মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না পর্ব ২৮

মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না পর্ব ২৮
সাদিয়া জাহান উম্মি

সময় বহমান।দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহ।সবার জীবনের চলা গতি বেশ ভালোই।তবে ভালো কাটছে না ইহানের।তার মনটা আজকাল তার আয়ত্ত্বে নেই।মনটা যেন রিধির হয়ে গিয়েছে।নাহলে এই মন তাকে কেন বাধ্য করে দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা রিধিকে নিয়ে ভাবতে?উঠতে,বসতে,খেতে,শুতে সবসময় শুধু রিধিই তার মাথায় ঘুরপাক খায়।

কি করবে ইহান?কেন এমন হচ্ছে?এই প্রশ্নের উত্তরগুলো সে গত একসপ্তাহ যাবত খুঁজে চলেছে।কিন্তু কোনো উত্তর পায়নি।মন মরা হয়ে ইহান বিছানায় উপুর হয়ে পরে আছে।সম্পূর্ণ মস্তিষ্কে তার রিধিই কিলবিল করছে।নিজের উপর চরম বিরক্ত হয়ে মৃদ্যু আর্তনাদ করে উঠল ইহান।ঠিক তখনই রুমে ছেলের জন্যে কফি নিয়ে প্রবেশ করছিলেন মিনহা বেগম।ছেলের এমন অস্থির আর ছটফট আচড়ণ দেখে। দ্রুত পায়ে এগিয়ে আসেন।কফির মগ টেবিলের রেখে।উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বলে উঠেন,’ আব্বা?কি হয়েছে তোর?এমন করছিস কেন বাবা?’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বলতে বলতে তিনি ইহানের কাছে বসে পরলেন।তার সর্ব মুখশ্রীতে ছেলের জন্যে চিন্তার ছাপ।মায়ের চিন্তিত চেহারা দেখে ইহান নিজেকে খানিক দমিয়ে আনল।বলে উঠল,’ কিছু হয়নি মা।এমনিতেই ভালো লাগছে না।’
‘ কেমন লাগছে বল আমায়। আমি জানি তোর কিছু হয়েছে।আমি তো মা আমি সব বুঝি।তোরা মুখে না বললেও আমি বুঝে যাই।’

মায়ের কথায় হাসে ইহান।ঝলমলে সুন্দর হাসি।এগিয়ে এসে দপ করে মায়ের কোলে শুয়ে পরল।মিনহা বেগম ছেলের চুলে আদুরে স্পর্শ হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।ইহানের আরামে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।সেভাবেই ধীর স্বরে বলে,
‘ মা আমি তোমাকে এখন কিছু বলব।আমার অস্থিরতার কারনগুলো বলব।তুমি শুধু আমায় কারনটা জানাবে কেন আমার সাথে এমন হচ্ছে।’
মিনহা বেগম ইহানের চুল টেনে দিতে দিতে বলে,

‘ তুই বল।আমি যদি কোনো উপায় বলতে পারি।অবশ্যই আমি বলব।’
ইহান লম্বা শ্বাস ফেলল।এরপর বলতে শুরু করল,
‘ ইদানিং কি যেন হয়েছে মা।আমি তোমাকে সবটা ক্লিয়ার করেই বলছি।তুমি তো জানো অথৈ, রিধি,পিহু,প্রিয়ান,আহিদ ওরা ছোটো থেকেই একসাথে বড়ো হয়েছে।

অথৈকে আমি যতোটা স্নেহ করি। আর ভালোবাসি ওদেরও ঠিক ততোটাই করি।কিন্তু ইদানিং আমার সাথে কি হচ্ছে বুঝতে পারছি না।রিধিকে আমি সেই ছোটো থেকেই দেখে আসছি।কিন্তু আগে কখনই এমন লাগেনি।তবে এখন রিধিকে নিয়ে আমি চব্বিশ ঘন্টা ভাবি।না ভাবতে চাইলেও আমার মন,আমার মস্তিষ্ককে যেন বাধ্য করে ওকে নিয়ে ভাবতে।তবে কি জানো ওকে নিয়ে ভাবতে আমার ভালোলাগে।

মনের মাঝে আলাদা সুখ সুখ অনুভব হয়।ওকে নিয়ে ভাবলেই অজান্তেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে।আর জানক আগে মেয়েটা ঘনঘন আমাদের বাড়িতে আসত।আমার সাথে কথা বলত।কিন্তু রিধি এখন আর আসে না আর আমার সাথে কথা তো দূরে থাক।আমার দিকে তাকাও না।মেয়েটা কেমন যেন আমাকে ইগ্নোর করে।কিন্তু আমার কেন যেন ভালোলাগে না।একটুও ভালোলাগে না।

ওর ইগ্নোরেন্স যেন আমার বুকের বা-পাশটায় চিনচিনে ব্যথা অনুভব হয়।অসহ্য লাগে সবকিছু।কি হয়েছে আমার মা?কেন হচ্ছে আমার সাথে এমন?আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।তুমি কোনো একটা উপায় বলো।’

একোনাগাড়ে মায়ের কাছে নিজের মনের কথাগুলো বলে যেন ইহান মনে শান্তি পেল।নিজের মাঝে লুকানো কথাগুলো ব্যক্ত করতে পেরে এখন বেশ ভালো লাগছে।কিন্তু মায়ের কোনো জবাব না পেয়ে ইহানের ভ্রু-কুচকে আসে।চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে মিনহা বেগম ছেলের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছেন।ইহানের কুচকানো ভ্রু-জোড়া আরও কুচকে আসে।মায়ের কোল থেকে উঠে বসে পরল।বলল,’ কি হলো মা?তুমি হাসছ যে?আমি তোমাকে আমার এতো বড়ো একটা সমস্যার কথা বললাম।আর তুমি কিনা হাসছ?’

মিনহা বেগম এইবার স্বজোড়েই হাসছেন।হাসতে হাসতে তার চোখের কোণে পানি চলে এসেছে।মায়ের এমন হাসি দেখে মুখ ফোলালো ইহান বাচ্চাদের মতো।পরক্ষণে মায়ের এমন প্রাণখোলা হাসিতে ওর ঠোঁটের কোণেও হাসি ফুটে উঠল।সময় নিয়ে মিনহা বেগম হাসি থামালেন।উঠে দাঁড়িয়ে ছেলের হাতে কফির মগ ধরিয়ে দিলেন তিনি।মুচঁকি হেসে বলেন,’ তুই রিধিকে ভালোবেসে ফেলেছিস।এইটাই আমার জবাব আপাততো।আমার ছেলে প্রেমে পরেছে।এইবার বাকিটা তুই নিজেই বুঝে নেহ।আমি জানি আমার ছেলে বুদ্ধিমান আছে। এখন আসি আমি।’

মিনহা বেগম খুশি মনে চলে গেলেন।তিনি অনেক খুশি।এমনিতেও সে আর তার স্বামী ভেবেই রেখেছিলেন রিধিকেই তাদের একমাত্র ছেলের বউ করে আনবেন।আর এখন তো তার ছেলে রিধিকে ভালোইবেসে ফেলেছে।তাদের আর কোনো চিন্তা নেই।রিধির পরিবারের সাথে কথা বলতে হবে।ওদের বাগদানটা যতো দ্রুত সম্ভব সেরে ফেললেই ভালো হবে।ভেবেই তিনি মুচঁকি হেসে রান্নাঘরে চলে গেলেন।

এদিকে ইহান তব্দা মেরে বসে আছে।তার মা একটু আগে তাকে এসব কি বলে গেল?তার বিষয়টা হজম করতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।সত্যিই কি ও ভালোবাসে রিধিকে?কিন্তু কিভাবে সম্ভব?ইহান আনমনা হয়ে অনেকক্ষণ নিজের মনে কি কি যেন ভাবল।সময় নিয়ে ভাবার পর হঠাৎ তার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠল।ঠোঁটের কোণ প্রসারিত কর হেসে বলে,’ ভালোবাসি।হ্যা আমি রিধিকে ভালোবাসি।আমি আমার মনের কথা বুঝতে পেরেছি।থ্যাংক ইউ মা।ইউ আর দ্যা বেস্ট মা ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড।’
ইহান খুশিতে নাঁচতে নাঁচতে ওয়াশরুমে চলে গেল ফ্রেস হতে।

বাইক পার্ক করে মাত্রই ভার্সিটিতে প্রবেশ করল রুদ্রিক।হঠাৎ ওর সামনে এসে দাঁড়ালো একজন।রুদ্রিক ব্যক্তিটিকে দেখার পর পর ওর চোয়াল শক্ত হয়ে আসল রাগে।শক্ত চোখে চেয়ে রইলো ব্যক্তিটির দিকে।রাগে ব্যক্তিটির পাশ কাটিয়ে চলে যেতে পা বাড়াল সে।এখন এখানে কোনো ঝামেলা সে চায় না আপাততো।কিন্তু তা আর হতে দিলো না। ব্যক্তিটি আবারও এসে দাঁড়ালো রুদ্রিকের সামনে।রুদ্রিক এইবার রক্তচক্ষু নিয়ে তাকাল।বলল,’ কি সমস্যা?তোকে না বলেছি আমার সামনে আসবি নাহ? শান্তিতে থাকতে বুঝি তোর ভালো লাগে না রিয়ান।’

রিয়ান হাসল।বলে উঠল,’ অনেকদিন তোর সাথে দেখা হয় না।তাই শান্তি পাচ্ছিলাম না এইজন্যেই আসলাম তোর কাছে।আর এটা কেমন ব্যবহার রুদ্রিক?আমি না তোর বড়ো ভাই?বড়ো ভাইকে কেউ তুই করে বলে?’
রুদ্রিক দাঁতে দাঁত চিপে বলে,’ তুই আমার আপন ভাই না।ফুপাতো ভাই।আর এমনিতে তোকে আমি কোনোরকমই কোনো ভাই মানি না।তাই এইসব ফাউল কথাবার্তা আমার সামনে বলবি নাহ।’

রিয়ান এগিয়ে আসল খানিক।ধীর স্বরে বলে,’ তুই আমায় ভাই না মানলে কি হবে?আমি তো মানি।তাই তো তোর সব খবরাখবর রাখি আমি।এইযে তুই লুকিয়ে বিয়ে করে নিয়েছিস সেটাও জানি আমি।’
রুদ্রিক কিছুই বলল না।সে ভীষণ বিরক্ত রিয়ানের উপর।তার ফুপুর ছেলের ছেলে,মেয়ে দুটোর একটাও তার দেখতে মন চায় না।জেনি আগে ভালো ছিলো।তাই তো রুদ্রিক টুকটাক ওর সাথে মিশত।কিন্তু এই রিয়ান জেনিকে বাজে পথে নিয়ে গিয়েছে। একেবারে নিজের মতো বানিয়েছে বোনটাকে।যাই হোক রুদ্রিক অহেতুক তর্কে জড়াতে চায় না রিয়ানের।তাই চলে যেতে নিলো।কিন্ত রিয়ানের হঠাৎ একটা কথায় থেমে গেলো ওর পা জোড়া।

‘ ফার্স্ট ইয়ার,ইংলিশ ডিপার্টমেন্ট।নাম জাফ্রিন অথৈ। তোর বউ,কি? ঠিক বলছি নাহ?যাই বলিস বউ পেয়েছিস একটা সেরা।রূপেরও যেমন আগুন আছে,কথাও তেমন আগুন।হটনেসে একেবারে ঠাসা ঠাসা।আমার কিন্তু হেব্বি লেগেছে। ফিগারটাও জোস।’

রিয়ান কথাটা শেষ করতে দেরি।রুদ্রিক শক্তপোক্ত হাতের জোড়ালো ঘুষি একেবারে ওর নাক বরাবর এসে পরেছে।রিয়ান পরতে পরতে নিজেকে সামলে নিলো।দুহাতে নাক চেপে ধরল সে।বেশ জোড়েসোড়েই মেরেছে রুদ্রিক।মাথাটা ভণভণ করে ঘুরছে।হাতে তরল জাতীয় কিছু আভাস পেতে হাতটা চোখের সামনে এনে ধরল রিয়ান।ঝাপ্সা দৃষ্টিজোড়া সময় নিয়ে স্পষ্ট হতেই বুঝতে পারল।রুদ্রিকের ঘুষির প্রখরতায় তার নাক ফেটে রক্ত বের হচ্ছে।

এদিকে অথৈকে নিয়ে বলা রিয়ানের বাজে কথাগুলো শুনে রাগে রুদ্রিকের সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে।তেড়ে গিয়ে রিয়ানের কলার চেপে ধরল।ভয়ংকর রাগিস্বরে বলে উঠল,’ আমার বউয়ের দিকে বাজে নজরে তাকালে তোর ওই চোখজোড়া আমি আগুনে জ্বালিয়ে দিবো।আমার অথৈয়ের থেকে একশ হাত দূরে থাকবি।নয়তো তোকে মেরে মাটিতে পুতে ফেলব।কাক পক্ষিও টের পাবে না।’

রিয়ানকে প্রায় একপ্রকার ধাক্কা দিয়ে ফেলে রাগে ফুসতে ফুসতে চলে গেল রুদ্রিক।রুদ্রিকের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রিয়ান শয়তানি হাসি দিলো।বলে,’ নজর তো আমার বহু আগেই পরেছে।আমিও দেখি তুই ঠিক কিভাবে তোর বউকে প্রটেক্ট করিস।শুধু তোর বউকে নিয়ে কিছু কথা বলায় আমার গায়ে হাত তুললি।একদিন গোটা তোর বউটাই আমার কাছে থাকবে।ঠিক এতোটাই কাছে।যতোটা কাছে থাকলে তুই রুদ্রিক।তোর বুক কেঁপে উঠবে।এর প্রতিশোধ তো আমি নিবোই।’

রুদ্রিক কিছুতেই নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারছে না।তীব্র রাগে মন চাচ্ছে ওই রিয়ানকে এখনই মেরে টুকরো টুকরো করে ফেলতে। তবে বোধহয় একটু শান্তি পাবে। রুদ্রিককে এতোটা রাগতে দেখে নীল বলে উঠল,’ কি হয়েছে তোর?এমন রেগে আছিস কেন?’

রুদ্রিক রাগে সজোড়ে ওর বাইকে একটা থাবা মারল।এতে বিকট শব্দ হলো।চমকে গেল ওরা।অনিক দ্রুত এসে রুদ্রিকের হাত ধরল।চিন্তিত স্বরে বলে,’ সালা কি করছিস?কার না কার উপর রেগে নিজেকে আঘাত করছিস কেন?’
রুদ্রিক হাত ছাড়িয়ে নিলো অনিকের কাছ থেকে।দু হাতে মাথার চুলগুলো খামছে ধরে চেঁচিয়ে উঠল,’ ওই কুত্তার*** সাহস কিভাবে হলো আমার অথৈকে নিয়ে বাজে কথা বলার।

ওর জিভ টেনে ছিড়ে না ফেলা পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছি না।কিন্তু আমি তা করতে পারছি না।আই’ম ফিলিং সো হ্যাল্পল্যাস।কেন ওকেই আমার কাজিন হতে হলো?শুধু মাত্র দাদুর কারনে আমি নিজেকে দমিয়ে রেখেছি।নাহলে আমি ওকে সেখানেই জিন্দা কবর দিয়ে ফেলতাম।তবে এটাই ফার্স্ট আর এটাই লাস্ট। সেকেন্ড টাইম ওকে আমি ছাড়ব না।সবকিছু ভুলে যাবো আমি।ওকে খুন করে তবেই শান্ত হবো।’

ইহান রুদ্রিকের কাধে হাত রাখল।শান্ত স্বরে বলে,’ রিলেক্স রুদ্রিক।জোড়ে জোড়ে শ্বাস নে।কি হয়েছে আমাদের খুলে বল।’
রুদ্রিক জোড়েজোড়ে নিশ্বাস নিলো।তারপর একে একে সবটা খুলে বলল ওদের।সব শুনে ইহানেরও রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে গিয়েছে।কিন্তু ও কিছু বলল না।কারন রুদ্রিক বলল তো ওই শয়তানটাকে ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দিয়েছে।তবে দ্বিতীয়বার এমন কিছু শুনলে রুদ্রিকের আগে ইহান নিজে গিয়েই ওই রিয়ানকে কুপিয়ে মেরে আসবে।

এদিকে সব বলা শেষে।রুদ্রিক রাগে চোয়াল শক্ত বলে উঠে,’ অথৈ ইজ মাইন।ওকে আমি আমার সবটা দিয়ে প্রটেক্ট করব। আর ওই জানোয়ারটাকে তো দেখে নিবো।আমার অথৈয়ের দিকে হাত বাড়ানোর কথা স্বপ্নেও পরিকল্পনা করলে।ওর সেই হাত আমি ভেঙে দিবো। বাস্তবে করবে তো দূরে থাক।তুই চিন্তা করিস না ইহান।’
ইহান হালকা হাসল রুদ্রিকের কথায়।বলে,’ আমি জানি সেটা রুদ্রিক।এইজন্যেই তো আমার বোনটাকে বিনাবাক্যে তোর হাতে তুলে দিয়েছি। ‘

সাফাত ব্যথিত নজরে রুদ্রিকের দিকে তাকিয়ে।কিন্তু ঠোঁটের কোণে তার মুচঁকি হাসি।রুদ্রিকের কণ্ঠে উচ্চারিত হওয়া প্রতিবার ‘ আমার অথৈ।’ শব্দ দুটো বড্ড পীড়া দিচ্ছে ওকে। বুকের বা-পাশটা অসহনীয় ব্যথা হচ্ছে।আচ্ছা, এক তরফা ভালোবাসায় কি এতোটাই যন্ত্রণা থাকে?কেন যে সে ভালোবাসতে গেল।ভালোবাসায় এতো কষ্ট থাকলে কখনই ভালোবাসত না সাফাত অথৈকে।

কিন্তু মনকে কি বেঁধে রাখা যায়? মন তো যখন তখন যাকে তাকে হঠাৎই ভালোবেসে ফেলে।এখানে কারও কোনো হাত থাকে না।সাফাত চোখ বুজল।লম্বা শ্বাস ফেলল।পর পর ওর বদ্ধ চোখের পাতায় ভেসে উঠল রুদ্রিক আর অথৈয়ের হাস্যজ্জ্বল একসাথে দাঁড়ানো একটা মুহূর্ত। যা কল্পনা করে সাফাতের ঠোঁটের কোণেও চমৎকার হাসি ফুটে উঠল।আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকাল সাফাত।

মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না পর্ব ২৭

তার প্রিয় দুটি মানুষ যদি একে অপরের সাথে থেকে,একে অপরকে ভালোবেসে সুখে থাকে।তাহলে সে নিজেও সুখী।সবকিছু পেয়ে গেলেই যে সে সর্বসুখী এমনটা ভাবা বোকামি।মাঝে মাঝে কিছু ত্যাগ করলেও সুখী।হওয়া যায়।আর সেই ত্যাগে যদি তারই প্রিয় মানুষ দুটি সুখী হয়।তাহলে তো কোনো কথাই নাই।তাহলে এই সুখের থেকে বড়ো সুখ আর কিছু হতেই পারে না।আর তাই সাফাত নিজেও সুখী।অনেক সুখী।

মন তুমি ছুঁয়ে দেখো না পর্ব ২৯

1 COMMENT

Comments are closed.