অনেক সাধনার পরে পর্ব ৭

অনেক সাধনার পরে পর্ব ৭
অরনিশা সাথী

–“তোমার বাসার সামনে আছি, বাইরে আসবে?”
জারাফের এমন ম্যাসেজে ভ্রু কুঁচকে ফেললো রুজবা। ঘড়িতে সময় দেখলো সাড়ে সাতটা বাজে। এ সময়ে বের হবে কি হবে না ভেবে পেলো না ও। রুজবার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে আবারো ম্যাসেজ টোন বেজে উঠে। জারাফ লিখেছে,
–“অপেক্ষায় আছি তো, প্লিজ এসো।”

রুজবা ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। তারপর পা টিপে টিপে বের হলো ঘর থেকে। গেটের বাইরে পা রাখতেই জারাফ রুজবার কুনই ধরে টেনে একটু আড়ালে নিয়ে গেলো। রুজবা বড়বড় চোখে তাকিয়ে বললো,
–“মাথা খারাপ তোমার? এখানে এসেছো কেন? আর এই সন্ধ্যায় যদি কেউ দেখে ভাবতে পারছো কি হবে?”
–“হুশ! কিছু হবে না। আমি এক্ষুনি চলে যাবো।”
–“কেন এসেছো?”
–“তোমাকে দেখতে।”
–“কেন?”
–“সব কেন’র উত্তর হয় না।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

রুজবা চুপ হয়ে গেলো। কি বলবে ভেবে পেলো না। জারাফের আশে পাশে থাকলে ও কেমন যেন একটা হয়ে যায়। জারাফের প্রতি ওর এই অনুভূতি গুলোর নাম কি? জারাফের ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারে না কেন ও? আর জারাফ? জারাফ বারবার কেন ছুটে আসে রুজবার কাছে? ভালোবাসে? তাহলে ভালোবাসি বলছে না কেন এখনো? ভাবছে রুজবা। জারাফ রুজবার সামনে তুড়ি বাজিয়ে বললো,

–“কি ভাবছো?”
–“ক্ কিছু না, আসছি আমি। আব্বু চলে আসবে যখন তখন।”
কথাটা বলে জারাফকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে গেলো রুজবা৷ জারাফ রুজবার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজের বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।
রাতের খাবার শেষে ঘরে যেতে যেতে রুজবা শুনতে পেলো ওর আব্বু ওর মাকে বলছে,

–“রুজবার জন্য একটা সম্বন্ধ এসেছে শারমিন।”
–“এত তাড়াতাড়ি রুজবাকে বিয়ে দিবো না বলোনি সেটা?”
–“হ্যাঁ আমিও সেটাই বলেছি। কিন্তু উনারা হাল ছাড়ছে না।”
–“যাই করো ভেবে চিন্তে করো।”
–“হু।”

আর কথা না বাড়িয়ে খাওয়ায় মনোযোগ দিলো দুজনেই। রুজবা নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লো। ও জানে ওর আব্বু এখন ওকে বিয়ে দিবে না। তাই এ বিষয়ে অতটা মাথা ঘামালো না। পাশ থেকে ফোন নিয়ে জারাফকে ম্যাসেজ করলো রুজবা। মিনিট পাঁচেক গড়াতেই জারাফের রিপ্লাই,
–“হ্যাঁ রুজ বলো।”
–“কি করো?”
–“বন্ধুদের সাথে আছি। তুমি কি করছো?”
–“শুয়ে আছি।”

রুজবার হঠাৎ করেই মনে হলো জারাফকে এই সম্বন্ধের কথাটা বলে দেখুক জারাফ কেমন রিয়্যাক্ট করে। যদি ভালোবেসে থাকে তাহলে তো অবশ্যই রিয়্যাক্ট করবে। যেই ভাবা সেই কাজ। রুজবা লিখলো,
–“একটু আগে আব্বু মা’কে বলছিলো, কে যেন আমার জন্য বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছে।”
ম্যাসেজটা দেখে তৎক্ষনাৎ জারাফ ফোন করলো। রুজবা ঠোঁট চেপে হেসে ফোন রিসিভ করলো। জারাফ বললো,

–“বিয়ে দিয়ে দিবে তোমায় এখন?”
–“মেয়ে হয়েছি যখন, একদিন আগে আর পরে তো বিয়ে দিবেই।”
–“তোমার বয়স কত? এখনই বিয়ের জন্য সম্বন্ধ দেখছে? তুমি বিয়েতে রাজি হবে না রুজ।”
রুজবা ঠোঁট কামড়ে ধরে হাসি আটকালো। বললো,
–“কেন?”
–“অতশত জানি না আমি।”

রুজবা বুঝতে পারে ওর মনে জারাফের জন্য যে অনুভূতি আছে জারাফের মনেও সেই অনুভূতি কাজ করে।। রুজবা খুব করে চায় জারাফ সেই অনুভূতির কথাগুলো রুজবাকে বলুক। কিন্তু জারাফ সেরকম কিছুই করছে না। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এটা সেটা বলে কিন্তু সরাসরি কিছু বলছে না। রুজবা মৃদু হেসে বললো,
–“বিয়ে দিবে না এখন, আব্বু না করে দিয়েছে।”
–“যাক আলহামদুলিল্লাহ।”
জারাফের কথায় রুজবা শব্দ করে হাসলো। আরো কিছুক্ষণ টুকটাক কথা চললো দুজনের। তারপর ফোন রেখে ঘুমিয়ে পড়লো।

দুটো ক্লাস করে বের হয় রুজবা আর ফারিন। মাঠে যেতেই দেখা মিলে নুহাশ আর কিয়ানের সাথে। রুজবা টুকটাক কিয়ানের সাথে কথা বলে অন্যদিকে চলে যায়। কিয়ান আর ফারিন মাঠের এক কোনে বসে যায় কথা বলার জন্য। নুহাশ’ও সরে যায় ওখান থেকে। রুজবা হাঁটতে হাঁটতে কলেজের বাইরে চলে যায়। রাস্তার ওপারে হাওয়াই মিঠাই দেখতে পেয়ে রাস্তা পার হওয়ার জন্য এক পা বাড়িয়ে আবার দাঁড়িয়ে পড়লো ও।

দুপাশ থেকেই গাড়ি যাওয়া-আসা করছে। ও একা কিছুতেই এই মূহুর্তে রাস্তা পার হতে পারবে না। ওর এমনিতেই রাস্তা পার হওয়া আর পানিতে প্রচুর ভয়। পানি দেখে ভয় পাওয়ার কারণ ও সাতার জানে না। গ্রামের মেয়ে, গ্রামেই বেড়ে উঠা অথচ সাতার জানে না। বিষয়টা অন্যসবার কাছে হাস্যকর হলেও এটাই সত্যি। এদিকে গাড়ি কমছে না। রুজবা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছে কি করে পার হবে?

এমন সময় কেউ রুজবার হাতের কব্জি আলতো করে চেপে ধরে। চমকে পাশে তাকায় রুজবা। নুহাশ ওর হাত ধরে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। রুজবার বুকটা ধক করে উঠে নুহাশের স্পর্শ পেয়ে। এই প্রথমবার নুহাশের স্পর্শ পেলো। সেদিন নুহাশের বাইকে উঠলেও নুহাশকে স্পর্শ করেনি রুজবা। আজই প্রথম। রুজবা হাত ছাড়াতে গেলেই নুহাশ শক্ত করে রুজবার হাত চেপে ধরে রাস্তার পার হয়। নুহাশ হাওয়াই মিঠাই’র কাছে গিয়েই রুজবার হাত ছেড়ে দেয়। রুজবা তখনো অবাক চোখে নুহাশকে দেখছে। নুহাশ চারটা হাওয়াই মিঠাই কিনে রুজবার হাতে দিয়ে বললো,

–“দুইটা তোমার আর দুইটা ফারিনের।”
রুজবা আমতা আমতা করে বললো,
–“আ্ আমি কিনে নিতে পারতাম তো।”
–“অন্যসময় নিজে কিনে খেও, আপাতত আমার কিনে দেওয়াটা’ই খাও।”
এইটুকু বলে নুহাশ আবারো রুজবার হাত ধরেই রাস্তা পার হয়। কলেজের সামনে এসে রুজবার হাত ছেড়ে দিয়ে ভিতরে চলে যায় নুহাশ। রুজবা স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ওখানেই। শুধু নুহাশের কথাটা ভাবছে। নুহাশ পেছন ফিরে রুজবাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো,

–“ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে?”
রুজবা মাথা নাড়িয়ে দ্রুত পা চালায়। নুহাশ গিয়ে কিয়ানের পাশে বসে পড়ে। রুজবাও গিয়ে ফারিনের পাশে বসে। রুজবা ফারিন’কে একটা হাওয়াই মিঠাই দিয়ে আর একটা কিয়ানকে দেয়। ফারিন হাওয়াই মিঠাই’র প্যাকেট খুলতে খুলতে বললো,

–“কে দিলো?”
রুজবা আর একটা হাওয়াই মিঠাই নুহাশের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
–“নুহাশ ভাই।”
কিয়ান আর ফারিন একে অপরের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলো। নুহাশ তখনো হাওয়াই মিঠাই নেয়নি। রুজবা বললো,

–“কতক্ষণ ধরে রাখবো নুহাশ ভাই নিন?”
–“তুমি’ই খাও, এসব বাচ্চা-কাচ্চার খাবার আমি খাই না।”
রুজবা চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে বললো,
–“আপনি আমায় বাচ্চা বললেন?”
নুহাশ কিয়ানের দিকে তাকিয়ে বললো,
–“কিয়ান আমি কি ভুল বলেছি?”

কিয়ান দ্রুত দুই দিকে মাথা নাড়ালো। যার অর্থাৎ না। রুজবা ফোঁস করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
–“কিয়ান ভাই আপনি’ও?”
রুজবার কথায় নুহাশ মৃদু হেসে ফোন বের করে ভিডিও দেখায় ব্যস্ত হলো। ফারিন আর কিয়ান’ও হেসে হাওয়াই মিঠাই খাচ্ছে। রুজবা বসে না থেকে ও নিজেও হাওয়াই মিঠাই’র প্যাকেট খুলতে শুরু করলো।

দুইদিন পরের কথা। রায়হান সাহেব আজও মাগরিবের নামাজ পড়ে একটা চায়ের দোকানে বসেছে। এমন সময় রায়হান সাহেবের এলাকার একজন লোক এসে উনার পাশে বসলো। রায়হান সাহেব দুই কাপ চা দিতে বললো এখানে। লোকটা বললো,
–“দুই দিন ধরে আপনাকে খুঁজছি আমি।”
–“কেন? কোনো সমস্যা?”
রায়হান সাহেবের কথায় লোকটা আশেপাশে চোখ বুলিয়ে বললো,

–“আপনের বড় মেয়ে’রে দেখলাম দুই দিন আগে সন্ধ্যা বেলা পাশের এলাকার এক ছেলের সাথে কথা বলতেছে। ছেলেটা আপনার মেয়ের হাতও ধরছে। ছেলেটা প্রায়শই আপনার বাড়ির সামনে এসে উঁকিঝুঁকি মারে। তাই ভাবলাম কথাটা আপনাকে জানানো দরকার। মেয়েরে এখনই শক্ত করে ধরুন, আজ আমি দেখছি কাল আর একজন দেখবো। আপনার মান সম্মান’ই যাবে এরকম হলে। এখনই মেয়ের লাগাম টান দেন। আমি আপনের ভালো চাই তাই আর কাউরে জানাই নাই, সরাসরি আপনাকেই বললাম।”

এরকম টুকটাক আরো কথা চললো দুজনের। রায়হান সাহেব লজ্জায় লোকটাকে আর বেশি কিছু বলতে পারলো না। রুজবার প্রতি উনার অঘাদ বিশ্বাস ছিলো। রুজবা এরকম কিছু করবে বা করতে পারে কখনো কল্পনাতেও ভাবেনি সে৷ লোকটা চা শেষ করে চলে গেলো। রায়হান সাহেব চা’য়ে শেষ চুমুক দিয়ে চায়ের কাপটা এগিয়ে দিয়ে টাকা দিলো। উঠে দাঁড়াতেই নোমান সাহেব এসে বসলো সামনের বেঞ্চিতে। ভদ্রতার খাতিরে রায়হান সাহেব বসে ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করলো। নোমান সাহেব চা দিতে বলে রায়হান সাহেবকে বললো,

–“কিছু ভাবলেন?”
–“আমি বা রুজবার মা কেউ-ই এখন ওকে বিয়ে দিতে চাচ্ছি না। ইন্টার পরিক্ষা’টা দিক আগে তারপর এই নিয়ে ভাবা যাবে।”

–“পরিক্ষা দিবে, সমস্যা কি? আমরা এখন শুধু কাবিন’টা করিয়ে রাখতে চাই। আমার ছেলে’ও স্যাটেল হোক তারপর অনুষ্ঠান করা যাবে। আর আমার যা কিছু আছে সব তো দুই ছেলের জন্যই করেছি। ছেলের যে কিছুই নেই এমন তো না। আমার এত সম্পত্তি এত টাকা পয়শা ব্যবসা কাদের জন্য করেছি? দুই ছেলের জন্যই তো।”

রায়হান সাহেব কিছু বললো না। একটু আগে ওই লোকটার বলে যাওয়া কথাগুলো ভাবতে লাগলো সে। লোকটার কথাগুলো সত্যি হলে তো ধীরে ধীরে সবার চোখে ব্যাপারটা পড়বে। এতদিনের তিল তিল করে গড়ে তোলা সম্মানটা নিমিষেই ধুলোয় মিশে যাবে। এদিকে নোমান সাহেবের কথাগুলো ভাবলো আবার। নুহাশ নিঃসন্দেহে ভালো একজন ছেলে। দেখতে শুনতে সুদর্শন। পরিবার ভালো। একটা মেয়ের জন্য আর কি চাই? রায়হান সাহেব বললো,

–“বাড়িতে গিয়ে ছোট ভাইদের সাথে কথা বলে জানাবো আপনাকে।”
–“আচ্ছা। একটু দ্রুত জানালেই ভালো হয়। আমরা তাহলে দ্রুতই কাবিনটা করে ফেলবো।”
–“আগে ভাইদের সাথে কথা বলি, তারপর যা করার করবো।”
আরো টুকটাক কথা বলে রায়হান সাহেব বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন।

বাসায় এসেই রায়হান সাহেব তার তিন ভাইয়ের সাথে ফোনে কথা বললেন বেশ কিছুক্ষণ। কেউ-ই প্রথমে রাজি ছিলো না। পরবর্তীতে যখন বলা হলো এখন কাবিন করে রাখবে আর যে দিন কাল পড়েছে কোনো অঘটন ঘটে যেতে পারে৷ এইসব বিচার-বিবেচনা করে রুজবার চাচ্চুরা মত দিলো। রায়হান সাহেবকে বললো যা ভালো মনে করে সেটাই করতে। টুক টাক সব ধরনের কথা বলে ফোন রেখে দিলো রায়হান সাহেব। রুজবার চাচ্চুরা সবাই রাজি রাজি। ছেলে চেনাজানা, ভালো, কোনো ব্যাড রেকর্ড নেই ছেলের নামে তাই আর অমত করেনি।
রায়হান সাহেব সেই লোকটার বলা কথাগুলো শারমিনকে বলতেই শারমিন বললো,

–“আপনের যা ভালো মনে হয় করেন। মান সম্মানের দিকটা’ও চিন্তা করতে হবে। যেই দিনকাল পড়েছে মেয়ে যদি আবার উল্টাপাল্টা কিছু করে বসে?”
–“দেখি রুজবার সাথে কথা বলে।”
এইটুকু বলে রায়হান সাহেব রুজবার ঘরে গেলো। রুজবা পড়তে বসেছিলো তখন। রায়হান সাহেব বিছানায় বসে রুজবাকে ডাকলো। রুজবা বই আটকে বাবার কাছে গিয়ে বসলো। রায়হান সাহেব রুজবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,

–“কিছু কথা বলার আছে।”
–“বলো আব্বু।”
–“একটা সম্বন্ধ এসেছে তোমার জন্য। আমরা কেউ-ই প্রথমে রাজি ছিলাম না। কিন্তু ছেলে ভালো, আমাদের জানা-শোনা তাই___”
রুজবার ভিতরে ভিতরে অস্থিরতা বেড়ে গেলো। কাঁপা স্বরে জিজ্ঞেস করলো,

–“তা্ তাই কি আব্বু?”
–“একটা কথা জিজ্ঞেস করবো, সত্যি করে বলবে?”
রুজবা মাথা নাড়ালো। রায়হান সাহেব বললো,
–“তোমার কাউকে পছন্দ?”
রুজবা ভেবে পেলো না কি উত্তর দিবে। তাই চুপ করেই রইলো। রায়হান সাহেব বললো,

–“দুই দিন আগে সন্ধ্যায় একজন তোমাকে এক ছেলের সাথে দেখেছে, হাত ধরা অবস্থায়। কাল আরেকজন দেখবে পরশু আবার অন্যজন। এভাবে আমার মান-সম্মানটা থাকবে মা? তুমি কি চাও আমি সমাজে সবার চোখে ছোট হই? সবাই আমাকে দেখলে বলুক রায়হান আজাদের বড় মেয়ে রুজবা রায়হান ভালো মেয়ে না? ভর সন্ধ্যায় এক ছেলের হাত ধরাধরি করে?”

রুজবা মাথা নিচু করে চোখে পানি ফেলছে। এই ভয়টাই পাচ্ছিলো ও। সেই ওর আব্বুর কানে সবকিছু গেলো। ওর আব্বুর দিকে চোখ তুলে তাকাবে কি করে ও এখন? রায়হান সাহেব রুজবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
–“কোনো কিছু করার আগে একবার ছাড়া দশবার ভাবতে হয়। কাজটা করে তারপর ভাবলে তো হবে না মা।”
রুজবা এবারেও কিছু বললো না। রায়হান সাহেব বললো,

–“তোমার কোনো পছন্দ না থাকলে তো আমার পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করতে তোমার কোনো আপত্তি নেই, তাই না?”
রুজবা এবারেও নিরব থাকলো। রায়হান সাহেব আবারো বললো,
–“মৌনতা কি সম্মতির লক্ষন ধরে নিবো তাহলে?”

অনেক সাধনার পরে পর্ব ৬

রুজবা একবার মাথা তুলে ওর বাবার দিকে তাকালো। তারপর আবার চোখ নামিয়ে নিয়ে আমতা আমতা করে বললো,
–“আ্ আমি ওর সাথে ভালোবাসার কোনো সম্পর্কে নেই আব্বু, কিন্তু আমার ওকে ভীষণ প্ পছন্দ____”

অনেক সাধনার পরে পর্ব ৮