সে আমার সুকেশিনী পর্ব ৪

সে আমার সুকেশিনী পর্ব ৪
রাউফুন

বিউটির পরেরদিন অফিস উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও পারেনি না। বরং আরও সাত দিন পর সে অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে বেরোলো। এর মধ্যে সায়র অনেক বার তার সামনে এসেছে। তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছে। বিউটি কথা বলতে চাই নি কিন্তু একটা মানুষকে কতবার বারণ করা যায়!

আচ্ছা সায়রের বয়স কত হবে? থার্টি প্লাস? যদি তাই হয় তবে তার থেকে মাত্র দুই আঁড়াই বছরের বড় হবে সে। সে মনে করে সায়র তার জন্য যে পাগলামি করছে সেটা সম্পুর্ন অবান্তর। বরং সে জানে, সায়র তাকে ভালোবেসে কষ্ট ছাড়া কিছুই পাবে না। অযথা একজনের কষ্টের কারণ হয়ে লাভ কি? বিয়ে ঠিক হলেই এমন পাগলামি করতে হবে? মানে হয় এমন পা’গলা’মো করার? বিউটি তারাহুরো করে বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় সন্দিপ্তা তাকে পিছু ডাকলো। হাত ধরে টেনে টেবিলে বসিয়ে দিলো। কড়া কন্ঠে বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘না খেয়ে এক পা বাড়ির বাইরে রাখলে পা ভেঙে দিবো। আমি খাবার দিয়েছি। আজ থেকে ক্যান্টিন থেকে খাওয়া বন্ধ। আমি বাড়ি থেকেই খাবার তৈরি করে দিবো! নিয়ে যাবি! এখন ব্রেকফাস্ট করে নে!’
‘আশ্চর্য ভাবি, তুমি সকাল সকাল এতো কষ্ট করতে গেলে কেন? এখন কি আমি অসুস্থ আছি নাকি? এই দেখো একদম ফীট। আমাকে এতো কড়াকড়ির মধ্যে রাখবে না তো। আমি অলরেডি লেট অনেক। যেতে হবে এক্ষুনি।’
‘বাইরের খাবার খেয়ে খেয়ে আমি চাই না তুই আবার অসুস্থ হয়ে পর। বিয়ের আগে অসুস্থ হওয়া চলবে না। মা একদম নিষেধ করে দিয়েছেন!’

সন্দিপ্তার জোরাজোরিতে কিছুতেই না খেয়ে বেরোনো গেলো না। অগত্যা বিউটিকে খেতেই হলো। অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে দশটাই। নয়টা বেজে পয়তাল্লিশ মিনিট এখানেই। একটা ব্রেড নিয়ে খেলো। পানি খেয়ে উঠে পরলো। কিন্তু সন্দিপ্তা টেনে ধরলো তাকে। আবার বসিয়ে দিয়ে বললো,

‘পুরো খাবার খাবে তুমি। শরীর অনেক দুর্বল এখনো। কোনো বারণ শুনছি না। কথা না শুনলে মাকে ডাকবো।’
‘অফহো ভাবি, তুমি এবারে আমায় ক্ষ্যামা দাও। আর খেতে পারবো না প্লিজ। বস অফিসে ঢুকতেই পানিশম্যান্ট দিয়ে দিবেন! হইতো কান ধরে উঠবসও করাবেন! এতো বড় একটা মেয়ে যদি অফিসে গিয়ে কান ধরে উঠবস করে কি বিচ্ছিরি দেখাবে বলো তো?’

সন্দিপ্তা শব্দ করে হেসে পাশে বসলো। বিউটির খাওয়ার সময় একটুও নড়লো না। বিউটির পুরো খাবার খাওয়া হলে বিশ্ব জয় করা হাসি হাসলো সন্দিপ্তা। আসার সময় টিফিন ক্যারিয়ার ধরিয়ে দিলো বিউটির হাতে।

অফিসে ঢুকতেই চোখ পরলো রিমির উপর। মেয়েটা আজও নাক ছিঁটকালো। যার মানে এই যে আজও একই জামা! বিউটি মনে মনে ভাবলো, ‘আরে গর্ধব মেয়ে, একটা ড্রেস কত দিন পরা যায়? সেটা তো পুরনো হয় নাকি? আমার ড্রেসে কখনো নোংরা লেগেছে? একই কালারের ড্রেস পরি তাই বলে তো এটা না আমার একটাই ড্রেস! আশ্চর্য!’ মারিয়াম আগেই এসেছে। সেই একমাত্র যে কিনা লেট করে এসেছে অফিসে। মারিয়ামের সঙ্গে তেমন কথা বলতে পারলো না বিউটি। মিনহাজ্ তাকে ডেকে পাঠিয়েছে।

মিনহাজের পুরো নজর বিউটিতে আবদ্ধ। যখন থেকে সে শুনেছে বিউটির বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তখন থেকে সে অস্থিরতায় বিমূঢ় হয়ে গেছে। এক দন্ড শান্তি পাচ্ছে না। এতো অশান্তির কারণ কি সে এখনো আন্দাজ করতে পারলো না। আচ্ছা বিউটি খুশি তো বিয়েতে? বিউটি এই বিয়েতে কতটা খুশি এটা জানা জরুরি। বিউটি তার ডেস্কের উপর হ্যান্ড ব্যাগ টা রেখে হ্যান্ড রাব করলো। তারপর ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো। ক্যাবিনের কাচের দরজার উপর লাল রঙে লেখা পুল। মানে টানুন। বিউটি দরজা টেনে ভেতরে প্রবেশ করতেই মিনহাজ বলে উঠলো, ‘ওখানেই দাঁড়িয়ে পরুন। সাত দিন আপনি অ্যাপসেন্ট ছিলেন। আর আজ পুরো ফিফটিন্থ মিনিটস লেট। এর জন্য একটা শাস্তি অবশ্যই আপনার পাওনা থাকে।’

বিউটি ক্ষীন ঘাবড়ে গেলো। অল্প ভয় পেলেও সাহস জুগিয়ে বেশ চড়া কন্ঠে বললো, ‘আশ্চর্য স্যার আমার হাই ফিভার ছিলো। তাই সাত দিন আসতে পারিনি। আপনি জেনেও শাস্তির কথা বলছেন কিভাবে? আমি মেইল করে ছুটি চেয়েছিলাম, আপনি সেটা মঞ্জুর করেছেন। আশ্চর্য, এরপরেও শাস্তি পেতে হবে? ওকে বলুন কি শাস্তি পেতে হবে আমায়?’

‘আপনার শাস্তি, আপনার আমাকে বিয়ে করতে হবে!’
‘আশ্চর্য! শাস্তি হিসেবে বিয়ে মানে?’ বিউটি আকাশ থেকে পরলো যেনো। এসব কি বলছে মিনহাজ! চোখ ঝুলে পরার উপক্রম।

মিনহাজ যখন বুঝলো সে ভুল জায়গায় ভুল কথা বলেছে তখন সে বিষম খেলো। সম্বিৎ ফিরে পেতেই তড়িঘড়ি করে বললো, ‘জোকস আ পার্ট মিস বিউটি। আপনার শাস্তি টা অন্য কিছু! আপনাকে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে অ্যাপোলোজাইস করতে হবে। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে হবে। এক্ষুনি বলতে হবে! বুঝেছেন!’
‘জ্বী স্যার?’

‘স্যুদ লুক অ্যাট মী এন্ অ্যাপোলোজাইস!’
বিউটি তাকালো না। গাট হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। বিউটি তাকাচ্ছে না দেখে মিনহাজ ক্ষুব্ধ হয়ে বললো, ‘মিস বিউটি আই কমান্ড ইয়্যু! লুক অ্যাট মী এন্ অ্যাপোলজাইস! কুইক!’
মিনহাজের ধমকে মৃদু কেঁপে উঠলো বিউটি। সঙ্গে সঙ্গে মাথায় দপ দপ করে রাগ উঠে গেলো। সে তো একবারও তাকালোই না বরং মিনহাজের ক্যাবিন থেকে দরজা টেনে বেরিয়ে গেলো।

মিনহাজ স্থির হয়ে তাকিয়ে রইলো। বিউটি তার আদেশ অমান্য করেছে সে ভাবতেই পারছে না। সে কি দেখতে খুবই বাজে? তাহলে সবাই তার দিকে হা করে তাকিয়ে রইলেও বিউটি কেন তাকে দেখে না? সে কি বিউটির অযোগ্য? নাকি সত্যিই সে খুবই কুৎসিত দেখতে? সেজন্য বিউটি তার দিকে তাকাতে পারে না বা চাই না।

বিউটি গজগজ করতে করতে নিজের ডেস্কে বসলো। মারিয়াম সবটা লক্ষ্য করলেও নিজের কাজ ছেড়ে উঠলো না।
আশ্চর্য মগের মুলুক নাকি? আদেশ করলেই তাকাতে হবে? এটা কি এই অফিসের নতুন রুলস নাকি, যে মুখের দিকে তাকিয়েই ক্ষমা চাইতে হবে? সে ছুটির আবেদন করে ছুটি পেয়েছিলো তবে এটা ভুল হলো কিভাবে? যেহেতু সে ভুল করেনি সেহেতু ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না। ভুল হলে না হয় সে ভেবে দেখতো। মুখের দিকে না তাকালেও ক্ষমা চাইতো সে।
হঠাৎই রিমি বিউটির ডেস্কের সামনে এসে টকটক করে শব্দ করলো। অত্যন্ত বিরক্ত মুখ করে বললো,

‘মিনহাজ্ স্যারের থেকে দূরে থাকো ওকে? তোমার মতো গন্ধওয়ালা মেয়ের দিকে মিনহাজ স্যার ফিরেও তাকাবেন না। উনার রুচি এতোটাও খারাপ না হাহ্! ইট বি ব্যাটার ফর ইয়্যু ইফ ইয়্যু কীপ ইয়্যুর ডিস্ট্যান্স ফ্রম হিম!’
‘তোমার কি মনে হয় আমার এতো ফালতু সময় আছে?’

‘হাহ্ এমন ভাবে বলছো যেনো মিনহাজের উপর তোমার নজর নেই? তোমাকে নিয়ে আমার কোনো রকম ইন্ট্র‍্যাস্ট নেই। শুধু মিনহাজের থেকে দূরে থাকো লাস্ট ওয়ার্নিং দিলাম। ওকে হাত করার চেষ্টা করো না।’
বিউটি মুচকি হাসলো। কাষ্ঠ হেসে বললো, ‘তোমার মিনহাজ? ওওহ ওয়াও! তা স্যার কি তোমাকে ঘুরেও দেখেছে কোনো দিন? হাত করার কথা বললে না? হাত করাটা বোধহয় তুমি আমার থেকে ব্যাটার পারো।’
‘তুমি একটু বেশিই বলছো না? আমাকে হিউমিলিয়্যাট করছো তুমি? আমি তোমার থেকে হাজার গুনে সুন্দরী। তোমার মতো আঠাশ বছরের বুড়ি না আমি?’

‘তোমার সাহস হয় কি করে আমাকে ওয়ার্ন করার? নুন্যতম ভদ্রতা নেই তোমার মধ্যে আশ্চর্য! আমি বয়সে তোমার থেকে বড়, এবং তোমার থেকে আমার যোগ্যতাও বেশি। নিজের মতো সবাইকে ভেবে বোকামি করছো কেন? তোমার মতো হ্যাংলা নাকি আমি? স্যার আসলেই ড্যাবড্যাব করে তুমি তাকিয়ে থাকো আমি না। খবরদার আমার কাছে এসে এসব বলবা না। এটা আমার কাজের জায়গা তাই কাজের ক্ষেত্রে আমার স্যারের ক্যাবিনে যেতে হতেই পারে। তুমি আমাকে এসব বলে যাবে আর আমি সবটা মানবো নাকি? আর আমি হাজার বার যাবো, আসবো, তোমায় কৈফিয়ত দিবো ভাবলে কেন? আশ্চর্য!’

‘এই দুর্গন্ধী মেয়ে, বেশি বারাবাড়ি রকমের কথা বলো না। এর ফল ভালো হবে না। তুমি জানো না আমি কি কি করতে পারি স্যারের জন্য!’
‘স্যারকে বলবো তুমি আমায় ডিস্টার্ব করছো?’
রাগে রিমি হিসহিসিয়ে চলে গেলো। বিউটি হাসলো।
অন্যদিকে ফোকাস না করে কাজে মন দিলো।

যথা সময় অফিস থেকে বের হলো সে আর মারিয়াম। মারিয়াম টিস্যু এগিয়ে দিলো বিউটির দিকে। বিউটি ঘেঁমে গেছে।
‘বিউটি ঐ রিমিটা আবার কি বলছিলো রে তোকে?’
‘মিনহাজ স্যারের থেকে দূরে থাকতে বললো। আমি কি কখনোই কাছে গিয়েছি নাকি দূরে থাকবো! গর্ধব টা সব সময় বোকা বোকা কথা বলে। আশ্চর্য!’

যা যা কথা হয়েছিলো তার সবটাই বললো বিউটি। মারিয়াম সবকিছু শুনে রেগে গেলো। ফ্যাস-ফ্যাসে গলায় বললো,
‘ঐ রিমির একটা শিক্ষা হওয়া দরকার। এতো স্টাফ এমপ্লয়ি থাকতে তোর সঙ্গে ওঁর এতো কিসের রেষারেষি? পাক্কা ধারিবাজ মেয়ে! হিংসুক, কুচুটে বুড়ি! একবার তোর ড্রেস, একবার তোকে গন্ধওয়ালি বলছে এখন আবার তোর ইমেজ খারাপ করতে চাইছে। কি চাইছে ঐ মেয়ে?’

‘জানি না!’ রিকশায় যেতে যেতে আরও কথা হলো তাদের মধ্যে। মারিয়াম তার বাড়িতে নেমে গেলো। বিউটিদের বাড়ি আরও কিছু টা সামনে। আচানক
সে কল্পনা করলো সুপ্রিয় তার দিকে এগিয়ে আসছে। চলন্ত রিকশায় ঝাপিয়ে উঠে তার পাশে বসলো। বিউটি খুশিতে চমৎকার করে হাসলো। হেসে বললো, ‘দিন দিন এতো ইয়্যাং হচ্ছো কিভাবে সুপ্রিয় ভাই? তোমার রূপের রহস্য কি?’
‘বলবো না কি রহস্য। তোর বয়স যে আঠাশ পেরোবে সেটা তোকে দেখলে বোঝা যায়? আঠারো বছরের তরুণী লাগে তোকে।’

‘সুপ্রিয় ভাই, আপনি নামক সুখ আমার কাছে ধরা দেই না কেন? আপনার অস্তিত্ব কল্পনায় ছাড়া বাস্তবে পায় না। আপনি কি আমার স্মৃতির পাতায় এভাবেই কল্পনা হয়েই রবেন?’
‘যেখানে কল্পনা থেকে বেরোলেই সেই স্মৃতি মুছে যায়,তার অস্তিত্ব থাকে না, সেখানে স্মৃতি বুলাতে এলে কষ্ট বৈ আর কিছু চোখে পড়বে না! স্মৃতি সুখের রাখবি অসুখের না! আমায় ভালোবেসে এতো অপেক্ষা করতে পারলি আর একটু অপেক্ষা করতে পারবি না? হাঁপিয়ে গেলে হবে?’

‘বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য বেশিই জোর করছে। আমি না হয় বাড়িতে সামলে নেবো। যদি তোমার কাউকে ভালো লাগে তখন আমার কি হবে?’
‘তোর মনে হয় আমি অন্য কারোর হবো?’
‘আশ্চর্য মনে না হওয়ার কি আছে? অবশ্য কোনো মেয়ের দিকে তাকালে তোমায় আস্তো রাখবো নাকি? তোমার চোখ তুলে কুকুরদের খেতে দিবো! অন্য মেয়ে দেখার সাধ ঘুঁচিয়ে দেবো।’

‘তবে যে তোকে সবাই অন্ধের বউ বলবে রে!’
‘বলুক গে। তাতে আমার কিছু যায় আসে না।’
বিউটি মস্তো এই কল্পনা থেকে বেরিয়ে এলো রিকশাওয়ালার ডাকে।
‘ওও বিউটি আফা কই হারাই গেছেন? নামেন আইসা পরছি!’

বিউটি হকচকালো। পাশের ফাঁকা সীটের দিকে তাকিয়ে রইলো কতক্ষণ! নিজেকে সামলে রিকশা ভাড়া মিটিয়ে নেমে পরলো। এই রিকশাটা সকাল বিকেল তার জন্য ঠিক করা। রোজ সঠিক সময় অফিসে নামিয়ে দিয়ে আসে এবং সেখান থেকে নিয়ে আসে।

গেট খুলে ভেতরে যেতে যেতে বিউটি বিড়বিড় করে বললো,’আর কত আমায় এভাবে ধোঁকা দিবেন সুপ্রিয় ভাই? আপনি কি তবে বাস্তবে কখনোই ধরা দিবেন না? এভাবেই কল্পনায় এসে কল্পনাতেই হাঁরিয়ে যাবেন?’
বিউটি নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গাট হয়ে শুয়ে পরলো। তার যখন ঘুম ভাঙলো দেখলো তার ফোনে অনেক গুলো মিসড কল। আননোন নাম্বার দেখে ফোন রেখে দিলো। যার দরকার হবে সে নিজেই কল করবে। শাহানা বেগম রুমে এসে দশ বারের উপরে চেইক করে গেছেন বিউটি উঠেছে কি না। বিউটিকে বিছানার উপর মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখে তিনি এগিয়ে এলেন। মাথায় স্নেহের হাত রেখে বললেন,’খারাপ লাগছে মা? মাথা ব্যথা করে?’

‘আম্মু, কড়া করে এক কাপ কফি দাও তো।’
‘কফি খাবি কি রে? ভাত খাবি। খাস নি এখনো সে খেয়াল আছে?’
‘ এখন ভাত না মা। দাও না এক কাপ কফি প্লিজ!’
‘না হবে না। ভাত আনছি নিজে হাতে না খেতে চাইলে আমাকেই তো হাত লাগাতে হবে। ধামড়ি মেয়েকে খাওয়াবো আর কি। এতো বড় হয়ে গেলি অথচ মায়ের কথায় কোনো রকম কর্নপাত করিস না।’

‘আশ্চর্য! তোমার সব কথায় তো শুনি আম্মু।’
‘হ্যাঁ কথা শুনে উল্টে পালটে দাও। কোনো কথা শুনিস না আমার।’
‘আশ্চর্য মা কোন কথা শুনি না বলো দেখি?’

সে আমার সুকেশিনী পর্ব ৩

‘আমার চাইতে তুই ভালো জানিস। আচ্ছা শুন, সায়র তোকে ফোন দিয়েছিলো। তুই নাকি একবারও তুলিস নি! ছেলেটা তোকে না পেয়ে তোর ভাই লিপনকে কল করে বলেছে! লিপন আমাকে জানালো। সায়রের কল ধরিস!’
‘কল ধরতে পারবো না আম্মু! যাকে বিয়েই করবো না তার সঙ্গে এতো কথা বলাটা কি সমীচীন?’
‘না পারলেও বিয়েটা হবেই। এখন যা খুশি করে নে! এই বিয়েটা কোনো ভাবেই আটকাবে না। তোর কোনো অজুহাত আমরা কেউ-ই শুনছি না।’

সে আমার সুকেশিনী পর্ব ৫