প্রেয়সী পর্ব ৫৬

প্রেয়সী পর্ব ৫৬
নন্দিনী নীলা

মধু বসে আছে ফুয়াদের রুমের নরম সাদা বিছানার উপর। ওর সাথে আছে তিন্নি। দুজনের চোখে মুখে উৎকণ্ঠা ভাব। নিচে থেকে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ আসছে। মধু নিচে যেতে পারছে না। এদিকে টেনশনে ওর গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। দুই বান্ধবী নখ কাটছে বসে বসে।
দরজা খোলার পর পর ই ফুয়াদ সবার সামনে মধু কে টেনে নিজের রুমে নিয়ে আসে। আর ওকে বিছানায় বসিয়ে ওর গালে হাত দিয়ে বলে,,” নিচে যাই হয়ে যাক তুমি আসবে না ওকে?”
মধু অবুঝ গলায় বলল,,” কি হবে নিচে?”

” দেখো তোমার বাবার কাছে খবর চলে গেছে আমি বাড়ি ফিরেছি তোমাকে নিয়ে। তাই তারা তো আসবেই ঝামেলা করতে। তোমার ভাই জেলে থাকলেও বাবা তো বাইরেই। ঝামেলা করার জন্য উনিই এনাফ। বাকিটা আর তোমাকে খোলে বুঝাতে হবে না নিশ্চয়ই কি হতো পারে। আমার পরিবারের সাথেও কথা কাটাকাটি হবে। আমি চাই ঝামেলার মধ্যে তুমি ওখানে না থাকো। তোমার বাবা তোমাকে ডাকবে তুমি কিন্তু ভুলেও উত্তর নেবে না আর না নিচে যাবে। মনে থাকবে তো আমার কথা?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“আমি রুমে নিশ্চিন্তে কিভাবে থাকব আমার তো যেতে মন চাইবে। আন্টি যে পরিমাণ রেগে আমার উপর না জানি কি করে!” আতঙ্কিত কন্ঠে বলল মধু।
” আমি যেতে মানা করছি তাই যাবে না। নিজের ইচ্ছে কে মাটিচাপা দিবে। নিচে গিয়ে শুধু ঝামেলাই দেখবে। ঝামেলা থেকে দূরে থাকাই তো বেটার তাই না। আর তুমি গিয়ে ঝামেলা কমাতে পারবে না তাই বাড়ানোর জন্য তোমার উপস্থিতি না থাক।”

মধুর চোখ মুখ শক্ত হয়ে উঠল। ও রাগী কন্ঠে বলল,,” আমি ঝামেলা বাড়াই?”
ফুয়াদ কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে বলল,,” সরি ভুলে বলেছি‌।”
মধু কটমট করে ফুয়াদের দিকে তাকিয়ে র‌ইল। ফুয়াদ ওর কপালে চুমু খেল। তারপর ফুয়াদ রুম থেকে বেরিয়ে গেল।

দুই মিনিটের মাথায় তিন্নি কে নিয়ে আবার হাজির হলো আর বলল,,” দুই বান্ধবী গল্প গুজব করো। কেমন!”
তারপর বাইরে থেকে লক করে ফুয়াদ চলে যায়। তিন দিন ইচ্ছে মতো ঘুরা ঘুরি করে এসে ওকে এমন ঘর বন্দি করবে কে জানত। খাটাশ একটা। মধু বিড়বিড় করে ফুয়াদ কে বকলো।

তিন্নি এসে ওর পাশে বসে বলল,” আমার মাথায় তো কিছুই ঢুকছে না মধু। কি হচ্ছে এসব?”
মধু শাড়ির আঁচল টান টান করে দাঁড়িয়ে বলল,,”দোস্ত আমাকে শাড়িতে কেমন লাগছে?”
তিন্নি ওকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখে বলল,,”ভাইয়ার বিরহে যে রুপ ঢাকা পরেছিল এখন দেখছি তার থেকেও দ্বিগুণ রুপ নিয়ে ফিরে এসেছিস। কাহিনী কি বলতো?”

সন্দেহ জনক কন্ঠে বলল তিন্নি।
মধু এক গাল হেসে বলল,,” সত্যি! আমি কি অনেক সুন্দরী হয়ে গেছি?”
তিন্নি ভ্রু কুঁচকে মধুর হাত ধরে টেনে নিজের কাছে এনে বলল,,” এ্যাই মাথা নিচু কর তো।”
মধু মুখ নিচু করে বলল,,” কি হয়েছে ওমন করে কি দেখিস?”

তিন্নি ওর নাকের ফুল এ আঙ্গুল দিয়ে ধরে বলল,,” ও মাই গড দোস্ত, তুই নাক ফুটো করলি কবে?”
কথা বলতে বলতে ওর নাকের ফুলে তিন্নি জোরে চেপে ধরে এতে মধু ব্যথায় কুঁকড়ে আহ্ করে উঠে। তিন্নি দ্রুত হাত সরিয়ে সরি বলতে লাগে।

মধুর ফর্সা নাক লাল হয়ে উঠে। তিন্নির পাশে বসে মধু বলে,,” তোর ভাইয়ের জন্য আমার নাক ফুটো করা লাগছে। কি পাষাণ তোর ভাই‌। নির্দয়ভাবে আমার নাক ফুটো করতে নিয়ে গেছিল। আমি করতে চাই নাই। এতো ব্যথা এখনো জোরে চাপ লাগলে ব্যথা লাগে!”

” এসব কবে করছিস? আর ভাই তোকে জোর করে এসব করিয়েছে কেন?”
মধু দুঃখী মুখ করে দুঃখের কাহিনী বলতে বসে। বিয়ের কথা শুনে তিন্নি চোখ কপালে তুলে ফেলে। তারপর ওদের হানিমুনে যাওয়ার কথা প্লাস পার্লারে নিয়ে নাক ফুটো করা সব শুনে তিন্নি গালে হাত দিয়ে বসে থাকে। এতো কিছু ঘটে গেল আর ওরা সবাই এদিকে ফুয়াদ ও মধুর দুজনে ঠিক আছে নাকি সেই চিন্তায় অস্থির ছিল।
তিন্নি বলে,,” তোরা ওদিকে নিজেদের হানিমুন করতে ছিলি আর আমরা সবাই তোরা ঠিক আছিস নাকি সেই টেনশনে নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়ে অনশন করতে ছিলাম।‌ হায়রে।”

তিন্নি মাথায় হাত দিয়ে ফেলল। মধু ওর কথা শুনে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি গেল। তখনি নিচে থেকে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ আসতে লাগে দুই বান্ধবী নিজেদের আলাপ আলোচনা বাদ দিয়ে এবার কান খাড়া করে নিচের কথা বার্তা শুনতে মনোযোগী হয়ে উঠল। মধু উঠে দুরুদুরু বুকে নিয়েই দরজায় কান পেতে ফেলল।
তিন্নি গাড়ির শব্দ শুনে বলল,” গাড়ির শব্দ পাচ্ছি আয় বেলকনিতে থেকে দেখি কে আসলো।”

মধু তিন্নির পিছু পিছু বেলকনিতে এসে থামল। ও কার দেখেই তিন্নির কাঁধ খামচে ধরে বলল,,” এটা তো বাপির গাড়ি।”
তিন্নি মধুর ভীতু মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,,” আরে মধু এতো ভয় পাচ্ছিস কেন? আঙ্কেল তো মেয়ে আর মেয়ের জামাই কে দেখতে এসেছে। তার তো আবার এক না দুই দুইটা মেয়ের জামাই।”

” দেখ মজা নিবি না। আমার বাপ আর তোর ভাই দুজনেই আমাকে থ্রেট ও ভয় দেখিয়ে বিয়ে দিয়েছে, করেছে। বাপির বিয়ের কাগজ টা নকল ছিল এটা আমি জানতাম না কত কষ্ট হয়েছিল জানিস? ফুয়াদ না বললে আমি তো জানতেই পারতাম না।”

” ফুয়াদ ভাইয়া সাথে যে প্রতিনিয়ত সমুদ্র ভাইয়ার কথা হতো তা এখন স্পষ্ট হচ্ছে।”
” হুম আর আমাদের কিছুই জানায় নি কত চাপা স্বভাবের তোর ভাই।”
” চাচি কত কষ্ট পাচ্ছিল চোখের সামনে দেখেও ভাইয়া এমন নিশ্চুপ থাকতে পারছে। সত্যি অবাক করা বিষয়।”
মধু দেখল ওর বাপি রাগে গমগম করে গাড়ি থেকে নামল তারপর হনহনিয়ে বাসার ভেতরে যেতে লাগল। মধু তাকে দেখেই রুমের দিকে চলে এসেছে যদি বাই এনি চান্স উপরে তাকায় ওকে দেখে ফেলবে। এমন ভাবে সরে আসলো যেন ও এখানে তা জানেই না ওর বাবা।

ফুয়াদ নিজের মায়ের সাথে কথা বলছিল সবাই ওর উপর চড়াও হয়ে আছে। একা মাকে এবং কাউকেই সামলাতে পারছে না ও অসহায় মুখ করে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলল,,” ভাইয়া তুমি অন্তত হেল্প করো আমাকে। একা তো পারছি না।”

সমুদ্র পাথরের মতোই বসে আছে। ফুয়াদ এক পরিবার কে সামলাতে গিয়েই নিজের নাজেহাল অবস্থা তার মধ্যে আবার এসে যুক্ত হলো মধুর বাবা ও তার সঙ্গীরা।
ফুয়াদ শশুর কে ঠান্ডা করতে এখন নিজের মাকে কাজে লাগাবে প্লান করল।
ফুয়াদ নাফিসা বেগমের দিকে মাথা ঝুঁকিয়ে ফিসফিস করে নিচু স্বরে বলল,,” তোমার বিয়াই এসেছে একটু খাতির যত্ন করো। আমাকে বকাঝকা না হয় পরেই করো। বাইরের মানুষ কে জানাতে যাবে কেন তুমি এতে অখুশি এতে তো তারা মাথায় উঠে নাচবে‌।”

নাফিসা বেগম নিজের ন্যাকা কান্না বন্ধ করে ফ্যালফ্যাল করে তাকাল ফুয়াদের দিকে।
তারপর ছেলেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বললেন,,” আরে বিয়াই যে। ভালো‌ আছেন?”
মাহতিম হোসেন রাগে মুখ মন্ডল লাল করে দাঁড়িয়ে পরে। অবাক বিস্মিত নয়নে তাকায় নাফিসা বেগমের দিকে। নাফিসা, আনিতা বেগমের দিকে চেয়ে বলেন,,” আনিতা আমার বিয়াই এসেছে। তার জন্য বিশেষ আয়োজন করো। এখন ঠান্ডা শরবত দিয়ে যাও বিয়াই অনেক রেগে আছেন তার মাথা ঠান্ডা করা দরকার।”

আনিতা বেগম হতবুদ্ধি কন্ঠে বলে আচ্ছা বলে কিচেন রুমে দিকে চলে যায়। এদিকে মাহতিম হোসেন ভ্যাবাচেকা খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ফুয়াদ গিয়ে সমুদ্রের পাশে বসে পরে।
সমুদ্র নিজেও মায়ের কান্ড দেখে হতভম্ব হয়ে গেছে। ফুয়াদ সমুদ্রের পাশে সোফায় বসেই বলে উঠে,,” মা আমার শশুর কে সামলাতে ব্যর্থ হবে না। কি বলো ভাইয়া!”
সমুদ্র বিস্মিত কন্ঠে বলল,,” মা তো মধু কে আমার ব‌উ হিসেবে ও মেনে নেয় নি। তোর ব‌উ হিসেবে মেনে নিল? তাও এতো তাড়াতাড়ি?”

ফুয়াদ ঠোঁটের কোনে দুষ্টু হাসি এনে বলল,,” উফফ তুমিও দেখি বোকা বনে গেলে। মা এতো সহজে মেনে নেবে বলে তোমার মনে হয়। মায়ের কি জেদ তুমি জানো না।”
” জানি বলেই অবাক হচ্ছি। আমার চোখের সামনে সে বিয়াই বলে যে আদিখ্যেতা করছে তাতে বুঝাই যাচ্ছে মেনে নিয়েছে।”

” এসব সব‌ই অ্যাক্টিং।”
সমুদ্র হতবিহ্বল চোখে তাকাল মায়ের দিকে অতঃপর বলল,,” সত্যি? মা এভাবে…”
” ইয়েস।”
নাফিসা বেগম মাহতিম‌ হোসেন কে বললেন,,” বিয়াই বসেন আর আপনার সাথে এরা কে এসেছে? তাদের সাথে নিয়েই বসেন।”

মাহতিম হোসেনের সাথে তিনটা লোক এসেছে। মাহতিম হোসেন চিৎকার করে মধু কে ডেকে উঠলেন,, ” মেহেরিমা”
তারপর ছেলে তিনটা কে বললেন,” যাও আমার মেয়েকে ধরে নিয়ে আসো। আমার মেয়ের সাথে এই বাড়ির ছেলের বিয়ে দেওয়াটাই ভুল হয়েছে। আমার মেয়েকে নাকি কিডন্যাপ করেছিল কেউ আমি আর এক মুহূর্তও আমার মেয়েকে এই বাসায় রাখব না।”

নাফিসা বেগম বললেন,,” আমি কিন্তু আপনার মেয়েকে ছেলের ব‌উ করতে একটুও রাজি ছিলাম না। তাও আপনি আমার ব‌ড় ছেলেকে ফুসলে ফাসলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এখন শুনি সেই বিয়ে নাকি নকল বিয়ে ছিল। আমার ছোটো ছেলে এখন ওই মেয়েকে আবার বিয়ে করে নিয়ে এসেছে। আমার দুই ছেলের মাথা আপনার এক মেয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়েছে। কি শয়তান মেয়ে। ”

মাহতিম হোসেন নকল বিয়ে শুনতেই চমকে উঠল তাকাল সমুদ্রের দিকে। সমুদ্র নির্বিকার ভাবেই বসে আছে।
মাহতিম হোসেন এক সাথে দুই শক খেয়েছেন একেতে আগের বিয়েটা নকল ছিল দ্বিতীয় তো তার অপছন্দ ফুয়াদের সাথে মধুর বিয়ে হয়েছে দুটো কথা শুনে উনি থমকে পাথর হয়ে যান। গলার আওয়াজ কমিয়ে উনি সোফায় বসে পরেন।

ট্রে তে করে শরবত, ফল মিষ্টি নিয়ে আসেন আনিতা বেগম। নাফিসা বেগম শরবত নিজের হাতে নিয়ে মাহতিম হোসেনের দিকে তুলে ধরেন গ্লাস।
আর খুব ভদ্রতা সহিত গলায় চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন,” বিয়াই ধরেন ঠান্ডা শরবত। খেয়ে মাথা ঠান্ডা করুন।”

মাহতিম হোসেন সবাইকে অবাক করে দিয়ে গ্লাসটা হাতে তুলে নেন ঠিকিই কিন্তু খেতে নয় গ্লাস টা ভাঙতে। গ্লাস হাতে নিয়েই দাঁড়িয়ে পরেন আর ফ্লোরে আছড়ে ফেলেন কাঁচের গ্লাসটা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। নাফিসা বেগম ও দমে যাবার মহিলা নন। উনি রাগে চিৎকার করে উঠেন,” আপনি আমার গ্লাস ভেঙে ফেললেন। এবার এই গ্লাস আপনিই উঠিয়ে দিয়ে যাবেন। নাহলে আপনাকে এই বাসা থেকে এক পাও বের হতে দেব না।”

ফুয়াদ আর সমুদ্র বসে, নাফিসা আর মাহতিম হোসেনের তর্কবিতর্ক দেখছে হা করে। মাহতিম হোসেন ইশারায় বাকি তিন ছেলেকে বলেন তার মেয়েকে বের করে আনতে। ফুয়াদ অবশেষে উঠে দাঁড়ায় আর নিজের মাকে গিয়ে বলে,,” মা তুমি তোমার বিয়াই কে একটু পর আদর আপ্যায়ন করিও আমি একটু কথা বলে নেই।”

নাফিসা বেগম রাগে গজগজ করে সরে যায়। ফুয়াদ খুব সুন্দর করে মাহতিম হোসেন কে সালাম দেন মাহতিম হোসেন রক্ত লাল চোখে তাকিয়ে আছে। ফুয়াদ ফিসফিস করে মাহতিম হোসেন কে বলেন,,” শশুর বাবা, মেয়েকে নিয়ে যাবেন নাকি ছেলেকে ফাঁসিতে ঝুলাবেন সিদ্ধান্ত আপনার। এখনো কিন্তু আসল প্রমাণ টাই আমি পুলিশের হাতে তুলে দেই নাই।

নিজেও যদি জেলে যেতে না চান আর ছেলেকে যদি বাঁচিয়ে রাখতে চান তো আমার মায়ের সাথে সুন্দর বিহেভ করেন। তার কথা মেনে চলেন আর মেয়েকে আপনার সামনে আনব কিন্তু নিয়ে যাওয়ার জন্য না। মেয়ে আর মেয়ের জামাই কে দোয়া করার জন্য। ওকে আমি আপনার মেয়েকে নিয়ে আসি তাহলে আমার মা যা যা বলবে তাই তাই করবেন কেমন!”

বলেই ফুয়াদ হেসে চলে যায় উপরে। মাহতিম রাখে কটমটিয়ে তাকিয়ে থাকে ওর যাওয়ার দিকে।
নাফিসা বেগম আবার এগিয়ে এসে রাগী কন্ঠে বললেন,,” কি হলো বিয়াই তাড়াতাড়ি কাঁচ গুলো উঠান।”
মাহতিম হোসেন রাগে আর কারো দিকে তাকান‌ না। কিন্তু সোফায় ফের বসেন। মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতেই এই বসে যাওয়া। কাজের মেয়ে এসে ভাঙা গ্লাসের টুকরো গুলো তুলে নিয়ে যায়।

ফুয়াদ মধুকে নিয়ে নিচে আসে। মধু ভয়ে ফুয়াদের হাত আঁকড়ে ধরে আছে। ফুয়াদ ওর দিকে তাকিয়ে বলে,,” মধু তুমি এতো ভয় পাচ্ছ কেন তোমাকে তোমার বাবা আর আমার থেকে নিয়ে যেতে পারবে না। তুমি এখন আমার বিয়ে করা ব‌উ। তাই ভয় না পেয়ে বাবার সাথে কথা বলো।”

মধু শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কথা বলার সাহস নাই ওর। মাহতিম হোসেন দাঁড়িয়ে পরে আর মেয়ের হাতের দিকে তাকায়‌। শক্ত করে ধরে রেখেছে ফুয়াদের বাহু। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন,,” আজ থেকে মনে করব আমার একটা ছেলে। আমার কোন মেয়ে নাই। যে ছিল সে মরে গেছে। ভালো থাকিস। কখনো কোনদিন আমার সামনে আসিস না।”

প্রেয়সী পর্ব ৫৫

না চাইতেও মধুর চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে। বাপি তাকে ভালো নাই বাসতে পারে
কিন্তু মধু তো বাসে। যত ভয় পাক দূরে যাক এভাবে মৃত প্রমাণ করে চলে গেল। এতোটা ঘৃণা ওর প্রতি। মধুর বুকের ভেতরটা হাহাকার করে উঠল। ফুয়াদকে ধরে রাখা হাতের বাঁধন টাও আগলা হয়ে এলো।

প্রেয়সী পর্ব ৫৭