মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ৯

মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ৯
Tahrim Muntahana

গভীর রাত। চারদিক নিশ্চুপতাই থম থমে পরিবেশ। দূর থেকে ভেসে আসছে দু’একটা কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ। নিশাচর রা নিজ প্রকৃতি মতে জেগে আছে। কিছুক্ষণ পর পর বিচিত্র শব্দ ডেকে উঠছেও সমান তালে। এ‌ই রাতের নিস্তব্ধতায় ডাকগুলো কেমন ভয়ানক শোনাচ্ছে। শরীর যেন হিম হয়ে আসে। এমন পরিবেশে নিশাচরদের সাথ দিয়ে জেগে আছে রামিমা।

না, সে পড়ছে না। ভাবছে, এ‌ই যে গোটা কয়েকদিন আগে চেনা মানুষটার অচেনা রূপ দেখে বুকটা খা খা করে উঠেছিলো; সে‌ই মানুষটার জন্য‌ই আজ বুকে হাহাকার টের পাচ্ছে সে! কেন এ‌ই হাহাকার? সে তো ভুলে থাকতে চায় মানুষটাকে। তবে কেন জীবনে সুখ নামক পাখিটা ধরা দিচ্ছে‌না, কেন‌ দুঃখগুলো তাকে জেঁকে ধরেছে। মনে হচ্ছে দুঃখের সাথে তার অনেক দিনের সন্ধি! ভাবনার ফোড়ন টেনে রামিয়া উঠে দাড়ায়।‌ আস্তে আস্তে পা ফেলে এগিয়ে যায় আলমারির দিকে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করে একটা খাম বের করে। এলোমেলো পায়ে বেলকনির শেষ ভাগে দাড়ায়। খামটা বুকে আঁকড়ে ধরে ঝরঝর করে কেঁদে দেয়! আহা ভালোবাসা! শুধুই পোড়ায়! জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে একদম ভেতরটা খাক করে দেয়!
কিছুক্ষণ কেঁদে খামের ভেতর চিরকুট টা বের করে। বহুবার পড়েছে ক’দিনে। তবুও কেন বার বার পড়তে ইচ্ছে করে সে জানে না! গোটা গোটা ভাঙাচোরা অক্ষর গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠতেই আবার চোখ দুটো নোনা জলে ট‌ইটম্বুর হয়ে যায়। গাল বেয়ে পড়তে থাকে অবলিলায়!‌

প্রিয় আকাশমনি,
অনেকদিন পর এ‌ই নামে ডাকলাম। অবাক হয়েছো তাইনা। অনেকবার জিজ্ঞেস করেছো আকাশমনি কেন ডাকি তোমায়। ইচ্ছা বশত’ই এড়িয়ে যেতাম।‌তবে আজ বলবো। সামনে বলতে অস্বস্তি হতো; চাইলেও গলা দিয়ে স্বর বের হতো না। কোনো এক প্রকান্ড অনুভূতি বাঁধা দিতো আমাম। বড্ড কষ্ট হতো তখন। জানো তোমার চোখটা আমার কাছে আকাশের থেকেও বিশাল লাগে। যে চোখদুটো আমায় গভীরতায় ছুড়ে দিয়েছিলো। যে চোখের মনিতে আমি প্রথমবার তাকিয়ে ছিলাম। একটু নয় অনেকটুকু সময় তাকিয়ে ছিলাম। তাইতো তোমার নাম দিয়েছিলাম আকাশমনি!

খুব বেশী অপরাধী না? একটা বাচ্চা মেয়ের ইমোশন‌ নিয়ে খেলা করেছি। পাপী আমি! অপরাধী আমি!
তোমার বোনকে হুট করেই ভালোবেসে‌ ফেলেছিলাম। কয়েকদিন নয়। বছর দেড় আগে। শান্তশিষ্ট মিষ্টিভাষী একটা মেয়ে। জানতাম ও না তার পরিচয়। প্রত্যেকদিন দেখতাম ভার্সিটি যেত কারো সাথে আবার বাড়িও ফিরতো তার সাথে। মেয়েটার প্রতি অজান্তেই কৌতুহল বেড়ে যায়। দু’এক দিন কথা বলার চেষ্টা করেও‌ পারি নি।

প্রচন্ড ভীতু ছিলো না! কেটে গেল কয়েকটা মাস। হঠাৎ করেই পাল্টে গেল মেয়েটি। শান্তশিষ্ট মেয়েটা হয়ে গেল বদমেজাজি, রুক্ষ, নিষ্ঠুর প্রকৃতির। ধারে কাছেও ঘেঁষার সুযোগ হলো না। ততক্ষণে মেয়েটার প্রেমে এতটাই বিভোর ছিলাম যে বাবার কাছে আবদার করে বসলাম। বাবা এক কথায় রাজি হয়ে গেল। প্ল্যান করলো। কিন্তু কে জানতো বলো বাবা আমাকে গুটি বানিয়ে আদর কে হাত করতে চেয়েছিলো। আজ যদি নিউজটা না দেখতাম গোলক ধাঁধাতেই না পড়ে থাকতাম!

তোমার সাথে বন্ধুত্ব করে আমি আদরের কাছাকাছি থাকতে চেয়েছিলাম রামিয়া। কিন্তু আমার ই ভুল ছিলো, বুঝতে পারিনি এ‌ই বন্ধুত্ব টা তোমার মনে গভীর প্রভাব ফেলবে। এতটা ভালোবেসে ফেলবে আমাকে। বিশ্বাস করো বিয়ের ব্যাপারে আমি কিছু জানতাম না। অপরাধবোধে দম আটকে আসছিলো তাই আলাদা সময় কাটাতে চেয়েছিলাম। আমার মন খারাপের কারণ ভাইয়া আদর কে ধরে নিয়েছিলো।

তাইতো ঝুঁকি নিয়ে একে একে সবাইকে কিডন্যাপ করিয়েছে এমনকি আমাকেও।
যাইহোক অনেক কথা বলে ফেলেছি। আমার মনে হলো তোমাকে সবটা জানানো উচিত। কেন মনে হলো বলতে পারবো না! তোমার ভবিষ্যৎ খুব উজ্জ্বল রামিয়া। ভাইয়া-আপুর স্বপ্ন পূরণ করতে হবে তো। সুন্দর ছেলে দেখে বিয়ে করে সুখে সংসার পেতো। তুমি হয়তো অনেক পরে পেয়েছো চিঠিটা।

যখন পড়বে তখন আমি তোমার থেকে হাজার মাইল দূরে। ভিন্ন এক শহরে! আমাকে কোনোদিন ক্ষমা করো না রামিয়া। আমি ক্ষমার অযোগ্য! ভালো থেকো আকাশমনি!

কয়েকবার চিরকুট টা পড়লো রামিয়া। ঠোঁটের কোণে একটু হাসি। আকাশের দিক তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলে উঠলো,
চাইলেই কি ভালো থাকা যায়? হয়তো যায়! আমিও তো চাইছি! খুব করে চাইছি ভালো থাকতে; সকল দুঃখকে ফিঁকে করে আমিও হাসতে চাইছি কিন্তু পারছি‌ ক‌ই! পারছি না আমি ভালো থাকতে।

প্রতিনিয়ত দগ্ধ হচ্ছি রাফিন। আপনার অবহেলা, আপনার‌ বিরহে আমি প্রতিনিয়ত দগ্ধ হচ্ছি। ভুলটা সত্যিই আমার। আপনার বন্ধুত্বকে আমি সম্মান‌ দিতে পারিনি। আবেগটাকে ধরে রাখতে পারিনি। ভালোবেসে ফেলেছি। এ‌ই ভুলটা আমাকে সারাজীবন‌ বয়ে যেতে হবে। দায় যে আমার একার!‌ তবে আপনাকে একদিন আমার মুখোমুখি হতে হবে মি. রাফিন। সেদিন এ‌ই রামিয়া আহমেদকে কভার করতে পারবেন তো?
কথাগুলো বলেই দৃষ্টি ঘোরাতে থাকে। হয়তো মেঘলা আকাশে একটু খানি আলোর আশায় তারাদের খুঁজে বেড়াচ্ছে! জীবন বড়‌ই বিচিত্রময়!

বেলা বাড়ার সাথেসাথেই সবার গভীর ঘুম‌ও হালকা হয়ে আসে। অনিচ্ছা সত্তেও আরামের বিছানা কে ছাড়তে হয়। শুরু হয় ব্যস্ত জীবন। কিন্তু এই ব্যস্ত জীবনে একটুখানি শান্তিময় অবসর খুব করে প্রয়োজন। শরীর চাঙ্গা থাকে; কাজে মন বসে; উদ্দীপনা না থাকলে যে কাজে রস খুঁজে পাওয়া যায় না। সকাল‌ ছয়টা থেকে আদরের বকবক অধীর আগ্রহ নিয়ে শুনে যাচ্ছে হৃদান। কে জানে মেয়েটার হঠাৎ কি হলো; বাচ্চাদের মতো একেকটা বায়না করে হৃদানের জন্য মুশকিল হয়ে যায়।

তবুও সে যথাসম্ভব চেষ্টা করে প্রিয় মানুষটার সকল আবদার পূরণ করতে। মেয়েটার জীবনটা মে অন্যরকম ছিলো। না আবদার করতো‌; না জেদ ধরে বসে থাকতো। সে তো মেয়েটিকে সুখের সাগরে সাঁতার কাটাবে; শক্ত করে হাত আঁকড়ে ধরে ভেসে বেড়াবে স্বচ্ছ জল নামক সুখে! হৃদান এসব‌ই ভাবছিলো; অপরপাশ থেকে যে আদর হেলো হেলো করছে শুনতেই পায়নি। হুট করেই রাগ করে ফোন কেটে দেয় আদর।

হৃদানের মাথায় হাত; এখন পরিশ্রম করে রাগ ভাঙাও। হুট করেই আবার হেসে উঠে সে। ভালো লাগে; বড্ড বেশিই ভালো লাগে মেয়েটার হুটহাট কাজগুলো। ফ্রেস হয়ে একদম রেডী হয়ে নিচে আসে। হৃদযা ব্রেকফাস্ট রেডী করে বসে আছে। নাবিল চৌধুরী খবরের কাগজে চোখ বুলাচ্ছিলেন। ছেলে কে দেখে ডাইনিংয়ে বসে‌ন।

বাবা-ছেলে সেই আগের মতোই হয়ে গেছে; না আছে কোনো‌ মনোমালিন্য, না আছে কোনো রাগ। টুকটাক গল্প করছিলো দুজন; মৃহান এখনো আসেনি। মৃহান আসতেই খাওয়া শুরু করে। কিন্তু আর‌‌ সব দিনের মতো আজ মৃহান কথা বলছে না। হু হা করে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। নাবিল চৌধুরী চোখ রাঙিয়ে চাইতেই মৃহান চোখ বন্ধ করে বলে উঠে,

বিয়ে করবো বাবা!
কেউ ই চমকায় না। হৃদান আগেই বাবাকে বলে রেখেছিলো। মৃহানের বলার জন্য‌ই অপেক্ষা করছিলো সে। মৃহানের ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে নেওয়া দেখে তিনজন ই শব্দ করে হেসে দেয়। এত বড় দামড়া ছেলে বিয়ের কথা বলতে ভয় পায়। নাবিল চৌধুরী হেসেই বলে,

আমার এক বন্ধুর মেয়ে আছে। অত্যন্ত সুন্দর! কথা বলে রেখেছি তুমি আজকে দেখা করে ফাইনাল করবে!
মৃহান চমকে তাকায় বাবার দিকে। কি বলে; বন্ধুর মেয়ে মানে! সে সুবাহ কে ভালোবাসে; বিয়ে করলে তাকেই করবে। কিন্তু বাবাকে বলতেও ইতস্তত লাগছে। হৃদানের দিকে অসহায় চোখে তাকায় মৃহান। পাত্তা দেয় না হৃদান । একপলক তাকিয়ে নিজের মতো খেতে থাকে। মৃহান না পেরে শেষমেষ বলেই উঠে,

আমি একজনকে ভালোবাসি বাবা। বিয়ে করলে তাকেই করবো!
ওহ আচ্ছা তাহলে সামাদ কে না করে দিই যে সুবাহ কে আমার ছেলের পছন্দ হয় নি!
মাথা ঝাঁকিয়ে হা বলার পরেই মাথায় আসে কি নাম বললো বাবা! সুবাহ! অবাক হয়ে বাবার দিকে তাকাতেই নাবিল চৌধুরী পিঠ চাপড়ে বলে উঠে,

এত বড় হয়ে গেছো এখনো বিয়ের কথা বলতে লজ্জা পাও। আর তোমার ভাই কে দেখো; লাজলজ্জা ভুলে আমার কাছে হানিমুনের প্যাকেজ আবদার করেছে। আহাম্মক একটা!
হৃদযা মুখ টিপে হাসছে তিনজনের কান্ড দেখে। তার ছোট ভাইয়া যে লজ্জাহীন সে আগে থেকেই জানতো! হৃদান ভাবালেশ ভাবে বলে উঠে,

তো নিজের টাকা দিয়ে হানিমুনে যাওয়ার মধ্যে আনন্দ আছে‌? নিজের টাকা খরচ করার কোনো মানেই হয় না। আর হানিমুনে না গেলে‌ তোমাকে দাদু ডাক শুনাবো কি করে‌। তোমার‌ই লাভ ভেবে দেখো! বেশী করে টাকা দিয়ে দিবা; যাতে তোমার ব‌উমাকে সারপ্রাইজ দিয়ে বেশী বেশী আদর নিতে পারি। বংশবৃদ্ধি করতে হবে তো!
খকখক করে কেশে উঠেন নাবিল চৌধুরী। একটু লজ্জা দিতে গিয়ে নিজেই লজ্জিত হয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। কোনোদিক না তাকিয়েই অফিসের জন্য চলে যায়। হৃদযা মৃহান হো হো করে হেসে উঠে। তা দেখে হৃদান হৃদযাকে ঠেস দিয়ে বলে উঠে,

বিয়ে হতে আরো কয়েকটা দিন এত চিপকাচিপকি করার কি আছে। কম কথা বলবি ডক্টরের সাথে। আর হ্যাঁ ও‌ই বেটাকে একটু টাইট দিবি। বেশী কথা বলে!
হৃদযা চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই হৃদান ছুট লাগায়। আরেকটু সময় থাকলেই পিঠের উপর কয়েকটা পড়তো। হৃদান কে মারতে না পেরে হৃদযা চেঁচামেচি করেই যাচ্ছে,

খারুচের বাচ্চা বান্দর তুই কি করিস? পারিস না সবসময়‌ই লেগে থাকিস। সকালে ঘুম থেকে উঠেই তো ন্যাকামো শুরু করছিস! আর আমি করলেই দোষ।
মৃহান তো হাসতে হাসতে খাওয়ার কথায় ভুলে গেছে। রাগের বশে নিজের প্রাণপ্রিয় বাবাকেই খারুচ বলছে! একসময় হৃদযাও হেসে দেয়। পরিপূর্ণ লাগছে পরিবারটা! মৃহানের মাথায় আসে তার বিয়ের কথা‌। হৃদযা কে জিজ্ঞেস করতেই হৃদযা ভাব নিয়ে বলে উঠে,

আমি আর ছোট ভাইয়া বাবাকে বলার পর বাবা আঙ্কেলের সাথে কথা বলে। যদিও আঙ্কেল ইতস্তত করছিলো এত বড় দামড়া পোলার লগে বাচ্চা একটা মেয়েকে বিয়ে দিলে সংসার করতে পারবে কিনা। পরে তো সুবাহ’ই বললো তোকে ভালোবাসে তাই আর অমত করেননি। বাঁদরের গলায় মুক্তোর মালা কে ঝুলিয়ে দেবো! দুটো বিয়ে একসাথেই হবে।
একদিকে খুশিতে বাকুমবাকুম অবস্থা অন্যদিকে হৃদযার‌ কথায় রাগ; দুই অনুভূতিতে থম মেরে‌ বসে র‌ইলো মৃহান।

এ‌ই সুযোগে হৃদযা মৃহানের চুল ইচ্ছামতো টেনে নিজের ঘরের দরজা আটকে বসে র‌ইলো। সে জানে একটু পর মৃহান জোরে জোরে দরজা ধাক্কিয়ে রেগেমেগে চলে যাবে। এভাবেই তাদের দিনগুলো চলে যাচ্ছে। সুখ আর সুখ!
চোখমুখে সামান্য রাগ নিয়ে ডাইনিংয়ে আসলো আদর। হৃদানের উপর‌ই রেগে আছে সে।

আত‌ইয়াব আদরের জন্য‌ই অপেক্ষা করছিলো। মিসেস রাজীব আহমেদ একদম ঘরকুনো হয়ে গেছে। একদম ই বের হন না । এ নিয়ে ওরা‌ কিছু বললেও, লাভ হয়নি। তাই সময় মতো খাবার খাইয়েই আর কখনো বিরক্ত করে না তাকে। আদর বসতেই আত‌ইয়াব দুজনকে খাইয়ে দেয়। সকালের খাবার টা ইচ্ছে করেই দুজন কে খাইয়ে দেয় সে। তৃপ্তি পায় এতে। খাওয়ার মধ্যেই আত‌ইয়াব বলে,

আজ তো শপিংয়ে যাবে; সাবধানে যাবে আর গার্ড ছাড়া যাবে না। আমি সময় পেলে জয়েন হবো!
আদর চোখ ছোট ছোট করে তাকায়। সময় পেলে জয়েন হবে মানে! আজাইরা সব কথা। আদরের এক্সপ্রেশন দেখেই আত‌ইয়াব ভয় পেয়ে যায়। মিনমিনিয়ে বলে উঠে,

আসলে আজকে একটা অটি আছে; গোছানোর ব্যাপার ও আছে। তুমি বুঝো তো কেমন সিচুয়েশন টা!
আদর আর কথা বলে না। ডক্টরদের কাছে সবার প্রথম রোগী! রামিয়ার মুখে হাসি ফুটে উঠে। উত্তেজিত হয়ে বলে উঠে,
আমি যখন ডক্টর হবো তখন আমিও এভাবে অপারেশন করবো? আমি কিন্তু হার্টের ডক্টর হবো! ভালোবাসা দিয়ে সবার হার্টের রোগ দূর করে দিবো!

রামিয়ার খুশিতে দুজনের মুখেও হাসি ফুটে। বিষয়টা নিয়ে আরো কিছুক্ষণ কথা বলে তিনজন ই বের হয়ে যায় নিজস্ব গন্তব্যে!
সূর্যের তীর্যক আলোয় চারপাশ আলোকিত। খা খা করছে শহরটা। ঘেমে একাকার হয়েও অনেকেই পিচঢালা ছোট রাস্তা দিয়ে হেটে চলছে। কেও কেও ছাতা চাপিয়ে সূর্যের তাপ থেকে কিছুটা রক্ষা পাচ্ছে আবার কেউ কেউ গাছের ছায়ায় একটু আরাম করে বসছে।

পিচঢালা রাস্তাটাই হেটে চলছে রাজীব আহমেদ। চেনা যাচ্ছে না একদম। থানা থেকে পালিয়েছে সে। এখন হাঁটছে একটু নিরাপদ ঠিকানার উদ্দেশ্য। তার যে অনেক কাজ বাকী আছে। সব কিছু ঠিক করতে হবে যে। তার জন্য তাকে বাঁচতে হবে। সে আশাতেই ছুটছে সে।

মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ৮

কিন্তু হঠাৎ ই সামনে গাড়ি দেখে রাজীব আহমেদ ভয় পেয়ে যায়। তবে কি আজ ই তার শেষ‌ দিন। কিচ্ছু ঠিক করতে পারবে না! গাড়ি থেকে কয়েকজন লোক বের হয়েই রাজীব আহমেদ কে গাড়িতে তুলে নেয়। হাঁসফাঁস করতে করতে একসময় অজ্ঞান হয়ে যায়।গাড়িতে বসা লোকগুলো পৈচাশিক হাসিতে মত্ত হয়ে পড়ে!
কি হবে সামনে? নতুন কি অপেক্ষা করছে?

মন পাথরে হঠাৎ ঝড় সিজন ২ পর্ব ১০