বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ১৮

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ১৮
জাওয়াদ জামী

” তুমি তাহমিনা, শফিউলের সাথে আলোচনা না করে, নুসরাতের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছ কেন? ছেলেটা দেশে নেই। ওর কাছে একবারও জিজ্ঞেস করার প্রয়োজনবোধ করলেনা! তাহমিনা যদি অমত করে কিংবা তাহমিদ? তখন নুসরাতের সাথে তোমাদের সম্পর্ক কি আগের মতই থাকবে? কোন কাজ করার আগে ভেবেচিন্তে করতে হয়, সেটাও কি ভুলে বসেছ? ”

আফরোজা নাজনীন তার স্বামীর উপর ভিষণ বিরক্ত। সানাউল রাশেদিনের হুটহাট এমন সিদ্ধান্ত তার পছন্দ হয়নি।
” ঐ বেয়াদবটাকে বিয়ের জন্য পাগল হয়ে যেতে দেখেই আমি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার নাকি অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রয়োজন! মানুষ জন দেখছেনা। সবার সামনে বলে বেড়াচ্ছে বিয়ে করবে। তাই আমি কাজটা করেছি। কিন্তু আমি নুসরাতকে কোন কথা দিইনি। আমিও তাকে বলেছি, তাহমিদ রাজি থাকলেই তবে বিয়েটা হবে। আমি এটা ভালো করেই জানি, আমার সিদ্ধান্তের ওপর শফিউল কিংবা তাহমিনা দ্বিমত করবেনা। আর ঐ বেয়াদবও করবেনা। ”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” ছেলে ওদের। ওদেরও তো পছন্দ থাকতে পারে? তুমি আগে কেন শফিউলের সাথে কথা বললেনা? তুমি কি চাও, তোমার এমন সিদ্ধান্তের জন্য পরিবারের ভীত নড়ে যাক? ”
” তা আমি কখনোই চাইনা, আফরোজা। আমি পরিবারের সবাইকে একসাথে নিয়ে বাঁচতে চাই। তোমার যদি মনে হয়, আমি ভুল করেছি তবে নুসরাতের কাছে যেয়ে কথা বলব। ওকে বলব আমার ভুল ছিল। শফিউলের সাথে কথা না বলে আমার এমন সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হয়নি। ”

” আপাতত কিছুই করার দরকার নেই। তাহমিদ আসুক। যা সিদ্ধান্ত নেয়ার ও-ই নিবে। তখন শুধু তুমি দয়া করে চুপচাপ থাকবে। আমার ভয় হচ্ছে, আবার না কোন ভুল হয়ে যায়। ”
রাতে রুমে এসে আফরোজা নাজনীন তার স্বামীকে এভাবেই চেপে ধরলেন।
এবার সানাউল রাশেদিনের সত্যিই ভয় হচ্ছে। তার এই সিদ্ধান্তের কারনে তাহমিনা, শফিউল কি সত্যিই বিরক্ত হবে? তার জন্য আবার নুসরাত কষ্ট পাবেনাতো! তিনি নুসরাতের সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তিনি কথা বলবেন তাহমিনার সাথে।

পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই সানাউল রাশেদিন নুসরাতের কাছে যান।
” নুসরাত, আসব? ”
” এস, ভাইয়া। ”
” তোর সাথে কিছু কথা ছিল। তাই ভাবলাম দেরি না করে তারাতারি বলে ফেলি। ”
” কি কথা, ভাইয়া। যে কথা বলতে আমার অনুমতি লাগবে! ”

” নুসরাত, আমাদের ভুলের জন্য অনেক বছর আগে তোকে কষ্ট পেতে হয়েছে। সেই অপরাধবোধ আজও আমাকে কুঁড়ে খায়। তাই আমি চেয়েছিলাম তাহমিদের সাথে সামিহার বিয়ে দিয়ে আমাদের অপরাধের বোঝা কমাতে। যদিও আমি তাহমিদ অথবা ওর বাবা-মা’ র কাছে না শুনেই তোর কাছে প্রস্তাবটা রেখেছিলাম। জানি এটা আমার অন্যায় হয়েছে। শফিউলের কাছে না না শুনেই আমি ওর ছেলের বিয়ের বিষয়ে ভাবছি।

সেই সাথে এটাও জানি, আমার কথার ওপর শফিউল কিংবা তাহমিনা কখনোই কথা বলবেনা। কিন্তু তারপরও একটা কথা থেকে যায়। ওরা তাহমিদের বাবা-মা। ওদেরও মতামত থাকতে পারে। আর রইল তাহমিদ। যেখানে ওর ভূমিকাই মুখ্য। যেহেতু জীবনটা ওর, সেখানে সিদ্ধান্তও ওকেই নিতে হবে। আমরা কেউই চাইবনা তাহমিদকে জোড় করে কিছু করাতে। তাহমিদ রাজি হলেই তবে আমরা এই সম্পর্কের দিকে এগোব। ”

” আমি বুঝতে পেরেছি, ভাইয়া। তোমার কথার সাথে আমিও একমত। শফিউল ভাই আর ভাবির মতামতও এখানে দরকার। তুমি তাদের সাথে কথা বল। এরপর তাহমিদ আসলে ওর সাথে কথা বল। ও রাজি হলেই আমরা দিনক্ষণ ঠিক করব। এটা আমিও সামিহাকে বলেছি। সামিহাও রাজি হয়েছে। ”

” বাঁচালি আমাকে। আমার কথা বুঝতে পারার জন্য তোকে ধন্যবাদ। তাহমিদ বোধহয় দুই একদিনেই চলে আসবে। তোরাও কয়েকদিন থাক। এক বছর পর এসেছিস, সাতদিনের আগে তোকে যেতে দিবনা। আবার কবে আসবি তার ঠিক নেই। ”
” সংসারের ঝামেলায় কোথাও যেতে পারিনা, ভাইয়া। ইচ্ছে থাকলেও সময়ের অভাবে অনেক জায়গায় বেড়াতে যেতে পারিনা। তবে এবার সাতদিন থাকব। ”

সানাউল রাশেদিন আরও কিছুক্ষণ বোনের সাথে গল্প করলেন।
অ্যাডমিশনের রেজাল্ট দিয়েছে। কুহু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে চান্স পেয়েছে।

সিক্তাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞান অনুষদে, খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে।
কায়েসের সাথে কথা বলে কুহু সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। তবে সিক্তা এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আফরোজা নাজনীন ওকে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সময় দিয়েছেন।
নুসরাত সিক্তার রেজাল্ট শুনে খুশি হলেও, কুহুর রেজাল্ট শুনে নাক সিটকায়৷
আয়েশা সালেহা দুই নাতনির এমন অর্জনে ভিষণ খুশি হয়েছেন। তিনি কুহুকে কাছে ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে অনেক দোয়া করলেন।

” খালা, আমাদের সিক্তা ভালো জায়গায় চান্স পেয়েছে, এটা খুবই খুশির খবর। এতে তুমি খুশি হয়েছ এটা মেনে নিলাম। কিন্তু তুমি ঐ মেয়ের চান্স পাওয়াতে এত খুশি কেন আমি ভেবে পাচ্ছিনা? ও যেখানেই চান্স পাক, যেখানে খুশি সেখানে ভর্তি হোক, তোমার আনন্দের কি আছে! ”

” সিক্তা যেমন আমার নাতনি, কুহুও তেমনি আমার নাতনি। ওদের দুজনের অর্জনেই আমি খুশি হব, এটাই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু তুই শুধু নিজের রাগ বজায় রাখতে খুশি হতে পারছিসনা, তাইনা? এত বছরেও তোর রাগ যায়নি! সেদিন ভুলটা আমরা করেছিলাম। রাগ করলে আমাদের সাথে কর। ঐ মেয়েটা কি দোষ করেছে। কত নম্র , শান্ত একটা মেয়ে কুহু। ওকে দেখলেই শান্তিতে বুকটা ভরে যায়। ”

” আমার ওকে দেখে শান্তি লাগেনা, খালা। ওকে দেখলেই আমার মনে হয় কায়েস আমার সাথে বেইমানী করেছে। আমাকে অপমান করেছে। তাই আমার এত আদিখ্যেতা আসেনা। সে তোমরা যা-ই বলনা কেন। ” বৃদ্ধার কাছ আর থাকলনা নুসরাত। গজগজ করতে করতে নিজের রুমের দিকে যায়।
” কুহু সোনা, এই পিঠাগুলো সামিহাকে দিয়ে আয়তো মা। সে বোধহয় উপরের বারান্দায় আছে। আমিই যেতাম, কিন্তু দেখ রান্নাঘরে তোর ফুপু একা কাজ করছে। ”

” ঠিক আছে, আন্টি। আমি দিয়ে আসছি। তুমি এত টেনশন করছ কেন! ”
কুহু তাহমিনা আক্তারের হাত থেকে পিঠার বাটি নিয়ে উপরে যায়।
সামিহা বারান্দায় বসে ফোনে ভিডিও দেখছিল।
” সামিহা আপু, তোমার জন্য আন্টি পিঠা পাঠিয়েছে। এই যে ধর। ”

” মামির কাজ নেই, যার তার কাছে খাবার পাঠায়। এরা বেইমানের জাত। বলা তো যায়না, পিঠার মধ্যে কখন কি মিশিয়ে দেয়। আমি একবার তাহমিদের বউ হয়ে আসি, তখন সবাইকে ঝাঁটা মেরে বাড়ি থেকে বের করব। বেঈমানের জাতের কোন অস্তিত্ব রাখবনা এই বাড়িতে। ” কুহুর হাত থেকে হ্যাচকা টানে পিঠার বাটি নিয়ে বলল সামিহা।
সামিহার এমন কথায় কুহু হতভম্ব। ওর মুখে কোনও কথা জোগায়না। চুপচাপ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে।
” কি ব্যাপার, এমন সংয়ের মত দাঁড়িয়ে আছ কেন? তোমাকে দেখলে আমার খুব বিরক্ত লাগে, সেটা কি তুমি বুঝতে পারনা? নাকি আমার পিঠার দিকে নজর গেছে? ”

” তোমার পিঠার দিকেও আমার নজর যায়নি আর না আমি সংয়ের মত দাঁড়িয়ে আছি। আমি শুধু এতটুকুই বলতে চাই, আমি যদি বেইমানের জাত হই, তবে তুমি কোন ঈমানদারের জাত? কাউকে আঘাত করে কথা বলা কোন হাদিসে আছে? কাউকে আঘাত দিয়ে কথা বললেও সে কিন্তু ঈমানদার হয়ে যায়না। আর আমি এই বাড়ির আশ্রিতা নই যে তুমি আমাকে ঝাঁটা মেরে বের করে দিবে। আমি কয়দিন পরই এখান থেকে চলে যাব। তাই তোমার ইচ্ছেটা অপূর্ণই থেকে যাবে। তবে ভবিষ্যতে কাউকে এই ধরনের কথা বলতে যেওনা। তখন হয়তো দেখবে কথা বলার জন্য তোমার মুখটাই থাকলনা। সবাইতো আর কুহু নয়, যে সবকিছু সহ্য করে যাবে৷ ” কুহু আর সেখানে দাঁড়ায়না। দাঁড়ালে হয়ত সামিহার বিস্ময়মাখা বদন দেখতে পেত।

পরদিন দুপুরে তাহমিদ দেশে ফিরে। বাসায় এসে মা, বড়মার সাথে কথা বলে, আর এদিক-ওদিক তাকায় কুহুর খোঁজে। কিন্তু কুহুকে কোথাও দেখতে পায়না। পরক্ষণেই নুসরাতকে দেখে অবাক হয়ে যায়।
” আরে ফুপু, তুমি কবে এসেছ? কতদিন পর তোমাকে দেখলাম। কেমন আছো তোমরা সবাই? ”
” ফুপুর বাসায় গেলেই, ফুপুকে দেখতে পেতে। কিন্তু তোমরা কি আমার বাসায় বেড়াতে যাবে। তোমরা কেউ যাওনা, তাই বাধ্য হয়ে আমাকেই আসতে হয়। ”

” আমাদের সময় কোথায় বল। যে যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি। আচ্ছা ফুপু তোমার সাথে পরে গল্প করব। আগে ফ্রেশ হয়ে নিই। ক্ষুধাও লেগেছে। বড়মা, টেবিলে খাবার দাও। আমি গোসল করে এসেই খাব। ”
” আমি সব রেডি করে রেখেছি, বাপ। তুই আসলেই খাবার দিব। ”
” ভাবি, তোমাকে এখন কষ্ট করতে হবেনা। তুমি রেস্ট নাও। সামিহা তাহমিদকে খেতে দিবে। সামিহা কি আর আগের মত ছোটটি আছে। সব কিছু সামাল দেয়ার মত বয়স ওর হয়েছে। ” হেসে হেসে বলল নুসরাত।
নুসরাতের কথা শুনে তাহমিদের কপাল কুঁচকে আসে। হঠাৎ ফুপু সামিহার কথা বলছে কেন? বড়মাকে খাবার দিতে নিষেধ করছে!

তাহমিদ রুমে যাওয়ার আগে দিদুনের সাথে দেখা করতে যায়। ওর মনে প্রশ্নেরা এসে উঁকিঝুঁকি মারছে। যার উত্তর দিদুনের কাছ থেকে শুনবে।
” দিদুন, মেরি জান, কেমন আছো? ” দিদুনকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করল তাহমিদ।
” আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, দাদুভাই। কিন্তু আমাকে যে জান বলে ডাকলে, আদৌ কি আমি তোমার জান হতে পেরেছি? এভাবে বয়স্ক মানুষটাকে ধোঁকা দিওনা। নিজের কলিজার ভেতরে আরেকজনকে বসিয়ে রেখে, আমাকে বলছ জান! এ অন্যায়, ঘোর অন্যায়। এভাবে ধোঁকাবাজি করলে দিনশেষে তুমিই বিপদে পরবে। ”

” তুমি কিভাবে জানলে আমার কলিজায় অন্য কেউ আছে! এই কথা আমি দিয়ে চারজন ছাড়া কেউই জানেনা। ”
” আমার চুলগুলো কি বাতাসে পেকেছে, দাদু ভাই? আমার সামনেই কুহুর সাথে ফ্লার্ট করবে, তার বাড়ির উঠানে তাকে নিয়েই কথা বলবে, মেডিকেলে যাওয়ার সময় ঘুরে তার দিকে তাকাবে। তুমি ভেবেছিলে এসব আমার চোখে পরবেনা? এতটাই বোকা আমি? ”

” জেনে গিয়েছ যখন, তখন সেটা আমার জন্যই ভালো। এবার বল, নাতবউ হিসেবে সে কেমন? পছন্দ হয়? ”
” তাকে অপছন্দ করে এমন সাধ্য কার আছে! ”
” গুড। আচ্ছা এবার বল, নুসরাত ফুপুর ঘটনা। সে আজ মনে হয় আমাকে একটু বেশিই ভালোবাসা দেখাল! আবার মেয়েকে দিয়ে আমার যত্ন করাতে চায়। বড়মাকে বিশ্রাম নিতে বলছে। ঘটনা কি? ”
” ঘটনা কিছুই নয়। অনেকদিন পর তোমাকে দেখছে, তাই হয়তো যত্ন করতে চাইছে। ”

” দিদুন, আমিও কিন্তু বোকা নই। মানুষ চরিয়ে খেতে হয় আমাকে। কোনটা ভালোবাসা আর কোনটা স্বার্থ তা আমি ভালো করেই বুঝি। বাই এনি চান্স, ফুপু সামিহার সাথে আমার বিয়ের কথা ভাবছেনাতো? ”
” তোমার ফুপুর মাথায় এটা তোমার সিনিয়র ঢুকিয়েছে। তার ভাতিজা কিছুদিন থেকে বিয়ে পাগল হয়েছে, তাই সামিহাকে সে তোমার জন্য পছন্দ করেছে। এবং নুসরাতের কাছে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছে। ”

” বুল শিট। সাধেই কি বলি, তোমার বড় ছেলের সব বুদ্ধি তার ভুঁড়িতে। সবকিছু কি সুন্দর করে গুটিয়ে এনেছি। আর সে আমার বাড়া ভাতে পানি ঢেলে দিল। আজকে তার খবর আছে। আমি ভালো হতে চাইলেও, সে চায় আমি তাকে খোঁ’চা’ই। ”
” এত হাইপার হওয়ার দরকার নেই। তুমি এখন যেয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও। অনেক পথ জার্নি করে এসেছ। এখন নিজের রুমে যাও। ”

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ১৭

” ওকে। ” দরজার কাছে যেয়ে আবার ঘুরে তাকায় তাহমিদ।
” দিদুন, আমার পাখিটা কই? তার ছায়াও এখন পর্যন্ত দেখলামনা! তাকে না দেখে আমি ঠিকমত শ্বাস নিতে পারছিনা৷ ”
” তোমার পাখিটা শুধু ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে উড়ে বেড়ায়। আছে হয়তো কোথাও। একটু পরেই দেখতে পাবে। ”
তাহমিদ হেসে দিদুনের রুম ছাড়ে৷

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ১৯