বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৮

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৮
জাওয়াদ জামী

কুহু নিচে এসে রীতিমত কাঁপছে। এত ভোরে ছাদে এটা অচেনা মানুষকে দেখে ওর কলিজা শুকিয়ে গেছে। লোকটা নিশ্চয়ই চোর। কিন্তু চুরি করতে এসে ছাদে শুয়ে আছে কেন! সে যাইহোক এত কিছু ভাববার সময় নেই কুহুর। ওর প্রথম কাজ সবাইকে জানানো যে, বাসায় চোর ঢুকেছে। কিন্তু এই সময় কেউই রুম থেকে বের হয়না। যে যার মত রুমেই নামাজ আদায় করে। এই কয়দিনে দেখেছে ফুপা মাঝেমধ্যে মসজিদে যায়। যখন তার হাঁটুর ব্যথা বেড়ে যায়, তখন সে বাসায়ই নামাজ আদায় করে। গত দুইদিন থেকে ফুপার হাঁটুর ব্যথা বেড়েছে।

কুহু সবার দরজার সামনে যেয়ে দেখল, ভেতর থেকে বন্ধ। সিক্তাকে কয়েকবার ডেকেছে, কিন্তু ও সাড়া দেয়নি।
বাধ্য হয়ে কুহু রুমে এসে গুটিসুটি মেরে বসে থাকে। ওর ভিষণ ভয় করছে, চোরটা যদি এখানে চলে আসে! কথাটা মনে আসতেই কুহু বিছানা থেকে নেমে এক দৌড়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

এদিকে তাহমিদের হতভম্ব ভাব কাটেইনি। ও ভেবে পাচ্ছেনা স্বপ্নে দেখছে ঠিক আছে, তাই বলে এভাবে সামনেও আসবে! আবার কথাও বলছে! এটা কিভাবে সম্ভব! মেয়েটাতো দেখছি জ্বা’লি’য়ে অ’ঙ্গা’র করে দিচ্ছে। এমনিতেই তাকে দেখার পর থেকে ওর পিপাসা বেড়েছে। মাঝেমধ্যেই মেয়েটার কথা মনে হলে দমবন্ধ করা অনুভূতির সৃষ্টি হয়। হঠাৎ হঠাৎই মনে আষাঢ়ের মেঘ জমে। আবার কখনওবা ডানা মেলে উড়তে ইচ্ছে করে। এ যেন এক অসহ্য অনুভূতি। এর থেকে আজন্ম নিস্তার পাওয়া সম্ভব নয়। এখন যদি দিনের বেলাতেও মেয়েটা এভাবে তার দাপট দেখিয়ে বেড়ায়, তবে সে কাজকর্ম করবে কিভাবে!

” নাহ্ এভাবে আমার পক্ষে বাঁচা সম্ভব নয়। যে করেই হোক তাকে আমার খুঁজে বের করতে হবে। আমার বেঁচে থাকতে হলে অক্সিজেন প্রয়োজন। সেই অপরিচিতাই এখন আমার অক্সিজেনের ভূমিকা পালন করছে। তার বিহনে বাঁচা দুস্কর। আমার নিজের জন্যই তাকে আমার প্রয়োজন। আজকের দিনটা যাক। কাল থেকে তাকে খোঁজার মিশন শুরু করব। ”
তাহমিদ নিজের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে উঠে দাঁড়ায়।
প্রায় আধাঘন্টা পর দরজা খুলে বের হয় কুহু। এদিকওদিক তাকিয়ে নিচে নামে। ফুপুর রুমের সামনে আসতেই দেখল দরজা খোলা। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ফুপুকে মৃদুস্বরে ডাক দেয়।

” ফুপু, ভেতরে আছ? ”
” সোনা মা, তুই! এত সকালে এখানে কি করছিস! ” কুহুর ডাক শুনে আফরোজা নাজনীন বেরিয়ে এসে বললেন।
” বাসায় চোর এসেছে, ফুপু। আমি তাকে ছাদে দেখেছি। তুমি আমার সাথে ছাদে চল দেখবে। ”
” চোর এসেছে! কি বলছিস? কিন্তু তুই ছাদে গেছিলি কেন? চলতো আমার সাথে। ” আফরোজা নাজনীন কুহুর হাত ধরে উপরে উঠছেন।

” নামাজ আদায় করার পর, আর রুমে থাকতে ভাল্লাগলোনা। তাই ছাদে গিয়েছিলাম। সেখানেই একটা লোককে দেখলাম ছাউনির নিচে। ”
আফরোজা নাজনীন ছাদের দরজার কাছে আসতেই ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পান। তিনি কপাল কুঁচকে কুহুর দিকে তাকান
এদিকে দরজা বন্ধ দেখে কুহু ভিরমি খাবার জোগাড়। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করল কে!

” সোনা মা, দরজা তো ভেতর থেকে বন্ধ! তুই ঘুমের ঘোরে কি দেখতে কি দেখেছিস। এই বাড়িতে চোর ঢোকা এত সহজ নয়। চল, নিচে চল।”
ফুপুর কথা শুনে কুহুর মুখে কোন উত্তর জোগায়না। এতবড় ভুল ও করতেই পারেনা। ও ছাদে একজনকে অবশ্যই দেখেছে। কিন্তু সেই লোকটা গেল কোথায়! আবার দরজা ভেতর থেকে বন্ধ! এটা কিভাবে ঘটল!

আফরোজা নাজনীন কুহুকে রুমে পাঠিয়ে দিয়ে, তিনি নিচে যান। আজ যেহেতু শুক্রবার তাই সবাই একটু দেরি করে ঘুম থেকে উঠবে। আর তাহমিদ রাতে বলে দিয়েছে, আজ সারাদিন বাসা থেকে বের হবেনা। ঘুম থেকে উঠবে দশটার দিকে। তাই তাদের রান্নার তাড়া নেই৷ ধীরেসুস্থে রান্না করলেই হবে।
কুহু রুমে এসে চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে পরে।
ওর যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন সকাল সাড়ে দশটা। তাড়াহুড়ো করে বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুমে ঢোকে। সিক্তা তখনও ঘুমাচ্ছে।

কুহু ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দেখল সিক্তা এখনও উঠেনি। এবার ও জোরেসোরে সিক্তাকে ধাক্কা দেয়। ঘুমের মধ্যে আচমকা এমন ধাক্কা খেয়ে সিক্তা ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে। কুহু ইশারায় ওকে ঘড়ি দেখায়। সময় দেখে সিক্তা আর কিছু না বলে সোজা ওয়াশরুমের দিকে দৌড় দেয়।
” বড়মা ক্ষুধা লেগেছে, কিছু খেতে দাও। ” তাহমিদ ডাইনিং টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে বলল।
” তুই বস, বাপ। আমি খাবার নিয়ে আসছি। ”

” বড়মা, সিক্তকে দেখছিনা যে? আজ তো ওর কোচিং নেই। ও বাসায় আছে তো? আমি বাসায় এসেছি ও জানেনা? ”
” সে ঘুমাচ্ছে। তাকে ঘুম থেকে তুলতে হলে রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। তুই খেতো শুরু ও এসে যাবে। রাতে ওকে বলেছিলাম, তুই আসবি। তুই আসবি শোনার পর জেগে থাকতে চাইলে, আমিই মানা করে দিয়েছিলাম। ”

আফরোজা নাজনীন কথার ফাঁকে ফাঁকে তাহমিদের প্লেটে পরোটা তুলে দেন। আর বাটিতে দেন গরুর মাংসের কালাভুনা। তাহমিনা আক্তার আরেকটা বাটিতে সেমাই এনে রাখলেন।
তাহমিদ সিক্তার আসার অপেক্ষা করছে। ওরা একসাথে একমাস যাবৎ খায়নি। তাই আজ মা,বড়মা, সিক্তার সাথে বসে খাবে বলে ঠিক করে রেখেছে।

” বাবু, দিদুনের সাথে দেখা করেছিস? তিনি কিন্তু তোর জন্য চিন্তা করেছে এই একমাস। ”
” সকালেই দিদুনের সাথে দেখা করেছি, মা। অনেকক্ষণ দিদুনের সাথে গল্প করেছি। দিদুন আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছে। কি শান্তি জানোনা। মা, বড়মা তোমরাও বস একসাথে খাব। আচ্ছা সিনিয়র স্যার সকালে খেয়েছে ? তাকে তো দেখলাম ব্যথায় কাতরাচ্ছে। বড়মা, এক কাজ কর, কাল তুমি সিনিয়র রাশেদিনকে নিয়ে মেডিকেলে চলে এস। আমি ডক্টরের সাথে কথা বলে রাখব। ”

ওদের কথার মাঝেই ডাইনিং রুমে প্রবেশ করে সিক্তা। ওর পেছনে কুহুও আছে।
” ভাইয়াআআআ, কেমন আছো? আমার জন্য কি এনেছ? আইফোন এনেছ তো? ” সিক্তা পেছন থেকে তাহমিদকে দেখে চিৎকার দিয়ে কথাগুলো বলতে থাকে।
কুহু তাহমিদের পেছন সাইড দেখতে পাচ্ছে। ও টেবিলের কাছে যেতে ইতস্তত করছে। একটা অচেনা মানুষের সাথে বসে খাবে কেমন করে সেই চিন্তা ও করছে।
” তুই কি আইফোনের জন্যই আমাকে বারবার দেশে আসতে বলেছিলি! তোর বাপ তোকে আইফোন কিনে দিয়েছেনা? বাপের এত টাকা থাকতে আমার কাছে আইফোন চাস কেন? নাকি তোর কিপ্টে বাপ বলে দিয়েছে আমার কাছ থেকে আইফোন নিতে? ”

” শোন ভাইয়া, যতই কথা প্যাঁচাও আমি মোটেও রাগ করছিনা। ভাই হিসেবে বোনকে আইফোন কিনে দেয়া তোমার দ্বায়িত্বের মধ্যে পরে। আর সেই দ্বায়িত্ব তুমি পালন করতে বাধ্য। ”
” আগে বোনের দ্বায়িত্ব পালন কর, তবেই না ভাই হিসেবে দয়া-ধর্ম করে কিছু দেব। ”

” কুহু মা, এদিকে আয়। ঐখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? আয় আমার ছেলের সাথে তোকে পরিচয় করাই। ” দুই ভাই-বোনের কথায় কান না দিয়ে তাহমিনা আক্তার কুহুকে কাছে ডাকলেন।
নতুন কারও নাম শুনে তাহমিদ ভুরু কোঁচকায়। ওর জানামতে কুহু নামে তো তাদের কোন আত্মীয় নেই। এই একমাসের ব্যবধানে কুহু নামের কে আবার আসল!
তাহমিদের নজর সামনের প্লেটের দিকে।
তাহমিনা আক্তারের ডাকে কুহু গুটিগুটি পায়ে সামনে এগিয়ে আসে।

” বাবু , তোর কায়েস মামাকে মনে আছে? ”
” কেন মনে থাকবেনা, মা! বড়মার সেই রোমিও ভাই। যে তার জুলিয়েটের জন্য আত্নীয়-পরিজন ত্যাগ করেছে। এমন প্রেম কয়টা দেখা যায়। প্রেমের জন্য বিশ-বাইশ বছর ধরে ঘরছাড়া। তবে যাই বলোনা কেন, মামা কিন্তু ভিষণ ভালো ছিল। ” তাহমিদের নজর এখনও প্লেটের দিকে।

কুহু তাহমিদের এমন ড্যাম কেয়ার মার্কা কথা শুনে একটু বিরক্ত হয়। লোকটা কিভাবে তার বাবাকে ব্যঙ্গ করে কথা বলছে! এবার তাকে একটু দেখতেই হয়। কুহু এতক্ষণ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। এবার সে মুখ তুলে তাহমিদের দিকে তাকায়।
একি! ছাদের সেই লোকটা! আল্লাহ, সে তাহলে চোর নয়! কিন্তু আমি যে ভয় পেয়ে দৌড় দিয়েছিলাম! এছাড়া, পাগলের মত চুল ছেড়ে দাঁড়িয়েছিলাম। কুহু মনে মনে বলতে থাকে।

” এ কুহু, তোর কায়েস মামার মেয়ে। কায়েস বাড়িতে ফিরে এসেছে। ” মায়ের কথা শুনে তাহমিদ মুখ তুলে তাকায়।
সামনে দাঁড়ানো কপাল কুঁচকে থাকা মেয়েটাকে দেখে আবারও ওর দমবন্ধ করা অনুভূতি এসে বুকে হানা দেয়।
” এই মেয়েটাকি আমাকে শান্তিতে খেতেও দিবেনা! ভোরে আমার কল্পনায় এসে শান্তি পায়নি! আবার কায়েস মামার মেয়ের চেহারায় এসে হাজির! ও-কি বোঝেনা, ওকে দেখলেই আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়! ওকে ছুঁয়ে দিতে, ওর পরশ নেয়ার জন্য আমি হাঁসফাঁস করি। এযে কি এক অসহ্য অনুভূতি। ” তাহমিদ মাথা নিচু করে বিরবির করে বলতে থাকে। সেই সাথে সময় নিচ্ছে। যাতে ও কায়েস মামার মেয়ের সত্যিকারের চেহারা দেখতে পায়। ওর শ্যামাকন্যাকে ও অন্য কারও শরীরে দেখতে চায়না।

কুহু তাহমিদকে দেখার পরই মাথা নিচু করে রেখেছে। ভোরের ঘটনার জন্য ও ভিষণ লজ্জা পাচ্ছে। লোকটার সাথে দেখা হওয়ার প্রথমদিনই কি একটা ঘটনা ঘটে গেল।
তাহমিদ কিছুক্ষণ পর মাথা তুলে তাকায়। কি আশ্চর্য এবারও সে তার শ্যামাকন্যাকেই দেখছে! হঠাৎই তাহমিদের বোধদয় হয়। ভোরে তার শ্যামাকন্যার বলা, ও মা গো কথাটা মনে হয়। তবে কি ও সত্যি দেখছে! ওর সামনে শ্যামাকন্যাই দাঁড়ানো!

এবার তাহমিদের পিপাসা পায়। ওর বুক শুকিয়ে খটখটে হয়ে গেছে। শরীর ঘামছে। এতদিনের তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে বুঝি প্রেমের বর্ষণ হতে চলছে। বাঁধভাঙা প্রেম এসে বুঝি হৃদয়ের দু কূল ছাপিয়ে দিবে। আজ বাতাসে যেন প্রেম প্রেম গন্ধ ভাসছে। কুঞ্জছা’য়ার প্রতিটি কোনে, ইট-পাথরের রাজ্যে আজ প্রেমের নব জাগরন শিহরন তুলেছে।

” সিক্ত, আমাকে এক গ্লাস আইস কিউব মেশানো পানি দিবি। ” হাঁসফাঁস করতে করতে বলে তাহমিদ।
” কি বলছ, ভাইয়া! তুমি ঠান্ডা পানি খাবে! তোমার না ঠান্ডা কিছু খেলে গলা বসে যায়! ”
” আমাকে বাঁচাতে চাইলে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি দে, কুইক। ”
তাহমিদকে হাঁসফাঁস করতে দেখে ওর মা, বড়মা দুজনেই ছেলের কাছে আসলেন।

” বাপ, তোর কি হয়েছে? এমন করছিস কেন? ”
” বাবু, কি হয়েছে তোর? তুই ঠিক আছিস তো? ”
” মা, বড়মা, আমি ঠিক আছি। শুধু একটু পিপাসা পেয়েছে। আমার এই মুহূর্তে ঠান্ডা পানি লাগবে৷ ”
সিক্তা ঠান্ডা পানি এনে দিলে, তাহমিদ এক নিঃস্বাসে পানি শেষ করে। এরপর কয়েক মুহুর্ত চুপচাপ থাকে।
” বুঝলে বড়মা, আজ আমার বুক, হৃদয় সব ভিজছে। আমার সকল রোগের ঔষধ মিলেছে। এবার শুধু গ্রহন করার পালা। ”

কেউই তাহমিদের কথার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারছেনা।
” ভাইয়া, তুমি কিসব আবোলতাবোল বকছ! তোমার আবার অসুখ হল কবে! তোমার অসুখ হয়েছে, কিন্তু আমরা কেউই জানিনা, এটা কি মেনে নেয়ার মত বিষয়? ”
” তোকে এত বুঝতে কে বলেছে? কথা না বলে খেতে বস। বড়মা, তোমরাও খেয়ে নাও। বড়মা, কে খুঁজে বের করল সেই রোমিওকে? ”
” তোর বড় চাচ্চু। ”

” বাহ, সিনিয়র রাশেদিন এতদিনে একটা কাজের কাজ করেছে৷ এজন্য তাকে সাধুবাদ জানাতেই হচ্ছে। এতদিনে তার মগজের গুন পাওয়া গেল। তিনি বুঝিয়ে দিলেন, ভুঁড়ির সাথে সাথে তার জবরদস্ত একটা ব্রেইনও আছে। ”
তাহমিদকে স্বাভাবিক দেখে কেউ আর কোন কথা বাড়ায়না। সবাই নিজ নিজ চেয়ার টেনে বসে যায়।
তাহমিদের সামনের চেয়ারে কুহু বসেছে। আফরোজা নাজনীন কুহুর প্লেটে তিনটটা পরোটা তুলে দিলে, কুহু একটা ফিরিয়ে দেয়। এরপর চুপচাপ খেতে থাকে। তাহমিদের সামনে খেতে ওর ভিষণ অস্বস্তি লাগছে৷
এদিকে তাহমিদ খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে কুহুকে দেখছে। যতই ও কুহুকে দেখছে, ততই দেখতে ইচ্ছে করছে। এ ইচ্ছে যেন ফুরোবার নয়।

” সর্বনাশ যা ঘটাবার ঘটিয়ে ফেলেছি। মেয়ের সামনে তার বাপকে রোমিও বলেছি। তার বাপের প্রেমের ফিরিস্তি দিয়েছি। এখন মেয়ে বেঁকে না বসলেই হয়। কে জানত সেই রোমিওর মেয়েই তার শ্যামাকন্যা! তাহমিদ নিজের জবানকে লাগাম দিতে শিখ। নইলে এই জীবনে তুই বড্ড ভোগান্তি পোহাবি। ”
” বাপ, একা একা কি বিরবির করছিস? খেয়ে নে। কিছুই তো এখন পর্যন্ত খাসনি। ”
” খাচ্ছি, বড়মা। ”
নীরবে খাওয়া শেষ করে সবাই। তাহমিদ খাওয়া কম, কুহুকে দেখেছে বেশি। গত একমাসের তার তৃষ্ণার্ত নয়ন আজ সিক্ত হচ্ছে স্বপ্নকন্যার দর্শনে।

” তাহমিদ ভাইইইই, কেমন আছো? দেখেছ ঠিক সময়ে চলে এসেছি। খালামনি আমাকে খেতে দাও। কিরে কোকিলা, কেমন আছিস? সিক্তা তুই ভালো আছিস? ছোট খালামনি, তোমার কি অবস্থা? দিদুন কোথায়? ” আনান এসে হাজির হয়। ও একসাথে সবাইকে প্রশ্ন করল। আর কুহুকে প্রশ্ন করার সময় ওর মাথায় একটা টোকা দেয়। এরপর একটা চেয়ার নিয়ে কুহুর পাশে ফাঁকা জায়গায় বসে, কুহুর প্লেট থেকে পরোটা নিয়ে খেতে শুরু করে।

” আসতে না আসতেই সবাইকে একসাথে প্রশ্ন করছিস! কে, কোনটার উত্তর দিবে? গাধা। তুই আরেকটু পর আসতে পারলিনা? খাওয়ার সময়ই আসতে হল? ” আনানকে কুহুর পাশে বসতে দেখে তাহমিদের মাথা গরম হয়ে গেছে।
” বাবু, এসব কি বলছিস? ছেলেটা ওর খালার বাসায় আসতেই পারে। যখন খুশি তখনই সে আসবে। তুই দিনদিন অসামাজিক হয়ে যাচ্ছিস। ” তাহমিনা আক্তার ছেলেকে ধমক দেন।

” আহা, ছোট খালামনি, বাদ দাও। তোমার ছেলে যে একটু তার ছেঁ’ড়া সেটা আমরা সবাই জানি। শুধু কুহু জানেনা। আজ কুহুও জেনে গেল। তা ভাই, সিঙ্গাপুর থেকে আমার জন্য কি এনেছ? সিক্তা, তোর জন্য ভাই কিছু এনেছে? ”
” আমি ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করেছি, কিন্তু ভাইয়া বলেছে কিছুই আনেনি। ”

” আনান, তোর জন্য আমি পিংক কালারের জুতা এনেছি। ভেতরে চল যত্ন করে পরিয়ে দিব। এছাড়া পিংক কালারের রিষ্ট ওয়াচ, আর একটা পিংক কালারের গাউনও আছে। বড়মা, আমরা খাওয়ার পর যে কয়টা পরোটা বাঁচবে, সবগুলোই ওকে খাওয়াব বুঝলে। আর খাওয়া শেষে গাউন, জুতা আর ঘড়ি হাতে পরিয়ে পুরো এলাকা ঘুরিয়ে আনব। ”

” ভাই, আত্মীয়ের সাথে সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয় বুঝলে? তুমি ডাক্তার হওয়ার পর বদলে গেছ। মানুষের হার্ট নিয়ে কাজ করতে করতে নিজের হার্ট খুঁইয়ে বসে আছ। এমন হতে থাকলে তোমার বিয়ে হবেনা বলে দিলাম। আমি দ্বায়িত্ব নিয়ে তোমার বিয়ে ভাঙ্গব। ” আনান কুহুর প্লেট থেকে খাচ্ছে বিধায় কুহু খাওয়া বন্ধ করে আনানের দিকে তাকিয়ে থাকে।
” বড়মা, ওকে আরও কয়েকটা পরোটা দাও। ও খেতে না পারলেও মুখে গুঁজে খাওয়াব। ও আমার সামনে বলছে, আমার বিয়ে ভাঙ্গবে! কতবড় সাহস ওর! আজ তোর হচ্ছে আনান। ”

তাহমিদ লক্ষ্য করল কুহু কিছুই খাচ্ছেনা।
” দেখেছিস কোকিলা, ভাই কেমন করে বলে? এই বাসায় আমার দুই খালামনি আর দিদুন ছাড়া কেউই সুবিধার নয়। অবশ্য তাহমিদ ভাইয়ের বাবা মানুষ হিসেবে মন্দ নন। এই সিক্তাও একদম ভাইয়ের মতই। একবারে খা’টা’শ। ”
” আনানের বাচ্চা, তুই আমাকে খা’টা’শ বললি? তোর কথা হচ্ছে ভাইয়ার সাথে, এর ভেতর তুই আমাকে টানলি কেন? আর আমার বাবাকেও তোর ভালো লাগেনা? তুই একবার খেয়ে ওঠ। ” সিক্তা হুংকার ছেড়ে বলে।
” খালামনি, দেখেছ তোমার মেয়ের আচরণ। বড়দের সম্মান দিতে জানেনা! আমি যে ওর বড়, সেটা ও মানতেই চায়না! আজকালকার মেয়েরা একেকটা চিজ। ”

” আমার বাবা কি তোর ছোট? একটু আগে যে আমার বাবাকে ভালো বলতে তোর বাঁধল? ”
” আহ্ সিক্তা থামবি? কি শুরু করেছিস? ছেলেটাকে একটু খেতে দে। ” আফরোজা নাজনীন ধমকে ওঠেন।
” কোকিলারে, এদের চিনে রাখ। দেখ এরা আমার ওপর কি অত্যাচারটাই না করে। নে আমার হাতে একটু পরোটা খা। ” আনান এক টুকরো পরোটা কুহুর মুখে তুলে ধরে। কুহু একটু ইতস্তত করে পরোটার টুকরো মুখে নেয়।
” আনান, খাওয়া শেষ করে আমার রুমে আয়। আজকে তোর ক্লাস নিব। ” আনানের কুহুর মুখে খাবার তুলে দেয়া দেখে তাহমিদের রাগ উঠে যায়। সে একটা পরোটা খেয়েই উঠে যায়।

কুহু হতভম্ব হয়ে এদের কথা শুনছে। এরা কেউ কারও চেয়ে কম নয়। তবে ঐ তাহমিদ একটু বেশিই ব’দ। কিছুক্ষণ আগে ফুপার সম্পর্কে কেমন ভাবে কথা বলল, তারপর কুহুর বাবাকে নিয়ে বলল, এরপর আবার আনান ভাইয়ের পেছনে লেগেছে!
খাওয়া শেষে আনান এসে উঁকিঝুঁকি মারছে তাহমিদের দরজার বাইরে থেকে।
” চোরের মত উঁকি না দিয়ে ভেতরে আয়। ”
” থাংকু ভাই, তু…..। তাহমিদের দিকে তাকিয়েই আনানের মুখ চুপসে গেছে। তাহমিদ ওর দিকে বাঘের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

” তুই আমার বিয়ে ভাঙ্গবি? কত স্বপ্ন দেখার পর তাকে আমি পেয়েছি, আমার সেই স্বপ্নকে তুই ভেঙে দিবি? ”
” আমি তোমার সাথে মজা করেছি, ভাই। তোমার সাথে এমন কাজ আমি করতেই পারিনা। ” দাঁত কেলিয়ে বলে আনান।
” এই তুই মেয়েটাকে কোকিলা বলে ডাকলি কেন? ওর নাম কি কোকিলা? ও কি তোর ছোট? ” হঠাৎই প্রসঙ্গ পাল্টানোয় আনান থমকায়। বুঝতে চেষ্টা করে তাহমিদ কার কথা বলছে। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে বুঝতে পারে তাহমিদ কুহুর কথা বলছে।

” ও আমার অনেক ছোট। সবে এইচএসসি দিয়েছে ও। কোকিলের ডাক কুহু, তাই ওকে কুহু না বলে কোকিল বলি। ”
” তোর জন্য পিংক কালারের যে গাউন এনেছি, ঐটা বের করছি দাঁড়া। গাউনটায় তোকে খুব মানাবে। ”
” ভাই, কিছু না দিলে না দাও। তবুও মেয়েদের পোশাক পড়ার কথা বলোনা। শেষে দেখা গেল আমি তোমাকে পছন্দ করে বসে আছি। অনেক সাধনার পর দুজন – দুজনকে পেলাম। কিন্তু আখেরে বাবা-মা হতে পারলামনা। যেখানে তোমার মামা হওয়ার কথা, সেখানে স্বামী-স্ত্রী সেজে দিন কাটাতে হচ্ছে। ”

” সম্পর্কে বড় জন্য তুই এমন বেহুদা মার্কা কথা বলার পরও বেঁচে গেলি। তবে আমার ভাগ্নে-ভাগ্নী’ র বাপ হওয়ার সাধ মেটাচ্ছি। ”
” ভাই, আমি গুণে গুণে তোমার কয়েক বছরের ছোট। কিন্তু এসব কি বলছ! আমি সম্পর্কে বড় কিভাবে হলাম! মাথা কি পুরাই গেছে? ”
” আমার মাথা ঠিকই আছে শুধু তোর বোধবুদ্ধি গেছে। এখন থেকে আমাকে যথাযথ সম্মান দিবি, বুঝলি? আমি আবার জামাই হিসেবে একটু চুজি এবং আত্নমর্যাদাসম্পন্ন। ”

” কে, কার জামাই! তুমি বিয়ে করলে কবে? ”
” একমাস আগেই সব করেছি। তবে সেটা একপাক্ষিক। কয়েকদিনের মধ্যেই আয়োজন করে নিজেকে জামাই ঘোষণা করব। তুই কিন্তু ভুলেও আমার সাথে উল্টাপাল্টা কিছু করবিনা। জামাইকে সম্মান দিয়ে কথা বলবি। একটু এদিক-সেদিক হলেই পিংক গাউন তোর জন্য অপেক্ষা করছে। ”
তাহমিদের কথা শুনে আনানের মাথা ঘুরছে। কিসের জামাই, জামাই করছে! তবে পিংক গাউন পড়ার ভয়ে কোন প্রশ্ন করার সাহস পায়না।

” ভাইয়া, তুমি কি সত্যি আমার জন্য কিছু আনোনি? হ্যাঁ অথবা না বলবে। ” সিক্তা হন্তদন্ত হয়ে তাহমিদের রুমে এসে বলে।
” শোন, আমার মন-মেজাজ আজকে খুব ভালো। তাই তোদের বেশি নাচালামনা। এই নে তোর আইফোন সাথে আর কি কি আছে দেখ। আনান এটা তোর জন্য। ” তাহমিদ আনান ও সিক্তার হাতে দুইটা প্যাকেট ধরিয়ে দেয়।
কুহু দিদুনের রুমে এসেছে। দিদুনের সাথে বসে এটা-সেটা নানান গল্প করছে।

এদিকে তাহমিদ কুহুকে খুঁজে চলেছে। ও বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ মেয়েটাকে দেখেনি। এরইমধ্যে বুকের ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। অক্সিজেনের অভাবে বুকটা হাঁসফাঁস করছে। কুহু নামক অক্সিজেন এই মুহূর্তে তার ভিষণ প্রয়োজন।
” বড়মা, সিক্তা কোথায়? ওকে দেখছিনা যে? ” আসলে তাহমিদ কুহুর খোঁজ জানতে চাচ্ছে। সিক্তা কোথায় আছে জানলেই ও কুহুর খোঁজ পেয়ে যাবে।

” ও বোধহয় বাগানের দিকে গেছে। নতুন ফোন পেয়ে ছবি না তুললে তার খাবার হজম হবেনা। কুহুকেও সাধল ছবি তোলার জন্য, কিন্তু ওর সাথে গেলনা। ও তোর দিদুনের কাছে গেল। ”
” তুমি খুব খুশি হয়েছ তাইনা মামা ফিরে আসাতে? ”
” খুব খুশি হয়েছি, বাপ। আরও খুশি হতাম, যদি আইরিনও কায়েসের সাথে ফিরত। ”
” তোমার কথা বুঝলামনা। ”

” যে আইরিনকে নিয়ে কায়েস বাড়ি ছেড়েছিল, সেই আইরিন কুহুর জন্মের পর মা’রা যায়। মেয়েটা সৎমায়ের সংসারে বড় হয়। আবার একটা সময় সংসারের হালও ধরে। আমার ভাইটা সুখ পেয়েও হারিয়েছে। ”
বড়মার কথা শুনে তাহমিদের বুক ভারি হয়ে আসে। কিন্তু কোন ভাব প্রকাশ করতে পারেনা।
ও কিছু না বলে সেখান থেকে সরে আসে। এবার ওর গন্তব্য দিদুনের রুম।

” দিদুন, দাদু কতদিন হচ্ছে মা’রা গেছে? ” কুহু জিজ্ঞেস করে আয়েশা সালেহাকে।
” তাহমিদের যখন দশ বছর বয়স তখন তোর দাদু মা’রা যায়। তাও প্রায় অনেক বছর হয়ে গেছে। ”
” দিদুন ও দিদুন? ” তাহমিদ এমনভাবে রুমে ঢোকে যেন সে জানেইনা কুহু সেখানে আছে।
” ওহ্ তোমাদের ডিস্টার্ব করলাম বোধহয়? আচ্ছা আমি চলে যাচ্ছি। ”
” দাদু ভাই, এস, বস। কুহুর সাথে তোমার পরিচয় হয়েছে? ”
” সেভাবে পরিচয় হয়নি। শুধু জানি ও কায়েস মামার মেয়ে। ”

” কুহু সোনা, এ তোমার তাহমিদ ভাইয়া। তোমার আন্টির ছোট ছেলে। এই একমাস সে সিঙ্গাপুর ছিল। গত রাতেই ফিরেছে। ও কিন্তু হার্টের ডক্টর। আমার আদরের নাতি। তোমার ফুপুর আদরের ছেলে। ”
” দিদুন, এভাবে পরিচয় করিওনা। লজ্জা লাগে৷ কেমন বিয়ের পাত্র বিয়ের পাত্র ফিল আসছে। বিয়ের ক্ষেত্রে কিন্তু এভাবেই পাত্রের পরিচয় দেয় সবাই। সামনে আবার যদি কোন রমনী থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই। সেই পাত্র পাত্র ফিল বাস্তবে রূপ নিতে দেরি লাগেনা। ” তাহমিদের চোখ কুহুর দিকে। আর কুহুর দৃষ্টি মেঝেতে।
এবার কুহুর লজ্জা পাবার পালা। তাহমিদের নির্লজ্জ ধরনের কথা শুনে ওর কান গরম হয়ে গেছে লজ্জায়।

” দাদু নামে, মেয়েটাকে এভাবে লজ্জা দিচ্ছ কেন। ও কিন্তু আর পাঁচটা মেয়ের মত নয়। তুমি ফ্লার্ট করলে ও কোন প্রত্যুত্তর করতে পারবেনা। ”
” আমি সত্যি বলেছি, ফ্লার্ট করিনি তো! তোমার নাতির বিয়ের বয়স হয়েছে। তার কি বিয়ের পাত্রের ফিল আসতে পারেনা! এত নি’ষ্টু’র কেন তোমরা? নাতির বিয়ের বয়স হয়েছে অথচ তোমাদের চোখে পরেনা। ইদানীং চারপাশে অনেক কন্যা দেখা যায়। বিয়ের প্রপোজাল পাঠাতে দোষ কোথায়! ”

” তুমি কি সত্যিই বিয়ে করতে চাও! এ আমি কি শুনছি! যে ছেলেকে গত দুই বছর যাবৎ বিয়ের জন্য রাজি করানো যায়নি, সে আজ হঠাৎ বিয়ের কথা বলছে! ”
” দিদুন, সবই বয়সের দোষ। বয়সটাই এখন বিয়ের৷ মনটা শুধু বউ বউ করছে। তার আর কোন কিছুর অভাব নেই, শুধু একটা বউ ছাড়া। ”

” দিদুন, আমি ফুপুর কাছে যাই? দেখি তার যদি কোন সাহায্য লাগে। ” কুহু তাহমিদের কথা শুনে লজ্জা পাচ্ছে।
” মেয়ে, তোমার সাথে তেমনভাবে পরিচয়ই হলোনা। এখনই যাই যাই করছ কেন! দিদুন, ওকে বল, তোমার নাতির লজ্জাশরম একটু কম। এখন থেকেই যেন সে এসবে অভ্যস্ত হয়ে নেয়। জামাইয়েরা কিন্তু রোমান্টিক হয়, এমন গোমড়ামুখো বউ পছন্দ না-ও করতে পারে। ”

” দাদু, অনেক হয়েছে। মেয়েটাকে আর কিছু বলোনা যেটা শুনে অপ্রস্তুত হয়। ”
” ঠিক আছে, বললামনা। শোন মেয়ে, আমি আবার দিদুনের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। এক মিনিট, তুমি ভোরে ওভাবে দৌড়ে পালানে কেন? ভয় পেয়েছিলে? ”
কুহু যে ভয় পাচ্ছিল, সেই প্রশ্নই করল তাহমিদ।
ও উত্তর না দিয়ে শুধু মাথা নাড়ায়।

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৭

” মাঝেমধ্যে ভয় পাওয়া ভালো। এতে জামাই পজিটিভলি প্রভাবিত হয়। বিনিময়ে ভালোবাসাও ডাবল পাওয়া যায়। ”
” দিদুন, আমি গেলাম। ” বলেই এক দৌড়ে বেড়িয়ে যায় কুহু।
” তাহমিদ, দিলেতো মেয়েটাকে লজ্জায় ভাসিয়ে। তোমাকে আগে কখনও মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করতে দেখিনি! আজ এমন করলে কেন? ”
” ক্রমশ প্রকাশ্য, দিদুন। আমি যাই। তাকে আরেকটু লজ্জায় ভাসাই। তার লজ্জামাখা মুখে যেন আধা স্বর্গ খেলা করছে। ”

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৯