জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ৪ || রোমান্টিক ভালবাসার গল্প

জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ৪
লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

তুর্বীর এরকম ভয়ংকর কথাবার্তা শুনে সৌহার্দ্য কিছু বলার মত ভাষাই আর খুঁজে পেলোনা। এই মেয়েকে বাংলা আর ইংরেজি মিলিয়ে ‘মিস ভয়ংকরি’ ডাকলে সেটা ভুল ডাকা হবেনা বলেই ওর ধারণা। তাই আপাতত চুপ থেকে ড্রাইভিং এ মনোযোগ দেওয়াকেই উত্তম মনে করল। নির্দিষ্ট গন্তব্যে প‍ৌছানোর পর সৌহার্দ্য গাড়ি থামাল। গাড়ি থামার সাথে সাথেই তুর্বী সিটবেল্ট খুলতে খুলতে বলল,

” থ্যাংকস হ্যাঁ? তবে আমি কিন্তু মোটেই কারো ধার বাকি রাখিনা। কোনদিন সুযোগ এলে আমিও হেল্প করে ধারে ধারে কাটাকাটি করে দেব। এখন বাই।”
সৌহার্দ্য মনে মনে বলছে আর কখনও দেখা না হওয়াই ভালো। এই অল্প সময়ের ওর মাথা ব্যাথা করে দিয়েছে মেয়েটা। এরপর আবার কখনও দেখা হলে যে এই মেয়ে যে আবার ওর মাথা চিবুবে সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবুও সৌজন্যতার খাতিরে মুচকি হেসে বলল,
” বাই।”
তুর্বীও কথা না বাড়িয়ে গাড়ি থেকে নেমে চলে গেল বিল্ডিং এর ভেতরে। সৌহার্দ্য গাড়ি ঘুরিয়ে রওনা দিল বিহানের বাড়ির উদ্দেশ্যে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

স‍ৌহার্দ্য বিহানের ফ্লাটের কলিংবেল বাজানোর প্রায় সাত মিনিট পর দরজা খুলল বিহান। স‍ৌহার্দ্য ভ্রু কুচকে বলল,
” দরজা খুলতে এত দেরী করলি কেন?”
এইকথা বলতে বলতেই একটা ওয়েস্টার্ন পোশাক পরা, তথাকথিত আধুনিক একটা মেয়ে চুলগুলো নাড়তে নাড়তে বেড়িয়ে এলো। সৌহার্দ্য চোখ ছোট ছোট করে মেয়েটাকে একবার স্কান করে বিহানের দিকে ঘাড়টা কিঞ্চিত বাঁকা করে তাকাল। মেয়েটা সৌহার্দ্যর দিকে একপলক তাকিয়ে বিহারের কাধে হাত রেখে বলল,

” গুড নাইট বেবী। কিন্তু আজ রাতটা আমাকে সাথে থাকলে কী হত? কতদিন পর পেলাম তোমাকে।”
বিহান বাঁকা হেসে মেয়েটার গালের পাশে লেপটে থাকা চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে বলল,
” আমিতো আছিই সুইটহার্ট। তাড়াতাড়ি দেখা করব আবার। গুড নাইট?”
মেয়েটা হেসে মাথা নেড়ে চলে গেল। সৌহার্দ্য হাত ভাজ করে তাকিয়ে আছে বিহানের দিকে। বিহান সৌহার্দ্যর দিকে তাকিয়ে মেকি হেসে বলল,
” কী হল বাইরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? ভেতরে আয়?”
সৌহার্দ্য ভ্রু নাচিয়ে বলল,
” এটা আবার কোন রমনী? আগে তো দেখি নি?”
” হয়তো দেখেছিস এখন মনে নেই। কতজনেরই বা চেহারা মনে থাকে বল?”

কথাটা বলে চোখ মারল বিহান। সৌহার্দ্য একটা ছোট্ট শ্বাস ফেলে ভেতরে আসল। এগুলো দেখে আজকাল ও আর অবাক হয়না। এসব দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে ও। কিছু বলেও না। কারণ কিছু বলে কোন লাভ হয়নি। ওর পক্ষে সম্ভব হয়নি বিহান কে বদলানো। আবার খুব চেষ্টা করে বদলানোর তাও কিন্তু না। ছেলেটা যদি এভাবে মানসিকভাবে একটু ভালো থাকে থাকুন না। সৌহার্দ্য দিয়ে সোজা বেডে গিয়ে হেলান দিয়ে আধশোয়া হল। বিহান ওর পাশে শুয়ে বলল,
” এত লেট হল যে? সেই কখন ফোন করে বলেছিলি কাছাকাছি চলে এসছিস। মিথ্যে অযুহাত তো আমি দেই। তুই কবে থেকে শুরু করলি।”
সৌহার্দ্য ফোন বেড় করে স্ক্রোল করতে করতে বলল,
” রাস্তায় একটা আজব বস্তুর সাথে দেখা হয়েছিল।”
বিহান কৌতুহলী হয়ে বলল,
” আজব বস্তু? কীরকম?”

স‍ৌহার্দ্য ফোনটা রেখে বিহানের দিকে তাকিয়ে রাস্তায় ঘটে যাওয়া সব ঘটনা বলল। সবটা শুনে বিহান কিছুক্ষণ বোকার মত তাকিয়ে ছিল সৌহার্দ্যর দিকে। এরপর দম ফাটা হাসি শুরু করে দিল। সৌহার্দ্য বিরক্তি নিয়ে বলল,
” হাসিস না তো। কী জ্বালায় পরেছিলাম শুধু আমিই জানি।”
বিহান অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে বলল,
” সিরিয়াসলি ভাই? তোর সামনে তোকেই এভাবে ঝেড়ে দিল আর তুই চুপচাপ শুনে গেলি? ইশ! কী মারাত্মক দৃশ্য মিস করলাম। এই শীতে কাঁচা ডালের পিটুনী? আহা! আচ্ছা ভাই ক্যান ইউ ইমাজিন? তোর মাথায় একটাও চুল নেই। মানে ন্যাড়?”

বলে অাবারও অট্টহাসিতে ফেটে পরল বিহান। এবার সৌহার্দ্যও হেসে দিল। হ্যাঁ সৌহার্দ্যই হল আর.জে. S.R.। ওর পুরো নাম সৌহার্দ্য রায়হান। আর এই সিকরেট ও নিজে, বিহান, আর রেডিও স্টেশনের লোকেরাই জানে আর কেউ না। সৌহার্দ্যর হাসতে হাসতেই তুর্বীর সেই অদ্ভুত, দুর্দান্ত কথা আর কথা বলার ভঙ্গিগুলো মনে করছিল। বেশ কিছুক্ষণ মন খুলে হেসে বিহান বলল,
” সত্যি তুই বেশ গম্ভীর টাই ইয়ার। আমি ওরকম কিউট, চটপটে একটা মেয়েকে পেলে জমিয়ে মজা করে আড্ডা দিতাম। এরকম বিন্দাস টাইপ মেয়ে সচারচর চোখে পরেনা, আবার সেদিনের ওই মেয়েটার মত সাদামাটা মেয়েও চোখে পরে না।”

বিহানের হঠাৎ করেই রিখিয়ার কথা মনে পরল। সেই সংকোচ আর অস্বস্তি নিয়ে হালকা ঘামে ভেজা মায়াবী মুখটা চোখে ভেসে উঠল। ঘড়ির দোকানে ওও গেছিল নিজের জন্যে ঘড়ি কিনতে তখন রিখিয়া পছন্দের ঘড়িটা টাকার জন্য কিনতে না পেরে মুখটা অন্ধকার করে ফেলেছিল তখন বড্ড মায়া লেগেছিল ওর। তাই ওই দোকানে বাকি টাকাটা দিয়ে বলেছিল চারশ তেই রিখিয়াকে ঘড়িটা দিয়ে দিতে। সৌহার্দ্য নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল,

“এসব বাদ দে। তোর নতুন পেন্টিং দেখা?”
” সবেতো এলি দেখাবো পরে।”
” ফুপা আর ফুপি কেমন আছেন?”
বিহানের হাস্যজ্জ্বল মুখটা নিমেষেই মলিন হয়ে গেল। লম্বা এক শ্বাস ফেলে বলল,
” আমি কীকরে জানব তোর ফুপা-ফুপি কেমন আছেন?”
সৌহার্দ্য স্হির চোখে বিহানের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,
” একবার গিয়ে কথা বলে দেখে আয়না? হয়ত সব ঠিক হয়ে যাবে।”
” কিছু ঠিক করতে চাইনা আমি।”
” কিন্তু..”
সৌহার্দ্যকে কথাটা শেষ করার সুযোগ না দিয়েই বিহান বলে উঠল,

” দেখ এই মুহূর্তে প্রচুর খিদে পেয়েছে আমার। তোর জন্যে তোর পছন্দের সব অর্ডার করে আনিয়েছি আমি। বেশ রাতও হয়েছে। চল আগে খেয়ে নেই তারপর বাকি কথা হবে।”
আয় ডায়নিং এ আয়। বলে বিহান উঠে চলে গেল। আর সৌহার্দ্য ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মলিন একটা হাসি দিল। ছোট্ট একটা ঘটনা পুরো জীবনের মোড়টাই কীকরে ঘুরিয়ে দিতে পারে।
খাওয়ার টেবিলে খেতে খেতে সৌহার্দ্য বলল,
” কাল সকালে তুই আমার বাড়িতেই ব্রেকফাস্ট করবি।”
বিহান ভ্রু কুচকে বলল,
” আমাকে মামুর কথা শোনানোর খুব শখ তোর?”
” বাবার কালকে সকাল সকাল মিটিং আছে। বাড়ি থাকবেনা।”
” ওহ! তাহলেতো মামীর হাতের স্পেশাল ব্রেকফাস্ট করাই যায়।”
এরপর দুজন মিলে খেতে খেতে আড্ডাতো দিয়েছেই প্রায় শেষরাত অবধি জেগে থেকে দুই বন্ধু আড্ডা দিয়েছিল। বিহান বিয়ার খেলেও সৌহার্দ্য খায়নি। বিহান অনেকবার বলেছিল কিন্তু সৌহার্দ্য নেশা করেনা। শেষরাতের দিকে দুজনেই ঘুমিয়ে পরল এলোমেলো ভাবে।

সূর্যের আলো পৃথিবীতে এই প্রান্তে পৌছে গেছে। কিন্তু কুয়াশার আর মেঘের কারণে সূর্যকে দেখা যাচ্ছে না আর না রোদ আসছে। ব্যালকনির রেলিং ধরে বাইরের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ধোয়া ওঠা কফির মগে চুমুক দিচ্ছে রিখিয়া। চোখের দৃষ্টি স্হির আর উদাস। এরমধ্যেই তুর্বী নিজের নিজের এলোমেলো চুলগুলো নাড়তে নাড়তে, লম্বা হাই তুলে হেলতে দুলতে এসে রেলিং এ ভর দিয়ে বলল,

” গুড মর্নিং।”
রিখিয়া একপলক তুর্বীর দিকে তাকিয়ে আবার সামনে তাকিয়ে বলল,
” টেবিলে তোমার কফি ঢেকে রাখা আছে নিয়ে নাও।”
তুর্বী এবার ঘুমঘুম চোখ দুটো হাত দিয়ে কচলে নিয়ে বলল,
” কী হয়েছে রিখু?”
” কফি ঠান্ডা হয়ে যাবে তুর।”
তুর্বী ভ্রু কুচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে লম্বা লম্বা পা ফেলে টেবিল থেকে কফির মগটা নিয়ে এসে বলল,
” হ্যাঁ এবার বলে ফেল কী হয়েছে?”
রিখিয়া কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,

” বাবা ফোন করেছিল। মাস শেষ হয়ে গেছে টাকার দরকার। কিন্তু আমি তো এখনও বেতনটাও পাইনি। এমাসে দেরী হবে বেতন দিতে। কীকরে টাকা পাঠাবো? আর ভাইয়াও নাকি সাফ বলে দিয়েছে বাড়িতে এ-মাসে টাকা দিতে পারবেনা। কীকরে চলবে সব?”
তুর্বী বিরক্ত হয়ে বলল,
” তোর ভাইটা কী রে? বিয়ে করেছে ভালো কথা, বউকে ভালোবাসে সেটাও ভালো কথা তাই বলে বউয়ের আচলের তলায় লুকিয়ে পরতে হবে? যেই বাবা-মা জন্ম দিল, বড় করল তাদের প্রতি কোন দায়িত্বই নেই?”
এরমধ্যেই তুর্বীর ফোন বেজে উঠল তাকিয়ে স্ক্রিনে ‘Mrs Ahmed’ ছোট্ট শ্বাস ফেলল ও। রিখিয়া বলল,
” আন্টি ফোন করেছে?”
তুর্বী একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,

” মাস শেষ হয়ে গেছে না? এখনই তো ফোন করবে। নইলে সারামাসে বাঁচলাম কী মরলাম তাতে তার কী?”
বলে ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে মহিলা কন্ঠে কেউ কর্কশ স্বরে বলে উঠল,
” এইযে নবাবজাদি। মাস তো ফুরিয়ে গেল। টাকা পাঠানোর জন্যে কী এখন আমন্ত্রণ পত্র পাঠাতে হবে নাকি?”
তুর্বী বিরক্ত হয়ে বলল,
” আজ সবে এক তারিখ হল। টাকা জমা হলে সেটা ব্যাংক থেকে তুলে পাঠাতে সময় লাগবেতো নাকি?”
ওপাশ থেকে আবার বলল,
” এই খবরদার বলছি মুখে মুখে তর্ক করবি না। কালকের মধ্যে যদি টাকা না পাই তাহলেই বুঝবি। বজ্জাত মেয়েছেলে।”
তুর্বী এবার রেগে গিয়ে বলল,

” কী করবে তুমি? এসব ফালতু ভয় একদম দেখাবেনা আমাকে। টাকা পাঠাই এটাই অনেক। খেতে পেলে শুতে চায়।”
বলে ফোনটা রেখে দিল তুর্বী প্রচন্ড রাগ হচ্ছে ওর এই মুহূর্তে। ওপাশে থাকা মহিলাটা তুর্বীর স‍ৎ মা। মা ছোটবেলায় মারা গেছে, তারপরেই দ্বিতীয় বিয়ে করেন ওর বাবা, আর ওর বাবাও দুবছর হল মারা গেছেন। রিখিয়া বলল,
” আরে ছাড়তো। উনিতো এমনই। তুইতো কালকেই বেতন পেয়ে যাবি। আমি কী করব? তুর্বী গম্ভীর মুখ করে দাঁড়িয়ে রইল কিছুক্ষণ। তারপর হুট করেই ওর গলার পাতলা সোনার চেইনটা খুলে রিখিয়ার হাতে দিয়ে বলল,
” এটা বাধা দিয়ে আপাতত তোর বাড়িতে কিছু পাঠা। কাল আমি বেতন পেয়ে ঐ মহিলাকে কিছু পাঠাবো আর বাকিটা দিয়ে তোর বেতন আসতে আসতে চলে যাবে। পরে এটা ছাড়িয়ে নেব।”

রিখিয়া এবার ইতস্তত করে বলল,
” কিন্তু…”
” দেখ একদম মেলোড্রামা করবি না। চুপচাপ যা বলছি তাই কর।”
রিখিয়া আর কথা বাড়ালো না কারণ ও তুর্বীকে এখন শতবার বারণ করলেও ও শুনবেনা। তবে মাঝে মাঝে ভালো লাগে ওর। মেয়েটা চঞ্চল হলেও মনের দিক দিয়ে যে বড্ড সরল। তাইতো সৎ মায়ের ওমন কুৎসিত কথা, অবজ্ঞা শুনেও প্রতিমাসে টাকা পাঠায় দেখাশোনা করে। যেখানে ও চাইলেই ঐ মহিলাকে ফেলে চলে এসে এই শহরে আরামে থাকতে পারত।

সৌহার্দ্য আর বিহান মিলে সৌহার্দ্যর বাড়িতে এসে ড্রয়িং রুমে ঢুকেই থমকে গেল। সৌহার্দ্যর বাবা শফিক রায়হান সোফায় বসে পেপার পড়ছেন। সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা, চোখে চিকন ফ্রেমের চশমা পরা, দু একটা চুল ধুসর বর্ণ ধারণ করেছে, চোখে মুখে একরাশ গাম্ভীর্য। সৌহার্দ্য তো চমকে উঠল। তারমানে তার বাবা মিটিং এ যান নি? বিহানও অবাক হয়ে গেছে। তাই একটু রেগেই তাকাল সৌহার্দ্যর দিকে। সৌহার্দ্যর বাবা কারো আসার আওয়াজ পেয়ে তাকিয়ে সৌহার্দ্যকে দেখে কিছু বলবেন তার আগেই সৌহার্দ্যর পাশে বিহানকে দেখে রেগে গিয়ে বললেন,
” এই ছেলে এখানে কী করছে? তোমাকে কতবার বলেছি এই ছেলেকে আমার বাড়ির আশেপাশেও আনবে না। বলো?”
চেচামেচি শুনে সৌহার্দ্যর মাও দৌড়ে চলে এলো। বিহানকে দেখে খুশি হলেও স্বামীর কথা ভেবেই ভয়ে গলা শুকিয়ে গেল ওনার। বিহান ইতস্তত করে বলল,

জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ৩

” মামু আমি..”
শফিক রায়হান ধমকের সুরে বলল,
” চুপ করো! মামু বলে ডাকবেনা আমায়। যার তার মামু নই আমি।”
সৌহার্দ্য এবার আর চুপ থাকতে পারলনা রেগে গিয়ে বলল,
” বাবা আমি এনেছি ওকে। তুমি অকারণে ওর সাথে এমন ব্যবহার কেন করছ?”
” এটা আমার বাড়ি, যাকে তাকে ধরে নিয়ে আসার অধিকার নেই তোমার।”
সৌহার্দ্য কিছু বলবে তার আগেই বিহান হনহনে পায়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেল। সৌহার্দ্য ডেকেও থামাতে পারলনা ওকে। সৌহার্দ্য এবার রেগে ওর বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,
” ও আমার ভাই, আমার বন্ধু বাবা এরকমই যদি চলতে থাকে, তো বাবা আমাকেও একদিন চলে যেতে হবে এই বাড়ি ছেড়ে। থাকো তুমি তোমার বাড়ি নিয়ে।”
বলে সৌহার্দ্যও বেড়িয়ে গেল। সৌহার্দ্য মা মিসেস নাহার কাঁদোকাঁদো কন্ঠে বললেন,

” ছেলেটা এলেই এমন কেন কর বলতে পারো? দেখবে একদিন এইজন্য আমার বাবান টাও বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে।”
শফিক রায়হান হুংকার দিয়ে বললেন,
” গেলে যাক। কিন্তু তবুও কোন চরিত্রহীনকে আমার বাড়িতে জায়গা দিতে পারবনা।”
মিসে নাহার কিছু না বলে চলে গেলেন নিজের কাজে। আর শফিক রায়হান গম্ভীর শ্বাস ফেললেন। একসময়ে সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটাই আজ তার কাছে অপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নিজের কলিজার এক অংশকে সে কেটে বাদ দিয়ে ফেলে রেখেছে। কী আর করার? পঁচে যাওয়া অংশ কেটে ফেলাই শ্রেয়।

জল ফড়িঙের খোঁজে পর্ব ৫