জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ৩ || রোমান্টিক ভালবাসার গল্প

জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ৩
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

রাত দশটা বাজে। চারপাশটা আবছা অন্ধকার। পূর্ণিমার রাত তাই এই নিরব রাস্তাও আলোকিত হয়ে আছে। কনকনে শীত। ঠান্ডা পরেছে বেশ। শীতে কাঁপতে কাঁপতে হাতের তালু ঘষে ঘষে গাড়ির জন্যে অপেক্ষা করছে তুর্বী। কী করবে? আজ অফিসের কাজ সেড়ে বেড়োতে বেশ রাত হয়ে গেছে। একটা সিএনজি নিয়েছিল সেটাও মাঝরাস্তাতেই নষ্ট হয়ে গেল। আর এমন জায়গায় হলো যেই রাস্তাটাও বেশ নিড়িবিলি মাঝে মাঝে যেই দু-একটা গাড়ি যাচ্ছে সেগুলো তুর্বী এত করে হাত নেড়ে চেচানোর পরেও থামছে না। প্রচন্ডরকমের মেজাজ খারাপ হচ্ছে ওর। একটা গাড়িও থামছেনা? এই ঠান্ডার মধ্যে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায়? বেশ কয়েকটা গাড়ি থামানোর চেষ্টা করেও পারলোনা তুর্বী। জেদ করে একটা গাড়িতে তো ইটও ছুড়ে মেরেছিলো কিন্তু লাগে নি। সেটা নিয়েও ভীষণরকমের আফসোস তুর্বীর। ও এবার একপ্রকার পণ করে ফেলল যেকরেই হোক পরের গাড়িটা ও থামাবেই থামাবে।

এদিকে স‍ৌহার্দ্য। নিজের ব্যাক্তিগত কাজ সেড়ে এখন বিহানের বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছে। আজ রাতটা বিহানের কাছেই কাটাবে ও। নিজের বাড়িতে বিহানকে ইচ্ছা থাকলেও ডাকতে পারেনা। কারণ স‍ৌহার্দ্যর বাবা। সে বিহানকে দুচোখে দেখতে পারেনা। এ নিয়ে মাঝেমাঝে ঝগড়াও হয় সৌহার্দ্যর সাথে তার বাবার। তাই একসাথে সময় কাটাতে চাইলে নিজেই বিহানের কাছে যায়। এরমধ্যেই বিহান ফোন করল ওকে। ফোন রিসিভ করে বিহানের সাথে কথা বলতে বলতে ড্রাইভ করছে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

তুর্বী হঠাৎ খেয়াল করল একটা সাদা রঙের গাড়ি আসছে এদিকে। এটাকে থামাবেই। তুর্বী মনে মনে প্রস্তুতি নিয়ে হুট করেই গাড়িটার সামনে দুহাত তুলে দাঁড়িয়ে গেল। গাড়ির ভেতরের সৌহার্দ্য ই ছিল। কোনোরকমে গাড়িটা ব্রেক করে হাফ ছেড়ে বাঁচল ও। আরেকটু হলেই এক্সিডেন্ট হত। স‍ৌহার্দ‍্য এবার বেশ রেগে গেলো। মেয়েটা কী পাগল নাকি? এভাবে গাড়ির সামনে চলে আসে কেউ? ও বিহান কে ‘এসে কথা বলছি’ বলে ফোনটা রেখে রেগে গাড়ি জানালার গ্লাস নামিয়ে মাথা বের করে বলল,

” এই যে মিস! মরার জন্যে কী আমার গাড়িটাই পেয়েছিলেন নাকি? ঠিক সময় ব্রেক না করলে তো ওপর দিয়ে যেত। দেখি সরুন!”
তুর্বী ওপর সাইড দিয়ে এসে গাড়ির জানালার ওপর হাত রেখে বলল,
” আমি মোটেও মরতে যাচ্ছিলাম না।”
সৌহার্দ্য বিরক্ত হয়ে বলল,
” তাহলে আমার চলন্ত গাড়ির সামনে চৈতন্য হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন কেন?”
সৌহার্দ্যকে অবাক করে দিয়ে তুর্বী এসে গাড়ির দরজা খুলে ফ্রন্ট সিটে বসে পরল। সৌহার্দ্য বোকার মত তাকিয়ে আছে তুর্বীর দিকে। তুর্বী সিটবেল্ট বেধে হাসি মুখে সৌহার্দ্যর দিকে তাকিয়ে বলল,
” থ্যাংক ইউ। অনেকক্ষণ যাবত একটা গাড়ি থামানোর চেষ্টা করছিলাম। অবশেষে। হ্যাঁ, চলুন।”
সৌহার্দ্য অবাক দৃষ্টিতে কতক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,
“চলুন মানে?”
তুর্বী এবার বেশ বিরক্ত হয়ে বলল,
” চলুন মানে গাড়ি স্টার্ট করুন।”

সৌহার্দ্য তো এবার চরম অবাক হলো। একেতো এভাবে গাড়ির সামনে চলে এল, তারওপর চেনা নেই, জানা নেই পার্মিশন না নিয়েই গাড়িতে উঠে এলো। এখন আবার বলে ‘চলুন’? এতক্ষণ ডাউট ছিল কিন্তু এখন ওর সত্যিই মনে হচ্ছে মেয়েটা পাগল। তাই একটু ভালোকরে মেয়েটার দিকে তাকালো। একটা সাদা টিশার্টের ওপর দিয়ে চকলেট কালার লং জ্যাকেট আর কালো জিন্স পরেছে, কাধে ব্রাউন কালার একটা সাইড ব্যাগ আছে, গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামবর্ণের, খোলা হালকা অগোছালো লেয়ার কাটিং করা চুলগুলো পিঠের মাঝ বরাবর এসে পরে। একপ্রকার অকারণেই চোখ আটকে গেল সৌহার্দ্যর ।সৌহার্দ্যকে গাড়ি স্টার্ট করতে না দেখে তুর্বী বিরক্ত হয়ে বলল,
” কী হলো স্টার্ট করুন? রাত হয়ে গেছে। ওদিকে রিখুটা একা আছে ফ্লাটে।”

তুর্বীর কথায় সৌহার্দ্যর হুস এলেও এবার বেশ রাগ হল ওর। ওর পার্মিশন ছাড়া, ওর গাড়িতে বসে ওর ওপরই চেচামেচি করছে। যাকে হিন্দিতে বলে “মেরে বিল্লি মুঝিছে ম্যাঁও?”। সৌহার্দ্য গাড়ির স্টিয়ারিং এ বারি মেরে বলল,
” মজা করছেন আমার সাথে? কে আপনি? আমার গাড়িতে বসে আমাকেই ধমকাচ্ছেন? আর যাবো মানে কী? কোথায় যাবো?”
তুর্বীর যেন সৌহার্দ্যর ধমকে কিছু যায়-আসল না। ও স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই বলল,
“বেশিদূর না আমাকে জাস্ট সামনের স্টান্ডটা অবধি পৌছে দিন, তাহলেই হবে?”
সৌহার্দ্য এবার আরও অবাক হল। মেয়েটাকে যে খুবই চঞ্চল সেটা বুঝতে পারল। তাই এবার রাগ না করে ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে বলল,
” লিফট চাই?”
তুর্বী এমন একটা রিঅ‍্যাকশন দিল যেন আকাশ থেকে পরল। ওভাবে তাকিয়েই বলল,
“সেটা আপনি এখন বুঝলেন?”

কিছু একটা ভেবে সৌহার্দ্য ঠোঁটে একটু হাসি ঝুলিয়ে বলল,
” হ্যাঁ। কিন্তু একটা অপরিচিত ছেলের গাড়িতে হুট করে উঠে পরলেন। তাও এমন একটা নিরবিলি রাস্তায়? যদি এখন কিছু উল্টোপাল্টা করি আপনার সাথে?”
তুর্বী এবার আস্তে আস্তে ব্যাগে জিপটা খুলল। এরপর হুট করেই ওখান থেকে একটা ছুরি বের করে সৌহার্দ্যর দিকে তাক করে বলল,
” খুন করে দেব।”
সৌহার্দ্য প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও পরে প্রচন্ড হাসি পেল ওর। এই হুট করে করা ছোট্ট কাজটাই মেয়েটার ওপর থেকে সৌহার্দ্যর সব বিরক্তি অদ্ভুতভাবেই গায়েব করে দিল। সৌহার্দ্য নিজের হাসি চেপে রেখে বলল,
“আচ্ছা ম্যাডাম আপনাকে খুন-টুন করতে হবেনা। যাচ্ছি আমি।”
তুর্বী মুখ ফুলিয়ে ছুরিটা নামিয়ে বলল,

” হ্যাঁ চলুন।”
সৌহার্দ্য কিছু না বলে গাড়ি স্টার্ট দিল। এরকম নিরিবিলি রাস্তায় একটা মেয়ে লিফট চাইছে সেটা দেওয়াই যায়। বরং মেয়েটাকে এরকম রাস্তায় ফেলে গেলেই সেটা চরম অমানবিক কাজ হবে। আর সৌহার্দ্য আর যাই হোক অমানবিক নয়। সৌহার্দ্য গাড়ি স্টার্ট করতেই তুর্বী ব্যাগ থেকে একটা বুটভাজার প্যাকেট করে খুলে খেতে শুরু করল। সৌহার্দ্য ড্রাইভ করতে করতে বলল,
” কোথায় যাবেন?”
তুর্বী বুটভাজা চিবুতে চিবুতেই বলল,
” বললাম তো সামনের স্টান্ড এ নামিয়ে দিন তাহলেই হবে।”
” আপনি কোথায় যাবেন সেটা জানতে চেয়েছি। নিশ্চয়ই স্টান্ডে থাকেন না?”
” না তা থাকিনা। কিন্তু কেন বলুন তো?”
” বলতে বলছি বলুন।”

তুর্বী আর কথা না পেঁচিয়ে সহজ ভাবেই ঠিকানা বলে দিলো। এরপর দুজনেই কিছুক্ষণ চুপ ছিল। তুর্বী জানালা দিয়ে বাইরেই তাকিয়ে ছিল। নিরবতা ভেঙ্গে সৌহার্দ্য বলল,
” আপনার নামটাই জানা হলনা। কী নাম আপনার?”
তুর্বী মুখে কয়েকটা বুট নিয়ে বলল,
” তুর্বী আহমেদ। আপনার?”
” সৌহার্দ্য।”
” আগে পরে কিছু নেই?”
তুর্বীর প্রশ্নটাকে এড়িয়ে গিয়ে সৌহার্দ্য বলল,
” এত রাতে এই নিরব রাস্তায় কী করছিলেন?”
তুর্বী লম্বা একটা শ্বাস ফেলে বলল,
” আর বলবেন না। একটা সিএনজি নিয়েছিলাম সেটাও ঐ নিরব রাস্তাতেই খারাপ হয়েছে। মানে যা তা। পরে আর কী?”
” হ্যাঁ তো ভালোভাবে লিফট চাইলেই হতো? এভাবে গাড়ির সামনে এসে পরার কী দরকার ছিল? যদি এক্সিডেন্ট হয়ে যেত?”

” আপনার কী মনে হয় আমি শখ করে দাঁড়িয়েছিলাম? কতগুলো গাড়ি থামানোর ট্রায় করেছি ধারণা নেই আপনার। আজকাল মানুষগুলো বড্ড বেয়াদব। মানে চরম লেভেলের বেয়াদব। একটা মেয়ে মাঝরাস্তায় লিফট চাইছে, অথচ কেউ লিফট দেওয়া তো দূরে থাক একবার ফিরেও দেখলোনা যে মেয়েটার কোন বিপদ হয়েছে কী না। অথচ আজ যদি সেই মেয়েটার কোন ক্ষতি হয়ে যায়।কাল এরাই ‘স্টপ রেপ’ ‘জাস্টিস ফর ওমেন’ ‘ ধর্ষকের বিচার চাই’ বলে ফেসবুক ওয়ালে বড়বড় করে পোস্ট করবে, ব্যানার হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমে পরবে, সিস্টেম কে দায়ী করবে, ‘এ’ ‘ওকে’ দোষারোপ করবে, ‘ সে’ ‘তাকে’ দোষারোপ করবে। ডিসগাস্টিং! ”
সৌহার্দ্য হাসল। কথাগুলো সত্যি। এটাইতো হয়। তবে এমন চঞ্চলতার সাথেও এমন গম্ভীর কথা বলা যায়? এটাই অবাক করল সৌহার্দ্যকে। সৌহার্দ্য বলল,

” তো এতরাতে আপনিই বা একা একা কোথা থেকে ফিরছিলেন?”
তুর্বী আবারও ভ্রু কুচকে ফেলে বলল,
” একা একা মানে? আপনিও তো একা একা এতো রাতে ফিরছেন তো?”
স‍ৌহার্দ্য একবার তুর্বীর দিকে তাকিয়ে আবার সামনে তাকিয়ে বলল,
” আমার কাজ ছিল তাই লেট হয়েছে।”
” এটা কোথায় লেখা আছে যে কাজ শুধু ছেলেদেরই থাকতে পারে?”
সৌহার্দ্য এবার লম্বা শ্বাস ফেলে বলল,
” আ’ম ভেরী সরি আপনাকে জিজ্ঞেস করাই আমার ভুল ছিল।”
বলে ড্রাইভিং এ মনোযোগ দিল আর তুর্বীও কিছু না বলে বুটভাজা খেতে খেতে বাইরের পরিবেশ দেখতে লাগল। স্টান্ড এ পৌছেও যখন সৌহার্দ্য গাড়ি থামালোনা তখন তুর্বী হকচকিয়ে গিয়ে বলল,
” আরে? কোথায় যাচ্ছেন।”
সৌহার্দ্য তুর্বীর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,
” লিফট যখন চেয়েছ তখন বাড়ি অবধি প‍ৌছে দেই।”
” আমি একাই যেতে পারতাম।”
” জানি সেটা। কিন্তু গাড়িতে যখন তুলেছি তখন পুরোটাই পার করে দেই।”

তুর্বী আর কথা বাড়ালোনা। তবে এবার একটু ভালো করে তাকালো সৌহার্দ্যর দিকে। এতক্ষণ কথা বললেও ঠিক করে দেখা হয়নি। কালো টি-শার্ট, কালো জ্যাকেট, কালো জিন্স সবই কালো পরে আছে। সুঠাম দেহ, গুড লুক সব মিলিয়ে ভালোই লাগছে। আচ্ছা এ কী কোন মডেল? স‍ৌহার্দকে দেখে তুর্বীর মনে সবার আগে এই প্রশ্নটাই জাগল। ব্যাস্ত রাস্তাতে এসে পরাতে ঢাকার সেই বিখ্যাত জ্যামে আটকে আছে ওরা। কিছু একটা ভেবে তুর্বী স‍ৌহার্দ্যর দিকে বুটভাজা এগিয়ে দিল। স‍ৌহার্দ্য সৌজন্যমূলক হাসি দিয়ে বলল,
” নো থ্যাংকস।”
তুর্বী কিছু না বলে আবার খাওয়ায় মনোযোগ দিল। এরমধ্যেই তুর্বীর মোবাইলে রিখিয়ার ফোন এলো, তুর্বী তাড়াতাড়ি রিসিভ করে তুর্বীকে বলল ও চলে আসছে চিন্তা না করতে। তুর্বী ফোন রাখার পর সৌহার্দ্য বলল,
” এভাবে বোর হচ্ছেন নিশ্চয়ই? রেডিও শোনেন আপনি? চালাবো?”
তুর্বীর মুখে আবার সেই বিরক্তি ফুটে উঠল। বিরক্ত নিয়ে বলল,

” রিডিও শুনতে একদমই ভালো লাগেনা আমার। স্পেশিয়ালি কালকের পর তো একদমি না। আই হেট রেডিও এন্ড আই হেট দোস্ আর.জে S.R.”
সৌহার্দ্য অবাক হয়ে বলল,
” আর.জে. S.R? কেন? সে আপনার কী করেছে?
তুর্বী রাগে ফুসতে ফুসতে বলল,
” ব্যাটা একটা ধপবাজ। সব স্ক্রিপ্টেড জিনিস বলে সবার সাথে ধপবাজি করে। সে নাকি সব জানতা। অথচ আমার একটা সিম্পল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলনা।”
এরমধ্যে জ্যামও ছেড়ে গেল। সৌহার্দ্য ড্রাইভিং শুরু করে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
” কী জিজ্ঞেস করেছিলেন আপনি ওনাকে?”
” বেশি কিছুনা। শুধু কোন কমিটমেন্ট না করে, রিলেশীপের একটা এক্সপিরিয়েন্স করতে চাই। সেটাতে কীকরে কোন ছেলেকে রাজি করাবো সেটাই জানতে চাইছিলাম।”
সৌহার্দ্য মুচকি একটু হেসে ড্রাইভ করতে করতে বলল,
” হ্যাঁ তারমানে তো সত্যি সত্যিই S.R. একজন ধপবাজ। এই সিম্পল প্রশ্নের উত্তর জানেনা?”
তুর্বী এক্সাইটেড হয়ে বলল,
” আপনি জানেন?”

জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ২

” নাহ। আমি তো সাধারণ মানুষ। কিন্তু S.R এর তো জানা উচিত না? এত বড় আর.জে সে।”
তুর্বী হাত ক্লাপ মেরে বলল,
” এক্সাক্টলি। এইজন্যই ঐ লোকটাকে আমার সহ্য হয়না। আবার কারো সামনেও নাকি আসেনা। আমার কী মনে হয় জানেন? একে দেখতে নিশ্চয়ই জঘন্য। বনমানুষের মত। তাই কারো সামনে আসতে চায়না। ঐ জঘন্য চেহারা সবাইকে কীকরে দেখাবে? ওই মালটাকে যদি একবার, জাস্ট একবার পাইনা..”
‘মাল’ শব্দটা শুনে সৌহার্দ্যর কাশি উঠে গেল। তুর্বী অবাক সৌহার্দ্যকে ছুঁতে গিয়েও হাত নামিয়ে নিয়ে বলল,
” আরে কী হলো? খাচ্ছিতো আমি? আপনি বিষম খেলেন কীকরে?”
সৌহার্দ্য কোনরকমে কাশি থামিয়ে ড্রাইভিং এ মনোযোগ দিয়ে বলল,
” সামনে পেলে কী করবেন?”
তুর্বী নিজের দুইহাতের তালু ঘষতে ঘষতে বলল,

” বেশি কিছুনা। গাছের কাঁচা ডাল দিয়ে বেধড়ক পিটুনি দিতাম। ধপবাজি সব বেড়িয়ে যেত। সব জানতা সেজে লোক ঠকানো? এমন শিক্ষা দিতাম জীবনেও রেডিও স্টেশনের নামও নিত না। আর হ্যাঁ, সবশেষে ঐ লোকটাকে পুরো ন্যাড়া করে দিতাম। যদিও চুল আছে কী না তাইতো জানিনা, টাকলাও হতে পারে। ”
সৌহার্দ্য শুধু চুপচাপ শুনছিল এতক্ষণ এই অমৃত বাণী। সৌহার্দ্য বলেই এতক্ষণ ঠিক আছে। নইলে তুর্বীর এসব কথা শুনে যেকারো মাথা ঘোরাতো। তবে শেষ কথাটা শুনে স‍ৌহার্দ্যর হাত অটোমেটিক নিজের চুলে চলে গেল।

জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ৪