুল্যে আমি তোমাকে চাই মেঘ।দরকার পরলে তোমাকে ছিনিয়ে নেব ছলে বলে কৌশলে যেভাবেই হোকনা কেন।
I am madly in love with you megh…
রাতের বেলা,,,,
মেঘ রাত 10 টার দিকে বাড়ি ফেরে।শান্তনা মেঘের জন্য ডাইনিং টেবিলে বসে আছে।সবাই খেয়ে নিয়েছে শান্তনা আর মেঘ বাকি আছে।
আজ এতো দেড়ি হলো আসতে?
।
এখন থেকে লেট হবে আসতে।তুমি এখানে কি করছো?
আপনার জন্য খাবার নিয়ে বসে ছিলাম।
।
তুমি এখানো খাওনি?
।
না,,,আপনার সাথেই তো খাই প্রতিদিন তাই,,,
।
তাই খাওনি তাইতো?
।
হুম,,,
।
কাল থেকে খেয়ে নেবে because আমার এখন থেকে বাসায় ফিরতে লেট হবে।
।
হোক আমার কোনো সমস্যা নেই।
।
একদম না।তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে বুঝেছো?
না,,,আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করবো।
।
আমি বলেছি তো আমার ফিরতে লেট হবে।
।
আমি ওতো বলেছি আমি অপেক্ষা করবো।
।
বুঝেছি পিচ্চি মানবে না।
।
একদম তাই।আমি মানবো না আমাকে মানাতে আসবেন ও না।
।
ওকে my dear bestu…
।
হুম,,এখন আপনি যান গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসুন,,আমি খাবার বাড়ছি।
।
সবাই খেয়েছে তো?
সবাই খেয়েছে আপনি যানতো।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে মেঘ শান্তনা ওদের রুমে যায়।
আপনি আজ আমাকে কলেজ থেকে আনতে যাননি কেন?
।
খুব কাজের চাপ ছিল তাই। সরি পিচ্চি।তবে আমি ড্রাইভার পাঠিয়েছিলাম তো।
।
হুম,,,তবে আমার ভালো লাগেনি আজ।
।
কেন?
আপনি নিতে আসেন নি তাই বলে জিহবায় কামড় দেয়।
।
তার মানে তুমি আমাকে আজ মিস করেছো?
।
না জাস্ট একটু। মানে প্রতিদিন আপনি আসেনতো তাই আরকি।
।
ওহ,,,মেঘ বাকা হেসে নিজের ফোনটা হাতে নিল।
।
আপনি হাসলেন যে?
।
তো কাঁদবো নাকি?
।
না তবে এখন হাসার কারণ কি?
।
নাহ কিছু না বলে আবার বাকা হাসলো।
।
আবার ও হাসলেন?
আজব তো আমি হাসতেও পারবো না নাকি।
এবার শান্তনা ওর মুখটা কিরকম যেন করল।মেঘ সেটা দেখে এবার জোড়ে জোড়ে হাসতে শুরু করল।
।
হাসছেন কেন এতো?
মেঘ আলতো করে শান্তনার গাল দুটো টেনে দেয়।
আমার গাল কেন টানলেন?
।
এরকম বেবি ফেস করলে আমার কি দোষ বলো?
।
যান আপনার সাথে কথা বলবো না।বলেই রাগি ফেস করে দু হাত পেটের সাথে বেঁধে নেয় শান্তনা।
এবার মেঘ শান্তনার সামনে গিয়ে ওর ফোন দিয়ে শান্তনার ছবি তুলতে শুরু করে।শান্তনা বোঝার আগেই ২-৩ টা ছবি তার ক্যামেরায় বন্দি করেও নেয়।
এই আপনি কি করলেন?আমার পিক তুললেন কেন?
।
আমার ওয়ালপেপার হিসেবে সেট করবো বলে।
।
আমার ছবি আপনার ফোনের স্ক্রিনে কেন সেট করবেন?
।
মন ভালো করতে।
।
মানে?
।
মানে আমার যখন মন খারাপ করবে তখন তোমার পিকচার টা দেখবো।আর আমার মুড ভালো হয়ে যাবে।
।
আমার পিক কেন?
তা তো জানি না।
।
তো কি জানেন?
।
তোমাকে রাগাতে,,,ভয় দেখাতে।
।
আমাকে রাগিয়ে,,ভয় দেখিয়ে কি পান?
।
সেটাও জানি না।তবে আমার খুব ভালো লাগে তোমাকে রাগাতে।
।
উফফফ,,,আপনি আমার পিক ডিলিট করুনতো কথা না বাড়িয়ে।
।
কেন ডিলিট করবো?
।
আমার ভালো একটা পিক তুলে ওটা ওয়ালপেপার দিতে পারেন তবে এটা খুব পঁচা পিক।
এটাই বেস্ট।
।
নাহ,,,খুব বাজে।
।
খবরদার আমার পিচ্চি কে বাজে বলবে না।তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।
।
ওহ,,তাই?
।
হুম,,,এবার ঘুমিয়ে পড়ো কাল কলেজ আছে তোমার।গুড নাইট বলে মেঘ ঘুমিয়ে পড়ে।
উনি এতো ফার্স্ট কিভাবে ঘুমাতে পারে।হায় আল্লাহ আমার চোখ টাতেই ঘুম দিলা না।
পরদিন সকালে মেঘ শান্তনাকে কলেজ ছেড়ে অফিস চলে যায়।শান্তনা কলেজে ঢুকতেই,,,
শান্তনা,, শান্তনা,,,বলে ওর ফ্রেন্ডরা দৌঁড়ে আসল।
কিরে এভাবে দৌঁড়াচ্ছিস কেন?
।
প্রিন্সিপাল তোকে ওনার রুমে ডেকেছে।পিয়ন ভাইয়া বলল প্রিন্সিপাল নাকি খুব রেগে আছেন।আর বলেছে তুই আসলেই যেন তোকে বলি প্রিন্সিপালের রুমে যেতে।(সুমাইয়া)
।
আমার তো খুব টেনশন হচ্ছে মিশমি কিছু করেনিতো?(নুশরাত)
।
শান্তনা তো কিছু করেনি তাহলে ভয় পাওয়ার কি আছে।(কোহিনুর)
।
তা ঠিক। তবে এখনতো শান্তনা প্রিন্সিপালের রুমে গেলেই জানা যাবে সবটা।(পিউ)
।
হুম,,,আমি গিয়ে বরং দেখি কি বলে প্রিন্সিপাল স্যার।
আমার নাম প্রিন্সিপাল শহিদ আখারি বেয়াদবি করলে পড়বে বারি।হাতে একটা বেত ঘোরাতে ঘোরাতে শান্তনার সামনে আসলো প্রিন্সিপাল।
তাহলে তুমি সে ফাজিল মেয়েটা!
।
মানে? আমি কি এমন করেছি যার জন্য আমাকে ফাজিল বললেন?
।
কি করনি তুমি হ্যাঁ? কলেজে এসে থেকে মিশমি কে জ্বালাতন করেছো।সকলের সাথে ragging করো।সেসব সাইডে রাখলাম তুমি শেষে ওর পিছনে গুন্ড লাগিয়েছো?
।
গুন্ডা..!! আমি প্রথমত কাউকে জ্বালাতন করিনি।আর কারো পিছনে গুন্ডা লাগাবো সেটা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারি না।
।
মিথ্যা কেন বলছিস?সরি,,,মিথ্যা কেন বলছো?তুমি আমার পেছনে গুন্ডা লাগিয়েছো।ওরা নিজেই তোমার নাম বলেছে।
।
আমার মেয়ে কখনো মিথ্যা বলে না বুঝেছো? আর তোমার এতো বড় সাহস কিভাবে হয়,, আমার মিশমি কে বিরক্ত করার?তুমি জানো আমি কে?তোমার ধারণা আছে তুমি কার মেয়ের সাথে লাগতে এসেছো? (মিশমির বাবা আলতাফ শেখ)
আলতাফ তুমি থামো আমাকে বলতে দাও।প্রিন্সিপালের কথায় আলতাফ শেখ থেমে যান।
তুমি কি জানো তোমাকে এই অপরাধে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হবে।
।
কিন্তু স্যার আমি এসকল কিছুই করিনি।
।
স্যার আমরা সাক্ষী আছি যে,,শান্তনাই মিশমি ম্যাম,,,মানে মিশমি কে বিরক্ত করেছে।(কলি ও জুসি)
।
স্যার শুধু মিশমি কে নয় আমাদের ও খুব বিরক্ত করেছে।ঠিক ভাবে ক্লাস করতে দেয়নি।কখনো কখনো মেরেছেও যদি প্রতিবাদ করতে গিয়েছি তো।(জুসি)
দেখেছো আখারি মেয়েটা কোন লেভেলের শয়তান।
।
তোমরা আমার নামে মিথ্যে কেন বলছো?
।
চুপ,,,স্যার ওর সাথে ওর ফ্রেন্ডরাউ জড়িত আছে।(কলি)
মিশমি গিয়ে কলিকে আস্তে চিমটি কাটে আর কানে কানে বলে,,,শুধু শান্তনাকেই বের করলে চলবে তাহলে ওরা এমনিতেই লাইনে আসবে।ওদের নাম নিস না।
।
তবে ওর ফ্রেন্ডদের কোনো দোষ নেই ওরাও শান্তনার ragging এর শিকার। ওদের ভয় দেখিয়ে নিজের দলে রাখে শান্তনা।(মিশমি)
ছি! তুমি কতটা মিথ্যাবাদী! স্যার আপনি আমার ফ্রেন্ডদের থেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন এই বিষয়ে।
।
জিজ্ঞেস করে আর কি হবে তাদের তো ভয় দেখিয়ে রেখেছো।তুমি যা শিখিয়ে এসেছো তাইতো বলবে।তাইনা?
।
মিশমি তুমি এতো মিথ্যে কিভাবে বলতে পারো?স্যার ও যা বলছে সব মিথ্যে।
।
তোমাকে আমি এই কলেজ থেকে রাসট্রিগেট করলাম। now you can go…
শান্তনা আর কথা বাড়িয়ে মন খারাপ করে প্রিন্সিপালের রুম থেকে বেরিয়ে আসে।ওদিকে মিশমি আর ওর ফ্রেন্ডদের মুখে বিশ্বজয়ের হাসি।
কিরে শান্তনা কি বলল প্রিন্সিপাল স্যার?(সুমাইয়া)
কিরে ব্যাগ নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস(নুশরাত)
।
আরে বলবি তো কি হয়েছে(কোহিনুর)
একের পর এক প্রশ্ন করেই যাচ্ছে তারা।এবার শান্তনা ওদের সবটা খুলে বলে সব শুনে,,,
।
শান্তনা তুমি এখানে বসো আমরা আসছি(পিউ)
।
কোথায় যাবে? তোমরা প্রিন্সিপাল কে বোঝাতে যেওনা তাহলে কিছুই হবে না।উনি ভাববে আমি তোমাদের ভয় দেখিয়ে সব বলিয়েছি।
তুই এখানে চুপচাপ বসে থাক আমরা আসছি বলে সবাই চলে যায়।কিছুক্ষণ পর বাইরে চেচামেচির আওয়াজ শুনে শান্তনা ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে আসে।শুধু শান্তনা নয় সকলেই।
শান্তনা বেরিয়ে দেখলো পুরো কলেজের ছাত্র/ছাত্রী একত্র হয়ে আন্দোলন করছে ওদের মুল বানী শান্তনাকে কলেজ থেকে বের করা যাবে না,,,যাবে না।
প্রিন্সিপাল খুবই রেগে যান।পিয়ন কে একটা মাইক আনতে বলে।পিয়ন সাথে সাথে নিয়ে আসে।
তোমরা সকলে এভাবে জড়ো কেন হয়েছো ক্লাস টাইমে।
আপনি শান্তনাকে কলেজ থেকে রাসট্রিগেট কেন করবেন তার বিচার চাইতে।(পিউ)আমরা এটা কেউ মেনে নেব না। পিউর সাথে কলেজের সকলে সায় মেলায়।
সকলের শান্তনার প্রতি ভালবাসা দেখে প্রিন্সিপালের কাছে সবটা ক্লেয়ার হয় মিশমি তাকে মিথ্যে বলেছে।তবে সিচুয়েশন সামলাতে সে তার কথা ফেরত নেয়।
ঠিক আছে শান্তনাকে কলেজ থেকে বের করা হবে না।যে যার ক্লাসে যাও।
।
মিশমি কে শাস্তি পেতে হবে নইলে আমরা কেউ এক চুলও নড়বো না(সুমাইয়া) সকলের সেম একই কথা।
প্রিন্সিপাল না পেরে মিশমিকে কয়েকটা বকাঝকা দেয় সাথে মিশমির বাবাও মিশমি কে নিয়ে লজ্জিতবোধ করে।
তাও সবাই খ্যান্ত হয়নি। সবাই চায় মিশিমিকে যেন কলেজ থেকে বের করা হয়।এবার শান্তনা নিচে যায়।সবাইকে চুপ করতে বলে।
।
আমি চাইনা মিশমিকে কলেজ থেকে বের করা হোক। আমি ওকে মাফ করে দিয়েছি।
।
তা বললে হয়না।মিশমিকে তোমার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।(মিশমির বাবা)
।
কিন্ত পাপা,,,
কোনো কিন্ত নয়,,তোমাকে আমি খুব বিশ্বাস করতাম আর তুমি কিনা আমাকে মিথ্যে বললে? তোমার জন্য একটা ভালো মেয়েকে কতো কিনা বললাম।যাই হোক,,,তুমি যদি মেয়েটার কাছে ক্ষমা না চাও তাহলে আর কখনো আমাকে পাপা বলবে না।এই বলে দিলাম।
এবার মিশমি না পেরে সকলের সামনে শান্তনার কাছে ক্ষমা চায়।তারপর সব স্টুডেন্টস শান্ত হয়,,এবং যার যার ক্লাসে চলে যায়।
কিরে শান্তনা তুই কাঁদছিস কেন?(নুশরাত)
।
আমাকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়ার কথায় আমি এতোটাও কষ্ট পাইনি।কিন্ত তোদের ভালবাসা দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি।thanks সবাইকে।
।
তাই বলে কাঁদবি?(কোহিনুর)
।
এটা তো খুশির কান্না।
।
কিন্তু আমি এটা বুঝতে পারিনি এতোদিন পর মিশমি এমন একটা কাজ কেন করল?বেশ কয়েকদিন তো ভালোই ছিল।শান্তশিষ্ট ছিল।আজ আবার আগের রুপ কেন ধারণ করল?(পিউ)
আরে ওটা তুফান আসার আভাস ছিল।মিশমি মনে মনে ঠিকই প্লান করে রেখেছিল শান্তনাকে কলেজ থেকে বের করানোর।আজ বুদ্ধি এসেছে তাই ট্রাই করল।কিন্তু কোনো লাভ হয়নি প্রতিবারের মতো এবারও মুখ ভাংগা জবাব পেয়েছে।(সুমাইয়া)
।
তবে এবারের ক্রেডিট আমার না তোদের সবার।আবারও বলছি অসংখ্য ধন্যবাদ তোদের।
।
হয়েছে হয়েছে আর ধন্যবাদ দিতে হবে না।ম্যাম এসেছে ক্লাসে মন দে।(কোহিনুর)
কলেজ ছুটি হলে শান্তনা ড্রাইভারের সাথে বাড়ি
চলে যায় আজকেও মেঘ শান্তনাকে নিতে আসেনি।
আজ মেঘ 11 টায় বাড়ি ফিরেছে।তারপর দুজনে একসাথে খেয়ে নেয়।খেতে খেতে শান্তনা কলেজের সব কথা মেঘকে বলে।
।
নাহ এভাবে তো হয়না।তোমার কলেজের প্রিন্সিপালের সাথে আমাকে কথা বলতেই হবে।
।
না,,,থাক সব ঠিক হয়ে গেছে তো।
কি ঠিক হয়েছে? আজ নয় কাল মিশমি আবার কোনো না কোনো উদ্ভট কাজ করবে তখন আবারও তোমাকে প্রবলেম ফেস করতে হবে।তাছাড়া তোমাকে একটা কথা বলতে আমি ভুলে গিয়েছিলাম।
।
কি কথা?
।
তোমাদের কলেজের চেয়ারম্যান আমার মামা হন।উনি যদি প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলেন তাহলে তোমাকে আর কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।তাই আমি,,,
।
না,,আমি সেটা চাইনা।প্লিজ বাদ দিন না।আমি কারো ক্ষমতার জোড়ে কলেজে টিকতে চাইনা।সাধারণ মানুষ হিসেবে কলেজে পড়তে চাই।
।
তুমি না খুব বড় হয়ে গেছো।এতো জ্ঞান কোথায় রাখো ?
।
তাহলে আজ মানলেন যে আমি বড় হয়ে গেছি।
প্রেম নেশা পর্ব ১৬+১৭+১৮
হুম,,,তবে তুমি সবসময় আমার পিচ্চিই থাকবে।
।
সবসময়?
।
তোমার কাল কলেজ বন্ধ না?
মেঘ যে কথা ঘুরিয়েছে সেটা শান্তনা স্পষ্ট বুঝেছে।
।
হুম,,,আপনি কি কাল অফিসে যাবেন?
।
নাহ কাল আমারও ছুটি।
।
তাহলে খুব ভালো হবে।
কিভাবে?
।
কাল রুমটা একটু ক্লিন করবো আপনি আমাকে সাহায্য করতে পারবেন তাই।
।
কিহ!আমি! তুমি ফুলির সাথে,,
।
না আপনি আর আমি প্লিজ।
।
আচ্ছা কাল আসুক তারপর দেখা যাবে(উদাস হয়ে বলল মেঘ)