প্রেম নেশা পর্ব ২৫+২৬+২৭
শান্তনা আক্তার
সকালে ঘুম থেকে উঠে শান্তনা ওর হাত মেঘের হাতের ভাজে দেখতে পেল এবং ওদের মাঝের পাশবালিশ টাও দেখতে পেলে না।
আমি তো রাতে আমাদের মাঝে পাশবালিশ রেখে ছিলাম তো এখন দেখছি না কেন? কোথায় গেল বালিশটা বলে নিজের হাত মেঘের হাতের থেকে ছাড়াতে টান দেয় সাথে সাথে মেঘ শান্তনার হাত ধরে টান দেয় ফলে শান্তনা মেঘের বুকের উপর গিয়ে পড়ে।মেঘ তার দু হাত দিয়ে শান্তনার কোমড় জড়িয়ে রাখে।ফলে শান্তনা মেঘের বুকের উপর আটকা পড়ে যায়।
এটা কি হলো?প্রথমে আমার হাত বন্দী করে রেখেছিল,,এখন পুরো আমাকেই?এবার আমি ওনার থেকে নিজেকে কিভাবে ছাড়াবো?উনি উঠে গেলে কি না কি ভাববে কে জানে।তার আগেই আমাকে ওনার উপর থেকে উঠতে হবে।বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টা করার পরও শান্তনা ব্যর্থ হয়।
উফ উনি কিভাবে ঘুমিয়েছেন?এতোক্ষন ধরে নড়াচড়া করছি ওনার ওঠার নামই নেই।মেবি ঘুম পাগল মানুষ।উফফ আর কতোক্ষন এভাবে থাকবো?ধুর ভাল্লাগে না এতোক্ষন ধরে একভাবে থেকে আমার মাথা ধরে আসছে।আর পারছি মাথা উঁচু করে রাখতে বলে শান্তনা ওর মাথা মেঘের
বুকের মধ্যে রাখে।
।
একি! তুমি আমার উপর কি করছো?
মেঘের কথায় শান্তনার ভয়ে কলিজা কেঁপে ওঠে।ধিরে ধিরে মাথা উঁচু করে।
কি হলো,,বলো তুমি আমার উপর কি করছো?
।
আমি কি করেছি হুম?আপনি ইতো আমাকে আপনার উপরে নিয়েছিলেন?
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
এতো বড় মিথ্যা কথা তুমি কিভাবে বলতে পারলে?আমি মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম আর তুমি বলছো আমি তোমাকে আমার উপরে নিয়েছি?লাইক সিরিয়াসলি?
।
আপনি ঘুমের মধ্যে আমার হাত টান দিয়ে আমাকে আপনার উপর নিয়ে নেন।
।
ওহ রিয়ালি?
।
হুম,,,
।
তাহলে তোমার হাত আমার কাছে কিভাবে আসলো?
।
আপনি জানেন আমি কি কিভাবে বলবো?আমি তো আমার হাত আপনার হাতের ভাজে দেখে ছাড়াতে গিয়েছিলাম তখন আপনি,,,
।
তখন আমি তোমাকে আমার বুকের উপর নিয়ে আসি তাইতো?
হুম ঠিক তাই।
।
নিজের দোষ অন্যের উপর দিতে খুব ভালোই শিখেছো দেখছি।
।
আমি সত্যি বলছি।
।
ওয়েট আমাদের মধ্যে পাশবালিশ টা কোথায়? ওটাও কি আমি সরিয়েছি?
।
আমি জানি না।তবে আমার স্পষ্ট মনে আছে আমাদের মাঝখানে পাশবালিশ রেখেছিলাম।
।
তো আমি কি বলেছি তুমি পাশবালিশ রাখোনি? আমি বলেছি পাশবালিশ টা কোথায় গেল?
।
আমি ওতো জানি না।
জানবে কিভাবে?তোমার পায়ের কাছে রেখে বলছো আমি তো জানি না।হাউ ফানি জোক।
।
মানে?
।
তোমার পায়ের দিকে তাকাও একবার।
শান্তনা পিছনে মুখ ফিরিয়ে দেখল সত্যিই পাশবালিশ টা ওর পায়ের কাছে আছে।
।
আমি সত্যি বলছি আমি জানি না ওটা ওইখানে কিভাবে গেল।
।
হয়েছে হয়েছে।আমার যা বোঝার আমি বুঝে গেছি। তুমি কি এখনো আমার বুকের উপর শুয়ে থাকবে নাকি?
।
মানে?আমাকে ধরে রেখেছে কে?
।
কোথায় ধরে রেখেছি,, মেঘ অনেক আগেই তার হাত শান্তনার পিঠ থেকে সরিয়ে রেখেছিল।শান্তনা মেঘের হাত ওর কোমড়ে দেখতে না পেয়ে নিজেই লজায় পড়ে যায়।এরপর বেকুবের ফেস করে মেঘের দিকে একবার তাকিয়ে ওর উপর থেকে উঠে দৌঁড়ে ওয়াশরুম চলে যায়।এদিকে মেঘের হাসি কে দেখে।
আসলেই তুমি একটা পিচ্চি।তোমাকে খুব সহজেই বোকা বানানো যায়। তাইতো এতোটা ভালো লাগে তোমাকে।
কিরে শান্তনা আজ আবার কি হলো?(সুমাইয়া)
।
কেন?
।
কাল কপাল ফাটিয়ে ফেলেছিলি আজ আবার হাতে bandage…কি হয়েছে বলতো।
।
হাতের চুড়ি ভেঙে ঢুকে যায় রে।
।
এতো বেখালি কেন রে তুই?(নুশরাত)
।
জানি নারে।বাদ দে। মিশমিদের কি খবর রে?
।
ওরা তো এখন ragging ছেড়ে দিয়েছি মনে হয়।এখন কাউকে বিরক্ত করতে দেখি নাতো।(পিউ)
।
ঠিক বলেছিস।তবে কে জানে আবার কি করে বসে।
।
ঠিক বলেছিস শান্তনা।ওকে দিয়ে বিশ্বাস নেই?(কোহিনুর)
।
হুম।
আজ কি আমাদের সাথে ক্যাফে করে যাবি (সুমাইয়া)
।
আজ উনি আসতে পারে।তাই নাও যেতে পারি।
।
ওহো উনি!বলেই হালকা ধাক্কা দেয় নুশরাত।কেমন চলছে রে তোর আর জিজুর রোমান্স?
।
হ্যাঁ তাইতো।আমাদের কিছু শিখিয়ে দে না।কিভাবে হাসবেন্ড কে ভালবাসতে হয়,,,
কিভাবে আদর করে ঘুম থেকে তুলতে হয় ব্লা ব্লা,,,
।
আরে আরে তোরা থাম দেখছিস না শান্তনার মুখ লজ্জায় লাল টমেটো হয়ে গেছে।
।
দেখি দেখি লজ্জাবতীর মুখখানা(কোহিনুর)
ধ্যাত তোরাও না বলেই শান্তনা দৌঁড় দিয়ে ক্লাসরুমে চলে যায়।
কলেজ ছুটি হলে শান্তনা মেঘকে কল করে।তবে মেঘ বার বার কল কেটে দেয়।
উফফ উনি ফোন তুলছেন না কেন?আগে থেকে বললে বন্ধুদের সাথেই চলে যেতাম। আসবে না যখন তখন গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে কেন বলেছেন।এরই মাঝে শান্তনার ফোনে এসএমএস টোন বেজে ওঠে।এসএমএস আসার শব্দে এসএমএস ওপেন করে পড়তে শুরু করে শান্তনা।
(আমি জ্যামে ফেসে গিয়েছি তাই আসতে একটু সময় লাগবে),,,,
এসএমএস টা পড়ে শান্তনার খুব রাগ হয়। আরও সময় লাগবে!
উফফ বিরক্তিকর।এখন আমি এখানে একা একা দাঁড়িয়ে কি করবো?হারামি ফ্রেন্ডগুলোও তো বাসায় চলে গেছে।
হঠাং শান্তনার চোখ যায় সামনের মোড়টাতে।
আরে ওইখানে এতো ভিড় কেন?এতো শব্দই বা কেন হচ্ছে বুঝলাম না।গিয়ে দেখে আসি বলে শান্তনা হাটা শুরু করে।ওইখানে গিয়ে শান্তনা প্রায় অবাকের শেষ সিমানায় পৌঁছে যায়,,,,,,
কয়েকটা মেয়ে মিলে মিশমিকে মারছিল।তাদের সাথে কলি আর জুসিও আছে। মিশমিকে খুব বাজে ভাবে মেরেছে।মাটিতে লুটিয়ে আছে তাও বেধরম মার মারছে ওরা মিশমিকে।
একি মিশমিকে তোমরা মারছো কেন?
।
কারণ ও এখন ভালো হয়ে গেছে(জুসি)
।
হুম আর ও এখন আমাদের দলে নেই। তাই ওকে এর পানিশমেন্ট দিচ্ছি।তুই মার না খেতে চাইলে ভাগ এখান থেকে।নইলে মিশমির মতোই হাল হবে বলে কলি মিশমিকে ঘুষি মারতে নিচ্ছিল কিন্তু মিশমির গায়ে লাগার আগেই শান্তনা কলির হাত ধরে ফেলে।
।
খবরদার ওর গায়ে আর একটা টোকাও দিবে না।
।
দিলে কি করবি হুম?কি করবি?আসছে মিশমিকে বাঁচাতে।আগে তুই কলির হাত থেকে বাঁচ তারপর মিশমিকে বাঁচা বলে শান্তনার থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে শান্তনাকে মারতে হাত বাড়ায়।সাথে সাথে শান্তনাও ওর হাত মোচকে দেয়।ব্যাথায় কলি চিল্লিয়ে ওঠে।
আমার সাথে লাগতে এসো না।ভালো হয়ে যাও তোমাকে কেউ কিছুই বলবে না। আর খারাপ কাজ করা ছেড়ে দাও।এসব কথার মাঝে জুসি একটা হকি স্টিক নিয়ে পেছন থেকে শান্তনার মাথায় বারি দিতে নেয় কিন্তু পারেনা।পিছিন থেকে মেঘ হকি স্টিক টা ধরে রেখেছে।জুসি পিছনে ফিরে মেঘ আর মহিলা পুলিশদের দেখে বেশ ভয় পেয়ে যায়।আর হাতের হকি স্টিকটা ছেড়ে দিয়ে দৌঁড় দিতে নেয়।তবে একজন মহিলা পুলিশ জুসিকে ধরে নেয়।শান্তনা মিশমির কাছে যায়।আর ওকে ডাকতে থাকে।
পুলিশ দেখে কলি আর আর বাকি মেয়েরাও ভয়ে গুটিয়ে যায়।ওদের সবাইকে এক জোট করে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়।
।
Thanks Mr.Megh Chowdhury…(একজন মহিলা অফিসার)
।
এতে thanks দেওয়ার কিছুই নেই।একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এটা আমার রেসপন্সিবিলিটি।
।
আপনার মতো সবাই ভাবলে দেশটার এমন অবস্থা হতো না।আমরা তাহলে যাই ওদের বাবা মাকে খবর দিতে হবে।
ওকে,,,,পুলিশকে বিদায় জানিয়ে মেঘ শান্তনার কাছে যায়। মিশমি সবটা নিজের চোখে দেখছে কিন্তু মুখ দিয়ে কথার বলার শক্তি পাচ্ছে না।শান্তনা ওকে ধরে গাড়িতে বসাও হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে।আর আপনারা এখানো এখানে দাঁড়িয়ে কি দেখছেন?ফিল্ম দেখা শেষ এবার যান সবাই।মেঘের কথায় ওইখানে থাকা মানুষ গুলো একে একে চলে যায়।
তারপর শান্তনা মিশমিকে গাড়িতে নিয়ে বসায় এবং ওর পাশে গিয়ে বসে।হসপিটালের একজন নার্স মিশমিকে একটা ক্যাবিনে শিফট করে।
মেঘ আর শান্তনা ক্যাবিনের বাহিরে বসে আছে।কিছুক্ষণ পর একজন নার্স শান্তনা আর মেঘের কাছে যায় একটা ফোন নিয়ে।
এই নিন পেসেন্টের ফোনে কে যেন কল করেছে।পেসেন্টের জিন্সের পকেট থেকে পেয়েছি ফোনটা।শান্তনার হাতে ফোন ধরিয়ে নার্স চলে যান।
শান্তনা ফোন ধরার আগেই কলটা কেটে যায়।
সাথে সাথে আবারও কল আসে পাপা নাম দিয়ে সেভ করা নাম্বারটা থেকে।শান্তনা ফোন রিসিভ করে মিশমির খবরটা ওর বাবাকে জানিয়ে দেয়।মিশমির বাবা মা খবরটা পাওয়া মাত্র হসপিটালে চলে আসে।মিশমির মা বাবা খুব কান্নাকাটি করে।সাথে শান্তনা আর মেঘকে ধন্যবাদ জানায়।কিছুক্ষণ পর ডাক্তার বেরিয়ে আসে।
।
কি হয়েছে আমার মিশমি মার(মিশমির বাবা)
এখন রেস্ট নিচ্ছে শরির খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে।খুব মেরেছে মনে হচ্ছে।আমরা স্যালাইন ধরিয়েছি কাল অব্দি কেউ পেসেন্টের কাছে না যাওয়াই ভালো হবে।আপনারা কেউ একজন থাকতে পারেন তবে পেসেন্টকে ভুল করেও জাগানো যাবেনা বলে ডাক্তার চলে যায়।
।
আমি ওই মেয়েদের ছাড়বো না। আমার মেয়েকে,, আলতাফ শেখের মেয়েকে মারা।
।
আংকেল ওদের পুলিশে দেওয়া হয়েছে।তারাই দেখে নেবে আপনি কিছু করবেন না প্লিজ।
শান্তনার রিকুয়েষ্টটা প্রথমে না মানলেও পরে মেনে নেন আলতাফ শেখ।মিশমির মা বাবা মিশমির কাছে থেকে যায়।শান্তনা আর মেঘ কিছুক্ষণ পর চলে আসে তাদের বিদায় জানিয়ে।
খুব খারাপ লাগছে মিশমির জন্য।আপনি সময় মতো পুলিশকে খবর না দিলে কি যে হতো
।
তোমাকে তো মিশমি খুব বিরক্ত করেছিল তাও ওর জন্য খারাপ লাগছে?
লাগবে না কেন? ওতো এখন ভালো হয়ে গেছে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে।তাছাড়া ও একজন মানুষ।আমারতো কলি জুসিদের জন্যও খারাপ লাগছে।থানায় পুলিশ আন্টিরা ওদের খুব মারছে তাইনা?
।
পুলিশ আন্টি!! হা হা হা।পুলিশ তোমার আন্টি হলো কিভাবে?
।
যেভাবেই হোক এতে হাসার কি আছে।আপনি পুলিশ আন্টিকে বলবেন কলি জুসি আর বাকি মেয়েদের যেন না মারে।
।
ওদের মারবেও না।কারন ওদের বয়স 18 হয়নি।তবে পেরেন্সদের ডেকে এনে ওদের শিক্ষা দেওয়াবে।আর যেন এরকম না করে ওয়ার্ন দিবে।
।
তাহলে ঠিক আছে।আমরা কিন্তু কাল মিশমিকে দেখতে যাব।
।
আচ্ছা যাব।আর কতো বলবো?
।
যদি ভুলে যান তাই মনে করাচ্ছি বার বার।
আসলেই একটা পিচ্চি তুমি।তবে মনটা খুব ভালো।লাভ ইউ পিচ্চি।
।
কিহ?!
।
এতে চোখ বড় করার কিছুই নেই।ফ্রেন্ড ফ্রেন্ডকে লাভ ইউ বলতেই পারে।
।
হুম তা ঠিক।লাভ ইউ টু জিরাফ।
।
ওই কি বললা।
।
কিছু না বলে পালিয়ে ওয়াশরুম চলে যায় শান্তনা।
পাগলী মেয়ে একটা।বলেই বাকা হাসে মেঘ।
পরদিন কলেজ শেষে মেঘ শান্তনাকে নিয়ে হসপিটালে যায়।ডাক্তারের পারমিশন নিয়ে মিশমির ক্যাবিনে ঢোকে।মিশমির মা মিশমিকে খাইয়ে দিচ্ছিল।শান্তনাকে দেখে বড় একটা হাসি দেয় মিশমি।
।
কেমন আছো মিশমি?
।
এখন অনেকটা ভালো আছি।তুমি দাঁড়িয়ে কেন?আমার কাছে এসো।
তারপর শান্তনা আর মেঘ ওদের হাতে থাকা ফলগুলো মিশমির মার হাতে তুলে দেন।
।
এসবের কি দরকার ছিল মা?
।
দরকার আছে আন্টি।মিশমিকে বেশি বেশি ফ্রুটস খেতে হবে রিকোভারি করার জন্য।
।
তোমার সাথে কে মা?(মেঘকে দেখিয়ে)
।
মাম্মি উনি শান্তনার হাসবেন্ড।
।
ওহ,,,বসো বাবা।দুটো চেয়ার টেনে দিল শান্তনা আর মেঘের জন্য।
এরপর মিশমি শান্তনাকে সরি আর ধন্যবাদ জানালো।তার কৃতিত্বের জন্য ক্ষমা চাইলো।এরই মাঝে সেখানে কলি জুসি আর তাদের বাবা মা চলে আসেন।কলি আর জুসিকে দেখে মিশমি প্রচুর রেগে যায়।
তোরা এখানে কেন আসছিস? বেশ রেগে বলল মিশমি।
।
সরি দোস্ত আমাদের মাফ করে দে বলে কলি জুসি দুজনেই কেঁদে দেয়।কলি জুসির বাবা মাও হাত জোড় করে ক্ষমা চায় মিশমি আর ওর বাবা মায়ের কাছে।
।
না তোদের আমি কখনোই মাফ করবো না।চলে যা এখান থেকে।কেন এসেছিস তোরা?
।
ওরা ওদের ভুল বুঝতে পেরেছে মামনি।ওদের মাফ করে দাও।(আলতাফ শেখ)
।
না মাফ করবোা না। কিন্তু পাপা ওরা এখানে কিভাবে আসলো?
।
আমি নিয়ে এসেছি।ওরা আমাদের বাসায় এসে আমার পা ধরে ক্ষমা চায় আর খুব কাঁদে।তোমার সাথে দেখা করতে চেয়েছে তাই নিয়ে এসেছি।তাছাড়া ওদের কার্যকালাপে ওরা লজ্জিত।আর নিজের ভুল বুঝতে পেরে তোমার থেকে ক্ষমা চাচ্ছে তাই তুমি ওদের মাফ করে দাও মামনি।
কিন্তু পাপা,,,
।
প্লিজ মিশমি ওদের মাফ করে দাওনা।কেউ নিজের ভুল বুঝতে পারলে তাকে একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। তাই প্লিজ ওদের মাফ করে দাও। শান্তনার রিকুয়েষ্টটা মিশমি আর ফেলতে পারেনি।
।
ঠিক আছে তুমি আর পাপা এতো করে যখন বলছো আমি ওদের মাফ করে দিলাম।আয় তোরা আমার কাছে।মিশমি হাত বাড়াতেই কলি আর জুসি মিশমির কলে ঝাপিয়ে পড়ে।
এর মাঝে মেঘের ফোন বেজে ওঠে তাই ও দূরে গিয়ে কথা বলে।
।
শান্তনা আমাকে অফিসে যেতে হবে।জরুরি কাজ পড়ে গেছে।
।
ও,,,মিশমি তাহলে আমি যাই।নিজের খেয়াল রেখো।সকলকে বায় বলে শান্তনা আর মেঘ বেড়িয়ে আসে।শান্তনাকে বাসায় ড্রপ করে মেঘ অফিসে চলে যায়।
বিরাট এক রেস্টুরেন্টের ভিতরে ঢোকে মেঘ।কিন্তু কাউকেই দেখতে পায়না টিনা ব্যতিত।
এসব কি মিস টিনা? আপনি তো বলেছিলেন এখানে সিংহানিয়া গ্রুপের সাথে মিটিংং আছে কিন্তু এখানে তো একটা মানুষও নেই।
।
আছে তো।অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা মিটিংং আছে মেঘ।
মেঘ? How dare you to call me megh…
।
তো কি বলে ডাকবো তোমাকে?
।
আমি আপনার সাহস দেখে সত্যিই অবাক হলাম।আমি আপনার বস।আমাকে তুমি করে বলার দুঃসাহস কিভাবে হয় আপনার?
।
কারন তুমি তো আমার বস নও।
।
বস নই মানে?
।
মানেটা হলো তুমি তো আমার ভালবাসা তাহলে তুমি আমার বস কিভাবে হলে?আর তোমাকে তুমি কেন বলবো না।
।
ভালবাসা মানে? are you crazy?
ভালবাসা মানে লাভ,,,প্রেম। yes,,,,i am crazy…i am crazy just for you megh…
।
ফালতু কথা বাদ দিন মিস টিনা।আমি গেলাম।
।
নাহ মেঘ,,,,না।তুমি যেওনা।এতো কিছু করেছি তোমার জন্য।তোমাকে পাওয়ার জন্য।আর তুমি না শুনেই চলে যাবে।
।
আমার আপনার সাথে কথা বলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই।আর আমি আপনাকে জব থেকে ফায়ার করলাম।আর কোনোদিনও আপনার এই মানহুস ফেস আমাকে দেখাবেন না।বলে মেঘ হাটা দেয়,,
।
দাঁড়াও মেঘ।
।
যতই চেষ্টা করুন,, হাত জোড় করুন না কেন এবার আর কোনো চান্স দেবনা।আপনাকে অনেকবার ওয়ার্ন করেছি। তবে আর না।আপনি আর আমার কোম্পানিতে জব করতে পারবেন না।
।
হা হা হা হা,,,
।
হাসছেন কেন পাগলের মতো?
প্রেম নেশা পর্ব ২২+২৩+২৪
হাসবো না বুঝি?তুমি আমাকে ফায়ার করবে?আমার বাপির বাংলাদেশে কয়টা কোম্পানি আছে তুমি জানো? শুধু বাংলাদেশেই নয় আমেরিকায় কয়টা কোম্পানিস,,,বাড়ি আছে ধারনা আছে তোমার?
।
I can’t understand,,,what do you say?
But i have no interest to talk to you damn it…
।
আমি বুঝিয়ে বলছি তো মেঘ।একে বারে শুরু থেকে বলছি,,,তাহলে শোনো,,,
তুমি ওয়াশিংটন ডিসির যে কলেজটায় এমবিএ করতে ঠিক সেখানে আমিও এমবিএ করতে এডমিশন নিয়েছিলাম।সেখানে প্রথম দেখেই তোমার প্রেমে পড়ে যাই।সেখানে অনেক স্টুডেন্টদের মধ্যে তুমি হয়তো আমাকে দেখনি তবে আমি তোমাকে ঠিকই দেখতাম।হয়তো লুকিয়ে। তবে আমি চেয়েছিলাম কোর্স শেষ করে তোমাকে আমার মনের কথা বলতে কিন্তু আমার bad luck তোমাকে আমি আর পাইনি।আমি অনেক খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তুমি বাংলাদেশে চলে আসছো।সেদিনের ফ্লাইটেই আমি বাংলাদেশে চলে আসি। যেহেতু আমার ফ্যামিলি বাংলাদেশে থাকে সেহেতু আমার ফ্যামিলির কাছেই ফিরে আসি।এখানে থেকে আমি তোমার বাড়ি অফিসের ঠিকানা বের করি এবং তুমি জয়েন করবে জেনে পাপা কে বলে তোমার পিএ হিসেবে appointment letter দেই।আর হয়েও যাই।দেখেছো মেঘ আমার ভালবাসার জোড় কতটা।তোমাকে ঠিক খুঁজে বের করেছি।
।
হয়তো আপনি আমাকে সত্যি ভালবাসেন,,তবে আমি আপনাকে ভালবাসি না।আমি ম্যারিড।আমি জাস্ট আমার ওয়াইফকে ভালবাসি।
এই কথাটা আমার জাস্ট ভালো লাগে না। আমি যখন জানতে পারি তুমি ম্যারিড তখন তোমার ওয়াইফকে খুন করতে চেয়েছিলাম।তবে আমি সেটা করিনি।কারণ আমি জানি তোমাকে আমার সম্পর্কে সব বললে তুমি ওকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে।
।
আমি কেন ডিভোর্স দেব আমার ওয়াইফকে?
।
আমাকে ভালবাসবে তাই।আমার বাপির অনেক টাকা তাই।
।
ভুল ধারণা নিয়ে থাকেন।আমি চললাম,,,আর হ্যাঁ আমি আমার ওয়াইফকে অনেক বেশি ভালবাসি।ওকে আর আমাকে কেউ আলাদা করতে পারবে না।আপনি তো কখনোই পারবেন না।আর এই মেঘ আপনার মতো মেয়েদের কখনোই ভালবাসবে না।গুড বায় বলে মেঘ সেখান থেকে বেরিয়ে আসে।
।
যাও মেঘ যাও।আজ নয়তো কাল তোমাকে আমার কাছেই আসতে হবে। দেখে নিও তুমি।আর আমি যা চাই তা আদায় করেই ছাড়ি হাহ,,,,