সংকটময় প্রেম পর্ব ৮

সংকটময় প্রেম পর্ব ৮
সুরাইয়া সাত্তার ঊর্মি

একটি মানুষ এত নিষ্ঠুর কিভাবে হতে পারে? আমার জানা নেই। আমি সুন্দর মতো আজ নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে বসে আছি সোফায় মুর্তির মতোন। সামনে বসে আছে অপরিচিত কিছু মুখ। মা-বাবা হাসছেন। শেষ পর্যন্ত বিয়ের জন্য রাজি হয়েছি কিনা! আমার গভীর নয়নের বাক্য বোঝার সাধ্যি কারো নেই। কারো না। একদমই না। সেদিন রাগ করেও নিজের জান দিতে চেয়েও পারি নি। আত্মহত্যা মহাপাপ।

এক জীবনের অত্যাচার থেকে মুক্ত পেতে, অবশ্যই সারা জীবনের জাহান্নাম নিজের ভাগ্য করার মতো বোকা আমি নই। অতন্ত ইউসুফ ভাইয়ের আমাকে ভেঙে গুরিয়া দিবার মতো মনোভাব আমি কখনো পূরন হতে দিবো না। আমি কৃত্রিম হাসি ফুটিয়ে সামনে তাকালাম। রসু বক্স নামের এই ছেলেটি ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। পিটানো শরীর, লম্বাটে মুখ, গোল গোল চোখ জোড়া দিয়ে একপ্রকার গিলে খাচ্ছে, আমার শরীরে অস্বস্তিকর অনুভব হচ্ছে এই বেটার চাহনিতে। তখনি রসু বক্সের মা কথা পাড়লেন, “মেয়ে আমাদের অনেক পছন্দ হয়েছে। তবে এবার যারা বিয়ে করবে তারাই কথা বলুক নিজেদের মধ্যে। ”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আপত্তি না করে মা বললেন, ” অবশ্যই। আমাদেরও ছেলে পছন্দ হয়েছে। কি বলো বাবা,?”
নানাজানকে গুরুগম্ভীর দেখালো, মাথা নেরে সম্মতি জানালো। কিন্তু তার মুখে খুশির রেশ মাত্র দেখা গেলো না। কেন?নানাজান কি খুশি নন এই বিয়েতে? নানাজান আনসার মামাকে ইশরা করলেন তাকে নিয়ে যেতে। আনসার মামা তাই করলেন, অক্ষরে অক্ষরে নানাজানের কথা পালন করাই তার কাজ। বড় মামি উঠে এলেন। আমার হাত ধরে টেনে হাসি মুখে বললেন, ” কুহু রসুকে তোমার রুম দেখিয়ে আনো?”

আমি দুনিয়ার সব বিষাদ ঢুক করে গিলে মনমরা হয়ে গেলাম। সামনে হেটে হেটে উপরে যাচ্ছি রোবটের মতোন। পিছনের লোকটির প্রতি কোনো রকম মনোযোগ নেই আমার। পিছনে রসু নামের ছেলেটি এখনো হয়তো তাকিয়ে দেখছে আমার প্রতিটি মুহূর্ত খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। আমার ঘরে ঢুকবো তার আগেই চোখে পড়লো ইউসুফ ভাই দাঁড়িয়ে আছেন। তার পড়নে প্রতিদিনকার মতো সাদা পাঞ্জাবি পায়জামা। সফেদ ভাবলেশহীন মুখ। উদাসীন দৃষ্টি। আমি তাকে ক্রস করে যেতে যেতে মুখ বাকিয়ে বললাম,

” এবার নিশ্চয়ই খুশি! আপনাদের সবার মাথা থেকে আমি নামক বোঝটা নেমে যাচ্ছে বলে?”
ইউসুফ ভাই প্রত্যুত্তর ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি ফুটিয়ে আমার একগালে তার সুঠামো হাত রেখে বললেন,
” সুন্দর লাগছে তোকে। সুখি হো।”

বলেই গটগট করে এগিয়ে চলে গেলেন। আমি থম মেরে গেলাম তার এহেন কান্ডে। বিস্ময় বুঁদ কাল পর্যন্ত যে ব্যক্তি বিদায় হো, বিদায় হো আন্দোলন করছে, আর আজ কিনা সে ” সুখি হো ” বলে চলে গেলো? আসলে লোকটার হয়েছে টা কি? হাসলোও দেখলাম এক চিলতে। আমি ভাবনায় পরে গেলাম। ইউসুফ নামক রহস্যময় ব্যক্তিটিকে বুঝতে পাড়া আমার সাদ্যির বাহিরে। আমি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম। তখনি কাশির শব্দ ভেসে এলো। রসু বক্স কখন থেকেই পিছনে দাঁড়িয়ে আছে,ইউসুফ ভাই আর আমার কথোপকথন নিশ্চয়ই শুনেছে? অথচ তাকে বেমালুম ভুলে বসে আছি। আমার সম্মতি ফিরলো তার কন্ঠে। আমি ভেবেছিলাম কিছুক্ষণ আগে ইউসুফ ভাইয়ের সাথে হুটহাট হয়ে যাওয়া ঘটনা নিয়ে কিছু বলবে, তবে আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন,

” এইটা বুঝি আপনার রুম?”
আমি ইউসুফ ভাইয়ের যাবার পানে তাকিয়ে ছিলাম। তার দেহের পুরুষালি সুবাস এখনো যেন রয়ে গেছে আমার চতুর্দিকে। কেমন যেন নেশা লাগানো সুগন্ধি। আমি নিজেকে সামলে রুমে প্রবেশ করলাম। রসু নিজেও ঢুকলেন। চারপাশ ঘুরঘুর করে দেখছেন। অথচ এসবে একটুও মাথা ব্যথা আমার নেই। আমি বিভোর হয়ে আছি ইউসুফ ভাইয়ের হঠাৎ করেই বদলে যাওয়া রূপে। অগ্নিকাণ্ড থেকেই শীতল বরফ হয়ে গেলেন কি করে মানুষটা? আমার মনের কোনে আবার সন্দেহের বীজটা তীর তীর করে বাড়তে লাগলো। রসু বক্স আমাকে ভাবনায় বুঁদ দেখেই মুখের সামনে চুটকি বাজালেন। ভাবনা ভঙ্গ হতেই রসুকে নিজের এত কাছে দেখেই হকচকিয়ে উঠে দু’কদম পিছিয়ে যাই। লোকটি আমার কান্ডে হেসে ফেললো,

” আপনি ক্ষনে ক্ষনে, কোথায় হারিয়ে যান?”
” কোথাও না।” কিছুটা অস্বস্তি নিয়ে বললাম। লোকটি এবার সটান হয়ে খাটে বসে পড়লেন। অদ্ভুত ভাবে বললেন,
” আপনি নাকি এর আগে ১৩ টা বিয়ে থেকে পালিয়েছেন। আমি তাহলে কত ১৪ নাম্বার?”
আমি উত্তর দিলাম না। তার প্রশ্ন কিঞ্চিৎ বিরক্তি প্রকাশ পেলো। রসু আবার বলল,
” ডু ই্যয়ু লাইক সামওয়ান?”
আমি চোখ বড় বড় করে চাইলাম, চকিতে উত্তর দিলাম,
” নাহ্ তো।”

লোকটি আবার হেসে ফেললো। আমি বুঝতে পারলাম না। রসু বাহিরে বসে থাকাকালীন সময়ে সকলের সামনে যা ভাব করলো, যেন ভাজা মাছটা উল্টে খেতে পারেনা। এখানে আবার গটগট করে বকরবকর করে যাচ্ছে।
“তাহলে পালান কেনো? ডোন্ট মাইন্ড যাষ্ট কিইউরিসিটি থেকে জানতে চাইছি আর কি!”
আমি কোমরে হাত গুঁজে বললাম, ” দেখুন আপনাকে কোনো উত্তর দিতে আমি বাধ্য নই। আর হ্যাঁ আমি স্পষ্ট কথা আপনাকেও বলছি, পালিয়ে তো আমি এবারো যাবো। তাই বিয়ের জন্য না করে দিন, নয়তো পড়ে বলবেন না, আমি আগে আপনাকে সতর্ক করিনি।”

রসু বক্স মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো। বিছানা থেকে উঠে এসে দাঁড়ালো আমার মুখোমুখি। খানিকটা ঝুঁকে বলল,
“আই লাইক ইউ মিস কুহু। বি প্রিপারেইড, সি ইউ এড দ্যা ওয়েডিং।”
বলেই ধীরে ধীরে চলে গেলেন। এদিকে আমি বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে তার চলে যাওয়া দেখছি। এতটা শিউর কিভাবে হলেন এই ব্যক্তি? যে আমি তাকে বিয়ে করবো? কি হতে চলছে আমার জীবনে? নতুন কোন মোর আসছে আমার ভালোবাসার গল্পে?

বাড়িতে চলছে জোরেসোরে বিয়ের আয়োজন। প্রথম আবির, তারপর হলুদ, তারপর আবার মেহেদী, শেষমেষ বিয়ে। বাড়ির প্রথম নাতনির বিয়ে উপলক্ষে নানাজান সব কিছুর আয়োজন নিজ হাতে করছেন। কোনো কমতি রাখতে চান না। তাতে বিব্রত হয়ে বাবা মাকে বলে উঠলেন থমথমে কন্ঠে,
” মেয়ের বিয়ের শখ নাতনি বিয়েতেই পূরণ করে ফেলছে তোমার বাপ। দেখো তোমার মেয়েটা না আবার নাক কাটায়?”
মাকে চিন্তিত দেখালো। মা আমার দিকে তাকিয়ে কঠোর শব্দ ছাড়লো, ” এবার আমার বাবার অত্যন্ত মানসম্মান নষ্ট করিস না। আমাদের টা নাই বললাম!”

আমি মাথা করে ফেললাম। হল ঘরটাতে বসে আছি। পুরো ঘর জুরে বিখ্যাত ডিজাইনারের লেহেঙ্গা শাড়ির আর গহনা ছড়িয়ে আছে। নাতনির বিয়ে উপলক্ষে ঘরেই বসেছে বিয়ের কিনাকাটার বাজার।সকলেই উপস্থিত সেখানে। ছোট মামা-মামিও চলে এসেছে তার দু’টো জমজ মেয়েকে নিয়ে। হয়তো সবাই এই ভয়ে আছে, বাহিরে৷ শপিং করতে গেলেই পালাবো আমি। আমার হাসিও পেলো সঙ্গে এক রাশ কষ্ট। ঠিক তখনি ইউসুফ ভাইয়ের আম্মু সায়রা মামি আমার গায়ে অলিভ রঙ্গের শাড়ি ধরলেন,

” দেখো তো কত সুন্দর মানাচ্ছে?”
ছোট মামি বলে উঠলেন, ” কুহুর ফর্সা শরীরে সত্যি সুন্দর দেখাচ্ছে। তুই মেহেদিতে এইটাই পড়িস।”
আমি মুচকি হাসলাম শুধু । পরিবারে চলছে সোরগোল।একে একে আমার সব ড্রেস সিলেক্ট করার পর এবার বিয়ের জন্য শাড়ি, লেহেঙ্গা কি পড়বো তা ঠিক করা হচ্ছে। সেই মুহূর্তে আমার হবু শশুর শাশুড়ি উপস্থিত হলেন। তাদের হাতেও একগাদা ব্যগপত্র। এসেই ধরিয়ে দিলেন তিনি আমার হাতে এবং ফরমানজারি করে দিলেন,
” যাও তো মা এগুলো একটি একটি করে পড়ে এসো। ”

আমি পড়লাম মাইনকার চিপায়। এই মুহুর্তে এইসব আমার মোটেও ভালো লাগছে না পিছনে দাঁড়ানো রসু মিটিমিটি হাসছে যার ফলে আমার গা জ্বলে যাচ্ছে। আমাকে সবাই তারা দিতে লাগলেন, এক প্রকার জোর করেই পাঠিয়ে দিলেন। আমি একে একে সব কিছু পড়ে ট্রাই করলাম। বিয়ের লেহেঙ্গা দেখে রাগে গা রি রি করে উঠলো। টকটকে কমলা রঙের একটি লেহেঙ্গা। যদিও সুন্দর হবে আমার মতে বিয়ের দিন লাল লেহেঙ্গা বা শাড়িতে বউকে খুব মানায়।

আমি আবারো ড্রেসটা পড়ে নিচে নামতে লাগলাম। দুয়ারে ইউসুফ ভাই তার পাশের লোকের সাথে কথা বলতে বলতে ঢুকছিলেন। আমাকে দেখেই থমকে গেলেন। কোমল নরম চাহনিতে চেয়ে দেখতে থাকলে অধির আগ্রহে। আমি নিজেও হলের এক গাদা মানুষকে উপেক্ষা করে চেয়ে আছি তার পানে। সুন্দর সুঠাম দেহের গৌড়বর্নের মানুষটির চাহনিতে ঘায়েল হচ্ছে হৃদয়। অদ্ভুত ভাবেই তার তাকিয়ে থাকা আমার ভারো লাগছে। মন বলছে,

” এই এক জীবনে আপনি আমাকে এভাবেই দেখতে থাকুন না চৌধুরী সাহেব।”
কিন্তু মুখে আমার রা নেই। উল্টো লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো গাল দু’টো। আমাদের দু’জনের দৃষ্টি মিলন ভাঙ্গলো রসুর কন্ঠে,
” পার্ফেক্ট। তবে ছোট একটি টিপ কঁপালে দিলে তোমাকে আরো সুন্দর লাগবে।”

বলতে দেড়ি, রসুর মা হাতে হাতে ধরিয়ে দিলো রসুর হাতে টিপের মাথা। সাদা পাথরের টিপ। আমি টিপ পড়ি না, আমাদের ধর্মে টিপ পড়া হারাম। আর কিছু না হোক কিছু হাদিস আমিও মানি। তার মাঝে এটি একটি। কিন্তু এই মুহূর্তে আমার মানা না মানা কতটা যথাপুজোক্ত জানা নেই। রসু এগিয়ে এলো, টিপ পড়াতে নিবে তার আগেই মা বললেন,
” রসু কিছু মনে করো না, আমাদের বংশের মেয়েরা কখনো টিপ পড়ে না।”

রসু বিরক্ত হলো যেনো, বলল, ” আন্টি এইটা আধুনিক যুগ। কি আদিকালের কথা বার্তা নিয়ে বসে আছেন?”
মা দমে গেলেন। কিছু বললেন না আর। রসু আবার টিপ পড়াতে গেলে একটি আমি পিছিয়ে পড়ি খনিক। রসু তখনি আমাকে চোখ রাঙ্গিয়ে সবার সামনে বলে উঠে, ” তুমি আবার নেকামো শুরু করো না। ”
আমি চোখ বড় বড় করে তাকালাম। সকলের সামনে এভাবে আমাকে বলতেই ক্ষেপে গেলাম। মুখ খুলবো তার আগেই টিপ আমার কঁপালে স্পর্শ করতেই ইউসুফ ভাইয়ের সুঠাম শক্ত হাত টেন ধরলো রসুর হাত। এতটাই শক্ত করে ধরে ছিলো যে রসুর মুখ দিয়ে মৃদু চিৎকার বের হয়ে যায়। সে চেঁচিয়ে বলে,

” আর ইউ মেড?”
ইউসুফ ভাই উত্তর দেয় না। উল্টো আমার কঁপাল থেকে টিপ উঠিয়ে বলে উঠলেন, ” টিপ দিয়া হারাম মি: রসু।আর আমাদের বাড়ির নারীরা সবাই এইটা মানে, তার উপর কারো ইচ্ছের বিরুদ্ধে, আপনি আপনার মনমর্জি চালাতে পারেন না। আর হ্যাঁ বউ লালটুকটুকে সাজেই মানায়, টিপে নয়।”

বলেই গটগট করে চলে গেলেন ইউসুফ ভাই। অপমানে বুঁদ হয়ে গেলো রসুর মুখ। আমরা মজাই লাগছে। লোকটি কিভাবে নিজের সব কথা চাপিয়ে দিচ্ছিলো আমার উপর। আমি মোটেও এই লোকটিকে বিয়ে করব না। একদম না। রসু আর তার মা চুপসে যাওয়া মুখ নিয়ে বিদায় হলেন। ইউসুফ ভাইয়ে কথা গুলো আমার মন স্পর্শ করে গেছে। তাই ভাবলাম ব্যক্তিগত ভাবেই না হয় তাকে ছোট খাট ধন্যবাদ জানাই?

তাই হেলতেদুলতে এসে দাঁড়াই তার ঘরের দুয়ারে, কিন্তু ইউসুফ ভাই তখন প্রচন্ড কাশি দিচ্ছিলেন। এক প্রকার দৌড়ে চলে গেলেন ওয়াশরুম। মিনিট পাঁচেক পর বের হলেন মুখ মুছতে মুছতে। তখনো তিনি আমাকে খেয়াল করে নি। তবে আমি যা না দেখা দেখে ফেললাম। ইউসুফ ভাইয়ের সফেদ পাঞ্জাবিতে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ। দেখেই আত্মকে বলে ফেললাম,

” ইয়া আল্লাহ, ইউসুফ ভাই আপনার পাঞ্জাবিতে রক্ত কিসের?”
ইউসুফ হকচকিয়ে গেলেন। দাম্ভিকতাপূর্ণ মুখে গুরু গম্ভীর হয়ে গেলো হুট করেই, শক্ত গলায় বলে উঠলেন শানিত কন্ঠে,
” তুই এখানে কি করছিস? যেতে যেতেও বুঝি আমাকে জ্বালিয়ে মারতে চাইছিস? যা এখান থেকে। গেট আউট। ”

সংকটময় প্রেম পর্ব ৭

শেষ কথাটি এতটাই জোড়ে ছিলো যে অন্তর আত্মা কেঁপে উঠলো। আমার চোখের কোনের জল ছলাৎ করে বেড়িয়ে পড়লো। আমি এক দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলাম। কিন্তু এই মুহুর্তে আমার মস্তিষ্কে তার করা রুষ্ট ব্যবহারে নয় বরং তার পাঞ্জাবিতে লাগা রক্তের দিকে। কেনো? কেনো সেই রক্ত? ইউসুফ ভাইয়ের কি তাহলে কিছু হয়েছে??

সংকটময় প্রেম পর্ব ৯