প্রেয়সী পর্ব ২

প্রেয়সী পর্ব ২
নন্দিনী নীলা

” মধু ঠিক আছো?”
চিন্তিত কন্ঠে বলল রাহী। ওর হাতে পানির বোতল। যেটা সমুদ্র এগিয়ে দিয়েছে সামনে থেকে। মধুর গলার স্বর চেঞ্জ হয়ে গেছিল। ওরা তো ভয় পেয়ে গেছিল। জানালা খুলে দিতেই বাইরে থেকে হুর মুর করে শীতল বাতাস এসে মধুর গায়ে লাগতে লাগল।

মধু তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করে আছে। রাহীর হাত থেকে বোতল হাতে নিয়ে ঢকঢক করে অর্ধেক পানি খেয়ে বলল। ক্ষুধায় পেটের নাড়িভুঁড়ি হজম হয়ে যাচ্ছে। এদিকে লজ্জায় এই অপরিচিত শুভাকাঙ্ক্ষী দের এতো কিছু বলতেও পারছে না। একটা অপরিচিত মেয়েকে ঠিক ভাবে না চিনেই এতো সাহায্য করছে আবার অসুস্থ হয়ে বিপদে ফেলল। আর কত? পানি খেয়েই পেট ভর্তি করার চেষ্টা করে গেল।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

রাহীর দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে বলল,,” আমি ঠিক আছি আপু। খুব বিপদে ফেলে দিলাম তোমাদের তাই না।”
রাহী বলল,,” মোটেই না। তুমি চোখ বন্ধ করে থাকো। বেটার ফিল করবে।”
মধু চোখ বন্ধ করে ছিল হঠাৎ করে শব্দ করে গাড়ি থেমে যায় ও চোখ মেলে তাকায়।
ফাহাদ বলল,,” আমরা চলে এসেছি।”

মধু জানালা দিয়ে মাথা বের করে উঁকি মারল। সাদা কালারের একটা দুতালা বাসার সামনে গাড়ি থেমেছে। ওরা সবাই নেমে এল। মধু এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। গাড়িটা গ্যারেজে চলে গেল। রাহী ওকে সাথে নিয়েই হাটছিল। সমুদ্র ওদের পেছনে ছিল। হঠাৎ মধু হাঁটতে হাঁটতে স্লিপ কেটে পড়ে যেতে নেয়। পেছনে থেকে সমুদ্র দ্রুত পায়ে এগিয়ে মধুর বাহু শক্ত করে ধরে। মধু আচমকা ভয়ে চিৎকার করে উঠেছে। ওর চিৎকার শুনে ফুয়াদ, মিতুল, রাহী ও ফাহাদ সবাই চমকে পেছনে ঘুরে তাকায়। সমুদ্র মধুর হাত ধরে ওকে টেনে ধরে রেখেছে আর মধু চোখ বন্ধ করে শরীর ঝুঁকিয়ে রেখেছে। সমুদ্র এক টানে ওকে দাড় করিয়ে দিল সোজা করে। আর বলল,,” be careful.”

মধু ঠোট কামড়ে ধরে থরথরিয়ে কাঁপছে। পড়ে গেলে ওর কোমরের অবস্থা খারাপ হয়ে যেতো। অস্বস্তি ভরা চোখে একনজর তাকাল সমুদ্রের দিকে। সমুদ্র ওর দিকেই তাকিয়ে ছিল।
” ধন্যবাদ।”
বলেই মধু রাহীর পাশে গিয়ে দাঁড়াল। ওর হাত পা কাঁপছে একটা অপরিচিত পুরুষ ওর হাত ধরেছে ভাবতেই কেমন অস্বস্তি হচ্ছে।

” তুমি ঠিক আছো?” রাহী ওর হাত ধরে বলল।
” হুম।” মাথা দুলিয়ে বলল মধু।
মধু বসে আছে আলিশান বাসার ড্রয়িংরুমের সোফায়।‌ ওর হাতের কাছে একটা ছোট টেবিল তার উপর একটা পত্রিকা ও একটা পানের বাটি। এটা দেখেই ও চিনেছে কারণ ওর দাদির ও এমন পানের বাটি আছে। ও চোখ বড়ো বড়ো তাকিয়ে আছে এই বাসার ও ওর দাদির মতো পানখোর মানুষ আছে।

একটা বড় সোফা দুইটা ছোট সোফা। ও ছোট একটায় বসে আছে জড়োসড়ো হয়ে। ওর কোলের উপর কুশন বালিশ তার উপর লাভ ডিজাইন করা ও সেটাতেই আঙুল দিয়ে লাভ আঁকছে। ওর মাথার উপর একটা চকমকে ঝাড় বাতি টানানো ও ঘাড় পেছনের দিকে হেলিয়ে চোখ উপরে তুলে সেটা দেখল।

চোখের সামনে বিশাল বড় এলিডি টিভি। সেটাতে একটা গান চলছে। একটা কালো লম্বা দাঁড়ি ওয়ালা লোক মাথা নাচিয়ে পাগলের মতো গান গাইছে। অনেক জনপ্রিয় একজন শিল্পী কিন্তু এই মুহূর্তে তার নামটা মধুর মনে পড়ছে না। বাসার খুঁটি নাটি সব ও চেক করছে। ড্রয়িং রুম থেকেই একটু দূরে ডাইনিং টেবিল সেখানে ফলের ঝুড়ি দেখা যাচ্ছে। গ্লাস, চামচ ও প্লেট সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা। ফল দেখে ও জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিল। খাবার দেখে খিদে আবার মাথা চারা দিয়ে উঠেছে।

বাসার ভেতরে ঢুকতেই সবাই ওর দিকে ভূত দেখার মতো তাকিয়ে ছিল। একটা ছেলোয়ার কামিজ পড়া মহিলা তো সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন,,” তুই কি বিয়ে করে ব‌উ নিয়ে এসেছিস?”
আসলে এটা বলার ও যথার্থ কারণ আছে ফুয়াদ আগে আগেই ভেতরে চলে যায়। তার সাথে মিতুল ও ফাহাদ। মধু আর রাহী ছিল। ওর পেছনেই সমুদ্র ছিল। এজন্য তিনি ভেবেছিল ব‌উ সাজের মধুকে তার ছেলে বিয়ে করে এনেছে।
সেই মুহূর্তটা ছিল অবাক হ‌ওয়ার। ও বিষ্ময় এ বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিল। কথা বলতে ভুলে গেছিল। পাল্টা জবাব দেওয়ার আগে ফাহাদ এগিয়ে এসে বলে,,” মম ভাইয়া বিয়ে করবে কেন? কি যে বলো না।”

” তাহলে এই মেয়েটা কে? ব‌উ সেজে আমাদের বাসায় কেন এসেছে?”
মধু অসহায় মুখ করে তাকিয়ে ছিল। রাহী তখন বলল,,” বড় মা আমি তোমায় সব খোলে বলছি তুমি আগে আমাদের ভেতরে আসতে দাও।”

সমুদ্র ও তখন বলল,,” মম কি শুরু করলে!”
নাফিসা এখনো শান্ত হয়নি কিন্তু ছেলে মেয়েদের ভেতরে আসতে দিলেন। তারপর মধুকে এখানে বসিয়ে তিনজন কে নিয়ে কোথায় যেন চলে গেল। তারপর থেকে মধু চুপ করে বসে আছে। দুতালা থেকে কথার আওয়াজ আসছে। ও সেদিকে তাকিয়ে চোরের মতো উঠে দাঁড়ায়।

তারপর পা টিপে টিপে ডাইনিং টেবিলে এসে একটা কলা হাতে নিয়ে খেতে লাগে। খাওয়া শেষ করে আপেল হাতে নিয়ে না ধুয়ে একটা কামড় দেয়। নিজের জায়গায় ফিরে আসার জন্য পেছনে ফিরতে কারো শক্তপোক্ত বুকের সাথে জোরে একটা বাড়ি খায় কপালে। ওর মুখে তখনো আপেলের টুকরো ছিল। বারি খেয়ে চমকে উঠে। মৃদু আর্তনাদ করে বাম হাত কপালে নিয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়। ব্যথা পেয়ে মুখটা হা করে ফেলেছে।

আর মুখ থেকে আপেলের টুকরো নিচে পরে গেছে। আর ও দাঁত দিয়ে ঠোট কামড়ে ধরে চোখ মেলে তাকাতে চায়। চুরি করতে এসে ধরা খেয়েছে। ভয়ে ওর হৃদপিন্ড কেঁপে উঠে। প্রথম দিন‌‌ই এমন কান্ড করল এরা ওকে কি নির্লজ্জ মেয়েই না ভাববে ছিহ। একটা মিষ্টি পারফিউমের ঘ্রান নাকে আসছে মধুর। ও ভয়ার্ত চোখ মেলে তাকাতে পারছে না। কার কাছে এমন অস্বস্তিকর অবস্থায় পরল। ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।

ও শুকনো ঢোক গিলে দাঁতে দাঁত খিচে চোখ পিটপিট করে তাকায়। চোখের পাতা মেলে দেখতে পেল সাদা পাঞ্জাবি পরা ফুয়াদ শক্ত চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। ও ফুয়াদের লম্বাটে শক্ত মুখের গড়ন দেখে ভয়ে আরেকটা ঢোক গিলল। ফুয়াদ কপাল কিশ্চিৎ কুঁচকে ওর দিকে সন্দেহের চোখে তাকিয়ে আছে।
ভয়ে মধুর আত্না উড়ে যাবে এমন অবস্থা। মধু হাতের মুঠোয় শক্ত করে খামচে ধরে আছে আপেল। ওর চোখে মুখে ভয়, আতঙ্ক, বিরাজ করছে।

ফুয়াদ এর পরনে এখনো সেই সাদা পাঞ্জাবি তাই ও দেখেই চিনতে পেরেছে এই ছেলেটাকে ও প্রথমে ভূত ভেবেছিল। নিজের টিপিকাল চিন্তা ভাবনায় নিজেই জিভে কামড় দিল।
ফুয়াদ গমগমে গাঢ় গম্ভীর কন্ঠে বলল,,” who are you?? আমাদের বাসায় কেন ঢুকেছ তোমার মতলব কি? সত্যি করে বলো।” কিছুটা ধমক স্বরে বলল।

মধু ফুয়াদের নিচু স্বরে বলা গম্ভীর গলার ধমক খেয়ে কথা বলার বর্ণ হারিয়ে ফেলল। ও ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে ফুয়াদের দিকে। ফুয়াদ ওকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। হাতের মুঠোয় আপেল দেখে ওর ভ্রু কুঁচকে এল। ও কিছু একটা চিন্তা করে বলল,,” Come to add something to the food?”
মধুর চোখ টলমল করে উঠল। এই লোকটা ওকে খারাপ কেউ ভাবছে। ও তাদের ক্ষতি করতে আসছে এমনটা ভাবছে। নিজের সমন্ধে কারো এমন বাজে চিন্তা ধারা দেখে ওর ভেতরটা কেঁপে উঠল। মাথা নিচু করে মধু বলল,,” আমার খুব খিদে পেয়েছিল তাই এখানে থেকে একটা কলা খেয়েছি। আর এটা ও খেতেই নিয়েছি।”

কান্না আটকে জড়ানো গলায় বলল মধু। ফুয়াদ আরো জেরা করার মতো প্রশ্ন করতে চাইছিল। কিন্তু ওর আশায় জল ঠেলে দিয়ে তখন নাফিসা এগিয়ে আসে হাসি মুখে। মধু কে টেনে বলেন,,” খিদে লেগেছে খালি ফল খেলে কি পেট ভরবে? দিচ্ছি তোমার খাবার বসো।”

ফুয়াদ কেমন জানি চোখে তাকিয়ে গটগট করে চলে গেল। মধু ফুয়াদ চলে যেতেই বলল,,” না না আন্টি এই যে খাচ্ছি আর কিছু লাগবে না। আমার খুব গরম লাগছে একটু গোসল করতে পারলে খুব শান্তি লাগত।”
” তাহলে রাহীর রুমে গিয়ে গোসল করে ওর একটা পোশাক পড়ে নাও। তারপর তোমার সাথে আমার কথা আছে। এতো টুকু মেয়ে কীভাবে মানিকগঞ্জ থেকে একা ঢাকা চলে এল পালিয়ে জানতে হবে তো।”

মধু কে রাহীর রুম দুতালায় বলে দিল। মধু একা যেতে সংশয় হচ্ছিল কিন্তু তবুও ওকে একাই আসতে হলো।
আনিতা রান্না ঘর থেকে এগিয়ে এসে বললেন,,” মেয়েটা কে আপা?”
” রাহী আর ফাহাদ তো বলল রাস্তায় নাকি পেয়েছে। মেয়েটা নাকি বিয়ে করবে না বলে পালিয়ে এসেছে।” সব খোলে বলল।

” বলো কি?”
” হ্যা তাই তো শুনলাম। কিন্তু এখনকার দিনকাল ভালো না এতো সহজে কাউকে বিশ্বাস করে বাসায় রাখা রিস্কি। কিন্তু মেয়েটাকে দেখে খুব সহজ সরল‌‌ই মনে হলো। কিন্তু তবুও বিলিভ করা কি এতো সহজ।”
” হুম।”

আনিতা আবার চলে গেলেন রান্নাঘরে। নাফিসা চিন্তিত মুখে বসে আছেন সোফায়। পান বানিয়ে মুখে পুড়ে নিলেন।
রাজিব খান ও পিয়াল খান দুই ভাই। রাজিব খান ও নাফিসা বেগম এর চার ছেলে। একটা মেয়ের খুব শখ ছিল কিন্তু আল্লাহ পাক তাদের কপালে মেয়ে রাখেন নাই। খুব আফসোস করেন নাফিসা। একটা মেয়ের অভাব বোধ করেন সব সময়। বড় ছেলে, মোশাররফ করিম, লেখাপড়া শেষ করে বাবা ও চাচার সাথে বিজনেসে যুগ দিয়েছে। তাড়াতাড়ি ছেলেকে বিয়ে করিয়েছেন।

কারণ তার ছেলের সম্পর্ক ছিল চিত্রার সাথে তাই জবে জয়েন করেই তাদের চার হাত এক করে দিয়েছেন। মেজ ছেলে, সমুদ্র। লেখাপড়া শেষ করে বিগত কয়েক বছর ধরে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।‌ পড়াশোনা শেষ করতেই কয়েকটা চাকরির অফার পেয়েছিল কিন্তু ছেলে তার কাজ করবেন না। তার কথা বাবা ভাই তো কম ইনকাম করছে না তাতে তো সে অনায়াসে বসে খেতে পারছে অযথা চাকরি করার কি দরকার?

নিজেকে কাজে কোন ভাবেই যুক্ত করে ঘুরাঘুরির জীবনটা নষ্ট করতে চায় না। সেজ ছেলে, ফুয়াদ। বড় দুই ভাইয়ের থেকে তার মেধা ও দক্ষতা বেশি। ছোট বেলা থেকেই ফুয়াদ লেখাপড়ায় দুর্দান্ত ছিল। তাই তো নিজ যোগ্যতায় জব করছে। সে পেশায় একজন জার্নালিস্ট। এই কাজে ছেলেকে পাঠাতে চায় নি নাফিসা রিস্কি কাজে দিয়ে বিপদে ফেলতে চায়নি। ছেলে জোর করেই নিয়েছে। তার জেদের কাছে নাফিসাকে হার মানতে বাধ্য হয়েছে।

এবং কি ছেলের বিয়েও বড় ছেলের আগে ঠিক করতে হয়েছে। তার একমাত্র বান্ধবীর মেয়ে মিতুল যাকে বাড়ির ব‌উ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অনেক আগেই। বড় ছেলে সমুদ্র এর ব‌উ করতে চেয়েছিল কিন্তু মিতুল পছন্দ আরে ফুয়াদ কে। বিয়ে করলে সে ফুয়াদ কেই করবে। কথা দিয়েছিল তাই রাজি হতে হয়েছে আর ছেলের সাথে এনগেজমেন্টটা সেরে রেখেছেন। সমুদ্রের জন্য একটা ভাল মেয়ে ঠিক করে দুই ছেলের বিয়ে একসাথে দেবার ইচ্ছে আছে। ছোট ছেলে ফাহাদ। এস‌এসসি পরীক্ষার্থী। এই তার চার ছেলে নিয়ে সুখের সংসার।

তার মেয়ে না হলেও তার মেয়ের অভাব পূরণ করেছে ছোট জায়ের দুই মেয়ে। তাদের সন্তানের মতো ভালবাসে। আর তার চার ছেলে মাশাআল্লাহ মেয়ের থেকে বেশি করে।
মধুকে রাহীর কোন রুম বলেছিলো বেমালুম ভুলে গেছে। এতো রুম পর পর এতো মানুষ এই বাসায়? এখন বিরক্ত লাগছে ওর। ও সব রুমে উঁকি মেরে দেখছে। একটা রুমে একটা মেয়েকে শাড়ি পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সাজতে দেখে সরে আসল। আরেকটা রুম লক করা ভেতর থেকে। আরেকটা রুমে ফাহাদ।

আরেকটা রুমে কেউ নাই। ও অনেকক্ষন দাড়িয়ে থেকে দেখল মিতুল ওয়াশরুম থেকে বের হচ্ছে পরনে শুধু একটা তোয়ালে পেঁচানো। এমন দরজা খোলে রেখে কেউ এই অবস্থায় থাকে ছিহ। পরের রুমটায় উঁকি মেরে দেখল কেউ নাই। এটা একটু অন্ধকারাচ্ছন্ন রুম কারণ এটায় ভেতরে ড্রিম লাইট জ্বালানো। সামনে আর একটা রুম আছে ও এটাই রাহীর ভাবল।

আর ভেতরে উঁকি মেরে ও কাউকে দেখল না তাই ভেতরে প্রবেশ করল। ও ঢুকে রাহী আপু বলে দুইবার হাঁক ছাড়ল। ওয়াশরুম থেকে শব্দ আসছে। পানি পরার তার মানে রাহী ওয়াশরুমে হয়ত গোসল করছে। ও ড্রিম লাইটের আলোয় রুমের জিনিস এতোটা খেয়াল করল না। বেলকনিতে এসে দাঁড়াল। রাহীর বের হ‌ওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। রেলিং এ এ হাত স্পর্শ করে অন্ধাকর রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে।

সেদিক দিয়ে গাড়ির হন বাজিয়ে বাজিয়ে চলে যাচ্ছে শতশত গাড়ি। ও ভাবছে কোথায় ছিলাম কোথায় এলাম। আল্লাহ কাল কোথায় যাব একরাত থাকার কথা বলেই তো এসেছি। চিন্তায় মধু আঙুল কামড়াতে লাগল। কাধের কাছে পিন চামড়ার সাথে যেন আটকে গেছে চিনচিন ব্যথা করছে। ও হাত বারিয়ে পিন খুলে কুচি করা আঁচল ছেড়ে দিল। বাইরের শীতল বাতাসে আঁচল উড়িয়ে দিচ্ছে। মধু চোখ বন্ধ করে শান্তির বাতাস নিচ্ছে হা করে।

প্রেয়সী পর্ব ১

“কে ওখানে?” পুরুষালী গলার আওয়াজ আসলো পেছনে থেকে।
মধু রাহীর বদলে কোন পুরুষের গলার স্বর শুনে বজ্রপাতর মতো চমকে উঠল‌। চকিতে ঘাড় ফিরিয়ে তাকাল। ওর দিকে রক্তচক্ষু মেলে তাকিয়ে আছে একজন।

প্রেয়সী পর্ব ৩