প্রেম নেশা সিজন ২ পর্ব ৩+৪

প্রেম নেশা সিজন ২ পর্ব ৩+৪
শান্তনা আক্তার

মেঘ শান্তনাকে নিয়ে যখন তার বাড়িতে প্রবেশ করছিল,তখন শান্তনার চোখ আটকে যায় ধরা জিল্লুর রহমানের দিকে।শান্তনা দেখল জিল্লুর রহমান খুব আনন্দের সহিত গাড়ি মুছছে।শান্তনা একমুহূর্ত দাঁড়িয়ে না থেকে দৌঁড়ে গিয়ে জিল্লুর রহমানকে আব্বু বলে জরিয়ে ধরে।মেয়েকে দেখে জিল্লুর রহমানওটা বেশ অবাক হয়ে গেলেন।সাথে সাথে বলে উঠলেন,,,,

কিরে মা তুই এখানে কি করে এলি?
জিল্লুর রহমানের করা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো সাহস শান্তনার হচ্ছে না।তাই চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে ও।শান্তনাকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিল্লুর রহমান পুনরায় প্রশ্ন করে বসে,,,,,কথা বলছিস না কেন?তুই এখানে কিভাবে আর কেন এলি?

আসলে আব্বু,,,শান্তনাকে পুরো কথাটা শেষ করতে না দিয়ে মেঘ বলে ওঠে,,,,

শ্বশুরআব্বু আপনি দয়া করে একটু ভেতরে আসুন আমি সবাইকে সব ক্লেয়ার করে বলছি।
মেঘের মুখে শ্বশুরআব্বু নাম শুনে জিল্লুর রহমানের বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল।না চাইতেও তার মনে এক অজানা ভয়ের সৃষ্টি হলো।তারপর মেঘ যা করলো তাতে তার ভয় যেন আরও তীব্র আকার ধারণ করল।কারণ মেঘ দিয়ে শান্তনার হাত ধরে বলে,,,

চলো বউ আমরা ভেতরে যাই।তারপর শান্তনার হাত ধরে টানতে থাকে।দুকদম যেয়ে থেমে যায়,,পিছনে ফিরিয়ে বলে,,,শ্বশুরআব্বু আপনি দাঁড়িয়ে কেন?ভেতরে আসুন বলে আবার সামনের দিকে যেতে থাকে শান্তনাকে নিয়ে।জিল্লুর রহমান লজ্জায় ভেতরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না।তবুও এক পা দু পা করে ভেতরে প্রবেশ করলেন।ইতোমধ্যে মেঘ বাপি দাদিয়া বলে ডাকা শুরু করলো।মেঘ দু তিনবার ডাকতেই ওর দাদি মৌরি অবরয় কিচেন থেকে বেরিয়ে আসলেন।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

কি হয়ে আমার দাদু ভাইয়ের?ক্ষুধা পেয়েছে বলতে বলতে হঠাৎ চুপ হয়ে গেলেন।মেঘের পাশে শান্তনাকে দেখে বলে উঠলেন,,,দাদুভাই শান্তনা তোমার সাথে কেন?

মাই সুইট দাদিয়া,,একটু ওয়েট করো বাপিকে আসতে দাও তারপর বলছি।
মৌরি অবরয়ের মুখে শান্তনা নিজের নাম শুনে প্রথমে অবাক হলেও পরে ভাবে হয়তো তার আব্বু বলেছে তাদের ওর নাম।এদিকে রুহুল অবরয় সিড়ি বেয়ে নামতে নামতে বললেন,,,

কি হয়েছে মাই সন?শান্তনার দিকে চোখ পড়তে সেই একই প্রশ্ন,,,তোমার পাশে জিল্লুরের মেয়ে কেন?

ও এখন এ বাড়ির বউ বাপি।
বউ কথাটা শুনে সবাই যেন বৈদ্যুতিক শকের মতো চমকে উঠল।

বউ মানে?তুমি কি বলতে চাও(রাগি দৃষ্টিতে বললেন রুহুল অবরয়)

কি বলছো এসব দাদুভাই?

যা বলেছি সত্যি বলেছি দিদিয়া।শান্তনা এখন থেকে তোমার নাতবউ।আমি আর শান্তনা একে অপরকে ভালবাসি।তাই আজ আমরা বিয়ে করে নিয়েছি।

বিয়ে করেছো মানে?একে অপরকে যদি ভালোই বাসো তাহলে আমাদের সকলকে কেন জানালে না?(রুহুল)

আসলে আপি আমরা ভেবেছি তোমরা কেউ মেনে নেবে না আমাদের সম্পর্কটা তাই আমরা এভাবে কাউকে না জানিয়েই বিয়ে করে নেই।

এটা তুমি ঠিক করোনি দাদুভাই।

মা তুমি ওকে আমার সামনে থেকে চলে যেতে বলো।

বাপি তুমি যদি চাও আমি আমার বউকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যাই তাহলেও আমি রাজি তবে শান্তনাকে আমার থেকে আলাদা হতে দেবনা।

খবরদার রুহুল,,তুই যদি আমার দাদুভাইকে বের করে দিস তাহলে আমিও বাড়ি ছেড়ে চলে যাব আমার দাদুভাইয়ের সাথে বলে রাখলাম।

মা তুমি কি বলছো এসব?তোমার দাদুভাই ভুল করেছে।আর তুমি কিনা ওকে শাস্তি দেওয়ার বদলে প্রশ্রয় দিচ্ছো?

হ্যাঁ দিচ্ছি।কারণ আমার দাদুভাই যা করেছে ভালো করেছে।নিজের ভালবাসার মানুষকেই তো বিয়ে করেছে।তুই কি করেছিলি হুম?তুই ওতো নাবিলাকে(মেঘের মা) ঠিক এভাবেই কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করে এনেছিলি।আমি আর তোর বাবা তো তোকে কিছুই বলিনি।বরং তোদের বরণ করে ঘরে তুলেছিলাম।তুই কি ভুলে গিয়েছিস মেঘের মা সামান্য রিকশাওয়ালার মেয়ে ছিল?যার রিকশায় তোর বাবা অফিস যাওয়া আসা করতো?

রুহুল কিছুক্ষণ ভেবে তারপর বললেন,,,,, তুমি ঠিক বলেছো মা।আমাকে মাফ করে দাও।আমি মেনে নিলাম জিল্লুরের মেয়েকে আমার পুত্রবধূ হিসেবে

কিন্তু স্যার আমি তো মানতে পারলাম না।(জিল্লুর)

কেন জিল্লুর?

জিল্লুর তার ভেজা চোখ গুলো মুছে বলল,,,যে মেয়েকে ছোট থেকে বড় করে তুললাম সেই মেয়ে তার বাবা মাকে না জানিয়ে নিজ খেয়াল খুশি মতো বিয়ে করে নিল!!আমি এরকম কিছু আশা করিনি স্যার।আজ আমার সব আশা ভরসা মাটির সাথে মিলিয়ে গেল।

কেঁদে কিছু হবেনা জিল্লুর।আমি মেনে নিয়েছি ওদের তুমিও মেনে নাও।

না স্যার।আমি মানতে পারবো না।আপনারা বড়লোক মানুষ আর আমরা গরিব,আপনাদের সাথে আমাদের যায়না স্যার।

এভাবে বলবে না বাবা।আমরা তোমাকে কখনো ড্রাইভার ভাবিনি।বরং আমাদের পরিবারের একজনই ভেবেছি সবসময়।তাই বলছি তুমি ছোট বড়োর ভেদাভেদ না করে মেনে নাও ওদের(মৌরি)

জিল্লুর রহমান কিছু না বলে শান্তনার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আর বলে,,,তুই কি সত্যি মেঘকে ভালবেসে বিয়ে করেছিস?

শান্তনা চোখ বন্ধ করে বলে দেয় হ্যাঁ।কারণ ও যদি সত্যিটা বলে তাহলে মেঘ ওর কাছে মানুষের ক্ষতি করে দেবে।এজন্য মেঘের সেখানো কথা বলার জন্য রাজি হয়ে যায় ও।

ওহ,,,আমার জানা হয়ে গেছে সব।আজ থেকে তুই আমার মেয়ে না।আমার মেয়ে আজ এখন থেকে মারা গেছে।বলি দিয়ে দিলাম আমি আমার মেয়েকে নিজের হাতে।

আব্বু,,,,,

চুপ,,,মরে গেছে তোর আব্বু।আর কখনো তুই তোর এই পোড়া মুখ আমাকে দেখাবি না।যদি আমার সামনে আসিস তো আমার আর তোর মা ভাইয়ের মরা মুখ দেখবি তুই।

নাহ তুমি এভাবে বলোনা বলে উচ্চস্বরে কেদে দেয় শান্তনা।

জিল্লুর তুমি কি পাগল হয়ে গেছ?

জ্বি স্যার আমি পাগল হয়ে গেছি।আর আমি আপনার ড্রাইভার নই।আমি ছেড়ে দিলাম আপনার চাকরি।ভালো থাকবেন স্যার।

তুমি তো আমাকে তোমার মায়ের মতো মনে করো।সেই খাতিরে বলছি,তুমি এরকম কঠিন সিদ্ধান্ত নিওনা।

আপনি আমার মায়ের মতো না,আমার মা ই।কিন্তু আমার কিছু করার নেই আমি রাখতে পারলাম না আপনার কথা বলে বেরিয়ে যায় জিল্লুর রহমান।তাকে অনেকবার ডাকে রুহুল এবং মৌরি কিন্তু জিল্লুর রহমান পিছে ফিরে তাকান না। উনি চলে যান আপন মনে।
রাতে,,,মেঘ তার নিজ হায়ে বাসর সাজাচ্ছে ওর আর শান্তনার।আর ওদিকে মৌরি নিজ হাতে শান্তনাকে বউ সাজে সাজাচ্ছে।তার যে বড় শখ ছিল মেঘের বউকে নিজ হাতে সাজানোর আজ তার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হল।শান্তনাকে সাজিয়ে মৌরি তার রুম থেকে মেঘের রুমে এনে খাটের মাঝে বসিয়ে দেয় তার তারপর শান্তনার মাথার ঘোমটা সামনের দিকে টেনে দেয়।এর পর পরই মেঘ ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে চেঞ্জ করে।মেঘকে দেখে মৌরি বলে ওঠে,,,

দিয়ে গেলাম তোমার বউকে দাদুভাই।বউয়ের মুখ দেখে ফিদা হয়ে দাদিয়ার থেকে বেশি ভালো টালো বেসে ফেলোনা যেন।মেঘ মৌরির কথায় মুচকি হাসি দেয়।মৌরি এবার শান্তনাকে বলে,,,আমার ভালবাসার মানুষটাকে কিন্তু তোমার হাতে তুলে দিলাম নাতবউ।বেশি আদর দিয়ে আমার দাদুভাইটাকে পাগল করে দিওনা যেন।শান্তনা মৌরির কথার কোনো রেসপন্স করলো না।যেভাবে আছে ঠিক সেভাবেই বসে রইলো।মৌরি চলে গেলে মেঘ দরজা লাগিয়ে খাটে গিয়ে বসলো।ঘোমটা তুলতেই,,,,,,,

মেঘ ঘোমটা খোলা মাত্রই শান্তনা মেঘের গলা টিপে ধরল।শান্তনার এরুপ কান্ডে মেঘ পুরো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল।
শান্তনা তুমি কি করছো?

যা করছি ঠিক করছি।আপনি আমার পরিবার কেড়ে নিলেন,আমার সুখ শান্তি কেড়ে নিলেন,আমার ভালবাসার মানুষ,,,,,,ভালবাসার মানুষের কথা উচ্চারণ করতেই শান্তনার কুশালের কথা মনে পড়ল।তারপর বললো,,,
কুশাল কোথায়?আমাকে কুশালের সাথে কথা বলিয়ে দিন।
কুশালের নামটা শোনা মাত্র মেঘ শান্তনার হাত ওর গলা থেকে এক টানে সরিয়ে ফেলে।মেঘ কোনোমতে নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে বলে,,,

তোমাকে না বলেছি ওই নাম তোমার মুখে না নিতে ??

নেব,,নেব একশোবার নেব।হাজারবার নেব।কারণ আমার সব জুড়ে শুধু কুশাল আর কুশাল।
এবার মেঘ নিজের রাগকে আর কাবু করতে পারলো না।মেঘ স্বজোড়ে একটা চড় বসিয়ে দিল শান্তনার গালে।চড় খেয়ে শান্তনার কান্না যেন দ্বিগুন বেড়ে গেল।শান্তনাকে কান্না করতে দেখে মেঘেরও খারাপ লাগলো।
আমি সরি।আসলে আমি তোমাকে মারতাম না তুমি কুশালের নাম নিলে আমার মাথা কাজ করে না।রক্ত উঠে যায় মাথায়।

আমি কেন নেবনা কুশালের নাম?আপনি তো আমাকে বলেছিলেন আমি আপনার কথা মতো কাজ করলে আপনি কুশালকে ছেড়ে দেবেন।এখন কথার নড়চড় কেন করছেন?(কান্না মাথা কন্ঠে)

আমি তো কথার নড়চড় করিনি?সত্যি বলতে আমার লোকেরা কুশালকে কিছুই করেনি।জাস্ট একটু বেঁধে রেখেছিল।এতোক্ষণে ছেড়েও দিয়েছে ওকে।

আপনি যে সত্যি বলছেন তার প্রমাণ কি?

তুমি কি আমার কথা বিশ্বাস করছো না?

না,করছি না।বিশ্বাস করিনা আমি আপনাকে।

ঠিক আছে আমি তোমাকে প্রমাণ দিচ্ছি।তুমি আমার ফোন থেকে কুশালের নাম্বারে কল দাও।বলে মেঘ ওর ফোন শান্তনার হাতে গুজে দিল।
শান্তনা মেঘের দিকে এক ঝলক চেয়ে ফোনের দিকে তাকালো।তারপর ডায়ালে গিয়ে কুশালের নাম্বারে কল দিল।কুশালের কন্ঠ পেয়ে প্রায় এক মিনিট শান্তনা ফোন টা কানে গুজে রাখলো।এরপর মেঘ ফোনটা শান্তনার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে কল কেটে দিল।
কথা বলেছে কি কুশাল?

দিননা একটু কথা বলি ওর সাথে।

সেটা আর কখনোই সম্ভব না।তুমি কি ভুলে গেছো তুমি আমার বিয়ে করা স্ত্রী?

তাতে আমার কিছু আসে যায়না।আমি মানিনা এই বিয়ে।আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে কখনো মানতে পারবো না।

মানো না মানো সেটা তোমার সমস্যা।আমার নয়।আইন অনুসারে তুমি আমি হাসবেন্ড ওয়াইফ।আর আজ আমাদের বাসররাত।তাই আইন অনুযায়ী আমি আমার বউকে আদর করতে পারবো।স্বামীর অধিকার ফলাতে পারবো।(মুখে দুষ্টু হাসির রেখা টেনে বলল)
এদিকে শান্তনার কলিজার পানি শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে গেছে।কি হবে ওর আজকে?

দেখুন আপনি আমার অমতে আমাকে বিয়ে করেছেন।তাই আমাকে ছোঁয়ার অধিকার নেই আপনার।(অনামিকা আঙুল জাগিয়ে বলল)
মেঘ শান্তনার অনামিকা আঙুল নুইয়ে দিয়ে শান্তনার দুইবাহু ধরে ওকে শুইয়ে দিল।শান্তনা এবার চিৎকার দিতে যাবে কিন্তু মেঘের কান্ড দেখে অবাকের শেষ চূড়ায় পৌঁছে গেল ও।কারণ মেঘ শান্তনার উপর চাদর টেনে দিয়ে,একটা বালিশ আর কম্বল নিয়ে ডিরেক্ট বারান্দায় গিয়ে সোফার উপর শুয়ে পড়ল।শান্তনার সকল চিন্তা ধারা যেন পালটে গেল মেঘের এরুপ কাজে।ওর কাছে এই মেঘকে কেমন জানি অচেনা মনে হলো।নানান ভাবনা চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকলো শান্তনার মাথায়।এসব ভাবনার ছেদ হয় মেঘের কথায়।মেঘ বলল,,,

তোমার ছোট মাথায় বেশি প্রেসার না দিয়ে শুয়ে পড়ো।রাত জাগলে চোখের নিচে কালো দাগ বসে যাবে।তারপর লোকে যখন বলবে মেঘ অবরয়ের বউকে পেতনির মতো লাগে তখন কিন্তু বিষয়টা ভালো দেখাবে না।
মেঘের কথায় শান্তনা খানিকটা লজ্জা পেয়ে গেল ঠোঁটের কোণে হাল্কা হাসি ফুটে উঠল ওর।পরক্ষণেই শান্তনার মনে পড়ে মেঘ ওর সব শেষ করে দিয়েছে।কেউ নেই ওর পাশে কেউ না।এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে যায় ও।
তুমি এতটা নির্দয় কিভাবে হতে পারলে?(মিলি বেগম)

হতে হলো মিলি,হতে হলো।আমি ওইরকম মেয়ের মুখ দেখতেও চাইনা।(জিল্লুর)

কিন্তু মেয়েটা তো আমাদেরই বলো।এভাবে কঠোর না হলেও পারতে।বাচ্চারা তো ভুল করবেই তাই বলে বাবা মাকেও কি ভুল করতে হবে?(কান্না করে)

ভুল যাতে না হয় তাইতো ওকে এতো বড় শাস্তি দিয়ে আসলাম।

দয়া করে তুমি তোমার কথা ফিরিয়ে নাও।আর আমার মেয়েকে মাফ করে দাও।

কখনোই না।আমি যা বলি তা কখনো ফেরাইনা জানোই তো তুমি।আর ও আর আমাদের মেয়ে না।ভুলে যাও তুমি যে আমরা কোনো মেয়ে সন্তানের জন্ম দিয়েছিলাম।আমাদের শুধু একটাই ছেলে।কথাটা যেন মাথায় থাকে। এ নিয়ে আর একটা কথাও বললে আমি চলে তোমাদের ছেড়ে এই বলে দিলাম।

এভাবে বলোনা গো তুমি যা বলবে তাই হবে।তাও এসব কথা মুখে এনোনা।

আনবো না তবে তোমাকে একটা কথা দিতে হবে।

কি কথা?

কখনো ওই মেয়েটা তোমাকে মা বলে ডাকলে ওর ডাকে সাড়া দেবে না।যদি কখনো মমতার জলে ভেসে যাও তাহলে ওইদিন আমি দুনিয়া ছেড়ে চলে যাব।

নাহ!!আমি কখনো শান্তনাকে আমার মেয়ে বলে পরিচয় দেব না। কখনো না বলে কাঁদতে কাঁদতে মিলি বেগম চলে গেলেন সেখান থেকে।
ঘুম থেকে উঠেই শান্তনার চোখ যায় ঘড়ির কাটার দিকে।সময়টা দেখে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় তড়িঘড়ি করে।ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ফজরের নামায আদায় করে নেয় শান্তনা।নামায শেষে জায়নামাজ তুলতেই বারান্দায় চোখ যায় শান্তনার।শান্তনা দেখলো ওর সাথে সাথে মেঘও নামায শেষ করে উঠেছে। ।
উনি কখন উঠলেন?আমার আগে উঠেছে নাকি?আমি তো ওয়াশরুমে ছিলাম তাহলে উনি ওযু কোথায় করলেন?এসব প্রশ্ন শান্তনা মনে মনে আওড়াতে থাকে।

কি ভাবছো?মেঘ শান্তনার সামনে এসে বলল।

কোথায়?কি ভাববো আমি?

আমি জানি কি ভাবছো।

কি ভাবছি?

প্রেম নেশা সিজন ২ পর্ব ১+২

এটাই যে আমি কখন উঠেছি? ওযু কোথায় করেছি?তাইতো?
শান্তনা কিছু না বলে মাথা নিচু করে ফেললো।শান্তনার থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে মেঘই বলে ওঠে,,,আমি তোমার আগে উঠে ওযু করে তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।

আমার জন্য কেন?

কারণ আমার ইচ্ছে ছিল বিয়ের পর আমি আমার স্ত্রীর সাথে নামায আদায় করবো।আজ আমার ইচ্ছে পূরণ হলো।
শান্তনা মেঘের কথায় কি রিয়েকশন দেবে ভেবে পাচ্ছে না।শান্তনা কথা ঘুরিয়ে বলল,,আপনাদের কিচেনটা কোথায়?

কেন?

আসলে আমার সকালে চা খাওয়ার অভ্যাস তাই,,,,

নিচে গিয়ে আমাদের কাজের মেয়ে ফুলিকে ডাক দিলেই ও নিয়ে যাবে।আমার আর জন্য বাপির জন্য কিন্তু কফি করবে।আর দাদিয়ার জন্য চা।পারবে তো?

কেন পারবো না?

পিচ্চি মানুষ তো তাই।

কে পিচ্চি মানুষ হুম?

আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটি।

আচ্ছা ঠিক আছে আমি দেখিয়ে দেব আমি পিচ্চি নাকি বড় বলে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে নিচে চলে আসে।এদিকে মেঘ বিশাল খুশি।ওর সব ইচ্ছে একটা একটা করে পূরণ হচ্ছে বলে।

প্রেম নেশা সিজন ২ পর্ব ৫+৬