ভালোবাসার বর্ষণ শেষ পর্ব 

ভালোবাসার বর্ষণ শেষ পর্ব 
নীহারিকা নুর

সেদিন এর পর থেকে কে’টে গিয়েছে বেশ কয়েক সপ্তাহ। এর মধ্যে তুরাগ আর তরুর মধ্যে তেমন ভালো কোনো সম্পর্ক গড়ে না উঠলেও দেখা যায়নি আর কোনো বিবাধ। তুরাগ তরু দুজনই চাচ্ছে তাদের মধ্যে সম্পর্কটা স্বাভাবিক হোক। অনিচ্ছায় হোক আর যেভাবেই হোক তারা দুজন স্বামী স্ত্রী এখন।

অতীতে আর যাই থাকুক না কেন তা এখন কেবলই অতীত। অতীতকে এক পাশে রেখে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পায়তারা সবার। এরমধ্যে মিনিস্ট্রোক করে ঘরবন্দী হয়েছেন তায়েফ সাইয়িদ। তার বিজনেস দেখা শোনার কেউ নেই। তিনি তুরাগের হাত ধরে অনুরোধ করলেন এবার যেন অন্তত তার ব্যাবসাটা সামলায় তুরাগ। অসুস্থ বাবার কথা ফেলতে পারে না তুরাগ।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ছোট বেলা থেকে কম জ্বালাতন করে এই বাবাকে। এখন একটু সস্তি দেয়ার সময় এসেছে আর সেই সুযোগটা লুফে নিলো তুরাগ। মন দিল ব্যাবসায়। সকাল সকাল অফিস এর উদ্দেশ্য বেড়িয়ে যাওয়া, লান্স টাইমে একবার তরুকে ফোন করা, আবার রাতে ফেরার সময় চকলেট,আইসক্রিম, ঝালমুড়ি কিছু না কিছু নিয়ে আসা। এগুলো এখন নিত্য দিনকার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। দুজনই তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চাচ্ছে সম্পর্কটা যেন স্বাভাবিক হয়। তবে মুখ ফুটে কেউ কাউকে কিছু বলতে পারছে না।

প্রতিদিনকার মতো আজও ঘুম থেকে দেরী করে উঠেছে তুরাগ৷ কোনোমতে নাস্তা সেরে ছুটল অফিসের উদ্দেশ্যে। তুরাগকে গেট অবধি এগিয়ে দিয়ে আসল তরু। তুরাগ যে চেয়ারে বসেছিল সেই চেয়ারটা টেনেই বসল তরু। নাস্তার প্লেট টেনে সামলে নিল। খাবার মুখে দেয়ার উদ্দেশ্যে তুলল। কিন্তু মুখে আর পুড়তে পারল না। তার আগেই খাবার ছেড়ে দৌড়ে গেল ওয়াশরুমে। খালি পেট। তারপরও ভেতর থেকে সব যেন বেড়িয়ে আসতে চাইলো। মুখ বাকিয়ে সেখানে দাড়িয়ে রইলেন মেরিনা বেগম। ছুটে গিয়ে ধরলেন না তরুকে। ততক্ষণে সুফিয়া ছুটে এসে ধরেছে।

– তুমি ঠিক আছো মা?
– জ্বি খালা ঠিক আছি। আপনি একটু সব গুছিয়ে রাখবেন কেমন। আমি উপরে যাচ্ছি।
– আচ্ছা যাও।
উপরে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো তরু। কানে আসল পেছনে বলা কথাগুলো। সুফিয়া মেরিনা বেগমকে উদ্দেশ্য করে বলছে

– আমনে এমন ক্যান হ্যা। দেখলেন মাইয়াডা বমি করতাছে। তাও এহানে তালগাছের মতো দাড়াইয়া আছিলেন।
– এত বেশি কথা বলো নাতো তুমি। কিছু হয় নাই ওর। জামাইর আনা খাওন খাইয়া খাইয়া গ্যাস্ট্রিক বানাইছে। তাই এমন বমি হইছে। ঔষধ খাইলেই ঠিক হয়ে যাবে।

– মাইয়াডা আমনের লইগা কত কিছু করে। আর আমনে কেমন অকৃতজ্ঞ।
– কি করে ও আমার জন্য হ্যা। ওকে বলো পারলে আমার মেয়েদুটোকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে। তাহলে আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ হয়ে থাকব।

– আল্লাহ যা করে তার উপর কারো হাত থাকে না। আপনি এখন যা করতেছেন এটা ঠিক করতাছেন না।
মেরিনা বেগম সুফিয়ার কথার জবাব না দিয়ে গজগজ করতে করতে চলে গেলো সেখান থেকে।
এদিকে চিন্তিত মুখে বসে আছে তরু। এই নিয়ে কয়েকবার এরকম হলো। তরু মনে মনে যা ভাবছে হয়ত তাই। তবুও ডক্টরের কাছে গিয়ে একবার পরীক্ষা করে আসা উচিত।

সন্ধ্যার পরে রুমের ভেতরেই পায়চারি করছিল তরু। এমন সময় রুমের দরজায় টোকা পরায় মুখ ঘুড়িয়ে সেদিকে তাকায় তরু। দরজায় মেরিনা বেগম দাড়িয়ে আছে। মুখে হাসি ঝুলিয়েই তাকে ঘরে প্রবেশের অনুমতি দিলো তরু৷ তিনি মুখটা গম্ভীর করেই প্রবেশ করলেন রুমে। তার হাতে রয়েছে একটা খাম। তিনি খামটা এগিয়ে দিলেন তরুর দিকে।

– কি এটা খালাম্মা?
– আমি কি জানি। তুরাগের অফিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট এসে দিয়ে গেলো৷ বলছে তোমাকে দিতে।
– ওহ আচ্ছা। আপনি রেখে যান আমি দেখে নিবো।
– হুম।

তারপর যেরকম গম্ভীর মুখে প্রবেশ করেছিলেন তিনি সেরকম ভাবেই বাহির হয়ে গেলেন।
মেরিনা বেগম বের হয়ে যেতেই খামটা খুলে তরু। তার ভেতরে থাকা কাগজের ভাজ খুলতেই চোখ বড় বড় হয়ে যায় তরুর। লেখাটার উপরে আবারো চোখ বোলায় তরু। না সে ঠিকই দেখতে পাচ্ছে। সেখানে বড় বড় অক্ষরে “DIVORCE PAPER” লেখা। লেখাগুলোর উপরে হাত বোলালো তরু। চোখ যেন ঝাপসা হয়ে আসছে।

এটা কি দেখছে সে। তরুতো ভেবেছিল তুরাগ হয়ত সম্পর্কটা স্বাভাবিক করতে চাচ্ছে৷ কিন্তু তুরাগ ওর থেকে মুক্তি চায় এটা তো ঘুনাক্ষরেও টের পেল না তরু। বুক ফেটে কান্না আসছে এই মুহুর্তে। কাগজটা ভাজ করে ফেলল তরু। ডিভোর্স পেপার এর সাথে ছোট একটা চিরকুট। সেখানে লেখা ” তুমি আগে সই করে পেপার রেখে চলে যেও আমি পরে সই করে দিব “।

এই লেখাগুলো দেখে নিজেক সামলাতে পারল না তরু৷ হাটুভেঙে বসে পড়ল সেখানে। কাঁদতে লাগল সেখানে বসেই। বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হলো এভাবেই। হঠাৎ করে উঠে দাড়ালো তরু। দুই হাতের তালুতে মুছে নিলো চোখের জল। না কাদবে না সে। কার জন্য কাদবে। যে কখনো এই সম্পর্কের গুরুত্বই দেই না তার জন্য চোখের জল ফেলা বৃথা। খামটা বালিশের নিচে রাখল তরু। ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এলো। আলমারি খুলে সিঁদুর রাঙা একখানা শাড়ী নামালো।

সময় নষ্ট না করে পরে ফেলল সেটা। ড্রেসিং টেবিল এর সামনে বসল নিজেকে সাজাতে। লাল টুকটুকে লিপস্টিকে রাঙালো ঠোটদুটো। হাত ভর্তি কাচের চুড়ি। কানে বড় ঝুমকা। কাজল টেনে দিলো চোখের নিচে। নিজেকে দেখে নিজেই অবাক হলো তরু। এরকম করে কখনো সাজা হয়নি তরুর। হালকা সাজ সর্বধা পছন্দ ছিল। আজ একটু নিজের মনের বিরুদ্ধে সাজল।

এই সাজে যেন ভয়বহ সুন্দর লাগছে তরুকে। এ রুপ যেন যেকোনো পুরুষ মানুষকে ঘায়েল করতে যথেষ্ট। অপেক্ষা করতে লাগল তরু৷ তুরাগের ফেরার সময় প্রায় হয়ে এসেছে।
বেলকনি থেকে লক্ষ্য করল বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করছে তুরাগ। কিন্তু বেলকনি থেকে আসল না তরু। বসে রইল সেখানেই। এদিকে রুমে এসে তরুকে পেল না তুরাগ।

অবাক হলো না। কারণ প্রায় সময়ই বেলকনিতে সময় কা’টায় তরু। তাই আর ডাকল না। ব্যাগ রেখে ওয়াশরুমে গেল ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়ে টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতেই বেড়িয়ে এলো তুরাগ। এগুলো বেলকনির দিকে। সেখানে বসে থাকা রমনীকে দেখে থমকাল তুরাগ। এরকম রুপে কখনো দেখা হয়নি তরুকে। চোখের পলক পড়ছে না তুরাগের। চোখের সামনে যেনো সাক্ষাৎ পরী বসে আছে। মুখ থেকে আপনা আপনি বেড়িয়ে এলো মাশাআল্লাহ।
তুরাগের কন্ঠ কানে আসতেই পুরোপুরি তার দিকে ঘুরে দাড়ালো তরু। মুচকি হাসে লেগে আছে ঠোটের কোনায়।

– আজ ম্যাডাম খুব খুশি মনে হচ্ছে।
– হুম খুশি।
– খুশির কারণ আছে কোনো?
– আপনার পাঠানো কাগজ গুলো পেয়েছি গায়ক সাহেব।
গায়ক সাহেব নামটা অদ্ভুত ঠেকল তুরাগের। এরকম নামে কখনো তরু ওকে ডাকেনি। তাই জানতে চাইলো
– আমি তো আমার শখের প্রফেশন ছেড়ে দিয়েছি। এটা ছাড়তে অনেক কষ্ট হয়েছে আমার। তুমি কি কা’টা গায়ে নুনের ছিটা দিতে চাচ্ছো তরুলতা।

– ছি ছি কি বলেন এসব। আপনি আমার কাছে আমার গায়ক সাহেব। এই গায়ক আমার ছোট বেলার অনুভুতি। খুব ছোটবেলায়ই এই গায়ক সাহেবের প্রতি অদ্ভুত অনুভুতি ছিলো আমার। তাকে স্বামী হিসেবে পেয়েছি এতো আমার কপাল। আপনাকে গায়ক সাহেব বলে ডাকতে না পারলে এই আফসোসটা থেকে যেতো। আমার হৃদয়ে একটু একটু করে জমানো অনুভুতি গুলো কি কোনো অপরাধ করেছিল গায়ক সাহেব? এভাবে সব শেষ করে দিলেন কেনো?

– কি বলছো তুমি। আমি আবার কি শেষ করলাম। আর শোনো আজ যে পেপার গুলো দিয়েছে এগুলো আমি দেইনি। বাবা করেছে এ কাজ। তিনি আমাকে বলেছিল আমি যেন তোমাকে পৌছে দেই। আমি শুধু সেটা করেছি।
– সত্যি বাবা দিতে বলেছে?
– হুম।

– বাবা এমন কাজ কীভাবে করতে পারে। বিশ্বাস করি না আমি। বাবাই তো চাচ্ছিলেন আমি যেন এ বাড়ির বউ হয়ে আসি। তাহলে এখন এভাবে পর করে কীভাবে দিচ্ছেন।
– আরে পাগলি পর করে কোথায় দিলো। তুমি তো এ বাসায়ই থাকবা। যাই হোক এখন খুব ক্লান্ত। পরে কথা হবে কেমন। ঘুমাতে চলো।

– গায়ক সাহেব
তরুর নেশালো কন্ঠ যেন থামিয়ে দিলো তুরাগের পা জোড়া। চোখ ছোট ছোট করে তাকালো তরুর দিকে। তরু আবারো বলল
– গায়ক সাহেব আপনার জন্য সেই ছোট থেকে এই ছোট্ট হৃদয়ে স্থান রেখেছিলাম। কিন্তু সেগুলো শুধু মনই জানত। দুনিয়ার কাক পক্ষীও টের পায়নি। আজনা বুকটা খাখা করছে। এই মরুর বুকে #ভালোবাসার_বর্ষণ ঘটাবেন আপনি? একটু ভালোবাসবেন আমাকে? আর কখনো চাইবো না আপনাকে।

তরুর কথাগুলো অদ্ভুত ঠেকল তুরাগের। অদ্ভুত অনুভুতি হচৃছে। এই পিচ্চি মেয়ে ছোট থেকে তার জন্য অনুভুতি জমাচ্ছে আর তা কিনা সে ঘুনাক্ষরেও টের পেল না। এর মাঝে কত কিছু হয়ে গেল জীবনে। সেসব ভাবতে চায় না তুরাগ। যা হয়ে গেছে তা কখনো ফিরে পাওয়া সম্ভব না৷

এই মুহুর্তে এসে একটু শান্তি চাচ্ছে তুরাগ। বিষাদময় হয়ে গেছে জীবন। সস্তি চায় তুরাগ। সামনে থাকা আবেদনময়ী নারী খুব করে টানছে যেন। আজ তার রুপ লাবন্য এমন ঝলকানি দিচ্ছে এর সামনে কিছু রাখলে ঝলসে যাবে যেনো। সেখানে তুরাগ তো পুরুষ মানুষ। এই নারী আজ তার কথা, রুপ সব কিছু দিয়ে ঘায়েল করে নিলো। বুকে টেনে নিলো প্রেয়সীকে। কপালে একে দিলো ওষ্ঠদ্বয়ের ছোয়া৷

তরুুও দুহাতে আগলে নিলো তুরাগকে। এক পর্যায়ে তরুকে কোলে তুলে নিলো তুরাগ। পা বাড়ালো রুমের দিকে। দুজন মানুষের নিঃশ্বাস এর শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না। তুরাগ তার ভালোবাসার বর্ষণে সিক্ত করল তরুকে। কিন্তু দুজনের মনের কথাগুলো দুজনেরই অজানা রয়ে গেলো। তুরাগ জানতেও পারল না তরুর মনে কি চলছে। আর না তরু জানতে পারল আজ তুরাগের মনে কি চলছে। একটা কাগজ যেন এলোমেলো করে দিলো সব।

সকালে সূর্যের আলো মুখে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেলো তুরাগের। পাশে তাকিয়ে দেখতে পেল না তরুকে। ডাকল না তরুকে। উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেল তুরাগ। তরুকে কোথাও খুজে না পেয়ে সুফিয়ার কাছে জানতে চাইলো তুরাগ
– খালা তরুকে দেখেছেন?
– বউমা তো সকাল সকালই ব্যাগপত্র নিয়া বের হইয়া গেলো। আমারে বইলা গেলো বালিশের নিচে কি যেন রাখা আছে। সেটা আপনারে দেখতে বলছে বাজান।

সুফিয়ার কথা শুনে দৌড়ে আবার উপরে গেলো তুরাগ৷ একদৌড়ে রুমে। গিয়ে বালিশ জাগালো তুরাগ৷ অমনি চোখে পড়ল কালকের সেই খাম। কালবিলম্ব না করে সেই খাম খুলল তুরাগ৷ তরুর মতো তুরাগ ও অবাক হলো লেখাটা দেখে। তার থেকে বেশি অবাক হলো নিচে তরুর সাইন দেখে৷ তরুর মতো তুরাগও দেখতে পেলো চিরকুট। তাড়াতাড়ি করে খুলল সেই চিরকুট। সেখানে লেখা ছিল – ” আপনি তো মুক্তি চেয়েছিলেন গায়ক সাহেব। নেন দিয়ে গেলাম আপনার মুক্তি।

আপনার কাছে কিছু চাওয়া নেই আমার৷ তবে কালকের রাতটা আমার স্মৃতির পাতায় সারাজীবন থাকবে। আপনি সজ্ঞানে আমাকে বুকে টেনে নিয়েছেন। এতটা অপ্রত্যাশিত ছিল। ভালো থাকবেন আপনি। আমি চাই না আপনি আর কখনো আমার সামনে আসুন৷ আল্লাহ হাফেজ”

চিরকুট টা পড়ে ধপ করে খাটের উপর বসে পড়ল তুরাগ৷ এটা সে কি দেখছে। এরকমটা তো চায়নি সে। আর না এই কাগজ সে পাঠিয়েছে। তবে তরু এ কাগজ পেল কোথায়৷ মাথা কাজ করছে না তুরাগের। চাবি হাতে দৌড়ে বের হলো রুম থেকে৷ তাকে এভাবে বের হতে দেখে সুফিয়া ডাকল খাওয়ার জন্য। কিন্তু নাকোচ করে দিলো তুরাগ। দরজা খুলতেই সামনে পড়ল ড্রাইভার। তার হাতেও একটা খাম। চোখ বড় বড় হয়ে গেলো তুরাগের। জানতে চাইলো

– কি এটা?
– স্যার ম্যাডামের রিপোর্ট এটা। কাল ডক্টর এর কাছে গেছিল সেই রিপোর্ট। আমারে নিয়া আসতে বলছিল।
– ওহ আচ্ছা। দাও আমাকে।
ড্রাইভার চলে যেতেই সেটা খুলল তুরাগ। সেখানে যা সে লেখা দেখল তা দেখে যেন মস্তিষ্ক কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। তরু প্রেগন্যান্ট। এটা মানতে পারছে না তুরাগ। তার জানা মতে এর আগে তার আর তরুর মাঝে সেরকম সম্পর্কই ছিল না।

হঠাৎ সময়ের দিকে নজর গেলো তুরাগের। ছয় সপ্তাহ চলছে। হুট করে সেদিনের কথা মনে পড়ে। যেদিন মিথিলার আর কখনো সুস্থ না হওয়ার ব্যাপারে বলেছিল ডক্টর। সেটাও তো ছয় সপ্তাহ হয়েছে। সেদিনই তো ড্রা’ঙ্ক হয়ে ফিরেছিল বাসায়। তার মানে সেদিন কিছুই সপ্ন ছিল না। সবটা বাস্তব ছিল। এই বাচ্চা তুরাগের। বাবা হতে যাচ্ছে তুরাগ। এই নিউজ যতটা না খুশি করল তুরাগকে তার থেকে চিন্তিত করে তুলল বেশি। এই মুহুর্তে তরু এরকম একটা সিদ্ধান্ত নিলো। এখন কি করে মানাবে তরুকে। যাই হোক সামলে নেবে এই ভেবে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল তুরাগ। উদ্দেশ্য তরুদের বাসা।

ভালোবাসার বর্ষণ পর্ব ৩২

[এই গল্পটা লিখতে নিয়ে অনেক জ্বালিয়েছি আপনাদের। লেট করে গল্প দিছি। তারপরেও অপেক্ষা করে পড়েছেন আপনারা। সেজন্য ধন্যবাদ। আসলে রাইটিং ব্লকে পড়লে যে কি ঝামেলা সেটা যে পড়ে সেই জানে। নেক্সট পর্বে সবটা ক্লিয়ার করে হয়ত ইতি টানব। এতগুলো দিন যারা ভালোবাসা দিয়েছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি ]

ভালোবাসার বর্ষণ পর্ব ৩৪