Infinite Love part 10+11+12

Infinite Love part 10+11+12
Writer: Onima

আমি অবাক হয়ে ওনাকে দেখছি, শার্ট ঘামে ভিজে গেছে, শার্টের বেশ কয়েকটা বোতাম খোলা, হাতা এলোমেলো ভাবে ফোল্ড করা, কলারটা উচু করা, চুলগুলো এলোমেলো, চোখ লাল হয়ে আছে, ডান হাত হালকা ছিলে গেছে, হালকা রক্ত পরছে, এ কী করে এসছে? এমন লাগছে কেন? কী করতে গেছিলো উনি?
এমনিতেই অমন আকষ্মিক ঘটনায় আমি ভয় পেয়ে গেছি, তারওপর একে এভাবে দেখে আমার মাথা ঘুরছে। কিন্তু এমন এলোমেলোভাবেও কী সুন্দরই না লাগছে। কিন্তু এমন অবস্হা করল কীভাবে? রাগে ফোস ফোস করছে AD.

তখনি আদিব ভাইয়া ওনার কাছে গিয়ে বলল
আদিব ভাইয়া: কীরে এডমিট করে এসছিস না পাঠিয়ে দিয়েছিস?
AD: ফেলে রেখে এসছি। ( রাগে ফুসতে ফুসতে)
আদিব ভাইয়া: কীহ ওভাবেই ফেলে রেখে এলি? লোক দিয়ে পাঠিয়ে দিতে পারতি।
AD: প্রয়োজন মনে করিনি। ( কঠোর গলায়)
আদিব ভাইয়া: কিন্তু জেনারেলি তুই নিজ দায়িত্বে এডমিট করিয়ে দিস।
AD: সব অপরাধের শাস্তি এক হয়না। (গায়ের ধুলো ঝারতে ঝারতে)
.
ইশরাক ভাইয়া: নিজে উঠতে পারবে?
.
AD: এক মাসের মধ্যে না। (কলার আর হাতা ঠিক করতে করতে)
.
আদিব ভাইয়া: উফ তুইও না.. কজন? আর কোথায়?
.
AD: দুজন। বাংলা একাডেমি গেইটের সামনের রোডে। (হাত দিয়ে চুল সেট করে)
.
আদিব ভাইয়া হতাশাজনক একটা চাহনি দিয়ে নিজের ফোনটা বের করলেন।
.
আর আমরা হা করে ওনাদের কথপোকথন শুনছি, আমি আর আমার বান্ধবীরা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেও AD এর বন্ধুদের রিয়াকশন দেখে মনে হল যেন যা হবার তাই হয়েছে। এমনটাই হবার কথা। কিন্তু হোয়েছেটা কী?
.
আদিব ভাইয়া কোথায় যেন ফোন করল, ফোনে বলল।
.
আদিব ভাইয়া: বাংলা একাডেমির সামনে দুজন আহত অবস্হায় পরে আছে অবস্হা ক্রিটিকাল, এসে নিয়ে যান।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বলেই ফোনটা কেটে দিল, এখন আমার কাছে ব্যাপারটা ক্লিয়ার হতে লাগল। That means AD ওই দুজনকে? কিন্তু কেন? জাস্ট আমার ওরনায় হাত দিয়েছে বলে? কে হই আমি ওনার? শুধুই মানবতার খাতিরে? নাকি হিরোগিরি দেখাতে? তাই হবে তাছাড়া আর কী?
.
হঠাৎই AD এসে আমার হাত ধরল তারপর আমাকে টানতে টানতে কোথাও নিয়ে যেতে লাগল। সবাই আমাদের পেছন পেছন আসছে, সবাই বোঝার চেষ্টায় আছে কী হয়েছে কী? এডির মুখ চোখ দেখে কিছু বলার সাহস পাচ্ছিনা। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি আর সেদিকেই যাচ্ছি যেদিকে নিয়ে যাচ্ছে।
.
আমাকে নিয়ে একটা ফার্মিসিতে ঢুকলো সে, তারপর বলল
.
AD: একটি ফার্সট এইড বক্স দিন।
.
ফার্সট এইড বক্স নিয়ে সে আমায় ওখানেই হাত ধরে বসালেন আমি অবাক চোখে তাকে দেখছি। ওরাও নিরব দর্শকের মত ব্যাপারটা দেখছে। উনি বললেন
.
AD: ওরনাটা সরাও।

আমি চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছি তার দিকে। সে পাত্তা না দিয়ে নিজেই আমার কাধের কাছ ধেকে হালকা করে ওরনাটা সরিয়ে দিল। তারপর আস্তে করে আমার কাটা জায়গাটায় ঔষধ লাগিয়ে ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিল।
.
আজব! উনি কিকরে দেখলেন এটা? আমিতো ঢেকে রেখেছিলাম। আর কাউকে বলিওনি তাহলে?
.
AD: নিজের যত্ন না করতে পারলে অন্যের সেবা করবে কীভাবে?
.
বলেই উঠে যাচ্ছিলেন কিন্তু আমি ওনার হাত ধরে ফেললাম, উনি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে, বাকিরা তো অলমোস্ট হা করে তাকিয়ে আছে। আমি নিজেও জানিনা আমি কী করছি আর কেন করছি।
.
আমি টেনে তাকে বসিয়ে দিলাম, সেতো অবাক চোখে তাকিয়েই আছে। আমি ওনার ডান হাত ধরে উনার ছিলে যাওয়া অংশটাতে আলতো হাতে পরিস্কার করে মেডিসিন লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিলাম, তারপর ওনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনি এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি নিজেকে সামলে বললাম।

আমি: অন্যের খেয়াল রাখার সাথে সাথে নিজের খেয়ালতাও রাখতে হয়।
.
উনি কিছুই বলছেননা একবার আমার দিকে আরেকবার ব্যান্ডেজের দিকে দেখছেন, ব্যাপারটা হজম করতে পারেনি হয়তো।
.
ইশরাক ভাইয়া: ভাবি বাড়ি যাবেনতো নাকি?
.
আমি: হ্যা যা.. কীহ? কী বললেন?
.
হঠাৎ AD এর কাশি উঠে গেল আর কনোরকমে কাশি থামিয়ে ও রাগী চোখে ইশরাক ভাইয়ার দিকে তাকালেন। ইশরাক ভাইয়া থতমত থেয়ে বললেন।
.
ইশরাক ভাইয়া: নাহ মানে.. ওই মুখে এসে পরেছে, আজকে আমার বাসায় আমার ভাবি এসছে তো তাই আরকি বেরিয়ে গেছে মুখ থেকে।
.
আমি: ওহ

আমি ব্যাপারটা অতটা গুরত্ব দিলামনা। তারপর যে যার মত ফিরে গেলাম বাড়িতে।
.
ওরনা দিয়ে ব্যান্ডেজটা ঢেকে রাখার কারনে বাড়িতে কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়নি। কিন্তু আপিকে সবটাই বল্লাম আর আপি এই নিয়ে একদফা হাসল।
.
রাতে একটু জর আসায় পরেরদিন মেডিকেলে গেলামনা.. সকালে দশটার দিকে আপি ডাকতে এল কফি নিয়ে।
.
অাপি: অনি! জরটা কমেছে ( কপালে হাত দিয়ে)
.
আমি: হুম অনেকটাই কমে গেছে। (আপির হাত থেকে কফিটা নিয়ে)
.
আপি : ব্যাথা আছে? ( আমার পাশে বসে)
.
আমি: নাহ এখন আর নেই।
.
আপি: তা থাকবে কেন? কেউ খুব যত্ন করে ঔষধ লাগিয়ে দিয়েছে যে।
.
আমি: মানে?
.
আপি: নাহ এমনিই বললাম আরকি
.
আমি: তুমি আজকাল এমনি এমনি সব কিছু বলছ, ব্যাপারটা কী?

আপি: কী আর ব্যাপার হবে ফ্রেশ হয়ে নিচে এসো।
.
বলেই আপি চলে গেল আর আমিও ফ্রেশ হয়ে নিলাম, চেন্জ করলামনা যেহেতু বাড়িতেই আছি, একটা সফট অ্যাস কালার টি শার্ট, আর কালো প্লাজো প্যান্ট পড়া ছিলাম, খোলা চুলটা কোনোরকম হাত দিয়ে সেট করে, হাতে একটা ওরনা নিয়েই নিচে গেলাম।
.
নিচে গিয়ে দেখলাম বাসায় ছেলেরা কেউ নেই। তাই ওরনাটা সোফায় ফেলে রাখলাম, আপি ডাইনিং টেবিলে বসে ফোন টিপছে, আমিও আপির পাশে বসে বললাম।
.
আমি: আম্মু আমাদের ব্রেকফাস্ট দাও।
.
আম্মু কিচেন থেকে হাক ছেড়ে বলল
.
আম্মু: এখন না পড়ে খাবার পাবে।
.
আমিতো বড়সর ঝটকা খেলাম, যেই আম্মু দেড়িতে খাওয়ার জন্যে এত বকে সেই আজ দেরিতে খেতে বলছে? Like seriously?

অবাক হয়ে আপির দিকে তাকালাম আপি একটা মুচকি হাসি দিল। আমি ভ্রু উচিয়ে জিজ্ঞেস করলাম ব্যাপার কী? আপি ফিসফিসিয়ে বলল
.
আপি: দেখতেই পাবে।
.
দূর সবিই পাগল হয়ে গেছে নাকি? ইদানিং ঘরে বাইরে খালি একেকজন পাগলের মত বিহেভ করছে? আল্লাহ আমি ডাক্তার ঠিকি হতে চেয়েছিলাম কিন্তু পাগলের নয়, প্লিস বাচান আমাকে।
.
সোফায় বসে ফোন টিপে বোর হচ্ছি? আম্মু খেতেও ডাকছেনা, আপি আর সুলতানাপ্পিও রান্না ঘরে সেটে আছে, হচ্ছেটা কী? উফ!
.
বিরক্ত হয়ে গেলাম রান্নাঘরে গিয়ে দেখি পদের অভাব নেই, ব্রেকফাস্টে এত পদ? তাই অবাক হয়েই আম্মুকেবললাম।
.
আমি: এত রান্না, এত রান্নাতো মানুষ জামাই আদর করতে রান্না করে, তুমি কার জন্য করছ? তোমার তো জামাই নেই
.
আম্মু: তোমার জানতে হবেনা যাও এখান থেকে কাজ করতে দাও।

আপি আর সুলতানাপ্পি মুখ টিপে হাসছে। আজব আজকাল দামিই নেই আমার কোন? গিয়ে গাল ফুলিয়ে সোফায় আধশোয়া হয়ে গেমস খেলছি। আপি এসে পাশে বসে বলল।
.
আপি: এত অধৈর্য কেন তুমি?
.
আমি: কারন হেয়ালিটা তোমরা একটু বেশিই কর।
.
আপি: আরে শোনোতো..
হঠাৎই আম্মুর ডাক এল আর আপি কিচেনে চলে গেল। আমি আবার গেইমস এ মন দিলাম।
.
কিছুক্ষন পর কলিং বেল বাজল, নিশ্চই অহি এসছে, এই সময় ও ছাড়া আর কে আসবে? ভাল্লাগেনা এখন আবার উঠতে, আম্মু হাক দিলো দরজা খোলার জন্য, তাই একগাদা বিরক্তি নিয়ে যেভাবে আছি সেভাবেই গেলাম দরজা খুলতে।
.
দরজা খুলে সামনে না তাকিয়েই বললাম..
দরজাটা খুলে সামনে না তাকিয়েই বললাম
.
আমি: দেখো ওহি স্কুল থেকে এসছো এখন একদম ছোটাছুটি করবেনা, আর কোথাও বসবেও না রুমে গিয়ে ডিরেক্ট জামাটা চেন্জ করে ফ্রেশ হয়ে তবেই নিচে এসে বসবে। Get it?

বলেই সামনে না তাকিয়ে এলোমেলো চুলগুলো নারতে নারতে বড় সোফায় আধশোয়া হোয়ে এক পায়ের ওপর আরেক পা তুলে আবার গেইমস খেলায় মনোযোগ দিলাম । হঠাৎ ফিল করলাম যে সামনের সিঙ্গেল সোফায় কেউ বসল। নিশ্চই ওহি! উফ এই মেয়েটা একটা কথাও শোনেনা। তাই বিরক্ত হয়েই বললাম
.
আমি: ওহি আমি তোমাকে চেন্জ করে তারপর বসতে বলেছি। ( ফোনে চোখ রেখেই)
.
কিন্তু কোন সাড়া পেলাম না। তাই এবার একটু রেগেই তাকালাম আর তাকিয়েই আমি সেটাই দেখলাম যেটা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুুত ছিলাম না, আমি এমন চমকালাম যে আমার হাত থেকে মোবাইলটা পরে গেল আর মুখ থেকে সেই বিশ্ববিখ্যাত ‘আআ’ নামক চিৎকার বেরিয়ে এল। যেটা শোনার পর যে কেউ ঘাবড়ে যাবে কিন্তু আমার সামনের ব্যাক্তিটি ঘাবড়ালো তো নাই বরং বিরক্ত হয়ে তাকালো।
.
আসলে ব্যাপারটা হল এই যে আমি তাকাতেই দেখলাম মিস্টার হিরো I mean AD সাহেব পায়ের ওপর পা তুলে হেলান দিয়ে বসে এক দৃষ্টিতে আমাকে পা থেকে মাথা অবধি স্কান করছে। তাই চমকে গিয়ে চিৎকার মারলাম আরকি।

কিন্তু এ বেচারার ফেস রিয়াকশন দেখে বুঝলাম, এই চিৎকার এর জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা। তাই বিরক্তি নিয়েই বলল
.
AD: What the hell? এভাবে চেচালে কেনো?
.
কিছু বলতে যাবো তার আগেই আমার নিজের অবস্হার কথা মাথায় এলো, আল্লাহ আমিতো টি শার্ট আর প্লাজো পরা, তাও হাই নেকের টি শার্ট, চুলটাওতো এলোমেলো, ওরনা? ওরনা কই আমার? ড্যাম! আমিতো আমার অবস্হা দেখে, লজ্জায় ওনার দিকে তাকাতেই পারছিনা আর এখন চেন্জ করতে গেলেও ব্যাপারটা হাস্যকর হবে, তাই সোফার ওপর থেকে তাড়াতাড়ি ওরনাটা গায়ে জরিয়ে, চুলগুলো হাত দিয়ে সেট করে নিলাম।
.
ওনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে, হয়তো আমার কান্ডকারখানা দেখছে। কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বলল
.
AD: চেচালে কেন ওভাবে?
.
আমি: আ..আপনাকে দেখে ভয় পপেয়ে গেছিলাম।
.
AD: আমাকে দেখে ভয় পাবার কী আছে? আমি বাঘ ভাল্লুক রাক্ষস নাকি দানব কোনটা?
.
আমি: তার চেয়ে কম কিছুওনা।

AD: What?
.
আমি: Nothing…! I.. I mean আপনি এখ্খানে কী করছেন?
.
AD: তোতলানো বন্ধ করো I don’t like it..
.
হুহ I don’t like it.. তোমার লাইক আনলাইক দিয়ে আমি কি করব ভাই?
.
AD: আর দাওয়াত দিয়ে এনে জিজ্ঞেস করছ কেন এসেছি?
.
আমি: কিহ! আমার কী খেয়ে দেয়ে কোন কাজ নেই যে আপনাকে দাওয়াত করব?
.
AD: তুমি করোনি তোমার ফ্যামিলি মেমবাররা করেছে।

আমি: ওরা কেন আপনাকে ইনভাইট করবে? Who are you? কে হন আমাদের? আত্নীয় হলে ঠিকি চিনতাম তাহলে?
.
AD: আমি..
.
তখনি আপি এসে বলল
.
আপি: কীরে এভাবে চেচালি কেন?
.
আমি: দেখোনা আপি..
.
আমি কথা শেষ করার আগেই আপি AD এর দিকে তাকিয়ে বলল।
.
আপি: আরেহ এসে পোরেছো তুমি? এত দেরি করলে যে?

AD: আসলে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেল। কেমন আছো?
.
আপি: এইতো। তুমি?
.
AD: বিন্দাস!
.
আপি: ওয়েট ময়নাপ্পিকে ডাকছি।
.
AD: একদম ব্যস্ত হতে হবেনা। এখানেই আছি আমি। Where is my junior champion?
.
আপি: কে কাব্য?
.
AD: Yeah..

আপি: ওহ প্রাইভেট পরতে গেছে এক্ষুনি চলে আসবে।
.
আমি অবাক হয়ে এদের দেখছি। তারমানে দুজন দুজনকে চেনে? আম্মুও তো চেনে মনে হচ্ছে। খালি আমিই চিনিনা? আর ওনাকে দেখেও মনে হচ্ছেনা আমাকে এখানে দেখে উনি অবাক হয়েছেন, তাই আমি আপিকে জিজ্ঞেস করলাম
.
আমি: আপি তুমি চেনো একে?
.
আপি: চিনবোনা কেন? ও তো..
.
তখনি আম্মু কি হোয়েছে জিজ্ঞেস করতে করতে এলো এসে AD কে দেখেই বলল
.
আম্মু: আরে বাবা? তুমি এসেছো? এত দেরি করে আসে কেউ? কখন থেকে ওয়েট করছি।
.
AD আম্মুর সামনে গিয়ে বলল।
.
AD: আসসালামুয়ালাইকুম মামনী।
.
এরপর পেছনে গিয়ে আম্মুর দুই কাধে হাত রেখে বলল
.
AD: And I’m so sorry! সব দোষ ঘুমের, ওই ভাঙতে লেইট করেছে, আমার একদমি দোষ নেই। ( বাচ্চাদের মত করে)
.
আম্মু AD এর কান ধরে বলল

আম্মু: আমার সাথে ফাজলামি, বাদর ছেলে।
.
AD: তোমারিতো। কেমন আছো বলো। আর আঙ্কেল কোথায়?
.
আম্মু: খুব ভালো আর একটু বাজারে গেছে। বাকিরাও এলে ভালো লাগতো আসলনা কেন।
.
AD: একটু ব্যস্ত তবে ফ্রি হলে আসতে পারে।
.
আমি খালি হা করে সব শুনছি, এমন ভাবে কথা বলছে দুজন জেনো মা ছেলে। ঢং। সবকিছুই তামিল সিনেমার মত লাগছে। সবি দেখছি, সবি শুনছি কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছিনা। আম্মুর সাথে তো খুব ভালো সম্পর্ক মনে হচ্ছে, মামনী বলে ডাকছে? আব্বুকেও চেনে? আমাদের কোন আত্নীয় নাকি এ? উফফ কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা।
.
তখনি সুলতানাপ্পি এসে বলল

সুলতানাপ্পি: আরে তুমি কখন এলে?
.
AD: এইমাত্র।
.
বলেই সুলতাপ্পিকে এক হাতে আলতো করে হাগ করে বলল
.
AD: কেমন আছো ফুপিমনি?
.
ফুপিমনি? সুলতানাপ্পিকেও চেনে? আল্লাহ নিজেকে এখন সত্যিই এলিয়েন মনে হচ্ছে।
.
সুলতানাপ্পি: খুব ভালো এত লেইট করতে হয়?
.
AD: অন্ত ওহি কই?
.
সুলতানাপ্পি: অন্ত ঘুমোচ্ছে আর ওহি স্কুলে এখনি চলে আসবে। আর কেউ আসেনি।

AD: নাহ! একটু বিজি আছে।
.
আম্মু: বলোনা ওদের দূপুরে চলে আসতে।
.
হঠাৎই আব্বুর আগমন হল আর আব্বু বলল
.
আব্বু: বলো না, বলে দিয়েছি আর ওরা আসছে দূপুরে।
.
আব্বুকে দেখেই আদ্রিয়ান এগিয়ে গেল আব্বুর হাত থেকে বাজারের ব্যাগ নিয়ে সোজা কিচেনে রেখে এল। বাহবা কী কেয়ারিং?
.
এসেই আব্বুকে বলল
.
AD: আসসালামুয়ালাইকুম আঙ্কেল।
.
আব্বু: ওয়ালাইকুমাসালাম! ইয়াং ম্যান!!

বলেই দুজন দুজনকে জরিয়ে ধরল। বাপরে কোন জন্মের বাপ ছেলে এরা? এত আদিক্ষেতা কীসের, কিছুই মাথায় ঢুকছে না!
.
AD: তো? কেমন আছো? Feet?
.
আব্বু: As usual..
.
AD: হুম দিন দিন ইয়াং হয়ে যাচ্ছো?
.
আব্বু: হাহা তাই নাকি?
.
AD: একদম!
.
আব্বু: আঙ্কেলটা কার দেখতে হবে তো।
.
AD: Point আছে!

উফফ এগারোটার বেশি বাজে এরাকি খাবেনা নাকি? খুব খুদা লাগছে। তারওপর এদের এই পেচাল। যার আগা মাথা আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা। চরম বিরক্তি লাগছে। কিন্তু এডি সামনে বলে কিছু বলতেও পারছিনা আর এদের কথা শেষি হচ্ছেনা।
.
তাই ওপরে গিয়ে টি শার্ট টা চেন্জ করে একটা সাদা লং টপ পরলাম। আর টি শার্টটা একটা আছাড় মারলাম এর জন্যই আজ আমার প্রেসটিজ পানচার হলো। কেনযে এগুলো পড়ে নিচে নামলাম ভাল্লাগেনা। গাল ফুলিয়ে বসে আছি, আর ভাবছি AD এর সাথে আমাদের ফ্যামিলির কী সম্পর্ক? সবাই ওকে কীকরে চেনে? আর সবার সাথে কী সুন্দর ফ্রি ভাবে কথা বলছে? উফ কিছুই ভাবতে পারছিনা। কিছুদিন যাবদ যা যা হচ্ছে কিছুই আমার মাথায় ঢুকছেনা। পাগল হয়ে যাবো আমি।
.
নাহ খিদেটা আর সহ্য করা যাচ্ছেনা। তাই নিচে গিয়ে আম্মুকে বললাম
.
আমি: আম্মু? খেতে দেবে আজকে? ( চিৎকার করে)
.
আম্মু: কী হচ্ছে কী অনি? বাড়িতে একজন মেহমান এসছে! সে খেতে না বসলে তোমাকে কীভাবে খেতে দেই।

আমি: তো তোমার মেহমান কে বলোনা খেতে বসতে!
.
আম্মু: তোমার কী মনে হয়? বলি নাই আমি? ওহি আর কাব্য এলেই খাবে বলল।
.
আল্লাহগো এত মেনার্স কই রাখমু?
.
আমি: আমাকেতো খেতে দাও?
.
আম্মু: যাও এখান থেকে সময় হলে আমিই ডাকবো।
.
আমি: আরেহ ক্ষিদে পেয়েছে তো।
.
আম্মু: যেতে বলছি আমি।
.
রেগেমেগে চলে এলাম হচ্ছেটা কী? আমার কোন মূল্যই নেই। কে ওই AD. কোন কালের আত্নীয় আমাদের? ওর জন্যে এত কিছু? এতো আদিক্ষেতার কী আছে? এসব ভাবছি আর হাটছি। AD এর চৌদ্দগোষ্টি উদ্ধার করতে করতে হাটছি হঠাৎই কারো সাথে ধাক্কা খেলাম।
.
আমি: কোন কানারে চোখে দেখতে পাওনা নাকি। আমার কপালটা গেল রে! কপালের আর কী দোষ? দোষতো আমার কপালের লেখার। আল্লাহ এই কপাল উঠাইয়া নাও। এই কপাল নিয়া আর বাচতে ইচ্ছে করে না।

এসব বলে সামনে তাকাতেই দেখি মি: হিরো দুই হাত ভাজ করে ভ্রুটা যথারীতি কুচকে দাড়িয়ে আছে। আর বোকার মত আমি ড্যাপ ড্যাপ করে তাকিয়ে আছি ওর দিকে। আর ও এক হাত দিয়ে নিজের থুতনি ধরে আমাকে স্কান করছে।
.
সেটা দেখে আমি ভ্রু কুচকে বললাম।
.
আমি: What?
.
AD: No I’m thinking that তোমার প্রবলেমটা একচুয়ালি কোথায়? মাথায় নাকি চোখে? নাকি অন্য কোথাও?
.
আমি: মানেহ?

AD: মানে এই যে হাটার সময় খালি ধাক্কা খেয়ে পরে যাও, যদি বল দেখতে পাওনি তাহলে ভাবব চোখে সমস্যা আর যদি বল ইচ্ছে করেই কর তাহলে ভাবব মাথায় সমস্যা।
.
আমি: কীহ?
.
AD: হুম। আর তুমিতো বাচ্চা একটা মেয়ে। যে কিনা নিজের খেয়ালটাও রাখতে পারোনা। মেডিকেল তোমাকে কিকরে চান্স দিলো বলোতো?
.
মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। এভাবে অপমান? ভিষণ রেগে বললাম
.
আমি: দেখুন আপনি কিন্তু আমাকে আবার অপমান করছেন।
.
AD: আগেই বলেছি it depends on point of view. তাছাড়াও ভুলতো কিছু বলিনি? তোমার মত বোকা একটা মেয়ে ডাক্তার হবে? কীভাবে?

শুনেই মাথাটা গরম হয়ে গেল। খাটাশ একটা, আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম কাব্যর একটা ব্যাট পাশেই রাখা, আমি সেটা তুলে তেড়ে গেলাম ওর দিকে, আমার বুদ্ধি নিয়ে রসিকতা? দেখাচ্ছি!!
.
তখনই আপি এসে আমাকে আটকালো, আমি আপিকে ছাড়াতে ছাড়াতে বললাম
.
আমি: আপি ছাড়ো আমাকে,আজ আমি এর মাথাই ফাটিয়ে দেব, আমিও দেখবো এর মাথায় কত বুদ্ধি! আমার বুদ্ধি নিয়ে মজা করা?
.
এডি আগের মতই দুই হাত ভাজ করে, ডান হাতটা থুতনিতে রেখে দাড়িয়ে আছে।
যেনো ব্যাপারটায় ভীষণ মজা পাচ্ছে। বের করছি ওর মজা ওয়েট!
.
আপি: আরেহ অনি কী করছিস বলত? মেহমানের সাথে কেউ এমন করে? রাখ এটা! ( ধমকে)
.
আমি: মেহমান? কীসের মেহমান? এক্চুয়ালি কী হয় ও আমাদের? যে এত খাতির? এত যত্ন? কে এ হ্যা? কে এ ( আপির কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে)

আপি: তুই এখনো বুঝিসনি ও কে? (অবাক হয়ে)
.
আপির হাত হালকা হয়ে গেল আর আমি আপিকে ছাড়িয়ে AD এর দিকে এগোতে এগোতে বললাম।
.
আমি: না বুঝিনি আর বুঝতেও চাইনা, আমার বুদ্ধি নিয়ে কথা? এরেতো আমি?
.
বলে ব্যাটটা উচু করলাম মারার জন্য, আর AD এবার একটু নড়েচড়ে দাড়ালো তখনি আপি বলল
.
আপি: আরে ও আদ্রিয়ান।
.
আমি: আদ্রিয়ান হবে ও ওর বাড়িতে তাতে আ..
.
এটুকুবলেই থমকে গেলাম, কী নাম বলল আপি? আদ্রিয়ান? ভূল শুনলাম নাতো? এই সেই আদ্রিয়ান? তারমানে AD ই আদ্রিয়ান? আর আদ্রিয়ানই AD? আমি একজন বক্সিং, কেরাটে প্লাস মার্সাল আর্ট চ্যাম্পিয়ানকে, আমার এই 45 kg ওজনের শরীর নিয়ে ব্যাট দিয়ে মারতে যাচ্ছিলাম? ভাবতেই বড়সর একটা ঢোক গিললাম।
এটুকুবলেই থমকে গেলাম, কী নাম বলল আপি? আদ্রিয়ান? ভূল শুনলাম নাতো? এই সেই আদ্রিয়ান? তারমানে AD ই আদ্রিয়ান? আর আদ্রিয়ানই AD? আমি একজন বক্সিং, কেরাটে প্লাস মার্সাল আর্ট চ্যাম্পিয়ানকে, আমার এই 45 kg ওজনের শরীর নিয়ে ব্যাট দিয়ে মারতে যাচ্ছিলাম? ভাবতেই বড়সর একটা ঢোক গিললাম।

এর এক হাতের শক্তিইতো আমার জন্য যথেষ্ট নট যথেষ্ট তার চেয়ে অনেক বেশিই! আব তেরা কেয়া হোগা অনি?
.
আমি একবার আপির দিকে তাকাচ্ছি আরেকবার AD মানে আদ্রিয়ানের দিকে। আপি অসহায় প্লাস বিরক্তি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে! কিন্তু আদ্রিয়ানের ফেস রিয়াকশন দেখে বুঝতে পারছিনা যে রেগে আছে, বিরক্ত হয়েছে নাকি মজা পেয়েছে। আমি ব্যাটটা ফেলে অসহায় ভাবে আপির দিকে তাকিয়ে বললাম
.
আমি : অআদ্ আদ্রিয়ান?
.
আপি: জ্বি! ( বিরক্ত হয়ে)
.
আমি: You mean Adrian Abrar Zuhayer?
.
আপি: Yes I mean it.
.
আমি এবার আরেক দফা অসহায় লুক নিয়ে আদ্রিয়ানের দিকে তাকালাম।
.
আমি: আপনিই আদ্রিয়ান? ( মেকি হাসি দিয়ে কোনো রকম ব্যাপারটা ঘোরানোর চেষ্টা আরকি!)

আদ্রিয়ান: জ্বি হ্যা। আদ্রিয়ান আবরার জুহায়ের ওরফে A..D..( বাকা হেসে)
.
আমি: ওহ আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া ( আবারো মেকি হেসে)
.
কেন জানি রেগে গেল উনি, চোয়ালটা শক্ত হয়ে গেল, কই এতক্ষন তো এমন লাগেনি। তবুও দাঁতে দাঁত চেপে বলল
.
আদ্রিয়ান: ওয়ালাই কুমুস সালাম !
.
হঠিৎই আম্মুর ডাক পরল। যাক এই প্রথম আম্মুর ডাকটা শুনে এত শান্তি লাগছে, একদম ঠিক সময় ডেকে আমাকে বাঁচিয়ে দিল। লাভ ইউ আম্মু!
.
তিনজনেই নিচে গেলাম গিয়ে দেখি কাব্য, আর ওহিও চলে এসছে। ওহি আদ্রিয়ানকে দেখেই ছুটে এলো, আদ্রিয়ানো ওকে কোলে তুলে নিলো। তারপর বলল
.
আদ্রিয়ান: কেমন আছে আমার আপুমনিটা?

ওহি: খুব ভালো, তুমি?
.
আদ্রিয়ান: আমিতো দারুন আছি!
.
ওহি: কী এনেছো আমার জন্যে? ( উৎসুক হয়ে)
.
আদ্রিয়ান: এইরে কিছুতো আনতে মনে নেই একদম ভুলে গেছি।
.
ওহি: it’s ok ( মন খারাপ করে)
.
আদ্রিয়ান ওহিকে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে ওর সামনে হাটু গেরে বসে বলল
.
আদ্রিয়ান: হুমমম। আমার আপুমনিটার মন খারাপ হয়েছে দেন কিছুতো একটা করতে হয়.. কী করা যায় কী করা যায়? ইয়েস! দেখোতো তোমার স্কুল ব্যাগে কিছু পাও কিনা।
.
ওহি ব্যাগ খুলতেই দেখলো ব্যাগের পকেটে তিনটা চটলেট রাখা, দেখেই খুশিতে লাফিয়ে উঠে বলল
.
ওহি: চকলেট?

আদ্রিয়ান: Yes chocolate!! এখন আমার আপুটা হ্যাপি?
.
ওহি: অননেক!
.
নিজের অজান্তে মুখে হাসি ফুটে উঠল আমার। আসলে চকলেটগুলো আদ্রিয়ানই রেখেছে। যখন ওকে কোলে নিয়েছিল তখনি পকেট থেকে বের করে ওহির স্কুল ব্যাগে রেখেছে। যেটা আমরা সবাই দেখলেও উলটো দিকে ঘুরে থাকার কারনে ওহি দেখতে পায় নি।
.
কী মিষ্টি করে বাচ্চাদের সাথে কথা বলে আদ্রিয়ান, সত্যিই এত পারফেক্ট মানুষ হয়?
.
তখনই কাব্য বলল
.
কাব্য: ভাইয়া ভালো আছো?
.
আদ্রিয়ান এগিয়ে গিয়ে কাব্যকে হাগ করে বলল

আদ্রিয়ান: একদম! তুমি?
.
কাব্য: সেই!
.
আদ্রিয়ান: পড়ালেখা কেমন চলছে?
.
কাব্য: As usual…
.
আদ্রিয়ান: It should be better!
.
তখন ওহি একটা চকলেট ছিড়তে নিচ্ছিল তখনই আদ্রিয়ান ওকে আটকালো।
.
আদ্রিয়ান: No.. এখন না। আগে ব্রেকফাস্ট করবে তারপর এসব।
.
আরো একবার মুগ্ধ হলাম আমি! এ সত্যিই সবার কেয়ার করতে পারে।
.
আদ্রিয়ান: কিন্তু তার আগে উপরে গিয়ে, ফ্রেশ হয়ে, চেন্জ করে তবেই নিচে নামবে get it !! ( আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মেরে)

বেশ বুঝতে পারলাম বেটা আমাকে কপি করে ব্যাঙ্গ করল। শয়তান ছেলে খালি আমাকে লেগপুল করার বাহানা খোজে। তোমার কপালে একটা ইরেটেটিং বউ পরবে যাকে সামলাতে সামলাতেই তোমার জীবন যাবে অভিশাপ দিলাম আমি!
.
হঠাৎ আম্মু বলল
.
আম্মু: তোরা এতক্ষণ ওপরে কী করছিলি রে?
.
আপি: আসলে..
.
আদ্রিয়ান: আসলে মামনী তোমার মেয়ে ক্রিকেট খেলছিল সেটাই দেখছিলাম।
.
বলেই ফিক করে হেসে দিল।
.
আমি হা করে তাকিয়ে ওর হাসি দেখছি, এই প্রথম ও আমার সামনে এভাবে হাসল এর আগে বাকা হাসি দিয়েছিল কিন্ত এরকম হাসি দেয়নি ! আপি মিথ্যে বলেছিল সত্যিই মিথ্যে বলেছিল, এর হাসি মারাত্নক নয়, একদমি নয় বরং মারাত্নক কে হোল কিউব করলেও এই হাসিকে ব্যাখা করা যাবেনা। ছেলেদের হাসিও এত সুন্দর হয়?
এবার আমি ওর দিকে ভালোভাবে তাকালাম, একটা হোয়াইট পান্জাবী পরেছে, পান্জাবীটা ছোট আর ফিটিং আর গোল্ডেন কাজ করা , তার সাথে কালো একটা জিন্স পরেছে। পান্জাবীর হাতা ফোল্ড করা, হাতে কালো ঘরি, চুলগুলো আজকে বেশি করেই কপালে পরে আছে, তারওপর ওর এই হাসি।
এভাবে কেন হাসলো ও? এত সুন্দর করে হাসার কী খুব দরকার ছিল? ও কী জানে ওর এই হাসি থেকে আমি চোখ সরাতে পারছিনা?

আম্মু: মানে?
.
আদ্রিয়ান: মানে তোমার মেয়ে ছিক্স মারতে গিয়ে নো বলে আউট হয়ে গেছে।
.
বলেই আপি আর ও মিলে জোরে জোরে হাসছে। কিন্তু আমি একটুও রাগ করতে পারছিনা আমিতো মুগ্ধ হয়ে আদ্রিয়ানের হাসি দেখছি!
.
আম্মু কিছুই বুঝলনা তাই কথা বারালো না। ওহি আর কাব্য ও ফ্রেশ হয়ে এলো। অবশেষে আমরা খেতে বসলাম উফফ!
.
খাওয়ার সময় আদ্রিয়ান একবারো আমার দিকে তাকায়নি সবার সাথে বিভিন্ন কথা বলেছে আর খেয়েছে, তাতে আমার কী? আমি আমার মত খেয়ে যাচ্ছি। ও তাকালেই আমার কী না তাকালেই আমার কী? হুহ।
.
খাওয়া শেষে যেই উপরে উঠতে যাবো আম্মুর করা নির্দেশ এখন উপরে যাওয়া যাবে না। আজব হঠাৎ হঠাৎ আম্মুর কী হয় কে জানে? ভাল্লাগেনা। নিচে কেন বসে থাকতে হবে?
.
সোফায় বসে বসে হিসেব মেলানোর চেষ্টায় আছি! ও যদি আদ্রিয়ানই হয় তাহলে ওর বন্ধুরা ওকে AD বলছিল কেন? ওহ নো! Adrian নামটাই তো শর্ট ফরমে AD হয় এটুকু ঢুকলোনা আমার মাথায়? তারপর আদ্রিয়ানের সাথে ওর ডেসক্রিপশন মিলে যাওয়া, আব্বু বলেছিল ও ইন্জিনিয়ারিং কলেজগুলো থেকে স্টুডেন্টস নিয়ে কিছু একটা কাজ করছে, আর ওকেও বুয়েট আর কার্জনে দেখা, এতকিছুর পরেও বুঝলামনা? How duffer I am!
.
অনেকক্ষণ পর আদ্রিয়ান এসে আম্মুকে বলল
.
আদ্রিয়ান: মামনী আমি একটু ছাদে যেতাম আরকি, দরজাটা কোন দিকে?

আম্মু: অনি আদ্রিয়ানকে একটু ছাদে নিয়ে যাও তো।
.
আমিতো আকাশ থেকে পড়লাম। আমিই কেন? ও কী বাচ্চা নাকি যে হাত ধরে নিয়ে যেতে হবে? আমি যাবোনা ওর সাথে। তাই বললাম
.
আমি: আআমি? আমি কেন? আপি বা কাব্যকে বলোনা!
.
আপি: আমি কাজ করছি দেখছোনা। কাব্যকে বল।
.
কাব্য: আমারো হোম ওয়ার্ক আছে।
.
আমি: আআমারো পড়া আছে! এসাইনমেন্ট দিয়েছে.. আমি যাই!
.
আম্মু: মার খাবে অনি যেতে বলছি যাও! এত কথা বারাচ্ছো কেনো?
.
উফফ এদের সব কাজ এখনি পড়লো? সব আমার ঘর শত্রু বিভিষনের দল! আমাকেই যেতে হবে এই খাটাশটার সাথে! যদি তখনকার জন্য কিছু বলে?

আমি: ওকেহ চলুন!
.
তখনি আদ্রিয়ান কাব্যকে বলল
.
আদ্রিয়ান: কাব্য তোমার সবচেয়ে শক্ত ব্যাট টা নিয়ে এসো তো।
.
ওমা ব্যাট দিয়ে কে করবে? আমায় মারবে নাকি? আল্লাহ আমি জীবনেও আর কাউকে মারতে যাবোনা এবারের মত বাচিয়ে দাও!
.
কাব্য: কী করবে ব্যাট দিয়ে?

আদ্রিয়ান: কাজ আছে নিয়ে এসো।
.
কাব্য ব্যাট আনতে চলে গেল!
.
আমি: ছাদে ব্যাট দিয়ে কী করবেন?
.
আদ্রিয়ান: দেখতেই পাবে! ( রহস্যজনক হাসি দিয়ে)

যা দেখেই আমার আত্মা শুকিয়ে এল।

Infinite Love part 7+8+9

এরমধ্যেই কাব্য ব্যাট নিয়ে এল। আদ্রিয়ান কাব্যর থেকে ব্যাটটা নিয়ে আমার দিকে একটা হাসি দিয়ে তাকালো। যা দেখে আমি একটা শুকনা ঢোক গিললাম।
.
আদ্রিয়ান: চলো?
.
আমি: হু! ও হ্যা চচলুন।
.
হঠাৎই আদ্রিয়ান আমার হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে ছাদে। ও আল্লাহ তারমানে ও ছাদের দরজা চেনে? তাহলে তখন ওটা কেন বলল? আমাকে ওর সাথে নেওয়ার জন্য? এবার আমাকে কে বাচাবে?
.
ভাবতেই পা দুটো থেমে গেল কিন্তু খাটাশটা একবার আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আবারো টেনে নিয়ে যেতে থাকলো।

ছাদে এনে আমাকে দাড় করিয়েই ছাদের দরজা লক করে দিল! যা দেখে আমার ভয় আরো বেরে গেল! কী করবে এ? আদ্রিয়ান আমার দিকে এগোতে লাগল আর আমি শক্ত হয়ে দাড়িয়ে আছি কারন এখন পেছোনোটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই হবে না! আদ্রিয়ান একদম আমার সামনে এসে ব্যাটটা উঠিয়ে..

Infinite Love part 13+14+15