Infinite Love part 26+27+28+29+30

Infinite Love part 26+27+28+29+30
Writer: Onima

এবার ওর হাসির রেখাটা বড় হলো। আমি আর পেছনে না তাকিয়ে সোজা ভেতরে যেতে লাগলাম। কিন্তু আমি জানি ও ততোক্ষণ তাকিয়ে থাকবে যতক্ষণ আমাকে দেখা যাবে! কিন্তু একটা কথাই ভাবাচ্ছে ও আমাকে বলল আমি ওর love at first site.. কিন্তু আমাদের প্রথম দেখায় ওর মুখে তেমন কোনো রিয়াকশন তো দেখিনি যেমনটা ও ওর কনফেশনে বলেছে। তাহলে কী মিথ্যা বলল? নাকি এমন কিছু আছে যেটা আমি জানিনা!

এসব আজগুবি ভাবতে ভাবতে যেই কলিংবেল চাপব ওমনি কেউ দরজা খুলে দিলো তাকিয়ে দেখি আপি হাত ভাজ করে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে! আমি আপিকে জরিয়ে ধরলাম, কিছুক্ষণ পর আপি আমাকে সরিয়ে বলল
.
আপি: কী ব্যাপার এতো খুশি? ( দুষ্ট হাসি দিয়ে)
.
আমি সেদিকে না পাত্তা দিয়ে পাশ কাটিয়ে ভেতরে ঢুকলাম। আপিও দরজা লাগিয়ে পিছে পিছে এলো।
.
আমি: ঘুমাওনি?
.
আপি: তোমার জন্য বসে আছি!
.
আমি: আব্বু আম্মু ঘুম?
.
আপি: হুম প্রায় দুটো বাজতে চলল ঘুমোতো যাবেই।
.
আমি: খেয়েছো?
.
আপি: অনেক আগেই।
.
আমি: আমাকে ছেড়েই আজ খেয়ে নিলে যে?

আপি: এখন কী আর সেই দিন আছে? এখনতো আমাকে মাঝেমাঝেই তোমাকে ছেড়ে খেতে হবে, কারণ তুমি এখন মাঝেমাঝেই বাইরে থেকে খেয়ে আসবে!
.
আমি: তুমি কিকরে জানলে খেয়ে আসছি?
.
আপি: Its common sense sweetheart…আর আদ্রিয়ান যেই টাইপের ছেলে এতরাত পর্যন্ত তোকে না খাইয়ে রাখবেনা।
.
আমি: বাহ কী মারাত্নক কমনসেন্স তোমার? ব্রিলিয়ান্ট (হাত তালি দিয়ে)
.
আপি: পিন্চ মারছিস?
.
আমি: আমার ঘারে একটাই মাথা আপি..
.
আপি আমার পিঠে একটা চাপড়া মেরে বলল
.
আপি: শয়তান মেয়ে যা রুমে যাহ ফ্রেশ হবি।
.
আমি যাওয়া ধরতেই আপি হাত টেনে ধরে বলল
.
আপি: এই তোর গায়ে এই জ্যাকেটটা কার? ( ভ্রু নাচিয়ে)

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আমার নিজের দিকে তাকাতেই খেয়াল হলো যে ওর জ্যাকেটটা ওকে ফেরত দেবা হয়নি। আমি আমতা আমতা করতে লাগলাম। সেটা দেখে আপি বলল
.
আপি: হইছে বুঝেছি! যাও ফ্রেশ হও গিয়ে।
.
আমি ওয়াসরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি আপি পা ঝুলিয়ে বসে আছে? আমি আদ্রিয়ানের জ্যাকেটটা কাবার্ডে রেখে আপির পাশে বসে বললাম
.
আমি: কী ব্যাপার ওই বিচ্ছু বাহিনী এখনো আমাকে জালাতন করতে এলো না যে?
.
আপি: বসেছিল অনেক্ষণ তোমাকে জালানোর আশায় বাট তুমি আসছিলেই না তাই বেচারারা ঘুমিয়ে গেলো!
.
আমি: যাক ভালো হলো!
.
আপি: কাল সকালেই ধরবেনে!
.
আমি: কালকের টা কালকে বুঝবো।
.
আপি: আচ্ছা সোনা এবার বল কী কী হলো আজ?

আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই বলল
.
আপি: প্লিজ এটা বলিসনা যে কিছুই হয়নি! কারণ দুপুর তিনটা থেকে রাত একটা পর্যন্ত তোরা শুধু একে ওপরের চেহারা দেখেছিস এটা প্লিজ আমাকে বিশ্বাস করতে বলিসনা।
.
আমি মুচকি হেসে আমার হাত উচু করে বেসলেটটা দেখালাম। আমি অবাক হয়ে বলল
.
আপি: ওয়াও! এত্ত সুন্দর বেসলেট? আদ্রিয়ান দিয়েছে?
.
আমি: ইয়েস ওর নিজে এটার ডিজাইন করেছে!
.
আপি: It’s just wonderful..তোমাদের দুজনের নামের ফার্সট লেটার ও আছে! কী কিউট!
.
আমি: এটা দিয়েই আজ ও আমায় প্রপোজ করেছে!
.
আপি: এটা দিয়ে? আমিতো শুনেছি লোকে গোলাপ বা রিং দিয়ে প্রপোজ করে বাট বেসলেট?
.
আমি: জ্বি ইউনিক পার্সন সিলেক্ট করছ আমার জন্য তাই তার সব কাজও ইউনিক! তবে গোলাপ দিয়েছে বলেই টেবিলে রাখা গোলাপটা দেখালাম।

আপি: ওয়াও! সব খুলে বল তাড়াতাড়ি। I can’t wait…
.
আমি সব বললাম আপিকে সব শুনে আপিতো হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে!
.
আপি: He Hugged you?
.
আমি মাথা নাড়লাম!
.
আপি: He kissed you?
.
এবারেও মাথা নাড়লাম। আপি এবার অবাক হয়েই বলল
.
আপি: এত দূর? যাক আমি বলেছিলাম ও ভালোবাসে তোমাকে !
.
আমি কিছুই বললাম নাহ খালি মুচকি হাসলাম।
.
আপি: তুমি রিপ্লেতে কী বলেছো?
.
আমি: কিছুই নাহ।

আপি: কিছুই বললে নাহ?
.
আমি: কী বলব? বলার মতো কিছুই ছিলোনা।
.
আপি: Love you too বলতে পারতে।
.
আমি: মিথ্যে কেনো বলবো?
.
আপি: হাহ! আচ্ছা এবার ঘুমাও রাত হয়েছে।
.
আমি: একটু পরে
.
আপি: কেনো?
.
আমি: ওর পৌছে মিসডকল দেবার কথা!
.
আপি: ওওও আচ্ছা! then I think I should go…
.
আমি: আরেহ যাস্ট মিসডকল দেবে! আপি শোনোতো..

কে শোনে কার কথা আপি চলে গেল। দূর ও মিসডকল কখন দেবে? বেশ অনেক্ষণ ওয়েট করার পর ফোন এল আমি ধরে দেখার আগেই কেটে গেলো! তাকিয়ে দেখি আননোন নাম্বার। বুঝলাম ওই মিসডকল দিয়েছে। আহ কী ভদ্র ছেলে মিসডকল দিতে বললাম সেটাই দিলো? যাগগে পৌছেছে ঠিক মতো ! উফ এবার ঘুমাই, হঠাৎ লিস্টে দেখলাম এই নাম্বারে আমি আগেও কথা বলেছি একবার। টাইম আর ডেট দেখেই মনে পরল এটাতো সেই নাম্বার যেটা থেকে ফোন আসার পর কোনো কথা বলেনি! আর ভোর থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত লাইনে ছিল! তারমানে ওটা আদ্রিয়ান ই ছিলো? কিন্তু ফোন দিয়ে কথা বললোনা কেনো? আর তখন ও আমার নাম্বার পেলো কোথায়? স্ট্রেন্জ!! পরে জিজ্ঞেস করে নেবো ভেবে যেই শুয়েছি ওমনি টুং করে একটা মেসেজ এলো। আমি চেক করে দেখলাম ঐ নাম্বার থেকেই এসছে ম্যাসেজটা। ওপেন করে দেখি

” Call korini bole kichu mone koro na.. asole saradin onekta dhokol gache, ar onek rat o hoyece so we both need a sound sleep, amake niye gobesona na kore ghumiye poro. ar ha amar sopne chole eso, ar parle amakeo deke nio tomar sopne!! Good night!!

মেসেজটা দেখে মুচকি একটু হাসলাম! তারপর ফোনটা পাশে রেখে টেডি জরিয়ে আজকের মুহুর্ত গুলো ভাবছি! ওর হাত ধরে নদীর পানিতে পা ভিজিয়ে হাটা, ওর আমাকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে কাধে থুতনি রাখা, আমার হাতের ওপর হাত মেলে ধরে বাতাস উপভোগ করা সবকিছু, ওর আমার সামনে হাটু ভেঙ্গে বসে প্রপোজ করা, ওর বলা প্রতিটা কথা, আমাকে হাগ করা, কপালে কিস করা সব মূহুর্তগুলো ভাবছি… তারপর নিজের হাতের রিং আর বেসলেট টা দেখতে লাগলাম। চোখ গেলো A আর O জোরা লাগিয়ে যে ডিজাইনটা আছে ওটার দিকে, নিজের অজান্তেই আঙ্গুল দিয়ে ছুয়ে দিলাম ওটা, হঠাৎ আরেকবার ফোনটা টুন করে বেজে উঠল

“Kalk medical jete hobe to, 2 tor besi baje ekhon ghumao.. amake niye sopne vebo.. but now sleeping is more important..”
.
আমি হেসে চোখটা বন্ধ করে ভাবছি কি আজব যেই আমি শুতে না শুতেই ওলওয়েস ঘুমিয়ে যাই সেই আমাকে ঘুমোতে বলা হচ্ছে। হায় আল্লাহ! এসব ভাবতে ভাবতেই কখন ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানিনা।

পরেরদিন সকালে আপি নিজেই ব্রেকফাস্ট নিয়ে ঘরে এলো আমি অনেক লেটে শুয়েছি তাই দেরিতে ডেকেছে। টাইম ওয়েস্ট যাতে না হয় তাই ঘরেই খাবার আনলো। আমি রেডি হয়ে খাটে বসে খেতে লাগলাম।
.
আপি: কালকে অনেক রাত অবধি কথা বলেছো?
.
আমি: কথাই বলিনি!
.
আপি: কীহ?
.
আমি: জ্বী! কালকে ক্লান্ত ছিলাম তাই ” sleeping is more important” বাণীতে আদ্রিয়ান আবরার জুহায়ের।
.
বলেই অট্ট হাসি দিলাম আপিও যোগ দিলো আমার সাথে।
.
আপি: সিরিয়াসলি! ওর মত লাইফ পার্টনার পাবাটা সত্যিই ভাগ্যের বেপার। আমিই সিংগেল বসে আছি। কেনোযে প্রেম করলাম না।
.
আমি: এখনো সময় আছে করে ফেলো!

আপি: নাহরে এখন আর প্রেম করার সময় নাই এখন বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। এখন খালি দোয়া করো তোমার মতো একটা জামাই যেনো আমার কপালেও জোটে।
.
আমি: হমমমম
.
আপি: তোমারি ভালো, কী সুন্দর পারমানেন্ট একটা বি-এফ পেয়ে গেলা। বিয়ের তো দেরি আছে, আরামসে তিন চার বছর প্রেম করতে পারবা।
.
আমি: রাখোতো প্রেম ওসব হবেনা আমার দারা।
.
আপি: হয়েছে আর ঢং করো না। দেখাই যাবে !
.
আমি কিছু না বলে খেতে থাকলাম।
.
আপি: আর শোনো ছুটির পর আমি ভার্সিটি থেকে সোজা শহীদ মিনারে থাকবো, তুমিও ওখানেই থাকবে!

আমি: কেনো?
.
আপি: শপিং এ যাবো।
.
আমি: আচ্ছা।
.
এরপর আমি মেডিকেলে যাবার জন্য বেরোবো তখনি আম্মু ডাকল
.
আম্মু: অনি শোনো।
.
আমি: জ্বি আম্মু।
.
আম্মু: আদ্রিয়ান কালকে কোথায় নিয়ে গেছিলো?
.
আমি: জানিনা! একটা গ্রামে! চিনি না আমি!
.
আম্মু: হুম তবে এতো রাত করে আর ফিরোনা।
.
আমি ভ্রু কুচকে আম্মুর দিকে তাকালাম।
.
আব্বু: নাহ মানে ওতো রাতে রাস্তাঘাট খুব বেশি নিরাপদ নয় সেটাই বলছে তোমার আম্মু!
.
আপি: শহুরে অঞ্চলে রাত একটা কোনো রাত নাকি?

আব্বু: হ্যা সেটাই! তোর আম্মুর সব কিছুতেই একটু বেশি।
.
সবাই মুখ টিপে হাসছে। আমি সবার দিকে একটা হতাশ দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বেরিয়ে এলাম। আসলে আম্মু এরকমি একটু বেশিই ভাবে, আম্মু আদ্রিয়ানকে খুব ভালোবাসলেও আদ্রিয়ান ইউ কে তে পড়াশোনা করেছে তাই হয়তো আম্মু ভাবছে যে ও ওখানকার কালচারে অনেকটা অভ্যস্ত, কিন্তু আম্মুতো জানেনা ও হাগ করার আগেও আমার পারমিশন নিয়েছিল!!
.
বিকেলে মেডিকেল থেকে বেরিয়ে আপির সাথে গেলা শপিং করতে। শপিং করে ফিরে আসতে আসতে রাত হয়ে গেলো! বাড়ি এসে আমি আর আপি দুজন সোফায় হেলান দিয়ে বসলাম। আম্মু পানি নিয়ে এলো।
.
কাব্য: একেই বলে মেয়ে মানুষ। সেই বিকেলে গেছে শপিং করতে এখন এলো।
.
আমি: তোর সমস্যা কী বলতো?
.
অর্ণব ভাইয়া: কেমনে পারস তোরা এমন করে ঘুরে ঘুরে শপিং করতে?

আপি: এমনেই পারি।
.
আমি: শোনো ঘুরে ঘুরে ধৈর্যধরে শপিং করতে পারাটা মেয়েদের স্পেশাল ট্যালেন্ট সেটা ছেলেদের থাকেনা।
.
আপি: রাইট!
.
সজীব ভাইয়া: হো বইন তোগো এই ট্যালেন্ট আমি মানতে বাধ্য। দোকানদার ১০০০ টাকা চাইলে ৫০০ টাকা দাম বলার মতো ফহিন্নি মার্কা ট্যালেন্ট একমাত্র তোগোই আছে!
.
সবাই হাসতে লাগল এই কথায়। আমি বললাম
.
আমি: আমরা বুদ্ধিমতী তাই আমরা জানি কোনটার প্রাইজ কত হতে পারে, তোমাদের মতো গভেট নই যে যা চাইবে তাই দিয়ে দেবো।
.
ব্যাস ভাইদের হাসি ফুস। আমি আর আপি মিলে হাসতে লাগলাম।

রাতে ডিনার করে রুমে এসে ভাবছি আদ্রিয়ান তো আজ একবারো ফোন ম্যাসেজ কিছুই করলোনা? কাল এতো পিরিত আজকেই সব হাওয়া? এসব ভেবেই খাটে হেলান দিয়ে বসে গেমস খেলছি আজকে পড়ার মুড একেবারেই নেই। হঠাৎ ইচ্ছে হলো ফেসবুকে একটু ঘুরে আসি, ফেসবুকে ঢুকেই দেখলাম 23 new friend request. হুহ তাতে কী যে পাঠানোর সেইতো পাঠায়না। তাই দেখতেও ইচ্ছে করলোনা, আবার কী মনে করে গেলাম গিয়েই তো আমার চোখ চরাকগাছ! হ্যা ঠিকই ধরেছেন। তিন নম্বরেই Adriyan Abrar Zuhayer নামটা শো করছে। বাহ রিকোয়েস্ট দিলো তাহলে! confirm করতে গিয়েও করলাম নাহ। হুহ কেনো করব? এতোদিনে সময় হলো রিকোয়েস্ট পাঠানোর? করবই না একসেপ্ট।
.
বেশ কিছুক্ষণ গেইমস খেলার পর ফোনে মেসেজ এলো। মেসেজটা আদ্রিয়ানেরই
.
“Oni call korbo ami?”
.
আমি রিপ্লে লিখলাম ” Apnar iccha”. কিন্তু একি সেন্ট হচ্ছেনা কেনো? আবার রিসেন্ট করলাম বাট হচ্ছেনা। আমি তাড়াতাড়ি ব্যালেন্স চেক করলাম। ইয়াহ ইটস জিরো! এসবের মধ্যে রিচার্জ করতে একদম ভূলে গেছি, Damn! এম বি আছে বাট ওকেতো কোনো সাইটেই এড করিনি আমি, যে বললব, এখন? খানিক বাদে আবারো মেসেজ এলো

” Tumiki busy? Reply korchona jeh?”
.
এখন বলব কীকরে প্রবলেমটা, আপির ফোন আনবো? নাহ আপি আবার মজা নেবে ! দূর ভাল্লাগেনা। ফোনটা একটা আছাড় মারতে ইচ্ছে করছে। আর ওই খবিশ টাকেও। আরে ফোন করবে তাতে পার্মিশন নেবার কী আছে? ফোন করলেই তো পারে! আরে করোনা ভাই প্লিজ ফোন করো। বেশ খানিক্ষণ পর আবারও মেসেজ এলো।
.
” baby just ektu kotha bolbo, pls reply koro!! pls..”
.
আবারও মেসেজ এলো
.
“can i call you pls?”
.
ধ্যাত্তেরি! আমার এবার কান্না পাচ্ছে। ” can i call you?” হুহ এতো ভদ্রতা দেখাতে কে বলেছে হ্যা? ফোনটা করলেই তো হয়। বেশ কিছুক্ষণ পর আবার মেসেজ এলো।

“Oni abar kintu rege jacchi ami! Hocchetaki? Reply korchona kano damn it! Last time bolchi reply koro.. otherwise i don’t know what will i do..!”
.
এইতো নিজের ফর্মে ব্যাক করেছে। welcome back মিঃ খবিশ, আরে এবারতো কলটা করলেই পারে। কিন্তু ফোন করেই যে আমার কথা না শুনেই আমাকে একদফা ঝারবে সেটা বেশ বুঝতে পারছি। After all The Adriyan Abrar is back. আল্লাহ বাচাইয়ো..
. এইতো নিজের ফর্মে ব্যাক করেছে। welcome back মিঃ খবিশ, আরে এবারতো কলটা করলেই পারে। কিন্তু ফোন করেই যে আমার কথা না শুনেই আমাকে একদফা ঝারবে সেটা বেশ বুঝতে পারছি। After all The Adriyan Abrar is back. আল্লাহ বাচাইয়ো..
কিছুক্ষণ পর আবার মেসেজ এলো
.
“Just 5 minute. Ai 5 minute ar moddhe tumi reply korbe.. get it?”

উফ পাচ মিনিট? এতো টাইম দেবার কী দরকার ছিলো? পাচ দশ সেকেন্ড দিলেই তো হতো নাকি? কার ভালোলাগে এই প্যারা? এখন পাচ মিনিট বসে বসে টেনশন করতে হবে। রুমে হেটে হেটে পাইচারি করছি আর নখ কামরাচ্ছি। দীর্ঘ সাত মিনিট পর ফোন বাজল। আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে ফোনটা হাতে নিলাম এখন আরেক টেনশন, ফোন ধরার সাহস হচ্ছেনা রিসিভ করলে যদি বকে? এসব ভাবতে ভাবতেই ফোনটা কেটে গেলো। একটু পর আবার ফোন এলো আমি এবার বুকে ফু দিয়ে সাহস জুগিয়ে ফোনটা রিসিভ করে ভয়ে ভয়ে বললাম
.
– হ্যাল..
.
– What’s your problem idiot. কতক্ষণ ধরে মেসেজ করছি খেয়াল আছে? ভাবলাম তোমাকে জিজ্ঞেস না করে ফোন করাটা উচিত হবেনা কিন্তু তুমিতো তুমিই কুইন ভিক্টোরিয়া! ম্যাসেজ রিপ্লে করার প্রয়োজনই মনে করছোনা।
.
– আরেহ আমার…
.
– Shut up! কী বলবে তুমি? এটাইতো যে তোমার ব্যালেন্স শেষ?
.
-আপনি কী করে জানলেন? (অবাক হয়ে)

– আমিতো আর তোমার মতো মাথা মোটা নই তাইনা? রিপ্লে না করাতেই বুঝতে পেরেছি কোনো বেপার আছে! নইলে আমার ধমকি দেখেও রিপ্লে না করার সাহস তোমার নেই! তাই হিয়াকে কল করেছি ওই বলল তোমার ফোনে অনেকদিন রিচার্জ করা হয়না। বুঝে গেলাম কেস টা কী।
.
– জানেনি যখন তখন বকলেন কেন?
.
– কারণ আপনি এটাই ডিজার্ব করেন। ব্যালেন্স শেষ হয়েছে খুব ভালো কথা কিন্তু ইমারজেন্সি ব্যালেন্স বলে যে একটা ব্যাপার আছে সেটা জানতেনা?
.
আমি সাথে সাথে জিবে কামড় দিলাম। আমিতো ভুলেই গেছিলাম এই ব্যাপারটা। সিট! আমিতো ইমারজেন্সি ব্যালেন্স নিয়েও রিপ্লে করতে পারতাম? আমি আমতা করে বললাম
.
-আসলে মাথায় ছিলোনা।

-সেটা কেনো থাকবে? মাথার মধ্যেতো খালি উল্টোপাল্টা চিন্তা ঘোরে, কখনো মাথা খাটিয়ে কাজ করেছো?
.
– আসলে তখন মাথা কাজ করছিলোনা।
.
– ইউ নো এটাই তোমার প্রবলেম। যখন মাথা খাটানোটা বেশি দরকার তখন তোমার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। I’m just surprised yaar…
.
আমি কিছু না বলে চুপ করে রইলাম, কারণ ও ঠিকি বলছে। আমি ভেবে কাজ একদমি করিনা, আর এর জন্য অনেকবার অনেক বিপদেও পরেছি।
.
বেশ কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ করে রইলাম। তারপর আদ্রিয়ান বলল

– মন খারাপ করেছো?
.
আমি কিছুই বললাম নাহ। আদ্রিয়ান আবার বলল
.
– ডিনার করেছো?
.
– হুম।
.
– আমাকে জিজ্ঞেস করলে না?
.
– আপনি করেছেন?
.
– হুম করেছি। কী করছ?

– শুয়ে শুয়ে গেমস খেলছিলাম।
.
– কী গেমস?
.
-ক্যান্ডি ক্রাশ।
.
আদ্রিয়ান জোরে হাসতে লাগল। আমি বিরক্ত হয়ে বললাম
.
– হাসছেন কেনো?
.
– তুমি মেডিকেল স্টুডেন্ট? সিরিয়াসলি? আচ্ছা তোমার বয়সতো 18 রাইট?
.
– হ্যা কেনো?
.
– আর তুমি বাচ্চাদের মতো ক্যান্ডি ক্রাশ খেলো? ইন ফ্যাক্ট তুমিতো বাচ্চাই।
.
– আমি বাচ্চা?

– Any doubt?
.
– আচ্ছা রাখছি।
.
– আরেহ রাগ করছো কেনো? দেখলে এজন্যই বাচ্চা বলি তোমায়!
.
– বাচ্চা যখন তখন একটা বাচ্চা মেয়ের সাথে এনগেইজমেন্ট কেনো করলেন? বড় কাউকে দেখে করে নিতেন!
.
– কারণ আমিতো বড় কাউকে ভালোবাসিনা! আমিতো ওই বাচ্চা মেয়েটাকেই ভালোবাসি।
.
আমি কিছু বললামনা। বেশ কিছুক্ষণ নিরবতার পর আদ্রিয়ান বলল
.
– অনি!

– বলুন?
.
– এখনো আপনি করে বলবে?
.
– তো কী বলব?
.
– জানো আজকালকার মেয়েরা তাদের বি এফ ফিয়ন্সে কে ‘জান’ ‘বেইবি’ ‘সোনা’ ‘ডারলিং’ কতকিছু বলে ডাকে?
.
আমি তো অবাক! এখন আমাকে ওকে এসব বলে ডাকতে হবে নাকি? আমি কোনোরকমে বললাম
.
– অআমি এসব ডাকতে পারবোনা।
.
– এসব বলে না ডাকলেও তুমি করে তো বলতেই পারো।
.
আমি কিছুই বলছিনা! ওকে তুমি করে বলতে হবে? কীকরে বলবো? তাই বললাম

– আমি পারবোনা।
.
– কেনো?
.
– আপনি আমার চেয়ে অনেক বড় তাই!
.
– এসব ফালতু এক্সকিউস তোমার কাছেই রাখো। আমাকে তুমিই বলতে হবে, That’s final.
.
– আচ্ছা চেষ্টা করব।
.
– চেষ্টা না বলতেই হবে!

আমি অসহায়ভাবে বললাম।
.
– আমার একটু সময় লাগবে।
.
– কতোক্ষণ? এক মিনিট দুই মিনিট ওর এক ঘন্টা?
.
– কীহ! কমসে কম এক মাস।
.
– হোয়াট! এক মাস? নো ওয়ে। আজকে এক্ষুনি বলতে হবে।
.
– এখনি? কাল বলি?
.
– কেনো একদিন ধরে কী রিহার্সাল করবে নাকি?
.
– হ্যা।
.
– কীহ?

– নাহ মানে.. হ্যা ( অসহায়ের মতো)
.
আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল
.
– ঠিকাছে কিন্তু কালকে থেকে বলতে হবে
.
– আচ্ছা।
.
– এখন ফোন রাখলে কী করবে?
.
– গেইমস খেলবো!
.
– কেনো? পড়বে নাহ আর?
.
– আজকে মুড নেই আজ।

– হুম বাট আজকেটা যেনো আজকেই হয়, ফাকিবাজি করবে না একদম। don’t forget you have to be a good doctor…
.
– হুম!
.
– এখন গেমস খেলতে হবেনা ঘুমিয়ে পরো ভোরে উঠে পড়তে বসবে।
.
– কীহ? ভোরে? আমি জীবনে কোনোদিন ভোরে উঠে পড়তে বসিনা! প্রয়োজনে রাত জেগে পড়ি। ফজরের নামাজটাও ম্যাক্সিমাম দিন মিস হোয়ে যায়।
.
– যেদিন রাতে পড়তে পারবেনা সেদিন ভোরে উঠেই পড়বে!
.
– আমি উঠতে পারবোনা তো আর আপি জানে আমাকে ওঠানো সম্ভব নাহ তাই ডাকতেও আসবেনা।
.
– আমি কল করে জাগিয়ে দেবো!
.
– আপনি?
.
– হুম। এবার ঘুমাও।
.
– ঘুম আসবেনা এখন! বারবার ফোনেই হাত চলে যাবে!

– তাই?
.
– হুম।
.
– একটা কাজ কর
.
– কীহ?
.
– তুমি বালিশে হেলান দিয়ে শুয়ে আছো রাইট?
.
– হ্যা তো?
.
– বালিশ নামিয়ে শুয়ে পরো।
.
– কেনো?
.
– যাহ বলছি চুপচাপ করো কোনো প্রশ্ন নাহ।
.
– আচ্ছা
.
বলেই ওর কথামতো শুয়ে পরলাম। এরপর ও বলল
.
– খাটে টেডি বা কোলবালিশ আছে?

– দুটোই আছে।
.
– গ্রেট! যেটা ভালোলাগে সেটাকে জরিয়ে ধরো।
.
আমি তাই করলাম তারপর বলল।
.
– এবার?
.
– এবার ইয়ার ফোনটা মোবাইলে প্লাগ করো আর ফোন লাউডে দাও।
.
– করেছি।
.
– এবার ইয়ারফোন কানে লাগিয়ে চোখ বন্ধ করো, চোখ খুলবেনা আর কথাও বলবেনা ওকে?
.
– ওকেহ।
.
হঠাৎই সফট মিউসিকে গান বাজতে লাগল। আদ্রিয়ান বলল।
.
– আমিও এখন এই গানগুলোই শুনতে শুতে ঘুমিয়ে পরব আর তুমিও। Good night..

আমি চোখ বন্ধ করে মুচকি হাসলাম, কোন কথা না বলে ওর কথামতই চোখ বন্ধ করে মিউসিক ফিল করতে লাগলাম। কখন ঘুমিয়ে গেছি নিজেই জানিনা।
.
ফোনের রিংটনে জেগে গেলাম, কিন্তু চোখে প্রচুর ঘুম। অনেক্ষণ বাজার পর বাধ্য হয়েই ফোনটা রিসিভ করে বললাম
.
– আসসালামুয়ালাইকুম?
.
– ওয়ালাইকুমাসালাম! উঠে পরো!
.
চট করে মাথায় এলো ওরতো ফোন করে আমাকে জাগানোর কথা! কিন্তু আমারতো ঘুম পাচ্ছে খুব। ধুর ভাল্লাগেনা, শান্তির ঘুমটা হারাম করে দিল। এতো আব্বু আম্মুর মতো শ্বাসন শুরু করল। অসহায় ভাবে ঘুম কন্ঠে বললাম
.
– আরেকটু ঘুমাই?
.
– জ্বী না। আজান দিয়ে দিয়েছে অলরেডি। আমার বকা শুরু হবার আগে উঠে পরো।
.
– এমন কেনো আপনি?
.
– আগেই বলেছি, আল্লাহ এরকমি বানিয়েছে আমি কি করতে পারি বলো? এবার বেশি না কে ওঠো।
.
উপায় না পেয়ে উঠে বসলাম। তারপর বললাম

– উঠেছি! এবার রাখি?
.
– একদম নাহ! ওয়াসরুমে যাও লাইনে থেকেই!
.
– কেনো?
.
– তুমি যা মেয়ে ফোন রাখলেই আবার ঘুমাবে।
.
এ এতো বোঝে কেন? আসলেই এটাই করতাম ফোন রাখলে। তারপর লাইনে থেকেই ফোন হাতে ওয়াসরুম গেলাম। উযু করে আসার পর বললাম
.
-অযু করে এসছি।
.
– গুড! এবার নামাজ পরে নাও আমিও মসজিদে যাবো। এসে ফোন দেবো কিন্তু তাই ঘুমোবেনা একদম!
.
– আচ্ছা।
.
ও ফোন কেটে দিলো আমিও নামাজটা পরে নিলাম। নামাজ পরে বসে আছি আর ঝিমছি প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে। বেশ অনেক্ষণ পরে আদ্রিয়ান ফোন দিলো। রিসিভ করতেই বলল
.
– খুব ঘুম পাচ্ছে নাহ?

– হুম।
.
– কফি বানাতে পারো?
.
– বানাইনি কখনো! আপি বা আম্মুই বানিয়ে খাওয়ায়। বাট শুনেছি খুব ইজি!
.
– Like seriously Oni? কফি বানানোটাও জানোনা?
.
– মনে হয় পারবো! কিন্তু করিনি কখনো।
.
– হুম! এক কাজ করো ইয়ারফোনটা নিয়ে কিচেনে যাও।
.
– কেনো?
.
– এই প্রশ্ন করা ছাড়া আর কাজ নেই তোমার? যা বলছি কর।
.
আমি কিছু না বলে গেলাম কিচেনে। গিয়ে দেখলাম কেউ নেই। যাক বাচলাম! তারপর ওনাকে বললাম
.
– এসে গেছি।
.
– এবার কফি বানায় যেই ডিসে ওটা চেনো?

– হুম দেখেছি একবার কিচেনে এসে ওয়েট খুজছি!
.
আদ্রিয়ান কিছু বললোনা কিন্তু একটা দীর্ঘশ্বাসের আওয়াজ পেলাম। অনেক্ষণ খুজে পেলাম। তারপর বললাম
.
– পেয়েছি।
.
– উদ্ধার করেছেন! এবার কফি, দুধ আর চিনির পটগুলো নিয়ে এসো।
.
বহুত খুজে ওগুলো এনে রাখলাম গ্যাসের পাশে। তারপর বললাম
.
– এনেছি।
.
– এনেছো? এতো তাড়াতাড়ি?আমারতো একটা ঘুম হয়ে গেলো! এবার দয়া করে ইয়ারফোন প্লাগ করে ফোন টেবিলে বা জ্যাকেট পরা থাকলে পকেটে নাও।
.
আমি মুখ ফুলিয়ে জ্যাকেটের পকেটে ফোন রাখলাম। উনি এবার বলল।
.
– যাহ বলছি চুপচাপ করো। গ্যাসে ডিসটা রেখে প্রায় এক মগ পরিমাণ পানি দিয়ে গ্যাস ওন করো বাট সাবধানে।
.
আমি তাই করলাম। পাচ সাত মিনিট পর ও বলল

– এবার গ্যাস অফ করো। তারপর কফি মগে এক চামচ কফি পাউডার,এক চামচ মিল্ক পাউডার, এক চামচ চিনি দাও।
.
আমি সেটাই করলাম। কিছুক্ষণ পর বলল
.
-এবার মগে যেটুকু খাবে সেই পরিমাণ ওই গরম পানিটা দাও বাট খুব সাবধানে হাত লেগে পুরে ফেলোনা প্লিজ!
.
আমিও খুব সাবধানে সেটাই করলাম। উনি আবারো বলল
.
– এবার স্পুন দিয়ে নেড়ে নাও।
.
আমি সেটাই করলাম
.
– Now your coffee is ready!
.
আমি জ্যাকেট থেকে ফোন বের করে ইয়ারফোন খুলে বললাম
.
– এত্তো ইজি? আর আমি নিজের হাতে কফি বানিয়েছি? I can’t believe this!
.
– You can do anything if you want sweetheart.. এবার তোমার রুমের বেলকনিতে যাও।
.
আমিও ওর কথামতো রুমের বেলকনিতে গিয়ে দাড়ালাম। এখনো বেশ অন্ধকার, কুয়াশা পরেছে অনেক, তবে আলো ফুটছে ধীরে ধীরে। আমি বললাম
.
– এসেছি!
.
– এবার রেলিং এ ভর দিয়ে কফি খেতে খেতে এই শীতের সকাল হওয়াটা উপভোগ করো ঘুম ও কাটবে মনও ভালো হবে।
.
– হুম ( কফিতে চুমক দিলাম। নট ব্যাড!)
.
– কেমন হয়েছে কফি?
.
– বেশ ভালো
.
– আমিও তোমার সাথে কফি বানিয়েছি এন্ড তোমার মতই বেলকনিতে দাড়িয়ে কফি খেতে খেতে ভোর হওয়া দেখছি।
.
– আপনি নিজেই কফি বানান?

– হুম শুধু সকালে! অন্যসময় আম্মুই বানায়।
.
– ওহ!
.
– জানো আমার ইচ্ছে আমরা বিয়ের পর রোজ আমরা দুজন বেলকনিতে বসে কফি খেতে খেতে ভোর হওয়া দেখবো! কফি কিন্তু এক মগেই খাবো আর তুমি আমার কাধে মাথা রেখে বসবে! আর হ্যা কফিটা কিন্তু আমিই বানাবো। কবে আসবে গো? ওয়েট করতে মন চাইছে না একদম।
.
আমি মুচকি হাসলাম। এভাবেই কথা বলতে বলতে ভোর হওয়াটা দেখলাম। সত্যিই শীতেরদিনে রাতে অন্ধকার ভেদ করে আলো ফোটা আর কুয়াশা ভেদ করে সূর্যে আবছা আলো আসার দৃষ্যটা সত্যিই অমায়িক। ও না থাকলে সত্যিই মিস করতাম এই দৃশ্য। তারপর ওর কথামতো পরতে বসলাম।
.
পড়ার টেবিলে বসেও ওর কথাই ভাবছি। কত সুন্দর কেয়ার করে আমার! মনের ভেতর একটা ভালোলাগা কাজ করছে, ওর সবকিছুতেই মহিতো হয়ে যাচ্ছি আমি! ওর কথা, ধমকানো, ধমকানোর ঠিক পরেই আবার যত্ন করে বোঝানো সবকিছুই খুব ভালোলাগছে আজকাল! আচ্ছা আমিকি ওর অপর দূর্বল হয়ে পরছি?
পড়ার টেবিলে বসেও ওর কথাই ভাবছি। কত সুন্দর কেয়ার করে আমার! মনের ভেতর একটা ভালোলাগা কাজ করছে, ওর সবকিছুতেই মহিতো হয়ে যাচ্ছি আমি! ওর কথা, ধমকানো, ধমকানোর ঠিক পরেই আবার যত্ন করে বোঝানো সবকিছুই খুব ভালোলাগছে আজকাল! আচ্ছা আমিকি ওর অপর দূর্বল হয়ে পরছি?

তারপর ফোনটা হাতে নিয়ে ওর নাম্বারটা ‘Adriyan’ লিখে সেভ করলাম। সাথে সাথেই আমার ইমো, হোয়াটস-অ্যাপ এ এড হয়ে গেলো। তারপর আমি এসব ভাবা বাদ দিয়ে পড়ায় মন দিলাম। কিছুক্ষণ পড়ার পর আপি হুট করে রুমে এসে আপি পুরো ভূত দেখার মতো হা করে তাকিয়ে রইলো। আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললাম।
.
– What?
.
আপি অবাক হয়ে তাকিয়ে একটু একটু করে পেছাতে পেছাতে বলল
.
– ময়্ ময়নাপ্পি.. ময়নাপ্পি..
.
বলেই আপি ঝড়ের বেগে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হা করে তাকিয়ে রইলাম। ব্যাপারটা ঠিক কী হলো বুঝতে পারলাম না। আমাকে দেখে এভাবে রিয়াক্ট করার মানে কী? এসব মাথা থেকে ঝেড়ে আবার বইয়ে চোখ দিলাম। কিন্তু সেটা বেশিক্ষণ স্হায়ি হলোনা কারণ আম্মুর গলার আওয়াজ পাচ্ছি
.
– আরেহ হিয়া তুই ভূল দেখেছিস। শুধুশুধুই অমাকে টেনে নিয়ে এলি দেখ ও ঘুমোচ্ছে।

বলতে বলতে আম্মু ঘরে ঢুকে বিছানার দিকে তাকালো কিন্তু আমাকে সেখানে না পেয়ে টেবিলে তাকিয়ে আমাকে দেখে আম্মু এমনভাবে তাকালো যেনো এই মুহূর্তে ওনার সামনে বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য ঘটছে। আমি এবার বেশ বিরক্ত হয়েই বললাম
.
– হয়েছেটা কী?
.
কিন্তু আমার কথাটা মনে হয় আম্মুর কান অবধি জায়নি। আমার ভোকাল কর্ডের ব্যাটেরি লো হয়েছে নাকি আমার আম্মুর কানের ব্যাটেরি লো হয়েছে সেটা বোঝার চেষ্টা শুরু করব কিন্তু তার আগেই ভীত কন্ঠে
.
– এই শোনোনা…
.
বলেই আম্মু রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। আমি এবার আপির দিকে তাকিয়ে বললাম
.
– আপি?
.
আপি সেই অবাক দৃষ্টি নিক্ষেপ করেই বলল
.
– হু।

– আমারকি ডানা গজিয়েছে? like fairy?
.
আপি সেই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়েই আমার পেছনটা উকি দিয়ে চেক করে মাথা নাড়ল অর্থাৎ নাহ।
.
– তাহলে কী আমার কপালে আরেকটা চোখ হয়েছে?
.
আপি একবার আমার কপালে তাকিয়ে বলল
.
– নাহ তো!
.
– তাহলে নিশ্চয়ই আমার হাত পা দু একটা বেশি গজিয়েছে?
.
আপি আমার হাত পায়ের দিকে তাকিয়ে বলল
.
– দেখছিনা তো।
.
আমি এবার বেশ বিরক্তি প্লাস রাগ নিয়ে বললাম
.
– তাহলে আমাকে দেখে ওমন রিয়াকশন দিচ্ছো কেনো তোমরা?

– তুই এতো ভোর বেলা উঠেছিস? তাও নিজে? তারওপর পড়তে বসেছিস ভোরে?
.
– কেনো ভোরবেলা কী মানুষ ওঠে না?
.
– মানুষ ওঠে কিন্তু তুইতো উঠিস না। নিজে থেকে তো মোটেই নাহ। তুই ঠিক আছিস তো আই মিপ শরীর টরির খারাপ করেনি তো?
.
বলেই আপি আমার কপালে গলায় হাত দিয়ে বলল
.
– টেমপেরেচার তো ঠিকি অাছে। কী হয়েছে তোর?
.
আমি এবার প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে বললাম
.
– আপি প্লিজ! কী শুরু করলে?
.
আপি কিছু বলতে যাবে তার আগেই আম্মু আব্বুকে নিয়ে ঘরে ঢুকলো। আব্বু চোখ ডলতে ডলতে এসে আমাকে টেবিলে বসা দেখে চোখটা আরেক দফা ডলে আবার তাকালো। বেশ কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে বলল
.
– মামনী ঘুমোসনি তুই রাতে।

আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই আব্বু এসে আমার গালে কপালে হাত রেখে বলল।
.
– শরীর খারাপ করছে? ডাক্টার ডাকব?
.
আম্মু যেনো এই কথাটারি অপেক্ষা করছিলো। তাড়াতাড়ি বলল
.
– আরে ওকে কী জিজ্ঞেস করছো তাড়াতাড়ি ডাকো। মেয়েটা বোধ হয় রাতে ঘুমোতে পারেনি।
.
আমি এবার অসহায়ভাবে ওদের দিকে তাকালাম। তারপরে বিরক্তি নিয়েই বললাম
.
– আমি একদম ঠিক আছি, শরীরও ঠিক আছে, রাতে ঘুমিয়েছি ইন ফ্যাক্ট খুব ভালোকরেই ঘুমিয়েছি!
.
আব্বু বলল
.
– তাহলে এতো ভোরে উঠলে যে?
.
– কেনো একটা দিন কী নিজে থেকে উঠতে পারিনা আমি তাতে এতো ওভার রিয়াক্ট করার কী আছে?

আমাকে আরো বিরক্ত করে আম্মু বলতে শুরু করল
.
– হ্যা কিন্তু…
.
– নো কিন্তু। আম অলরাইট আর আমি পড়ছি এখন আমাকে পড়তে দাও। বলেই বইয়ে চোখ রাখলাম।
.
কিন্তু কিছুসময় পরেও খেয়াল করলাম ওনারা এখনো যায় নি। আমি এবার বই থেকে চোখ সরিয়ে ভ্রু কুচকে তাকালাম ওদের দিকে। সেটা দেখে ওনারা দুজনেই থতমত খেয়ে দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে কেটে পরল। আমি এবার আপির দিকে তাকালাম, আপি এখোনো অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। আমি সেদিকে পাত্তা না দিয়ে আবার বইয়ে চোখ দিলাম।
.
কিছুক্ষণ পর আপি আমার পাশে একটা চেয়ার নিয়ে বসে বলল
.
– এই তোর কেসটা কী বলতো? এটা বলিসনা যে এমনিই নিজে থেকেই উঠেছিস, কারণ তুই নিজেও জানিস ইটস ইমপসিবল!
.
আমি এবার আপির দিকে তাকালাম তারপর আমার ফোনটা ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। আপি ফোনটা হাতে নিয়ে অবাক চোখে তাকিয়ে বলল।
.
– এটা কী করব?
.
– কললিস্ট চেক করো।

আপি কিছু না বলে ফোন ঘাটতে লাগল আর আমিও বইয়ে চোখ দিলাম। কিছুক্ষণ পর আপি চমকে তাকালো আমার দিকে তারপর বলল
.
– আদ্রিয়ান ফোন করেছিল?
.
আমি বইয়ে চোখ রেখেই মাথা নাড়লাম। আপি আবার বলল
.
– এতো ভোরে কেনো?
.
– নিশ্চয়ই প্রেমালাপ করার জন্য না। পড়ার জন্য। ( মুখ ছোট করে)
.
আপি এটা শুনে অট্টহাসি দিলো হাসি যেনো থামার নামই নিচ্ছে না। আমি বিরক্ত হয়ে বললাম
.
– এতো হাসির কী দেখলা?
.
আপি কোনোমতে হাসি থামিয়ে বলল
.
– হাসবোনা? পিচ্ছি বয়সে জামাই পাইলে এমনি হয় রোমান্স কম শাসন বেশি।
.
– তো কে বলেছিলো তোমাদের পিচ্ছি বয়সে এনগেইজড করে দিতে? তাও একটা বুড়ো ছেলের সাথে!
.
আপি অবাক হয়ে বলল

– বুড়ো ছেলে? Like seriously?
.
– তা নয়তো কী?
.
– তুমি জানো তোমাদের এনগেইজমেন্ট এর দিন ওর সবে পচিশ বছর হয়েছে?
.
– তো পচিশ বছর কী কম নাকি?
.
– তাহলে তোমার জন্য কী ১২/১৩ দিনের ছেলে আনবো? রহিম রুব্বান 2020 version হয়ে যাবে।
.
বলেই হাসতে লাগল।
.
– Very funny!
.
বলে মুখ বাকিয়ে আমি আবারো পড়ায় মন দিলাম। আর আপি বলশ
.
– আচ্ছা পড় তুই আমি তোর জন্য কফি নিয়ে আসছি।

– দরকার নেই খেয়েছি।
.
আপি ভ্রু কুচকে বলল
.
– খেয়েছিস মানে? কে করে দিলো?
.
– আমিই করেছি
.
আপি এবার আরেক দফা ঝটকা খেলো। আপি মহা অবাক হয়ে বলল
.
– তুই? জোক মারছিস? বাড়ির কিচেনটা কোন দিকে তোর মনে আছে?
.
আমি টেবিল থেকে কফি মগটা আপিকে প্রুভ হিসেবে দেখালাম। আর আপি অবাক হয়ে বলল
.
– কেমনে সম্ভব?

– I can do anything if i want sweetheart..
.
আপি আহম্মকের মত তাকিয়ে রইলো আর আমি একটা রহস্যজনক হাসি দিয়ে পড়ায় মন দিলাম। আপি কিছুক্ষণ অভাবেই তাকিয়ে থেকে চলে গেলো।
.
ওইদিন আর আদ্রিয়ান আমাকে কল মেসেজ কিছুই করেনি। রাতে ডিনার করে রুমে এসে শুয়ে শুয়ে ভাবছি রাত এগারোটা বেজে গেলো এখনো একটা ফোন মেসেজ কিছুই করলোনা? এমন কী করছে যে একটা গুড নাইট মেসেজ দেবারো সময় হচ্ছে না? এসব ভাবতে ভাবতেই কখন ঘুমিয়েছি নিজেই জানিনা।
.
সকালে আপি এসে তুলে দিয়ে গেলো। একটা হাই তুলে বসার পরেই মনে পড়ল যে কাল মহাশয় আমাকে একটা ফোন মেসেজ কিছুই করেনি। তাই একটা অভিমান কাজ করলো, কী এমন করছিলো হুহ। ফোনটা চেক করেই দেখলাম একটা মেসেজ করেজে আদ্রিয়ান
.
” So Sorry sweetheart. Kalk prochur basto chilam. Phoner kache jabar time o paini. Free hoye tomay message korlam, ghumiye gecho jani tai r call korini..again sorry!”

মেসেজটা রাত সাড়ে তিনটায় করেছে! এতরাত অবধি কাজ করছিলো ছেলেটা? এখন নিশ্চই ঘুমোচ্ছে! আমি আর কিছু না বলে রেডি হয়ে খেয়ে মেডিকেল চলে গেলাম।
.
মেডিকেলে একটা ক্লাস করার পরেই ফোনে মেসেজ এলো, মেসেজটা চেক করে দেখি আদ্রিয়ানই করেছে
.
” Aj kono important class ache r?”
.
আমি রিপ্লেতে লিখলাম
.
” Nah”
.
আবার মেসেজ এলো
.
” Then bag niye gate r baire chole aso..”
.
জানি এখন প্রশ্ন করলে নির্ঘাত আমাকে থাপ্পড় মারবে।

আমি তাই তাড়াতাড়ি ঐশিদের বাই বলে ছুট লাগলাম অলমোস্ট দৌড়ে গেলাম গেটের বাইরে গিয়ে হাটুতে ভর দিয়ে হাপাতে লাগলাম। সামনে তাকাতে দেখলাম উনি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। ওভাবে তাকিয়েই বলল
.
– এভাবে ছুটে আসার কী ছিলো?
.
আমিতো ওনাকেই দেখছি কী অবস্হা হয়েছে চেহারার? চোখ লাল হয়ে আছে, চোখে নিচে হালকা কালি পরেছে, চুলগুলো উষ্কখুষ্ক হয়ে আছে, একটা থ্রী কোয়াটার ব্রাউন প্যান্ট পরে আছে আর হাফ হাতা ব্লাক টিশার্ট, হালকা খোচা খোচা দাড়িও বেড়িয়েছে, দুই তিনদিন ধরে সেভ করেনা হয়তো । লুক দেখে মনে হচ্ছে ঘুম থেকে উঠে যেভাবে ছিলো সেভাবেই বেড়িয়ে এসছে কিন্তু মুখ দেখে মনে হচ্ছে যেনো রাতে ঘুমোয়নি প্রচুর ক্লান্তি ওই মুখে। এভাবে কেনো এসছে ও? আর এমনি বা লাগছে কেনো?
.
আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই আমার হাত ধরে এক প্রকার টেনে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। তারপর নিজে বসে সিটবেল্ট লাগিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো। ভীষণ স্পিডে গাড়ি চলাচ্ছে। ওর গাড়ি চলানোর স্পিড দেখে আমার ভয়ে জান যায় যায় অবস্হা। তাই জিজ্ঞেস করলাম।
.
– এতো জোরে গাড়ি চালাচ্ছেন কেনো? আর কোথায় যাচ্ছি আমরা।
.
উনি জাস্ট একবার তাকালো আমার দিকে। ওনার চোখ রাগ ছিলো কী না জানিনা তবে দৃষ্টিটা ভীষণ শান্ত ছিলো তাই আমি আর কিছু বলার সাহস পেলাম না।

আদ্রিয়ান প্রায় এক ঘন্টার মতো ওইরকমি ভীষণ জোরে ড্রাইভ করলো। আর আমি ভয়ে জরোসরো হয়ে বসে ছিলাম। তারপর ও একটা বাড়ির সামনে গাড়ি থামালো, তারপর গাড়ি থেকে নেমে আমার হাত ধরেই টেনে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যেতে লাগলো। আমি ভয়ে কিছু বলতেও পারছিনা, বাড়ির কেয়ার টেকারো হা করে তাকিয়ে আছে কিন্তু উনি তাতে বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে ভেতরে ঢুকে মেইনডোর লক করলেন তারপর আবার আমার হাত ধরে টেনে একটা রুমে নিয়ে গেলেন তারপর আমাকে বিছানায় বসিয়ে দিলো কিন্তু শক্তিটা একটু বেশিই প্রোয়োগ করেছে যার ফলে বসার বদলে আমি হালকা ঝুকে পরে গেলাম বিছানায়। এরপর জোরেই দরজাটা আটকে দিলো শব্দে আমার শরীরটাও ঝংকার দিয়ে উঠল। উনি আমার দিকেই আসছে আর আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে..

আদ্রিয়ান প্রায় এক ঘন্টার মতো ওইরকমি ভীষণ জোরে ড্রাইভ করলো। আর আমি ভয়ে জরোসরো হয়ে বসে ছিলাম। তারপর ও একটা বাড়ির সামনে গাড়ি থামালো, তারপর গাড়ি থেকে নেমে আমার হাত ধরেই টেনে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যেতে লাগলো। আমি ভয়ে কিছু বলতেও পারছিনা, বাড়ির কেয়ার টেকারো হা করে তাকিয়ে আছে কিন্তু উনি তাতে বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে ভেতরে ঢুকে মেইনডোর লক করলেন তারপর আবার আমার হাত ধরে টেনে একটা রুমে নিয়ে গেলেন তারপর আমাকে বিছানায় বসিয়ে দিলো কিন্তু শক্তিটা একটু বেশিই প্রোয়োগ করেছে যার ফলে বসার বদলে আমি হালকা ঝুকে পরে গেলাম বিছানায়। এরপর জোরেই দরজাটা আটকে দিলো শব্দে আমার শরীরটাও ঝংকার দিয়ে উঠল। উনি আমার দিকেই আসছে আর আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে..
এখানে কেনো আনলো আমাকে? আর এমন কেনো করছে। আমি এখনো সোজা হয়ে বসিনি মানে বসার কথা মাথাতেই আসেনি, কিন্তু ওকে এগিয়ে আসতে দেখে আমি তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে বসলাম। ও এসেই আস্থে করে আমার পাশে বসে দুই হাতে মুখ ঢেকে ঝুকে বসে রইল আর জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগল। হয়তো নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে কিন্তু রাগল কেনো সেটাই তো বুঝতে পারছি না।

প্রায় পাচ মিনিট ওভাবেই বসে ছিলো তারপর সোজা হয়ে বসে ওর চুলগুলো একবার নেড়ে নিলো তারপর জোরে একটা শ্বাস নিয়ে আমার দিকে না তাকিয়েই কপালে স্লাইড করতে করতে শান্ত গলায় বলল
.
– ফোনটা বের করো।
.
আমি হেবলার মত তাকিয়ে আছি ওনার দিকে, উনি নিচের দিকে তাকিয়েই বেশ জোরেই বলল
.
– ফোন বের করতে বলেছি আমি!
.
কেপে উঠলাম আমি। তাই তাড়াতাড়ি কাধ থেকে ব্যাগ নামিয়ে ফোনটা বের করলাম। তারপর ওনার দিকে এগিয়ে দিলাম। একপ্রকার টান মেরেই ফোনটা নিলেন উনি। ফোনটা অন করতেই উনি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো, আমার ফোনে কোনো সিকিউরিটি লক নেই সেটা দেখেই হয়তো ওরকম ভাবে তাকিয়েছে। তারপর আবার ফোনে চোখ রাখলেন কিছুক্ষণ পর ও বলল
.
– ফেসবুক পাসওয়ার্ড বলো
.
আমি অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম। উনি এবার আমার দিকে তাকিয়ে ধমক মেরে বললেন
.
– কানে প্রবলেম আছে? বার বার রিপিট কেনো করতে হয় কথাগুলো?

ধমক খেয়ে আমি গরগর করে পাসওয়ার্ড বলে দিলাম। তারপর উনি আর কিছু না বলে ফোনে কীসব করতে লাগল। আর আমি বোকার মতো বসে আছি আর ভাবছি যে হচ্ছেটা কী? অনেক্ষণ পর উনি ফোনটা ব্যাক করলেন আমায়, ফোনটা হাতে নিয়ে চেক করলাম আর যা দেখলাম তাতেতো আমার চোখ চরাকগাছ! ফেসবুক থেকে আমার ম্যাক্সিমাম ছবি ডিলেট করে দিয়েছে। হাতে গোনা তিন চারটা ছবি আছে তাও গ্রুপ পিকচার। আমার এতো সাধের ছবিগুলো অকালে শহীদ হয়ে গেলো ভেবেই কান্না পাচ্ছে। কত্ত লাইকস কমেন্টস ছিলো সব গেলো। আমি ঠোট ফুলিয়ে কাদো কাদো ফেস বানিয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম
.
– এটা কী হলো?
.
উনি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে চুল নাড়তে নাড়তে বলল
.
– কী হলো?
.
– আমার ছবি গুলো ডিলিট করলেন কেনো?
.
– বাচ্চাদের এতো ছবি ফেসবুকে থাকতে নেই নজর লাগে আর নজর লাগলে বাচ্চা বড় হতে পারেনা তাই ডিলেট করে দিলাম।
.
এবার আমার খুব রাগ লাগল যার ফলে ওনার ওই রাগী মূর্তির কথা ভূলে প্রচন্ড রাগ নিয়ে বললাম
.
– ঐই আপনার সাহস কীকরে হয় আমার ছবি ডিলিট করার আর কী বললেন আমি বাচ্চা? তো বাচ্চা একটা মেয়েকে বিয়ে করতে চাইছেন কেনো? আর আমার এত সুন্দর সুন্দর ছবিগুলো ডিলেট করার রাইট কে দিয়েছে আপনাকে? জানেন কত্ত লাভ রিয়াক্টস আর সুন্দর সুন্দর কমেন্টস ছিলো ছবিগুলোয়? কেনো ডিলিট করলেন হ্যা কোন রাইটে? আপ্..

আর বলতে পারলাম না কারণ ওনার দিকে তাকাতেই আমার গলা আটকে গেছে কারণ ওনার চোখ আরো লাল হয়ে আছে, হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে রেখেছে যার ফলে রগ ফুলে উঠেছে, চোয়াল শক্ত হয়ে আছে, রাগী চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে, আমার দিকে ওভাবে তাকিয়েই আস্তে আস্তে নিজের টিশার্ট টা খুলে ফেললো, যা দেখে আমি ভয়ে একটু পিছিয়ে গেলাম আর মনে মনে নিজেকেই গালি দিতে থাকলাম কেনো ওসব বলতে গেলাম ধূর! এখন কী করবে কে জানে? নিচে একটা ব্লাক বক্সার গেন্জি পরে আছেন উনি, আর আমার তো কাপাকাপি অবস্হা। উনি হুট করেই আমার হাতে টান মেরে শুইয়ে দিলো, তারপর আমার ওপর আধশোয়া হয়ে পাশে হাত রাখল, ঘটনাটা এত দ্রুত ঘটল যে আমি অবাক হবারো সময় পেলামনা, ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আমি হাত নাড়াতে গেলে হাত দুটোও চেপে ধরল বিছানার সাথে, আমি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে! উনি দাতে দাত চেপে বলল

– কী বলছিলে একটু আগে? রাইট তাইনা?
.
আমি কিছু বলতে পারছিনা হেবলার মতো তাকিয়ে আছি শুধু।
.
– আপাদত তোমার বাবা মায়ের পরে যদি তোমার ওপর কারো অধিকার থাকে সেটা হলাম আমি, আর বিয়ের পর তোমার ওপর আমার অধিকার সবচেয়ে বেশি হবে, understand?
.
আমি কিছুই বলছিনা কিছুক্ষণ পর উনি আবার বলল
.
– ফেসবুকে এতো স্টাইলিস্ট ছবি দিতে কে বলেছে হ্যা। তাও পাবলিক করে দিয়েছো! কাল রাতে তোমায় মেসজ করে তোমার আই ডি তে গেছিলাম তোমার ফোটো গুলোতে কমেন্টস দেখে মাথায় রক্ত উঠে গেছিলো, জানো ওগুলো দেখে কী পরিমাণ রাগ লেগেছে সব ভেঙ্গে ফেলতে ইচ্ছে করছিলো। কমেন্টস গুলো দেখে রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছিলো। “Looking Beautiful”, “My ever crush” এসব কমেন্ট কেউ কেনো করবে তোমাকে? বলো কেনো করবে?
.
আমিতো অবাক! পাগল নাকি এই ছেলে এই সামান্য ব্যাপারে এতো রিয়াক্ট করছে? আর তাছাড়া ওসব কমেন্টস তো আমার ফ্রেন্ড রাই করে। উনি আবার বলল
.
– নবীন বরণের পিক পোস্ট করেছিলে কেনো হ্যা। দিগন্ত কে হ্যা? ওই ফোটোতে “নীল পরী” কমেন্ট করেছে? কে?
.
– অআমার ফ্রেন্ফ্রেন্ড

– চুপ! ফ্রেন্ড হোক আর যাই হোক নীল পরী কেনো বলবে তোমাকে? কোন সাহসে? জানো দুদিন কী পরিমাণ ব্যাস্ত ছিলাম, একটু বসার টাইম অবধি পাইনি, এমনিতেই কালকে রাত তিনটা অবধি কাজ করেছি ভেবেছিলাম তোমার ছবি দেখে কল রেকোর্ডারে তোমার ভয়েজ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পরব কিন্তু ওসব দেখে আর ঘুমোতেই পারিনি।
.
কিছুক্ষণ থেমে নিশ্বাস নিলো বুঝতে পারছি উনি খুব ক্লান্ত। এবার উনি শান্তভাবে বলল
.
– I know it’s general.. but আমি মানতে পারিনা। cause you are special for me.. very special for me..
.
বলেই আসতে করে আমার গলায় মুখ গুজে দিলো। আমিতো পুরো জমে গেছি, হাত পা অবস হয়ে আসছে। আমি আর চোখ খোলা রাখতে পারলামনা চোখ খিচে বন্ধ করে নিলাম। উনি আমার গলায় ওনার মুখ স্লাইড করতে করতে বললেন
.
– অন্য কেউ কেনো কমেন্ট করবে তোমাকে নিয়ে? তোমার সৌন্দর্য নিয়ে কেনো অন্যকেউ কিছু বলবে? সেই রাইট সেই অধিকার শুধুমাত্র আমার। অন্যকেউ সেটা কেনো করবে? Why? answer me damn it! Why?
.
আমার নিশ্বাস ক্রমাগত ভারি হয়ে আসছে, হার্ট ফুল স্পিডে বিট করছে। ওর সামান্য স্পর্শেই আমার অবস্হা খারাপ হয়ে যায় আর এখনতো! আমি অনেক কষ্টে অস্ফুট স্বরে বললাম

– ককী করছছেন ছা..
.
– হুসস.. ডোন্ট টক!
.
এরপর মাথা উঠিয়ে বলল। কাল সারারাত ঘুমোতে পারিনি, আর কাজের চাপও খুব ছিলো So i need to be refresh… So don’t disturb..
.
বলেই আবার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিলো। আমি কিছু বলতে যাবো। উনি জোরে একটা বাইট বসিয়ে দিলো গলায়।
.
– আহ্ ককী করছেন!
.
উনি ওভাবেই বলল
.
– বললামনা ডোন্ট ডিসটার্ব! কথা না শুনলে এমনি হবে!

বলেই উনি বাইট করা জায়গায় ডিপলি একটা কিস করল। আমি আর কিছু বলতে পারলামনা। বলার শক্তিও পাচ্ছিনা। চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছি কারণ এছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই। এভাবে বেশ অনেক্ষণ থাকার পর খেয়াল করলাম উনার কোনো রেসপন্স নেই থেমে গেছে উনি। কিন্তু ওনার নিশ্বাস এখনো আমার গলায় পরছে। বুঝতে পারলাম ঘুমিয়ে পরেছে। আশ্চর্য? এভাবে ঘুমোতে পারে কেউ? আমি ওকে একটু ঝাকলাম কিন্তু তবুও রেসপন্স করলোনা। আবারো অবাক হলাম। আমি যতটুকু শুনেছি ওনার ঘুম খুবই পাতলা, আমার মতো মরা ঘুম দেয়না তাহলে? হয়তো সত্যিই খুব ক্লান্ত ! সারাদিন ওমন হারভাঙ্গা খাটুনি খেটে তারওপর রাতে না ঘুমোলেতো আমাকে হসপিটাল এ এডমিট করতে হতো ! আমি খুব সাবধানে ওনাকে আমার ওপর থেকে সরিয়ে সোজা করে শুইয়ে দিলাম। কিন্তু এইটুকু করতে এই শীতেও আমি ঘেমে অস্হির! এমনিতেতো মোটা না পারফেক্ট আছে কিন্তু ওজন এতো বেশি কেনো নাকি আমার শক্তিই কম? বাবাগো! বারোটা বেজে গেছে আমার একে সোজা করে শুইয়ে দিতে গিয়ে। এরপর আপিকে একটা মেসেজ করে দিলাম যে আসতে লেট হবে যাতে টেনশন না করে! ফ্লোর থেকে ওনার টি শার্ট টা তুলে খাটে রাখলাম।

এরপর একটা বালিশ কোলে নিয়ে গালে হাত দিয়ে ওনাকে দেখছি। কি নিষ্পাপ লাগছে ঘুমন্ত অবস্হায়, কে বলবে এই ছেলে এত্তো রাগী আর খাটাশ মার্কা? এইভাবে ওনাকে প্রথম দেখছি আমি। দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে বাড়ির পোশাকেই বেড়িয়েছে চুলটাও আচরায়নি, থ্রি কোয়াটার প্যান্ট গায়ে তো এখন টি শার্ট টাও নেই জাস্ট একটা বক্সার গেন্জি! এমনিতেই এতো কিউট, আর এরকম এলোমেলো ভাবে আরো কিউট লাগছে তারওপর এভাবে ঘুমিয়ে আছে কেমন লাগে? যতই ভাবি যে এতো সহজে ওর প্রেমে পরবোনা ততই ও আমাকে নিজের দিকে টানে! ওর একেকটা কাজে, একেকটা রূপে আমি পাগল হয়ে যাই। না চাইতেও ক্রমশ দূর্বল হয়ে পরছি ওর ওপর এসব ভাবতে ভাবতেই ওর গালে হাত রাখলাম। ও ঘুমের ঘোরেই মুচকি হেসে আমার হাতে মুখ ঘসলো। আমি অবাক হলাম এ ছেলে ঘুমের মধ্যেও আমাকে অনুভব করতে পারে? স্ট্রেন্জ!

আমি একটা বালিশ খাটের সাথে সোজা করে রেখে তাতে হেলান দিয়ে ওকে দেখছি। এরকম সুযোগতো আর বারবার আসেনা। এমনিতে ওর দিকে তাকাতে পারিনা কারণ চোখাচোখি হয়ে যায় আর ওর চোখে চোখ রেখে বেশিক্ষণ থাকতে পারিনা আমি। তাই এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে দেখেই যাচ্ছি ওকে।
.
প্রায় তিন ঘন্টা পর পিটপিট করে চোখ খুললো ও। চোখ খুলে একটা হাই তুলে আমাকে দেখে ওর সেই পাগল করা হাসিটা দিলো আর আমি দ্রুত চোখ সরিয়ে নিলাম। ও হঠাৎ উঠে আমার কোলে শুয়ে পরল তার ভ্রু নাচিয়ে বলল
.
– কী হুম? আমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে আমাকে দেখা হচ্ছিলো?
.
– আমি কেনো আপনাকে কেনো দেখতে যাবো ?
.
– মিথ্যুক। আই নো তুমি আমাকেই দেখছিলে
.
– মোটেই না

– মোটেই হ্যা
.
– সরুন উঠুন আমার কোল থেকে অনেকটা সময় কেটে গেছে।
.
এবার উনি ঘুরে আমার কোমর জরিয়ে ধরে পেটে মুখ গুজে দিয়ে বলল
.
– উহু আমার এখনো ঘুম পাচ্ছে আরো ঘুমোবো আমি!
.
কী করছেন কী উনি, আজ কী উনি আমাকে মেরে ফেলার প্লান করেছে নাকি, উনি বুঝতে পারছেনা ওনার এরোকম স্পর্শগুলোতে আমার কী অবস্হা হচ্ছে? আমি নিজের গলাটা যথা সম্ভব স্বাভাবিক রেখে বললাম
.
– তো ঘুমোচ্ছিলেন তো বালিশে এখানে কেনো?

– এখানে ঘুমটা ভালো হবে।
.
– আরেহ
.
– প্লিজ!
.
আমি আর কিছু বললাম না চোখ বন্ধ করে বালিশে হেলান দিয়ে ঠোট চেপে রেখেছি, ওনার পেটে মুখ গুজে রাখার কারণে কেমন একটা ফিল হচ্ছে যেটা আমি নিতে পারছিনা। হঠাৎ উনি অস্ফুট স্বরে বলল
.
– মাথায় একটু বিলি কেটে দাও তো।
.
আমি কাপা কাপা হাতে ওনার চুলে হাত রাখলাম তারপর চোখ বন্ধ করেই বিলি কাটতে লাগলাম। বেশ অনেকটা সময় পর বুঝতে পারলাম উনি আবার ঘুমিয়ে গেছেন। লান্চের সময়টাও পার হয়ে গেছে আর আমার খিদেও পেয়েছে কিন্তু ওনাকে জাগাতে মন চাইছে না কি সুন্দর ঘুমোচ্ছে! তাই আমি ওনাকে না জাগিয়ে ওভাবেই বালিশে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রইলাম। কখন ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানিনা।

ঘুম ভাঙতে ফিল করলাম আমাকে কেউ জোরে জরিয়ে ধরে আছে তাকিয়েতো আমি মহা অবাক ! কারণ আদ্রিয়ান আমাকে বুকে নিয়ে চোখ বন্ধ করে সেই বালিশটাতেই হেলান দিয়ে আছে যেটাতে আমি ছিলাম। আমি ভাবছি এটা কী হলো? কেসটা এভাবে ঘুরে গেলো কীকরে? আদ্রিয়ানতো আমার কোলে ছিলো আর আমি বালিশে হেলান দিয়ে ছিলাম কিন্তু এখনতো ও বালিশে হেলান দিয়ে আছে আর আমি ওর বুকে। এটা কীভাবে হলো? আমি একটু নরতেই আদ্রিয়ান চোখ খুললো আমাকে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে মুচকি হেসে আমার কপালে একটা কিস করে দিয়ে বলল
.
– আমাকে ঘুম পারাতে পারাতে নিজেই ঘুমিয়ে পরেছো?
.
আমিতো ওনার দিকে পিটপিট তাকিয়ে আছি এখোনো ঘুম কাটেনি। এবার উনি আমাকে ওনার বুক থেকে সরিয়ে বসালেন। আমি হাই তুলে ঘুমঘুম কন্ঠে বললাম
.
– আসলে কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতেই পারিনি।
.
– এই এমন ঘুম কন্ঠে কথা বলোনাতো নিজেকে মাতাল মাতাল লাগে।
.
এটা শুনে আমি ওনার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালাম। উনি হেসে দিয়ে বলল
.
– খিদে পেয়েছে তাইনা?
.
– হুম।

– পাওয়ারি কথা লান্চতো করোনি এখন সারে পাচটা বাজে!
.
– কীহ? এতো কখন বাজল? এতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?
.
– জ্বি! আমি উঠে দেখি তুমি বালিশে হেলান দিয়েই ঘুমিয়ে পরেছো। যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো আমি বিরিয়ানি রেডি করছি।
.
– বিরিয়ানি কোথায় পেলেন?
.
– আনিয়েছি। Now no more question. তোমার জন্য আমিও না খেয়ে বসে আছি। একসাথে খাবো hurry up!
.
বলেই আমাকে ঠেলে ওয়াসরুমে পাঠিয়ে দিলো। হাতমুখ ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে মুছে নিলাম। তারপর বেরিয়ে এসে দেখি ও একটা প্লেটে বিরিয়ানি বেরেছে আর গ্লাসে পানি ঢালছে। আমাকে দেখেই বলল
.
– এসে গেছো বসো!

আমি খাটে আসাম করে বসলাম কিন্তু একটা প্লেট দেখে বললাম।
.
– আপনিতো বললেন আপনি খাননি তাহলে প্লেট একটা কেনো? উনি বললেন
.
– বিরিয়ানী আমি এনেছি সো আমিই খাবো
.
– আর আমি?
.
উনি পাত্তা না দিয়ে বলল
.
– সেটা আমি কী জানি?
.
– হুহ!
.
খাটাশ একটা! খিদেতে পেটে ডাইনোসর নাচছে! আর এ একাই খাবে? ডায়রিয়া হবে অভিশাপ দিলাম আমি হুহ। এসব ভাবতে ভাবতে অন্য দিকে মুখ ফুলিয়ে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ আমার মুখের সামনে কেউ খাবার ধরল আমি তাকিয়ে দেখি আদ্রিয়ান মুখের সামনে এক লোকমা বিরিয়ানী ধরে রেখেছে। আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলল

– কী খাবেনা?
.
হুহ তখন ওভাবে বলে এখন পিরিত দেখাচ্ছে খাবোনা আমি! আমি মুখ ফুলিয়ে বললাম
.
– নাহ! আপনি এনেছেন আপনিই খান!
.
– সত্যিই খাবেনা?
.
– নাহ
.
– আবার বলো
.
আমি এবার জোরে বললাম
.
– নাআআআ
.
উনি সেই সুযোগে আমার মুখের মধ্যে বিরিয়ানী ঢুকিয়ে দিলো আর আমি মুখ ফুলিয়ে চিবোতে লাগলাম। আরেক লোকমা দিতে গেলে আমি মুখ ঘুরিয়ে নিলাম। উনি বলল

– ওকে আর জোর করবোনা
.
বলে যেই নিজের মুখে দিতে যাবে আমি তাড়াতাড়ি কেরে খেয়ে নিলাম। সেটা দেখে উনি হেসে দিলো আর আমার চুলগুলো নেড়ে দিয়ে বলল
.
– পাগলী!
.
এরপর উনি আমাকে খাওয়াচ্ছে আর নিজেও খাচ্ছে।
.
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে আছি আর আজকে ওনার করা পাগলামি গুলোর কথা ভাবছি। কতটা ভালোবাসলে কারো জন্য এতোটা ডেসপারেট হওয়া যায়? কতটা চাইলে কেউ কারো জন্য এতো পাগলামি করতে পারে? আজকে ওনার ওই রাগের মধ্যেও আমি সীমাহীন ভালোবাসা দেখেছি। কিন্তু এত কেনো ভালোবাসে ও আমাকে? সত্যিই কী আমি ওর যোগ্য? সত্যিই কী আমি এতো ভালোবাসা পাবার যোগ্য?
আমি ওনার দিকে তাকিয়ে আছি আর আজকে ওনার করা পাগলামি গুলোর কথা ভাবছি। কতটা ভালোবাসলে কারো জন্য এতোটা ডেসপারেট হওয়া যায়? কতটা চাইলে কেউ কারো জন্য এতো পাগলামি করতে পারে? আজকে ওনার ওই রাগের মধ্যেও আমি ভালোবাসা দেখেছি। কিন্তু এত কেনো ভালোবাসে ও আমাকে? সত্যিই কী আমি ওর যোগ্য? সত্যিই কী আমি এতো ভালোবাসা পাবার যোগ্য?
.
আমাকে ওনার দিকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে উনি ভ্রু নাচিয়ে ইশারা করল ‘কী’? আমি ওনার দিকে তাকিয়েই মাথা নাড়লাম।
খাওয়া শেষে নিজেই আমার মুখ মুছে দিলো এরপর প্লেট রেখে এসে আমার পাশে বসে বলল।
.
– আরেকটু রেস্ট নিয়ে আমরা বাড়ি ব্যাক করব ওকেহ?
.
– ওকেহ
.
– আর কিছু খাবে?

– কফি! এক্চুয়ালি ঘুম থেকে উঠে কফি না খাওয়া অবধি মাথা ব্যাথা করে!
.
– আগে বলবে তো ! জাস্ট পাচ মিনিট বসো আমি নিয়ে আসছি।
.
বলেই আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে গেলো! বেশ কিছুক্ষণ পরে দুই হাতে কফির দুটো মগ নিয়ে আসল। একটা আমার হাতে দিয়ে বলল
.
– Your coffee!
.
– Thanks
.
– My pleasure baby! চলো ব্যালকনিতে যাই?
.
– চলুন
.
বলেই দুজনে ব্যালকনিয়ে গিয়ে কফি খেতে থাকলাম। ব্যালকনিতে লাইট জলছে! হালকা অন্ধকার বাইরে সামনে একটা মাঠ দেখা যাচ্ছে। নিরবতা ভেঙ্গে আদ্রিয়ান বলল
.
– বাড়িতে জানিয়েছো?
.
– হুম আপিকে মেসেজ করেছি।
.
– আর ঐ সময়ের জন্য সরি, আমার এরকমটা করা ঠিক হয়নি

আমি কিছুই বললাম না কারণ কীসের কথা বলছে বুঝতে পারছিনা ধমকানোর কথা বলল? নাকি তারপর যেটা করেছে সেটা? হঠাৎ উনি কফির মগটা আমার হাত থেকে নিয়ে পাশের একটা টেবিলে রাখল তারপর আমার হাত ধরে আমাকে দেয়ালের সাথে লাগিয়ে নিল এরপর গলার দিকের চুলগুলো সরিয়ে ওখানে হাত রাখল। সাথে সাথেই জলে উঠলো জায়গাটা। তারপর মনে পরল এখানেই বাইট করেছিলেন উনি। আমার তো খেয়ালই ছিলো না কিন্তু উনি টাচ করাতেই এভাবে জলে উঠলো কেনো? কেটে গেছে নাকি? উনি হঠাৎ বলে উঠল
.
– ইস্ কীভাবে লাল হয়ে গেছে, ছিলেও গেছে হালকা। আসলে তখন খুব রেগে ছিলাম তাই বুঝতে পারিনি সো সরি!
.
বলেই উনি ঝুকলো আর সাথে সাথে আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। উনি ওই জায়গায় বেস সময় নিয়ে একটা কিস করল। তারপর সরে এলো। আমি আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম ওনার দিকে। উনি আমার দুপাশের দেয়ালে হাত রেখে দাড়িয়ে আমাকে দেখছে আর আমি ওনাকে। হঠাৎ আমাকে অবাক করে দিয়ে উনি বলল
.
– এভাবে কেনো দেখছো হুম? I know I’m so handsome..
.
আমি ভ্রু কুচকে তাকালাম ওনার দিকে। সেটা দেখে উনি বলল।
.
– আর without T-shirt আরো হট লাগছে তাই না?
.
বলেই চোখ মারলো । আর আমি বিষম খেলাম। সেটা দেখে উনি হাসতে হাসতে বলল

– এটুকুতেই বিষম খেলে। এখনোতো আমার গায়ে বক্সার গেন্জিটা আছে তুমি বললে এটাও..
.
– চুপ করবেন। আপনি.. আপনি একটা..
.
উনি কোমর ধরে আমাকে ওনার সাথে মিশিয়ে নিয়ে বলল
.
– কী?
.
– অ..অসভ্য! হ্যা আপনি একটা অসভ্য!
.
– যাহ বাবা তেমন কিছুই তো করলাম না তাতেই অসভ্য হয়ে গেলাম। আর কিছু করলেতো..
.
বলেই মুখটা এগিয়ে আনতেই আমি ওনাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে মুচকি মুচকি হাসতে লাগলাম। উনি পেছন থেকে আমাকে জরিয়ে ধরে অমার চুলে নাক ডুবিয়ে দিলো। আর আমিও চোখ বন্ধ করে নিলাম। উনি অভাবেই বলল
.
– তুমি কিন্তু তোমার কথার খেলাপ করছো?

– কোনটা বলুন তো?
.
– এইযে তোমার আমাকে তুমি করে বলার কথা সেই দুদিন আগে থেকে কিন্তু তুমি এখনো আমাকে আপনি করে বলছো
.
এইরে এখন কী হবে? একে তুমি করে বলবো কীভাবে আমি? সেদিনতো কাল বলবো বলে বেচে গেছি এখন কী করি? উনি আবারো বলল
.
– কী হলো বলো?
.
– আচ্ছা বলব
.
– এখন বলো।
.
– পরে বলি?
.
– আচ্ছা বলতে হবে না।
.
বলেই উনি আরো শক্ত করে ধরলেন আমাকে তারপর কাধে থুতনি রেখে বলল
.
– তোমাকে কোনো ব্যাপারেই জোর করবোনা। আমি জানি তুমি এখনো আমাকে ভালোবাসতে পারোনি কিন্তু আমিতো বাসি খুব বেশিই ভালোবাসি, সেটাই যথেষ্ট আমার কাছে। তুমি যখন বলতে চাইছোনা তখন বলতে হবেনা।
.
আমার কেনো জানিনা খুব খারাপ লাগলো ওনার কথাগুলো শুনে! আমার কী করা উচিত এখন? উনি আবারো বলল
.
– জানো ছোটবেলা থেকে যেটা এচিভ করতে চেয়েছি সেটাই এচিভ করে নিয়েছি। ক্লাসে কোনোদিন ফার্স প্লেস কেউ নিতে পারে নি, কারণ ওটা আমি চাইতাম, কোনো কমপিটিশনে সেকেন্ড হইনি আমি। কোনোদিনো সেকেন্ড হবার ভয়ও ছিলোনা আমার মনে আমি সবসময় জানতাম আমিই ফার্সট হবো, কারণ আমি ফার্সট পজিশন চাইতাম। আমি যেটা চাই সেটা আমারই হয়েছে, চ্যামপিয়নশিপ, বেস্ট ইন্জিনিয়ারিং, বেস্ট ডিসকভার অ্যাওয়ার্ডস এসব কিছু যখন চেয়েছি তখন মনে কোনো ভয় ছিলোনা। ভয় কী জিনিস সেটা আমি জানতাম না। কিন্তু আজ প্রথম কিছু পাওয়ার জন্য আমি ব্যাকুল হচ্ছি, আজ প্রথম কিছু হারানোর ভয়ে আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি।

আমি অবাক হয়ে শুনছি ওনার প্রতিটা কথা আমার মনে নাড়া দিচ্ছে! উনি আমাকে ঘুরিয়ে জোরে জরিয়ে ধরে আবার বলল
.
– কিন্তু এখন আমার ভয় হয় অনি খুব ভয় হয় । এই প্রথম আদ্রিয়ান আবরার জুহায়ের ভয় পাচ্ছে, হ্যা ভীষণ ভয় পাচ্ছে। জীবনে কোনদিন কোন ফিলিংস আমাকে এতোটা দুর্বল করতে পারেনি, কিন্তু আজ আমাকে দুর্বল করছে তোমার প্রতি আমার অনুভুতি অামাকে দুর্বল করছে। সব আছে আমার কাছে কিন্তু তবুও মনে হচ্ছে কিছুই নেই, আমি নিঃস্ব একেবারে নিঃস্ব। যখনি তোমাকে হারিয়ে ফেলার কথা ভাবি তখন নিজেকে পাগল মনে হয়, খুব কষ্ট হয়, নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে আমার। শুধু ভাবি যদি কোনো কারণে তোমায় হারিয়ে ফেলি? দূরে চলে যাও আমার থেকে তাহলে কী করব আমি? যেটা কল্পনা করলেও আমার হার্ট বিট করা বন্ধ করে দেয়, নিজেকে বদ্ধ উন্মাদ মনে হয়, শ্বাস আটকে আসে সেটা যদি সত্যিই হয় তাহলে আমি কীকরে সহ্য করব?
.
আমি তো পুরো শকড হয়ে আছি, বুক ভার হয়ে আসছে, ওনার কথাগুলো আমার বুকে বারবার আঘাত করছে। উনি আরো জোরে জরিয়ে ধরে বলল
.
– ভালোবাসলে কী এতো কষ্ট পেতে হয় অনি? সবাইতো বলে ভালোবাসা মানুষকে আনন্দ দেয় কষ্ট দূর করে দেয়। কিন্তু আমার এতো কষ্ট কেনো হয়? কেনো বারবার তোমাকে হারানোর চিন্তা আমার মাথায় আসে? আমিতো ঘুমের মধ্যেও এই ভয়ে জেগে উঠি। প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করে চিৎকার করতে ইচ্ছে করে কিন্তু পারিনা। এতো পাবলিসিটি, এতো সাকসেস এসব কিচ্ছু চাইনা আমার। I just want you.. তুমি ছাড়া আমার সারাজীবনের এইসব এচিভমেন্ট কিচ্ছু না

হঠাৎ কাধে গরম তরল জাতীয় কিছু অনুভব করলাম। কাদছে উনি? আদ্রিয়ান আবরার জুহায়ের কাদছে? তাও একটা মেয়ের জন্য? উনি আবার বলল
.
– তোমার আঙ্গুলে আমার নামের আংটি আছে তোমার হাতে আমার দেয়া বেসলেট তুমি এখনো পরে আছো যেটা আমাকে কিছুটা শান্তি দেয়। কিন্তু ওই যন্ত্রনা কমাতে পারেনা। প্লিছ অনি আমাকে ভালোবাসতে না পারলে বেসোনা আমি কোনোদিনো তোমার কাছে ভালোবাসা চাইবোনা কিন্তু আমাকে কোনোদিন আঘাত করোনা বিশ্বাস করো আমি নিতে পারবোনা। আর যাই করো আমায় ছেড়ে যেওনা কখনো আমি মরে যাবো জাস্ট মরে যাবো।
.
এবার আমারো কান্না পাচ্ছে এতো কেনো কষ্ট পাচ্ছেন উনি? আমিতো আছি ওনার বুকেই আছি, তাহলে? উনি কিছুক্ষণ থেমে আবার বলল
.
– জানো নদী যত বেগ আর জল নিয়ে পাহাড় থেকে নামুকনা কেনো কিন্তু সে যদি সাগরে মিলিত হবার আগেই শুকিয়ে যায় তাহলে তার কোনো মূল্য থাকেনা, সে নদী অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
তুমি ছাড়াও আমার এতকিছুর কোনো মুল্য নেই, তুমি ছাড়া আমিও শেষ হয়ে যাবো। প্লিজ যাই হয়ে যাক ডোন্ট লিভ মি। প্লিজ!
.
আমার ভীষণ কান্না পাচ্ছে এবার, কিন্তু নিষ্টুর ভাবে চোখ থেকে একফোটাও পানি বেরোচ্ছে না। ওনাকে কী বলে সামলাবো বুজতে পারছিনা। তাই কিছু বলতে যাবো তার আগেই উনি চোখ মুছে আমাকে ছেড়ে বললেন

– সিমপ্যাথি দেখিয়ে কিছু বলতে হবেনা যখন মন থেকে কিছু বলতে চাইবে তখনি বলো! এবার চলো নইলে রাত হয়ে যাবে বলেই ভেতরে চলে গেলো! আর আমি ওনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম কেনো জানি একটা গিল্টি ফিল হচ্ছে কিন্তু আমিতো কিছু করিনি এমন লাগছে কেনো আমার?
.
আমি ভেতরে গিয়ে দেখলাম উনি টিশার্ট পরছেন। আমাকে দেখে একটা হাসি দেবার চেষ্টা করল কিন্তু সেই হাসিটা যে কৃত্তিম সেটা বুজতে সময় লাগেনি আমার আমিও ড্রেসিং টেবিলে গিয়ে চুলটা ঠিক করে নিলাম তারপর বেড়িয়ে গেলাম। গাড়িতে আমরা কেউ কারো সাথে কথা বলিনি যদিও অনেকবার চোখাচোখি হয়েছে। ওর মুখে কেমন হালকা বিষন্নতা, আমি জানি ও আমার ওপর রাগ করেনি, কোনো অভিযোগ ও নেই, কিন্তু এটাও জানি ওর মন খারাপের কারণটাও আমি। কিন্তু ওনার মন ভালো করার কোনো উপায়ও পাচ্ছিনা। হঠাৎ আদ্রিয়ান বলল

– এসে গেছি
.
– হু?
.
– বাড়ি এসে গেছি
.
তাকিয়ে দেখলাম এসে গেছি বাসায়।
আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে কখন চলে এসছি বুঝতে পারিনি! আদ্রিয়ান যথারীতি সিট বেল্ট খুলে বাইরে বেরিয়ে দরজা খুলে হাত ধরে নামালো আমাকে আমিও এই কাজটা ওনার জন্যই রেখে দেই। আমি যেই চলে যেতে নেবো উনি বলল
.
– অনি!

আমি পেছনে তাকালাম। উনি মলিন হেসে বলল
.
– I love you
.
এই মুহুর্তে হয়তো I love you too বলাটাই ওনার মন ভালো করার সবচেয়ে ভালো উপায় ছিলো। কিন্তু আমি নিরুপায়! আর যাই করি মিথ্যে বলতে পারবোনা ওকে, তাতে ওর মন ভালো হলেও ওকে ঠকানো হবে যা করতে পারবোনা আমি, তাই আমিও একটা হাসি দিয়ে বললাম

– বাই।
.
ওনার মুখ দেখে মনে হলো উনি এরকমি কিছু আশা করেছিলো। একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলল
.
– বাই।
.
আমি আর পেছনে তাকালাম না খুব কান্না পাচ্ছে। ওর ওই মলিন চেহারাটা দেখলে হয়তো কান্নাটা আর আটকে রাখতে পারবোনা! তাই তাড়াতাড়ি হেটে ভেতরে যেতেই দেখি সবাই বসে আছে। আমি সেদিকে পাত্তা না দিয়ে উপরে যেতে নিলে, আম্মু বলল
.
– কোথায় গেছিলে? এতো দেরী হলো?
.
– এটা নিয়ে পরে কথা বলব আম্মু।

– ছিলেটা কোথায় সেটা বলবেতো?
.
– আম্মু প্লিজ! বললাম তো পরে কথা বলব?
.
তখন আব্বু আম্মুকে বলল
.
– এখন যেতে দেও ওকে! পরে জিজ্ঞেস করো। মামনী যা তুই!

Infinite Love part 21+22+23+24+25

আমি দ্রুত হেটে রুমে চলে এলাম। তারপর কোনোরকমে ফ্রেশ হয়ে চেন্জ করে খাটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি মনে হচ্ছে কাদতে পারলে ভালো লাগতো কিন্তু কান্নাও তো আসছে না। হঠাৎ মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেলাম তাকিয়ে দেখি আপি। আপিকে দেখে আর কান্না আটকে রাখতে পারলাম না আপিকে জরিয়ে ধরে কেদে দিলাম। আপি চমকে গিয়ে বলল
.
– কী হয়েছে? এভাবে কাদছিস কেনো?
.
আমি কেদেই যাচ্ছি জোরে জোরে কাদছি। আপি উত্তেজিত হয়ে বলল
.
– আরে বলবিতো কী হয়েছে? আদ্রিয়ানের সাথে ঝগড়া হয়েছে?
.
আমি আপিকে জরিয়ে ধরেই হিচকি দিয়ে কাদতে কাদতে বললাম
.
– আমি খুব খারাপ, খুব খারাপ আমি। ও কেনো আমাকে এতো ভালোবাসে বলোতো? আমি ওর ভালোবাসার যোগ্যই নাহ। আমি.. আমিতো ওর ভালোবাসার মূল্যটুকুও দিতে পারছিনা। আমার জন্য শুধু আমার জন্য ছেলেটা এতো কষ্ট পাচ্ছে। Just because of me! ও আমার চেয়ে বেটার কাউকে ডিজার্ব করে যে ওকে কখনো কোনো কষ্ট দেবেনা, কিন্তু কেনো এতো ভালোবাসে ও আমায় কেনো? কেনো?

Infinite Love part 31+32+33+34+35