প্রেম নেশা পর্ব ৩+৪

প্রেম নেশা পর্ব ৩+৪
শান্তনা আক্তার

মেঘ ভাইয়ার তো কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এসেছে।এখন আমি কি করবো? সবাইকে বরং ডাক দেই। হ্যাঁ তাই ভালো হবে বলে যেই উঠতে যাবে ঠিক তখনই মেঘ শান্তনার হাত তার বুকের সাথে চেপে ধরে।

যেওনা রথি প্লিজ,,,আমাকে ছেড়ে যেওনা।তুমি তো বলেছিলে আমাকে কোনোদিন ছেড়ে যাবেনা।তাহলে কেন চলে গেলে রথি।
ঘুম+জ্বরের ঘোরে আবল তাবল বকে যাচ্ছে মেঘ। এদিকে শান্তনার ভীষণ খারাপ লাগছে মেঘের মুখে রথির নাম শুনে।শত হোক মেঘ তার হাসবেন্ড।

উনি যদি রথি আপুকে ভালইবাসেন তাহলে আপুকে বিয়ে না করে আমাকে কেন করলেন আর কেনোই বা নিজের আসল পরিচয়টা লুকালেন।আজ এতো কেনোর মাঝে আমি তলিয়ে গেছি।এখন না পারছি সাতার কাটতে আর না দেখছি কুল কিনারা। উফফ খুব বিরক্ত লাগছে আমার,,খুব। নাহ এখন এসব ভাবার সময় না। ইশ কি উত্তপ্ত ওনার শরির। আমার হাত আর 2 মিনিট ওনার বুকের ছোয়ায় থাকলে গলেই যাবে।কিন্তু উনি তো হাত ছাড়ছেই না। কিছুক্ষণ চেষ্টা করার পর সফল হয় শান্তনা তার হাত ছাড়াতে। আমি তো এই বাড়ির কাউকে সেভাবে চিনি না আজমল আংকেল কে ছাড়া। কাউকে ডাকার থেকে বরং আমি মেঘ ভাইয়ার মাথায় জলপট্টি দেই । যেই ভাবা সেই কাজ। শান্তনা চট করে একটা পাত্রে পানি নিয়ে রুমাল ভিজিয়ে মেঘের মাথায় দেয়।কিছুক্ষণ জলপট্টি দেওয়ার পর ওযু করে এসে ফজরের নামাজ পড়ে নেয় শান্তনা। নামাজ শেষে মেঘের কাছে যায় এবং গায়ে হাত দিয়ে জ্বরের মাত্রা দেখে নেয়।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আলহামদুলিল্লাহ,,,জ্বর অনেকটাই কমে গেছে।আরেকটু জলপট্টি দেই তাহলে পুরো জ্বর নেমে যাবে বলেই মেঘের মাথা নিজের কোলে নিয়ে নেয় শান্তনা এবং 2 মিনিট পর পর রুমাল ভিজিয়ে মেঘের কপালে দেয়।কিছুক্ষণ পর শান্তনার চোখ লেগে আসে আর সে ঘুমিয়ে যায়।

রথি,,, এই রথি উঠে পরো সকাল 8 টা বেজে গেছে।

ঘুমাতে দাওনা সামির।আমি 10 টা ছাড়া উঠতে পারবো না।

কিন্তু বাড়ির সবাই কি ভাববে বলো? নতুন বউ তুমি।

প্লিজ বাবু একটু ঘুমাই?

ওকে,,,,আমি তাহলে নিচে যাচ্ছি।

ওকে।
সামির রথির কপালে চুমু দিয়ে নিচে চলে যায়।

হাহ,,,রথি এখন রাজরানী।আর পাঁচটা মেয়ের মতো হেশেল সামলানোর মেয়ে এই রথি না।খাব ঘুমাবো ঘুরে বেড়াবো এটাই আমার লাইফ হবে এখন থেকে।খুব ঘুম পাচ্ছে। বড় একটা হাই তুলে ঘুমিয়ে যায় রথি।

ভোরের আলো জানালার কাঁচ ভেদ করে মেঘের মুখে পড়তেই সে ধিরে সুস্থে চোখ মেলে তাকায়। চোখ খোলা মাত্র মেঘ তার মাথা শান্তনার কোলে আবিষ্কার করে।শান্তনার বাম হাত মেঘের গলা জড়িয়ে আছে। মেঘ এক ধ্যানে শান্তনার ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। শান্তনা কিছুটা ঝুকে আছে যার জন্য ওর নিশ্বাস মেঘের কপালে গিয়ে বারি খাচ্ছে।মেঘ এক এজানা ঘোরের মাঝে চলে যায়। মেঘ তার ডান হাত দিয়ে শান্তনার গাল স্পর্শ করায় শান্তনা নড়েচড়ে উঠে এবং ঘুম ভেঙে যায়। মেঘ দ্রুত তার হাত শান্তনার গাল থেকে সরিয়ে নেয়।

আপনি উঠে গেছেন? বাহ এখন গায়ে একটুও জ্বর নেই(মেঘের কপালে হাত দিয়ে)

মানে? আগে বলো আমার মাথা তোমার কোলে কেন? আর এটা এখানে কেন(ভেজা রুমালটা দেখিয়ে)

আপনার খুব জ্বর আসছিল। তাই,,,,,(মাথা নিচু করে)

কখন?

জানি না কখন কিন্তু 5 টার দিকে আমি টের পাই।তারপর জলপট্টি দেই।

কিহ 5 টা!!? আর এখন বাজে প্রায় সাড়ে 10 টা। তুমি এতক্ষণ আমার পাশে বসে জলপট্টি দিয়েছো?

না মানে,,,,আপনার শরির জ্বরে পুড়ে যাচ্ছিল তাই ভাবলাম,,,,

হুম বুজলাম। পিচ্চি মেয়েটা তাহলে বড় হয়ে গেছে।

আবার পিচ্চি বললেন? বলেই মেঘের মাথাটা তার কোল থেকে সরিয়ে উঠে দাঁড়াতে যায় শান্তনা কিন্তু পারেনি। দীর্ঘসময় ধরে বসে থাকায় ওর পা অবশ হয়ে আসে যার ফলে পড়ে যেতে নেয়। মেঘ ধরতে যাবে তার আগেই শান্তনা মেঘকে নিয়ে খাটের উপর পড়ে যায়। শান্তনা ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। মেঘ শান্তনার এক্সপ্রেশন দেখছে আর মিটিমিটি হাসছে।

হাসছেন কেন?

তুমি প্রমাণ করে দিলে যে তুমি এখনো পিচ্চি।

কিভাবে?

এইযে নিজেকে সামলাতে পারোনা।

আপনি?? মেঘের উপর থেকে উঠে একটা বালিশ নিয়ে মেঘকে মারতে শুরু করল।

আরে আরে মারবেই যখন তাহলে আমার সেবা করলে কেন? শান্তনা কোনো কথাই শুনছে না ওর মতো মেরেই যাচ্ছে।

ভাইয়া ভাবি দরজাটা খোল।আর কত ঘুমাবি। মা ডাকছে তোদের।
সামিরার কথায় থেমে যায় শান্তনা।

কে এসেছে?

আমার বোন সামিরা।

গতকাল আমাদের নিয়ে যে মজা করেছিল সে তাইনা।

হুম,,,, খুব পাকা এবার ক্লাস 9 এ পা রেখেছে।

ভাইয়া ভাবিকে ছাড় দরজা খুলতে দে।অনেক romance করে ফেলেছিস।

দেখেছো কতটা ফাজিল।আসতে দাও ওকে একবার।ওর হচ্ছে।
শান্তনা তো এদিকে লজ্জায় শেষ।

দাঁড়াও আসছি। বলে শান্তনা দরজা খুলতে গেল।

বাবা এতক্ষণ লাগে দরজা খুলতে।তোমাদের জন্য কফি এনেছি। সেই কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি।

সরি,,,কোথায় আমি তোমাদের জন্য কফি চা বানাবো।সেখানে আমি বেলা করে ঘুম থেকে উঠলাম।(মন খারাপ করে)

এরকম তো হওয়ার কথাই কাল বাসররাত ছিল তাই একটুতো লেট হবেই।তাইনা রে ভাইয়া(ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বললো সামিরা)

তোকে আমি? মেঘ এসে সামিরার কান টেনে ধরে।

আহ ভাইয়া ছাড়,,,,

নাহ ছাড়বো না বলে আরও জোড়ে টানলো।

ভাবি ভাইয়া কে বলো না আমার কান ছেড়ে দিতে।খুব লাগছে আমার।

ছেড়ে দিন না প্লিজ।
শান্তনার রিকুয়েষ্ট এ মেঘ সামিরার কান ছেড়ে দেয়।সেই সুযোগে সামিরা পালিয়ে যায়।

হা হা হা হা( শান্তনা হেসে দেয়)

তুমি হাসছো।

তো কি করবো বলে আবার হাসে।

তোমার হাসিটা বেশ সুন্দর পিচ্চি।
এবার শান্তনার হাসি থেমে যায়।

আমি নিচে গেলাম আপনি কফি খেয়ে স্নান করে নিয়েন বলে চলেই যাচ্ছিল,,,,

তুমি ও খাও,,,

না আমি কফি খাইনা বলে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে নিচে চলে যায় শান্তনা।

বাব্বাহ পিচ্চি লজ্জাও পায়,,,?বলেই বাকা হেসে কফির মগে চুমুক দেয় মেঘ।

কফি খেয়েছো মা?
সাবেরা খাতুনের কথায় শান্তনা তার দিকে তাকায়,,,কিছু বলতে যাবে তার আগেই,,,

সাহেরা আমার বউমারা ঘুম থেকে উঠেছে তো? তাদের হাতের নাস্তা খাবার জন্য সেই কবে থেকে অপেক্ষা করে আছি।(নিজ ঘর থেকে ড্রইংরুমে আসতে আসতে বললেন আজমল চৌধুরী)

এইতো আমার মেঘের বউ উঠে গেছে।

ইশ আংকেল আমার হাতে তৈরি ব্রেকফাস্ট খেতে চেয়েছেন আর আমি কিনা এতো বেলা করে ঘুম থেকে উঠলাম।(মনে মনে বলল শান্তনা)

তাই নাকি।gd morning মা।

gd morning….

তো মা এই বুড়ো বাবাটার আবদার পুরণ করবে না? তোমাদের হাতের রান্না খাওয়ার জন্য আমি আজ ব্রেকফাস্টই করিনি।তোমার শাশুড়ি মাকেও নাস্তা বানাতে নিষেধ করেছি।

আমাকে মাফ করবেন আংকেল।আমি এখনি যাচ্ছি।বলে কিচেনে যাবে কিন্ত,,,,

কোনো সমস্যা নেই মা কিন্তু আমাকে আংকেল বললে কেন? বাবা বলো,,,বাবা।

ইয়ে মানে,,, সরি বাবা(হাসি দিয়ে)

আর আমাকেও মা বলতে হবে আগে থেকেই বলে দিলাম।ভুল যেন না হয়।ওসব আন্টি ফানটি চলবে না।
সাহেরা খাতুনের কথায় শান্তনার মুখের হাসি ২ গুন বেড়ে যায়।

ঠিক আছে মা। কিন্ত মা আমি তো জানি না কিচেনটা কোথায়।

ফুলি ওকে কিচেনে নিয়ে যা।(কাজের মেয়েকে ডাক দিলেন সাহেরা খাতুন)

আইচ্চা ম্যাডাম। আহেন ছুডো ভাবি।

হুম চলো।

কিন্তু আমার সামিররের বউ কোথায় এখনও কি ওঠে নি সাহেরা?

না,,,,সামির বলেছে রথি মা নাকি ঘুমাচ্ছে।

ওহ,,,তাহলে আমার ইচ্ছেটা পুরণ হলো না।(উদাস হয়ে)

তাতে কি বাবা আমি আছি তো।

তাহলে আর কি তাড়াতাড়ি যা মা।আমি কিন্তু কিছু খাইনি এখনও।

আমি ইউ যাচ্ছি আর ইউ চলে আসছি বলে ফুলির সাথে কিচেনে যায় শান্তনা।

ঘুমটা বেশ ভালোই হলো।কফিটা তো ঠান্ডা হয়ে গেল।(কফির মগ হাতে নিয়ে)। নিশ্চয় সামির এনেছিল।কিন্ত সামির কোথায়?( রথি বিছানা ছেড়ে উঠতে যাবে তবে আবার বসে পড়ে)। নাহ একটু ফোন ঘেটে নি তারপর গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেব। ফোন হাতে নেওয়ার সাথে সামিরের এসএমএস দেখতে পায় রথি।এসএমএস টার উপর ক্লিক করে পড়া শুরু করে,,,,,,,আমার একটা জরুরি কাজ পড়ে গেছে তাই অফিস যাচ্ছি।তুমি ঘুম থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট করে নিও কেমন?দুপুরে এসে কথা হবে। বায় রথি সোনা উম্মাহ।

তাহলে জনাব অফিসে গিয়েছেন।খুব ভালো বাসে আমাকে সামির। এক কথায় ফিদা আমার উপর। হুম,,আমাকে এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে হবে।

তোমার হলো বউমা?(খাবার টেবিলে বসে আছে আজমল চৌধুরী আর সাহেরা।)

তুমি থামবে?

আসছি বাবা,,,আমার হয়ে এসেছে।

তুমি কি থামবে? মেয়েটাকে শান্তিতে একটু কাজ করতে দাও দেখি। বলি এতোই যখন ক্ষিদে পেয়েছিলো,,আমাকে কিছু বানাতে দিতে।যখন দেখলে বউমারা ঘুম থেকে উঠতে দেড়ি করছে।

এখন বলে লাভ নেই গো।যা হওয়ার তো হয়েছেই।

কি বলা বলি করছে পাপা,, মাম্মি?

তার আগে বলো তুমি স্কুলে কেন যাওনি আজ?

তুমি সামিরাকে কিছু বলো না গো। আমিই ওকে আজ স্কুলে যেতে নিষেধ করেছি। কারন নতুন বউদের সাথে যেন একটু কথা বলতে পারে।আর তাদের মনটা যেন একটু ভালো থাকে।

ঠিক করেছো একদম।

ঠিক আর হলো কোথায় পাপা?

কেন কি হয়েছে?

ভাবিস তো নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। ছোট ভাবিকে ডেকে তুলেছি কফি দিতে গিয়ে।আর বড় ভাবি তো এখনো ঘুমাচ্ছে। ভাইয়া ডাকতেও মানা করেছিল।তাই ডাক দেইনি কফি রেখে চলে আসছি।কোথায় ভেবেছিলাম সকালে উঠে ভাবিসদের সাথে কথা বলবো তা আর হলো না।

থাকনা মা। অন্য সময় ভাব করে নিয়ো কেমন।

ওকে পাপা।

যাও তুমি এখন তোমার ছোট ভাইয়া আর বড় ভাবি কে ডেকে আনো গিয়ে।

উফফ মাম্মি,,,তুমি সকাল থেকে কতবার উপর নিচ করিয়েছো হিসেব নেই।

এখন মার খাবে কিন্তু বলে দিলাম।

যাচ্ছি তো,,,ধুর ভাল্লাগে না বলে উপরে চলে যায়।

এদিকে রথি আর মেঘ দুজনেই নিচে নামার উদ্দেশ্যে নিজেরদের রুম থেকে বেরোনো মাত্র দুজন দুজনার চোখাচোখি হয়। পরক্ষণেই মেঘ তার চোখ নামিয়ে নিচে চলে যায়।

হাহ ভাব কতো।তোর জীবনের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছি। মিথ্যাবাদী জালিয়াত কোথাকার।আসছে রথিকে এড়িয়ে যেতে,,হুহ(মনে মনে)

তুমি কি ভেবেছো রথি? তোমাকে ছাড়া আমি শেষ হয়ে যাব? যদি তাই ভেবে থাকো তাহলে ভুল ভেবেছো।আমি তোমাকে দেখিয়ে দেব আমি কতটা হ্যাপি তোমাকে ছাড়া(মনে মনে)
কিরে ভাইয়া আজ কি ব্রেকফাস্ট করার নিয়ত নেই?

আমি তো যাচ্ছিলামই।

ওও তা বড় ভাবি কি আসছে?

তা আমি কিভাবে জানবো(খুব বিরক্তি নিয়ে বলল মেঘ।তারপর দ্রুত হেটে নিচে গেল।)

যাহ বাবা সামান্য কথায় এতো হাইপার হলো কেন?

কি ভাবছো এখানে দাঁড়িয়ে?

তেমন কিছু না। এইতো ভাবি তোমাকে আর ছোট ভাইয়াকে নিতে যাচ্ছিলাম।

ওহ,,,

এইতো এসে গেছে মাই সন।তোমার মুড অফ কেন মাই সন?

নাথিং ড্যাড। বলে খাবার টেবিলের চেয়ার টেনে বসে মেঘ। একে একে রথি,সামিরা এসে বসে পড়ে।সামির ও চলে আসে।সামির গিয়ে রথির পাশের চেয়ার টায় বসে।

সামির তুমি না দুপুরে আসবে বলেছিলে?

হুম কিন্তু অফিসের কাজ শেষ হয়ে গেল তাই ভাবলাম বাসায় চলে আসি।আমি তোমাকে ফোন দিয়েছিলাম তো।

আমি ফোন আমাদের রুমে রেখে আসছি তাই জানি না।
ওদের কথোপকথন শুনে মেঘের বুকের ভেতরটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে কিন্তু কোনোরকম নিজের কষ্টটাকে সংযত করার প্রয়াস করে যাচ্ছে মেঘ।
এদিকে শান্তনার ব্রেকফাস্ট বানানো শেষ।

এইতো আমার শান্তনা মা চলে আসছে নাস্তা নিয়ে।

শান্তনা আর ফুলির হাতে থাকা খাবারের বাটি। একে একে তারা সব টেবিলে রাখছে।

কতো কি বানালি মা।

তেমন কিছু না বাবা। একটু পাস্তা করেছি তার সাথে চিকেন ফ্রাই আর নানরুটি ব্যাস।

ওয়াও ভাবি যস।

অনেক করেছিস মা।আমার আর তর সইছে না। দাওতো মা একটু খেয়ে নেই।

সখ কতো।তোমার gastric প্রবলেম বেড়ে যাবে তাই কম খাবে বলে দিলাম।

আচ্ছা একদিন খেলে কি এমন হবে।

না তা হবে না।বেশি করলে খেতেই দেব না।

না,,, আমি একটুই খাব প্রমিস।
সবাই আজমল চৌধুরী আর সাহেরা খাতুনের ঝগড়া দেখে হাসছে। এরপর শান্তনা সবাইকে খাবার sarve করল।

তুমিও বসে পড়ো।(মেঘ বলল)।
শান্তনা বসতে যাবে তখন,,,

এখানে বসো(মেঘ তার পাশের চেয়ার দেখিয়ে বলল)

ওহো ভাইয়ায়া,,,,

এভাবে কেন বলছিস? ওর বউ ওর পাশে বসবে নাতো কার পাশে বসবে হুম?

আমি কি কিছু বলেছি মাম্মি।

আহ খাবার সময় কি শুরু করেছিস সামিরা।তোমাকে বসতে বলেছি শান্তনা।(ধমক দিয়ে)
শান্তনা এতক্ষণ লজ্জা পাচ্ছিল কিন্তু মেঘ রেগে যাওয়ায় ভয় পেয়ে তড়িঘড়ি করে ওর পাশে গিয়ে বসে।

সবাই খাওয়া শুরু করল।

সবার আগে আজমল সাহেব বলে উঠে চমৎকার রান্না হয়েছে।ঠিক তোমার শাশুড়ীর মতোই হয়েছে মা।

আমার ও কিন্তু খারাপ লাগেনি ছোট বউমা।

ওয়াও ইয়াম্মি হয়েছে ভাবি।

ধন্যবাদ সবাইকে।

রান্নাটা বেশ ভালোই হয়েছে,,,পুরো restaurant এর খাবাবের মত।কি বলো রথি?

ঠিক বলেছো সামির।আর শান্তনা ছোট থেকেই আম্মুকে রান্না বান্নায় হেল্প করত। সেই থেকে শিখে গেছে রান্নাটা।

আমার ছোট বউমা তো আমার আবদার পুরন করেছে এবার তোমার পালা বড় বউমা।দুপুরের রান্নাটা তুমি করবে আজ।

কিহ?!আমি? আমিতো শুধু নুডুলস রান্না করতে পারি। তাও দু একবার করেছিলাম,,,ভালো হয়নি তেমন।এছাড়া তো কিছু পারিনা বাবা।

আপু আমি আর তুই মিলে করে ফেলবো টেনশন নিস না।

তাহলে ঠিক আছে।

বেশি বলে মেয়েটা। তুমি কেন রান্না করবে হুম? যাকে বলা হয়েছে সেই রান্না করবে। বুঝেছো?
মেঘের ধমক খেয়ে চুপ করে যায় শান্তনা এবং মাথা নেড়ে মেঘের কথায় সায় দেয়।

প্রেম নেশা পর্ব ১+২

ফাজিল কোথাকার আমার বোন আমাকে হেল্প করবে তাতে তোর কি(মনে মনে বলল রথি)।
কিন্তু দেবরজি আমার বোন ও। আমাকে হেল্প তো করতেই পারে তাইনা।

তা ঠিক ভাবিজি। কিন্তু ও এখন আমার ওয়াইফ আমি যা বলবো ও তা শুনতে বাধ্য।got it?

কিন্তু দেবরজি তোমার প্রেবলেম কি?

জানি না। কিন্ত শান্তনা আপনাকে হেল্প করবে নাহ।এটাই শেষ কথা।

আরে আরে থাক ঝগড়া করিস না তোরা। থাক বড় বউমা,,তোমাকে রান্না করতে হবে না।

Thanks বাবা।বলে নিজের রুমে চলে যায় রথি। রুমে এসে দরজাতে লাথি মারে রথি। রথির সাথে টেক্কা দেওয়া তাইনা।রথি কে? তোকে এর জবাব দিতে হবে এই বলে রাখলাম।

শান্তনা তুমি উপরে আসো আমার একটা কাজ আছে।
শান্তনা মাথা নাড়িয়ে সায় দিল।কিন্তু ভয়ে কিছু বলেনি।যদি আবার ধমক দেয় সেই ভয়ে।মেঘ উপরে যায় শান্তনাও ওর পিছু পিছু যায়।

সামান্য একটা বিষয় নিয়ে কি থেকে কি হয়ে গেল(সাহেরা বলল)

ঠিক বলেছো সাহেরা।সামির তুমি গিয়ে দেখো বউমার রাগ কমে কিনা।

হুম,,,বলেই সামির নিজের রুমে চলে যায়।

প্রেম নেশা পর্ব ৫+৬