অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু তুমি পর্ব ২

অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু তুমি পর্ব ২
সুমাইয়া সানজুম ঐশী

-উনার চোখে মুখে রা*গ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। ভ*য়টাও আমার ত*ড়িৎগতিতে বৃদ্ধি পেল।ভয়ে কা*পা কা*পা কণ্ঠে বললাম, আ…আপনার…ক…কফি মা…দি….আর কিছু বলার সুযোগ পেলাম না আমি,,তার আগেই গরম কফিতে জ্ব*লে উঠলো আমার হাত,,মানলাম আমার কথার আ*ঘাত সয়ে যাওয়ার ক্ষমতা প্রখর তাই বলে আজ থেকে এভাবেও আ*ঘা*ত পেতে হবে আমায়! আমার দো*ষটা কোথায়! আমার ভা*গ্যে!

অবাক দৃ*ষ্টিতে তাকিয়ে আছি তার দিকে। চোখ বেয়ে অবিরলভাবে অ*শ্রু ঝরছে !
মানুষ এতো নি*ষ্ঠুর*তম আ*চরণ করে কিভাবে?আমিও তো র*ক্তমাং*সে গড়া একজন মানুষ। আমার ও তো আ*ঘা*তে ক*ষ্ট হয়।এটা কি তার একরারও মনে হচ্ছে না! নাকি নিজের ক্ষো*ভ আমাকে ক*ষ্ট দেয়ার মাধ্যমে মি*টা*চ্ছে! কি লাভ হচ্ছে উনার!নিজেকে পা*গল প্রমাণ করার জন্য আর কি কি করবেন উনি!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

এরপর আমার লা*লবর্ণ ধারণ করা হাতটি চে*পে ধরলেন।ব্য*থায় আহহ্ করে উঠলাম।আমার কষ্ট যেন তার চোখেই পড়ছে না।সবটা উপেক্ষা করে উনি বললেন,

এই মেয়ে তোমাকে বলেছি না আমার আশে পাশে তোমাকে যেন না দেখি বউ সাজার চেষ্টা করছিলে। ল*জ্জা করে নি?রাতে এতো গুলো থা শুনানোর পর ও সকাল সকাল কোন সাহসে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছো,ভেবেছো কি এইসব নাটক রচনা করে আমায় হাত করবে, তোমরা মেয়েরা সবাই একই রকম লো*ভী।তোমার পরিবার তো তোমার থেকেও বেশি লো*ভী তাই তো মেয়ে কে এরকম নিচু স্ত*রের কাজে লাগি..য়ে। ঠাসসসস

উনার কথা উনাকে শেষ করতে দেই নি তার আগেই থা*প্পড় দিলাম।কি সাংঘা*তিক কাজ করলাম! জেদ এর বসে তো মা*র*লাম এখন তো ভ*য়ে আমার জা*ন যায় যায় অব*স্থা।উনি হয়তো ভাবতেই পারে নি আমি এমন কিছু করবো।তাই র*ক্তচ*ক্ষু নিয়ে আমার গলা চে*পে ধরে বললেন,
হাউ ডেয়ার ইউ?আই উইল কি*ল ইউ,

নি*শ্বাস ব*ন্ধ হয়ে আসছে আমার, সে কিছু একটা ভেবে গলা ছেড়ে আমার বাহু চে*পে বলল,
-মেয়ে হয়েছো তাই বে*চে গেলে, আমি মেয়ে মানুষের গায়ে হাত দি না। নেক্সট টাইম এরকম সা*হস দেখালে ডিরেক্ট পু*তে ফেলবো। মা*ইন্ড ইট।।

কিন্তু অনেক স*য্য করেছি আর না।অনেক বলেছে সে।ভ*য় পে*লে চলবে না।এবার আমার পালা। তাই এক ঝট*কায় তার হাত নামানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু ব্য*র্থ হলাম তবুও বললাম,
আপনি কি ভেবেছেন?কা*পুরুষের মতো বউ কে অ*ত্যাচা*র করবেন আর বউ অবলা নারীর মতো স*য়ে যাবে।একদম না।আমি ইটের ঘা পাথর দিয়ে দিতে জানি। কা*পুরষ কোথাকার
-ঐশীইইইই

তার ধ*মকে আমি কেঁপে উঠলাম।একটু আগে যেভাবে গলা চে*পে ধরেছিল মনে হয়েছে সেই মুহূর্তে মা*রা যাবো আর আমি এখনো তার হাতের মধ্যে রয়েছি।ভ*য়ে ভ*য়েই বললাম

-বিয়েটা তো আপনি নিজেও ভা*ঙতে পারতেন।তাহলে ভে*ঙে দেন নি কেনো?আপনার ফেমিলির সম্মান আছে আর আমরা কি জলে ভেসে এসেছি নাকি!সেদিন আপনি কেনো বিয়ে করেছেন বলুন?কেনো আমার জীবনটা ন*ষ্ট করেছেন?আপনার আমাকে পছন্দ নয় এটা আমার পরিবারকে জানালেই পরতেন।বিয়েও করেছেন আবার আপনার প্রেম কাহিনীও শোনাচ্ছেন!

পরবর্তীতে আমাকে স্পর্শ করার আগে নিজেই একশো বার ভাববেন।একথা বলে আমার হাত ছাড়ালাম
আরে আপনি কি ডি*ভোর্স দিবেন আমাকে!আমি নিজেই আপনার মতো মান*সিক ভার*সাম্যহীন ,অস*ভ্য মানুষের সাথে থাকবো না। আমাকে বিয়ে করেছেন এভাবে অ*ত্যাচার করার জন্য নাকি চা*হিদা মেটানো প্রয়োজন,,ন
-ঐশীইইই, স্টপ ইট।

কেনো এখন বুঝি সম্মানে লাগলো! তাহলে ভাবেন একটু আগে যে একটা মেয়েকে নিয়ে কু*রু*চিপূর্ণ কথা বলছিলেন তার কতটা সম্মানহা*নি হয়েছে।আরে আপনারও মা, বোন আছে তারাও তো মেয়ে। তাদের কাউকে আমার জায়গায় দাড় করান তারাও নিশ্চয়ই আমার মতো একই কাজ করতো।
এবার হয়তো আমার কথাটা তাকে ভাবালো তাই সে রুম ছেড়ে দিয়ে নিচে চলে গেলেন,

অশ্রু মিশ্রিত চোখে আমি নিচে বসে পড়লাম।আমার এবার বিতৃ*ষ্ণা লাগছে সবকিছু।জীবনটা আগেও অস*য্য ছিলো। তবুও বাবার কাছে গেলে সব ভুলে যেতাম কিন্তু এখন সেই সুযোগ টাও পেলাম না।ক*ষ্ট হচ্ছে ভীষণ ক*ষ্ট।মাত্র ১দিনে আমি হাপিয়ে গেছি অথচ এখনো ৬ মাস এই অসয্য মাত্রার মানুষের সাথে থাকতে হবে।এর পর মুক্তি ভেবেই তা*চ্ছিল্যের হাসি দিলাম।

আলো আপুর ডাক শুনে চোখ মুছে উঠে রুমের বাইরে তার কাছে গেলাম, সে রুমের বাইরে দাঁড়িয়েছিলো।আমাকে দেখে বলল,মা নাকি আমাকে ডাকছে নাস্তা করার জন্য।
-আমার ভা*ল্লাগছে না আপু, খাবো না (গলা ব্য*থার ব্যাপার টা জানালাম না)আপু প্লিজ তুমি আম্মুকে বলে দিও।আমার অনেক মাথা ব্যথা করছে
আপু আচ্ছা বলে চলে গেলো

-বিছানায় আর বসি নি।বালিশ নিয়ে সোফায় এলাম।কা*ন্না করার কারণে মাথাটা প্রচন্ডরকম ব্য*থা করছে। মনে হচ্ছে ছিড়ে যাচ্ছে।তাই মাথাটা এলিয়ে দিলাম সোফায়। কিন্তু দশ মিনিটের মাথায় আমার মাথায় কারো হাতের স্প*র্শ পেয়ে চোখ খুললাম।দেখলাম আমার শাশুড়ী আমার মাথায় মুভ মালিশ করে দিচ্ছে।চোখ জলে ভরে এলো আমার। যেখানে আমার আপন মা কখনো আমি অসুস্থ হলে একবার রুমে এসে দেখতো না সেখানে উনি সামান্য মাথা ব্যথার কারণে এতটা যত্ন নিচ্ছে!আমার চোখের পানি দেখে বিচলিত হয়ে বললেন,

-মা, বেশি ব্য*থা করছে?নাস্তাটা খেয়ে একটু ঘুমাও দেখবা ভালো লাগবে?তাড়াতাড়ি উঠো।
আমি উঠে বসতেই তিনি আমার মুখের সামনে খাবার তুলে ধরলেন। এবার আর আমি স্থির থাকতে পারলাম না তাকে জরিয়ে ধরে শব্দ করে কেঁদে দিলাম।

-ঐশী, আম্মু বাড়ির কথা মনে পড়ছে? কেঁদোনা আম্মু।রিসিপশনের পর ধ্রুব তোমায় বাড়ি নিয়ে যাবে,ঠিক আছে? এখন খেতে হবে দেখি আমায় ছাড়ো।এভাবে খাইয়ে দিবো কিভাবে?
আমাকে খাইয়ে দিয়ে ঘুমোতে বলে মা চলে গেলেন নিচে।আমি এখনো তার যাওয়ার পানে চেয়ে রইলাম। উনি আমার শাশুড়ী নাকি বুঝতে পারছি না।উনি এতো ভালো কেনো?

আচ্ছা আমি শ্যামলা চেহারার তা কি তিনি খেয়াল করে নি! আমার আপন মা হলে তো এতোক্ষণে ধরে দুই তিনটা গালে লা*গিয়ে নবাবের বাচ্চা বলে চলে যেতো। আলো আপুটাও কতো ভালো!যেখানে আমার কাজিনরা আমাকে চেহারা নিয়ে খো*টা দেয় সেখানে সে কত সুন্দর ব্যবহার করে আমার সাথে!এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি টেরই পাই নি।

দুপুরের খাবারের সময় হটাৎ আঁধার ভাইয়ার আগমন ঘটলো।সে এসে আমার পাশের টেবিলটায় বসলো।আমি একটুও অবাক হইনি কারন আমি জানি সে হয়তো কারো মনে আমাদের ব্যাপারে সন্দেহ তৈরি হোক তা চায় না।আমি খাচ্ছিলাম এর মাঝেই আমার আংকেল বললেন,
– ঐশী,মা শুনলাম তোমার নাকি মাধ্যমিক পরীক্ষা সামনে তুমি কি ঐ বাসা থেকে পরীক্ষা দিবা নাকি আমি তোমার বইপত্র এখানে আনার ব্যবস্থা করবো?

আমি হত*বাক হয়ে আংকেল এর দিকে তাকালাম। আলো আপু আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে,এবার মা বলল,
_তুমি ধ্রুবকে পাঠিয়ে নিয়ে আনো বইগুলো, আমার মেয়ে কোথাও যাবে না।
পরিস্থিতি খাপ*ছাড়া দেখে আমি মিনমিন করে বললাম,
-আমি এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলাম।রেজাল্টও দিয়েছে গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়েছি।
আমার কথা শুনে খাওয়ার মাঝেই ভাইয়ার হিচকি উঠে গেলো।আংকেল হত*চকিত হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।মা বলে উঠলেন

-১৬ বছর বয়সে তোমার এইচএসসি পরীক্ষা দেয়া শেষ!এত্তো তারাতাড়ি কিভাবে!
-মা আমার ১৮ বছর চলছে, আমি বললাম,
তখন আঁধার ভাইয়ার কাজিন নীল ভাইয়া বললেন,

-আল্লাহ!বলো কি?তোমায় তো পুরো ক্লাস সিক্স এর বাচ্চা লাগে ভাবী,আমিতো আরও আফসোস করছিলাম যে ধ্রুব ভাই শেষ পর্যন্ত বাচ্চা মেয়েরে বিয়ে করে ফেললো! পুলিশ বা*ল্যবিবাহ করার জন্য না ভাইকে উরাধুরা কে*লানি দেয়!তার কথায় হি*ট*লার ভাইয়া ক*টমট দৃষ্টি ফেলতেই তিনি চুপ।এবার আলো আপু জোরেই হেসে দিলেন।বললেন
-তোমরাও আমার মতো ভুলটাই করেছো।ঐশীকে দেখতে পুরাই বাচ্চা মনে হয়।আমার অনেক শখ ছিলো এরকম একটা কিউট বাচ্চা বোনের এখন পূরণ হয়ে গেলো।

বুঝলাম না এদের চোখে কি সমস্যা আছে, আমাকে কোন এঙ্গেল থেকে বাচ্চা লাগে! আমি কি বাচ্চার মতো ওয়া ওয়া করি নাকি নাকের পানি খাই ফেলি।অ*দ্ভুত!এসব আজগুবি চিন্তাভাবনার মাঝেই আংকেল বলল,
-তুমি এডমিশন এর জন্য ফরম নিয়েছো?তোমার রেজাল্ট তো অনেক ভালো। কোথায় এডমিশন পরীক্ষা দেয়ার ইচ্ছা আছে?

-আম্মু বলেছিলেন আমাকে আর স্টাডি করাবেন না তাই এডমিশন পরীক্ষার জন্য কোনো প্রিপারেশন নেওয়া হয় নি আমার।এ জন্য পরীক্ষার জন্য কোনো আবেদন করা হয় নি।এখন তো সময় ও শেষ তাই আর
-শুনো মেয়ে তুমি আমার মেয়ে তাই আমি চাই তুমি স্টাডি কমপ্লিট করো।পাবলিক পরীক্ষা আবেদন সময় শেষ হলে সমস্যা নেই ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ পড়বে।আলো যেখানে পড়ছে ওখানে ধ্রুব তোমায় ভর্তি করে দিবে।তুমি তোমার ডকুমেন্টস বাসায় নিয়ে আসবে বলে আংকেল খেতে লাগলেন

-উনার চোখে মুখে রা*গ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। ভ*য়টাও আমার ত*ড়িৎগতিতে বৃদ্ধি পেল।ভয়ে কা*পা কা*পা কণ্ঠে বললাম, আ…আপনার…ক…কফি মা…দি….আর কিছু বলার সুযোগ পেলাম না আমি,,তার আগেই গরম কফিতে জ্ব*লে উঠলো আমার হাত,,মানলাম আমার কথার আ*ঘাত সয়ে যাওয়ার ক্ষমতা প্রখর তাই বলে আজ থেকে এভাবেও আ*ঘা*ত পেতে হবে আমায়! আমার দো*ষটা কোথায়! আমার ভা*গ্যে!

অবাক দৃ*ষ্টিতে তাকিয়ে আছি তার দিকে। চোখ বেয়ে অবিরলভাবে অ*শ্রু ঝরছে !
মানুষ এতো নি*ষ্ঠুর*তম আ*চরণ করে কিভাবে?আমিও তো র*ক্তমাং*সে গড়া একজন মানুষ। আমার ও তো আ*ঘা*তে ক*ষ্ট হয়।এটা কি তার একরারও মনে হচ্ছে না! নাকি নিজের ক্ষো*ভ আমাকে ক*ষ্ট দেয়ার মাধ্যমে মি*টা*চ্ছে! কি লাভ হচ্ছে উনার!নিজেকে পা*গল প্রমাণ করার জন্য আর কি কি করবেন উনি!

এরপর আমার লা*লবর্ণ ধারণ করা হাতটি চে*পে ধরলেন।ব্য*থায় আহহ্ করে উঠলাম।আমার কষ্ট যেন তার চোখেই পড়ছে না।সবটা উপেক্ষা করে উনি বললেন,
এই মেয়ে তোমাকে বলেছি না আমার আশে পাশে তোমাকে যেন না দেখি বউ সাজার চেষ্টা করছিলে। ল*জ্জা করে নি?রাতে এতো গুলো থা শুনানোর পর ও সকাল সকাল কোন সাহসে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছো,ভেবেছো কি এইসব নাটক রচনা করে আমায় হাত করবে, তোমরা মেয়েরা সবাই একই রকম লো*ভী।তোমার পরিবার তো তোমার থেকেও বেশি লো*ভী তাই তো মেয়ে কে এরকম নিচু স্ত*রের কাজে লাগি..য়ে। ঠাসসসস

উনার কথা উনাকে শেষ করতে দেই নি তার আগেই থা*প্পড় দিলাম।কি সাংঘা*তিক কাজ করলাম! জেদ এর বসে তো মা*র*লাম এখন তো ভ*য়ে আমার জা*ন যায় যায় অব*স্থা।উনি হয়তো ভাবতেই পারে নি আমি এমন কিছু করবো।তাই র*ক্তচ*ক্ষু নিয়ে আমার গলা চে*পে ধরে বললেন,
হাউ ডেয়ার ইউ?আই উইল কি*ল ইউ,

নি*শ্বাস ব*ন্ধ হয়ে আসছে আমার, সে কিছু একটা ভেবে গলা ছেড়ে আমার বাহু চে*পে বলল,
-মেয়ে হয়েছো তাই বে*চে গেলে, আমি মেয়ে মানুষের গায়ে হাত দি না। নেক্সট টাইম এরকম সা*হস দেখালে ডিরেক্ট পু*তে ফেলবো। মা*ইন্ড ইট।।

কিন্তু অনেক স*য্য করেছি আর না।অনেক বলেছে সে।ভ*য় পে*লে চলবে না।এবার আমার পালা। তাই এক ঝট*কায় তার হাত নামানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু ব্য*র্থ হলাম তবুও বললাম,
আপনি কি ভেবেছেন?কা*পুরুষের মতো বউ কে অ*ত্যাচা*র করবেন আর বউ অবলা নারীর মতো স*য়ে যাবে।একদম না।আমি ইটের ঘা পাথর দিয়ে দিতে জানি। কা*পুরষ কোথাকার
-ঐশীইইইই

তার ধ*মকে আমি কেঁপে উঠলাম।একটু আগে যেভাবে গলা চে*পে ধরেছিল মনে হয়েছে সেই মুহূর্তে মা*রা যাবো আর আমি এখনো তার হাতের মধ্যে রয়েছি।ভ*য়ে ভ*য়েই বললাম
-বিয়েটা তো আপনি নিজেও ভা*ঙতে পারতেন।তাহলে ভে*ঙে দেন নি কেনো?আপনার ফেমিলির সম্মান আছে আর আমরা কি জলে ভেসে এসেছি নাকি!সেদিন আপনি কেনো বিয়ে করেছেন বলুন?

কেনো আমার জীবনটা ন*ষ্ট করেছেন?আপনার আমাকে পছন্দ নয় এটা আমার পরিবারকে জানালেই পরতেন।বিয়েও করেছেন আবার আপনার প্রেম কাহিনীও শোনাচ্ছেন!পরবর্তীতে আমাকে স্পর্শ করার আগে নিজেই একশো বার ভাববেন।একথা বলে আমার হাত ছাড়ালাম
আরে আপনি কি ডি*ভোর্স দিবেন আমাকে!আমি নিজেই আপনার মতো মান*সিক ভার*সাম্যহীন ,অস*ভ্য মানুষের সাথে থাকবো না। আমাকে বিয়ে করেছেন এভাবে অ*ত্যাচার করার জন্য নাকি চা*হিদা মেটানো প্রয়োজন,,ন
-ঐশীইইই, স্টপ ইট।

কেনো এখন বুঝি সম্মানে লাগলো! তাহলে ভাবেন একটু আগে যে একটা মেয়েকে নিয়ে কু*রু*চিপূর্ণ কথা বলছিলেন তার কতটা সম্মানহা*নি হয়েছে।আরে আপনারও মা, বোন আছে তারাও তো মেয়ে। তাদের কাউকে আমার জায়গায় দাড় করান তারাও নিশ্চয়ই আমার মতো একই কাজ করতো।
এবার হয়তো আমার কথাটা তাকে ভাবালো তাই সে রুম ছেড়ে দিয়ে নিচে চলে গেলেন,

অশ্রু মিশ্রিত চোখে আমি নিচে বসে পড়লাম।আমার এবার বিতৃ*ষ্ণা লাগছে সবকিছু।জীবনটা আগেও অস*য্য ছিলো। তবুও বাবার কাছে গেলে সব ভুলে যেতাম কিন্তু এখন সেই সুযোগ টাও পেলাম না।ক*ষ্ট হচ্ছে ভীষণ ক*ষ্ট।মাত্র ১দিনে আমি হাপিয়ে গেছি অথচ এখনো ৬ মাস এই অসয্য মাত্রার মানুষের সাথে থাকতে হবে।এর পর মুক্তি ভেবেই তা*চ্ছিল্যের হাসি দিলাম।

আলো আপুর ডাক শুনে চোখ মুছে উঠে রুমের বাইরে তার কাছে গেলাম, সে রুমের বাইরে দাঁড়িয়েছিলো।আমাকে দেখে বলল,মা নাকি আমাকে ডাকছে নাস্তা করার জন্য।
-আমার ভা*ল্লাগছে না আপু, খাবো না (গলা ব্য*থার ব্যাপার টা জানালাম না)আপু প্লিজ তুমি আম্মুকে বলে দিও।আমার অনেক মাথা ব্যথা করছে
আপু আচ্ছা বলে চলে গেলো

-বিছানায় আর বসি নি।বালিশ নিয়ে সোফায় এলাম।কা*ন্না করার কারণে মাথাটা প্রচন্ডরকম ব্য*থা করছে। মনে হচ্ছে ছিড়ে যাচ্ছে।তাই মাথাটা এলিয়ে দিলাম সোফায়। কিন্তু দশ মিনিটের মাথায় আমার মাথায় কারো হাতের স্প*র্শ পেয়ে চোখ খুললাম।দেখলাম আমার শাশুড়ী আমার মাথায় মুভ মালিশ করে দিচ্ছে।চোখ জলে ভরে এলো আমার। যেখানে আমার আপন মা কখনো আমি অসুস্থ হলে একবার রুমে এসে দেখতো না সেখানে উনি সামান্য মাথা ব্যথার কারণে এতটা যত্ন নিচ্ছে!আমার চোখের পানি দেখে বিচলিত হয়ে বললেন,

-মা, বেশি ব্য*থা করছে?নাস্তাটা খেয়ে একটু ঘুমাও দেখবা ভালো লাগবে?তাড়াতাড়ি উঠো।
আমি উঠে বসতেই তিনি আমার মুখের সামনে খাবার তুলে ধরলেন। এবার আর আমি স্থির থাকতে পারলাম না তাকে জরিয়ে ধরে শব্দ করে কেঁদে দিলাম।
-ঐশী, আম্মু বাড়ির কথা মনে পড়ছে? কেঁদোনা আম্মু।রিসিপশনের পর ধ্রুব তোমায় বাড়ি নিয়ে যাবে,ঠিক আছে? এখন খেতে হবে দেখি আমায় ছাড়ো।এভাবে খাইয়ে দিবো কিভাবে?

আমাকে খাইয়ে দিয়ে ঘুমোতে বলে মা চলে গেলেন নিচে।আমি এখনো তার যাওয়ার পানে চেয়ে রইলাম। উনি আমার শাশুড়ী নাকি বুঝতে পারছি না।উনি এতো ভালো কেনো?আচ্ছা আমি শ্যামলা চেহারার তা কি তিনি খেয়াল করে নি! আমার আপন মা হলে তো এতোক্ষণে ধরে দুই তিনটা গালে লা*গিয়ে নবাবের বাচ্চা বলে চলে যেতো। আলো আপুটাও কতো ভালো!যেখানে আমার কাজিনরা আমাকে চেহারা নিয়ে খো*টা দেয় সেখানে সে কত সুন্দর ব্যবহার করে আমার সাথে!এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি টেরই পাই নি।

দুপুরের খাবারের সময় হটাৎ আঁধার ভাইয়ার আগমন ঘটলো।সে এসে আমার পাশের টেবিলটায় বসলো।আমি একটুও অবাক হইনি কারন আমি জানি সে হয়তো কারো মনে আমাদের ব্যাপারে সন্দেহ তৈরি হোক তা চায় না।আমি খাচ্ছিলাম এর মাঝেই আমার আংকেল বললেন,
– ঐশী,মা শুনলাম তোমার নাকি মাধ্যমিক পরীক্ষা সামনে তুমি কি ঐ বাসা থেকে পরীক্ষা দিবা নাকি আমি তোমার বইপত্র এখানে আনার ব্যবস্থা করবো?

আমি হত*বাক হয়ে আংকেল এর দিকে তাকালাম। আলো আপু আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে,এবার মা বলল,
_তুমি ধ্রুবকে পাঠিয়ে নিয়ে আনো বইগুলো, আমার মেয়ে কোথাও যাবে না।
পরিস্থিতি খাপ*ছাড়া দেখে আমি মিনমিন করে বললাম,
-আমি এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলাম।রেজাল্টও দিয়েছে গোল্ডেন জিপিএ ফাইভ পেয়েছি।
আমার কথা শুনে খাওয়ার মাঝেই ভাইয়ার হিচকি উঠে গেলো।আংকেল হত*চকিত হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।মা বলে উঠলেন

-১৬ বছর বয়সে তোমার এইচএসসি পরীক্ষা দেয়া শেষ!এত্তো তারাতাড়ি কিভাবে!
-মা আমার ১৮ বছর চলছে, আমি বললাম,
তখন আঁধার ভাইয়ার কাজিন নীল ভাইয়া বললেন,

-আল্লাহ!বলো কি?তোমায় তো পুরো ক্লাস সিক্স এর বাচ্চা লাগে ভাবী,আমিতো আরও আফসোস করছিলাম যে ধ্রুব ভাই শেষ পর্যন্ত বাচ্চা মেয়েরে বিয়ে করে ফেললো! পুলিশ বা*ল্যবিবাহ করার জন্য না ভাইকে উরাধুরা কে*লানি দেয়!তার কথায় হি*ট*লার ভাইয়া ক*টমট দৃষ্টি ফেলতেই তিনি চুপ।এবার আলো আপু জোরেই হেসে দিলেন।বললেন
-তোমরাও আমার মতো ভুলটাই করেছো।ঐশীকে দেখতে পুরাই বাচ্চা মনে হয়।আমার অনেক শখ ছিলো এরকম একটা কিউট বাচ্চা বোনের এখন পূরণ হয়ে গেলো।

বুঝলাম না এদের চোখে কি সমস্যা আছে, আমাকে কোন এঙ্গেল থেকে বাচ্চা লাগে! আমি কি বাচ্চার মতো ওয়া ওয়া করি নাকি নাকের পানি খাই ফেলি।অ*দ্ভুত!এসব আজগুবি চিন্তাভাবনার মাঝেই আংকেল বলল,
-তুমি এডমিশন এর জন্য ফরম নিয়েছো?তোমার রেজাল্ট তো অনেক ভালো। কোথায় এডমিশন পরীক্ষা দেয়ার ইচ্ছা আছে?

অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু তুমি পর্ব ১

-আম্মু বলেছিলেন আমাকে আর স্টাডি করাবেন না তাই এডমিশন পরীক্ষার জন্য কোনো প্রিপারেশন নেওয়া হয় নি আমার।এ জন্য পরীক্ষার জন্য কোনো আবেদন করা হয় নি।এখন তো সময় ও শেষ তাই আর
-শুনো মেয়ে তুমি আমার মেয়ে তাই আমি চাই তুমি স্টাডি কমপ্লিট করো।পাবলিক পরীক্ষা আবেদন সময় শেষ হলে সমস্যা নেই ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ পড়বে।আলো যেখানে পড়ছে ওখানে ধ্রুব তোমায় ভর্তি করে দিবে।তুমি তোমার ডকুমেন্টস বাসায় নিয়ে আসবে বলে আংকেল খেতে লাগলেন

অনুভূতির কেন্দ্রবিন্দু তুমি পর্ব ৩