Happily Married part 10 || Writer: Shaanj Nahar Sanjida

Happily Married part 10
Writer: Shaanj Nahar Sanjida

বাহ!কি সুন্দর দৃশ্য!(রামিম সাহেব বসতে বসতে)
তুমি কি সুন্দর দৃশ্য বলছো?আমি তো ভাবছি আজকে নাস্তা খাবো নাকি বিষ!কারণ যে নাস্তা বানাচ্ছে তার উপর আমার কোনো ভরসা নেই।(আলিফ আফসোস করে)
আপনার জন্য দুটোই অফার আছে নাস্তা খেতে পারেন আর না হয় আমি সাদরে আপনাকে নিজের হাতে বিষ খাইয়ে দেবো।কোনটা চান বলুন।মেনুতে সবকিছুই রয়েছে।(আমি হাতে খুন্তি নিয়ে)
তোমাকে এই রূপে দেখে আমার জীবন ধন্য হয়ে গেছে বুঝছো!এখন বিষ খাইলেও কোনো সমস্যা নেই।আর যদি নিজের হাতে খাওয়াও তাহলে আমি তো সাদরে গ্রহণ করবো।
বলেই আলিফ হা করলো।

আমি উনার কান্ড দেখে হেসে উঠলাম।
পরেই আমাদের কথার মাঝখানে বাবাই কাশি দিয়ে উঠলো।
হিয়া মা এসো সব কিছু নিয়ে টেবিলে সাজাও।(আলেয়া বেগম)
আসছি মামনি।
বলেই আমি রান্নাঘরে ঢুকলাম।
তোর এই রূপ আমার অজানা আলিফ!(রামিম সাহেব)
তাই নাকি?এখন থেকে রোজ এই রূপ দেখবে বাবা!(আলিফ হাসতে হাসতে)
আমি তো চাইই তুই খুশিতে থাক।(রামিম সাহেব মুচকি হেসে)
হুম বাবা।এখন থেকে খুশিই থাকবো।(আলিফ)
এইযে এসে পড়েছে সব খাবার।আজ সব গুলো ভাবী রান্না করেছে।যদিও আম্মু দেখিয়ে দিয়েছে।আর আমি সব কিছু টেস্ট করার বিভাগে ছিলাম।সো টেস্ট নিয়ে কোনো চিন্তা নেই।সব কিছু একদম ফাটাফাটি হয়েছে।(আলিশা)
আমিও ওর পাশে দাড়িয়ে সব কিছু শুনে হাসছি।
হিয়া মা। তুমিও আমাদের সাথে বসো।(রামিম সাহেব)
বাবাই তাহলে সার্ভ করবে কে?(আমি)
চিন্তা করো না ওইটা সার্ভেন্ট করে দেবে।আমাদের পরিবারের নিয়ম সবাই মিলে এক সাথে এক বেলা হলেও খাবার খায়।(রামিম সাহেব)
আচ্ছা।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বলেই আমিও বসে পড়লাম।
পরেই সার্ভেন্ট আমাদের খাবার বেরে দিলো।
ভাই কেমন হয়েছে ভাবীর রান্না?(আলিশা অনেক উৎসাহ নিয়ে তাকিয়ে)
আগে সব কিছু টেস্ট করতে তো দে।
বলেই আলিফ সব কিছু একটু একটু টেস্ট করছে আর খুদ ধরছে বলছে এইটার লবণ কম হয়েছে,তো ঐটাই নুন বেশি,আরেকটায় এই কম,তো ওইটা কম।
একটা খাবারের প্রশংসাও করছে না।
কি করছিস আলিফ?মেয়েটা কোতো কষ্ট করে আমাদের জন্য রান্না করেছে আর তুই খুদ বের করছিস?(আলেয়া বেগম)

মা আমি আর কি করলাম?সত্যিই কথাই বলছি।(আলিফ)
আমি আলিফের কাছ থেকে সব গুলো ডিস সরিয়ে বললাম
আপনাকে খেতে হবে না।তাই খাবার গুলো সরিয়ে নিলাম।
আরে কি করছো?আমি খাচ্ছি কই!আমি তো শুধু টেস্ট করছি।(আলিফ)
আলিফ তোর টেস্ট করতে হবে না।আমরাই টেস্ট করছি।হিয়া মা তুমি একদম ঠিক বলছো ওর খেতে হবে না।(রামিম সাহেব)
একদিনেই আমার পরিবারকে আমার শত্রু বানিয়ে ফেললে।এখন তো আমিই সব গুলো একাই খাবো।বলেই আলিফ আমার হাত থেকে খাবার নিয়ে খেতে শুরু করলো।
এইভাবেই হাসি দুষ্টামি করতে করতে আমাদের খাবার শেষ হলো।
আমি অযথাই এতো চিন্তা করছিলাম।উনাদের সাথে আমি হাসিখুশিই থাকবো।কষ্ট পেতে হবে না।এখন তো আমার তাই মনে হচ্ছে।উনারা আমাকে কতো তাড়াতাড়ি আমাকে আপন করে নিলো।আমি এতো তামসা করার পরেও আমাকে কিছু বললো না।আমার সাথে কতো তাড়াতাড়ি মিশে গেলো।আমিও কেমন জানি নিজের কথা ভুলে উনাদের সাথে মিশে যাচ্ছি।তবে কি ছয় মাস পর আমাদের এই সম্পর্ক আমার কাছে বোজা মনে হবে না।(আমি মনে মনে)

সকালে খাওয়া শেষ করে
আমি রুমে এসেই বাবাকে ফোন দিলাম।
আসসালমুআলাইকুম আব্বু।(আমি)
অলাইকুম আসসালাম।তুই কবে থেকে এত ভদ্র হলি। ফোনে প্রথমেই সালাম।(হিমেল সাহেব)
দেখো ভদ্র হয়েছি বলে যে অভদ্র হতে পারবো না এই চিন্তা কিন্তু করো না।আমার অভদ্র হতে কিন্তু এক সেকেন্ডেও লাগবে না।(আমি)
তাতো জানি এতো তাড়াতাড়ি তো ঠিক হওয়ার মেয়ে তুমি না।(হিমেল সাহেব)
তুমি কিন্তু গায়ে পরে ঝগড়া করছো আব্বু।(আমি)
ওপাশ চুপ হয়ে গেলো।তবুও যেনো আমার মনে হচ্ছে কেউ ফুফিয়ে কাদঁছে।
আব্বু।আমি তোমাকে একটুও মিস করি না।(আমারও গলা ধরে আসলো)
আমিও তোকে একটুও মিস করিনি।তাই তো এখন ঝগড়াটাও আমাকে ইমোশনাল করতে পারলো না।(হিমেল সাহেব কাদতে কাদতে)

আব্বু।আমি খুব সুখে আছি।(আমি)
আমি জানি।(হিমেল সাহেব)
তারা কেউ আমাকে তোমার মত বকে না।(আমি)
আমি জানি।(হিমেল সাহেব)
তুমি খুব খারাপ।উনারা অনেক ভালো।(আমি কাপা কাপা কণ্ঠে)
আমি জানি।(হিমেল সাহেব)
আব্বু তোমাকে খুব ভালোবাসি।(আমি মনমরা হয়ে)
আমি জানি।(হিমেল সাহেব)
তুমি কেনো জানো সব?(আমি)
কারণ আমি তোর আব্বু যে।যাক আর মন খারাপ করতে হবে না।আচ্ছা বল তুই সেখানে গিয়ে কি কি করলি?(হিমেল সাহেব)
পরেই আমি আর বাবা মিলে অনেকক্ষন গল্প করলাম।

বিকেলে
আলিফ রুমে বসে বসে খেলা দেখছে। আজ অফিসে যাবে না।কাল থেকে অফিসে যাবে।
আলিফ।তোমাকে কিছু বলার ছিলো।(আমি)
হুম। বলো।(আলিফ)
আমাদের বৌভাত এখন না ছয় মাস পরে করো।আসলে আমি দেখতে চাই এই ছয় মাস পরে আমার জীবন কি হয়?ছয় মাস পরে যদি আমি থাকি তাহলে আমি বৌভাতটা এনজয় করতে পারবো।এখন আমার দম বন্ধ হয়ে আসবে।(আমি নিচের দিকে তাকিয়ে)
আলিফ মুচকি হেসে বললো
আমিও বাবাকে গিয়ে একটু আগেই বলেছি তোমার আর আমার বৌভাত ছয় মাস পরে হবে।আর এতে উনি সায় দিয়েছে।
আপনি কি করে আমার মনের কথা বুঝতে পারেন?(আমি অবাক হয়ে)
কারণ তুমি আমার কাছে একটা খোলা বইয়ের মত।খুব সহজে তোমাকে বোঝা যায়।
বলেই আলিফ আমার নাকে টান মেরে,
বাহিরে গিয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বললো।
আমি একটু পরেই আসছি তুমি তৈরি থাকো।
আপনি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে উনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
উনি কিসের জন্য আমাকে তৈরি থাকতে বলেছে?

কিছুক্ষণ পর
আমি টেবিলে বসে আছি সামনে বসে আছে আলিফ,,
আপনি এইজন্যই আমাকে বলেছেন তৈরি থাকতে?(আমি দাত চেপে)
হুম।(আলিফ হা বোধক মাথা নেড়ে)
আমি আমার বামে তাকিয়ে দেখি সেখানে দাঁড়িয়ে আছে আকাশ আর ডানে দাড়িয়ে আছে পিয়া।আর ওদের হাতে ভার্সিটির নোটস।
এইনে বিয়ের আগের পনেরো দিনের নোটস।
বলেই টেবিলের বা দিকে খাতাটা রাখলো আকাশ।
আর এই নে বিয়ের পরের পনেরো দিনের নোটস।
বলেই টেবিলের ডান দিকে খাতাটা রাখলো পিয়া।
আমি একবার ডান তো একবার বাম দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে ওদের মুখে বিজয়ের হাসি।কারণ আমি যে এখন ফাঁদে পড়ছি।

আমি সামনে বসে থাকা আলিফের দিকে কিউট ফেস করে তাকালাম,,,
কিউট ফেস করে লাভ নেই!এই নোটস গুলো পাঁচ দিনের মধ্যে শেষ করবে!(আলিফ)
নাউজুবিল্লাহ।এই নোটস গুলো শেষ করতে আমার মিনিমাম ছয় মাস লাগবে।(আমি ঠোঁট ফুলিয়ে)
কয় মাস লাগবে?
বলেই আলিফ নিচে থেকে একটা বেতের লাঠি বের করলো।
আপনি এখন আমাকে মারবেন?(আমি ঠোঁট ফুলিয়ে)
তোমার বাবা মানে আমার শ্বশুর মশাই এর সাথে আমার কথা হয়েছে।উনি আমাকে বলেছে তুমি নাকি একদম পড়তে বসো না।(আলিফ)

আমি বসি তো। তা না হলে আমার এতো ভালো রেজাল্ট হয় কি করে?(আমি)
কারণ আঙ্কেল সারারাত তোকে নিয়ে বসে থাকে।তুই নিজে থেকে জীবনেও পড়তে বসিস না।জানেন ভাইয়া আংকেলের যদি চোখ এদিক থেকে ওদিক যায় তবেই ও ফাঁকি দেওয়া শুরু করে দেয়।(পিয়া)
ওই মীর জাফর।(আমি রেগে)
ও তো ঠিকই বলছে।তুই যে আঙ্কেলকে কতো জ্বালিয়েছিস আমরা নিজের চোখে দেখেছি।(আকাশ)
ওই,,,

আমি আকাশকে কিছু বলতে যাবো তার আগেই আলিফ জোরে টেবিলে একটা বারি দিয়ে বললো,,
চুপ।কোনো কথা না।বাবা(হিমেল) তোমাকে লাই দিয়ে মাথায় তুলেছে।
একমাত্র মেয়ে মাথায় তো তুলবেই!(আমি ঠোঁট ফুলিয়ে)
কিন্তু আমি তেমন কিছু করবো না।খালি একটু রেজাল্ট খারাপ আসুক।তারপর দেখো কি করি?(আলিফ)
কি শাস্তি দিবেন?(আমি ভ্রু কুঁচকে)
আলিফ আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,,
তোমাকে তো মারতে পারবো না।তবে রোমান্টিক শাস্তি দিবো।
বলেই আকাশ আর পিয়ার সামনেই কানে কিস করলো।
আর এইটা দেখেই আকাশ আর পিয়া হা হয়ে গেলো।কিন্তু আমি তো জানি ওই বদ দুটো আমার এই অবস্থা দেখে খুবই মজা নিচ্ছে।কারণ আমাকে অবশেষে কেউ জব্দ করতে পেরেছে।
আমি উনার থেকে দূরে সরে আসলাম,,,

এই দে সব নোটস।পাঁচ দিন না আমি তিন দিনেই সব শেষ করে দেবো।
বলেই মনোযোগ দিয়ে পড়তে শুরু করলাম।এই লোকের ভরসা নেই।এখন পিয়া আর আকাশ ছিলো।উনার কথা না শুনলে না জানি আর কার সামনে কি করে বসে!আমি নির্লজ্জ কিন্তু উনি আমাকেও ছড়িয়ে যাবে নির্লজ্জের দিক থেকে।
তোমরা বাহিরে যাও।বাগানে গিয়ে বসো।সেখানে আলিশা আর পিয়াস আছে।আমি ওকে পরিয়ে আসছি।(আলিফ)
জ্বি ভাইয়া।
বলেই আকাশ আর পিয়া নিচে চলে গেলো।
কিছুক্ষণ
আলিফ?(আমি)
কি হলো?(আলিফ)
আজকে এক জায়গা থেকে এসেছি।যদি না পরি।(আমি কিউট ফেস করে)
ভুলেও না।আজকে তুমি পড়বে।আর শুধু আজকে না প্রতিদিন পড়বে।আমি এসে তোমার পড়া নিবো।(আলিফ)
তার মানে আপনি পড়ানোর সময় আমার পাশে থাকবেন?(আমি অবাক হয়ে)
হুম।(আলিফ আমার নোটস গুলো দেখতে দেখতে)
আমি শুধু মুচকি হাসি দিলাম।কিন্তু আলিফের মুখ দেখে মনে হচ্ছে উনি আমার মুচকি হাসির কারণ এখনো বুঝতে পারলো না।কিন্তু আমি তো জানি আমার এমন বাচ্চামি ব্যবহার করার কারণ।

দুই ঘন্টা পর
আমি অর্ধেক শেষ করে ফেলেছি।(আমি)
হিয়া?(আলিফ)
হুম।(আমি)
তুমি এত ফাস্ট সব কিছু ধরতে পারো।তাহলে কেনো নিজে নিজে পড়ো না।তুমি তো বাচ্চা মেয়ে না যে তোমাকে বসে থেকে পড়াতে হবে।তুমি এখন ভার্সিটিতে।(আলিফ)
আজকেই আমার ব্যাপারে সব জেনে ফেলবেন!(আমি মুচকি হেসে)
তুমি যেমন দেখাও তুমি তেমনটা নও হিয়া।অনেক রহস্যময়ী তুমি।(আলিফ মনে মনে)
বাকি গুলো রেখে দাও।কালকে পড়বে।এখন তোমার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দাও।(আলিফ আমার মাথায় বুলাতে বুলাতে)
ওকে।
বলেই আমি নিচে নেমে গেলাম।আলিফ আসলো না ওর কি বলে একটা কাজ আছে।

বাগানে
আকাশ,পিয়া,আলিশা আর পিয়াস ভাইয়া বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে।বাসায় আর কেউ নেই।বাবাই অফিসে গেছে।মামনি উনার কোনো এক ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে গেছে।
আরে তোরা এখানে বসে আছিস?দাড়া আমি চা নাস্তা নিয়ে আসি।(আমি ওদের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে)
না ভাবী তুমি বসো।আমি যাই।আসলে আমি একদমই ভুলে গেছিলাম। সরি।
বলেই আলিশা উঠতে লাগলো তখন পায়ে পা লেগে আকাশের উপর পড়ে গেলো।
পিয়া হা হয়ে তাকিয়ে রইলো।পিয়াস ভাইয়া হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
আমি বুঝলাম না।আমার বিয়ের দিন থেকেই কেউ না কেউ পড়ছে।আর সাথে সাথে কেউ না কেউ ধরছে।কি হচ্ছে?(আমি অবাক হয়ে বসতে বসতে)
আমার কথা শুনে আবার পিয়া লজ্জা পেয়ে গেল।আর পিয়াস ভাইয়া মিটমিট করে হাসতে লাগলো।
আবার শুরু হয়েছে একজন লজ্জা পাচ্ছে আরেকজন মিটমিট করে হাসছে।সবার ভীমরতি হয়েছে।(আমি মনে মনে)
আলিশা তাড়াতাড়ি করে ভিতরে চলে গেলো।কিছুক্ষণ পর এখন সার্ভেন্ট এসে চা নাস্তা দিয়ে গেলো।কিন্তু আলিশা আর আসলো না।
পরেই আলিফ আসলো আর আমরা সবাই মিলে আড্ডা দিতে লাগলাম।

পরের দিন
আমি তোমাকে ভার্সিটিতে নিয়ে যাবো।আবার নিয়ে আসবো।(আলিফ তৈরি হতে হতে)
আপনার কোনো সমস্যা হবে না?(আমি)
না।এইটুকু তো আমি আমার চড়ুই পাখির জন্য করতেই পাড়ি।(আলিফ আমার গালে হাত রেখে)
এখন আপনি আমাকে লাই দিয়ে মাথায় তুলছেন!(আমি)
ব্যাপার না।চলো।
বলেই আমি আর আলিফ নেচে নামলাম।
পরেই সবাই মিলে একসাথে ব্রেক ফাস্ট করে করলাম।তারপর সবার থেকে বিদায় নিয়ে ভার্সিটিতে গেলাম।আলিফ আমাকে সেখানে পৌঁছে দিয়ে নিজে অফিসে চলে গেলো।

ভার্সিটি শেষ হতেই আমি বেরিয়ে দেখলাম আলিফ ওর গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে বাহিরে,,
আলিফ।আপনি এসেছেন?(আমি মুচকি হাসি দিয়ে)
আমি প্রমিজ করেছিলাম।এখন গাড়িতে উঠো।(আলিফ)
হুম।
বলেই আমি গাড়িতে উঠে বসলাম।

বাড়িতে পৌঁছে
আমি বাড়িতে ঢুকতেই কারো আওয়াজ পেলাম।
বাড়িতে মনে হয় মেহমান এসেছে!(আমি গাড়ি থেকে নেমে)
আজকে রিয়া আন্টির আসার কথা!(আলিফ)
রিয়া আন্টি?(আমি অবাক হয়ে)
পিয়াসের ফুপি।আর আমার আম্মুর বেস্ট ফ্রেন্ড।তোমার লেহেঙ্গা আর জুয়েলারি সেই ডিজাইন করেছে।বিয়ের দিন ব্যবসার কাজে বাহিরে ছিলো।তাই আসতে পারেনি।উনি অনেক ট্যালেন্টেড।একদম বিজনেস ওম্যান।খুবই গোছানো।দেখলে খুবই অবাক হবে।(আলিফ)
এতো তারিফ করছেন দেখা তো করতেই হবে।আর উনাকে ধন্যবাদও দেয়া দরকার এতো সুন্দর একটা লেহেঙ্গা দেয়ার জন্য।(আমি বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে)
আচ্ছা।চলো।(আলিফ)

বাড়ির ভিতর ঢুকেই আমি ওই রিয়া নামের মহিলাকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।আলিফ সত্যিই বলেছে আমি উনাকে দেখেই অবাক হয়ে যাবো।আমি সত্যিই খুবই অবাক হয়ে গেছি।
আমি উনার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে চলতে লাগলাম,,
হিয়া মা।আসো তোমার সাথে উনার পরিচয় করিয়ে দেই।(আলেয়া বেগম)
উনাকে চিনতে আমার কোনো পরিচয় লাগবে না।(আমি রিয়া আন্টির দিকে তাকিয়ে)
উনি আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আপনার মত মানুষকে আমার থেকে ভালো আর কেউ চেনে না।আমার এখন ইচ্ছে করছে আপনাকে এই বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেই।কারণ এই বাড়ির মানুষ গুলো খুব ভালো।আপনার মত নোংরা মানুষ গুলো এসে এখানের পরিবেশটা আরো নোংরা করবে।
বলেই সেখানে আর এক মুহুর্ত না থেকে আমি চলে আসলাম রুমে।
রিয়া বেগম সেখানে স্থির দাড়িয়ে রইলো।
আলিফ হিয়া এইসব কি বলে গেলো?(আলেয়া বেগম অবাক হয়ে)
আমি দেখছি মা।
বলেই আলিফ রুমে হিয়ার পিছু পিছু গেলো।

Happily Married part 9

রুমে,,
আলিফ গিয়ে দেখলো হিয়া,ওর বিয়ের লেহেঙ্গা আর জুয়েলারি বের করেছে।আর কেচি নিয়ে লেহেঙ্গা কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
হোয়াট দা হেল হিয়া!কি করছো তুমি মাথা খারাপ হয়ে গেছে!
বলেই আলিফ আমার হাত থেকে লেহেঙ্গা আর কেচিটা নিয়ে গেলো।
আপনিই তো বলেছেন ওই মহিলা নাকি এই লেহেঙ্গা বানিয়েছে।তাই আমি এইটা এখন কুচি কুচি করে কাটবো।আগে জানলে জীবনেও এই লেহেঙ্গা পড়তাম না।
বলেই আমি আলিফের কাছ থেকে লেহেঙ্গাটা নিতে চাইলে আলিফ তা আরো দূরে সরিয়ে বললো,,,
তোমার সব কিছু সহ্য করি বলে।তুমি যা ইচ্ছে তাই করবে?তুমি জানো কতো যত্ন করে আন্টি এই লেহেঙ্গা বানিয়েছে?যাও এক্ষুনি গিয়ে আন্টিকে সরি বলবে।(আলিফ রেগে)
আলিফ দেখলো হিয়ার চোখ গুলো রাগে লাল হয়ে আছে।
কি বললেন?আপনি আমাকে সহ্য করেন?আমি ভাবছিলাম,,,না থাক আপনি যেহেতু ওই মহিলার কাছের জন আপনিও উনার মতই হবেন।ধন্যবাদ আপনাকে আমাকে এতো দিন সহ্য করার জন্য!আর আপনাকে কষ্ট করে আমাকে সহ্য করতে হবে না।

বলেই আমাকে বেরিয়ে যেতে লাগলাম।তখনই আলিফ আমাকে ধরে বললো,,
হিয়া আমি ঐভাবে বলতে চাইনি।তুমি যা করেছো ভুল।
প্রথম কথা আপনি কিভাবে বলেছেন আমি জানতে চাইনি।ছয় মাস থাকতে বলেছিলেন না?এক মাসও হয়নি আপনি অসহ্য হয়ে গেছেন।ছয় মাস তো পরেই আছে।আর দ্বিতীয় কথা আমি ভুল কিছু বলেনি।তাই আমাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।ওই মহিলার সাথে যাদের সম্পর্ক তাদের আমি ঘৃনা করি আর এখন তার মধ্যে আপনিও আছেন।আজকের পর থেকে আপনি আপনার পথে আমি আমার পথে।আমাদের বিয়েটা কখনও Happily Married হওয়ার জন্য তৈরি হয়নি।
বলেই উনার হাত ছাড়িয়ে হাত ব্যাগটা নিয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম।
আলিফ সেখানেই হিয়ার কথা শুনে স্থির হয়ে দাড়িয়ে আছে।

Happily Married part 11