অনেক সাধনার পরে পর্ব ১৫

অনেক সাধনার পরে পর্ব ১৫
অরনিশা সাথী

অগোছালো ছন্নছাড়া ভাবে নিজের ঘরে বসে আছে রুজবা। গত দুইদিন ধরে এত কাঁদছে তবুও যেন চোখের পানি শেষ হচ্ছে না। আচ্ছা চোখে এত পানি আসে কোত্থেকে? চোখের পানি শেষ হয় না কেন? রুজবার গাল বেয়ে অঝোরে অশ্রু ঝড়ছে। গত দুদিন ধরে এমনটাই হচ্ছে। কোনো কারণ ছাড়াই চোখ দিয়ে অটোমেটিক পানি পড়ছে। বুকটা ভারী ভারী লাগছে।

মাঝে মাঝে শ্বাস নিতে প্রচন্ড কষ্ট হয়ে যায় রুজবার। জারাফ ওকে এত বাজে ভাবে ঠকাতে পারে ও সেটা কল্পনা’ও করেনি। দু বছর চার মাস ধরে জারাফকে চিনে রুজবা। তার মধ্যে এক বছর আট মাসের সম্পর্ক। এতদিনে রুজবা জারাফ’কে একটু’ও চিনতে পারলো না? কই প্রথম প্রথম তো জারাফ রুজবাকে ভালোবেসেছে৷ রুজবার জন্য পাগল ছিলো।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

সেই ভালোবাসা টাকার কাছে এভাবে হেরে গেলো? জারাফের বাবার মৃত্যুর পর জারাফকে’ই সংসারের হাল ধরতে হবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ ওর বাবার তেমন অর্থসম্পদ নেই আর না জারাফের কোনো বড় ভাই আছে। কিন্তু পরিবারের হাল ধরার জন্য এ পথ’ই কেন অবলম্বন করতে হবে?

অন্যভাবে অর্থ রোজগার করে কি পরিবারের পাশে দাঁড়ানো যেতো না? ভেবে পায় না রুজবা। জারাফ আর ওর পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য রুজবাকেই কেন বলির পাঠা হতে বলো? টাকার কাছে আজ ওর ভালোবাসাটা’ই কেন হেরে গেলো? তবে কি রুজবার প্রতি জারাফের কোনোকালেই ভালোবাসা ছিলো না? যা ছিলো তা কেবলই ভালো লাগা আর মোহ? হাজার খুঁজেও এর উত্তর পায় না রুজবা।

বা হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে চোখের পানি মুছে রুজবা। এ কষ্ট ওর সহ্য হচ্ছে না। দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে যেন। স্বস্তিতে একটা শ্বাস অব্দি নিতে পারছে না। দুনিয়া ছাড়তে পারলে বোধহয় ভালো হতো রুজবার জন্য। তাহলে আর স্বস্তিতে শ্বাস নেওয়ার চিন্তা’টা থাকতো না। কারণ শ্বাস’ই যে বন্ধ হয়ে যেতো তখন। রুজবার মাথায় এখন শুধুই উল্টাপাল্টা চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে। নিজেকে শেষ করার চিন্তা’ও মাথাতে এসেছে বেশ কয়েকেবার। উঠে দাঁড়ালো রুজবা। এলোমেলো পায়ে কিচেনে গেলো। শারমিন বেগম রান্না করছিলেন। রুজবা কিচেন থেকে একটা ছুড়ি নিয়ে আবার নিজের রুমে চলে আসে।

শারমিন বেগম আঁচ করতে পারছে দুদিন ধরে রুজবার কিছু একটা হয়েছে। কেমন সারাক্ষণ নিজেকে ঘর বন্দী করে রাখে, খায় না ঠিকঠাক মতো এমন কি রাতে ঘুমোয়’ও না। প্রতিদিন মাঝ রাতেই শারমিন বেগমের ঘুম ভেঙে যাওয়ার অভ্যাস। আর সে সময়ে উনি রুজবা’র ঘরে উঁকি দেয়, রাফাতের ঘরে’ও দেখে আসে একবার। আলাদা করে রুপশাকে দেখতে হয় না কেননা রুজবা আর রুপশা একই ঘরে থাকে৷

গত দুইদিন শারমিন বেগমের ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর রুজবার ঘরে উঁকি দিলে উনি দেখতেন রুজবা নিষ্প্রাণ চোখে সিলিং ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের কার্নিশ বেয়ে অঝোরে অশ্রু ঝড়ে। এ বিষয়ে শারমিন বেগম রায়হান সাহেবের সাথে কথা বলছেন আজ সকালে। রায়হান সাহেব জানান আজ রুজবার সাথে উনি নিজে কথা বলবে। রুজবাকে কিচেন থেকে ছুড়ি নিয়ে যেতে দেখে ভয়ে শারমিন বেগমের বুক কেঁপে উঠে। গ্যাস অফ করে দ্রুত পায়ে রুজবার ঘরের দিকে যায়।

দরজা আটকানো দেখে আরো ভয় পেয়ে যায় উনি। দ্রুত কদমে দরজার দিকে এগিয়ে দরজায় হাত দিতেই দরজা খুলে যায়। রুজবা নিজের বা হাতের কবজি তে ছুড়িটা চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে। ছুড়ি টান দেওয়ার সাহস হচ্ছে না ওর। আচমকা দরজা খুলায় রুজবা হকচকিয়ে চোখ মেলে তাকায়। দরজার সামনে শারমিন বেগমকে দেখতে পেয়ে দ্রুত ছুড়ি সরাতে গেলে হাতে কিছুটা আঁচড় লেগে যায়। শারমিন দৌড়ে রুজবার সামনে গিয়ে ওর হাত থেকে ছুড়ি নিয়ে ফ্লোরে ছুড়ে মারে। রুজবার গালে ঠাস করে চ/ড় বসিয়ে দিয়ে বললো,

–“কি করছিলি এটা তুই? একবারো বুক কাঁপলো না এসব ভাবার সময়? এ দিন দেখার জন্য তোকে পেটে ধরেছি? আদর যত্নে এত বড় করেছি?”
মায়ের এরকম কথা শুনে রুজবা শব্দ করে কেঁদে দেয়। শারমিন বেগম বালিশের পাশ থেকে ফোন নিয়ে রায়হান সাহেবকে ফোন দিয়ে দ্রুত বাসায় ডাকলো। রুজবা তখনো হেঁচকি তুলে কাঁদছে।

শারমিন বেগম রুজবার পাশে বসে রুজবার বাম হাত’টা দেখলো। হালকা রক্ত আছে সেখানে। শারমিন বেগম ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে মলম লাগিয়ে দিলো। তারপর রুজবাকে জড়িয়ে ধরলো। রুজবা যেন কাঁদার মতো একটা জায়গা খুঁজে পেলো। শারমিন বেগমকে জাপটে ধরে কেঁদে যাচ্ছে রুজবা। শারমিন মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,

–“কি হয়েছে তোর? এভাবে কাঁদছিস কেন? জারাফের সাথে কিছু হয়েছে?”
জারাফের নাম শুনতে রুজবার কান্নার বেগ বাড়লো। শারমিন বুঝে গেলো জারাফের সাথেই কিছু হয়েছে। শারমিন বললো,
–“আমরা কি তোর কেউ না রুজবা? কোনো সমস্যা হলে আমাদের সাথে খোলাখুলি ভাবে কথা বল৷ এভাবে সুইসাইড সবকিছুর সমাধান না। আর তুই সুইসাইড করতে যাচ্ছিলি? তোর কিছু হলে তোর আব্বুর কি হবে ভেবে দেখেছিস একবারো?”

রুজবা কাঁদতে কাঁদতে বললো,
–“আ্ আমি পারছি না মা। আমার ভীষণ দম বন্ধ লাগছে। জারাফ, জারাফ আমাকে ভালোবাসে না মা। ও, ও___”
–“আচ্ছা আচ্ছা, শান্ত হ আগে৷ পরে সব শুনবো। এখন কান্না থামা মা।”

রায়হান সাহেবকে জাপ্টে ধরে বসে আছে রুজবা। এখনো হেঁচকি তুলছে মাঝে মাঝে। রায়হান সাহেবের চোখে’ও পানি। ইতিমধ্যেই রুজবা সবকিছু বলেছে উনাদের। সব শুনে রায়হান সাহেবের চোখমুখ শক্ত হয়ে এলো৷ কতটা কষ্ট পেয়ে রুজবা আজ এই অব্দি এসেছে, সেটাই ভাবছে উনি। রুজবার মাথায় আদুরে স্পর্শ দিয়ে রায়হান সাহেব বললো,

–“আল্লাহ’র কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া করো মা। যে আল্লাহ তোমাকে অল্পতেই জারাফের থেকে সরিয়ে নিয়ে এসেছে। ও তোমাকে আরো বাজে ভাবে ঠকাতো। হয়তো বা ওদিকে নিদ্রার সাথে বিয়ে করে সুখে সংসার’ও করতো আর এদিকে তোমাকে’ও ভালোবাসার কথা বলে যেতো। আল্লাহ সেটা চাননি বিধায় এখনই সবটা তোমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। নিজেকে সামলাও, শক্ত করো নিজেকে। আল্লাহ যা করেন অবশ্যই তার বান্দার ভালোর জন্যই করেন। সেটা আজ না বুঝলেও একদিন ঠিক বুঝতে পারবে তুমি।”

–“আমি ওকে ভীষণ ভালোবাসি আব্বু, আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। আমার ভালোবাসাটা ভুল ছিলো না৷ আমি, আমি___”
–“তোমার ভালোবাসা ভুল ছিলো না, কিন্তু মানুষটা ভুল ছিলো মা। তাই ভুল মানুষের জন্য নিজেকে কষ্ট দেওয়া বোকামী ছাড়া কিছুই না। আর যেন এরকম উল্টাপাল্টা চিন্তাভাবনা তোমার মাথায় না আসে। যখন খুব বেশি কষ্ট হবে তখন বন্ধু বা তোমার কাজিনদের সাথে সময় কাটাবে, নয়তো তোমার প্রিয় কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখবে৷ জারাফকে ভুলে যেতে হবে এটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো।

জোর করে কোনো কিছু ভুলা যায় না। জারাফকে জোর করে যত ভুলে যেতে চাইবে ও ততই তোমার মস্তিষ্কে আরো জেঁকে বসবে ফলস্বরূপ তুমি কষ্টই পাবে শুধু। আমি কি বলতে চাইছি বুঝতে পেরেছো?”
রুজবা মাথা নাড়ালো। রায়হান সাহেব রুজবার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,

–“আর কখনো কাঁদবে না। কাঁদলে সবাই দূর্বল ভাববে। জারাফকে দেখাতে হবে তো ওর ছেড়ে যাওয়াতে তোমার কিচ্ছু যায় আসে না। জারাফ তোমার যোগ্য না, তুমি ওর থেকে বেটার কাউকে ডিজার্ভ করো। তুমি কক্ষনো আফসোস করবে না। নিজেকে এমন ভাবে বদলে ফেলো যাতে তোমাকে দেখে জারাফ আফসোস করে। কেমন?”

রুজবা এবারেও মাথা নাড়ালো। রায়হান সাহেব শারমিনকে বললো টেবিলে খাবার দিতে। শারমিন দ্রুত চলে গেলো খাবার গুছাতে। রায়হান সাহেব রুজবা নিয়ে বের হলো খাওয়ার জন্য।

–“নিদ্রা আই লাভ ইউ। উইল ইউ ম্যারি মি?”
নিদ্রার সামনে একটা গোলাপ নিয়ে হাটু গেড়ে বসে রেস্টুরেন্টে সবার সামনে কথাটা বললো জারাফ। আজও ওরা রেস্টুরেন্টে এসেছে। আজ জারাফ প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে নিদ্রাকে প্রপোজ করার। প্ল্যানমাফিক প্রপোজ করেছে’ও এখন শুধু নিদ্রার উত্তরের অপেক্ষায়। নিদ্রা সাথে সাথেই জারাফের হাত থেকে ফুল নিয়ে ওকে হাত ধরে দাঁড় করিয়ে বললো,

–“ইয়েস আই উইল জারাফ, আমি তোমাকে আরো আগে থেকেই ভালোবাসি। ফাইনালি তুমিও ভালোবাসার কথা বললে আমাকে। এই কথাটা শোনার জন্য কতটা অপেক্ষা করেছি জানো?”
কথাগুলো বলেই নিদ্রা জারাফকে জড়িয়ে ধরলো। জারাফ’ও নিদ্রাকে বুকে আগলে নিলো। কিছু সেকেন্ড বাদেই নিদ্রা জারাফকে ছেড়ে দিলো। দুজনে গিয়ে একটা টেবিলে বসে পড়লো। জারাফ আগে থেকেই লাঞ্চ অর্ডার করে রাখে। ওয়েটার খাবার দিয়ে যায়। খেতে খেতেই নিদ্রা বললো,

–“আব্বু তো আরো দেড় বছর আগেই আমাদের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলেছিলো। তোমার মতামত জানতে চেয়েছিলো, তুমি ভাবছি বলে আর মতামত জানাওনি। আব্বুকে___”
–“আজ বাসায় ফিরেই চাচার সাথে কথা বলে আমার মতামত জানাবো।”
–“কবে বিয়ে করছি আমরা?”
–“খুব শীঘ্রই।”
কথাটা বলে জারাফ চামুচে করে খাবার তুলে নিদ্রার মুখের সামনে ধরলো। নিদ্রা’ও হাসিমুখে খেয়ে নিলো।

কিছু কেনাকাটা করার কথা বলে ফারিন আজ বেরিয়েছে কিয়ানের সাথে দেখা করার জন্য। দুজনেই একটা কফিশপে বসে আছে। ইতিমধ্যে কফি দিয়ে গেছে। কিয়ান কফিতে চুমুক দিয়ে বললো,
–“আজ তুমি একা কেন? রুজবা কোথায়?”
–“আসলে রুজবা একটা মেন্টাল ট্রমার মধ্যে আছে।”
ফারিনের কথায় কিয়ান ভ্রু কুঁচকে তাকালো। ফারিন আমতা আমতা করে বললো,

–“ও সুই্ সুইসাইড করতে যাচ্ছিলো কিয়ান, ভাগ্যিস কাকি ঠিক সময় দেখে ফেলেছিলো। নয়তো___”
ফারিনের মুখে রুজবার সুইসাইড এটেম্পট এর কথা শুনে কিয়ান চমকে গেলো। অস্থির কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
–“কিন্তু কেন? ও হঠাৎ এরকম একটা কাজ___”
–“জারাফের সাথে ব্রেক-আপ___”
–“এই সামান্য বিষয়ে সুইসাইড মানে আমার মাথায় কিচ্ছু ঢুকছে না। ও কি পাগল?”
–“জারাফ সম্পর্কের পুরোটা সময় রুজবাকে ঠকিয়েছে। ও নিদ্রাকে ভালোবাসে ওকেই বিয়ে করবে____”
ফারিন একে একে সব বললো কিয়ানকে। সব শুনে কিয়ান বললো,

–“ওই ছেলেকে তো আমার প্রথম থেকেই ভালো লাগে না। নয়তো রুজবা এত করে রিকুয়েষ্ট করার পরেও জারাফ একবারের জন্যও ওর বাবার সাথে সাথে কথা বলতে আসেনি। ওর বাবার মৃত্যুর কারণ দেখিয়েছে, পরিবারের হাল ধরার অজুহাতে রুজবাকে নুহাশের সাথে বিয়ে করে নিতে বলেছে। ভালোবাসলে কখনো এসব বলতো? সত্যি ভালোবাসলে যে কোনো পরিস্থিতিতেই ভালোবাসার মানুষটার হাত শক্ত করে ধরা যায়।”

–“হুম।”
–“আচ্ছা রুজবার দিকে একটু খেয়াল রেখো। ওকে বেশি বেশি সময় দিও। একা থাকলে আবার উল্টাপাল্টা চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাবে। ওর এখন সঙ্গ প্রয়োজন৷ মেন্টাল সাপোর্ট প্রয়োজন।”
–“হুম।”

রাত এগারোটা বাজে। ডিনার সেরে ঘরে এসেছে নুহাশ। বিকেলে বাসার সবার সাথে কথা হয়েছে সকলেরই এক প্রশ্ন নুহাশ কবে বাড়ি ফিরবে? এই প্রশ্ন শুনতে শুনতে নুহাশ এখন প্রচন্ড বিরক্ত। তার উপর রুজবা মেয়েটা এত দূরে থেকেও নুহাশকে কিছুতেই শান্তি দিচ্ছে না। সারাক্ষণ মাথায় ঘুরপাক খায়। গত দুদিন ধরে তো রুজবার কথা একটু বেশিই ভাবছে নুহাশ৷ বারবার ওকে দেখতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু দেখতে হলে তো দেশে ফিরতে হবে।

আর দেশে ফিরলেই বাসার সবাই ওকে বিয়ে করানোর জন্য উঠে পড়ে লাগবে। তাই নিজের ইচ্ছেটাকে মনেই চেপে রাখে ও। নুহাশ ভাবছে কাল একবার ফারিনকে ভিডিও কলে ফোন দিয়ে বলবে রুজবাকে দেখাতে। এতে যদি একটু শান্তি মিলে। রুজবার ছবি দেখছে আর এসবই ভাবছে নুহাশ। এমন সময় দরজায় নক করলো কেউ। নুহাশ উঠে দরজা খুলতেই লিয়া ভিতরে ঢুকলো। লিয়া সোজা বিছানায় বসে বললো,

–“গল্প করতে চলে আসলাম। কাল তো অফ ডে, আজ সারারাত আড্ডা দিবো আমরা কেমন?”
কথাগুলো বলতে বলতেই লিয়ার নুহাশের ফোনের দিকে নজর গেলো। স্ক্রিনে রুজবার ছবি। লিয়ার রাগ হলো ভীষণ রুজবার প্রতি। এই রুজবা মেয়েটা কি জাদু করেছে নুহাশকে লিয়া সেটাই ভেবে পায় না। তাছাড়া লিয়া’ও তো কম সুন্দরী না, এখানকার অনেক হ্যান্ডসাম হ্যান্ডসাম ছেলে ঘুরে লিয়ার পেছনে। অথচ লিয়া নুহাশকে পছন্দ করে। আর নুহাশ কিনা ওকে পাত্তা’ই দিচ্ছে না? লিয়া রাগান্বিত স্বরে বললো,

–“তুমি এখনো রুজবাকে নিয়ে ভাবছো? তোমাদের মাঝে কোনো সম্পর্ক ছিলো না নুহাশ। আর না কোনোদিন কোনো সম্পর্ক হবে তোমাদের। রুজবা অন্যকাউকে ভালোবাসে। এরপরেও তুমি___”
–“এটা বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। আমি জানি রুজবা অন্যকাউকে ভালোবাসে।”
–“তাহলে এখনো ওকে নিয়ে ভাবছো কেন তুমি?”
–“আমৃত্যু ভাববো। এবার তুমি আসো।”

–“আমি তোমাকে ভালোবাসি নুহাশ আর তোমাকে নিজের করে পেতে চাই। এটা কেন বুঝতে পারছো না?”
–“আর তুমি কেন বুঝতে পারছো না আমি রুজবাকে ভালোবাসি। তোমাকে ভালোবাসা সম্ভব না আমার পক্ষে।”
–“তুমি একবার চেষ্টা তো করে দেখো।”

অনেক সাধনার পরে পর্ব ১৪

–“ওই চেষ্টা’টাই তো করতে চাই না আমি। এবার তুমি যাও আমি ঘুমাবো।”
লিয়া কিছুক্ষণ নুহাশের দিকে কটমটে চোখে তাকিয়ে থেকে চলে গেলো। নুহাশ দরজা আটকে আবার বিছানায় গিয়ে শুয়ে রুজবার ছবি দেখায় ব্যস্ত হয়।

অনেক সাধনার পরে পর্ব ১৬