হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ পর্ব ৫

হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ পর্ব ৫
সাদিয়া জাহান উম্মি

‘ হাতে ব্যাথা পেলে কিভাবে?’
জড়সড় হয়ে বসা থাকা আরাবীর উদ্দেশ্যে প্রশ্নটা করলো জায়ান।আরাবী এহেন প্রশ্নে কি উত্তর দিবে ভেবে পেলো না।তবুও আমতা আমতা করে বলে উঠলো,

-‘ আং..আংটিটা খুলার সময় একটু ছি..ছিলে গিয়েছিলো।’
জায়ান ভ্রু-কুচকালো আরাবীর কথা শুনে।ব্যান্ডেজটায় এখনো তাজা র’ক্ত ভেসে আছে।আলতো করে হাত ছোঁয়ালো সেখানে জায়ান।জায়ানের স্পর্শে জায়গাটা কেমন শিরশির করছে আরাবীর।জায়ানের ধীর আওয়াজ,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-‘ ব্যাথা আছে?’
-‘ উঁহু।’
-‘ এখনো র’ক্ত লেগে যে?’
-‘ ব্যাগের সাথে লেগে আবার ব্যাথা পেয়েছিলাম।’
-‘ চলো আমার সাথে।’

আকস্মিক জায়ানের এই কথায় আশ্চর্য হলো আরাবী।চোখ তুলে তাকালো জায়ানের দিকে।জায়ান নির্বিকারে ওর দিকে তাকিয়ে। কিন্তু জায়ানের চোখে আরাবী দেখতে পাচ্ছে একরাশ ব্যাকুলতা,অস্থিরতা।তবে কি তা ওর জন্যেই?কিন্তু ওর জন্য কেনই বা এতো অস্থির আর ব্যাকুল হবে লোকটা?আজ নিয়ে মাত্র দু’দিন হলো ওদের দেখা।আরাবী বিরবির করলো,

-‘ আপনি আস্ত একটা ধাধা।এই ধাধার উত্তর আমি মিলাবো কিভাবে?’
-‘ কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে অপেক্ষা করতে হয়।’
হকচকিয়ে গেলো আরাবী। এতো আস্তে কথা বললো তাও লোকটা শুনে ফেললো।কি ভয়া’নক ব্যাপার স্যাপার। আরাবীর ভাবনার মাঝে জায়ান গম্ভীর স্বরে বলে,

-‘ চলো।’
আরাবী মিনমিন করে জিজ্ঞেস করলো,
-‘ কো..কোথায় যাবো?’
-‘ ডাক্তারের কাছে।’
আরাবী অবাক।
-‘ কিন্তু কেন?’

কোন উত্তর দিলো না জায়ান।সে এখনো আরাবীর হাতের ব্যান্ডেজের দিকে তাকিয়ে।আরাবী শুকনো গলায় বলে,
-‘ লা..লাগবে নাহ তো।একটুখানি কেটেছে।আমার ব্যাগে ব্যান্ডেজ আছে।আমি আলিফাকে দিয়ে করিয়ে নিবো।’
কথাটা শোনা মাত্রই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো জায়ান আরাবীর দিকে।আরাবী ভয় পেয়ে মাথা নিচু করে নিলো।আশ্চর্য লোকটা এভাবে তাকাচ্ছে কেন? একটু আগেই তো কি সুন্দর নরম কন্ঠে কথা বলছিলো।এখন আবার সেদিনের মতো তাকাচ্ছে।
-‘ ভাই তুমি কিছু বলছো নাহ কেন?’

নূরের প্রশ্নে আরাবী দ্রুত জায়ান থেকে একটু সরে বসার চেষ্টা করতে লাগলো।কিন্তু জায়ান তা হতে দিলে তো। সে এখনো আরাবীর হাত ধরে বসে।তবে খুব নরম স্পর্শে ধরেছে আরাবীর হাতটা।যেন আরাবী একটুও ব্যাথা না পায়।বুকের ভীতরটা কেমন কেঁপে কেঁপে উঠছে।

জায়ানের একটুখানি ছোঁয়াতেই যেন আরাবীর মন আরাবীকে বলছে।ইনিই সেই জন যেইজন তোকে সবসময় সবকিছু থেকে আগলে রাখবে। তোর একমাত্র নির্ভরযোগ্য, ভরসাযোগ্য ব্যাক্তি।যার কাছে তুই নির্দ্বিধায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারবি।কিন্তু মন এমনটা কেন বলছে?

কি কারনে এমন হচ্ছে? যেখানে অন্যসব ছেলে আরাবীর দিকে একটু আঁড়চোখে তাকালেই আরাবীর অসস্থি লাগে।সেখানে জায়ান আরাবীর সাথে প্রায় একপ্রকার গা ঘেসে বসে আছে।সাথে ওর হাত ধরে আছে।কিন্তু আরাবীর একটুও খারাপ লাগছে না।বরং সারা মনপ্রাণ জুড়ে ভালোলাগার প্রজাপতিরা এদিক সেদিক উড়াউড়ি করছে।আনমনেই আরাবীর ঠোঁটের কোণে লজ্জা রাঙা হাসি ফুটে উঠলো।এতোক্ষনের ভয়,ড’র,জড়তা সব যেন একনিমিষে কোথাও গায়েব হয়ে গেলো।

খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষ হতেই নূর সিদ্ধান্ত নিলো দূরে কোথায় ঘুরতে যাবে।আরাবী আর আলিফাকেও ওদের সাথে যেতে হবে।তা শুনে আরাবী ভড়কে গেলো।সে কিভাবে যাবে? দুপুর তিনটা বাজে।বাড়ি ফিরতে হবে।নাহলে ওর বাবা চিন্তা করবেন।আর বাবাকে যে ফোন করে জানাবো।তো জানাবেটা কি?যে ও জায়ানের সাথে আছে?এটা আরাবী কখনই বলতে পারবে নাহ।লজ্জায় আরাবী তৎক্ষনাত ম’রে যাবে।কি মনে করবে ওর বাবা আর মা। বলবে বিয়ে ঠিক হয়েছে একদিনই হয়নি। এখনি হবু বর এর সাথে ঘুরাঘুরি শুরু করে দিয়েছে।আরাবী ইতস্ততভাবেই বলে উঠলো,

-‘ নূর বলছিলাম কি,তোমরা ঘুরতে যাও।আমি অন্য একদিন যাবো নেহ তোমাদের সাথে।আলিফাকে ওর বাড়ি ফিরতে হবে।আংকেল আবার একটু ইস্ট্রিক্ট ওর বিষয়ে।’
জায়ান আরাবীর কথা শুনে শীতল দৃষ্টিতে তাকালো।আরাবী সেটা বুঝতে পেরে এদিন ওদিক নজর ঘুরিয়ে নিলো।জায়ান বলে উঠলো,

-‘ আরাবী ঠিক বলছে।ইফতি..’
-‘ জি ভাই।’
ইফতি এগিয়ে আসতেই।
-‘ নূরকে নিয়ে তুই চলে যাহ।আমি আরাবী আর আলিফাকে ড্রপ করে সোজা অফিসে আসছি।’
-‘ আচ্ছা ভাই।’

আরাবী জায়ানের ড্র‍প করে দেওয়া কথা শুনে কিছু বলবে।তার আগেই জায়ানের ঠান্ডা কন্ঠ,
-‘ ডোন্ট স্যে আ ওয়ার্ড। আমি যেহেতু বলেছি ড্রপ করে দিবো।মানে দিবো।’
আরাবী সাথে সাথে বলতে চাওয়া কথাটা গিলে ফেললো।যেইভাবে তাকায় লোকটা।মানুষ কথা আর বলবে কিভাবে? ইফতি আর নূর মিটিমিটি হাসছে ওদের ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে। জায়ান বিরক্ত হলো এই দুটোর কান্ডে। চাপা ধমক দিয়ে বললো,

-‘ কি সমস্যা তোদের?’
নূর হাসি বন্ধ করে সাথে সাথে বলে,
-‘ কোন সমস্যা নেই ভাইয়া।এইযে তুমি ভাবির সাথে আরেকটু টাইম স্পেন্ড করতে চাচ্ছো।আমার আর ইফতি ভাইয়ার এতে কোন সমস্যা নেই।তুমি চাইলে ভাবির সাথে আজ সারাটাক্ষন থাকতে পারো।এতেও আমার আর ইফতি ভাইয়ার কোন সমস্যা নেই।’

একনাগারে কথাগুলো বলে ফেললো নূর।নূরের এমন কথায় জায়ান কোন গুরুত্ব দিলো না।এদিকে ইফতি আর আলিফা হেসে দিয়েছে।আর আরাবী লজ্জায় পারে নাহ মাটি ফাঁকা করে তার মধ্যে ঢুকে যেতে। কি একটা অবস্থা।এইভাবে তাকে লজ্জা দেওয়ার কোন মানে আছে? নূর মেয়েটা অতিরিক্ত কথা বলে।আরাবী ঠোঁট ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।ইফতি হাসি থামিয়ে বলে,

-‘ নূর চল। দেরি হয়ে যাচ্ছে।আসি ভাবি।ভালো থাকবেন।’
-‘ আসি ভাবি।আমি কিন্তু আবার তোমার সাথে দেখা করবো।নেক্সট দেখা হলে কিন্তু আমরা ঘুরতে যাবো বলে দিলাম।আমরা শপিং ও করবো।এখন আমি একা নই তুমিও আছো আমার দলে।দুজন মিলে একসাথে ভাইয়ার পকেট খালি করবো।’

জায়ান বিরক্ত হয়ে ইফতিকে ইশারা করলো নূরকে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। ইফতি ইশারা বুঝতে পেরে সাথে সাথে নূরের মুখ চেপে ধরলো।
-‘ আরে বোন আমার চুপ যা। এতো কথা বলিস নাহ।’
নূর ইফতির হাতে কামড় দিয়ে দিলো।ব্যাথা পেয়ে ইফতি হাত সরিয়ে নিলো।নূর রাগি গলায় বলে,

-‘ আমার কথা বলার সময় ডিস্টার্ব করবা নাহ ভাইয়া।নাহলে কিন্তু খুব খারাপ হবে।’
-‘ আচ্ছা বুঝেছি।চল তো।ভাইয়া রেগে যাচ্ছে।’
নূর মুখ ভেংচি কেটে বাইকে গিয়ে উঠে বসলো ইফতি গিয়ে বাইক স্টার্ট দিয়ে চলে গেলো।ওরা যেতেই জায়ান আরাবীর উদ্দেশ্যে বলে,

-‘ গাড়িতে উঠো।’
জায়ান ফ্রন্ট সিটের দরজা খুলে দিতেই আরাবী গাড়িতে উঠে বসলো।আলিফা নিজেই গাড়ির দরজা খুলে পিছনে বসতে বসতে বলে,
-‘ আমি নিজেই উঠতে পারবো ভাইয়া।আপনি বরং আপনার বউয়ের দিকে নজর দিন।’
জায়ান নিস্তব্ধে বাঁকা হাসলো।বললো,

-‘ নজর আমার সবসময় তার দিকেই থাকে।’
কথাটা শোনা মাত্রই আরাবী চোখ বড় বড় করে তাকালো।লোকটা কিসব বলে আলিফার সামনে।একটুও কি লজ্জা নেই নাকি।হঠাৎ টুং করে একটা মেসেজ আসে আরাবীর ফোনে।আরাবী মেসেজটা ওপেন করে দেখে আলিফার মেসেজ। মেসেজটা পড়েই আলিফা লজ্জায় হাসফাস করতে লাগলো।এতো অস’ভ্য এই মেয়েটা।কিসব নির্ল’জ্জ কথাবার্তা লিখে মেসেজ পাঠাচ্ছে।মেসেজটা আবার পড়ল আরাবী।লাজুক হাসলো ও।আলিফার উদ্দেশ্যে লিখে পাঠালো,

-‘ অস’ভ্য কথা কমিয়ে বল।সে আছে এখানে।আমাকে আর লজ্জা দিস নাহ প্লিজ।’
বান্ধবীর মেসেজের উত্তর দেখে আলিফা মিটিমিটি হাসতে লাগলো।এদিকে জায়ান এসে গাড়িতে বসলো।তারপর বলে,
-‘ সিট বেল্ট বেধে নেও।’

আরাবী জিভ কাটলো।ইস,সে তো এটার কথা ভুলেই গিয়েছিলো। আরাবী দ্রুত সিট বেল্ট লাগালো।জায়ান গাড়ি স্টার্ট দিলো।এর মধ্যে আর কোন কথা হলো নাহ।সবার আগে আলিফার বাড়ি পরায়। আলিফাকে আগে নামিয়ে দিলো জায়ান।আলিফা যাওয়ার সময় আরাবীকে চোখ টিপ মেরে গিয়েছে।বিনিময়ে আরাবী চোখ রাঙ্গানি দিয়েছে আলিফা। তারপর আবারও গাড়ি চলতে শুরু করলো।একেবারে আরাবীদের বাড়ির গেটের সামনে এসে থামলো।আরাবী সিট বেল্ট খুলেছে মাত্র।হঠাৎ জায়ান বললো,

-‘ তোমার ব্যাগটা দেও।’
বুঝতে পারলো না আরাবী।
-‘ অ্যাঁ?’
-ব্যাগ!’
জায়ান চোখের ইশারায় দেখালো।আরাবী এইবার বুঝলো জায়ানের দিকে ব্যাগটা এগিয়ে দিলো।জায়ান ব্যাগটা নিলো না।তবে বললো,
-‘ ব্যান্ডেজ বের করো।’

আরাবীর আজ কি হয়েছে কে জানে?ও মন্ত্রমুগ্ধের মতো জায়ান যা যা বলছে তাই করছে।আরাবী ব্যান্ডেজ বের করে জায়ানের দিকে এগিয়ে দিলো।জায়ান সেটা হাতে নিয়ে বিনাবাক্যে আরাবীর হাত টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।খানিক কেঁপে উঠলো আরাবী তবে কিছু বললো না।

জায়ান খুব যতনে আরাবীর হাতের ব্যান্ডেজটা খুলে ফেললো।খুব নরমভাবে স্পর্শ করছে।যেন আরাবীকে একটু জোড়ে ছুঁলেই আরাবী ব্যাথা পাবে। জায়ানের প্রতিটা স্পর্শে আরাবী দেহ মন কেমন চনমনিয়ে উঠছে। পায়ের তলায় সুরসুরি লাগছে।আরাবী ঠোঁট কামড়ে বসে রইলো।জায়ান সুন্দরভাবে আবারও আরাবীর হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো।তারপর আরাবীর হাত দ্রুত ছেড়ে দিয়ে সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো।আরাবী ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে জায়ানের দিকে।জায়ান চোখ বন্ধ করা অবস্থাতেই শক্ত কন্ঠে বলল,

-‘ যাচ্ছো না কেন?’
আরাবী কথাটা শুনেই হুরমুরিয়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে আসলো।এ কেমন লোক রে বাবা।এইভাবে বলার কি আছে? লোকটা অদ্ভুত। এই নরম তো আবার এই গরম।আরাবী বাড়ির দিকে পা বাড়াতে নিয়েও থেমে গেলো।এভাবে চলে যাওয়াটা ভালো দেখায় নাহ। হাজার হোক লোকটা ওর হবু বর।আরাবী আবার ফিরে আসলো।জায়ানের দিকের দরজার কাছে গিয়ে দাড়ালো।ইতস্ততভাবে জানালায় ঠকঠক আওয়াজ করলো।

-‘ আবার কি চাই?’
নাক মুখ কুচঁকে এলো আরাবীর।এটা কেমন প্রশ্ন?আরাবী নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে বলে,
-‘ জি বাড়িতে আসুন।’
জায়ানের জবাব নেই।আরাবী জানালা দিয়ে ভীতরে জায়ান কি করছে দেখার চেষ্টা করলো কিন্তু কিছুই দেখা যাচ্ছে না।ফোঁস করে শ্বাস ফেলে আরাবী নিজেই আবার বলে,

-‘ বাড়িতে আসুন।এইভাবে গেটের কাছ থেকে চলে যাবেন।বিষয়টা খারাপ দেখায়।’
-‘ আসলে কি খাওয়াবে?’
জায়ানের সোজাসাপটা প্রশ্ন।এমন প্রশ্নে আরাবী কি উত্তর দিবে জানে নাহ।জীবনেও শুনে নি কাউকে বাড়িতে আসার কথা বললে সে ব্যাক্তি সোজাসাপটা জিজ্ঞেস করে ‘আসলে কি খাওয়াবে?’। এই জায়ান নামক ব্যাক্তিটা অদ্ভূত, বড্ড অদ্ভূত।আরাবী ধীর আওয়াজে বলে,

-‘ আপনি আগে আসুন তো।আমি আপনার জন্যে চা,পাকোরা,পাস্তা,নুডুলস।যা যা আপনি খেতে চান বানিয়ে দিবো।’
-‘ বাট আই লাভ সুইটস মোর।’
আরাবী সরল মনে বললো,
-‘ হ্যাঁ তাও বানিয়ে খাওয়াবো।আমি রসমালাই,গোলাপজাম, বানাতে পারি।’
-‘ এইগুলা না অন্য মিষ্টি।’
কথাটা বলেই জায়ান গাড়ির জানালা খুলে অদ্ভূত দৃষ্টিতে তাকালো আরাবীর দিকে।আরাবী সাথে সাথে দৃষ্টি নত করলো।জায়ান বাঁকা হেসে বলে,

-‘ বাড়ি যাও।আমি আসবো নাহ।কারন আমি জানি আমি যেই মিষ্টির কথা বলছি তুমি তা আমায় বিয়ের পর ছাড়া দিতে পারবে না।আর আমিও বিয়ের আগেই মিষ্টি খেতে চাই নাহ।’
গোলমেলে কথাটা বুঝতে পারলো না আরাবী।চিন্তায় বিভোর সে কথাটা নিয়ে।আরাবী ভাবতে ভাবতে বাড়ির দিকে পা বাড়ালো।হঠাৎ পিছন থেকে জায়ান ডেকে উঠলো,
-‘ আরাবী…!’

ইস, কি সুন্দর সেই ডাক।একেবারে আরাবীর কলিজায় গিয়ে লাগে। কারো মুখে নিজের নামটা শুনতে এতো ভালো লাগে জানা ছিলো না আরাবীর।আরাবী সময় নিয়ে পিছনে ঘুরে তাকালো।আরাবী তাকাতেই জায়ান শীতল কন্ঠে বললো,
-‘ আর কখনো আমার সামনে ঠোঁট কামড়াবে নাহ।আই কান্ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ দেন।’

কথাটা শেষ করতে দেরি জায়ানের গাড়ি ছুটিয়ে যেতে দেরি নেই।আরাবী হা করে জায়ানের যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে রইলো।জায়ানের এমন অদ্ভূত কথাবার্তা ওর মাথায় কিলবিল করতে লাগলো।জায়ানের কথার অর্থ ভাবতে ভাবতে আরাবী নিজেদের ফ্লাটে চলে আসলো।লিপি বেগম দরজা খুলে দিলেন।ভ্রু-কুচকে আরাবীকে খানিক দেখলো তবে কিছু বললো না।কারন বসার ঘরে জিহাদ সাহেব বসে আছেন।

তাই মুখ ফিরিয়ে চলে গেলেন।আরাবী বাবার সাথে কিছু কথা বলে রুমে চলে আসলো।গোসল করে ফ্রেস হয়ে আসলো।এখনও ভাবছে জায়ানের কথা।বিরবির করে বার কয়েক জায়ানের কথা আওড়ালো।হঠাৎ কিছু একটা বুঝে চমকে উঠলো আরাবী।থম মেরে দাঁড়িয়ে রইলো।

হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ পর্ব ৪

র’ক্ত হিম হয়ে গিয়েছে ওর।আকস্মিক চাঁপা চিৎকার দিয়ে বালিশে মুখ গুজে দিলো আরাবী।ভাজ্ঞিস কেউ শুনেনি।কারন ওর রুমটা বসার ঘর থেকে একটু সাইডে।আরাবীর লজ্জায় দ’ম বন্ধ হয়ে আসছে।নাক,কান,গাল গরম হয়ে গিয়েছে।আরাবী বালিশে মুখ গুজে বিরবির করলো,
-‘ শেষমেষ কিনা এমন নির্ল’জ্জ ছেলেকেই আমার বর হতে হলো?অস’ভ্য, অ’সভ্য,অস’ভ্য।’

হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ পর্ব ৬