বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৯

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৯
জাওয়াদ জামী

” কায়েস, ও কায়েস, বাড়িতে আছ নাকি? ”
বাইরে থেকে কেউ কায়েসকে ডেকে চলেছে। কায়েস বাড়িতে না থাকায় শিউলি বেরিয়ে আসে। গেইট খুলে দেখল, সেদিনের সেই জমির উদ্দিন মেম্বার দাঁড়িয়ে আছে

” হেয় তো বাইত্তে নাই। দোকানে গেছে। কিছু কইবেন আপ্নে? ”
” বউমা যে, ভালো আছ? তোমার সাথে একটা দরকার আছিল৷ ” জমির উদ্দিনের ঠোঁটে ধূর্ত হাসি।
” জ্বি, ভালো আছি। আসেন ভিতরে আসেন। ”
শিউলি জমির উদ্দিনকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়। ও ভুল করেও মনে করলনা, ওর ননদরা বারবার করে নিষেধ করেছে, জমিরকে বাড়ির ভেতর নিতে।
শিউলি বারান্দায় একটা চেয়ার পেতে দিলে, জমির উদ্দিন সেখানে বসে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” আমার সাতে আপ্নের কি দরকার? ”
” তোমার ছেলে-মেয়ে কই? দেখতেছিনা যে? ”
” ওরা ইস্কুল কইরা আবার প্রাইভেট পড়বার গেছে। ”
” তা বউমা, তোমার বাপের বাড়িতে কে কে আছে? ”
” মা আর ছোট দুই ভাই আছে। তয় বড় ভাই আলাদা সংসার পাতছে। আমার মা ছোট ভাইরে নিয়া থাকে। ”
” তাদের সংসার চলে কিভাবে? ” সরাসরি প্রশ্ন করে জমির উদ্দিন।
প্রশ্নটা শুনে একটু ইতিউতি করে শিউলি। ঘরের কথা জিজ্ঞেস করে বসেছে জমির চাচা। তার মা-ভাইয়ের সংসারে যতই অভাব থাকুক, বাইরের কারও কাছে সে কথা বলতে ওর বাঁধছে।

” আমার কাছে কিছু লুকাইওনা, বউমা। আমি কিছুডা জানি তোমার বাপের সংসারের ব্যাপারে। আমি সাহায্য করতে চাইতাছি। তাই তোমারে জিজ্ঞেস করলাম। ”
” আপ্নে কি সাহায্য করবেন! ”
” আমি কিন্তু এলাকার মেম্বার। অনেক কিছুই করবার পারি। তোমার মা’য়ের সংসার কিভাবে চলে? ”
” ছোট ভাইডা এদিকসেদিক কাম কইরা যা পায় তাই দিয়াই চলে তাগোর সংসার। বড় ভাইয়ের একটা সিএনজি আছে, তাই তার অভাব নাই। কিন্তু আপ্নে সাহায্য করবেন ক্যাম্নে? ”

” তাইলে বলি শোন, আমি কার্ড কইরা দিবনে। সেই কার্ড দিয়া চাল,ডাল সবই পাইব। আবার টাকা-পয়সাও দিবার চেষ্টা করব। তুমি চিন্তা কইরো না। তবে এইসব কথা কায়েসের কাছে কইওনা। ও শুনলে রাগ হবার পারে। ”
” কিন্তু আমার মা-ভাই তো এইখানকার না। হেরা কার্ড পাইব? ”
” সেই চিন্তা আমার। তুমি খালি দেইখা যাও, আমি ক্যাম্নে কি করি। এই যে ধর পাঁচ হাজার টাকা। তোমার মায়ের কাছে পাঠায় দিও। ”

” কিসের ট্যাকা? আমি আপ্নের কাছ থাইকা ট্যাকা নিমু ক্যা? ”
” বউমা, এইডা সরকারি টাকা। আমার কাছে এমন অনেক টাকা অনুদান আসে। সেইখান থাইকাই তোমারে দিতাছি। বাজারে সেইদিন আলোচনা হচ্ছিল কায়েসের কথা, তোমার বাপের বাড়ির কথা। সেইখান থাইকাই জানলাম তোমার বাপের বাড়ি সম্পর্কে। তখন শুইনাই খারাপ লাগল। আরেকদিন তোমারে দেখে গেলাম, কত ভালো একটা মেয়ে তুমি। তাই আমি একটু সাহায্য করবার চাইতাছি। নেও টাকাটা নেও। ”

” চাচা,আপ্নে মানুষ না আপ্নে ফেরেশতা। আপ্নে বসেন আমি চা-নাস্তা আনতাছি। ” শিউলি টাকা নিয়ে ভেতরে যায়।
এরপর ট্রে-তে করে মিষ্টি, আপেল আর চা নিয়ে হাজির হয়।
জমির উদ্দিন মনের সুখে চায়ের কাপে চুমুক দেয়।
” বউমা, কায়েসের বড় মেয়েকে তো দেখতাছিনা। সে কই? ”
” হেয় ঢাকায় গেছে। ফুপুরা সাথে নিয়া গেছে। সেখানেই কোচিং করতাছে। ”
” সে আসবে না? মেয়েটা গায়ে-গতরে ডাঙ্গর হইছে দেখলাম। তারে বিয়া দিবানা? ”
” হেইডার আমি কি জানি। তার বাপ, ফুপুরা আছে। তারাই সব জানে। ”

” তা-ও ঠিক। বুঝলা বউমা, একা একা বাড়িতে থাকি। তোমার সাথে গল্প করে খারাপ লাগতাছেনা। এই বুড়া বয়সে একা একা রাইন্ধা খাওয়া লাগে। অসুখে পরলে খোঁজ নেওয়ার কেউ নাই। দিন-রাত কাটবার চায়না। ”
” দৃষ্টির বাপের কাছে থাইকা শুনছি, আপনে একাই থাকেন। শুইনা খারাপই লাগল। আপ্নে মাঝেমইধ্যে আইসা আমার লগে গল্প কইরা যাইয়েন। ”

” লোকজন তো কয় আরেকটা বিয়া করতে। আমিও চিন্তা কইরা দেখলাম, কতদিন আর একা কাটাব। দেইখাশুইনা একটা বিয়াই করব। একটা মেয়ে দেখ, বউমা। মেয়েকে আমি সোনা দিয়া মোড়ায়া নিয়া যাব। সেই সাথে মেয়ের মা’কে ও টাকা-পয়সা সব দিব। আল্লাহর রহমতে আমার তো কম নাই। একটা ডাঙ্গর মেয়ের খোঁজ করো। ”
” আচ্ছা। আমি দেখমুনে। ”

” এখন যাই, বউমা। আমি আসছিলাম এই কথা কায়েসরে বইলোনা। আমি যা সাহায্য করব, গোপনেই করব। কায়েস শুনলে রাগ করবে। ওরা এই এলাকার নামীদামী মানুষ। কারো সাহায্য তারা নেয়না, পারলে সাহায্য করে। আর পারলে সামনে সপ্তাহে কিছু টাকা দিবনে। ”
” আচ্ছা, চাচা, তারে কমুনা। আপ্নে যা দিবেন, আমি গোপন রাখমু। ”
জমির উদ্দিন হাসিমুখে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। মাছের টোপ ফেলেছে, মাছ অর্ধেক টোপ গিলেছেও পুরোটা গিললেই বরশি টান দিবে সে।

সারাদিন তাহমিদ বাসায় থাকায় থেকে থেকেই হৈ-হুল্লোড়ের আওয়াজ নিচ থেকে শুনতে পাচ্ছে সবাই। আনান আর সিক্তার ঝগড়া বাঁধছে কিছুক্ষণ পরপরই। কুহু ওদের সাথে না গিয়ে ফুপুর কাছে আছে।
” সোনা মা, তুই ও যা ওদের কাছে। তোর ভালো লাগবে। ”
” আমি এখানেই ঠিক আছি ফুপু। তোমাকে একটা কথা বলব ভাবছিলাম। ”
” কি বলবি বল। ”
” ফুপু একমাস হতে চলল, এখানে এসেছি। আগে কখনোই এতদিন বাবাকে ছেড়ে থাকিনি। বাবার জন্য মন কেমন করছে। ”

” ভালো কথা মনে করেছিস। আমি তোর ফুপাকে বলেছি, আমরা সবাই মিলে গ্রামে যাব। নাজমা, শাহনাজ ওদের পরিবার নিয়ে আসবে, আমরাও আমাদের পরিবার নিয়ে যাব। শিউলি, দৃষ্টি, শিহাবকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবেনা? সবার সাথে কথা বলে দিন ঠিক করব, বুঝলি? তোর দিদুন, আন্টি, তাহমিদ সবাইকে নিয়ে আমরা যাব। ”
” তাহলে খুব ভালো হবে, ফুপু। তুমি তারাতারি একটা দিন ঠিক কর। ”
” কুহু মা, তুই আজকেও চিংড়ির মালাই কারি করে দিবি? গতরাতে ছেলেটা মালাই কারি দিয়ে পেট ভরে ভাত খেয়েছিল। ” তাহমিনা আক্তার রুমে এসে কুহুকে জিজ্ঞেস করলেন।

” এখনই রান্না করব, আন্টি? কি কি রান্না করতে হবে আমাকে বলে দিও। আমি সেগুলো রান্না করব। এই কয়দিনে তোমাদের রান্না দেখে আমি সব রান্না শিখে গেছি। ”
” না মা, তোমার ওত কিছু রান্না করতে হবেনা। তোমার কাজ পড়াশোনা করা। তবে মাঝেমধ্যে একটুআধটু সাহায্য করতে পার। এখন এস আমার সাথে রান্নাঘরে। ”
কুহু ফুপু আর আন্টির সাথে রান্নাঘরে যায়।

” ভাই, ও ভাই। ” আনান উসখুস করছে কিছু বলার জন্য।
” কি বলবি বল। ছা’গ’লে’র মত করে ডাকছিস কেন? ”
” তুমি আমাকে ছা’গ’ল বলতে পারলে! ঘরের মানুষকে সম্মান করতে জানোনা দেখছি! নেহাৎ মানুষটা আমি, তাই তোমার সব অপমানস সহ্য করি। তবে একদিন সব কিছুর বদলা নিব, দেখে নিও ”
তাহমিদ কোন একটা ফাইলে চোখ বুলাচ্ছিল।

” তুই আবার ঘরের মানুষ হলি কবে থেকে! তোকে তো আমি বাঁধনছাড়া ষাঁড় মনে করে এসেছি এতকাল! আজকাল ষাঁড়ও দেখছি বদলা নিতে চায়! তবে বেশি লাফালাফি করে কোন লাভ নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের টপ স্কোরার না হলে আমার বোনকে তোর কাছে দিচ্ছিনা, মনে রাখবি। সে যতই নিজেকে এই বাড়ির মানুষ মনে করিস না কেন। দেশে তো ষাঁড়ের অভাব নেই, কিন্তু টপ স্কোরার কয়জন হয়। অবশ্য একটা চান্স দিতে পারি। আমাকে সমঝে চলবি বুঝলি? আমি ইচ্ছে করলেই তোর চ্যাপ্টার ক্লোজ করে দিতে পারি। তাই নিজেকে আমার বোনের জামাই ভাবা বাদ দিয়ে, আশেপাশে দেখ আরও কত না হওয়া জামাই ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের মনের অবস্থাও বোঝার চেষ্টা কর। এমনও হতে পারে, তোর থেকে বেশি দূরত্বের অ’ন’লে জ্ব’ল’ছে তারা। ”

তাহমিদের প্রচ্ছন্ন হুমকিতে কুঁকড়ে যায় আনান।
” এই রে, ভাই বুঝে গেল কিভাবে! আমিতো আমার মনের কথা কাউকে জানাইনি। আর কিসব এলোমেলো বকছে, ভাই! আল্লাহ এবারের মত রক্ষা কর। কি এক হাফ টালের পরিবারের মেয়েকে মনে ধরল! ” বিরবির করে নিজের সাথে কথা বলছে আনান।

” আনান, আমি আগেই বলেছি, জামাই হিসেবে আমি খুব চুজি আর আত্মসম্মানী। কিন্তু তুই জামাই হিসেবে লো মেন্টালিটির। তাই আমার মত একজন হাই প্রোফাইল জামাইকে আন্ডারএস্টিমেট করছিস। তুই পাগল সেটা আমি জানি। তাই নিজে নিজে যত খুশি কথা বল, কিন্তু ভুলেও আমার কিংবা আমার পরিবারের নামে বদনাম করিসনা। অবশ্য সিনিয়র রাশেদিনের মেয়ে জামাই বলে কথা। যোগ্য শ্বশুরের যোগ্য জামাই। এদিক দিয়ে আমি
আবার ভাগ্যবান। শ্বশুরও প্রেমিক পুরুষ ছিল, আমিও তাই। অবশ্য শ্বশুরের থেকে বেশি প্রেম আমার মধ্যে। আমার শ্বশুরের মেয়ের স্বামী ভাগ্য খুব ভালো, বুঝলি? ”

” ভাই, তুমি আমার মাথা আউলায় দিওনা, প্লিজ। এমনিতেই আমাকে কখনো ছাগল, কখনও ষাঁড় বলছ! এসব মেনে নিলাম। কিন্তু বারবার যে শ্বশুর, শ্বশুর বলছ! তোমার শ্বশুর আসল কোথায় থেকে! পায়ে পড়ি ভাই, আমার ব্রেইনকে একটু রিলিজ দাও। এমনিতেই তোমার বোন আমার মাথায় চড়ে নাচছে। যার দরুন ব্রেইনের কমপ্রেসার অর্ধেকে নেমে গেছে। তার ওপর তুমি এভাবে লুকোচুরি খেলছ! এই ছোট্ট মগজ আর কত চাপ সইবে, ভাই! ”

” তোর এতসব বুঝে কাজ নেই। পারলে এক কাজ করিস, সিনিয়র রাশেদিনের ভুঁড়িতে মাথা ঘষা দিয়ে আসিস। কারন তার ভুঁড়িতে যা আছে, তোর মগজে তাই আছ। দুই অপোগণ্ডের ঘষাঘষিতে তাও যদি বুদ্ধি খোলে। ”
” এত সোজা! তোমার সিনিয়র রাশেদিনের ভুঁড়িতে মাথা ঘষতে যাই আর সে আমাকে উ’ষ্টা মা’রু’ক। তোমরা বংশীয়ভাবেই মাশাআল্লাহ গ’ন্ডা’রে’র মত। সে যদি তার গ’ন্ডা’রে’র মত শরীর দিয়ে আমাকে ধা’ক্কা মা’রে, আমি শিমুল তুলো কোথায় উড়ে যাব। মাফও চাই, দোয়াও চাই। তোমার অনুরোধ রাখতে পারলামনা। ”

” এক মিনিট, তোকে কে অনুরোধ করেছে? আমি তোকে উপদেশ দিয়েছি। নিজেকে কি মহামান্য কিছু মনে করিস, যে তোকে অনুরোধ করব? আর তুই কি বললি আমরা গন্ডারের বংশধর! মাই গড! তুই গ’ন্ডা’রে’র বংশের মেয়ের পেছনে হাত-পা ধুয়ে পরেছিস! ভুলে যা, আনান, তুই সিক্তকে ভুলে যা। কোন গ’ন্ডা’রে’র বংশধরের সাথে তোর বিয়ে আমি কিছুতেই হতে দিতে পারিনা। দ্বায়িত্ব বলে একটা কথা আছে জানিসতো? আমি নিজে দ্বায়িত্ব নিয়ে তোর বিয়ে আটকাব। তোর ব্রাহ্মচারী হওয়ার পথ আমি সুগম করে দিব। সারাজীবন শুধু রমনীদের দেখেই যাবি আর আফসোস করবি। দু-হাত দিয়ে তাহাদিগকে ছোঁয়ার সাধ্য তোর হবেনা৷ বিষয়টা ভাবলেই শরীরে কেমন শিহরণ জাগাচ্ছে। ”

” মাফ কর, ভাই। তোমরা রয়েল বেঙ্গলের বংশধর। আমার এক গন্ডা বাচ্চার বাপ হওয়ার সাধ তুমি আমূলেই বিনাশ করোনা। একবার ভাব, চার চারটা আণ্ডাবাচ্চা তোমার পেছনে ঘুরঘুর করছে। তোমাকে মামা মামা বলে ডেকে মুক দিয়ে ফেনা তুলছে। একজন তোমার চুল ছিঁ’ড়’ছে, তো আরেকজন কা’ম’ড় দিচ্ছে, আরেকটা খা’ম’চি দিয়ে তোমার সুন্দর মুখের চাঁদের কলঙ্কের ট্যাগ দিচ্ছে, অপরজন সুসু দিয়ে তোমাকে গোসল করিয়ে দিচ্ছে। কি সুন্দর দৃশ্য তাইনা, ভাই? দেখ, আমার বাচ্চারা কিন্তু আমার মত কিউট হবে। তোমার বোনের মত পি’শা’চী হবেনা। ”

” নিজের ইচ্ছেগুলো বাচ্চাদের উপর চাপিয়ে দিতে চাস? এমন যদি হয় তোর এক গন্ডা বাচ্চা তোকে মামা ডাকছে? তোকে মামা ডেকে দুনিয়া কাঁপাচ্ছে? সার্টিফিকেটে শুধু বাপ থাকবি তুই। এরচেয়ে বোধহয় ব্রাহ্মচারী হওয়া ভালো, তাইনা? তোর সামনে দুইটা অপশন রাখলাম। সিদ্ধান্ত তোর, তুই কোনটা মানবি। ”

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ৮

” ভাই, আমি এক যুগ থেকে আমার বাপকে দেখিনি। আমি বাড়ি গেলাম, ভাই। তোমার বোনের সন্তানের বাপ হওয়ার সাধ আমার মিটেছে। ” আনান প্রায় এক ছুটে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
” আরে কই যাচ্ছিস? যাসনা, দুপুরে একসাথে খাব। তখন সিনিয়র রাশেদিনের ভুঁড়ির সাথে তোর মাথা ঘষার ব্যবস্থাও করব। ”
ততক্ষণে আনান বেরিয়ে গেছে।

বিন্দু থেকে বৃত্ত সিজন ২ পর্ব ১০