মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ৩
Tahrim Muntahana
সকাল দশটা বাজে। তীব্র গরম। সূর্যটা যেন আজ একটু বেশিই তেজ দেখাচ্ছে। এই রোদের মধ্যে হৃদান সায় দাঁড়িয়ে থাকলেও আদরকে থাকতে দেয় নি। গাড়ির এসি অন করে দরজা খুলে বসিয়ে রেখেছে। যদিও আদর চাইছিলো না; হৃদানের ধমক খেয়ে অনিচ্ছা সত্তেও বসতে হয়েছে। অফিসারটি হৃদানের কথার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বলতে পারিনি।
সে ভালোভাবেই ফেঁসে গেছে; সেটা বুঝতে আর তার বাকি নেই। এমন সময় উপস্থিত হলো আতইয়াব। খবরটা শোনা মাত্রই ছুটে এসেছে সে। অফিসার টিকে দেখেই আতইয়াবের মাথায় রক্ত উঠে যায়। তার স্পষ্ট মনে আছে এই সেই অফিসার যে বাবার প্রত্যেকটা খারাপ কাজের সাথে জড়িত। নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে না সে। হুড়মুড় করে এসেই অফিসারের কলার চেপে ধরে; ভড়কে যায় অফিসার; সাংবাদিকরা নতুন খবর প্রচারে উদ্ধিগ্ন হয়ে যায়।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
আমার বোন কোথায়? কি করেছিস ওর সাথে। আমার বোনোর গায়ে যদি একটা টোকাও লাগে আমি তোর জান নিয়ে নিবো। আমার বোন কে কোথায় রেখেছিস? বল বলছি!
অফিসার টি সমানে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু বিশেষ লাভ হচ্ছে না। সুঠাম দেহের অধিকারী ছেলেটির গায়ে যে ভিষণ জোর। আতইয়াবের ব্যবহারে হৃদান একটুও চমকায় নি বরং ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি ফুটে উঠে। ভাই-বোনের ভালোবাসা তো এমনই হওয়া চায়। হৃদান আতইয়াবের কাঁধে হাত রেখে অফিসারের থেকে ছাড়িয়ে নেয়; হালকা বেগ পেতে হয়েছে অবশ্য। আতইয়াবের উদ্দেশ্যে বলে উঠে,
মি. ডক্টরের দেখছি ট্যাম্পেরেচার অনেক হাই। তো কি চোখের মাথাও খেয়ে ফেলেছেন নাকি? আমি জানতাম ডক্টরেরা কানায় থাকে তাই বলে এতটা আশা করি নি। আমার বোনের কপাল যে বহুত খারাপ বুঝতে পারছি। দেখা যাবে বাসর রাতে চশমা ছাড়া বউ ই খুঁজে পাবেন না! বাই এনি চান্স চশমা হারিয়ে গেলে আমার আর মামা হওয়া হবে না।
হৃদানের কথায় ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল আতইয়াব। এই লোকটা এই সময়ে মজা করছে তার সাথে! হাউ পসিবর! আতইয়াবের এমন দৃষ্টিতে হৃদান মুচকি হেসে হাত দিয়ে ইশারা করে আদর কে দেখিয়ে দেয়। আদর ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে। আতইয়াব চাওয়া মাত্রই ইতস্তত হাসে সে। তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে। কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলো সে! এখন শান্তি লাগছে!
একনজর আতইয়াব আদর কে দেখে হৃদান অফিসারের দিকে তাকায়। চোরের মতো মাথা নিচু করে আছে। নিজের ফোন বের করে অফিসারের সামনে মেলে ধরে সে। চোখ বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম তার। হৃদান হিসহিসিয়ে বলে উঠে,
আশা করছি চতুর মাথায় কিছু ঢুকতে বাকি নেই! বাকি কাজ আপনার। একটু এলোমেলো হলেই আপনার জীবনের প্রদীপ নিভিয়ে দিতে সময় লাগবে না আমার।
অফিসার টি এবার পড়লো প্রাসাদে। কার দিকে যাবে সে। যেদিকেই যাবে সেদিকেই বিপদ। কিন্তু বর্তমানে তাকে হৃদান চৌধুরীর আড়ালে যেতে হবে। না হলে এই লোক তাকে চোখ দিয়েই ভস্ম করে দিবে! দু’পা পিছিয়ে যেতেই দাঁড়িয়ে গেল অফিসার। পেছনে ইয়া বড় খাম্বা দাঁড়িয়ে আছে মনে হলো।
পেছনে ঘুরতেই বিশাল দেহী আজব প্রাণীর দেখা পেল সে। অফিসারের চুপসে যাওয়া মুখ দেখেই বাহাদুর দাঁত কেলিয়ে হেসে উঠলো। অফিসার বুঝতে পারলো তাকে ছেড়ে দিয়েও ছেড়ে দেয় নি হৃদান চৌধুরী। দীর্ঘশ্বাস ফেলে এগিয়ে গেল গাড়ি করে। যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের ইশারা করেছে তাকে ফলো করতে। সবাই চলে যেতেই হৃদান ও আদরদের নিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয়! আজকে সব রহস্যের জটিলতা সে বের করবে। একদম গর্ত থেকে টেনে বের করবে কালপ্রিটদের!
সোফায় আধশোয়া হয়ে বসে আছেন রাজীব আহমেদ। মনের মধ্যে তার লাড্ডু ফুটছে। কখন আদরকে এরেস্ট করার কথা শুনবে এই আশায় বসে আছে সে। ঘটনার পুনরাবৃত্তি করে যেন নিজেকে নিয়ে তিনি গর্বিত। এমন সময় কলিংবেলের আওয়াজ শুনে কপালে ভাজ পরে তার। আশেপাশে কেউ কে না পেয়ে অলস পায়ে নিজেই এগিয়ে যায়। চোখে মুখে বিরক্ত ভর করেছে। দরজা খুলে আদর কে দেখে ছিটকে দু-পা পিছিয়ে যায় সে।
যেন দিন দুপুরে ভূত দেখেছে সে। এসময় তো মেয়েটির জেলে থাকার কথা ছিলো এখানে কি করছে। আদর ঘরে ডুকে সোফায় বসে। আদরের পিছু পিছু বাহাদুর ও ঘরে ডুকে রাজীব আহমেদ এর বাহু চেপে ধরে। চমকে উঠে রাজীব আহমেদ। কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারে না। কারো মুখেই কোনো কথা নেই। রাজীব আহমেদের পকেট থেকে ফোন বের করে বাহাদুর আদরের হাতে দেয়। আদর বাঁকা হাসে।
কিছুক্ষণ ফোন ঘাটাঘাটি করে মেসেজ অপশনে ক্লিক করে। ফেনে কথার চেয়ে মেসেজে কথা হয়ছে বেশি। আগের মেসেজ ডিলিট করতেও ভুলে গেছেন রাজীব আহমেদ। প্রত্যেক মেসেজ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে আদর। তারপর কিছু একটা লিখে সেন্ড করে হেসে উঠলো আদর। আজ এতো বড় সারপ্রাইজ পাবে ভাবতেও পারে নি। এতোদিনের লুকায়িত সত্য প্রকাশ পাবে ভেবে মন কে শক্ত করে নিলো সে। সামনে যে তার জন্য অনেক কিছু অপেক্ষা করছে!
আদর কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থেকে বাহিরের দিকে হাটা ধরলো। অপেক্ষা করছে সবাই। এর ঠিক কিছু সেকেন্ড পর আবার ফিরে এলো সাথে হৃদান-আতাইয়াব, পুলিশ ও সাংবাদিক।চতুর মস্তিষ্কের অধিকারী রাজীব আহমেদের বুঝতে বাকি রইলো না তার সময় ঘনিয়ে এসেছে। তার করা ফাঁদে সে নিজেই আটকে পড়েছে। আদর সাংবাদিক দের রান্নাঘরে লুকিয়ে পড়তে বলে। স্পষ্ট সবকিছু ক্যাপচার করতে সুবিধে হবে! হৃদান-আতইয়াবের সাথে পুলিশ অফিসারও চললো উপরে। এমন কি পুরো বাড়ি পুলিশ দিয়ে ঘেরাও করা। এটা হৃদানের পূর্ব পরিকল্পিত প্লান যা তার এক্সপ্রেশন আর কথার মাধ্যমেই বোঝা যাচ্ছে। এতোকিছুর মাঝখানে আতইয়াব তার মায়ের দেখা পাচ্ছে না। ঘরে গিয়ে দেখলো দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো সে। বাহির থেকেও দরজা টা লাগিয়ে দিলো। পরে মাকে বুঝিয়ে বলবে!
আদর নিজের ঘরে এসেছে। তার মাথাটা ভনভন করে ঘুরছে। হঠাৎ কেন এমন হচ্ছে বুঝতে পারছে না। চুপচাপ শুয়ে ছিলো; দরজা লাগানোর শব্দ হতে ফট করে চোখ খুললো আদর। হৃদান কে দেখেও উঠে বসার ইচ্ছে হলো না তার।হৃদানের কপালে সুক্ষ্ম ভাজের সৃষ্টি হলো। তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে এসে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে পরখ করতেই আদর ইতস্তত করতে লাগলো। এই লোককে এখন অসুস্থতার কথা বলা মানে আলাদা প্রেশার দেওয়া।
যেটা সে এই মূহুর্তে চাইছে না। কিন্তু হৃদানের চোখ দুটিকেও উপেক্ষা করার সাহস তার নেই। শেষমেষ উপায় না পেয়ে হেহে করে হেসে উঠে আদর। হৃদান ভ্রু কুঁচকে কিছু বলবে তার আগেই আদর তাকে বিছানায় ফেলে; বুকের উপর মাথা রেখে শুয়ে পড়ে। তাজ্জব হয়ে যায় হৃদান। ততক্ষণে আদর তার বুকটা বালিশ বানিয়ে নিয়েছে। জোরে জোরে শ্বাস ফেলছে আদর। আহা শান্তি! এক নিমিষেই যেন সব খারাপ লাগা চলে গেল।
হৃদান ও ততক্ষণে হেসে আদরকে আদর করে এক হাতে জড়িয়ে নিয়েছে। সময়টা এখানেই থেমে থাকলে কত ভালো হতো। কিন্তু সময় তো কারোর জন্য অপেক্ষা করে না। সে তার গতিতেই অবিরাম চলতে থাকে। কিছু সময় যেতেই দরজায় নক করার শব্দ হয়। বিরক্তি নিয়ে দরজার দিকে তাকায় হৃদান। এসময় কার মাথায় সমস্যা টা হলো যে তাদের ডিসটার্ব করার কথা মনে হলো। আদর সরে যেতে চাইলেও চেপে ধরে রাখে হৃদান। হালকা বিরক্তি কণ্ঠে বলে উঠে,
কার মাথায় সমস্যা হলো এখন?
দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে থাকা আতইয়াবের চোখ মুখে রাগ ফুটে উঠলো।
একোতা তারই বোনের ঘরে গিয়ে দরজা আটকে বসে আছে তার উপর তাকে ইনডাইরেক্টলি পাগল বলছে ! এ তো সহ্য করার মতো না। সবথেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে তাকে কাজে আটকে রেখে এ ব্যাটা তারই বোনের সাথে প্রেম করছে; এ ঘোর অন্যায়। সে কিছুতেই এটা হতে দিতে পারে না। ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে ওঠে,
সমস্যা তো তার যে ভেতরে অবস্থান করছে। মিনিমাম কমনসেন্স নেই। এই সময়ে কি করতে হয় তাও দেখছি গিলে বসেছেন।
ও আচ্ছা, তা এই সময় কি করতে হয় ! ফোনে প্রেম করতে হয়?
হৃদানের পাল্টা উত্তর শুনে আতইয়াবের কাশি উঠে যায়। নিজের কথার প্যাচে নিজেই পরবে জানতো নাকি ! হৃদান কিটকিটিয়ে হেসে উঠে। বড় শালাকে জব্দ করতে পেরে খুব মজা লাগছে তার।আদর হৃদানের দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে। তারই সামনে তার ভাইকে এই লোকটা কথার মায়া প্যাঁচে হারিয়ে দিচ্ছে;এটা মানা যায়। হৃদান আদরের দিকে তাকিয়ে জোরে জোরে বলে ওঠে,
আমার কাজ যেটা সেটাই করছি। আগে বউ তারপর সবকিছু অন্যসব চুলোয় যাক। আমার ভীষণ প্রেম প্রেম পাচ্ছিলো কি করবো বলো। হেই বেবি গিভ মি এ কিস!
আতইযার এবার খক খক করে কেশে উঠে। তার কথাই তাকে ফেরত দিচ্ছে লোকটা।একটু আগে হৃদযা কে ফোনে ঠিক এই কথাটাই বলেছে। তার বদবুদ্ধি বিশিষ্ট ঘরের শত্রু বড় শালা যে শুনে নিয়েছে ঢের বুঝতে পারছে। এখানে থাকার চেয়ে পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দেওয়া ভালো ভেবেই মানসম্মান যত টুকু ছিলো বাঁচিয়ে মানে মানে কেটে পড়ে আতইয়াব। আতইয়াবের সাড়া শব্দ না পেয়ে জোড়ে শব্দ করে হেসে উঠে হৃদান। আদর নিজে ও হাসে ।এই দুইটা যে ইচ্ছে করে এমন করে সে বুঝে। এমন করেই তাদের মধুর সম্পর্ক।
গাড়ির হর্ন শুনেই দুজন উঠে বসে। হৃদান আদরের হাত ধরে ঘর থেকে বের হয়ে বড় পিলারের পেছনে লুকিয়ে পড়ে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে যার আসার কথা ছিল সে না; বরং হৃদযা কে ভুলতে দেখা যায়। হৃদানের সাথে সাথে আদরের কপালেও ভাজ পড়ে বিষয় টা বুঝতে না পেরে। ঠিক তখনই গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে গাইতে নিচে নামতে থাকে আতইয়াব,
মার ঝাড়ু মার, ঝাড়ু মেরে ঝেটিয়ে বিদেয় কর!
হৃদান কে উদ্দেশ্য করেই যে লিরিক্স টা গাইছে আতইয়াব বুঝতে পারলো দুজনই। আদর ফিক করে হেসে দিলেও হৃদানের দিকে তাকিয়ে দু হাতে মুখ চেপে ধরে। রক্ত চক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে লোকটি। মনে মনে যে তার ভাই কে চরম লেভেলের গালি দিচ্ছে তা বুঝতে পারছে সে। পেটের মধ্যে যেন হাসি গুলো কিলবিল করছে আদরের।
এদিক ওদিক তাকিয়ে হৃদানের হাত থেকে হাত ছাড়িয়ে নিজের রুমে গিয়েই হো হো করে হেসে দেয় আদর। এত কেন হাসি পাচ্ছে তার!হৃদান বুঝতে পারলো আদর হাসতেই রুমে ছুটে গেল এতে যেন হৃদানের রাগটা আরো প্রকোট হলো। আতইয়াব কে শিক্ষা দেওয়ার প্লান ভাবতে লাগলো!ততক্ষণে আতইয়াব হৃদযা কে নিয়ে উপরে উঠে আসলো!তার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আতইয়াব বলে উঠে,
বেবি চলো আজ আমরা অনেক প্রেম করবো। কোনো মডেল ফডেল ডিস্টার্ব করতে পারবে না। আজ দিন তোমার আমার!
হৃদযা হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো আতইয়াবের মুখের দিকে! এ ডাক্তারের আজ কি হলো সেটাই ভাবছে। হৃদযা বেফাঁস কথা বলার আগেই নিজের ঘরে ডুকে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয় আতইয়াব। হৃদান মাত্রই এসেছিলো হৃদযা কে কিছু কথা বলার জন্য তার আগেই ঠিক সময় দরজা লাগিয়ে দেই আতইয়াব!
হৃদান চলে যায় সেখান থেকে। কারোর উপর রাগ ঝাড়তে পারছে না বলেই এত রাগ হচ্ছে। কিছু একটা ভেবেই হৃদান ফোন লাগায় পান্চুর কাছে।
ওয়াশরুমে বসে ফোন টিপছে পান্চু। এত পরিমাণ কাজ যে ঠিকমতো ফোন ধরার সুযোগ ই পাচ্ছে না। খা* রুচ বস তার টাক মাথায় একশ টা কাজের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে টাক মাথাটা এখন চ্যাপ্টা করে দেওয়ার যোগাড় করেছে। তারউপর উপরি পাওনা জুটেছে তার ভাই। কিছুক্ষণ পর পর ফোন দিয়ে বসের গোষ্ঠী উদ্ধার করে। ধমক দিলেও কাজ হয় না। তার মতো টাকু কে নাকি প্রফেসর ফঞ্চুর পোলা ভয় পায় না।
ব্যর্থতাকে বরণ করেই বসের গোষ্ঠী উদ্ধারের কথা গুলো শুনে যেতে হয় তার। আজকে একটু ফোন টিপছে শান্তিতে; তাও সহ্য হলো না। অশান্তির আগমনে বিকট শব্দে হাতে থাকা ফোন টা বেজে উঠলো। ওয়াশরুমের চার দেয়ালে শব্দটা বারি খেয়ে প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো। চমকে উঠায় ফোন টা পড়ে যেতে ধরতেই কোনো রকম ভাবে ফোনটাকে শহীদ হওয়া থেকে বাঁচিয়ে নেয় সে। ঠোঁটের কোণে গর্বের হাসি ফুটিয়ে তুলে কে ফোন করেছে দেখতেই হাসিটা মিলিয়ে যায়। কোথাও শান্তি নেই। এই বসের কি আর কাজ নাই! এক আকাশ সমান হতাশা নিয়ে ফোন ধরতেই অপর পাশ থেকে ধমকে উঠে হৃদান,
কি সমস্যা ফোন ধরতে এত দেরি হয় কেন? চিনো আমাকে? এক দম হাত-পা ভে* ঙ্গে ফেলে রাখবো। কি করছিলে এতক্ষণ। এত ঘরের মধ্যে কি? মেয়ে দেখলেই চিপকে থাকতে ইচ্ছে করে ? আগে বিয়ে কর না ভাই;তার আগেই এত রঙ-চঙ কেন? ফাজলামি পাইছে। ফোন রাখ টাকলুর বাচ্চা।
হৃদানের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। শান্তি লাগছে এখন। সে নিশ্চিত তার গলা শোনে তার বোন হতভম্ব হয়ে গেছে। এখন কর প্রেম কর,ভালো করে কর।অন্যদিকে পান্চু রিদানের কথার আগামাথা কিছু বুঝতে না পেরে থম মেরে রইল। ওয়াশরুমেই অতিবাহিত হলো তার আধা ঘন্টা। এদিকে ভাইয়ের গলায় কথা গুলো শুনে এতক্ষণে কাহিনী হৃদযার মাথায় এলো। আতইয়াবের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই আতইয়াব বোকা বোকা হাসি দিয়ে মুখটা ইন্নোসেন্ট করে বসে রইল। লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে পড়লো হৃদযা। কেন যে আসতে গেলো এখানে। তারই নিজের মাথায় বারি দিতে ইচ্ছে করছে।
মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ২
বাহিরে থেকে আরেক টা গাড়ির হর্ন শুনেই হন্তদন্ত হয়ে বের হয়ে আসলো সবাই। এবার মনে হয় না মিস হবে। ঠিক তাই হলো; খোশ-মেজাজে ঘরে ঢুকলো হিয়ান খান। দরজা খোলা অথচ কেউ নেই দেখে হালকা চিন্তিত হলো সে। হুট করেই এখানে আসা কি তার উচিত হলো ভাবতে ভাবতেই নেমে এলো হৃদান রা। বাহাদুরের সাথে দাড়িয়ে আছে রাজিব আহমেদ। হিয়ান খান ধপ করে সোফায় বসে পড়লো। তার সাম্রাজ্য আজ যে শেষ।একটু ভুলেই এতদিনের করা প্লেনের সমাপ্তি হলো। তরী এসে তরি ডোবা যাকে বলে!