প্রেম নেশা সিজন ২ পর্ব ৫+৬

প্রেম নেশা সিজন ২ পর্ব ৫+৬
শান্তনা আক্তার

শান্তনা ফুলির সাথে গল্প করছে আর ওর থেকে কফি বানানো শিখছে।বানাচ্ছে শান্তনাই তবে ফুলি ওকে বলে বলে দিচ্ছে।ওতো আগে কখনো বানায়নি তাই।কফি বানানো হলে শান্তনা বলে ওঠে,,,
ধন্যবাদ ফুলি।আচ্ছা তোমার নাম ফুলি কেন?

আসলে নুতান ভাবি আমার রাগ হইলে আমি ফুটকার মতো ফুইলা যাই।তাই আব্বা আমার নাম ফুলি রাখছে।

ফুটকা আবার কি?

ফুটকা চেনেন না।ফুটকা মানে বেলুন।

ওহ,আচ্ছা।তুমি এ বাড়িতে কতোদিন কাজ করছো?

আমার যহন ১২ বছর আছিলো তহন থেইক্কা।আব্বা মরার পর থেইকা আম্মা আমারে এখানে দিয়া দিছে।যেন খাইয়া পইড়া বাঁচতে পারি।
এহন আমার বয়স ১৭ তো হইছে।তইলে আমি ১৩,১৪,১৫,১৬,১৭,,,১,২,৩,৪,৫ মুট ৫বছর ধইরা আছি এইহানে।(হাত গুনে বলল)

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

হাহা,,তুমি তো অংকে খুবই ভালো।

আমি ছয় লাগাত পড়ছি যে হেইল্লাইগা।

ওহ,,গুড??
এরই মাঝে মৌরি এসে পড়ে রান্না ঘরে,,,
কি করছে আমার সতিন আর ফুলি রানী?

দাদি গো তুমি সতিন কারে ডাকলা?এউহানে তো নুতান ভাবি আছে।

ওকেই তো বলেছি।

ক্যান ক্যান?

বোকা মেয়ে তোকে বলেছিলাম না আমার মেঘের বউ মানে আমার সতিন কারণ আমি যে মেঘের প্রথম বউ।সেই দিক দিয়ে তোর নতুন ভাবি আমার সতিন হলো।

ও আইচ্ছা বুঝলাম এইবার।

কি গো সতিনী দাদিয়ার কথায় হিংসে হলো নাকি?

হিংসে কেন হবে?

এইযে তোকে আমার সতিন বললাম।

না দাদি।আমার একদমই হিংসে হয়নি।

সত্যি তো?

হুম সত্যি।

তাহলে তো ভালোই।তা কাল রাতে তোকে কটা চুমু খেল আমার দাদুভাই?
কথাটা শুনে শান্তনা বিষম খেল।

ভাবি পানি খান(ফুলি পানির গ্লাস এগিয়ে দিল)
শান্তনা ফুলির হাত থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে সবটুকু পানি ঢকঢক করে খেয়ে নেয়।

দেখেছিস ফুলি তোর নতুন ভাবি দাদিয়ার কথায় বিষম খেল।তারমানে কি জানিস?

ফুলিও মৌরির সাথে তাল মেলায়।
কি গো দাদি?

তার মানে মাখো মাখো ব্যাপার স্যাপার আছে বুঝলি?

না গো দাদি বুঝাইয়া কও তো।

আরে বুঝছিস না,,নিঝুম জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে দুজনে গল্প করি।(গান গেল হালকা কোমড় দুলিয়ে)

দাদি গো তুমি নাচ গান না দেহাইয়া কওতো ভালা কইরা।

তোমরা কথা বলো আমি গেলাম বলে শান্তনা বেরোনো মাত্র মেঘের সাথে ধাক্কা খেল।পড়ে যাবে কি তার আগে মেঘ ওর এক হাত দিয়ে শান্তনার কোমড় ধরে ফেলে।শান্তনা মেঘের হাতে উপর হেলান দিয়ে বড় বড় চোখ বের করে তাকিয়ে আছে মেঘের দিকে।মেঘও ওর মায়াবতীকে দেখছে এক ধ্যানে।এদিকে ফুলি আর মৌরি একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে আর মিটিমিটি হাসছে।নিরবতা ভেঙে মৌরি বলে ওঠে,,,

এবার বুঝলি তো ফুলি,আমার গানের মানেটা?

হ দাদি বুঝলাম।আমরা এহন এহান থেইকা যাইগা চলো।

তুই গেলে যা আমি একটু কাবাবে হাড্ডি হই বলে মেঘ শান্তনার কাছে গিয়ে বলে,,,আমার দাদুভাইয়ের কি বউকে ছাড়া ভালো লাগছে না।
মৌরির কথা শুনে শান্তনা তড়িঘড়ি করে মেঘের হাতের উপর থেকে উঠে পড়ে।

আসলে দাদিয়া বাপি আর আমি ওয়েট করে আছি কফির জন্য।জানোই তো আমাদের সকাল সকাল কফি খাওয়ার অভ্যাস।

তাইতো আজ তো খুব বেলা হয়ে গেছে।কিরে ফুলি তুই আজ এতো বেলা কেন করলি?

আসলে দাদি আমি নুতান ভাবিরে কফি বানানো শিকাইতাছিলাম।হেইল্লাগাই দেড়ি হইছে।
ফুলির কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথে শান্তনা বলে ওঠে,,,

সরি আমার জন্য ফুলিকে কেউ কিছু বলবেন না।কফি হয়ে গেছে চলুন আমি নিয়ে আসছি।

আচ্ছা তুই আয় তাহলে তারপর মেঘ মৌরি বেরিয়ে আসে কিচেন থেকে।
শান্তনা টেবিলে নাস্তাসহ কফি নিয়ে যায়।

মা আজ এতো দেড়ি কেন হলো ব্রেকফাস্ট করার সময় হয়ে গেল আর আমি কফি খেতে পারিনি।

হয়েছে হয়েছে,,কাল থেকে আর হবে না।একটা দিন হেরফের হলো কি তোর অবস্থা না দেখার মতো হয়ে গেল।আর একটা কথা না বলে চুপচাপ নাস্তা কর।রুহুল তার মাকে যমের মতো ভয় পায়।একটা ধমকেই চুপ হয়ে গেল।আর খেতে শুরু করল।

মা আজকের আলু পরোটা কে বানালো?

কেন কি হয়েছে?

একদম মেঘের মায়ের হাতের আলু পরোটার মতো হয়েছে।মেঘ তুই খেয়ে দেখ।

আমি তেলে ভাজা কিছু খাইনা বাপি।

একবার খেয়ে দেখ।
মেঘ আলু পরোটা ছিড়ে মুখে দিল।তারপর বললো,,,

ইয়েস বাপি তুমি একদম ঠিক বলেছো।সেম মমের মতো বানানো আলু পরোটার মতো হয়েছে।কে বানালো?

তোর বউ।
মেঘ শান্তনার দিকে চেয়ে দেখলো শান্তনা মুচকি হাসছে।তারপর বললো,,

তুমি দাঁড়িয়ে আছো কেন?তুমিও বসে পড়ো আমাদের সাথে।

হ্যাঁ মা তুমিও বসো।আজকে তুমি আমাকে খুশি করে দিলে।তোমার শ্বাশুড়ি মার কথা মনে করিয়ে দিলে।অসংখ্য ধন্যবাদ তোমায়। শান্তনা মুখে হাসির রেখা টেনে মৌরির পাশে গিয়ে বসে।

কিরে তুই আমার পাশে কেন বসলি?গিয়ে মেঘের পাশে বোস।

সমস্যা নেই দাদি।তুমি এখন কিছু উল্টো পাল্টা বলোনা প্লিজ।এখানে ওনার বাবাও আছে।মৌরির কানে কানে বলল।

মা তোমরা কি কানাকানি করছো বলোতো?

কিছু না তুই তাড়াতাড়ি খেয়ে অফিসে যা।

আজ থেকে আমি আর অফিসে যাবনা।

অফিসে যাবিনা মানে?

মানে মেঘ যখন বিয়ে করেছে এখন ওই সব কিছু সামলাক।সংসারের দায়ভার তো এখন ওকেই বুঝে নিতে হবে।আর কতদিন ঘুরে বেরাবে আর বাবার টাকা ওড়াবে বলো?

কিন্তু বাপি আমি কিভাবে কি করবো?how it’s possible?

সবই possible যদি তুমি চাও মাই সন।

একদম ঠিক বলেছে তোর বাপি।এতোদিন আমি তোকে প্রশ্রয় দিয়েছি তবে আর না এখন থেকে তোকেই সব সামলাতে হবে।

কিন্তু এতোসব আমি কিভাবে পারবো বলো?

আমি সব কিছু বুঝিয়ে দেব মাই সন।আর কখনো সমস্যা হলে আমি তো আছি তাইনা?

ঠিক আছে,তাই হবে।
তুমি এখন কি করবে ভেবেছো?চাকরি টাতো ছেড়ে দিয়ে আসলে (মিলি)

অন্য চাকরি খুঁজতে হবে মিলি।

ততদিন আমি পাশের বাড়ির খালার বাসায় ঝিয়ের কাজ করবো কি?এতে সাফিনের স্কুলের ফি টা উঠবে।

তুমি কি পাগল হয়েছো?আমি এখনো মরে যাইনি।আমি থাকতে তুমি অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজ করবে?না এটা আমি হতে দেবনা।তুমি দেখো কোনো না কোনো ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাবে।বলতে না বলতেই জিল্লুরের ফোন বেজে ওঠে।ফোন রিসিভ করে কানে দিল।
হ্যালো,,,

,,,,,,(ওপাশে)

জ্বি

,,,,,(ওপাশে)

ধন্যবাদ আমি আজই আসবো।বলে ফোন কেটে দিয়ে বলে মিলি দেখলে আমি বলেছিলাম না কোনো না ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাবে।তাই হলো।এখন একটা কোম্পানি থেকে কল আসছে।সেখানের বসের গাড়ি আমাকে চালানোর জন্য অফার করেছে।

তুমি কি বলেছো।

আজই যেতে বলেছে ওনারা।আমি রাজি হয়ে গিয়েছি।

খুব ভালো কথা।আল্লাহ আমাদের দিকে মুখ তুলে চেয়েছেন।নিরাশ করেনি আমাদের।

হুম।
Thanks আহনাফ তোর হেল্পের জন্য।(মেঘ)

Thanks বলার মতো তেমন কিছুই করিনি।বরং আমার তোকে thanks বলা উচিত।

কেন?

আমার একজন অভিজ্ঞ ড্রাইভারের খুব প্রয়োজন ছিল আমার।তুই আমাকে খুব বড় সাহায্য করলি।

তুই ওতো করলি।যাই হোক উনি কিন্তু আমার শ্বশুরমশাই হয়।কোনো প্রকার বাজে ব্যবহার করবি না ওনার সাথে।

তুই কি আমাকে চিনিস না আমি কেমন।
?

তুইতো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তোকে না চিনলে কাকে চিনবো বল?

বাই দ্যা ওয়ে,,,ট্রিট কবে দিচ্ছিস?

কিসের?

বিয়ে করলি ট্রিট দিবি না?

সব হবে,,এখন অফিসে যেতে হবে।

তুই আর অফিস?

আর বলিস না বাপি সব কিছু আমার উপর ছেড়ে দিল।

ভালো করেছে এখন বিয়ে করেছিস দায়িত্ব তো নিতে হবেই।

তুই ও বাপি দাদিয়ার মতো কথা বলছিস।
আচ্ছা দোস্ত পরে কথা বলবো এখন বায় বলে ফোন রেখে দেয়।তারপর মেঘ পেছনে ঘুরতেই শান্তনাকে দেখতে পেল।

শান্তনাকে পেছনে দেখে মেঘ বেশ ভয় পেয়ে গেল।মেঘ ভাবছে শান্তনা বুঝি ওর সব কথা শুনে ফেলেছে।সেটা জানতে প্রশ্নটা করেই বসে,,
তুমি কখন এলে?
উত্তরে শান্তনা বলে,,,,

মাত্রই এলাম।

আমার কোনো কথা শুনেছো কি?

সেভাবে শুনিনি।

তাহলে ঠিক আছে।

কি ঠিক আছে?

কিছু না।আমি এমনি বললাম।

ওহ,,আমি আপনাকে একটা কথা বলতে চাই।

একটা কেন?হাজারটা বলো আমি শুনতে প্রস্তুত।

আমি ডিভোর্স চাই।
নিমিষেই মেঘের মুখের হাসি মিলিয়ে গিয়ে রাগী লুক হয়ে গেল।

তুমি কি বললে??

আমি ডিভোর্স চাই,, বলতে দেড়ি মেঘ ঠেসে চড় মারতে দেড়ি করলো না।এতো জোড়েই মেরেছে যে শান্তনা তাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে মুখ থুবড়ে পড়ে।মেঘ শান্তনার থুতুনি ধরে একটু উঁচু করে বলে,,,

আজকে বললি বললি,,কিন্তু নেক্সট টাইম একই কথা যেন না শুনি তো মুখ থেকে।

কেন বলবো না হুম?কেন বলবো না?আপনি কেন বুঝতে পারছেন না,আমি আপনাকে ভালবাসি না।

ভালো না বাসলেও তুই আমারই।তুই আমার,শুধুই আমার।এই কথাটা মাথায় যায় না কেন তোর শান্তনার থুতুনি ধরে ঝারি মেরে বলল।

ঢুকবে না কখনো।আমি তো একজনকে মন দিয়ে ফেলেছি।নতুন করে কাউকে মনে জায়গা দেওয়া ইম্পসিবল।আমার মন আপনাকে কখনোই মেনে নেবে না।আপনি কেন বুঝতে চাইছেন না,আমি আপনার সাথে থাকতে চাইনা।আমার কথা না ভাবলেন,আপনার পরিবারের কথা ভাবেন।তারা তো ভাবছে আমি আর আপনি সুখে আছি থাকবো।কিন্তু এটা তো কখনোই হবার নয়।আমি তো আপনার সাথে সুখী নই।তাহলে কেন আপনার পরিবারের সাথে মিথ্যা সুখের অভিনয় করবো?কেনোই বা আমাকে তাদের সামনে বিশাল হাসি নিয়ে থাকতে হবে?তারা তো কোনো দোষ করেনি তাহলে কেন ঠকাবো আমি তাদের বলতে পারেন?

সব কিছু মেনে নিলেই তো তাদের ঠকানো হয়না।

সেটা আমি পারবো না।মরে গেলেও না।

না পারলে তুই তোর বাবা মা ভাই সবাইকে হারাবি।আশা করি তাদের ক্ষতি তুই চাসনা।

এভাবে ব্লেকমেইল করে আর কতো দিন বেঁধে রাখবেন আমায়?

যদি দিন না মারা যাব ততদিন।

তাহলে মরে যান আজই আর মুক্তি দিন আমায়।

আমি মরলে তুই খুব খুশি হবি তাইনা?

হ্যাঁ হবো।আপনি আমার বাবা মাকে আমার থেকে দূরে নিয়ে গেছেন আমার থেকে এমনকি আমার কুশালকেও।কুশালের নাম শোনা মাত্র মেঘ শান্তনার গলা চেপে ধরে,,,

তোকে কতো বলবো কুশালের নাম না নিতে।কতো বলবো ওর নাম তোর মুখে শুনলে আমার কলিজা ছিড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।তুই কি বুঝিসনা আমি তোকে কতটা ভালবাসি?তোর চোখে কি পড়ে না আমার ভালবাসা?
গলা চেপে ধরার কারণে শান্তনা মুখ দিতে কথা বলতে পারছে না।চোখ দিয়ে পানি পড়ছে শুধু।আর কিছুক্ষণ পর হয়তো মরেও যেতে পারে ও।ইতোমধ্যে হাত পা ছোটাছুটি করা শুরু করে দিয়েছে ও।এসব দেখে মেঘ তরিঘরি করে শান্তনার গলা থেকে ওর হাত সরিয়ে নিয়ে আসে।শান্তনা ফ্লোরে পরেই কাশতে থাকে গলা ধরে।
-আমাকে মাফ করে দাও শান্তনা।আমি তোমাকে,,দাঁড়াও পানি নিয়ে আসছি বলে পানি আনতে গেল।মেঘ এক গ্লাস পানি এনে শান্তনার সামনে ধরতেই শান্তনা গ্লাসটা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় আর বলে,,

আলগা ঢং দেখাচ্ছেন আমায়?প্রথমে মারবেন পরে দরদ দেখাতে আসবেন,এটাকে আপনি ভালবাসা বলেন?না মিস্টার মেঘ।এটাকে পাগলামো বলে।ভালবাসার সাথে এর কোনো কানেকশন নেই।আর কিছুক্ষণ গলা টিপে রাখতেন আমার, তাহলে মুক্তি তো পেতাম আপনার কবজা থেকে।মেরে দিন আমাকে।ছুড়ি,বটি কুড়াল যা দিয়ে পারেন টুকরো টুকরো করে দিন আমার দেহকে।মারুন আমায়।
মেঘ কিছু না বলে বেরিয়ে আসে রুম থেকে আর চলে যায় অফিসের উদ্দেশ্যে।ও বুঝতে পেরেছে শান্তনার সাথে কথা বাড়ালি ওর রাগ আরও বেড়ে যাবে।তাই কিছু না বলে বেরিয়ে পড়ে।
কিরে কুশাল ইনি আবার কে?শান্তনা কই?(রাফি)

বেবি শান্তনাটা কে?

প্রিয়া বেবি তুমি অন্য কিছু ভেবো না।শান্তনা হচ্ছে আমার পাতানো বোন।আমাকে ভাইয়া বলে ডাকতো।মাঝে মাঝে পড়া বুঝিয়ে দিতাম।

ও আচ্ছা।

কিরে তুই কি বলছিস শান্তনা তোর পাতানো বোন মানে?

আরে রাফি মিয়া তুমি মজা করো কেন হুম?তুমি আমার প্রিয়া বেবিকে আমার নামে মিথ্যা বলে ওর মনে সন্দেহের বীজ বপন করতে চাইছো তাইনা?কিন্তু আমার প্রিয়া বেবি তো তোমার জালে পা দিবে না।তাইনা প্রিয়া বেবি?

একদম তাই কুশাল বেবি।এসব লোক কোথ থেকে যে আসে কে জানে।আমি যাই তাহলে আমার কোচিং আছে।বায় বেবি।

বায় প্রিয়া বেবি।
প্রিয়া চলে গেলে রাফি কুশালের কলার টেনে ধরে বলে,,,

হারামি তুই মিথ্যা ক্যান কইলি?শান্তনা তোর কোন জন্মের বোন?

আরে মিয়া ওর কথা বাদ দাও।ওতো বিয়ে করে ভালোই আছে স্বামীর সাথে।আমি আর ওকে চিনি না।এমনিতেও ও গরিব মেয়ে।আর আমার থেকে দূরে দূরে থাকতো সবসময়।বিয়ে করে নিয়েছে ভালোই হয়েছে।

কবে বিয়ে করলো শান্তনা?

গতকাল করেছে।কিছু গুন্ডা দিয়ে আমাকে বেঁধেও রেখেছিল।

কেন?

সেটা ওই ভালো জানে।হয়তো ভেবেছে আমি ওর বিয়ে ভেঙে দেব।

তাই বলে তুই আরেকটা মেয়ে জুটাবি?

জুটাবো মানে?শান্তনার সাথে রিলেশন থাকাকালীন আমি প্রিয়ার সাথে রিলেশনে যাই।আমার আগে থেকেই ওই শান্তনা মেয়েটাকে সন্দেহ ছিল।তাই রিস্ক না নিয়ে প্রিয়া রিয়া সনিয়া এদের পটিয়ে রাখি।

মামা তুমিও কি চিজ।কতো মেয়েকে পটিয়ে ফেললা।আর আমি একটাও পারিনাই আজ পর্যন্ত।

সবই কপাল।চল তোকে পেট ভরে নাস্তা করাই। আজ প্রিয়া বেবি আমাকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছে।

আরে বাস,চলো মামা এখনই যাই।
শান্তনা দুপুরে ওর বাড়ির ফোনে কল দেয় ড্রইংরুমে থাকা টেলিফোন দিয়ে।ফোনটা কল বেগম রিসিভ করে।মায়ের গলা শুনে প্রাণটা যেন জুড়িয়ে এলো শান্তনার।ও যখনই কিছু বলতে তখনই কান্নার বেগটা যেন তীব্র গতিতে বেড়ে যাচ্ছে।ওদিকে মিলি বেগম হ্যালো হ্যালোই করে যাচ্ছে।
আরে কে ফোন করেছেন?কথা বলছেন না কেন?(ওপাশে)

মা আমি শান্তনা।(কান্নাজড়িত স্বরে)

কি তুই কেন ফোন দিয়েছিস আমাদের ফোনে?কোনোদিন ও ফোন দিবি তুই এই নাম্বারে।মরে গেছে তোর বাবা মা বলে ফোন কেটে দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে মিলি বেগম।
আম্মু কে ফোন দিয়েছে?আপু(সাফিন)

জানি না বাবা।তুমি স্কুল ব্যাগ রেখে এসো।

প্রেম নেশা সিজন ২ পর্ব ৩+৪

তুমি কাঁদছো কেন আম্মু?আপুর জন্য কষ্ট হচ্ছে?আপুকে নিয়ে আসো।কোথায় গেছে আপু?

তোমার আপু আর আসবে না বাবা।তুমি জামা বদলে আসো আমি তোমার জন্য নুডুলস বানিয়েছি।

নুডুলস!!আচ্ছা আমি যাচ্ছি।
এদিকে শান্তনা ফোনটা বুকের সাথে চেপে কেঁদেই চলেছে অনবরত।পিছ থেকে মৌরি ওর কাধে হাত রাখে।শান্তনা মৌরিকে দেখে কান্না থামিয়ে চোখ মুছে নেয়।

মায়ের জন্য মন খারাপ হচ্ছে তাইনা?মা কি বললো?

তেমন কিছু না দাদি।ওই আরকি একটু,,

থাক, আমি জানি তুই তোর মাকে ফোন করেছিস।আমার থেকে লুকানোর কিছু নেই।বল কি হয়েছে?

আম্মু আমাকে ফোন করতে মানা করেছে।আর বলেছে আমার বাবা মা মারা গেছে বলে আবার কেঁদে দেয়।মৌরি শান্তনাকে ওর বুকের সাথে জড়িয়ে বলে,,

সব ঠিক হয়ে যাবে দেখিস।তোর বাবা মা একদিন ঠিক তোকে আবার আগের মতো বুকে টেনে নেবে।তুই আবারও তাদের বাবা মা বলে ডাকতে পারবি(শান্তনার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল)।

প্রেম নেশা সিজন ২ পর্ব ৭+৮