সূর্যশিশির পর্ব ২৭

সূর্যশিশির পর্ব ২৭
ইলমা বেহরোজ

গেইটে শব্দ করতেই নতুন দারোয়ান সওয়াব আলী গেইট খুলল। লোকটার বয়স কম। রূপাকে দেখে প্রশ্ন করল, “কে তুমি? কাকে চাও?”
রূপা বলল, “আজিজুর আংকেলের মেয়ে অরুনিকা আমার বন্ধু৷ ওর সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।”
“তোমার নাম কী?”
রূপা নিজের নাম বলল না। অন্য নাম বলল “তন্নি।”
“দাঁড়াও তুমি।”

সওয়াব ফোন বের করে আজিজুরের ফোনে কল করল। অরুনিকার একমাত্র বন্ধু রূপা, তা অজানা নয় আজিজুর চৌধুরীর। দারোয়ান অন্য নাম বললেও আজিজুর বুঝে যাবেন, রূপা এসেছে! তাই রূপা সুযোগ বুঝে গেইটের ভেতর ঢুকে গেল। দারোয়ান হইহই করে পিছু নিলো। রূপা এক দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায়।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সম্প্রতি অরুনিকার পড়াশোনায় একদম মন নেই তা লক্ষ্য করে সেলিনা রাগান্বিত হয়ে মেয়েকে শাসন করছিলেন। বাহিরে চেঁচামেচি শব্দ আর ক্রমাগত কলিং বেল বাজতে শুনে তিনি দরজা খুলতে যান৷ পিছু পিছু আগ্রহ নিয়ে অরুনিকাও আসল।
আজিজুরও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। সেলিনাকে থামিয়ে দিয়ে তিনি চোখমুখে কাঠিন্যতা ধরে রেখে দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে ঢুকল রূপা। অরুনিকা চমকে গেল, খুশি হলো।
রূপা আজিজুরকে দেখেই অনুরোধ করে বলল, “প্লিজ আংকেল, রাগ করবেন না। আমি অরুর সঙ্গে পাঁচ মিনিট কথা বলব, খুব জরুরি।”

আজিজুর সওয়াবের দিকে তাকাতেই সওয়াব কৈফিয়ত দিলো, “আমি কিছু বুঝার আগেই দৌড়ে ঢুকে গেছে স্যার।”
আজিজুর হুংকার দিয়ে বললেন, “সামান্য একটা মেয়েকে আটকে রাখতে পারলে না, এই বিল্ডিংয়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব কী করে নিবে তুমি?”
সওয়াব মাথা নত করে বলল, “সরি স্যার।”

আজিজুর রূপাকে ধমক দিতে তাকিয়ে দেখলেন ইতিমধ্যে অরুনিকা রূপার সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়েছে।
সে আকুতি করে বলল, “প্লিজ পাপা, রূপাকে বকো না। শুধু কথা বলবে। আমাকে শুনতে দাও।”
আজিজুর রোষাগ্নি চোখে সেলিনার দিকে তাকালেন, সেলিনা সঙ্গে সঙ্গে বললেন, “তোমার পাপা নিষেধ করেছিল রূপার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে৷ তুমি কী করে কথা বলার অনুমতি চাচ্ছো? রূপাকে বলো চলে যেতে।”
রূপা বলল, “আমি আপনাদের সামনেই কথা বলব। প্লিজ আন্টি, খুব প্রয়োজন।”

অরুনিকা অবাক না হয়ে পারছে না৷ কী এমন কথা বলবে রূপা? এতো আকুতি-মিনতি কেন? হিরণের আপডেট নিতে এসেছে? না, তাহলে তো সবার সামনে কথা বলতে চাইত না। অন্যকিছু হবে।
অরুনিকা বলল, “একটু কথা বলতে দাও। তোমাদের সামনেই তো বলবে।”
আজিজুর সেলিনাকে ইশারা করে ড্রয়িংরুমে গিয়ে বসলেন। সেলিনা সওয়াবকে বলল, “তুমি যাও।”
তারপর রূপাকে বললেন, “চলো আমার সঙ্গে।”

ড্রয়িংরুমের এক পাশে সিসি ক্যামেরার মতো স্থির হয়ে আছে আজিজুর ও সেলিনা। রূপা এক নজর তাদের দেখে অরুনিকাকে বলল, “তোকে বলার সুযোগ হয়নি, সোমবার ফাইয়াজ স্যারের রুমিকে আংটি পরানোর কথা ছিল। সেই —”
কথার মাঝে আটকে দিয়ে বিস্মিত কণ্ঠে অরুনিকা বলল, “ফাইয়াজ স্যার রুমিকে বিয়ে করতে চেয়েছে? কোন রুমি? তোর এলাকার কেউ?”

“আমার বোন রুমি৷ আমিও প্রথম অবাক হয়েছিলাম। রুমি এই বিয়েতে রাজি ছিল না। আমার আর আব্বার মতও ছিল না। আম্মা একাই বিয়ে দিতে চাচ্ছিল। বাধ্য হয়ে রবিবার রাতে রুমি পালিয়ে যায়। কার সাথে যায় জানি না।”
এ কথা বলে রূপা আড় নয়নে আজিজুর আর সেলিনাকে পরখ করে নিলো। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখল
আজিজুর তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলেন। তার মতে, বস্তির মেয়েরা এরকমই হয়! বাবা-মায়ের মুখে কালি মাখিয়ে যার-তার হাত ধরে পালানোই এদের স্বভাব। আর রূপা সেই সমাজেরই মেয়ে।
অরুনিকা মুখে এক হাত দিয়ে বলল, “সেকি! পরে?”

“আম্মা মান-সম্মানের ভয়ে রাতেই আমাদের নিয়ে দূরের এক আবাসিক হোটেলে উঠে৷ কিছুতেই চাচ্ছিল না কেউ জানুক রুমি পালিয়েছে৷ আম্মা, আব্বা একদিন পর বাড়ি ফিরে সবাইকে বলে, নানু অসুস্থ তাই হুট করে গ্রামে চলে গিয়েছিলাম৷ আমি, রিনি আর রুমি রয়ে গেছি। আম্মার পরিকল্পনা অনুযায়ী, যতদিন রুমি না ফিরে আমি আর রিনি ফিরতে পারব না। তাই হোটেলেই ছিলাম আমরা। সেদিন বিকেলে নদীর পাড়ে বসে ছিলাম। হুট করে ফাইয়াজ স্যার সেখানে চলে আসে, আমার হাতে আংটি পরিয়ে দিয়ে বলে, আমাকে নাকি বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু উনার বোন ভুল বুঝে রুমির জন্য প্রস্তাব দিয়েছে৷ এই কথা জানার পর সবাই অবাক হয়। আমাকে বাড়ি ফিরতে হয়।”

অরুনিকার মুখটা অকস্মাৎ হা হয়ে গেল। খুশিতে শরীর ঝিমঝিম করে ওঠল। কোচিং-এ যখন পড়ত, ফাইয়াজ স্যার উনিশ বিশ হলেই শুধু রূপাকেই বকত, শাসন করত, কথা শুনাত, কান ধরিয়ে পাশে দাঁড় করিয়ে রাখত। উচ্চতায় দুজনই লম্বা হওয়াতে বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে কানাঘুষা হতো৷ সাধারণত অল্প বয়সী মেয়েদের মধ্যে সুদর্শন তরুণ শিক্ষক নিয়ে যা হয় আর কি!

সেই কানাঘুষা চার-পাঁচ বছর পর এসে বিয়ের প্রস্তাবে রূপ নিবে তা কী কেউ ভেবেছিল? অরুনিকা উত্তেজনায় রূপার হাত চেপে ধরল। আজিজুর ও সেলিনা মন দিয়ে রূপার বলা বুলি শ্রবণ করছেন।
রূপা বলল, “আমি সেদিন না করি। এজন্য স্যার অনেক রেগে থাকে আমার উপর। আজ স্যারের বোন আর দুলাভাই আবার প্রস্তাব নিয়ে এসেছে বিয়ের। আব্বাও চাচ্ছে, স্যারের সঙ্গেই আমার বিয়ে হোক। এখন আমার উত্তর জানতে চায় সবাই। আমি কীভাবে উত্তর দেই তোকে না জানিয়ে? এতো বড় সিদ্ধান্ত কীভাবে নেব তোর মত ছাড়া?”

অরুনিকা রূপার বাহুতে থাপ্পড় দিয়ে বলল, “বেক্কল মেয়ে, কোন সাহসে তুই না করেছিলি?”
রূপা আগ্রহ নিয়ে চেয়ে আছে৷
অরুনিকা তীব্র উচ্ছ্বাস নিয়ে বলল, “দৌড়ে গিয়ে বল, তুই বিয়ে করবি। কিছুতেই যেন এই মাল হাতছাড়া —”
অরুনিকা দ্রুত জিভ কাটল। উত্তেজনায় বাবা-মার সামনে কী বলে ফেলছিল! রূপা ও অরুনিকা একসঙ্গে পুর্নবার আজিজুরকে দেখল।

অরুনিকা উত্তেজনা দমিয়ে বলল, “গিয়েই হ্যাঁ বলবি, তারপর বিয়ের তারিখ জানাবি। যদি কেউ আমাকে দূর্গেও বন্দী করে রাখে আমি সেই দূর্গ ভেঙে তোর বিয়েতে আসব। এবার দৌড়া।”
রূপা উঠে দাঁড়াল। জিজ্ঞাসা করল, “সত্যি হ্যাঁ বলব?”
“যদি না বলিস, আমার ত্রিসীমায় আর আসবি না।”

দুই বন্ধু একসঙ্গে হেসে ফেলল। আজিজুরের ভয়ে তারা মেপে মেপে কথা বলছে, হাসছে৷ মনের অনেক কথা বলতে পারছে না। রূপা অরুনিকাকে জড়িয়ে ধরে আজিজুর ও সেলিনাকে বলল, “আসছি আংকেল, আসছি আন্টি।”
আজিজুর জবাব না দিলেও সেলিনা বললেন, “তোমার বিয়ের খবর শুনে খুশি হলাম।”
দরজার নিকটে এসে রূপা বলল, “স্যারকে নিয়ে অন্যকিছু ভাবতেই পারছি না আমি।”
অরুনিকা বলল, “এখন থেকে ভাবতে হবে। তোদের দুজনকে কী মানাবে রে! ভেবেই আমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছি।”

“আংকেল যাবে কবে?”
“আর একদিন। তারপর আমি মুক্ত।”
রূপা আবার অরুনিকাকে জড়িয়ে ধরল।
ফিসফিসিয়ে বলল, “হিরণ কেন আমার সঙ্গে দেখা করেনি? কিছু জানালি না তো।”
অরুনিকা কিছু বলার আগে সেলিনা পিছনে এসে দাঁড়ালেন। রূপা বিদায় জানিয়ে চলে গেল।
অরুনিকা ড্রয়িংরুমে আসতেই আজিজুর প্রশ্ন করলেন, “কোন ফাইয়াজ? এডুএইডের ইংলিশ টিচার?”
অরুনিকা মাথা ঝাঁকাল। আজিজুর ফাইয়াজকে সেসময় খুব পছন্দ করতেন। অরুনিকাকে বাসায় এসে পড়াতেও বলেছিলেন। কিন্তু ফাইয়াজ না করে দিয়েছিল, সে বাসায় পড়ায় না।

আজিজুর অবাক সুরে বললেন “ওমন ব্রিলিয়ান্ট নক্ষত্র এই মেয়েকে বিয়ে করতে চাইছে কেন? ফাইয়াজ দূর্ঘটনায় হাত-পা হারিয়েছে নাকি?”
অরুনিকা মুখ গুমোট করে বলল, “রূপাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করো না পাপা। স্যার রূপার মাঝের হীরেটা দেখেছে। একদিন তুমিও বুঝবে, রূপা কী!”

রসন ভিলার উঠানে বসে বত্রিশ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছেন জেসমিন, ইশতেহার এবং বারেক।
অপেক্ষা যে কতটা ধারালো, কত বিচিত্রভাবে সূচের মতো আঘাত করতে পারে দেহে তা ক্ষণে ক্ষণে অনুভব করছেন বারেক। লজ্জায় তিনি মাথা নত করে রেখেছেন৷ রূপা এভাবে কখনো লজ্জায় ফেলবে কখনো ভাবেননি তিনি। অতিথিদের বলেছেন, আর অপেক্ষা না করতে৷
রূপার উড়নচণ্ডী দশার জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন।
কিন্তু ইশতেহার বড় ভালো মানুষ। তিনি বলেছেন, “রূপা যখন বলেছে অপেক্ষা করতে, আরো কিছুক্ষণ দেখি। আশা করি, ইতিবাচক কিছুই ঘটবে।”

সাঁইত্রিশ মিনিটের মাথায় রূপা বাড়িতে প্রবেশ করল।
বারেক অগ্নি চোখে তাকিয়ে উঁচু গলায় প্রশ্ন করলেন, “কোথায় গিয়েছিলি? কেন গিয়েছিলি?”
রূপা কিছু বলার আগে সুমনা বারান্দা থেকে বললেন, “বিয়ের ইচ্ছে নেই সেটা বলে গেলেই পারতি।”
বারেক আরো কিছু বলতে উদ্যত হলে ইশতেহার বললেন, “থামুন চাচা। রূপা, তোমাকে প্রশ্ন করব না তুমি কোথায় গিয়েছিলে। তুমি মতামত জানাও।”

বারেকের ধারণা রূপা না বলবে। নয়তো হুট করে কী বেরিয়ে যেতো? তিনি অপ্রসন্ন মুখে অন্যদিকে ফিরে বসেন। যখন রূপা বলল, “বিয়ে করতে আমার আপত্তি নেই।” তিনি চকিতে ঘুরে তাকালেন। মুহূর্তে রসন ভিলায় খুশির জোয়ার উঠে গেল। তিন দিন পর রমযান মাসের সূচনা। তাই বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয় ঈদের পর। মে মাসের ত্রিশ তারিখ। সেই সঙ্গে এই কথাও হয়, আগামীকাল ফাইয়াজ এসে আংটি পরিয়ে দিয়ে যাবে।

রূপা হুট করেই টের পেল, সে লজ্জাবতী গাছের মতো নুয়ে যাচ্ছে। আগামীকাল ফাইয়াজ হবু বরের পরিচয় নিয়ে সামনে দাঁড়াবে, আংটি পরাবে ভেবে রূপা অদ্ভুত শিহরণ বোধ করল। ভেতরকার মেয়েলি ভাবটা শক্ত খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইল৷ রূপা দৃঢ় থাকার চেষ্টা করল।
ফাইয়াজ বের হওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল। তার চোখমুখ বিবর্ণ। সেসময় ইশতেহার আর জেসমিন আসল। জেসমিন বলল,

“কোথায় যাচ্ছিস?”
ফাইয়াজ মানিব্যাগ খুঁজতে খুঁজতে বলল, “বাহিরে।”
“ব্যাগে কত টাকা আছে?”
“আছে হয়তো হাজারখানেক।”
ফাইয়াজ বের হতে উদ্যোগ নেয়।
জেসমিন বললেন, “আরো টাকা নিয়ে যাও। বউয়ের জন্য শপিং করে এসো।”

ফাইয়াজ থমকে গেল, চমকে তাকাল। তার অদ্ভুত প্রতিক্রিয়া দেখে জেসমিন, ইশতেহার হেসে ফেললেন।
ফাইয়াজ সন্দিগ্ধ কণ্ঠে বলল, “বিয়ে হচ্ছে?”
জেসমিন বলল, “হ্যাঁ, হচ্ছে৷ মে মাসের ত্রিশ তারিখ।”
ফাইয়াজ পূর্বের সুরে বলল, “এবার কি রিনির সঙ্গে বিয়ে ঠিক করেছো?”
এই প্রশ্ন শুনে ইশতেহার হোহো করে হেসে উঠলেন।
জেসমিন চোখ পাকিয়ে বললেন, “একবার ভুল করেছি বলে কি এখন পাঁচ-ছয় বছরের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে ফেলব? এতো বোকা আমি?”

“তাহলে রূপাই?”
ফাইয়াজ ইশতেহারের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল।
ইশতেহার বললেন, “নিশ্চিন্ত থাকো, এবার পাত্রী ঠিক আছে। রূপা খুশিমনেই সম্মতি দিয়েছে৷”
ফাইয়াজ মুহূর্তে চেহারার রঙ পরিবর্তন করে দায়সারাভাবে বলল, “ভালো।” তারপর ভেতরের রুমে চলে গেল। সে মনের উচ্ছ্বাস না দেখালেও জেসমিন সেটা স্পষ্ট দেখতে পেলেন।

রূপা হোটেলে যেতে গেইট থেকে বের হয়েছে মাত্র, ঠিক তখনই বাইক নিয়ে বের হলো ফাইয়াজ। রূপা অপ্রতিভ হয়ে ওঠল। এই মানুষটা তার হবু বর। স্যার শব্দটা আর মস্তিষ্কে নেই। চারিদিকে হবু বর, হবু বর দেখতে পাচ্ছে।
রূপা পাশ কেটে চলে যাচ্ছিল, ফাইয়াজ ডাকল, “এই মেয়ে, শুনো!”
এখনো কথার কী ভার! রূপা আগের মতোই আন্তরিকতার সঙ্গে বলল, “জি স্যার, বলুন।”
ফাইয়াজ বাইকে বসে বলল, “পিছনে বসো।”

“কী?”
“বাংলা বুঝো না? পিছনে বসতে বলেছি। নাকি সামনে বসতে চাও?”
“সে কথা কখন বললাম?”
“মুখে মুখে তর্ক করবে না। বেয়াদবি আমার একদম পছন্দ না।”
রূপা বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইল। ভাবল, “বেয়াদবির কী বললাম রে বাবা!”
“সঙের মতো দাঁড়িয়ে আছো কেন? উঠে বসো।”

রূপা কী করবে ভেবে পাচ্ছে না। ফাইয়াজ আবার বলল, “ভারী অসভ্য তো তুমি! গুরুজনদের কথা শুনতে হয়, শিখোনি?”
“এতো রাতে আপনার সঙ্গে কোথায় যাব?”
“এর আগে কি এতো রাতে ছেলে মানুষের বাইকে উঠোনি? পাড়ার অখাটে-বখাটে পোলাপানদের সঙ্গে তো ঠিকই ঘুরে বেড়াও। কয়দিন আগে রাত বারোটায় লালনের সঙ্গে বাইকে করে ঘুরোনি? এখন তো বাজে দশটা চল্লিশ।”
“সেদিন তো হাসপাতাল গিয়েছিলাম। ওর আম্মাকে রক্ত দিতে। আর —”

সূর্যশিশির পর্ব ২৬

“আবার তর্ক করছো? চলো, তোমার আব্বাকে বলেই তোমাকে নিয়ে যাব।”
রূপা বাইকে উঠে বলল, “বাজার দিয়ে যাবেন না, প্লিজ।”
ফাইয়াজ রূপার অগোচরে হেসে বাইক স্টার্ট দেয়।

সূর্যশিশির পর্ব ২৮