মন পায়রা পর্ব ৩

মন পায়রা পর্ব ৩
নুসাইবা ইসলাম

(কার্টেছি ব্যাতিত কপি করা নিষেধ, আমি দেখলাম অনেক এ আমার গল্প আমার নাম ছাড়া কপি করে পোষ্ট দিচ্ছে এটা কি ঠিক?)
চারিদিকে পাখির শব্দ গধুলি নেমেচে চারিপাশে, নিস্তব্দ বসে আছে এক মানবি। তার জিবন এতো অগোছালো কেনো? সে তো কখোনো এমন জিবন চায় নাই।তখন অই সময় টা ছিলো খুব ই চঞ্চল।
অতীত,,,,,

আজ থেকে ২ বছর আগে তিথি খুব চঞ্চল প্রকৃতির ছিলো,তখন নবম শ্রেনীর ছাত্রী ছিলো সে। মা-বাবার ছোট মেয়ে তিথি বড় ভাই তামিম,মা গৃহিনী আর বাবা সে তো আর্মি।
একদিন তিথি স্কুল যাওয়ার জন্য তারাহুরো করে বেরিয়েছিলো,সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো আর কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলো নিচে। নিচে পড়ে তিথি বাচ্চারদের মতো কান্মা শুরু করলো। (এই গল্পের লেখিকা আমি নুসাইবা ইসলাম।)
তিথিঃ এ্যা এ্যা আম্মু গো আমি শেষ আল্লাহ কি ব্যাথা করছে গো আমার কোমর আমি এবার আএ হাটতে পারবো না।
ফায়াজ ফ্রেন্ডস এর সাথে দেখা করার জন্য যাচ্ছিলো আর সামনাসামনি দুজন এর ফ্লাট হওয়ায় এই ঘটনা ঘটে,আর তিথির এমন কান্নায় সে ভয় পায় সত্যি কি মেয়েটা ব্যাথা পেয়েছে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

ফায়াজঃ এই যে এই পিচ্চি তুমি কি বেশি ব্যাথা পেয়েছো? ওঠো তো এই নেও আমার হাত ধরে উঠে পরো।
তিথিঃ এই আপনি দেখে চলতে পারেন না,কানা নাকি?এতো বড় দামড়া ছেলে সে আবার নাকি ধাক্কা হাটতে গিয়া।
ফায়াজঃ What the hell are you talking?what is damra you stupid girl.(হোয়্যাট দা হেল আর ইউ টকিং?হোয়্যাট ইজ দামড়া?)

তিথিঃ এই যে ইংরেহি কম ছাইরেন হ্যাঁ? দামড়া মানে অনেক সুন্দর মানুষ আর বড় মনের মানুষ।
ফায়াজ অবাক এর উপর অবাক হচ্ছে এটা ভেবে যে একটা বাচ্চা মেয়ে তার সাথে এইভাবে কথা বলছে। ফায়াজ এর এবার সত্যি লেট হচ্ছে তাই নিরবে চলে গেলো,তিথি তো রাগে ব্যাথায় চিৎকার শুরু করলো মাটিতে বসে।তিথির চিৎকার এ ফায়াজের মা আর বোন আর তিথির মা আর তামিম চলে আসে।
তামিমঃ কি হয়েছে বনু? মাটিতে বসে কান্না করছিস কেনো?

তিথিঃ এক পাগলা কুত্তা আমায় ধাক্কা মাইরা দৌড় দিছে ভাইয়ায়ায়ায়া,এ্যায়ায়ায়ায়ায়া।
তিথির কথায় সবার মুখ হা হয়ে এই বিল্ডিং এর মধ্যে কুকুর আসবে কোথা থেকে,হয়তো কারো পালিত কুকুর।
ফায়াজের মাঃ থাক মামনি এভাবে কান্না করে না তুমি উঠে পড়ো আমরা অই কুকুর কে বিল্ডিং ছাড়া করবো।
তিথিঃ আন্টি আমি তো উঠতে পারছিনা, আমার কোমরে অনেক ব্যাথা পাইছি।

তামিম এবার ছোট্ট বোন কে কোলে তুলে নিলো আর রুমের দিকে যেতে লাগলো,তামিম এর পিছু পিছু সবাই গেলো।
তামিমঃ আম্মু স্প্রে টা বনুর ব্যাথার যায়গায় দিয়ে দাও আমি গিতে মেডিছিন নিয়ে আসি না হলে জর চলে আসবে।
তামিম চলে যেতেই তিথির মা ব্যাথার জায়গায় স্প্রে টা দিয়ে মালিশ করতে থাকে,আসলেই তিথি অনেক ব্যাথা পেয়েছিলো।ব্যাথায় কান্না করতে করতে তিথি একসময় ঘুমিয়ে যায়।

ফায়াজের মাঃ আহারে মেয়েটা কি ব্যাথাই না পেয়েছে ভাবি, আজকে আমি পায়েস বানিয়েছি তিথি মা উঠলে আমি ফিহা কে দিয়ে পাঠাই দিবো।বলে এবার ফায়াজের মা আর ফিহা চলে যায়।
তিথি সেইযে ঘুমাইছে রাত ৮ টার বেশি বাজে এখোনো উঠে নাই, কিভাবে উঠবে মেয়েটার ব্যাথা এখোনো কমে নাই আর জর ও আসছে।তামিম আর ও মা হাজারো চেষ্টা করেও মেডিছিন খাওয়াইতে পারলো না। রাতে ফায়াজ বাসায় আসার পর ওর আম্মু তো,

ফায়াজের আম্মুঃ জানিস ফায়াজ আজ একটা পাগল কুকুর না কি তিথিকে ধাক্কা মেরে দৌড় দিছে,মেয়েটা ব্যাথায় জর চলে আসছে।
ফায়াজঃ তিথি কে আর এই বিল্ডিং এ কুকুর আসবে আর ইউ মেড?
ফায়াজের মাঃ সত্যি বলছি আমি, চল আমার সাথে দেখবি কে তিথি আর এই পায়েস টা ও মেয়েটা কে দিয়ে আসি
ফায়াজ আর ফায়াজের মা তিথিদের ফ্লাটে চলে আসে,তামিম ফায়াজ কে দেখা মাত্র ই জরিয়ে ধরে।
তামিমঃ বাহ তুই হোস্টেল থেকে আসছোস আর আমি জানি না, তুই কিভাবে না বলে আসছিস।
ফায়াজঃ আব্বে ইয়ার সকালেই আসছি,দেন শাকিল এক্সিডেন্টে ককরেছিলো ওকে দেখতে দৌড় দিছি। এ বাসায় আবার আম্মু কারে দেখতে আসছে?

তামিমঃ তিথি কে ভুলে গেলি তুই? পারলি ভুলতে,জানোস না এখানে আমার বোন ছাড়া আর কে থাকবে হ্লা।
ফায়াজ এর এবার মনে পড়ে যায় তিথির কথা,খুব ই দুষ্ট একটি মেয়ে,সবাইকে খুব সহযে নাকানিচুবানি খাওয়ায়।
এবার সবাই তিথির রুম এ গেলো,তিথি তো সেই জর নিয়াও গেইম খেলতে ব্যাস্ত।৷ তিথিকে দেখে ফায়াজের কাস উঠে যায় কারণ সকালে তো তিথির সাথে ফায়াজের ধাক্কা লাগে। তিথি ফায়াজকে দেখে কিছু বলতে যাবে, তখনি সবাইকে দেখে চুপ করে যায়। ফায়াজ ভাবছে কি ফাজিল মেয়েরে বাবা তারে পাগলা কুত্তা বানাই ফেলছে।
তিথিঃ ফিহা আপু কই আন্টি আর এইটা কে?

তামিমঃ ফিহা তো আসে নাই, আর তুই ফায়াজ ভাইয়াকে ভুলে গেলি যাকে ঘোড়া বানাই পিঠে চড়তি।
ফায়াজ এবার তামিম কে চুপ করাই দিলো।
ফায়াজঃ এই তোর না জর হ্যা মোবাইল কেনো চাপছিস মেডিছিন খেয়ে ঘুমা।
তিথির মাঃ কি আর বলবো ফায়াজ বাবা,এই মেয়েকে নিয়ে পারিনা এই অব্দি না কিছু খাওয়াইতে পারলাম আর না মেডিছিন দিতে পারলাম।

ফায়াজঃ ওর থেকে মোবাইল নিয়ে নিন তাহলেই হবে,এই তামিম চল হেটে আসি।
তামিমঃ তিথুই আমার মোবাইল দে পড়ে আসবো তখন খেলিস,
তিথিঃ ভাইয়ু আমার সাথে তুমি এমন করতে পারবা? আমি একটু খেলি না?
তামিমঃ না রে বোন একটা ফ্রেন্ড এক্সিডেন্ট করছে তাকে দেখতে যাবো আমরা।
এবার তিথি মোবাইল দিয়ে দিলো,মোবাইল পেয়ে তামিম আর ফায়াজ ওখান থেকে চলে আসলো ছাদে।এইটুকু না বললে কখোনোই তিথি মোবাইল দিতো না তামিম কে।

ফায়াজঃ তোর বোন তো এটা আসলেই না কুড়ির আনছোস?
তামিমঃ কি আর বলবো সবাই এই এক কথাই বলে, সারাদিন মেয়েটা ঘুরঘুর করবে আর সবার সাথে উইদাউট রিজন ঝগড়া করবে।বাচ্চা তো তাই মেবি এমন করে বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে।
ফায়াজঃ আরে আমি তারাহুরো করে বেরোতে গিয়ে ধাক্কা লাগে তিথির সাথে আর ও পড়ে যায়। আর ওর আজাইরা কথায় আমার ও রাগ লাগে তাই না উঠাই চলে যাই।

তামিমঃ তাহলে তিথির অই পাগলা কুত্তা তুই?
তামিম হেসে ফেলে বলে,ফায়াজ এবার রেগে বলে,
ফায়াজঃ একদম হাসবি না তুই,দেখিস এমন ধমক দিবো একদিন আর এসব বলবে না।তা তোর লাভ স্টরি কতদূর?
তামিমঃ আর লাভ স্টরি দোস্ত এখোন অবদি বলতে পারলাম বা আমার মনের কথা তাকে।
ফায়াজঃ বলে ফেল হেল্প লাগলে আমায় বলিস।

মন পায়রা পর্ব ২

তামিমঃ ভয় লাগে যদি উলটা টা হয় আমাকে ভুল বুঝে আবার কথাই না বব্ধ করে দেয়। (আর তুমি যদি জানো ক্র সে তাহলে আগে আমাকেই পিটিয়ে হসপিটাল পাঠাবে,মনেমনে)
টুকটাক কথা সেরে যে যার ফ্লাট এ চলে গেলো,তিথি খাবার আর মেডিছিন খেয়ে সেই কখন ঘুমিয়ে গেছে।বোনকে একনজর দেখে নিজের রুম এ গিয়ে শুয়ে পড়লো।আর ফায়াজ খাবার খেয়ে এবার ল্যাপটপ নিয়া বসছে,কি আর কাজ করবে সে ভাবছে এইটুকু মেয়ে তাকে কিনা ছোটবেলা থেকে জালিয়ে আসছে।হায় কি যে হবে।

মন পায়রা পর্ব ৪