অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ১১

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ১১
জিন্নাত চৌধুরী হাবিবা

হাতে ধোঁয়া ওঠা কফির কাপ। প্রতিটি চুমুকে কেমন একটা নিখুঁত ভাব। এক দেখায় যে কেউ আকৃষ্ট হতেই পারে। তরী অল্প অল্প ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছে। কফি সম্পূর্ণ শেষ করে ক্যান্টিন ছেড়ে গুটিগুটি পায়ে বের হলো। অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে অনেকক্ষণ। সে বান্ধবীদের সাথে কিছু সময় আড্ডায় বসলো। ক্যাম্পাস এখনো খালি হয়নি। যারা অনুষ্ঠানের দায়িত্বে ছিল, তারা এখনো দৌঁড়ঝাপের উপর আছে। অন্যরাও কেউ কেউ তরীদের মতো আড্ডায় মেতেছে। শাড়ির কুঁচি ঠিক করেই তরী রাস্তায় নামলো। ফুটপাত ধরে সামনে এগোলেই বাস স্টপেজ। তরী সামনে না এগিয়ে থেমে গেল। থামতে হলো তাকে। তুখোড় ব্যক্তিত্বের এই মানবের ধারালো নজর এড়িয়ে যাওয়ার অনুমতি যে তরীর নেই। মন তাকে কিছুতেই অনুমতি দিতে চায় না। কঠোর বিরোধীতা করে। মাহমুদ দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে। তরী থেমে থেমে শুধালো,

-“আজও এদিকে এসেছেন যে?”
মাহমুদ নরম চোখে তাকালো। সূর্যের তেজ ম্লান হয়ে এসেছে। সকালের সেই চকচকে সাজ এখন আর নেই। কিছুটা মলিন দেখাচ্ছে। চোখের নিচে অল্পস্বল্প কাজল ছড়িয়ে সৌন্দর্য খানিকটা কমে এলেও মাহমুদের নজরে মুগ্ধতার কমতি নেই। তার এখনো ভালোলাগছে। এ এক নতুন তরী। তার অগোছালো তরী। তরীর প্রশ্নসূচক দৃষ্টির কবলে পড়ে তপ্ত শ্বাস ছাড়লো মাহমুদ। তার গলায় অনুরাগ ঝরে পড়লো।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

-“সকালে একটা জিনিসের কমতি ছিল। তা সম্পূর্ণ করতেই এসেছি।”
তরীর বোধগম্য হলো না কিছুই। সে বোকা বোকা চাহনি নিক্ষেপ করলো। মাহমুদ আলতো হেসে পকেটে হাত গুঁজলো। কুচকুচে কালো লোমশ হাত বের করতেই বেরিয়ে এলো সফেদ রাঙা শিউলি ফুলের মালা। মুহুর্তেই ভুরভুরে সুগন্ধি ছড়ালো বারোমাসি শিউলি। দুধ সাদা এই রূপসী কপালে লাল-কমলা টিপ পরে টুকটুক করে তাকিয়ে যেন বলছে “জড়িয়ে নাও আমায়, তোমার ওই কেশরাশির খোঁপায়”।
তরীর ঠোঁটে হাসি ফোটে উঠলো। চোখদুটো ঝলমল করছে প্রফুল্লচিত্তে। মৃদু হেসে মাহমুদের দিকে তাকালো। তা অবলোকন করে মাহমুদের অধর কোন প্রশস্ত হলো। নরম কন্ঠে শুধালো,

-“পরিয়ে দেই?”
উঁচু কন্ঠে কথা বললেই যেন মেয়েটি নুইয়ে পড়বে। কুঁকড়ে যাবে। তরী মাথা দুলিয়ে অনুমতি দিলো।
মাহমুদ তরীর পেছনদিকে আড়াল হলো। হাত রাখলো কৃষ্ণ চুলের খোঁপায়। নিপুণ হাতে আঁটসাঁট ভাবে বেঁধে দিলো শিউলিফুলের মালা। চমৎকার এই রূপ অবলোকন করতে গিয়ে মাহমুদের দৃষ্টি আঁটকে গেল অন্য কোথাও। শ্রাবণের তীব্র তাপদাহে একটু একটু করে ঘেমে উঠেছে শরীর। কালো রঙ এর ব্লাউজ আঁটসাঁটভাবে লেপ্টে আছে তরীর শরীরের সাথে। কারো কারো নজরে দৃশ্যটি বেশ আকর্ষণীয়, গিলে খাওয়ার মতো। দৃষ্টি ঝলসানো এই দৃশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হলোনা। মাহমুদ আলগোছে আঁচল টে*নে দিল পিঠের উপর।
তরী প্রশ্নসূচক তাকাতেই মাহমুদ সত্যটা ধামাচাপা দিল। পাছে নাজুক মেয়েটা আরেকটু নুইয়ে যায়! সীমাহীন অস্বস্তি নিয়ে ঝরে যায়! মাহমুদের দৃষ্টি স্বচ্ছ। নেই কামুকতার ছোঁয়া। চোখে চোখ রেখে সরল গলায় জবাব দিলো,

-“এভাবেই ভীষণ ভালো দেখাচ্ছে, তরী।”
তরী আড়ালে মুখ লুকিয়ে হাসলো। তার চোখ হাসছে।
বেখেয়ালি হাঁটতে গিয়ে ফুটপাতের পাশ ঘেঁষে পড়তে পড়তে বেঁচে গেল। হাতে টা*ন পড়তেই সোজা হয়ে দাঁড়ালো। বুকের ভেতর ঢিপঢিপ করছে। এক্ষুণি পড়ে গেলে কেমন লজ্জায় পড়তে হতো তাকে! ভেবেই হাঁসফাঁস লাগলো। পিচ ঢালা রাস্তা আর জুতার ফিতায় পা বেজে খানিকটা লেগেছে। তবে খুব একটা ব্যথা অনুভূত হচ্ছে না। মাহমুদ চিন্তিত দৃষ্টিতে তার পায়ের দিকেই তাকিয়ে আছে। কপালের ভাঁজ গুলো জানান দিচ্ছে সে কতটা বিচলিত। মাহমুদের অভিযোগ,

-“আপনি বড্ড বেখেয়ালি, তরী।”
তরী কিছু বললোনা, চোখের পলক ঝাপটালো বার কয়েক। হুট করেই নিচে বসে পড়লো মাহমুদ। পায়ের ছুঁলে যাওয়া অংশে বৃদ্ধাঙ্গুল ছুঁইয়ে দিতেই দু-কদম পিছিয়ে গেল তরী। শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেল। পায়ে হাত দেওয়া ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু দেখাচ্ছে। অনেকেই ব্যাপারটিতে কা*মু*ক*তা খুঁজতে চাইবে। তরী চাইছেনা কেউ তাদের নিয়ে বা*জে ধারণা পোষণ করুক। তাকে নিয়ে মানুষের ভাবনা তার উপর প্রভাব ফেলে। পৃথিবী উজাড় করা মন খা*রা*প তাকে ঘিরে ধরে। তপ্ত শ্বাস ছেড়ে উঠে পড়লো মাহমুদ। চিন্তিত স্বরে বলল,

-“এইটুকু পথ হাঁটতে পারবেন? আচ্ছা আপনি দাঁড়িয়ে থাকুন। আমি রিকশা ডেকে নিচ্ছি।”
সামনে তাকালেই বাস স্টপেজ দেখা যাচ্ছে। কয়েক কদমের জন্য রিকশা? আ*ঘা*ত*টি এমন আহামরি নয়। তরী মনে মনে হাসলো। বাঁধা দিলো মাহমুদকে। মাহমুদের ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল কোমল হাতের মুঠোয় চেপে নিলো। মাহমুদের মনে হলো তুলতুলে নরম তুলো তার আঙ্গুল ছুঁয়ে দিল। পিছু ফিরে হাতের ওই শক্ত বাঁধনে তাকালো। কতটা নিঃসংকোচে তার আঙ্গুল আবদ্ধ করে নিলো। হৃদয়ে বয়ে গেল উপচে পড়া ঢেউ। তরীর চোখে তাকাতেই মেয়েটা মাথা নুইয়ে নিলো। মিইয়ে যাওয়া গলায় বলল,

-“হাঁটতে পারবো আমি। ব্যথা নেই পায়ে।”
রা করলো না মাহমুদ। তরীকে নিয়ে হাঁটলো। দু-কদম এগিয়ে নিঃসংকোচ আবদার করে বসলো,
-“তরী, চলুন না বিয়ে করে ফেলি।”
তরীর পা জোড়া থেমে গেল। চোখেমুখে ভীতি নামলো। তবে মাহমুদের হাত ছাড়লোনা। ওভাবেই ধরে রইলো শক্ত বাঁধনে। মাহমুদ দুর্বোধ্য হাসলো। তরীর হাত শক্ত করে চেপে ধরে ভরসার গলায় বলল,

-“ভয় পাবেন না, তরী। আমি ক্ষণিকের আবেগ দিয়ে জিততে গিয়ে বিবেকের কাছে হেরে যেতে চাইনা। আমার পাওয়ায় আবেগ, বিবেক দুটোই চাই।”
তরী স্বস্তি পেলো। এখনই বিয়ে করা তার মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। মানুষটাকে তার ভালোলাগে। ভালোলাগার জল ফোঁটা গড়াতে দিচ্ছে। সে বুঝতে চায় নিজেকে, পাশের এই মানুষটিকে।
মাহমুদ বলল,

-“আপনি সবসময় সেজেগুজে থাকবেন না, তরী। হুট করে একদিন সেজে আমায় চমকে দেবেন, ঠিক আজকের দিনটির মতো। আমি দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এই চমকের অপেক্ষায় থাকবো।”
তরীর মনে সুপ্ত ভালোলাগা। ভেতরকার নিরবতার অবসান ঘটালো না। চলুক কিছু ভালোলাগা নিভৃতে, নিঃশব্দে। তাদের নিমন্ত্রণহীন তুমুল অনুভূতির সাক্ষী হলো শ্রাবণের এক পড়ন্ত বিকেল। কোলাহলে পরিপূর্ণ এক ফুটপাত। দু’জোড়া পায়ের কদম পড়লো সমান তালে।

মায়ের আঁচল ধরে পিছু পিছু ঘুরছে রামি। আয়েশা সুলতানা খানিকটা বিরক্ত। সকাল থেকেই জ্বালিয়ে মারছে ছেলেটা। বিরক্তি ঝরা গলায় বললেন,
-“তোর ওসব রেসিপি আমি পারি না-কি? একবার বানিয়ে শিক্ষা হয়েছে আমার। তুই নিজে বানিয়ে নে।”
রামি নাকমুখ কুঁচকে বলল,

-“উঁহ্! আমি পারবোনা।”
-“তাহলে যা এখান থেকে।”
-“আমি তাহলে হবু বউকে ডেকে নিয়ে আসি। সে এসে বানিয়ে খাওয়াবে আমায়। তোমায় কত করে বলেছি বিয়ে করিয়ে দাও, শুনলেই না।”
আয়েশা সুলতানা চুপ করে রইলেন। রামি বাসা থেকে বেরিয়ে চারতলায় উঠলো। তরীকে জোরপূর্বক টে*নে নিয়ে এলো তাদের বাসায়। মায়ের ফোন থেকে রেসিপি দেখিয়ে বলল,

-“তোমার দায়িত্ব এটা আমায় বানিয়ে খাওয়ানো।
মা বলেছে বড় হলে তোমায় আমার বউ করে আনবে।”
তরী হালকা কে*শে উঠলো। রামি বলল,
-“ঝটপট ফ্রাইড চিকেন বানিয়ে খাওয়াও। আমি রান্নাঘরে তোমায় পাহারা দিচ্ছি।”
আয়েশা সুলতানা ফ্রিজ থেকে মুরগী নামিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। রামি রান্নাঘরে তাকের উপর বসেই ফোন ঘাটছে। মুঠোফোন তীব্র শব্দ করে উঠলো। বড় ভাবি ফোন করেছেন। রামি রিসিভ করে কানে তুললো।

-“কেমন আছো ভাবি?”
-“ভালো। তুই কেমন আছিস?”
-“আমার আর ভালো থাকা আছে না-কি? কেউ আমায় পাত্তা দিচ্ছে না।”
ইরা বিন্দুমাত্র আফসোস না করে বলল,
-“তোর আর ইহজীবনে ভালো থাকা হবে না। মা কোথাও সেটা বল।”
-“মা’কে কী দরকার? মুরব্বিকে ডিঙিয়ে ছোটো বাচ্চাদের সাথে জরুরি কথা বলতে চাইছো? সভ্যতা, নম্রতা শেখোনি?”
-“আপনি মুরব্বি? মাফ করবেন দাদাশ্বশুর।
আসলে আমার বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছে। মায়ের সাথে কথা বলতেই ফোন করেছি।”
রামি দুঃখী দুঃখী গলায় বলল,

-“বলেছিলাম তোমার বোনকে আমার সাথে বিয়ে দিয়ে দাও। তুমি দিলেনা।
মা’কে কত করে বলি তরী আপুকে আমার সাথে বিয়ে দিয়ে দাও৷ তাও দিচ্ছে না। আমার জীবনটাই বেদনা।”
স্পিকার অন থাকায় তরী সবটা শুনতে পাচ্ছে। ইরা ভাবি চমৎকার হাসলেন। রিনিঝিনি হাসির শব্দটিও ভারি মিষ্টি শোনালো। তিনি রগঢ় করে বললেন,
-“যাদের বউ করার চিন্তায় চিন্তায় তুমি শুকিয়ে যাচ্ছো, তাদের বাহুর নিচে পড়ে থাকো তুমি। বউরা তোমায় ভ্যানিটি ব্যাগ হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।”

তরীও খিলখিল করে হেসে উঠলো। রামি নাকমুখ কুঁচকে বলল,
-“কয়েক বছর পর ঠিকই বউদের তুলনায় বড় হয়ে যাবো আমি। দেখে নিও। এখন যত পারো অপ*মান করে নাও। সময় আমারও আসবে।”
ভাবি তরীর গলা শুনে বললেন,
-“তরী আছো?”
-“জি ভাবি।”
-“শোন, তুমি আর মিঠু কিন্তু সবার সাথে আসছো। আমি বারণ শুনছি না।”
তরী গাঁইগুঁই করে বলল,

-“বাবা যেতে দেবেন না। তাছাড়া আমার পড়াশোনা, মিঠুরও ক্লাসে গ্যাপ যাবে। এমনিতেও এর পড়াশোনায় মন নেই।”
-“দুদিনে ওমন কিচ্ছু হবেনা। আঙ্কেলের সাথে আমি কথা বলবো। আমরা দুদিন পর এমনিতেও ওই বাসায় আসছি।”
-“আচ্ছা, আগে আপনি আসুন।”
-“এবার মা’কে একটু দাও তো!”
রামি আয়েশা সুলতানার কাছে ফোন দিয়ে এসে তরীকে বলল,
-“তুমিও যাবে আমাদের সাথে দারুণ হবে তাইনা? আমার এখনই নাচতে ইচ্ছে করছে।”
তরী বলল,
-“এত নেচে লাভ নেই। আমাদের যাওয়া হবেনা।”

ইদের দিন রামিদের বাসায় গিয়ে প্রথমে অস্বস্তি হলেও অল্প কিছুক্ষণেই জড়তা কে*টে গেল। ভেবেছিল রামির ভাবি কেমন হবেন? তাকে দেখে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবেন? বাকিদের মতো যদি আপন করে না নিতে পারেন? তরীর ভয় দূর হয়ে গেল নিমিষেই। রামির ভাবি ইরা মানুষটিও বাকি সবার মতো। সহজেই তরীর সাথে মিশে গেলেন। বিয়ের সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সন্তানের মুখ দেখেননি। তবুও মানুষটি কতটা প্রাণোচ্ছল থাকার চেষ্টা করেন। তরীর ভীষণ মনে ধরলো ইরা ভাবিকে। নিঃসন্দেহে তিনি একজন চমৎকার মানুষ।

মাহমুদ এসে বসলো মায়ের পাশে।
তরী রান্না শেষ করে প্লেট হাতে আয়েশা সুলতানার কাছে গেল। চোখাচোখি হয়ে গেল মাহমুদের সাথে। তরী চোখ নামিয়ে নিলো। আয়েশা সুলতানা তরীকে পাশে বসিয়ে দিলেন। জড়োসড়ো হয়ে বসলো সে। মাহমুদ খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে তাকেই দেখছে। যা তরীর নজর এড়ালোনা। কপালের চুলগুলো কানের পাশে গুঁজে আরও একবার তাকালো মাহমুদের দিকে। আবারও দুজনের চোখাচোখি হলো।
আয়েশা সুলতানা তরীর উদ্দেশ্যে বললেন,

-“ইরা তোমাকে আর মিঠুকে ছাড়ছে না। যেতেই হবে তোমাদের। ওর বাবা মা কাল এসে দাওয়াত দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। আমিই বারণ করে দিয়েছি। এমনিতেই সব জায়গা তাদের দৌঁড়াতে হবে। বিয়ে পনেরো দিন পর হবে।”
তরীর গলায় স্পষ্ট দ্বিধা। মৃদু স্বরে বলল,
-“আমি আর মিঠু কিভাবে যাবো আন্টি? আমার, মিঠুর দুজনেরই পড়া আছে।”
-“দু-দিনের আহামরি কোন ক্ষ*তি হবে না।
আর তোমার বাবার সাথে আমি আর মাহমুদ কথা বলে নেবো।”
তরী মাহমুদের দিকে তাকালো। তার সম্পূর্ণ মনযোগ খাওয়ায়। বাসায় চলে এলো তরী।

পড়াশোনায় ব্যস্ত তরী। পাশেই মুঠোফোন পড়ে আছে অবহেলায়। মেসেঞ্জারের টুং শব্দে হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে গেল। মাহমুদ কেবল মেসেঞ্জারেই বার্তা পাঠায়। কন্ট্রাক্ট নাম্বার এখনো আদান-প্রদান হয়নি তাদের। তরী খুলে রাখা বই একপাশে ঠে*লে রেখে ফোন হাতে নিলো।
❝ফ্রি আছেন, তরী? একবার ছাদে আসবেন?❞
সময় দেখলো তরী। রাত্রি দশটা উনপঞ্চাশ। সবাই খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। লম্বা শ্বাস টে*নে লিখলো,
❝আপনি কি ছাদে?❞

সেন্ড করার পরপরই সিন হলো। মুহূর্তেই ফিরতি বার্তা,
❝আপনার অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছি।❞

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ১০

তরী সিন করে রেখে দিল। সুতির ওড়নাটি শরীরের সঙ্গে জড়িয়ে নিলো ভালোভাবে। ফোন হাতে পা টিপে দরজা পর্যন্ত গেল। বুকের ভেতর ধুকপুক করছে। যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও দরজা থেকে ফিরে এলো। দশ মিনিট এভাবেই কে*টে গেল। এখন আর পড়াশোনা হবেনা। বইপত্র গুছিয়ে শুয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিলো। তরীকে চমকে দিয়ে প্রথমবারের মতো মাহমুদের আইডি থেকে কল এলো। তরীর শ্বাসরুদ্ধ হয়ে এলো।

অনিমন্ত্রিত প্রেমনদী পর্ব ১২