বৃষ্টি ভেজা কাঠগোলাপ পর্ব ১৩

বৃষ্টি ভেজা কাঠগোলাপ পর্ব ১৩
সাদিয়া জাহান উম্মি

‘ পেত্নী আজকে মানুষরূপে শাকচুন্নি হয়ে আসলো কিভাবে?’
ঠিক একটারই ভয় পাচ্ছিলো আরাবী।এতোদিন ওকে একা পেয়েই বলেছে আজ একেবারে নূর আর ইফতির সামনে ওকে পেত্নী বললো।এদিকে জায়ানের কথা বুঝতে না পেরে নূর আর ইফতি ভ্রু-কুচকে তাকিয়ে আছে জায়ানের দিকে।নূর খানিকবাদে বলে উঠে,

-‘ কাকে পেত্নী বলছো ভাইয়া?’
জায়ানের দৃষ্টি ফোনে নিবদ্ধ।ভুলেও চোখ উপরে তুলছে না।ফোন ঘাটতে ঘাটতেই উত্তর দেয়,
-‘ তোর সাথেরটা কে বলছি।অলওয়েজ দেখি সাদা জামা পরে ভুতের মতো এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করে।তাই আজ হঠাৎ অন্য রঙের কিছু পরিধান করেছে এই জন্যেই কথাটা বললাম।’
ইফতি ফিক করে হেসে দিলো।হাসতে হাসতেই বলে,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

-‘ তা যা বলেছো ভাই।আমিও খেয়াল করেছি।আরাবী অলওয়েজ সাদা রঙের জামা বেশি পরে।’
নূরও হাসি থামাতে পারলো না ইফতিকে হাসতে দেখে ও নিজেও হেসে দিলো।এদিকে সবার সামনে এইভাবে জায়ান ওকে অপমান করে দিলো ভেবেই কান্না পাচ্ছে আরাবী।সাথে চরম লেভেলের রাগও হলো।তাই কন্ঠে তেজ ঢেলে বলে,
-‘ আমি যাবো না কোথাও।তোমরা সবাই মানুষ।তোমাদের মানুষদের সাথে আমি পেত্নি হলে আমি কেন যাবো?যাবো না আমি।’
আরাবী যাবে না শুনে।তাড়াতাড়ি নূর আর ইফতি হাসি থামিয়ে দিলো।নূর দ্রুত আরাবীর হাত টেনে ধরে বলে,

-‘ না না এমন বলে না।তুমি আমার লক্ষি বোনু।প্লিজ রাগ করোনা।’
আরাবী রাগি চোখে তাকালো নূরের দিকে।বললো,
-‘ আমি না গেলে তোমার কি?ঠিকই তো ভাইয়ের কথা শুনে হাসছিলে দাঁত বের করে।এখন আবার আমাকে টানছো কেন?’
ইফতি আরাবীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।নরম কন্ঠে বলে,

-‘ রাগ করেনা আরাবী।চল এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। তোকে অনেক সুন্দর লাগছে সত্যি।রাগ করিস না!’
আরাবী মুখ ফুলিয়ে রাখলো।এদিকে জায়ান ফোন পকেটে পুরে নিয়ে।গম্ভীর গলায় বলে,
-‘ তোরা কি যাবি?নাকি আমি তোদের ফেলেই চলে যাবো?তখন আসিস একা একা।তোদের এইসব ড্রামা দেখতে আমার ভালো লাগছে না।আমি চলে যাচ্ছি।যাবার হলে দ্রুত গাড়িতে উঠ।’

জায়ান দ্রুত গাড়িতে উঠে বসলো।আরাবী যাবে না বলতে নিলেও পারলো না তার আগে নূর আর ইফতি ওকে একপ্রকার টেনে হিছড়ে গাড়িতে বসিয়ে দিলো।নূর আর আরাবী পিছনের সিটে বসলো আর ড্রাইভিং করবে জায়ান ওর পাশে ইফতি। গাড়ি চলতে লাগলো।আরাবী জানালার কাচ নামিয়ে বাহিরে তাকিয়ে থাকলো।রাতের ঢাকা শহর দেখতে ভীষন ভালো লাগছে।আরাবীর একটু একটু মনে আছে।ও ছোট থাকতে প্রায় বাবা,মার সাথে লংড্রাইভে যেতো রাতের ঢাকা শহরে ঘুরে বেড়াতো।পথে কিছু দেখলে আবার বায়না ধরে এটা সেটা বাবাকে বলে এনিয়ে নিতো।কি মধুর দিন ছিলো সেগুলো। এখন সব মস্তিষ্কে স্মৃতি হয়ে রয়ে গিয়েছে।আরাবীর চোখের কোণে জমা জলটুকু অতি সাবধানে মুছে নিলো।হঠাৎ জানালার কাচটা ধীরে ধীরে উপরে উঠছে দেখে আরাবী দ্রুত সরে গেলো।আর সাথে সাথে জানালার কাচটা বন্ধ হয়ে গেলো।আরাবী হা করে তাকিয়ে আছে।আচমকা কি হলো বুঝতে পারলো না।আরাবী অবাক কন্ঠে প্রশ্নে করলো,

-‘ এটা এমন আচমকা বন্ধ হলো কেন?আমি তো কিছু করেনি!’
পরপরেই জায়ানের শীতল কন্ঠের জবাব,
-‘ আমি লাগিয়েছি জানালার কাচ।মাথায় তো গোবর ভরা।জানালার বাহিরে মাথা বের করে রেখেছিলে। আর একটু হলেই অক্কা পেতে।আর দোষ হতো আমার।কারন গাড়িটা আমার।আর আমি চাইনা তোমার মতো মেয়ের জন্যে আমি আমার বা আমার শখের গাড়ির কিছু হোক।’

আরাবী হাবার মতো জায়ানের কথাগুলো শুনে গেলো।লোকটা এইভাবে ক্ষনে ক্ষনে সবার সামনে ওকে অপমান করছে।আর ও কিছু বলতে পারছে না।আর কিইবা বলবে আরাবী?আরাবী তো ঝগরা করতে পারেনা।আর রাগ উঠলে চেঁচিয়ে যে দুটো কথা বলবে তাও সম্ভব না।প্রথমত ও চিৎকার চেচামেচি করে কথা বলতে পারেনা।আর দ্বিতীয়ত আরাবী রেগে একটু জোড়ে কথা বললেই কেঁদে দেয়।ফলস্বরূপ আরাবী আর কিছুই বললো না।চুপচাপ নত মস্তকে বসে রইলো।ইফতি সামনের থেকে ঘার ঘুরিয়ে আরাবীর দিকে তাকালো। তারপর বলে,

-‘ আরাবী একটু খেয়াল রাখতে পারিস না নিজের?ভাই তো ঠিকই বলেছে।যদি তোর কিছু হয়ে যেতো?’
আরাবী কিছুই আর প্রতিউত্তর করলো না।চুপচাপ বসে রইলো।নূর আরাবীকে মন খারাপ করতে না করলো।বুঝালো ওর ভালোর জন্যেই বলেছে সবাই।প্রায় আধাঘন্টা পর গাড়ি থামে একটা রেস্টুরেন্টের সামনে।একে একে সবাই গাড়ি থেকে নেমে দাড়ালো। আরাবীর ভীষন নার্ভাস লাগছে।এই প্রথম ও এতো বড় কোন রেস্টুরেন্টে এসেছে।তাও আবার গেট টুগেদারে।আরাবীর চিন্তিত চেহারা দেখে ইফতি বললো,

-‘ এতো নার্ভাস হওয়ার কিছু নেই আরাবী।আমরা আছি তো।’
আরাবী মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। জায়ান গাড়ি পার্ক করে আসতেই ওরা রেস্টুরেন্টের ভীতরে প্রবেশ করলো। ওরা সবাই লিফটে উঠলো।কারন রেস্টুরেন্টের ছাদে আজ ওদের আয়োজন।লিফট যখন চালু হলো আরাবী ভয়ে ওর পাশে যে ছিলো তার হাত খামছে ধরলো।কারন আজ সবকিছুই ওর লাইফে প্রথমবার হচ্ছে।উত্তেজনা,ভয়,লজ্জা সব যেন একেবারে ঘিরে ধরেছে ওকে।লিফট থামতেই নূর আর ইফতি আগেভাগেই বেড়িয়ে গেলো।এদিকে নূর ভয়ে এখনো চোখ বন্ধ করে খামছে ধরে আছে পাশের জনের হাত।

-‘হাতটা কি আজ খামছে শেষ করে দেওয়ার প্লান করেছো মিস আরাবী?’
জায়ানের শীতল কন্ঠের আওয়াজ কানে আসতেই তরিৎ গতিতে চোখ মেলে তাকায় আরাবী।বড় বড় চোখে জায়ানের দিকে তাকালো।জায়ান বিরক্ত হয়ে চোখের ইশারায় ওর হাতটা দেখিয়ে দিলো।আরাবী সেদিকে তাকিয়ে দেখে ও প্রায় একবার নখ পুরো ডাবিয়ে দিয়েছে জায়ানের হাতে।আরাবী দ্রুত হাত সরিয়ে নিলো।মিনমিনে কন্ঠে বলে,
-‘ সরি আসলে আমি…!’

আরাবী তার কথা সম্পূর্ণ করতে পারলো না।তার আগেই জায়ানকে লিফট থেকে বেড়িয়ে যেতে দেখে আরাবী অবাকের শেষ সীমানায় পৌছে গেলো।লিফটে আরো মানুষ উঠতেই আরাবীর হুশ ফিরলো।জায়ান চলে যাচ্ছে।আরাবী দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেলো সেদিকে।মনে মনে জায়ানকে একশোটা গালি দিলো।লোকট ভীষন খারাপ।কিভাবে ওকে একা ফেলে চলে গেলো।আরাবী প্রায় দৌড়ে এসে জায়ানের নাগাল পেলো।হাপাতে হাপাতে বলে,
-‘ আপনি এমন খারাপ কেন?আমাকে একা ফেলে চলে এলেন।’
জায়ান তাকালো না আরাবীর দিকে।সামনের দিকে দৃষ্টি রেখেই জবাব দিলো,

-‘ তুমি আমার সাথে এসেছো যে আমি তোমার রেস্পন্সিবিলিটি নেবো?যাদের সাথে এসেছো আর যাদের ভরসায় এসেছো।ওদের সাথে সাথে কেন থাকতে পারো না?’
আরাবী মুখ বাকিয়ে ভেংচি কাটলো।শব্দহীনভাবে জায়ানের বলা বাক্যগুলোই ব্যঙ করে আওড়াতো লাগলো।হঠাৎ চোখ চলে যায় জায়ানের দিকে সাথে সাথে আরাবী একদম শান্ত হয়ে যায়।কারন জায়ান ওর দিকে খেয়ে ফেলবো এমন লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে।এদিকে নূর আরাবীকে আসতে দেখে দ্রুত আবারও আরাবীর কাছে ফিরে আসলো।নূর আরাবীর কাছে আসতেই জায়ান হনহনিয়ে সামনে চলে গেলো।আরাবী সেদিকে তাকিয়ে রইলো।মনে মনে বললো,

-‘ লোকটা এমন কেন?সবসময় এমন গুমড়ামুখো হয়ে কেন থাকে?’
ধ্যান ভাঙ্গে নূরের ডাকে।
-‘ তুমি রাগ করেছো?আসলে অনেকদিন পর কাজিনদের সাথে দেখা হবে তো।তাই অতি এক্সাটমেন্টের কারনে তোমাকে রেখেই চলে এসেছিলাম।সরি।’
নূরের কথায় আরাবী হেসে বলে,
-‘ না একদম রাগ করেনি।’
নূর হাসি মুখে বললো,
-‘ তাহলে চলো।সবাই এসে পরেছে শুধু আমরাই লেট।’

আরাবী সম্মতি জানিয়ে নূরের সাথে চললো সেখানে। বিশাল বড় একটা টেবিল।সেখানে প্রায় সেখানে বারোজন মানুষজন অনায়াসে বসতে পারবে। নূর আরাবীকে নিয়ে এগিয়ে গেলো সেদিকে। জায়ানদের কাজিন গুষ্টি একেবারে বেশিও না আবার কমও না। জায়ান আর ইফতি নূরের একজনই ফুফু। আর তার হলো এক ছেলে নাম জিহাদ আর এক মেয়ে নাম তিন্নি।জায়ানের মায়েরা দুবোন। আর জায়ান আর নূরের খালামুনির দুই মেয়ে, এক ছেলে। মেয়ে দুটোর নাম মিনহা আর মারিয়া এক ছেলের না তামিম।

ইফতির মায়েরা এক ভাই এক বোন।আর ইফতির মামার দুই মেয়ে মেয়েদের নাম লিয়া আর জেনি এক ছেলে আদি।এদিকে জায়ান আর ইফতিকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলো সবাই।নূর আরাবীকে নিয়ে একটা চেয়ারে বসতেই এইবার সবার দৃষ্টি ঘুরে ফিরে আবদ্ধ হয় আরাবীর দিকে। কারন আজ প্রথম ওরা সবাই আরাবীকে দেখেছে।সবাইকে কেমন ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে আরাবী অসস্থিতে পরে যায়।দ্রুত মাথা নিচু করে ফেলে।বিরবির করে নূরকে বলে,

-‘ নূর এরা সবাই আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ে আছে কেন?আমার অসস্থি হচ্ছে।’
নূর আরাবীর কথা শুনে।এইবার ওর কাজিনদের দিকে তাকালো।বললো,
-‘ আরে তোরা এইভাবে তাকাচ্ছিস কেন?ও বেচারি ভয় পাচ্ছে।’
নূরের কথায় সবাই যেন একটু নড়েচড়ে বসলো।ইফতির মামাতো ভাই আদি এখনো তাকিয়ে আছে আরাবীর দিকে।আরাবী এতে যেন অসস্থির চরম সীমায় পৌছে গেছো।আদি বাঁকা হাসলো আরাবীর দিকে তাকিয়ে।তারপর বলে,
-‘ এমন সুন্দরী কোথায় থেকে আসলো রে নূর?আগে তো একে কখনো দেখি নি?’

আদি’র কথার ভঙি নূরের পছন্দ হলো না। এই ছেলেটা ওর কাজিনদের মধ্যে সবচেয়ে অসভ্য।আর চরিত্র’দ দিক দিয়েও সবচেয়ে নিকৃষ্ট।নূরকে বহুত জ্বালিয়েছে আদি।পরে জায়ান ব্যাপারটা জানতে পেরে ওকে থার্ড ডিগ্রি দেওয়াতে নূরের উপর আর নজর দেওয়ার সাহস পায়নি।কিন্তু এখন নূর বুঝতে পারলো আদির কুদৃষ্টি আরাবীর দিকে পরেছে। নূর কিছু বলবে তার আগেই জায়ান গম্ভীর কন্ঠ শোনা গেলো,
-‘ সেদিনের কথা কি ভুলে গেছিস আদি?নাকি আবার মনে করিয়ে দিবো?’
জায়ানের দৃষ্টি এখনো ফোনের দিকেই।আদি শয়তানি হাসি ঠোঁটে ঝুলিয়ে বলে,
-‘ নো। এখনো ভুলিনি।আর তা আমি ভুলতেও চাইনা।’

ইফতি বুঝলো ব্যাপারটা এখন না থামালে বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে।তাই কথা ঘুরানোর জন্যে বলে উঠলো,
-‘ এভ্রিওয়ান ও হচ্ছে আরাবী। তোরা নিশ্চয়ই জানিস জিহাদ আংকেল আব্বুর বেষ্টফ্রেন্ড ছিলেন।আর আরাবী হলো জিহাদ আংকেলের মেয়ে।’
আরাবী সবাইকে নম্র কন্ঠে সালাম জানালো।সবাই সালামের প্রতিউত্তর দিলো।ইফতি আবার আরাবীকে একে একে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো। সবার সাথে পরিচয় শেষে তামিম নামের ছেলেটি ওর চেয়ার ছেড়ে দৌড়ে আরাবীর কাছে আসলো।তামিম হলো ওদের কাজিনদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট।বয়স মাত্র পাঁচ বছর।তামিম আরাবীর কাছে এসেই আরাবীর দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকলো।তারপর হুট করে ওর দুহাত বাড়িয়ে দিলো আরাবীর দিকে।আরাবী অবাক হতেই নূর বললো,

-‘ জলদি কোলে নেহ ওকে।নাহলে এখনই কেঁদে দিবে।’
আরাবী দ্রুত তামিমকে কোলে তুলে নিলো।তামিম আরাবীর কোলে চড়তেই ও চওড়া করে হাসলো।আরাবীর মুখশ্রীতে ওর ছোট্ট ছোট্ট হাত দ্বারা স্পর্শ করলো।তারপর বলে,
-‘ তুমি অনেক সুন্দর।একেবারে ডলদের মতো দেখতে।তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে।আমি তোমাকে বিয়ে করবো বড় হলে।এখন থেকে তুমি আমার বউ।আমি তোমাকে বউ বলে ডাকবো।’
সবাই হেসে দিলো তামিমের কথায়।তামিমের বোন মারিয়া বললো,

-‘ তামিম এসব কি হচ্ছে?তোমাকে আমি কি বলে এনেছিলাম? বলেছিলাম না এখানে এসে কোন দুষ্টামি করবে না।এইজন্যেই তোমাকে আনতে চায়নি।’
তামিমের পছন্দ হলো না মারিয়ার কথা।নাক মুখ কুচকে বললো,
-‘ আমি তো দুষ্টুমি করছি না আপি।আমি তো শুধু আমার বউয়ের কোলে চড়েছি।’
মারিয়া চোখ রাঙিয়ে কিছু বলবে তার আগেই আরাবী মিষ্টি হেসে বলে,
-‘ থাকনা আপু।আমারও ওকে ভীষন ভালো লেগেছে।’

তামিম যেন আরেকটু সাহস পেলো।ওর বোনকে ভেংচি কেটে বলে,
-‘ দেখেছো আমার বউ কতো ভালো।’
এদিকে নূর তামিমের কান টেনে দিয়ে বললো,
-‘ ওরে ফাজিল।এতোদিন না আমি তোর বউ ছিলাম। তুই না বলেছিলি আমাকে বিয়ে করবি বড় হয়ে।তাহলে এটা কি হচ্ছে?’
তামিম ব্যাথা পেয়ে বলে,
-‘ উফ ব্যাথা পাচ্ছি তো।ছাড়ো আমার কান।আছা তোমাকেও বিয়ে করবো।ছাড়ো।’

বৃষ্টি ভেজা কাঠগোলাপ পর্ব ১২

নূর কান ছেড়ে দিলো।তারপর হাসিতে ফেটে পরলো।বাকিরাও হাসতে হাসতে শেষ।এদিকে আরাবীও হাসছে তামিমের কথায়।হাসির মাঝে ওর দৃষ্টি যায় জায়ানের কাছে।সাথে সাথে কেঁপে উঠলো আরাবী।লোকটা তাকিয়ে আছে ওর দিকে।কেমন যেন ঘোলাটে ওই দৃষ্টিজোড়া।সেই ভয়ানক চোখের দৃষ্টি আরাবী নিতে পারেনা একদম পারেনা। আরাবী দৃষ্টি নত করলো।গালগুলো গরম হয়ে লালাভ আভা ফুটে উঠলো। কিন্তু আরাবীও জানতেই পারলো না।ওর এই লজ্জা মাখা মুখশ্রী যে একজনের হৃদস্পন্দন থামিয়ে দিয়েছে বহু আগে।

বৃষ্টি ভেজা কাঠগোলাপ পর্ব ১৪