জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ২ || লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ২
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

একটা রেস্টুরেন্টের টেবিলে নিজের কাজ করছে সৌহার্দ্য। আসলে কারো জন্যে অপেক্ষা করছে। কিন্তু বসে বসে কী করবে? তাই ল্যাপটপে নিজের কিছু কাজ গুছিয়ে নিচ্ছে। হঠাৎ করেই একজন কাশির শব্দ পেল। সৌহার্দ্য ভ্রু কুচকে সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল, সাথে সাথে মুখে ফুটে উঠল এক অসাধারণ হাসি। মুখ দিয়ে আনন্দিত স্বরে ‘বিহান’ উঠে দাঁড়িয়ে জড়িয়ে ধরতে গেলেই বিহান হাত দিয়ে আটকে দিয়ে বলল,

” দাঁড়ান স্যার? আগে জেনে নেই কাকে হাগ করছি? আমার বন্ধু সৌহার্দ্য কে? নাকি…?”
সৌহার্দ্য নিজের ঠোঁটে আঙ্গুল দিল, বিহানও চোখ টিপ মেরে জড়িয়ে ধরল সৌহার্দ্য কে আর সৌহার্দ্য জড়িয়ে ধরল নিজের প্রাণপ্রিয় ছোটবেলার বন্ধুকে। হ্যাঁ একেবারে তিনবছর বয়স থেকেই একে ওপরের বন্ধু ওরা। ওদের আরেকটা পরিচয় আছে বিহান সৌহার্দ্যের ফুপাতো ভাই। একজন অপরজনের প্রাণ। কতদিন পর দেখা হলো দুজনের। সৌহার্দ্য বিহানকে ছেড়ে ঘাড় বাকিয়ে বলল,

— ” একা যে, গার্লফ্রেন্ডরা একা ছাড়ল?”
বিহান হেসে দিয়ে বলল,
— ” ছাড়তো! চল বসি।”
এরপর দুজনেই টেবিলে বসল। সৌহার্দ্য বলল,
” কী খাবি বল?”
“আপনি ভালোবেসে যা খাওয়াবেন স্যার!”
সৌহার্দ্য আজ সবকিছুই বিহানের পছন্দমত ওর্ডার করল। দুজনে খাওয়া-দাওয়া করে বেড়িয়ে পরল। আজ দুই বন্ধু মিলে রাস্তায় পায়ে হেটে ঘুরবে। এটা ওদের পুরোনো অভ্যেস। যখনই অবসর পায় দুই বন্ধু মিলে হাটতে বেড়োয়। দুজনে হাটতে হাটতে একটা বেশ মাঠের কাছে চলে এলো। হঠাৎ একটা মেয়ে চেঁচিয়ে বলল,
” বিহান? ইউ আর ব্যাক? আর আমায় জানাও নি?”
বিহান মেকি হেসে বলল,

আরও গল্প পরতে ভিজিট করুন

” আজ সকালেই এলাম। এক্ষুনি তোমাকে কল করতাম।”
” ওহ, তাহলে চলোনা বেবী, কতদিন পর এলে? নিজেদের মত একটু সময় কাটাই।”
” আসলে কী বলোতো? আমার বন্ধুর সাথে এসছি আমি। সন্ধ্যায় দেখা করি?”
“তুমি সবসময় এমন বাহানা কর। দূর! ভালোলাগে না।”
বলে মুখ ফুলিয়ে চলে গেল মেয়েটা। বিহান বিড়বিড় করে বলল ‘ বাঁচা গেল’। বলে সৌহার্দ্যর দিকে তাকিয়ে দেখে ও চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে। বিহান মুখে মেকি হাসি ফুটিয়ে একটু ইতস্তত করল। সৌহার্দ্য মাথা দুলিয়ে বলল,

” এত লজ্জার কিছু নেই? ওটা তোকে সুট করে না। আর আমিতো এগুলো নতুন দেখছি না তাইনা?”
বিহান কিছু না বলে নিজের মাথা চুলকালো। সৌহার্দ্য বলল,
” তা মেয়েটার সাথে গেলেই তো পারতি?”
” তোর চেয়ে বেশি ইম্পর্টেন্ট আমার কাছে কিচ্ছু না, কেউ না। এরা তো শুধুই টাইমপাস।”
” কেনো করিস এসব?”
” বাচাঁর জন্যে।”
সৌহার্দ্য একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে একটু চুপ থেকে বলল,
— ” হুম। তবে এতদিন ভাবতাম তোর মত জিনিস আর হয়না। কিন্তু আজ বুঝলাম এরকম এলিয়েন আরও একজন আছে দুনিয়াতে।”
বিহান অবাক হয়ে বলল,

” আরিব্বাস! তাই নাকি? আমিও তো এতদিন তাই ভাবতাম। কে সে?”
” ছাড় সেসব। তোর কথা বল এসেছিস সেই কখন। এতক্ষণ কী করলি?”
বিহান হেসে বলল,
” শপিংমলে গেছিলাম। তবে ওখানে গিয়ে ভিন্ন কিছু দেখলাম।”
সৌহার্দ্য কৌতূহল নিয়ে বলল,
” কীরকম?”
এরপর বিহান রিখিয়ার সব কথা খুলে বলল। সৌহার্দ্য হেসে বলল,
” ঠিকই আছে। তোদের মত লাইফটাকে মজা ভাববে নাকি? বাই দা ওয়ে প্রেমে টেমে পরে যাসছি তো?”
বিহান মুচকি হেসে বলল,
” মেয়েটাতো পাত্তাই দিল না।”
সৌহার্দ্য হেসে দিয়ে বলল,

” ওরকম মেয়েরা পাত্তা দেবেও না। তোদের মত জীবনটাকে তো ফানি গেইম মনে করেনা।”
বিহান বিরক্ত হয়ে বলল,
” তুই একটু বেশিই সিরিয়াস সব বিষয়ে।”
সৌহার্দ্য স্বাভাবিক স্বরে বলল,
“হয়ত।”
বিহান সৌহার্দ্যর গায়ে চাপড় মেরে বলল,
” তবে দেখিস তোর ঘাড়ে এমন কেউ এসে চাপবে যে তোকে বোঝাবে যে সব কিছু নিয়ে বেশি সিরিয়াস হয়ে ভাবলে জীবনটা আর জীবন থাকেনা রেলগাড়ি হয়ে যায়। যে শুধু ছুটে চলে আর নির্দিষ্ট স্টেশনেই থামে। নিয়মের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সাচ্ছন্দতা জিনিসটাই ভুলে যায়।”
সৌহার্দ্য একটু হাসলো। তারপর বলল,
— ” আর তোরও এমন কাউকে দরকার যে তোকে জীবনের গুরুত্ব শেখাবে। শেখাবে যে জীবনটা কোন সার্কাস বা ফান গেম নয়। যেখানে শুধুই হাসিঠাট্টা থাকবে, জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থাকে সেগুলোকে গুরুত্ব দিয়েই ভাবা উচিত।”
এরপর এসব গম্ভীর কথাবার্তা ছেড়ে দুই বন্ধু মিলে মাঠের পাশের পুকুরের পাড়ে বসে নিজের আড্ডায় মেতে উঠল। যাকে বলে প্রাণখুলে মনের কথা বলা।

ড্রয়িং রুমের ফ্লোরে বড় সোফার সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে তুর্বী। তাও বেশ অদ্ভুত ভঙ্গিতে। বা পা সিঙ্গেল সোফার ওপরে দিয়ে রেখেছে আর ডান পা ফ্লোরে মেলে রেখে দিয়েছে। সিলিং এর দিকে তাকিয়ে আছে আর চিপস চিবোচ্ছে। এটা ওর অভ্যাস। যখন কিছু ভাবতে থাকে তখন মুখে কিছু না কিছু দিয়ে ওকে চিবোতেই হবে। এরমধ্যেই রিখিয়া কিচেন থেকে দু-হাতে দুটো হাফ-প্লেটে করে পাস্তা নিয়ে বেড়িয়ে এলো। এসে তুর্বীকে এভাবে বসে ভাবতে দেখে ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলল। এরপর তুর্বীর পাশে ফ্লোরে বসে, পাস্তার প্লেটদুটো নিচে রেখে টান দিয়ে সিঙ্গেল সোফা থেকে ওর পা টা নিচে নামিয়ে দিল। তুর্বী হকচকিয়ে গিয়ে ভাবনা থেকে বেড়িয়ে এল। রিখিয়া ওর হাত থেকে চিপসের প্যাকেটটা একটানে নিয়ে বলল,

“এমন উদ্ভটভাবে কে বসে? কিছুই শিখলেনা এখনও তুর।”
তুর্বী বিরক্তি নিয়ে বলল,
” আরে রিখু ইয়ার, ছাড়না। কে দেখতে আসছে? প্যাকেটটা দে না?”
বলে আবার সিঙ্গেল সোফায় ওপর পা রাখল। রিখিয়া একটা মেকি হাসি দিয়ে বলল,
” জি না। এটা ব্রেকফাস্ট করার সময়, বসে বসে এইসব চিবিনোর সময় না। কতটা বেলা হয়েছে।”
বলে তুর্বীর হাতে পাস্তার প্লেটটা ধরিয়ে দিলো। তুর্বী মুখ বাকিয়ে প্লেটটা নিয়ে চামচ দিয়ে পাস্তা নাড়তে শুরু করল। রিখিয়া তুর্বীর কপালে হাত দিয়ে ওর জ্বরটা চেক করে নিল। চেক করে দেখল যে না জ্বরটা আর আসেনি। একটা স্বস্তির শ্বাস ফেলে পাস্তা খাওয়ায় মনোযোগ দিল। কাল রাতে ভীষণ জ্বর এসছিল মেয়েটার যদিও সকালের মধ্যেই সেড়ে গেছে। তাই আজ সকালে বাজারটা করতে রিখিয়াই গিয়েছিল, না হলে এমনিতে তুর্বীই বাজারের কাজটা করে।

তুর্বী আর রিখিয়া হলো ফ্লাটমেট। একে ওপরকে ‘তুর’ আর ‘রিখু’ বলে ডাকে। তুর্বী রিখিয়াকে ‘তুই’ করে বললেও রিখিয়া তুর্বীকে ‘তুমি’ ‘তুই’ দুটোই বলে। এই দুজনেও দুইকমের মানুষ। তুর্বী ছটফটে, প্রাণবন্ত, এক্সপেরিমেন্টাল, যখন মনে যা আসে তাই করে। আর রিখিয়া শান্ত, গুটিয়ে থাকে, সেন্টিমেন্টাল, কিছু করার আগে একটু ভেবেচিন্তে করে। কিন্তু তবুও দুজনের বন্ধুত্বের বন্ডিং টা অসাধারণ। বেশিদিনের পরিচয় নয় দুজনের। দুজনেই মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে।পরিবারকে সাপোর্ট দিতে দুজনেই এই ব্যস্ত ঢাকা শহরে দুজনেই এসছে চাকরির উদ্দেশ্য। আর এখানে এসেই আকস্মিকভাবে আলাপ দু-জনের আর খুব দ্রুতই বন্ধুত্ব হয়ে যায়। রিখিয়া একটা বেসরকারি ব্যাংকে জয়েন করেছে মাস দুই হলো। আর তুর্বীও মাস দুই আগেই একটা কম্পানিতে জুনিয়র আর্কিটেক্ট হিসেবে জয়েন করেছে। যেহুতু দুজনেরই কর্মক্ষেত্র একই শহরে ছিল তাই তাড়া দুজনে মিলেই একটা ফ্লাট ভাড়া করে থাকে। এরকমই অফিস করে, ঘরের কাজ ভাগাভাগি করে, মাঝে মাঝে ঘোরাফেরা করেই দিন কাটে ওদের দিনকাল। তুর্বী পাস্তা চিবুতে চিবুতে বলল,

” বাই দা ওয়ে। আজকে বাজার করার এক্সপিরিয়েন্স কেমন ছিল?”
রিখিয়া প্লেটটা নামিয়ে ছোট্ট শ্বাস ফেলে বলল,
” মারাত্নক ছিল। এই শীতেও ঘাম বেড়িয়ে গেছিল আমার। আমি এতদিন ভাবতাম রান্না করে আমিই হয়তো সব উদ্ধার করে দিচ্ছি। কিন্তু না বোন, বাজার করাটাও ভীষণ কঠিন।”
তুর্বী গোল গলার টিশার্ট টা নাড়িয়ে একটা দাম্ভিক হাসি দিল। যেন খুব বিশাল কিছু করে ও। রিখিয়া বলল,
— ” বড় সোফার ওপরে একটা প্যাকেট আছে দেখো?”
তুর্বী ভ্রু কিঞ্চিত কুচকে ঘাড় ঘুরিয়ে বড় সোফায় তাকালো। একটা ছোট্ট শপিং ব্যাপ কোণায় পরে থাকতে দেখে মুখের পাস্তাটা গিলে নিয়ে বলল,
” কী আছে ওটায়?”
” খুলেতো দেখ?”

তুর্বী প্লেটটা রেখে শপিং ব্যাগটা হাতে নিয়ে ভেতরে হাত ঢুকিয়ে একটা বক্স পেলো। বেশ অবাক হয়েই বক্সটা খুলল। বক্সটা খুলে আরও অবাক হলো তুর্বী। কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকার পরেই মুখে হাসি ফুটে উঠল ওর। খুশিতে চিৎকার করে বলল,
” থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ সো মাচ।”
” পরে দেখ।”
” তুই পরিয়ে দে।”
রিখিয়া খুব যত্ন সহকারে ঘড়িটা পড়িয়ে দিল তুর্বীর হাতে। তুর্বীর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে ও কত খুশি। হঠাৎ কিছু একটা মনে পরতেই তুর্বী বলল,
— ” ঘড়িটা তো বেশ দামী। এত টাকা কোথায় পেলি?”
— ” জানিনা, প্রথমে হাজার টাকা বলল কিন্তু পরে নিজেরাই ডেকে চারশ টাকায় দিয়ে দিল।”
তুর্বী অবাক হয়ে বলল,
” কীহ?”

” এসব ছাড়ো? আজ ‘প্রভাতের আলো’ শো টা তে কল করেছিলে? কী বলল আর.জে. S.R?”
তুর্বীর মুখে আবার বিরক্তি ভর করল। বিরক্তি নিয়ে রিখিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,
” রাখতো তোর S.R.। ওনার এত নাম, প্রশংসা সবই ধপের চপ। তোর মুখে ওনার এত প্রশংসা শুনে মনে করেছিলাম কী না কী সে? কিন্তু আমার একটা সিম্পল প্রবলেম সলভ করতে পারল না।”
” অসম্ভব! তুমি জানো উনি কত ভালো আর.জে.। সব প্রশ্নের উত্তর ওনার ঠোঁটের ডগায় থাকে। জানো আমার কত পছন্দের উনি।”
” ধূর! আমার তো মনে হয় ওই ব্যাটা ধপবাজি করে সবার সাথে। নিশ্চয়ই সব স্ক্রিপ্টেড।”
” আরে কী বলছ এসব? আচ্ছা তোমার প্রশ্নটা কী ছিল বলোতো?”
এরপর তুর্বী রিখিয়াকে সবটা ক্লিয়ার করে বলল। সবটা শুনে রিখিয়া বোকার মত তাকিয়ে রইল তুর্বীর দিকে। তারপর হতাশ কন্ঠে বলল,

” S.R এর কী দোষ? তোমার এমন প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারবে না।”
তুর্বী অধৈর্য হয়ে বলল,
” কেন পারবেনা? পারতে হবে? আমার উত্তর চাই। আ’ম টু মাচ বোরড ইয়ার। একটু এক্সাইটমেন্ট চাই। যতক্ষণ সেটা না পাবো ততক্ষণ শান্তি পাবোনা।”
রিখিয়া এবার আসাম করে বসে তুর্বীর দিকে ঘুরে বলল,
” রিলেশনশীপ এক্সপিরিমেন্টের জিনিস না তুর। আজকাল তো মানুষ এটাকে খেলনা মনে করে। কিছুক্ষণ আগেও শপিং মলে একটা উদ্ভট ছেলের সাথে দেখা হয়ে।”
তুর্বী বেশ ইন্টারেস্ট নিয়ে নড়েচড়ে বসে বলল,
” ওয়াও! উদ্ভট ছেলে? কী হয়েছে খুলে বল না?”

জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ১

রিখিয়া শপিং মলের লিফট থেকে শুরু করে ওকে ডেকে নাম জিজ্ঞেস করা অবধি সব বলল। সবটা শুনে তুর্বী উচ্ছসিত হয়ে হাতে একটা ক্লাব মেরে বলল,
” বাহ! কী এটিটিউড ভাই? একদম কুল এন্ড রক টাইপ!”
“তোমার ভালো লেগেছে? আমার তো জঘন্য একটা লোক মনে হল।”
” কী বলছিস? এই নামটা কী রে?”
” কী জানি? কী জেনো বলল মেয়েটা? হ্যাঁ বিহান।”
” ওয়াও নামটাও একদম জোস।”
” যাগ গে বাদ দে এসব কথা। যেটা বলছিলাম। দেখ তুই যেটা চাইছিস সেটা সম্ভব নয়। আচ্ছা একটা কথা বল ফিল্মের টিটেল ”কাভি খুশি কাভি গাম’ হলো কিন্তু ‘হার ওয়াক্ত খুশি’ কেন হলো না?”
তুর্বী স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বলল,

“কারণ এটা একটা ডাম্ব টাইটেল।”
” আরে না। আমি বলতে চাইছি। সুখ, দুঃখ দুটোই কম বেশি সবার জীবনে থাকবেই। কেউই সবসময় পুরোপুরি খুশি থাকতে পারেনা।”
তুর্বী ভ্রু কুচকে বলল,
“কে বলেছে? সেদিন ঐ বাড়িওয়ালার বড় ছেলে তৌহিদ যখন সিঁড়ি দিয়ে পরে গেল তখন আমি পুরোপুরি খুশি হয়েছিলাম।”

রিখিয়ার তুর্বীর দিকে তাকিয়ে একটা হতাশার নিশ্বাস ত্যাগ করল। এই মেয়ে শোধরানো ওর কাজ না। এখন মনে মনে এটাই প্রার্থনা করছে যাতে তুর্বীর জীবনে এমন কেউ আসে যে ওকে বোঝাবে যে জীবনে সবকিছু নিয়ে এক্সপিরিমেন্ট করা উচিত নয়, কিছু কিছু জিনিস নিয়ে ভাবতে হয়, বুঝতে হয়। আর এদিকে তুর্বীও মনে মনে চাইছে রিখিয়ার জীবনে এমন কেউ একজন আসুক যে ওকে এই অতিরিক্ত জড়তা, সংকোচ আর গন্ডি থেকে বের করবে,ওকে বাঁচার মত বাঁচতে করে শেখাবে, জীবনটা উপভোগ করাবে।

জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ৩