বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৩

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৩
জাওয়াদ জামী

আফরোজা নাজনীন রুমে বসে কাঁদছেন। আজ তার একমাত্র ভাইয়ের জন্মদিন। কত বছর হয়েছে ভাইকে তিনি দেখেননা। সেই যে সে অভিমান করে বাড়ি ছাড়ল, তারপর থেকে আর বোনদের সাথে কোনও যোগাযোগ রাখলনা। আব্বা নাহয় একটু রাগই করেছিলেন। তাই বলে এত বছর সবাইকে ছেড়ে থাকতে হবে!

” বড় ভাবী , এভাবে কাঁদছেন কেন? কি হয়েছে আপনার? কেউ কিছু বলেছে? ” তাহমিনা বড় জায়ের খোঁজে এসে কাঁদতে দেখে উদগ্রীব হয়ে জানতে চান৷
তাহমিনা আক্তারকে দেখে এবার আর্তনাদ করে কেঁদে উঠেন আফরোজা নাজনীন।
এবার তাহমিনা আক্তার ভয় পেয়ে যান। তার বড় জা কেন এভাবে কাঁদছে, তা তিনি কিছুতেই ভেবে বের করতে পারছেননা।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” ভাবী, এভাবে কাঁদবেননা। কি হয়েছে একবার আমাকে বলুন। আপনার চোখের পানি আমি সহ্য করতে পারিনা, আপনি ভালো করেই জানেন। ” তাহমিনা আক্তার বিভিন্নভাবে শান্তনা দিতে থাকেন তার বড় জা’কে।
” তাহমিনা রে, আজ আমার ভাইটার জন্মদিন। ভাইটাকে কতদিন দেখিনা, কোথায় আছে, কেমন আছে কিচ্ছু জানিনা। আমি বড় বোন হিসেবে তার কোন খোঁজই রাখিনি৷ অথচ আব্বা মৃ’ত্যু’র আগে আমাকে কতবার বলে গেছেন, আমার ভাইটার খোঁজ নিয়ে ওকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে।

কিন্তু এত বছরেও ওর কোন খোঁজ আমি পাইনি। কত আদরের ভাই আমাদের। জানিস, ওর যেদিন জন্ম হয়, আমি সেদিন স্কুলে ছিলাম। ক্লাস টেনে পড়তাম। নাজমা সেভেনে, আর শাহনাজ ফাইভে পড়ত। আমি আর নাজমা স্কুল থেকে বাড়িতে এসে দেখলাম দাদির কোলে একটা ছোট্ট মানুষ হাত-পা নাড়ছে। দাদি হেসে বলল, আমাদের ভাই হয়েছে। তখন কি যে খুশি হয়েছিলাম। সেদিন থেকেই ভাইকে মাথায় তুলে রেখেছিলাম আমরা সবাই। কেউ ওকে ফুলের টোকা দেয়ার কথা ভাবতেই পারিনি। সব সময়ই চোখেচোখে রাখতাম। কিন্তু আজ বিশ বছর সেই ভাইয়ের কোনও খোঁজ নেই। ”

তাহমিনা আক্তার জা’য়ের কথার কি জবাব দিবেন ভেবে পাননা। খানিকক্ষণ ইতিউতি করে মুখ খোলেন।
” ভাবী, আপনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন। অনেক খুঁজেছেন আপনারা কায়েসকে। কিন্তু যে নিজ থেকে হারিয়ে গেছে, তাকে খুঁজে পেতে সময় লাগবেই। আপনি চোখ মুছুন। সকাল থেকে না খেয়ে আছেন। আম্মাও আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। চলুন সবাই একসাথে খাব। আর আজ বড় ভাই বাসায় আসলে, আমি তার সাথে কথা বলব। তাকে বলব, কায়েসের খোঁজ যেন আবার শুরু করে। দেখবেন এবার ওকে পেয়ে যাবেন। এত বছর ধরে ওকে খুঁজছেন, আল্লাহ এবার নিরাশ করবেননা দেখবেন। আমি তাহমিদের বাবাকেও আরেকবার বলব, কায়েসের খোঁজ করতে। ” তাহমিনা আক্তার নানানভাবে বুঝান আফরোজা নাজনীনকে।

খাবার টেবিলে এসে আয়েশা সালেহা দেখলেন তার বড় বউমার মন খারাপ। তিনি জিজ্ঞাসু চোখে তাকালেন তাহমিনার দিকে। এমন সময় আফরোজা নাজনীন রান্নাঘরে গেলেন কিছু একটা আনতে। আর তখনই তাহমিনা তার শ্বাশুড়িকে সবটা জানান। সব শুনে বৃদ্ধা শুধু মাথা নাড়ান।

” বড় বউমা, আমার কোন মেয়ে নেই। অনেক স্বপ্ন ছিল আমার একটা মেয়ে হোক। তাকে আমরা মাথায় তুলে রাখব। কিন্তু আমার সেই স্বপ্ন পাখনা মেলতে পারেনি। একদিন তুমি এই বাসায় বউ হয়ে আসলে। নিজের বাবা-মা’র মত আগলে রাখলে শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে। হাল ধরলে সংসারের। হয়ে উঠলে সকলের ভরসার স্থান। আমি এক সময় ভুলেই গেলাম, কখনও একটা মেয়ে চেয়েছিলাম।

তোমাকে পেয়ে আমার সেই অধরা স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, আমি মেয়ে পেয়েছি। এই সংসার যদি নৌকা হয়, তবে তুমি তার মাঝি। তাই একসময় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বোনের মেয়েকে দিয়ে আরেকটা আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে তুলব তোমার বাবার সাথে। কারন যে রত্নকে আমি বউ করে এনেছি, সেই বাড়িতে আমার বোনের মেয়ে গেলে রাজরানী হয়ে থাকবে। হতও তাই। কিন্তু কখনও কখনও আমরা বড়রাও ভুল করি। আমি বোনের মেয়ের সুখের কথা ভাবতে গিয়ে ভুলে গিয়েছিলাম কায়েসেরও পছন্দ থাকতে পারে।

নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছিলাম তোমার বাবার ঘাড়ে। আমার একটা ভুলেই আজ কায়েস পরিবার, আত্নীয়স্বজন হারা। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও, বউমা। তোমার কান্নার, মন খারাপের কারন আমি। তুমি জানোতো বউমা, সেদিনের পর থেকে আমি প্রতি ওয়াক্ত মোনাজাতে কায়েসকে তার আপনজনদের সাথে দেখতে চাই। দেখতে চাই আগের সেই সুখী পরিবার। ” বৃদ্ধা অঝোরে কাঁদছেন।
শ্বাশুড়ির এমন আকুতিমাখা কান্না দেখে আফরোজা নাজনীন শ্বাশুড়ির কাছে ছুটে আসেন। নিজের দু-হাতে জড়িয়ে নেন বৃদ্ধাকে।

” আম্মা, এসব কি বলছেন আপনি! আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে কেন আমাকে পাপী করছেন! আপনি জানেননা, মায়েরা কখনোই দোষী হয়না। তারা সন্তানের মঙ্গল কামনায় সব সময়ই ব্রত থাকেন। আমি কিংবা আমার পরিবার কখনোই ভুলেও একথা মাথায় আনিনি, যে আপনি দোষী। এটা আমাদের ভাগ্যে ছিল। হাজার চেষ্টা করলেও আমরা ভাগ্যকে খণ্ডাতে পারবনা। ”

” মাগো, তুমি যেমন এই সংসার নামক নৌকার মাঝি, তেমনি মেজ বউমা সেই নৌকার হাল। আর ছোট বউমাকে তো সেভাবে কাছে পাইনি। সে সারাজীবন বিদেশবিভূঁইয়ে কাটিয়ে দিল। আমার মৃ’ত্যু’র পর এই সংসারের কোন ক্ষতি হোক এমন কোন কাজ তোমরা করবেনা, তা আমি ভালো করেই জানি৷ শুধু মৃ’ত্যু’র আগে একটাই চাওয়া কায়েস ফিরে আসুক। তোমার হাসিমাখা মুখ আমি দেখতে চাই। তুমি মন খারাপ করে থাকলে আমার যে কষ্ট হয় মা। তোমরা দু’জন আমার প্রান। তোমাদের কষ্ট আমি সহ্য করতে পারিনা। ”

এবার তাহমিনা আক্তারও এগিয়ে আসেন শ্বাশুড়ির কাছে। আলতো করে জড়িয়ে ধরেন বৃদ্ধার হাত।
” আম্মা, আপনি বারবার মৃ’ত্যু’র কথা বলে আমাদের কাঁদাবেননা। আমরা দুই জা বাবা-মা হারিয়ে আপনাকে অবলম্বন করে বেঁচে আছি। আপনি আমাদের মাথার ওপর ছায়া হয়ে আছেন। আমারতো ভাই-ভাবী থেকেও নেই। বাপের বাড়ি ভাত সেই কবেই ঘুচেছে। আমার ছেলেরাও মামার বাড়ির আদর থেকে বঞ্চিত। আপনি, আপনারা আছেন জন্যই আমি প্রানখুলে হাসি, সুখে থাকার উপায় খুঁজে পাই। কিন্তু সেই আপনিই যদি বারবার মৃ’ত্যু’র কথা বলেন, তখন আমার কেমন হয় সেটা যদি আপনি জানতেন। আপনার মাঝেই আমি আমার বাবা-মাকে খুঁজে পাই। ” তাহমিনা আক্তার কাঁদছেন।

আয়েশা সালেহা জানেন তার মেজো ছেলের বউয়ের বাপের বাড়ি থেকেও নেই। মেয়েটা মাঝেমধ্যেই বড্ড আফসোস করে এ নিয়ে। তাওহীদ, তাহমিদ কখনোই নানার বাড়িতে যেতে পারেনি। তাওহীদ যা একটু গেছে তাহমিদ একবারও সেখানে যায়নি। তাওহীদের জন্মের তিন বছর পর ওর নানা মা’রা যায়। আর ওর ছয় বছর বয়সে নানিও মা’রা যায়। এরপর থেকেই তাহমিনা বাবার বাড়িতে সকল অধিকার হারিয়েছে।

তাহমিনার তিন ভাই মিলে সব সম্পত্তি ভাগযোগ করে নিয়েছে। বোনকে কিছু দেয়ার কথা তারা কখনোই চিন্তা করেনি। এমনকি বোনের খোঁজ নেয়ার প্রয়োজনবোধও করেনি। তাই শফিউল রাশেদিনও স্ত্রীকে সেখানে পাঠাননা। তিনি শ্বশুর বাড়ির সম্পত্তিও চাননা। বড়ই হতভাগ্য তার মেজো ছেলের পরিবার।
বৃদ্ধা পরম মমতায় তাহমিনার চোখের পানি মুছিয়ে দেন।

” আর কখনও এমন কথা বলবনা, মা। তবুও তুমি কেঁদনা। এবার বসতো, একসাথে সবাই খেয়ে নিই। বড় বউমা তুমিও বস। আর কোন কথা হবেনা। ”
শ্বাশুড়ির কথামত তারা দুই জা চেয়ার টেনে বসে।
রাতে খাবার পর সানাউল রাশেদিন তার মায়ের কাছে বসে কথা বলছিলেন। আফরোজা নাজনীন রান্নাঘরে টুকটাক কাজ করছিলেন। এমন সময় সেখানে যান তাহমিনা আক্তার।

” বড় ভাই, আপনাকে একটা কথা বলার ছিল। ” মা-ছেলের কথার মাঝেই বলে উঠেন তাহমিনা আক্তার।
” কি বলবে বল। আজকাল তুমিও পারমিশন নিচ্ছ! তোমারও কি ছেলের বাতাস লেগেছে! ”
বড় ভাসুরের কথার ধাঁচে হেসে উঠেন তাহমিনা আক্তার।
” বড় ভাই, এই বিষয়ে ছেলের সাথে আমার কোন যোগাযোগ নেই। সে আপনার সাথে কি করবে সেটা আমাকে সে কখনোই জানায়না। আর আমি নিষেধ করলেও শুনবেনা। ”

” হুম বুঝেছি। এখন বল, কি বলতে চাও? ছোট ছেলেকে কি বিয়ে করাবে? তাহলে আমি আগেই মাফ চাচ্ছি, তোমার ঐ বেয়াদব ছেলের বিষয়ে আমি ইন্টারেস্টেড নই। ”
” আহা, সানাউল, বউমা কি বলতে চায় শোন। কিছু না শুনে আগেই তুমি আমার নাতিটাকে এর মধ্যে টানছ! ”
” আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি ভুলেই গেছিলাম, এই বাসায় ঐ বেয়াদবের দল ভারী। বল, তাহমিনা? ”
তাহমিনা আক্তার অনেক কষ্টে হাসি চেপে রাখেন। এরপর গিয়ে বসেন তার শ্বাশুড়ির কাছে।

” বড় ভাই, ভাবী আজও অনেক কেঁদেছে। সে যখনই একা থাকে, কায়েসের চিন্তাই করে। আপনি আরেকবার ছেলেটাকে খুঁজে দেখুননা। একটা মানুষ তো আর হাওয়া হয়ে যেতে পারেনা। ভাবীর কষ্ট যে আর দেখতে পারছিনা। ”
” আফরোজার কষ্ট আমিও সহ্য করতে পারিনা। আমি কায়েসকে খোঁজার সবরকম চেষ্টাই করেছি এতদিন। এমনকি এখনও বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ চলছে। গত বিশদিন আগে নাকি আমার একজন লোক টাঙ্গাইলে কায়েসের মত কাউকে দেখেছে। কিন্তু আমি বিদেশ থাকায়, আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি। আমার সেই লোক এই কয়েকদিন তার খোঁজ খবর নিচ্ছে। আমি এই কথাটা আফরোজাকে জানাইনি। যদি সেটা কায়েস না হয়, তবে আফরোজা আরেকবার কষ্ট পাবে। তাই তার সব খোঁজ-খবর নিয়েই তবে আফরোজাকে জানাব। ”

” আল্লাহ, আপনি ছেলেটাকে মিলিয়ে দিন। বড় বউমা তার আদরের ভাইকে ফিরে পাক। তবেই আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারব। বউমার বোনদের চোখেও পানি দেখেছি তাদের ভাইয়ের জন্য। ” বৃদ্ধা দু-হাত তুলে মোনাজাত করতে থাকেন।
বড় ভাসুরের কথা শুনে তাহমিনা আক্তার কিছুটা আস্বস্ত হন। তিনিও দোয়া করতে থাকেন কায়েসকে ফিরে পেতে।

জোহরের আজান শুনে তাহমিদ বেরিয়ে আসে ক্লিনিক থেকে। গত কয়েক মাস যাবৎ ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে একটা ক্লিনিকে রোগী দেখছে। সেখানে প্রতিমাসে একবার দুঃস্থ রোগীদের ফ্রী চিকিৎসা করে সে। ওর ইচ্ছে আছে প্রতিমাসেই দেশের বিভিন্ন জেলায় ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পিং করবে। সে অনুযায়ী কার্যক্রমও শুরু করেছে। তাহমিদ ওর সিনিয়র, জুনিয়র কয়েকজন ডক্টরের সাথে কথা বলেছে। তারা তাহমিদের এই উদ্যোগকে ওয়েলকাম জানিয়ে, নিজেরাও এগিয়ে এসেছে দেশের দুস্থ মানুষদের সেবায়।

প্রথমদিকে পনেরজন ডক্টর মিলে শুরু করবে। এরপর ধীরে ধীরে প্রসারিত করবে তাদের সেবার স্তর। তাহমিদ নিজে হার্ট স্পেশালিষ্ট ও সার্জন। সে বর্তমানে এই ক্লিনিকেই ফ্রী চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।
ক্লিনিক থেকে মসজিদের দূরত্ব পাঁচ থেকে সাত মিনিটের। এতটুকু পথ সে রিক্সায় যাওয়ার কথা ভাবে। ক্লিনিকের তিনতলা থেকে নিচে নামতেই রিক্সা পেয়ে যায়। রিক্সায় উঠে বসতেই চোখ যায় রাস্তার ডানদিকে গমনরত একটা মেয়ের দিকে। মেয়েটা হন্তদন্ত হয়ে হেঁটে চলছে। তার পরনে গোলাপি রঙের সস্তা সুতি সালোয়ার কামিজ। ওড়না মাথায় ক্লিপ দিয়ে আটকানো। হাতে বাজারের ব্যাগ। ডান হাতে ব্যাগ ধরে রেখেছে। আর বাম হাত দিয়ে ওড়নার কোনা দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে হাঁটছে সে।

সামনে কয়েকটা গাড়ি আসতেই জটলা পাকিয়ে যায়। রিক্সা, প্রাইভেট কার আর অটোয় সেখানে যানজট লেগে যায়। বাধ্য হয়ে মেয়েটিকেও থামতে হয়।
তাহমিদের রিক্সা চলতে শুরু করলে, তাহমিদ রিক্সাওয়ালাকে থামতে বলে। রিক্সাওয়ালা একপাশে রিক্সা দাঁড় করায়।
মেয়েটি ওড়নার কোনা দিয়ে মুখ মোছার কিছুক্ষণ পরই আবার ঘামতে শুরু করে। বিন্দু বিন্দু ঘাম তার কপাল বেয়ে গালে গড়িয়ে পরছে। দুই-এক ফোঁটা ঘাম উপরের ঠোঁটের ভাঁজে এসে জমা হয়েছে। শ্যামলা মুখশ্রীতে বিন্দু বিন্দু ঘাম যেন রুপার মত চিকচিক করছে। মেয়েটি আরেকবার ওড়নার কোনা দিয়ে মুখ মুছে নেয়।

বাঁকানো ভ্রুর নিচে টলোমলো তার চোখ। যেন চোখদুটিতে সাত সাগরের জলরাশি এসে ভীড় জমিয়েছে।
হঠাৎই তাহমিদের চোখ যায় মেয়েটির নাকের অগ্রভাগে। সেখানে এক ফোঁটা ঘাম এসে জড়ো হয়েছে। যেকোন মুহূর্তে টুপ করে নিচে পরবে।
এভাবে কতক্ষণ তাকিয়ে ছিল বলতে পারেনা। সামনে দাঁড়ানো প্রাইভেট কার হর্ন দিতেই ওর হুঁশ হয়। ততক্ষণে মেয়েটিও চলতে শুরু করেছে।

তাহমিদ ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নেয় মেয়েটি কোনদিকে যাচ্ছে।
মসজিদে যাওয়ার বাকি পথটুকু মেয়েটির ভাবনায় মত্ত থাকে তাহমিদ। মেয়েটি দেখতে আহামরি কিছু না হলেও ওর শ্যামলা চেহারা গেঁথে যায় তাহমিদের মনে। তাকে আরেক নজর দেখার পিপাসা অনুভূত হয় তাহমিদের।
নামাজ শেষ করে আবার ক্লিনিকে আসে তাহমিদ। ওর চোখ তখনও খুঁজে চলেছে সেই শ্যামলাবরণ মেয়েটিকে।

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ২

বিঃদ্রঃ পাঠকমহলের জানার জন্য বলছি, #বিন্দু_থেকে_বৃত্ত ‘ র সিজন -২ পুরোটাই নতুন হবে। আগের সিজনের সিক্যুয়েল হবেনা। প্রথম সিজনে কুহুর সংসার জীবন তেমন একটা উপভোগ করা যায়নি। এই সিজনে কুহুর সংসার, সম্পর্কের টানাপোড়েন, চড়াই-উৎরাই সবই থাকবে। তো আপনারা উপভোগ করতে থাকেন। ভালো লাগলে জানান আবার মন্দ লাগলেও অভিযোগ করুন। আর সপ্তাহে তিনদিন গল্প পাবেন।

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৪