মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ২৩

মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ২৩
Tahrim Muntahana

মা! মা শব্দটাই কতটা মায়া জড়িয়ে আছে। একজন নারী তখন‌ই নিজেকে সবচেয়ে বেশী সৌভাগ্যবতী মনে যখন যখন জানতে পারে তার মধ্যে আরো একটি প্রাণ বেড়ে উঠছে‌। মাতৃত্বের স্বাদ বড়‌ই তৃপ্তিকর। চৌধুরী বাড়িতে আজ সুখের দেখা মিলেছে। সব কষ্ট কে ছাপিয়ে খবর এলো হৃদযা মা হতে চলছে।

সবার মুখেই আজ হাসি ফুটেছে। শুরু হয়ে গেছে মাতামাতি। আত‌ইয়াব এখন আর আহমেদ বাড়িতে থাকে না। কষ্ট গুলো ভালো থাকতে দেয় না। যদিও সে ফ্ল্যাট কিনতে চেয়েছিলো কিন্তু নাবিল চৌধুরী বাধ সাধেন। আত‌ইয়াব ও সবার মুখের দিকে তাকিয়ে মেনে নিয়েছে। সাফিন-রাফিন চৌধুরী বাড়িতেই থাকছে‌। আদরের সাথে ব্যবসায়ের হাল ধরেছে রাফিন। মেয়েটা এখন একটুতেই হাঁপিয়ে উঠে। বাঁচার আশা না থাকলে সবকিছুই অন্ধকার লাগে‌। শরীরের ই বা কি দোষ!

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

সময় এগিয়ে যেতে যেতে দুটো মাস পেরিয়ে গেছে। হৃদানের মৃত্য তিনমাস হবে কিছুদিন বাকি। ক্ষত কি ভুলা যায়? এ‌ই তো দুই মাস আগে ঠিক সময়ে সাফিন-রাফিন না পৌঁছালে আদর কেও হারিয়ে ফেলতো সবাই। দুই মাসে অনেক আত্মহনন করার চেষ্টা চালিয়েও সফল হতে পারেনি আদর‌। ডান হাতে স্থান পেয়েছে ১১ টা কাটা দাগ। যতবার সুইসাইডে ব্যর্থ হয়েছে ততবার হাত কেটেছে মেয়েটা।

হাজার বুঝিয়েও লাভ হয়নি। আদর তো তখন বিবেকের কথা শুনতে পায় না। হৃদ নামক পূর্ণতায় আচ্ছাদিত অপূর্ণতা যখন জেঁকে ধরে পৃথিবী থেকে বহু দূরে চলে যায় সে। মনে হয় হৃদ তাকে ডাকছে। কষ্টগুলো স‌ইতে পারে না। মরণের পথ বেছে নেয়। তবে সব যে উপর ওয়ালার হাতে‌। নিয়তি বড়‌ই কঠিন। এখনো মেয়েটা হৃদান ছাড়া তিক্ত নিঃশ্বাস নিচ্ছে!

হৃদযার খবর টা পেয়েই আদর অফিস থেকে ছুটে এসেছে। খালি বুকটাই যেন একটু খানি সুখ পেয়েছে‌‌। অজান্তেই চোখের পাতা ভিজে যাচ্ছে বারংবার। সে ও তো মাতৃত্বের স্বাদ নিতে পারতো! কিন্তু হায় আফসোস; তা হবার নয়! বাড়ি এসে হদযা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ বসে থাকে আদর। নিজ উদ্যোগে বাবুর জন্য ঘর সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শেষ করতে পারে না, তার আগেই হৃদ নামক অসুখ টা আবার মস্তিষ্কে আঘাত করে। ছুটে চলে যায় নিজ ঘরে। পাগলে মতো হৃদানের ছবি আকড়ে ধরে কান্না করতে থাকে। কতশত অভিযোগ! এ‌ই কষ্টের আদোও নিস্তার আছে?

দুপুর দুটো বাজে দশ মিনিট। সবাই লাঞ্চ করছে। কাজের চাপ বেশী থাকায় রাফিনের সুযোগ হয়ে উঠেনি। এতটা মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে যে কেউ তার পাশে বসে আছে খেয়াল ই করেনি। রামিয়া আজ দুপুরের খাবার নিয়ে এসেছে রাফিনের জন্য‌‌। রাফিন এখনো ভালবাসার কথা না জানালেও বন্ধুর মতো থাকছে। রামিয়া হাসি মুখে মেনে নিয়েছে। ভালোবাসার মানুষটার আশেপাশে থাকতে পেরেছে এটাই অনেক তার কাছে‌। রাফিনের আচরণ দেখে রামিয়া হতাশ হয়। দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য হালকা কাশতেই রাফিন চমকে দাঁড়িয়ে যায়। পরক্ষণেই রামিয়াকে দেখে চুপচাপ বসে‌‌। অবাক হলেও বুঝতে দেয় না। রামিয়া মুখ টিপে হেসে বলল,

খেয়ে নিন, পরে কাজ করবেন।
রাফিন মাথা নেড়ে সায় জানিয়ে ফ্রেস হয়ে আসে। খাবার দেখে খিদে যেন বেড়ে গেছে। রাফিন খাচ্ছে রামিয়া মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখছে। এ‌ই দেখায় কি যে সুখ! রাফিন বুঝতে পেরে খানিক ইতস্তত বোধ করে। এ‌ই মেয়েটা কি জানে এভাবে গোল‌ গোল চোখে তাকিয়ে থাকলে তার পাগল পাগল লাগে! মাথা ঝেড়ে নরম স্বরে বলে উঠে,
খেয়েছো তুমি?

মাথা দুদিক নাড়িয়ে না বোধক উত্তর রাখে রামিয়া। রাফিন এক লোকমা খাবার তুলে রামিয়ার সামনে ধরতেই একপ্রকার লুফে নেয় সে। যেন সুযোগটার‌ই অপেক্ষা করছিল। আড়ালে মুচকি হাসে রাফিন। যেতে থাকে সময়। ভালোবাসাময় কিছু মুহূর্ত এভাবেই কাটে।

বোরকা পড়ে আপাদমস্তক ঢাকা মেয়েটা বাসের মধ্যে থরথর করে কাঁপছে। বার বার জানালা দিয়ে মাথা বের করে পেছনে দেখছে কেউ আসছে না তো?দেখেই বুঝা যাচ্ছে মেয়েটা প্রচন্ড ভয়ে আছে। মনে হচ্ছে কেউ তাকে ধরতে আসবে। হাতে থাকা ফোনটা দিয়ে অনবরত কাউকে ফোন করছে, অথচ ধরার নাম নেই। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা বাজে। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে; পাশে থাকা লোকটি অদ্ভূত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। জিজ্ঞাসা করতেও ইতস্তত করছে হয়তো। মেয়েটিই হুট করে বৃদ্ধা লোকটিকে বলে উঠে,

দাদু বাস কখন থামবে? আমাকে একটু স্টেশনের আগে নামিয়ে দিতে বলবেন?
বৃদ্ধা লোকটি বুঝতে পারলো মেয়েটি বিপদে আছে। তাই আশ্বস্ত স্বরে বলল,
নাম কি তোমার? কি হয়েছে তোমার বোন? আমার নাতনির বয়সীর হবে‌। আমাকে বলো কি হয়েছে? শান্ত হ‌ও আগে।
মেয়েটি এবার ঝরঝর করে কেঁদে। ফুঁপানো কন্ঠে বলল,

আমার নাম পিয়ানি। আপনাকে সব বলতে পারবো না। তবে আমাকে কেউ চিনে ফেললে খারাপ লোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে। আম্মুর সাহায্যে পালাতে পারলেও ধরা পড়ে যাই। এখন বাবা আমাকে খুঁজার জন্য প্রত্যেক টা স্টেশনে লোক লাগিয়েছে। সাহায্য করুণ দাদু।

বৃদ্ধ লোকটি আশ্বস্ত করতেই পিয়ানি শান্ত হয়ে বসে। স্টেশনের আগেই বৃদ্ধটি পিয়ানিকে নিয়ে নেমে পড়ে। তার কথায় সত্য হলো একদল লোক দাঁড়িয়ে আছে, প্রত্যেকটা বাস চেইক করছে। ভয় পেলেও বৃদ্ধটি পিয়ানিকে নিয়ে এগিয়ে যায়। বৃদ্ধের সাথে থাকায় তেমন কেউ ই সন্দেহ করে নি ওদের। বিপত্তি টা ঘটলো তখনি, পরের বাসে উঠে যখন পেছনে ফিরলো পিয়ানি। চিনে ফেললো একজন।

তবে পিয়ানি ভয় পেলো না। তার গন্তব্যে সে এসেই পড়েছে। মাত্র পাঁচ মিনিট। বৃদ্ধটিকে ধন্যবাদ দিয়ে বাস থেকে নেমেই দৌড়াতে শুরু করলো‌ সে। ওই যে দেখা যাচ্ছে চৌধুরী বাড়ির গেইট। পাহারা দিচ্ছে অনেকগুলো লোক। এত লোক দেখে পিয়ানির কাছে আসার সাহস পেলো কেউ। নিজের পরিচয় দিয়েও খুব একটা লাভ হলো না‌; কেউ ঢুকতে দিচ্ছে না অনুমতি ছাড়া। তিনদিন ধরে না খেয়ে থাকায় হাত পা অসাড় হয়ে আসছে যেন। ফোন বের করে কোনোরকম লোকটিকে বলল,

ফোন চেইক করুন। ভাইয়ার সাথে অনেক ছবি আছে‌‌। আমার ভাইয়ার সাথে দেখা করা জরুরি। প্লিজ যেতে দিন।
লোকটি চেইক করে দেখলো। ইতিবাচক ডিটেলস পেয়ে ঢুকার অনুমতি দিতেই পিয়ানি এক দৌড়ে বাগান পেরিয়ে দরজার সামনে দাঁড়ালো। চোখ মুখ অন্ধকার করে আসতেই দরজা ধরে বসে পড়লো সে। দু’তিন বার দরজায় বাড়ি দিলো। চোখের পানি যেন বাঁধ মানছে না। খট করে দরজা খুলে যেতেই কোনোরকম দরজা ধরে উঠে বসলো।

খাওয়ার পাঠ চুকিয়ে ড্রয়িং রুমেই বসে ছিলো চৌধুরী বাড়ির ছেলেরা। দুই বিজনেস নিয়ে কথা বলতে বলতে কখন‌ এত রাত হয়ে গেছে টের ই পায় নি। এমন সময় কলিংবেল না চেপে দরজা ধাক্কানোই বেশ অবাক হয়েছে তারা। রাফিন তাড়াতাড়ি এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে। সবার দৃষ্টি পিয়ানির দিকে। পিয়ানি নিভু নিভু দৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকা আত‌ইয়াব কে দেখে ঝরঝর করে কেঁদে দেয়।

এলোমেলো পায়ে এগিয়ে গিয়ে একপ্রকার ঝাঁপিয়ে পড়ে বুকে। আত‌ইয়াব নিজেও স্তব্দ এত রাতে পিয়ানিকে এমন অবস্থায় দেখে। কাঁদতে কাঁদতে পিয়ানি আত‌ইয়াবের‌‌ বুকেই ঢলে পড়ে। কি হয়েছে পরে জানা যাবে ভেবে রামিয়ার রুমে নিয়ে শুয়িয়ে দেয় পিয়ানি কে। রামিয়া পড়ছিলো তখন। অবাক হলেও জিজ্ঞেস করার পরিস্থিতি না থাকায় ঘর থেকে বের হয়ে সুবাহ’ কে খবর দেয়। আদর নিজেও চেঁচামেচি শুনে এসেছে।

চেন্জ করিয়ে দিতে বলে আত‌ইয়াব নিজের ঘরে চলে যায়। তার কাছে স্যালাইন আছে। এখন এটাই দিতে হবে। সুবাহ চেন্জ করিয়ে দিয়ে আত‌ইয়াব কে ডেকে পাঠালো। নিজের মতো ডাক্তারি বিদ্যা খাটিয়ে সবাইকে ঘুমোতে বলে ড্রয়িং রুমে গিয়ে বসলো ছেলেরা।‌ আলোচনা করতে চাইলেও বাঁধা দিলেন নাবিল চৌধুরী। সব কথা কাল হবে। মেনে নিলো সবাই। অনেকটা রাত হয়ে গেছে‌।

সকাল হতে না হতেই জেগে উঠেছে চৌধুরী বাড়ি। চিন্তায় ঘুমানো যায়? পিয়ানির উঠতে বেশ দেরী হবে। হৃদযা কে এখন আর কেউ কাজ করতে দেয় না। তবে নিজেই জোর দিয়ে করে। এখনি বসে বসে খাওয়ার মানেই হয় না‌। পিয়ানির কথা শুনে আদর ও বাড়িতে থেকে গেছে। নিজেদের মতো ব্রেকফাস্ট করে নিয়েছে সবাই। সাড়ে নয়টা বাজতে চললো। সবাই একত্র হলো রামিয়ার ঘরে। ততক্ষণে পিয়ানি উঠে বসে আছে। স্যালাইন শেষ হতেই আত‌ইয়াব এসে খুলে দিয়ে যায়। তাই বেশী সমস্যা হয়নি। আত‌ইয়াব এগিয়ে গিয়ে পিয়ানির মাথায় হাত রাখে। মুহূর্তেই ছলছল করে উঠে পিয়ানির চোখ। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠে,

তিনদিন ধরে কিছু খাইনি। আমার খুব খিদে পেয়েছে।
চমকে যায় সবাই। সুবাহ তাড়াতাড়ি খাবার নিয়ে এসে নিজের হাতেই খাইয়ে দেয়। শান্ত হয় পিয়ানি।
আব্বু আমাকে একটা বাজে ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করেছে ভাইয়া। আমি প্রথমে মেনে নিয়েছিলাম কিন্তু ছেলেটা আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। আব্বুকে সেসব জানালে আমাকে ঘরে বন্ধ করে রাখে‌। কাল বিয়ে, আজকে আম্মু পালাতে সাহায্য করেছে। প্রত্যেকটা স্টেশন লোক লাগিয়ে দিয়েছিলো, একজন অপরিচিত দাদু আমাকে বাঁচিয়ে নিয়েছে। আমি বিয়ে করবো না ভাইয়া, ছেলেটা বিশ্রীভাবে গালাগালি করে‌‌। আমি সহ্য করতে পারিনা।

কেঁদে দেয় পিয়ানি। আত‌ইয়াব কিছুটা চমকায়। তার জানা মতে পিয়ানির বাবা তো এমন‌ না। মেয়েকে খুব ভালোবাসে। এক হাতে জড়িয়ে নিয়ে আত‌ইয়াব জিজ্ঞেস করে,
তুই জানলি কিভাবে আমি এ‌ই বাড়িতে? আর মামা তো এমন না, তোর সাথে এমন‌ করবে কেন?

আব্বু কাকে যেন বলছিলো তোমরা সবাই চৌধুরী বাড়িতে। ফোনে কথা কাটাকাটিও হচ্ছিলো। বাবা বিয়ে দিতে চায়নি, কে জানি জোর করেছে। আমি তোমাকে অনেকবার ফোন করেছি ধরোনি।
আত‌ইয়াব পকেট থেকে ফোন বের‌ করে দেখলো সাইলেন্ট। ১০০+ ফোন। হতাশ‌ নিঃশ্বাস ফেললো। সবার মাথাতেই ঢুকলো বিষয়টা। হৃদযা ওদের পিয়ানির পাশে থাকতে বলে ছেলেরা সব বেরিয়ে গেল। আদর গম্ভীর স্বরে পান্চুকে ডেকে বলল,

পিয়ানির কথার সত্যতা যাচাই করো। কি কারণ, কে জোর করছে সব জেনে আমাকে জানাবে। সময় দু’দিন।
কথাগুলো বলেই গটগট পায়ে বেরিয়ে গেল সে। আত‌ইয়াব নিজের ঘরে চলে গেল রেডি হতে। কিছু তো একটা রহস্য আছেই!

অসরাহ্ন পেরিয়ে বিকেল ছুঁই ছুঁই। পরিষ্কার আকাশ। মাঝে মাঝে তুমুল বেগে বাতাস ব‌‌ইছে, আবার খানিকক্ষণ বাতাস শূণ্য। অনবরত কেঁদে চলছে হৃদযা। হাতে তার একটা খাম। হৃদানের নামে এসেছে। মডেলিং কম্পিটিশনের জন্য হৃদানের টিম সিলেক্ট হয়েছে তার চিঠি এসেছে। কত স্বপ্ন ছিলো তার ভাইটার এ‌ই দিনটার জন্য।

মডেলিং টা কেই সে নিজের জীবন মনে করতো, আজ যখন নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেলো তখন সে মানুষ টিই নেই। এসব মনে করেই কাঁদছে হৃদযা। সুবাহ হৃদযা কে কি শান্ত করবে নিজেই চোখের জল ফেলছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। নাবিল চৌধুরী নিজ রুমে বিশ্রাম নিচ্ছে। পিয়ানি চেষ্টা করেও থামাতে পারেনি দুজন কে। তখন অগত্যা তাকে আত‌ইয়াব কেই ফোন দিতে হয়েছে। সব শুনে আত‌ইয়াব জানিয়েছে সে আসছে। জীবনটায় তিক্ততার শেষ নেই।

আদরের কাছেও খবর টা পৌঁছেছে। তাকে জানিয়েছে হৃদানের টিমের একজন মেম্বার। অনুরোধ নিয়ে এসেছে আদর যদি ওদের হেল্প করতে পারে! আদর বীণাবাক্যে হ্যাঁ করে দিয়েছে। এ‌ই কম্পিটিশনের জন্য হৃদান কত খেটেছে সে নিজ চোখে দেখেছে। আর যাই হোক সে বেঁচে থাকতে হৃদানের স্বপ্ন ভেঙে যেতে দিবে না।

সবার সামনে প্রমাণ করে দিবে হৃদান বেস্ট মডেল! সময় এক সপ্তাহ। কিন্তু আদর মডেলিং এর‌ তেমন কিছুই জানে না। হৃদান যতটুকু গল্প করতো ততটুকুই জেনেছে শুধু। অনেক ভেবে ঠিক করলো আগে সবার কাছ থেকে শিখবে তারপর সবাইকে লিড করবে যেহেতু হৃদান কিছু কিছু বলেছে। সেহেতু হৃদানের থিম সেন্স তার পরিচিত। খুব একটা সমস্যা হবে না! আত্মবিশ্বাস ই প্রধান!

ভাবনার মাঝেই দরজায় নক পড়ে। অনুমতি নিয়ে ভেতরে ঢুকে পান্চু। আদরের দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠে,
পিয়ানির সব কথা সত্য বনু। ছেলেটা সম্পর্কে তেমন কোনো‌ তথ্য পাইনি। ধারণা করেছি হয়তো দেশের বাইরে থাকতো ছোট থেকেই।

আদর কিছুক্ষণ ভাবে। সমীকরণ মিলেও মিলছে না। কিছুটা আঁচ করতে পেরে বলে,
তুলে নিয়ে আসো মি. পারভেজ কে। সাথে ও‌ই ছেলেটাও। আমি ধারণা করছি আয়েশার সাথে এরাও জড়িত নয় তো?
কিছুক্ষণ আদরের দিকে তাকিয়ে থাকে পান্চু। মাথা নাড়িয়ে সায় জানিয়ে তাড়াতাড়ি করে বের‌ হয়ে যায়। মেয়েটার দিকে তাকালে তার বুকের ভেতর কি যে অসহনীয় ব্যাথা হয়। সহ্য করা যায় না!

মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ২২

পান্চুকে এভাবে বের হয়ে যেতে দেখে আদর মুচকি হাসে। টেবিলের উপরে রাখা ফটোফ্রেমের দিকে তাকিয়ে থাকে অনেকক্ষণ। বিড়বিড় করে অভিযোগের পসরা সাজিয়ে নিয়েছে। সুখ গুলো বহুদূরে!

মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ২৪